content
stringlengths 0
129k
|
---|
১৯৫৯ সালে তিনি করাচি এনএসএফের সভাপতি নির্বাচিত হন
|
কিন্তু তার পরের বছরই ঘটে যায় উল্টো ঘটনা
|
তরুণ মুনাওয়ারের কাছে এসে পড়ে মাওলানা মওদূদী ও নঈম সিদ্দিকীর কিছু বই
|
বইগুলো পড়ে ব্যকুল হয়ে পড়েন সাইয়েদ মুনাওয়ার হাসান
|
নিজের মুসলিম পরিচয় তার কাছে আবার নতুনভাবে ধরা পড়ে
|
১৯৬০ সালে তিনি তার বামপন্থী আদর্শ ত্যাগ করেন
|
ঈমান বিধ্বংসী রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে যুক্ত হন ইসলামের সুমহান আদর্শে
|
নতুনভাবে তৈরি করেন নিজেকে
|
মেধাবী মুনাওয়ার হাসান অল্প সময়ের মধ্যেই নতুন আদর্শকে নিজের মধ্যে ধারণ করেন
|
শুধু তাই নই ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করার জন্য যোগ দেন ইসলামপন্থী ছাত্র সংগঠন ইসলামী জমিয়তে তালাবাতে
|
এর চার বছর পর মুনাওয়ার হাসান পাকিস্তান ইসলামী জমিয়তে তালাবার কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন
|
জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে তিনি তার দক্ষতা ও যোগ্যতার সুস্পষ্ট ছাপ অংকন করেন
|
ধারাবাহিকভাবে ইসলামী আন্দোলনে ভূমিকা রেখে ২০০৯ সালে তিনি পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর নির্বাচিত হন
|
২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান আমীরে জামায়াত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন
|
গত শুক্রবার অর্থাৎ ২৬ জুন ২০২০ সালে তিনি মহান প্রতিপালকের ডাকে সাড়া দিয়ে এই নশ্বর দুনিয়া ছেড়ে যান
|
জন্ম ও শৈশব
|
সাইয়্যেদ মুনাওয়ার হাসান জন্মগ্রহণ করেন ভারতের দিল্লীতে
|
১৯৪১ সালের ৫ আগস্টে মুনাওয়ার হাসান জন্ম নেন
|
তার শিশুবেলাতেই তিনি তার পরিবারের সাথে ভারত থেকে পাকিস্তানে চলে যান
|
এটা ছিল দেশ ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের সময়ের ঘটনা
|
সেসময়ের পাকিস্তানের রাজধানী করাচিতেই তার পরিবার সেটেল হয়
|
তার শৈশব ও শিক্ষাজীবন সবই কাটে করাচিতে
|
পড়াশোনায় আগ্রহী ও মেধার সাক্ষর রাখেন সাইয়্যেদ মুনাওয়ার হাসান
|
তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুইটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন
|
তার প্রথম বিষয় ছিলো সমাজবিজ্ঞান
|
পরে ইসলামী আদর্শে পরিবর্তিত হওয়ায় ইসলাম সম্পর্কে আরো বেশি জ্ঞান হাসিল করার উদ্দেশ্যে তিনি ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স করেন
|
এছাড়াও তিনি ভার্সিটিতে একজন ভালো বক্তা হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন
|
একইসাথে তিনি ভালো বিতার্কিকও ছিলেন
|
ছাত্র রাজনীতি
|
স্কুল জীবন থেকেই মুনাওয়ার হাসান বামপন্থী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন
|
১৯৫৭ সালে এনএসএফের নেতা হিসাবে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন
|
১৯৫৯ সালে তিনি এনএসএফের করাচি'র সভাপতি নির্বাচিত হন
|
তবে ১৯৬০ সালে তিনি আদর্শিক মোড় নিয়ে ইসলামী জমিয়তে তালাবাতে যোগ দেন
|
১৯৬৭ সালে মূলধারার জাতীয় রাজনীতিতে যোগদান না করা পর্যন্ত তিনি ইসলামী জমিয়তে তালাবার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন
|
১৯৬২ সালে জমিয়তে তালাবার করাচি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন
|
এর পরের বছর তিনি জমিয়তে তালাবার করাচি শাখার সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন
|
১৯৬৪ সালে সাইয়্যেদ মুনাওয়ার হাসান ইসলামী জমিয়তে তালাবার কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন
|
তিনি পর পর তিন বছর একই পদে দায়িত্ব পালন করেন
|
তিনি পাকিস্তানের ছাত্রদের কাছে ও ইসলামপ্রিয় জনতার কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন
|
করাচির লোকেরা তাকে ভালোবেসে দিল্লিওয়ালা ভাই ও মুন্নু ভাই নামে ডাকতো
|
জাতীয় রাজনীতিতে পদার্পন
|
১৯৬৭ সালে মুনাওয়ার হাসান জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানে মাধ্যমে পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন
|
তিনি ১৯৭৭ সালে জাতীয় নির্বাচনে করাচির একটি আসন থেকে জামায়াতের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন
|
সাইয়্যেদ মুনাওয়ার হাসান তার আসন থেকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন
