content
stringlengths
0
129k
অভার এন্ড আউট
মানবতার কথা এই ইস্যুতে আসবেই না
এইটা হইলো কমনসেন্স
এইবার আসি 'আইডেন্টিটি ' বা পরিচয় লিপিবদ্ধ করে রেখে, মিল্ক ব্যাংক চালানোর ব্যাপারে -
প্রক্রিয়াটি জটিল, জটিলতর
প্রায়ই অসম্ভব
লেটস হ্যাভ আন একজ্যাম্পল -
মিল্ক ব্যাংকে দুধ জমা করি
আমার দুধ পান করলো যশোরের কোনো এক মেয়ে শিশু
সেই শিশুকে আমি চিনি না
বড় হয়ে সে পড়াশোনা করতে এলো ঢাকায়
ভর্তি হলো একই কলেজে বা ভার্সিটিতে
যেখা‌নে আমার ছেলেও পড়ে
দুজনের মধ্যে ভাব হলো
প্রেম হলো
বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলো
কিন্তু আমি মানলাম না
ছেলেকে নিজের পছন্দে বিয়ে করাবো -তাই
কিন্তু তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেললো আমার অমতে
মেয়েকে যেহেতু আমি দেখিও নাই সেহেতু চেনার প্রশ্ন আসবে না
যাকে দুধ পান করালাম, সে হয়তো জানেই না সে তার শাশুড়ীর দুধ খেয়ে বেঁচে উঠেছিল
যেহেতু সে বাচ্চা ছিলো, তার জানার কথা না
যারা জানতো, তারাও জানায় নাই
জানানোর প্রয়োজন মনে করে নাই
অথবা জানলেও, যার সঙ্গে প্রেম করেছে -সে যে আমার ছেলে তা তো জানে না
সুতরাং আইডেন্টিটি শতভাগ নিশ্চিত রেখেও, ভাই -বোনকে বিয়ে করা ঠেকিয়ে রাখা যাবে এইটা আমি মানি না
হ্যাঁ, এমনটা হবেই তা হয়তো না
কিন্তু হতেও পারে
হু নৌজ! সন্দেহ থেকে যায়
আর কোনো কিছুতে সন্দেহ থাকলে, ইসলাম তা থেকে বিরত থাকার আদেশ দেয় বলেই জানি
কে পড়ে থাকবে এতো বছর আগের মিল্ক ব্যাংক থেকে দুধ পান করার ঘটনা নিয়ে?
এমনকি জানলেও, প্রেম ভালোবাসা হয়ে গেলে পোলাপান ধর্ম -টর্মও তো মানে না
সেখান দুধ ভাই -বোন কেয়ার করবে তাও বা বিশ্বাস করি কীভাবে?
এইবার কমনসেন্স বাদ
লেটস বি ইন্টালিজেন্ট -
বিজ্ঞান বলে ভাই - বোনের মধ্যে বিবাহ হলে জেনেটিক সমস্যা দেখা যায়
যেটাকে অটোসমাল রিসেসিভ বলে
অর্থাৎ সন্তান বিকলাঙ্গ হবার পসিবিলিটি খুবই বেশি
অজুহাত উঠবে এইটা তো আর একই গর্ভের ভাই -বোন না
কিন্তু বিজ্ঞান জানাচ্ছে - তফাৎ নাই
১৯৭০ -এ মায়ের দুধে রেট্রোভাইরাসের মতো একটা উপাদান আবিস্কৃত হয়
যেটাকে বলে মাইক্রোভেসিকেল
কিন্তু তা কীভাবে কাজ করে অজানা ছিলো
২০০০ সালে বিজ্ঞান আমাদেরকে জানায় - মায়ের দুধের এপিথেলিয়াল সেল ' এমএফজি '( মিল্ক ফ্যাট গ্লোবিউলস) নামক একটা ফর্ম গঠন করে
এইটার ভেতরেই মাইক্রোভেসিক্যলটা লুকানো থাকে
এই মাইক্রোভেসিক্যল হচ্ছে রেট্রোভাইরাসের রিভার্স ট্রান্সক্রিপটস
মাইক্রোভেসিক্যল কী কাজ করে?
