content
stringlengths
0
129k
আরেকটি হার
রাতে রায়ো ভায়োকানোর মাঠে ১-০ গোলের হারটাই কাল হয়ে এসেছে কোমানের জন্য
অবশ্য ৫৮ বছর বয়সী এই ডাচ কোচ শেষের প্রহর গুনছিলেন এ মৌসুমের শুরু থেকেই
লিগে এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে বার্সা
১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৯-এ আছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা
চ্যাম্পিয়নস লিগের অবস্থা আরও ভয়াবহ
৩ ম্যাচ থেকে মাত্র ৩ পয়েন্ট তাদের
এই অবস্থা থেকে কোমান নিজেও বোধ হয় মুক্তি চাইছিলেন
বার্সা তাঁকে মুক্তিই দিয়েছে
যে বিজ্ঞপ্তিতে বার্সা কোমানকে ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়েছে, সেখানে অবশ্য ছাঁটাই শব্দটার উল্লেখ নেই
ক্লাবের সভাপতি হোয়ান লাপোর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, 'মূল দলের কোচের দায়িত্ব থেকে রোনাল্ড কোমানকে মুক্তি দিয়েছে বার্সেলোনা
এর মাধ্যমে বার্সায় কোমান-যুগের অবসান হলো
গত মৌসুমেই কিকে সেতিয়েনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন এই ডাচ কোচ
তাঁর অধীনে ৬৭ ম্যাচ খেলেছে কাতালান ক্লাবটি
৩৯ জয়ের বিপরীতে হেরেছে ১৬ ম্যাচ
ড্র করেছে ১২ ম্যাচ
মূলত এই মৌসুমে মাঠে বার্সার দুর্দশায় ছাঁটাই হলেন কোমান
শেষের বাঁশি বাজতেই চয়ন-সোহানদের কেউ উঠলেন লাফিয়ে, কেউ শুয়ে পড়লেন টার্ফে
মুহূর্তেই স্রোতের মতো সমর্থকেরা ঢুকে পড়লেন মাঠে
মোহামেডানকে হারিয়ে...
চেতনায় কুষ্টিয়া প্রতিবেদক ॥ মরমী সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩১তম তিরোধান দিবস ছিলো আজ রোববার
করোনার কারণে এবারও বাউল মেলার আয়োজন বাতিল করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন
তবে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আখড়াবাড়ি খোলা থাকায় জড়ো হয়েছেন সাধু-বাউল-ফকিররা
প্রথা অনুযায়ী তারা ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সাইঁজির চরণে
এবার করোনার প্রকোপ কম থাকায় বাউল মেলা হবে ধরে নিয়েই সাধু-ফকির, বাউল ভক্তরা আখড়ায় জড়ো হয়েছেন
লালন ধামে আখড়াবাড়ির ভেতরে এবং বাইরের মাঠের গাছতলায় অবস্থান নিয়েছেন তারা
করোনা পরিস্থিতির কারণে ১৩০ বছরের রেওয়াজ ভেঙে গত বছরই প্রথম বাতিল করা হয় লালনের এই স্মরণোৎসব
সে সময় করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ পর্যায়ে থাকায় আখড়াবাড়ির গেটও বন্ধ রাখা হয়েছিল
এবার করোনার প্রকোপ কম থাকায় বাউল মেলা হবে ধরে নিয়েই সাধু-ফকির, বাউল ভক্তরা আখড়ায় জড়ো হয়েছেন
লালন ধামে আখড়াবাড়ির ভেতরে এবং বাইরের মাঠের গাছতলায় অবস্থান নিয়েছেন তারা
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন অ্যাকাডেমির আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম গত ১২ অক্টোবার ঘোষণা দিয়েছেন, এবারও তিরোধান দিবস পালন হবে না
করোনার কারণে গণজমায়েত এড়িয়ে চলতে এ ঘোষণা দিতে হয়েছে বলে তিনি জানান