|
কিন্তু এরপর সামরিক শাসন জারি করে এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হয়
|
১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত মুনাওয়ার হাসান জামায়াতের করাচি শাখার আমীরের দায়িত্ব পালন করেন
|
১৯৯১ সালে তিনি পাকিস্তান জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত হন
|
১৯৯২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন
|
সেসময় পাকিস্তানের আমীরে জামায়াত ছিলেন কাজী হুসাইন আহমদ
|
সেসময় থেকে মুনাওয়ার হাসান করাচি থেকে জামায়াতের সদর দপ্তর লাহোরে চলে আসেন
|
এরপর ২০০৯ সালে তিনি পাকিস্তান জামায়াতের ৪র্থ আমীর হিসেবে নির্বাচিত হন
|
২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন
|
সাদাসিদে জীবনযাপন
|
সাইয়্যেদ মুনাওয়ার হাসান তার প্রথম জীবনে একটি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন
|
এরপর ইসলামিক রিচার্স একাডেমিতে যোগদান করেন
|
১৯৬৯ সালে তিনি রিচার্স একাডেমির সেক্রেটারি হন
|
এছাড়াও তিনি নানান সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেন
|
সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের নিমিত্তে তিনি স্থায়ীভাবে তার পেশাগত কাজ করতে পারেন নি
|
শেষদিকে জামায়াত কর্তৃক নির্ধারিত সামান্য ভাতাই ছিল তার জীবিকার উৎস
|
কয়েক দশক ধরে তিনি করাচিতে জামায়াত নেতা নেয়ামতুল্লাহ খানের বাড়ির দুটি রুম নিয়ে থাকতেন
|
তার স্ত্রী আয়েশা মুনাওয়ারও পুরোদস্তুর জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন
|
তিনি মহিলা শাখার সেক্রেটারি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন
|
মুনাওয়ার হাসান এতোটাই অনাড়ম্বর ছিলেন যে, তার মেয়ের বিয়েতে পাওয়া সমস্ত উপহার বায়তুল মালে জমা করে দিয়েছিলেন
|
পরহেজগারীতা ও আমানতদারীতায় তার মতো মানুষ দুনিয়ায় খুবই নগণ্য
|
তিনি তার সমগ্র জীবনে রাজনীতির চাইতে আদর্শকে বেশি প্রাধান্য দিতেন
|
তিনি দীর্ঘদিন যাবত জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন
|
সবশেষে চলমান মহামারী কোভিড-১৯-এ তিনি আক্রান্ত হন
|
২৬ জুন শুক্রবার পবিত্র দিলে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন
|
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাঁকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন
|
:
|
এটি ইমেল করুনএটি ব্লগ করুন!-এ শেয়ার করুন-এ শেয়ার করুন
|
নবীনতর পোস্ট পুরাতন পোস্ট হোম
|
0 :
|
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
|
ফেসবুক পাতা
|
টুইটারে সাথে থাকুন
|
@_
|
কালো পঁচিশ কি আসলেই কালো?
|
২৫ মার্চের আলোচনায় যাওয়ার আগে একটা ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি
|
আপনারা জানেন চট্টগ্রামে ছাত্রশিবির এবং জামায়াতের ব্যপক প্রভাব
|
চট্টগ্রামের আ. ল...
|
১৪ই ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী কারা?
|
১৯৭১ সালে নিহতদের মধ্যে যারা বুদ্ধিজীবী হিসেবে চিহ্নিত এরকম আছেন প্রায় ৩৬ জন
|
এদের মধ্যে আঠার জন ১৪ই ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন
|
সীমানাভাঙা বিপ্লবের কবি আল্লামা ইকবাল
|
আল্লামা ইকবাল যখন জন্ম নিলেন তখন মুসলিম নেতৃত্বের সূর্য অস্তমিত হচ্ছে
|
তিনি যখন যৌবনে তখন মুসলিম সালতানাত ভেঙে খান খান হচ্ছে
|
ইউরোপিয়ানদের জ...
|
বঙ্গকথা পর্ব-৭৪ : ১৯৭১ সালের হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও সত্যাসত্য প্রসঙ্গ
|
বাংলাদেশে ৫০ বছরে এই পর্যন্ত ৭১ এর হত্যাযজ্ঞ নিয়ে ভালো কোনো তালিকা বা রেকর্ড তৈরি করেনি এদেশের কোনো সরকার
|
বরং পারলে বাধা দিয়েছে
|
মুজিব সরক...
|
৭ নভেম্বর কী হয়েছিল? কারা ঘটিয়েছিল? কেন ঘটিয়েছিল?
|
খালেদ মোশাররফ, কর্নেল তাহের, জিয়াউর রহমান ২ থেকে ৭ নভেম্বর
|
বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কুয়াশাচ্ছন এবং ঘোলাটে অধ্যায়
|
অনেকে এটাকে বলেন...
|
এক গ্রামে এক কৃষক ছিলেন
|
তিনি সকাল বেলা তার ক্ষেতে চারা লাগাচ্ছিলেন
|
যোহরের আজান হলো
|
আজান শুনে তিনি বাড়ি গেলেন
|
Subsets and Splits
No community queries yet
The top public SQL queries from the community will appear here once available.