content
stringlengths
0
129k
যখন মানুষের খুব প্রিয় কেউ তাকে অপছন্দ, অবহেলা কিংবা ঘৃণা করে তখন প্রথম প্রথম মানুষ খুব কষ্ট পায় এবং চায় যে সব ঠিক হয়ে যাক
কিছুদিন পর সে সেই প্রিয় ব্যক্তিকে ছাড়া থাকতে শিখে যায়
আর অনেকদিন পরে সে আগের চেয়েও অনেকবেশী খুশি থাকে যখন সে বুঝতে পারে যে কারো ভালবাসায় জীবনে অনেক কিছুই আসে যায় কিন্তু কারো অবহেলায় সত্যিই কিছু আসে যায় না
- হুমায়ূন আহমেদ
অবহেলা ভালোবাসা জীবন
সবাই তোমাকে কষ্ট দিবে, তোমাকে শুধু এমন একজন কে খুঁজে নিতে হবে যার দেয়া কষ্ট তুমি সহ্য করতে পারবে
- হুমায়ূন আহমেদ
তুমি প্রেম অনুভব অনুভুতি প্রেমপত্র ভালোবাসা দিবস প্রেমিকা অনুভূতি দর্শন উপদেশ প্রেমিক দুঃখ মায়া ভালোবাসা ভালোবাসি প্রেরণা
অপেক্ষা হলো শুদ্ধতম ভালোবাসার একটি চিহ্ন
সবাই ভালোবাসি বলতে পারে
কিন্তু সবাই অপেক্ষা করে সেই ভালোবাসা প্রমাণ করতে পারে না
নিন্দুকেরা পুরোপুরি অসৎ হ'তে পারেন না, কিছুটা সততা তাঁদের পেশার জন্যে অপরিহার্য; কিন্তু প্রশংসাকারীদের পেশার জন্য মিথ্যাচারই যথেষ্ট
বাংলাদেশে ই-কমার্স একটি উদীয়মান সেক্টর
আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৯ সাল থেকে ই-কমার্স বাংলাদেশে জনপ্রিয় হওয়া শুরু করেছে
যাই হোক বর্তমানে আমাদের দেশের ই-কমার্স সেক্টরের বাস্তবতা হচ্ছে বিক্রয় ডট কম, কেইমু, দারাজ ডট কম, আজকের ডিল ডট কম এর মতো কয়েকটি বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ছাড়া বেশিরভাগ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গুলোর বেশির ভাগ এক থেকে দুই বছর বয়স
এদের যারা উদ্যোক্তা আছে সবাই বয়সে তরুণ
ই-ক্যাব এর সদস্যদের দিকে তাকালেই এটি একদম পরিস্কার হয়ে যাবে
এসব তরুণ উদ্যোক্তারা পরিশ্রম করে অনেক বাঁধা-বিপত্তির মধ্যে দিয়ে তাদের ব্যবসা চালাচ্ছেন
তারা যে জিনিসটিকে সবচেয়ে বেশি ভয় পান তা হচ্ছে যখন আলিবাবা বা ফ্লিপকার্ট এর মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ই-কমার্স বাজারে আসবে এবং ব্যবসা করবে তখন তাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যাবেন
কারণ এসব বড় প্রতিষ্ঠান অনেক বিনিয়োগ নিয়ে নামবে এবং তারা যেহেতু ই-কমার্সে প্রতিষ্ঠিত ব্রান্ড তাই তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ছোট ছোট উদ্যোক্তারা ছিটকে পড়বেন
তাদের এত কষ্ট, এত চেষ্টা সব নষ্ট হয়ে যাবে
দুঃখজনক হলেও এ আশংকাটা অনেকাংশে সত্যি
অনেকেই হয়তো ছিটকে পড়বেন
কিন্তু বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে তো আর সেজন্যে আটকে রাখা যাবে না
তারা আসবে, বিনিয়োগ করবে
এখন কোটি টাকার প্রশ্ন হচ্ছে- তো আলিবাবা বা ফ্লিপকার্টের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠান আসলে কি করব আমরা? হাত গুটিয়ে বসে থাকব? অবশ্যই নয়
এবার আপনাদের অ্যামাজন সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য দেই
অ্যামাজন বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান গুলোর একটি এবং প্রায়শই আমরা খবর পাই যে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অফলাইন প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন এর কারণে চাপে পড়েছে
অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন ডট কম এর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে
হ্যা, এরকম ঘটনা ঘটেছে
এটাও সত্যি যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত অফলাইন প্রতিষ্ঠান যেমন- ওয়ালমার্ট, টার্গেট, বেস্ট বাই, হোম ডিপো এর মত বড় প্রতিষ্ঠান গুলো চাপের মুখে পড়েছে
কিন্তু এটাও দেশটির রিটেইল সেক্টরের পুরো চিত্র নয়
যুক্তরাষ্ট্রে মোট রিটেইল সেলস (অনলাইন এবং অফলাইন মিলিয়ে) মাত্র ৬.৬% হচ্ছে অনলাইন রিটেইল
এর মানে হচ্ছে অ্যামাজন যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্যই বড় একজন রিটেইলার কিন্তু সে সব নিয়ন্ত্রণ করে না
প্রথাগত দোকানগুলো এখনো দাপটের সাথে ব্যবসা করছে
এবার আরো একটি মজার তথ্য দেই, এ বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন (এনআরএফ) এর অংগ সংগঠন শপ ডট অর্গ "স্টেট অব রিটেইলিং অনলাইন ২০১৬: কি মেট্রিক্স, বিজনেস অবজেকটিভস অ্যান্ড মোবাইল" শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে বলা হয় যে যুক্তরাষ্ট্রে আট লক্ষের বেশি অনলাইন স্টোর আছে যারা বিভিন্ন ধরণের পণ্য বিক্রী করছে
এখন একটু ভাবুন, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামাজন এর ঠেলায় অনেকের ব্যবসা টিকছে না অনেকে সেখানে আট লাখের বেশি অনলাইন স্টোর ব্যবসা করছে কিভাবে?