আখড়াবাড়ির বাইরে লালন অ্যাকাডেমির মাঠে নিজস্ব রেওয়াজে ভক্তি-শ্রদ্ধা দিতে দেখা গেছে লালন অনুসারীদের
ফকির জব্বার বলেন, এতো দূর থেকে আসলাম
টাকায় মায়া করি নাই, ত্যাগ করেছি আরাম
এসে মনটাই ভেঙে গেল
এখন সাঁইজিকে ভক্তি জানিয়ে চলে যাব
মেলা না হওয়ায় আমরা পাগলরা না খেয়ে থাকার মতো অবস্থা
সাধু সঙ্গ ও বাউল মেলা না হওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে অনেক বাউল, ফকির এবং লালন ভক্ত
তারপরও আখড়াবাড়ির ভেতরে ও বাইরে চলছে জাতপাতহীন-মানবতার লালন দর্শনের প্রচার
বরাবরের মতো দর্শন প্রচার হচ্ছে তারই গানের মাধ্যমে
কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া এখন লালনের গানের সুরে প্রকম্পিত
২০০ বছর আগে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় বাউল-ফকিরদের দল গঠন করেছিলেন ফকির লালন সাঁই
অহিংস, জাতপাতহীন ও মানবতাবাদী গান বেঁধে প্রচার করতেন তারা
দিনে দিনে তার দল বড় হতে থাকে
বাড়তে থাকে অনুসারী ও ভক্তের সংখ্যা
আজ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে লালনের গান, তার বাণী
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পয়লা কার্তিক দেহত্যাগ করেন ফকির লালন
এই ১৩১ বছর ধরে আখড়া বাড়িতে চলা রেওয়াজ হলো, পহেলা কার্তিক লালনের তিরোধান দিবসে তার মাজার ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে বাউল-ফকিরদের জন্য অধিবাস, বাল্যসেবা এবং পূর্ণসেবার (খাবার) আয়োজন
তিন দিন ধরে চলে মেলাসহ সরকারি অনুষ্ঠানমালা
দিন-রাত ধরে চলত গানে গানে লালন দর্শনের প্রচার
দেশ বিদেশের লাখ লাখ মানুষ এতে অংশ নিতেন
করোনার বাস্তবতায় দুই বছর বন্ধ এসব আয়োজন
ফকির-বাউলরা নিজেদের মতো করে সাঁইজিকে স্মরণ করতে পারছেন, তাতেই অনেকে খুশি
আখড়ায় এসে ফকির আলমঙ্গীর বলেন, ধরা আজ জরাক্রান্ত
এটা আমাদের মেনে নিতে হবে
সাঁইজির কৃপায় এসব কেটে যাবে
আবার সব স্বাভাবিক হবে
অনলাইন ডেস্ক : সবেমাত্র এসএসসি পাশ করেছি
আদুরে আমরা চার ভাইবো্নের মধে আমি হলাম দ্বিতীয়
ততোদিনে বড় আপুর বিয়ে হয়ে গিয়েছে
পালাবদলে এবার তাহলে আমার পালা, 'বিয়ের পালা'
তবে প্রকৃতির বৈষম্যে আমি আজ অসহায়
তাই আমি বর্তমান থাকতেও পালা চলে গেলো ছোট বোনের কাছে
দুর্ভাগ্যবশত সেখানেও 'বাঁধা' হয়ে রয়লাম এই 'আমি'
বোনটার বিয়ের কথা একদম পাকাপাকি
হঠাৎ বরপক্ষ থেকে কথা উঠল যে মেয়ের মেজো বোন তো 'হিজড়া'
তার ছোট বোন বিয়ে করায় যদি উত্তরসূরিও 'তাই' হয়! এই আলোচনা বরপক্ষে বেশ জোরাল ঝড় তুললো আর বিয়েটাও সে ঝড়ে ভেঙ্গেই গেল
এই 'আমি' টা আসলে কে? সেই সিদ্ধান্তহীনতায় যেনো সকল বাঁধার শুরু আমার জীবনে
এভাবেই নিজের কৈশোরের কথা বলছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের নাদিরা খানম
আজ তার পরিচয় এ নতুন কিছু বিশেষণও যোগ হয়েছে যদিও
গত ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোবাইল প্রতীক নিয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসন ৭ (১৮,২০ ও ২২ ওয়ার্ড) এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি
