content
stringlengths
0
129k
তাদের অনুসারীরা এখনও হুসাইনের জানাজা বহন করছেন
হুসাইনের মৃত্যুতে রোদন করা যদি আহলে বাইতের প্রতি তাদের প্রকৃত ভালবাসার প্রমাণ হয়, তাহলে হুসাইনের প্রতি তাদের ভালবাসা সত্য হলে তারা হামজাহ (রা:)এর মৃত্যুতে রোদন করে না কেন?
হুসাইনের উপর তাদের এই কান্না যদি আহলে বাইতের প্রতি অগাধ ভালবাসার কারণেই হত, তাহলে শহীদদের সরদার রাসূলের চাচা হামজা (রা:)এর মৃত্যুতে তারা ক্রন্দন করে না কেন? তাঁকে যে নির্মমভাবে ও পাশবিকতার হত্যা করা হয়েছে, হুসাইন হত্যার পাশবিকতার চেয়ে তা কোন অংশে কম নয়
সায়্যেদ হামজাকে হত্যা করে তাঁর পেট ফেরে কলিজা বের করা হয়েছে
তারা কেন এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বাৎসরিক মাতম করে না? তাদের বুক ও চেহারায় আঘাত করে না কেন? কাপড় টেনে ছিঁড়ে না কেন? প্রতি বছর যখন উহুদ যুদ্ধের দিন ও তারিখ আসে তখন তলোয়ার খেলায় মেতে উঠে না কেন? সায়্যেদ হামজাহ কি আহলে বাইতের একজন সম্মানিত সদস্য নন? এখানেই শেষ নয়; রাসূলের মৃত্যুর চেয়ে অধিক বড় কোন মুসীবত আছে কি? তাঁর মৃত্যুতে তাদের ক্রন্দন ও মাতম কোথায়? সচেতন পাঠকদেরকেই এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করে নিতে হবে এবং কারও আকীদায় ত্রুটি থাকলে লেখাটি পড়েই তা সংশোধন করে নিতে হবে
অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, তাদের কাছে হুসাইনই সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ
কি কারণে তাদের কাছে এত প্রিয়? উত্তর পূর্বে উল্লেখ করেছি
সেটিই আসল কারণ? না ইমাম হুসাইন কর্তৃক একজন পারস্য মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন, তাই এত ভালবাসা? উভয়টিই এর কারণ হতে মানা কোথায়? হুসাইন ও তাঁর পিতা আলী বিন আবু তালিব সম্পর্কে তাদের অন্যান্য আকীদাহ-বিশ্বাসের দিকে না গিয়ে এখানেই ছেড়ে দিলাম
১৭) হুসাইন রা. এর মাথা কোথায় গিয়েছিল?
দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে হুসাইনের মাথা প্রেরণের বর্ণনা সহীহ সূত্রে প্রমাণিত হয় নি
বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে, তিনি কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছেন
তাঁর সম্মানিত মাথা কুফার গভর্নর উবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়
আনাস বিন মালিক (রা:) বলেন: হুসাইনের মাথা উবাইদুল্লাহ এর কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি তাঁর মাথাকে একটি থালার মধ্যে রেখে একটি কাঠি হাতে নিয়ে তা নাকের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করিয়ে নাড়াচাড়া করছিলেন এবং তাঁর সৌন্দর্য দেখে সম্ভবত বেখেয়ালে কিছুটা বর্ণনাও করে ফেলেছিলেন
হাদীছের শেষের দিকে আনাস (রা:) বলেন: হুসাইন (রা:) ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সবচেয়ে বেশী সাদৃশ্যপূর্ণ
অন্য বর্ণনায় আছে, আনাস (রা:) বলেন: আমি উবাইদুল্লাহকে বললাম, তোমার হাতের কাঠি হুসাইনের মাথা থেকে উঠিয়ে ফেল
কারণ আমি তোমার কাঠি রাখার স্থানে রাসূলের পবিত্র মুখ দিয়ে চুমু খেতে দেখেছি
এতে কাঠি সংকোচিত হয়ে গেল
(দেখুন: ফতহুল বারী ৭/৯৬)
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, এরপর কোথায় হুসাইনের কবর হয়েছে এবং তাঁর মাথা কোথায় গিয়েছে, তা সঠিক সূত্রের মাধ্যমে জানা যায় নি
প্রকৃত ও সঠিক জ্ঞান আল্লাহর নিকটেই
১৮) যেমন কর্ম তেমন ফল:
পরবর্তীতে আল-আশতার নাখয়ীর হাতে উবাইদুল্লাহ বিন যিয়াদ নির্মমভাবে নিহত হন
যখন নিহত হলেন তখন তার মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে মসজিদে রাখা হল