তার মানে পুরো ব্যাপারটা আপনারা যতটা সিরিয়াসলি নিচ্ছেন ততটা সিরিয়াস না
এখন দ্বিতীয় কোটি টাকার প্রশ্ন হচ্ছে- ভাই, বুঝলাম যে অ্যামাজন সর্বেসর্বা নয়, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আছে কিন্তু তারা ব্যবসা করছে কিভাবে? কিভাবে তারা অ্যামাজন এর সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে আছে?
:
এর সন্তুষ্টিজনক উত্তর আপনাদের আমি দিতে পারব না
তবে ইন্টারনেট ঘাটতে গিয়ে দারুণ একটি আর্টিকেল চোখে পড়ে আমার
"- " (ই-কমার্স হচ্ছে ভালুক) শিরোনামের এ আর্টিকেলটির লেখক অ্যান্ডি ডান ( ) একজন সফল ই-কমার্স উদ্যোক্তা
২০১৩ সালে তিনি এই আর্টিকেলটি লেখেন
এর পরে ওই একই শিরোনামে একটি বক্তৃতাও দেন একটি অনুষ্ঠানে
সেটার ইউটিউবে ভিডিও আছে
অ্যান্ডি ডান এর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম বনোবস()
এটি একটি অনলাইন স্টোর এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
প্রতিষ্ঠানটি পুরুষদের শার্ট, প্যান্ট বিক্রী করে থাকেন
২০০৭ সাল থেকে বনোবস চালু হয় এবং এরা খুবই ভাল ব্যবসা করছে
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির গ্রস রেভিনিউ ছিল ৪ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১০ সালে ১০ মিলিয়ন
শুধু তাই নয়
বেশ কয়েকটি বড় বড় রিটেইল প্রতিষ্ঠান বনোবস ব্রান্ড এর পণ্য বিক্রী করে
তো যাই হোক, তার সেই প্রবন্ধে অ্যান্ডি ডান যেটি বলেন তা হচ্ছে
যেসব ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র বিভিন্ন ব্রান্ডের পণ্য অনলাইনে বিক্রী করে যাচ্ছেন তারা বড় বড় প্রতিষ্ঠান আসলে টিকতে পারবেন না
আমাদের এখানে ই-কমার্স উদ্যোক্তারা এখন কি করেন? তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে পণ্য সোর্স করে অনলাইনে বিক্রী করছেন
কেউ কেউ বিদেশী নামী-দামী ব্রান্ডের পণ্য বিক্রী করছে
দুই একজন আছেন যারা সত্যি সত্যি ব্যতিক্রম ধর্মী পণ্য বিক্রী করে থাকেন যেগুলো সব জায়গায় পাওয়া যায় না যেমন-শুটকি মাছ, আসল দেশী জামদানী শাড়ি ইত্যাদি
ধরা যাক, আগামী বছরে আলিবাবা বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করল, তারাও বিদেশী ব্রাণ্ডের পণ্য বিক্রী করবে এবং বাজার দখলের জন্যে অনেক বড় ডিসকাউন্টে বিক্রী করবে এবং তখন অনেক ক্ষুদ্র ই-কমার্স ব্যবসায়ী তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবেন না
এটাই স্বাভাবিক
যুক্তরাষ্ট্রেও অ্যামাজনের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে
তাহলে এখন কি করা যায়? অ্যান্ডি ডান চারটি পন্থার কথা তার আর্টিকেলে উল্লেখ করেছেন- প্রোপ্রাইটারি প্রাইসিং, প্রোপ্রাইটারি সেলেকশন, প্রোপ্রাইটারি এক্সপেরিয়েন্স, এবং প্রোপ্রাইটারি মার্চেন্ডাইজ
প্রোপ্রাইটারি প্রাইসিং:
আপনার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রাইসিং মডেল হতে হবে ইউনিক
জিনিস পত্রের দাম যে কোন ক্রেতার জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
আপনি এমন দামে পণ্য দেন যে ক্রেতা আকৃষ্ট হয় তাহলে আপনার পণ্য বিক্রী হবে
