content
stringlengths 0
129k
|
---|
রংপুর বা চট্টগ্রামের মানুষ সাধারণত খাবার শুরুতে ডাল খায়, আর যশোর অঞ্চলের মানুষ সাধারনত খাবার শেষে ডাল খায়
|
অনুকরণ করে চট্টগ্রামের মানুষ যেভাবে বেড়ে উঠবে, যশোরের মানুষ আরেকভাবে তা করবে
|
কিতু তাতে সংস্কৃতির আসলেই কিছু আসে যায় না
|
কিন্তু একটা শিশু ছোট থেকে বড় হতে হতে একটা সময় ঠিকই বুঝে যায়, পরিবার মানে বাবা-মা-ভাই-বোন সবাই মিলেমিশে একসাথে থাকা
|
পরিবার মানে একটা বন্ধন
|
মানুষ ভালোবাসার মত জটিল ব্যাপার অনুধাবন করতে পারে
|
বুঝতে পারে কার সাথে কিভাবে কথা বললে সে কথার অর্থ বুঝবে, খুশি হবে বা কষ্ট পাবে
|
এমনকি তার সামনে বসে থাকা মানুষটি ঠিক একটু পরেই কি বলতে পারে তাও মানুষ আন্দাজ করতে পারে
|
চুলের ফিতেটা কিভাবে বাঁধলে তাকে সুন্দর দেখাবে, তা জানে
|
কবিতায় কিভাবে শব্দের পর শব্দ সাজালে তা ছোঁয়ে যাবে অজস্র মানুষের হৃদয়, মনের অব্যক্ত কথা হবে প্রকাশিত, তা বুঝতে পারি আমরা
|
এইসব অনুধাবনের মাধ্যমেই আসলে প্রবাহিত হয় সংস্কৃতির প্রাণ
|
আমরা কেবল অনুকরণ করিনা, করি তার চেয়েও বেশি কিছু! যার ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য মেমেটিক্স যথেষ্ট নয়
|
মিম তত্ত্বের পিছনে আছেন রিচার্ড ডকিন্স, ড্যানিয়েল ডেনেট এবং সুসান ব্ল্যাকমোরের মত কয়েকজন মহারথী
|
কোন তত্ত্বের পিছনে যেই থাকুক না কেন, তা যতক্ষণ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণযোগ্য নয়, তাকে গ্রহণযোগ্য বলে স্বীকৃতি দেয়া যায় না
|
শেষটায় এসে মেমেটিক্স যদি তার গ্রহণযোগ্য ব্যাখা এবং প্রমাণসমেত নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে না পারে, তাহলে অন্য অনেক ভুল বৈজ্ঞানিক ধারণার মত একটি হিসেবেই ট্যাগ লেগে যাবে, যেগুলো কেবল ধারণাই ছিল, প্রমানিত হয়নি কোনদিন
|
কোয়ান্টাম ফিজিক্সের জন্মলগ্নে নীলস বোর-হাইজেনবার্গের বিরোধিতা করেছিলেন আইনস্টাইন, তবুও একসময় ক্লাসিক্যাল ফিজিক্সের বিরোধিতা সত্ত্বেও কোয়ান্টাম ফিজিক্স দাঁড়িয়ে গেছে, কারণ তাঁরা পেরেছিলেন কোয়ান্টাম থিওরীর গ্রহণযোগ্য ব্যাখা দিতে
|
যখন মিম তত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এত প্রশ্ন তখন কিভাবে জিন-মিম কোএভোলিউশনের ধারণা গৃহীত হবে? আসলেই কি তবে জেনেটিক মেমেটিক কো-এভোলিউশন বলে কিছু আছে? নাকি পুরোটাই জেনেটিক এভোলিউশন? সুসান ব্ল্যাকমোর যতভাবেই মিম তত্ত্বের সাহায্যে মানুষের অন্য প্রাণীদের চেয়ে ভিন্ন হবার কারণ ব্যাখ্যা করুন না কেন, ব্যাখায় গলদ থাকলেও প্রশ্নটা কিন্তু বাতিল হয়ে যায় না
|
আসলেই তো সত্যি, আমরা অনুকরণ করি, অনুধাবন করি, আমরা সংস্কৃতির ধারা বহন করি, আমরা বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে দিনের পর দিন এগিয়েই যাচ্ছি
|
আমাদের মাঝে অবাধ তথ্য প্রবাহ আছে
|
আজকের আবিষ্কার ভবিষ্যতের আবিষ্কারের ভিত্তি হয়ে কাজ করতে পারছে
|
কিভাবে পারি? মিম নয়, তবে কি?