তখন দেখা গেল একটি সাপ এসে মাথার চারপাশে ঘুরছে
পরিশেষে উবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদের নাকের ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে মুখ দিয়ে বের হল
ফের মুখ দিয়ে প্রবেশ করে নাকের ছিদ্র দিয়ে তিনবার বের হতে দেখা গেল
(দেখুন: তিরমিযী, ইয়াকুব বিন সুফীয়ান)
১৯) ইয়াজিদ সম্পর্কে একজন মুসলিমের ধারণা কেমন হওয়া উচিত:
তাফসীর, হাদীছ, আকীদা, এবং ইতিহাস ও জীবনীর কিতাবগুলো অধ্যয়ন করে যতদূর জানতে পেরেছি, তাতে দেখা যায় সালফে সালেহীনের নিকট গ্রহণযোগ্য এবং অনুকরণীয় কোন ইমামের কিতাবে ইয়াজিদের উপর লানত করা বৈধ হওয়ার কথা আজ পর্যন্ত খুঁজে পাই নি
কেউ তার নামের শেষে রাহিমাহুল্লাহ বা লাআনা হুল্লাহ- এ দু'টি বাক্যের কোনটিই উল্লেখ করেন নি
সুতরাং তিনি যেহেতু তার আমল নিয়ে চলে গেছেন, তাই তার ব্যাপারে আমাদের জবান দরাজ করা ঠিক নয়
তাকে গালাগালি করাতে আমাদের ক্ষতি ছাড়া আর কিছু অর্জিত হবে না
তার আমল নিয়ে তিনি চলে গেছেন
আমাদের আমলের হিসাব আমাদেরকেই দিতে হবে
তার ভাল মন্দ আমলের হিসাব তিনিই দিবেন
ইমাম যাহাবী ইয়াজিদের ব্যাপারে বলেন:
لانسبه ولانحبه
অর্থাৎ "আমরা তাকে গালি দিবো না এবং ভালও বাসবো না
" মদ পান করা, বানর নিয়ে খেলা করা, ফাহেশা কাজ করা এবং আরও যে সমস্ত পাপ কাজের অপবাদ ইয়াজিদের প্রতি দেয়া হয়, তা সহীহ সূত্রে প্রমাণিত নয়
তবে তাঁর চেয়ে হুসাইন যে বহু গুণে শ্রেষ্ঠ ছিলেন, তাতে কোন সন্দেহ নেই
সুতরাং তিনি মুসলিম ছিলেন
তার জীবনের শেষ মুহূর্তে আমরা যেহেতু উপস্থিত ছিলাম না, তাই তার ব্যাপারটি আল্লাহর উপর ছেড়ে দেয়াই অধিক নিরাপদ
তা ছাড়া বুখারী শরীফের একটি হাদীছে তার ক্ষমা পাওয়ার প্রতি ইঙ্গিত পাওয়া যায়
সেখানে আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আমার উম্মতের একটি দল কুস্তুনতীনিয়ায় যুদ্ধ করবে
তাদেরকে ক্ষমা করা দেয়া হবে
জানা যাচ্ছে, ইয়াজিদ বিন মুআভীয়া ছিলেন সেই যুদ্ধের সেনাপতি
আর হুসাইন তাতে সাধারণ সৈনিক হিসেবে শরীক ছিলেন
সুতরাং ইয়াজিদও ক্ষমায় শামিল হতে পারে
আল্লাহই ভাল জানেন
২০) উপসংহার:
হুসাইনরে মৃত্যু নিয়ে লোকেরা তিনভাগে বিভক্ত
একদলের মতে তিনি অন্যায়ভাবে মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য ইয়াজিদের শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন
তাই তাঁকে হত্যা করা সঠিক ছিল
তারা বুখারী শরীফের এই হাদীছ দিয়ে দলীল দেয়ার চেষ্টা করে থাকেন
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
من جاءكم وأمركم على رجل واحد يريد أن يفرق جماعتكم فاقتلوه
"একজন শাসকের সাথে তোমরা ঐক্যবদ্ধ থাকা অবস্থায় যদি তোমাদের জামআতে বিভক্তি সৃষ্টির জন্য কেউ আগমন করলে তাকে হত্যা করো
" (বুখারী)
তারা বলেন: মুসলিমরা ইয়াজিদের শাসনের উপর ঐক্যবদ্ধ ছিলেন
হুসাইন এসে সেই ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছেন
সুতরাং তাঁকে হত্যা করা যুক্তিসংগত হয়েছে
অন্যদল মনে করেন হুসাইনই ছিলেন খেলাফতের একমাত্র হকদার
তাঁর আনুগত্য করা ব্যতীত অন্য কারও অনুসরণ করা বৈধ ছিল না
জামআত, জুমআসহ ইসলামের কোন কাজই তাঁর পিছনে বা তাঁর নিয়োগ কৃত প্রতিনিধি ছাড়া অন্য কারও অনুসরণ করে সম্পাদন করলে তা বাতিল হবে
এমন কি তাঁর অনুমতি ব্যতীত শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করাও বৈধ ছিল না
এমনি আরও অনেক কথা
এই দলের কথার সমর্থনে কোন সুস্পষ্ট দলীল খুঁজে পাওয়া যায় নি
আর উপরোক্ত উভয় দলের মাঝখানে হচ্ছে আহলে সুন্নত ওয়াল জামআতের মাজহাব
তাঁরা উপরের দুটি মতের কোনটিকেই সমর্থন করেন না
বরং তাঁরা বলেন: হুসাইন মজলুম ও শহীদ অবস্থায় নিহত হয়েছেন