যেমন- রু লা লা, গিল্ট গ্রুপ এ দুটি যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক অনলাইন স্টোর
রু লা লা অনলাইন বুটিক এবং গিল্ট গ্রুপ ফ্যাশন পণ্য বিক্রী করে থাকে এবং তাদের ব্যবসার মডেল হচ্ছে ফ্লাশ সেলস
কিন্তু যে কেউ এ স্টোরে কেনাকাটা করতে পারে না
এখানে কেনাকাটা করতে হলে সদস্য হতে হয়
আপনাকে এমন প্রাইসিং পয়েন্টে পণ্য বিক্রী করতে হবে যা সচরাচর অন্যান্য অনলাইন স্টোরে পাওয়া যায় না
প্রোপ্রাইটারি সেলেকশনঃ
আপনি আপনার ই-কমার্স সাইটে সব ধরণের পণ্য বিক্রী না করে বাছা বাছা কিছু পণ্য বিক্রী করতে থাকলেন যেগুলো সহজে পাওয়া যায় না
আপনি দেখেশুনে বাছা বাছা প্রতিষ্ঠান বা সেলারের কাছে থেকে সেরকম পণ্য সংগ্রহ করে অনলাইনে বিক্রী করবেন
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বড় উদাহারণ হতে পারে অনলাইনে কক্সবাজারের শুটকি মাছ বিক্রী
ঢাকা শহরে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ এসে বাস করে
অনেক জেলায় অনেক ধরণের সবজি বা মাছ হয় যেগুলো ঢাকার বড় বড় বাজারে বিক্রী হয় না কারণ এগুলোর তেমন চাহিদা নেই
কিন্তু আপনি অনলাইনে সেই মাছ বা সবজি বিক্রী করতে পারেন
আপনি সেই জেলার স্থানীয় উৎপাদকদের থেকে সরাসরি পণ্য সোর্সিং করেন
এটাই হচ্ছে প্রোপ্রাইটারি সেলেকশন
প্রোপ্রাইটারি এক্সপেরিয়েন্সঃ
আপনার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ক্রেতাকে এমন কিছু সেবা দেন যেগুলো সচরাচর অন্যকোথাও পাওয়া যায় না
এখানে আমি একটি যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করি
প্রতিষ্ঠানটির নাম হচ্ছে ডলার শেইভ ক্লাব
এ সাইটটি অনলাইনে শেইভিং এর সরঞ্জাম বিক্রী করে থাকে
এখানে আপনি লোশন ক্রীম ইত্যাদি কিনতে পারবেন
আমরা যারা শেইভ করে থাকি তাদের জন্যে ব্লেইড কেনা একটি ঝামেলার ব্যাপার
ডলার শেইভ ক্লাবে আপনি সদস্য হতে পারবেন
মাসে ১ ডলার, ৬ ডলার বা ৯ ডলার সাবস্ক্রীপশন ফি
প্রতিমাসে আপনার বাসায় সুন্দর বাক্সতে করে আপনার কাছে আপনার পছন্দের শেভিং ব্লেইড চলে আসবে
বনোবস এর কথাই বলি
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় বনোবস এর গাইড শপ আছে
এসব অফলাইন দোকানে বনোবস এর পণ্য সব সাজান থাকে এবং ভাল প্রশিক্ষিত সেলস পার্সন থাকে যারা ক্রেতাকে বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ প্রদান করে
একজন ক্রেতা এসে দোকানে বনোবস এর পণ্যগুলো ট্রায়াল দিয়ে দেখে
যদি ভাল লাগে সে তৎক্ষণাৎ বনোবস এর ওয়েবসাইটে ঢুকে কিনে ফেলে এবং বনোবস তাকে ডেলিভারি দিয়ে দেয়
তাহলে খরচ করে দোকান রাখার মানেটা কি? দোকান থেকে কিনলে যেটা হবে আপনাকে একটা শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে ঘুরতে হবে সারাটা দিন
আপনি হয়তো দোকান থেকে বাসায় যাবেন না
অফিসে যাবেন বা বিভিন্ন জায়গায় যাবেন এবং পুরোটা সময় আপনাকে সেই শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে ঘুরতে হবে
আপনি যদি ভুলে কোথায় শপিং ব্যাগটা রেখে আসেন তাহলে আপনার টাকাও গেল প্যান্টও গেল