|
এই প্রশ্নের উত্তর আসতে শুরু করেছে ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ এর মাঝে মিরর নিউরণের অস্তিত্ব প্রমানিত হবার পর থেকে
|
১৯৯২ সালে প্রথম মিরর নিউরণের বর্ণনা জনসমক্ষে আসে
|
কিছু বিজ্ঞানীর মতে, মিরর নিউরণ হল সাম্প্রতিক কালে নিউরোসায়েন্সের আবিষ্কার গুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি
|
প্রাইমেটে মিরর নিউরণের অস্তিত্ব তো পাওয়া গেছেই, সেই সাথে কিছু পাখিতেও এই মিরর নিউরণ পাওয়া গেছে
|
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মানুষ যখন কোন কাজ করে, তখন তার মস্তিষ্ক থেকে একধরণের ব্রেইন সিগ্যনাল পাওয়া যায়, কিন্তু আশ্চর্যের হলেও সত্যি, মানুষ যখন কাউকে কোন কাজ করতে দেখে তখনও তার মস্তিষ্ক থেকে ব্রেইন সিগ্যনাল পাওয়া যায়
|
যে করছে এবং যে দেখছে, উভয়েই যেন এক সত্তার মত অনুভব করতে পারছে একই অনুভূতি
|
আর এই কারণেই, মা যখন কাগজে পেন্সিল দিয়ে লিখছে "অ", তখন বাচ্চাটিও দেখছে, কিভাবে মা পেন্সিল ধরে, কিভাবে মা লিখে, কিভাবে মা কথা বলে
|
মা খুশি থাকলে কিভাবে হাসে, অখুশি থাকলে মুখটা কেমন দেখায়, কিসে মা খুশি হয়, কিসে সে অখুশি হয়
|
কোনটা করতে মা নিষেধ করে
|
এভাবেই মানুষ অণুকরণ করে, অনুধাবন করে, একজনের অনুভূতি আরেকজন বুঝতে পারে, পরস্পর পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে
|
প্রখ্যাত নিউরোসায়েন্টিস্ট ভি. এস. রামাচন্দ্রানের মতে এই মিরর নিউরণই হল অনুকরণ, অনুধাবন এবং ভাষার উৎপত্তির মূল কারণ
|
এই মিরর নিউরণই বহন করছে সংস্কৃতির ধারা
|
সংস্কৃতি প্রবাহিত হচ্ছে আমাদের অনুধাবন এবং স্মৃতিকে বাহন করে
|
অন্যান্য প্রাইমেটের তুলনায়, মানুষের মস্তিষ্কে মিরর নিউরণের সক্রিয়তা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে
|
ফলশ্রুতিতে আমরা হয়ে উঠেছি অনন্য
|
আমরাই পারি নিত্য নতুন আবিষ্কারে মেতে উঠতে, সমাজ গড়তে, যোগাযোগ করতে, তথ্য প্রবাহ বহাল রাখতে, নিজেদের ভবিষ্যতের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে
|
এ প্রচারিত ভি এস রামাচান্দ্রানের মিরর নিউরণ সংক্রান্ত পরিবেশনা দেখতে পারেন .. এ
|
মিরর নিউরণ কোন ধারণা নয়, পরীক্ষিত সত্য, এখনো প্রতিদিন মিরর নিউরণ নিয়ে গবেষণা চলছে
|
এই মিরর নিউরণের উদ্ভব হয়েছিল অতীতের কোন এক সময়ে জেনেটিক মিউটেশনের কারনেই
|
আজকে যা মিম বলে আমরা জানি, তা আসলে জেনেটিক এভোলিউশনেরই ধারাবাহিকতা, এবং এর নিয়ন্ত্রণ এখনো জিনের হাতেই আছে
|
১৯৭৬ সালে দ্য সেলফিশ জিন প্রকাশের সময় রিচার্ড ডকিন্স মিমকে যেভাবে উপস্থাপন করেছেন, তার প্রায় ১৬ বছর পর প্রথমবারের মত মিরর নিউরণের বর্ণনা পাওয়া যায়, যা মিম তত্ত্ব বা মেমেটিক এভোলিউশন বা জেনেটিক-মেমেটিক কো-এভোলিউশনের ধারণাকে বাতিল করে দেবার জন্য যথেষ্ট
|
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
|
:
|
1. , . . 283, 64-66, 68-71, 73 (2000).
|
2. , . . ( : 1976).
|
3. সুসান ব্ল্যাকমোর অন মিমস অ্যান্ড টিমস
|
4. দ্য নিউরন দ্যাট শেপড সিভিলাইজেশন
|
5.
|
পোস্ট শেয়ার করুন
|
: জওশন আরা শাতিল
|
. . , . , .
|
মিসিং লিংক কি সত্যিই মিসিং?
|
মিসিং লিংক কি সত্যিই মিসিং?