মায়ের দুধের সঙ্গে তা শিশুর পেটে যায়
যেহেতু এইটা লং লাস্টিং জিনিস, পাকস্থলীর এসিড এইটাকে হজম করতে পারে না
মাইক্রোভেসিক্যালে থাকা এমআরএনএ (মেসেঞ্জার অব আরএনএ, যেটা ফ্যামিলির জেনেটিক ইনফরমেশন বহন করে) এবং রিভার্স ট্রান্সক্রিপট এনজাইম বা প্রোটিন পাকস্থলীর ইন্টেস্টেন বা অন্ত্রে পৌঁছে যায় অক্ষত
যেহেতু মাইক্রোভেসিক্যলের সাইজ ছোট (৫৫ এনএম) তা ক্যাভিউলার এন্ডোসাইটোসিসের মাধ্যমে রক্তে মিশে যায়
সেখান থেকে যায় এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকিউলামে
তা থেকে নিউক্লিয়াস সেলে
তারপর মাইক্রোভেসিক্যালে থাকা এমআরএনএ এবং রিভার্স ট্রান্সক্রিপট এনজাইম ডিএনএ তৈরী করে
সেই সাথে এমআরএনএ ব্যবহার করে নতুন জিন প্রস্তুত করে ডিএনএ 'র উভয় স্ট্র্যান্ডসের জন্যে
এই মাইক্রোভেসিক্যলকে বলে মিল্ক ট্রান্সক্রিপ্টম
এতে থাকে ১৪০০০ এক্টিভ জিন
অর্থাৎ দুধের মাধ্যমে শিশুর জিন পরিবর্তন হয়ে যায়
ফলে যে নারী অন্যের শিশুকে দুধ পান করায়, সেই সন্তান শুধু দুধের সম্পর্কে সন্তান হয়ে থাকে না
বায়োলজিক্যালিও নিজ সন্তান হয়ে যায়
গর্ভধারণ না করেও
সুতরাং দুধ সন্তানের সঙ্গে নিজ সন্তানের বিয়ে হলে, তাদের সন্তান বিকলাঙ্গ হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি
মহাজ্ঞানী স্রষ্টা জানেন এতে আমাদের অমঙ্গল রয়েছে
এজন্যই বিধিনিষেধ আরোপ করা
তো মনে করেন, এমন কিছু ঘটলো
একটা অন্ধ সন্তান জন্ম নিলো
যে এই পৃথিবীতে রবে
মায়ের আদর পাবে
কিন্তু মাকে দেখবে না
বাবার স্নেহ পাবে, জানবে না বাবা দেখতে কেমন
এই জোৎস্নার মায়াবী আলো, এই প্রকৃতির অমায়িক সৌন্দর্য, প্রেয়সীর অভিমান ভরা বাঁকা চাহনির বিমলানন্দ, সব কিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে, সকলের নিকট থেকে অবহেলা পেয়ে বেঁচে রবে
জীবনের প্রতিটা মূহুর্ত নানান কষ্ট তাকে তাড়িয়ে বেড়াবে
সে জীবন পাবে
কিন্তু উপভোগ করতে পারবে না
সে বাঁচবে
কিন্তু কীভাবে -তাও বুঝতে পারবে না
নিজের একটা জামা খুঁজে গায়ে দিতে পারবে না
তৃষ্ণা পেলে এক গ্লাস পানি ঢেলে পান করতে পারবে না
আরেকজনের সহযোগিতা ছাড়া টয়লেটের কাজটাও সারতে পারবে না
সর্বক্ষণ অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে
এই অসহায়ত্বের বর্ণনা দেয়া সম্ভব না
তার কাছে সেকেন্ডকে মনে হবে ঘন্টা
দিনকে মনে হবে বছর
কালকে মহাকাল
প্রতিটি ক্ষণ তার মনে হবে এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো
শিশুকালে মরে গেলে সোজা জান্নাতের সুখ পেতো
কিন্তু এমন বিষম যন্ত্রণাবিদ্ধ সুদীর্ঘ জীবন অসহনীয় কষ্টে কাটিয়ে দিবে তা দেখতে একজন মানুষ হিশেবে আমার কাছে চরম অমানবিক ঠেকে
এজন্যই আমার মানবতাবোধ মিল্ক ব্যাংকে সায় দেয় না
অর্থাৎ আপনারা যারা তার স্বল্পদৈর্ঘ্য কষ্টে মর্মাহত হয়ে মিল্ক ব্যাংকের পক্ষে বলেন -আমি তার দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণায় মর্মাহত হয়ে মিল্ক ব্যাংকের বিপক্ষে বলি
সুতরাং আমার চেয়ে বড় মানবতাবাদী আপনি না
সো, অফ যান প্লিজ
মিল্ক ব্যাংক ছাড়াই আমাদের সমাজে বহু শিশুর জন্যে বহু নারী এগিয়ে আসে এবং তা জানাশোনার গন্ডিতে রেখেই সেইফ জোন বা আইডেন্টিটি নিশ্চিত করে
আর যদি মনে করেন, আমি ধর্ম মানি না বা আমি খোদার চেয়ে বেশি বুঝি - দেন ইউ ক্যান গো এহেড
খুব কথা বলা হচ্ছে এই এক হিউম্যান মিল্ক নিয়ে
ভাবলাম আমিও কিছু বলি
তবে বাকিদের মতো নয়, আমার খাদ্য প্রকৌশল এর ভাষায়
আমার রিলিজিয়াস নলেজ খুব কম, বলতে পারেন বেসিক কিছু নিয়মের বাহিরে আমি তেমন কিছু বলতে পারি না
সে যাইহোক যা বলতে চাচ্ছিলাম
হিউম্যান মিল্ক নিয়ে এত তর্ক-বির্তক হচ্ছে যে এটা হালাল না হারাম
আপাত দৃষ্টিতে এইটা পান করা হালাল সব বাচ্চাদের জন্য