তিনি মুসলিম জাতির নির্বাচিত আমীর বা খলীফা ছিলেন না
সুতরাং দ্বিতীয় মতের পোষণকারীদের কথা ঠিক নয়
আর যারা বুখারী শরীফের হাদিছকে দলীল হিসেবে পেশ করে হুসাইনকে হত্যা করা বৈধ হওয়ার কথা বলে থাকেন তাদের দলীল গ্রহণ সঠিক নয়
হাদীছ কোনভাবেই তাদের কথাকে সমর্থন করে না
কারণ তিনি যখন তাঁর চাচাতো ভাই মুসলিম বিন আকীলের চিঠি পেলেন তখন খেলাফতের দাবী ছেড়ে দিয়ে ইয়াজিদের সৈনিকদের কাছে তিনটি প্রস্তাব পেশ করেছেন
• সিরিয়ায় গিয়ে তাঁকে ইয়াজিদের সাথে সাক্ষাত করতে দেয়া হোক
• অথবা তাকে মুসলিম রাজ্যের কোন সীমান্তের দিকে যেতে দেয়া হোক
• অথবা তাঁকে মদিনায় ফেরত যেতে দেয়া হোক
কিন্তু তারা কোন প্রস্তাবই মেনে নেয় নি
বরং তারা তাঁকে আত্ম সমর্পণ করে তাদের হাতে বন্দী হওয়ার প্রস্তাব করল
অস্ত্র ফেলে দিয়ে তাদের পাল্টা প্রস্তাব মেনে নেওয়া হোসাইনের উপর মোটেই ওয়াজিব ছিল না
সুতরাং তিনি বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করাকেই বেছে নিলেন এবং ইয়াজিদের বিরাট বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শন করে শাহাদাত বরণ করলেন
পরিশেষে বলতে চাই যে, হুসাইনের মৃত্যু ও কারবালার ঘটনা নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করা কোন মুসলিমের কাজ হতে পারে না
এই হত্যা কাণ্ডের ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে অন্যান্য মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড থেকে আলাদা কোন ঘটনা নয়
এ জাতিয় সকল ঘটনাকে সমানভাবে মূল্যায়ন করা উচিত
বিষাদসিন্ধু মুসলিমদের কোন মূলনীতির গ্রন্থ নয়
এটি একটি কাল্পনিক উপন্যাস মাত্র
তা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মুসলিম জাতি ঐতিহাসিকভাবে একটি প্রমাণিত সত্যকে বাদ দিয়ে কাল্পনিক কাহিনীকে কখনই সত্য হিসাবে গ্রহণ করতেপারে না
هذا وصلى الله على نبينا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين
://../ ://../ ://../ ://../
বিকন ফার্মার শেয়ারহোল্ডাররা ৩৪ কোটি টাকা লভ্যাংশ পাবেন পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর শরীরে গরম তেল ঢেলে দিয়েছেন স্ত্রী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ৩ ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় লিঙ্গের ঋতুর জয় হাসপাতালে নবজাতক রেখে পালালেন 'মা-বাবা' আঘাত পেয়ে টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন ইয়াসির, মসজিদে ভোটগ্রহণ, সমালোচনার ঝড় ইরানের পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবন: রাশিয়া খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হয়েছে , বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ আজ ৩ কোম্পানির পর্ষদ সভা
শেয়ার বাজার
তিন কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন
আপডেট টাইম: বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০
৮৮ বার দেখা হয়েছে
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩ কোম্পানি ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করেছে
১/ প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ২/অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স ৩/ ইস্টার্ণ ক্যাবলস লিমিটেড
সূত্র ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই)
জানা গেছে, আলফা ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (আলফারেটিং) অনুযায়ী প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের দীর্ঘমেয়াদী রেটিং হয়েছে 'এ+'
আর স্বল্পমেয়াদী রেটিং হয়েছে 'এসটি-২'