|
নভেম্বর 17, 2021 | 2
|
ধর্ষণ কি আদৌ কোনো অপরাধ?
|
ধর্ষণ কি আদৌ কোনো অপরাধ?
|
সেপ্টেম্বর 14, 2021 | 2
|
কৃতজ্ঞতা সমাচার
|
কৃতজ্ঞতা সমাচার
|
জুলাই 30, 2021 | 0
|
মানব প্রজনন ও যৌনতাঃ পাঠ্যবইয়ে কী পড়ছি?
|
মানব প্রজনন ও যৌনতাঃ পাঠ্যবইয়ে কী পড়ছি?
|
জুলাই 29, 2021 | 3
|
ভিটেলোজেনিন জিন: তে লিপিবদ্ধ প্রাচীন আত্মীয়ের প্রমাণ
|
ভিটেলোজেনিন জিন: তে লিপিবদ্ধ প্রাচীন আত্মীয়ের প্রমাণ
|
জুলাই 18, 2021 | 2
|
24
|
ফরিদ আহমেদ জানুয়ারী 4, 2012 8:58 পূর্বাহ্ন -
|
সকালে লেখাটা পড়া হয় নি
|
উৎসর্গপত্র দেখেই বন্যার পা ধরে টানাটানি করার লোভটা সামলাতে পারি নি
|
এখন পড়লাম
|
এতো সুন্দর একটা ওজনদার লেখায় হালকা ধরনের ফাজলেমি করার জন্য দুঃখিত
|
চমৎকার হয়েছে লেখাটা
|
বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলত পারছি না
|
এমনিতেই বিজ্ঞান কম বুঝি, তার উপরে বিজ্ঞানের এইসব প্রান্তিক বিষয় থেকে সাতসমুদ্র তেরো নদীর দূরত্বে আমার অবস্থান
|
তবে লেখার ভাষা একেবারে ঝরঝরে, গতিশীল এবং প্রাঞ্জল
|
বিজ্ঞানবিমুখ পাঠককেও উষ্ণ বন্ধুতের হাতছানি দিয়ে তরতর করে টেনে নিয়ে যায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
|
বিষয়ের উপর লেখকের সীমাহীন দরদ আর অসাধারণ দখলের আত্মবিশ্বাসটাও টের পাওয়া যায়
|
বলতে দ্বিধা নেই
|
বন্যার সার্থক উত্তরসূরী আপনি
|
নীল রোদ্দুর জানুয়ারী 4, 2012 2:25 অপরাহ্ন -
|
@ফরিদ আহমেদ,
|
এতো সুন্দর একটা ওজনদার লেখায় হালকা ধরনের ফাজলেমি করার জন্য দুঃখিত
|
ভাইয়া, তাইলে তো ওজন কমাতে হবে, পরিবেশ যদি অতি সিরিয়াস হয়ে যায়, তাইলে তো বিপদ!
|
পড়ে ভালো লাগলেই খুশি আমি, আর কিছু চাইনা... 🙂
|
ফরিদ আহমেদ জানুয়ারী 3, 2012 7:45 অপরাহ্ন -
|
এই পুরো প্রবন্ধটা উৎসর্গ করেছি বন্যা আহমেদ কে, যার বিবর্তন নিয়ে লেখালেখি, স্বতঃস্ফূর্ততা, ব্যক্তিত্ব্য সবই আমাকে মুগ্ধ করে, অনুপ্রাণিত করে...
|
হু, তিনি এ যুগের বেগম রোকেয়া বিবর্তনবাদিয়া
|
নির্মিতব্য জানুয়ারী 3, 2012 8:04 অপরাহ্ন -
|
@ফরিদ আহমেদ,
|
ভাই আপনি কিন্তু একটু আগে আরেক লেখায় এটা লিখসেন,
|
যে দেশ এখনো মৃতপতির প্রেতাত্মা দ্বারা নির্দেশিত ও নিয়ন্ত্রিত মধ্যযুগীয় মানসিকতার মানুষ রোকেয়াকে নারী জাগরণের অগ্রদূত ভাবে, সে দেশে যে তসলিমার ঠাঁই হবে না, এটা বলাই বাহুল্য
|
আপনি আমাকে রোকেয়াকে নিয়ে একটু আগে ভাবাচ্ছিলেন, আবার আপনিই উনাকে তুলনার মাপকাঠি করলেন
|
বললাম আরকি
|
ফরিদ আহমেদ জানুয়ারী 3, 2012 8:24 অপরাহ্ন -
|
@নির্মিতব্য,
|
আপনি আমাকে রোকেয়াকে নিয়ে একটু আগে ভাবাচ্ছিলেন, আবার আপনিই উনাকে তুলনার মাপকাঠি করলেন
|
Subsets and Splits
No community queries yet
The top public SQL queries from the community will appear here once available.