text
stringlengths
0
4.32k
সৃষ্টির কীটেরও বুকে এই ব্যথা ভয়;
আশা নয়- সাধ নয়- প্রেম স্বপ্ন নয়
চারিদিকে বিচ্ছেদের ঘ্রাণ লেগে রয়
পৃথিবীতে; এই ক্লেশ ইহাদেরো বুকের ভিতর;
ইহাদেরো; অজস্র গভীর রঙ পালকের 'পর
তবে কেন? কেন এ সোনালি চোখ খুঁজেছিলো জ্যোৎস্নার সাগর?
আবার খুঁজিতে গেল কেন দূর সৃষ্টি চরাচর।
পাখির শয়ন
কতোটা সতর্ক হয়ে জল হয় মেঘের শরীর, ক নিয়মে
মুয়ে থাকে পাখি
ঘাসে, পুরু বাতাসের ভাঁজে, খোলা পুষ্প পল্লবের ছাদে
এই তো পাখিরা বেশ, হিংসা দ্বেষ কিছু নেই তার।
পাখি বড়ো স্বভাব সজ্জন মেলে আছে শরীরের সীমা
কেমন উদাস নগ্ন ওরা পাখি, তাই মানে অরণ্য-আবাস
এমনটি শব্দ আছে পাখির শয়ন বলো
ভেঙে যাবে ভয়ে!
পাখি তো শয়ন করে যেভাবে জলের বেগ কোনোখানে
হয়ে যায় নম্র নতজানু
যে নিয়মে বৃক্ষের শরীর ফেটে জন্ম নেয় ফুল
দেহের সমস্ত লজ্জা খুলে দিয়ে সেভাবে শয়ন করে পাখি।
ওরা তো শয়ন জানে, শয়নের লজ্জা তাই নেই!
কীভাবে চোখের নিচে অনায়াসে ধরে রাখে ঘুমের কম্পন
ওরা পাখি, সুখূ ওরা
সবুজ শব্দের চিহ্ন পান করে চলে যায় কুয়াশার
গাঢ় কোলাহলে
এই তো শয়ন এই পাকিরই শয়ন
আমার চেয়েও ভালো শুয়ে থাকে পাখি!
এই তো শয়ন শিল্পরীতি, পাখিরাই জানে!
বাদল-রাতের পাখি কবিতা
বাদল-রাতের পাখি!
কবে পোহায়েছে বাদলের রাতি, তবে কেন থাকি থাকি
কাঁদিছ আজিও ‘বউ কথা কও’শেফালির বনে একা,
শাওনে যাহারে পেলে না, তারে কি ভাদরে পাইবে দেখা?…
তুমি কাঁদিয়াছ ‘বউ কথা কও’সে-কাঁদনে তব সাথে
ভাঙিয়া পড়েছে আকাশের মেঘ গহিন শাওন-রাতে।
বন্ধু, বরষা-রাতি
কেঁদেছে যে সাথে সে ছিল কেবল বর্ষা-রাতেরই সাথে!
আকাশের জল-ভারাতুর আঁখি আজি হাসি-উজ্জ্বল ;
তেরছ-চাহনি জাদু হানে আজ, ভাবে তনু ঢল ঢল!
কমল-দিঘিতে কমল-মুখীরা অধরে হিঙ্গুল মাখে,
আলুথালু বেশ – ভ্রমরে সোহাগে পর্ণ-আঁচলে ঢাকে।
শিউলি-তলায় কুড়াইতে ফুল আজিকে কিশোরী মেয়ে
অকারণ লাজে চমকিয়া ওঠে আপনার পানে চেয়ে।
শালুকের কুঁড়ি গুঁজিছে খোঁপায় আবেশে বিধুরা বধূ,
মুকুলি পুষ্প কুমারীর ঠোঁটে ভরে পুষ্পল মধু।
আজি আনন্দ-দিনে
পাবে কি বন্ধু বধূরে তোমার, হাসি দেখে লবে চিনে?
সরসীর তীরে আম্রের বনে আজও যবে ওঠ ডাকি
বাতায়নে কেহ বলে কি, “কে তুমি বাদল-রাতের পাখি!
আজও বিনিদ্র জাগে কি সে রাতি তার বন্ধুর লাগি?
যদি সে ঘুমায় – তব গান শুনি চকিতে ওঠে কি জাগি?
ভিন-দেশি পাখি! আজিও স্বপন ভাঙিল না হায় তব,
তাহার আকাশে আজ মেঘ নাই – উঠিয়াছে চাঁদ নব!
ভরেছে শূন্য উপবন তার আজি নব নব ফুলে,
সে কি ফিরে চায় বাজিতেছে হায় বাঁশি যার নদীকূলে?
বাদলা-রাতের পাখি!
উড়ে চলো – যথা আজও ঝরে জল, নাহিকো ফুলের ফাঁকি!