এর আগে যশোরের বাঘারপাড়া পৌরসভা এবং সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভাতেও সংরক্ষিত নারী আসনে তৃতীয় লিঙ্গের দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে থাকলেও, সিটি করপোরেশনে তিনিই প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী
সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ৭ (১৮,২০,২২) নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত
এই ওয়ার্ডে গাড়ি প্রতীক নিয়ে ফেরদৌসী বেগম ১৩৮৯৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন
আর নাদিরা খানম মোবাইল প্রতীক নিয়ে ৭৫৫১ পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন
সাত হাজার পাঁচশো একান্ন টি ভোট পেয়েছেন
তার মানে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সাড়ে সাত হাজার মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন উচ্চশিক্ষিত নাদিরা
সাড়ে সাত হাজার মানুষের মনে ঠাই করে নিয়েছেন
সামাজিকতার মুখোশে অসামাজিকতার শিকলে বাধা পেয়েও নাদিরা খানম নিজের জায়গা করে নিয়েছেন দ্বিতীয়তে
হয়তো ভোট যুদ্ধে হেরে গেছেন কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে ঠিকই জিতেছেন
সর্বোপরি জনগণের কাছে নিজেকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারার যুদ্ধে জিতে গেছেন 'মানুষ' নাদিরা খানম
আদমজী জুট মিলসের প্রোডাকশন ম্যানেজার সিরাজুল ইসলামের চার সন্তানের মধ্যে নাদিরা ‍দ্বিতীয়
তারা থাকতেন দিনাজপুরের নিউ টাউনের নিজ বাড়িতে
ছোট বোনের বিয়েতেও যখন সে বাধা হয়ে দাঁড়ায়
তখন তার নিজ বাবাকেই তার অপরিচিত ব্যক্তি বলে মনে হয়
পৃথিবীর সব থেকে নিষ্ঠুর মানুষ বলে মনে হয়
'এই সন্তানের জন্য কি আরেক সন্তানের জীবন নষ্ট হবে? একে বাড়ি থেকে বের করে দাও' এই বলে মাকে চাপ দিতে থাকে বাবা
পরবর্তীতে মায়ের কষ্ট দেখে নিজেই বাড়ি ছেড়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর মামার বাড়িতে চলে যায় নাদিরা
কিভাবে বাধা বিপত্তির মধ্যে থেকেও সমাজের অসামাজিকতার শিকলে আটকা পড়েও নিজের শিক্ষাজীবন চালিয়ে গিয়েছেন এর এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'মামার এক বন্ধু ছিলেন নিঃসন্তান
তিনিই আমাকে সন্তান হিসেবে লালন-পালনের দায়িত্ব নিলেন
দিনাজপুর আদর্শ ডিগ্রি কলেজ থেকেই বিএ পাস করি
পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগ থেকে এমএম পূর্বভাগে ভর্তি হই
'পালক বাবার' সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশুনা শেষ করি ১৯৯৯ সালে'
উল্লেখ্য, রাজধানীতে মানবদরদী একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ইমু আপার কথা সবাই কমবেশি জানি
মানুষটি অন্যের বিপদের সময় নিজের সবটুকু দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েন
তবে সহযোগিতা করতে গিয়েও বাধার সম্মুক্ষীণ হন
একবারের ঘটনা তার মনে দাগ কেটে বসে আছে বেশ
ঢাকা মেডিকেল কলেজে এক মুমুর্ষ রোগির জন্য রক্ত দরকার
রক্তের যখন খুব অভাব, তখন এগিয়ে আসলো ইমু আপা