সুখ পাখি
সুখ পাখি সুখ খুঁজে আপন মনে
চারিদিকে ছুটে বেড়ায় সুখের সন্ধানে
যেখানেই খুঁজে পায় সুখের নীড়
বুকে তার জেগে উঠে আশার তীর
পরকে করে নেয় মুহূর্তেই আপন
সর্বস্ব করে ত্যাগ রক্ষার্থে মন
মজে থাকে কিছুদিন সেই সুখের ছলে
নিজের অস্তিত্বকে যায় সে ভুলে
বিধাতার এ যেন আজব খেলা
সুখের সন্ধানে সে আবার ভাসায় ভেলা
ফিরে আসে সে আবার আপন নীড়ে
বের হয় আর্তনাদ তার বুক চিরে
প্রকৃত সুখ দেখি এখানেই আছে
তাহলে ছুটলাম কোন সুখের পিছে?
একটি অসহায় পাখিকে নিয়ে সত্য গল্প
স্কুল বন্ধ। ঘরের বাইরে যেতে পারি না। আর এতে আমার সময় কাটছে না। সময় কাটানোর জন্য একটি গল্প লিখছি। আমার গল্পটি একটি অসহায় পাখিকে নিয়ে, কিন্তু গল্পটি সত্যি।
একটি টিয়া পাখি তার নিজের বাসায় ডিম পাড়ে। কিছুদিন পর ডিমটি ফুটে ছানা বের হয়। ছানাটি আস্তে আস্তে উড়তে শিখে যায়। কিন্তু তখনও টিয়ার ছানাটি ভালো করে উড়তে শেখেনি। একদিন ছানাটি উড়তে উড়তে নিজের বাসা ছেড়ে পাশের একটি গাছের ডালে গিয়ে বসে।
এমন সময় কয়েকটি কাক এসে তাকে আক্রমণ করে। কাকের ঠোকরে ছানাটির মাথার সব পালক পড়ে যায়। টিয়ার ছানাটি তার ডানায় ব্যথা পায় এবং গাছের ডাল থেকে নিচে মাটিতে পড়ে যায়।
তখন সেখান দিয়ে একজন মানুষ যাচ্ছিল। সে আহত ছানাটিকে দেখতে পায় আর কোলে তুলে নেয়। এভাবে সে টিয়ার ছানাটিকে কাকেদের হাত থেকে বাঁচায়। সেবা-যত্ন পেয়ে টিয়ার ছানাটি এখন সুস্থ। কিন্তু সে খাঁচায় থাকতে চায় না। তাকে খাঁচায় বন্দি করলে সে খুব রাগ করে। তার ঠোঁট দিয়ে খাঁচার গায়ে ঠোকর মারে। সে শুধু মুক্ত থাকতে চায়।
পাখিদের মুক্ত থাকতে দাও। তাদের কষ্ট দিও না। পাখিরা মুক্ত আকাশে উড়তে চায়। পাখি শিকার করা খুব অন্যায়। কেউ পাখি শিকার করো না।
একটি পাখির গল্প
একটি পাখির ছানা পেয়েছিলাম। তার পালক গুলো কেবলই গজাচ্ছে। কী সুন্দর দেখতে পাখিটি। তার কালো চোখগুলো কী অপরূপ। তার ঠোটের রং যেনো লাল গোলাপের পাপড়ির মতো।
তার কচি কচি কালো পশমগুলো দেখে আমার মন ভরে যায়। অনেক শখ করে পাখিটি এনেছি, পোষ মানাবো বলে। ওকে আমি কথা বলা শিখাবো, গান শিখাবো- পাখিটি সারা বেলা শুধু আমাকে ডাকবে, আমার পাশে থাকবে। তাতে প্রাণ ভরে যাবে আমার। অনেক শখের পাখি আমার।
লোকে যা কিছু বলুক আমি তা পরোয়া করিনা, আমি পাখিটিকে নিজের হাতে পালন করে বশ মানাবো। অনেক আশা আর ভরসা নিয়ে প্রতিদিন, প্রতিক্ষন পাখিটিকে আমি কথা শিখাই, আচরন শিখাই। ওকে রেখে আমার খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানো সব যেনো শূন্যতায় ভরে থাকে। আমি পাখিটিকে প্রাণ দিয়ে ভালবেসে ফেলেছি। পাখির প্রেমে পড়ে গেছি আমি।
ওকে ছাড়া আমার এক বেলাও ভাল লাগেনা। ছোট্টো পাখি তাই ও আমাকে এখনো চিনতে পারেনি। আমার ইচ্ছাগুলো পাখিটি এখনো বুঝতে পারেনি। তাই এখনো বশ মানেনি ও। কিন্তু একটু একটু বলতে শিখেছে।
আমার কিছু আচরন দেখতে পাই ওর ভেতর। ও আমাকে কথা দিয়েছে আমাকে ডাকবে প্রাণ ভরে। আমি সে অপেক্ষাতেই আছি। সেদিন রাতে পাখিটির ব্যবহারে আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। তাই সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।
পাখিটিকে আমার চেয়ে বেশি ভালবাসে এমন কেউ নেই এখানে। ওকে শেখাতে গিয়ে আমি ওর প্রতি রেগে গিয়েছিলাম । কিন্তু ও আমাকে বুঝে ওঠতে পারিনি। আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে পাখিটা অন্য কাউকে ডাকুক তা আমি চাই না। আমাকে রেখে অন্য কারো পাশে গিয়ে বসুক তা আমি চাই না।