content
stringlengths
0
129k
মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর গ্রীষ্মকালীন এবং শীতকালীন সময়: দুপুর ১টা থেকে ৩০ মিনিট এবং শুক্রবার ১২:৩০ হতে ২:৩০ মিনিট পর্যন্ত মধ্যাহ্ন বিরতি থাকে
গ্রীষ্মকালীন সময়: ১ এপ্রিল থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
শীতকালীন সময়: ১লা অক্টোবর থেকে ৩১শে মার্চ পর্যন্ত
মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু জানা যাক
মহাস্থানগড়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্ব অবলোকন করে ১৯৬৭ সালে গোবিন্দ ভিটা, করতোয়া নদীর কিনারা ও মহাস্থানগড়ের টিলা সংলগ্ন এলাকায় এই প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়
আপনি ভাসু বিহার ভ্রমণে যাওয়ার পথে হাতের বা দিকে এই জাদুঘরটি দেখতে পাবেন
যাদুঘরের ঠিক সামনেই গোবিন্দ ভিটা অবস্থিত
গোবিন্দ ভিটার পাশ দিয়েই বিখ্যাত সেই করতোয়া নদী রয়ে গেছে
যদিও করতোয়া নদীর অবস্থা এখন খুবই খারাপ
এটা কে এখন খাল বললেও চলে!
যাই হোক গোবিন্দ ভিটা প্রবেশ করার জন্য কিন্তু ১০টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে টিকিট নিতে হয়
আর, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ৫টাকা এবং বিদেশী পর্যটকদের জন্য ১০০ টাকা প্রবেশ ফি দিতে হয়
গোবিন্দ ভিটা নিয়ে আলাদা ভাবে আরেকটি পোস্ট করব আমি
তবে এখন প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর নিয়ে কথা বলা যাক
জাদুঘরে কি আছে?
প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে উত্তর অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থানগুলো যেমন: মহাস্থানগড়, রানী ভবানীপুর, দিনাজপুর, পাহাড়পুর, শেরপুর এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা প্রাচীন সামগ্রী জাদুঘরে এনে সংরক্ষণ করা হয়েছে
উদ্ধার করা প্রাচীন সামগ্রী গুলোর মধ্যে রয়েছে হাজার বছর আগের সোনা, রুপা, লোহা, ব্রোঞ্জ, পাথর, কাঁসা ইত্যাদি সহ বিভিন্ন মূল্যবান ধাতব পদার্থ ও পোড়ামাটির তৈরি মূর্তি
এছাড়া আরও রয়েছে আত্মরক্ষার জন্য ধারালো অস্ত্র, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সামগ্রী ইত্যাদি
জাদুঘরে মহাস্থানগড় ও আশপাশের অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা অসংখ্য প্রত্নবস্তুর নমুনা রয়েছে
তাছারা মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও অন্যান্য রাজবংশের অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন যত্নের সঙ্গে এখানে সংরক্ষিত রয়েছে
এখানে আসলে আপনি আরও দেখতে পাবেনঃ স্বর্ণবস্তু, ব্রোঞ্জের সামগ্রী, মাটি দিয়ে তৈরি খোদাই করা ইট, বিভিন্ন শিলালিপি, পুরানো মাটির মূর্তি, মূল্যবান পাথর, মার্বেল, পোড়া মাটির পুতুল, বাসনপত্র, কালো পাথরের মূর্তি, বেলে পাথরের মূর্তি, মাটি ও অন্যান্য ধাতুর তৈরি বোতাম, নানা ধরনের প্রাচীন অলংকার সহ বহু পুরনো ও মূল্যবান চমৎকার নিদর্শন
মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ভ্রমণ কাহিনী
বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার এই মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ভ্রমণের ভ্রমণ কাহিনী বলব
তবে আমরা একদিনে বগুড়া জেলার বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করেছি
তাই, জাদুঘর ভ্রমণের শুরুটা হয়েছে শেরপুর থেকে
ভ্রমণে আমরা খেরুয়া মসজিদ থেকে শুরু করে ভাসু বিহার ভ্রমণ করেছি
প্রায় দুপুর ১টার দিকে আমরা সিএনজি করে জাদুঘর এর সামনে এসে নামলাম
জাদুঘরের প্রধান গেইটি কাঠের তৈরি এবং এটি বেশ বড়
নিচ থেকে ভিতরের অংশটি দেখা যায়
কাঠ দিয়ে কত সুন্দর করে ডিজাইন করা
উপরে চিনামাটির কারুকাজ করা পাত দিয়ে ঢাকা
কাঠ দিয়ে কত সুন্দর করে ডিজাইন করা
গেইটের বা পশে রয়েছে একটি কক্ষ যেটার দেয়ালে বাংলাদেশের মানচিত্রের একটি অংশ টানানো রয়েছে এবং গেইট এর ডান পাশে রয়েছে টিকিট কাউন্টারটি
টিকিট কাউন্টার
আমরা যখন গিয়েছি তখন জাদুঘরের মধ্যাহ্ন বিরতি থাকায় আমরা টিকিট সংগ্রহ করতে পারিনি
জাদুঘর এর ঠিক সামনেই রয়েছে গোবিন্দ ভিটা
দুপুর ১টা থেকে ৩০ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি থাকায় আমরা এই সময়টা নষ্ট না করে জন প্রতি ১০ টাকা করে টিকিট সংগ্রহ করে গোবিন্দ ভিটায় প্রবেশ করলাম
ঠিক ১:৩০ মিনিটে আবার জাদুঘর এর টিকিট বিক্রি শুরু হল
আমরা জন প্রতি ২০ টাকা করে ৪টা টিকিট সংগ্রহ করলাম
সিএনজি মামাকে আমাদের সাথে যেতে বললাম কিন্তু সে যেতে রাজি হল না
আমাদের বলল, আর কত যাব মামা! এখন আর ভালো লাগে না
জাদুঘরের ভিতরে প্রবেশ করে যা দেখলাম
আমরা সবাই এই প্রথম মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর -এ প্রবেশ করেছি
যাদুঘরের ভিতরটা বেশ সুন্দর
সব কিছু ফুল গাছ, নানা প্রকারের পাতা গাছ, ছোট ছোট গেইট, ছোট কারুকাজ করা স্তম্ভ দিয়ে সাজানো রয়েছে
এর ঠিক মাঝখান দিয়ে কিছুটা হেটে গেলেই দেখতে পাবেন জাদুঘরটি
মাঝ খানের রাস্তার দুই পাশেই সবুজের সমারোহ
একটু সামনে এগুলেই বা দিকে দেখতে পাবেন নানা রঙের ঘাস দিয়ে বানানো বাংলাদেশের মানচিত্র
এছাড়া এখানে পিকনিক স্পটও রয়েছে
মোহাইমিনুল ইসলাম
হেটে হেটে আমরা একেবারে মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর এর সামনে চলে আসলাম
মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
ভিতরে প্রবেশের আগেই গেইটের সামনে একটি দেয়ালে কিছু পুরোন দিনের জিনিসপত্র টানানো আছে
তবে এগুলো বিক্রি করার উদ্দেশ্যে টানানো হয়েছে
বিক্রির উদ্দেশ্যে
আমরা জাদুঘরের ভিতরে প্রবেশ করলাম
ভিতরে প্রবেশের সাথে সাথেই একজন আমাদের বললেন ভিতরে ক্যামেরা এলাউ না
মানে আমরা ভিতরে কোন ছবি তুলেতে পারব না
আবার দেখলাম কিছু স্টিকারে একই লেখা টানানো রয়েছে
আমরা ক্যামেরা বন্ধ করে দিয়ে ডান পাশ থেকে দেখা শুরু করলাম
মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরটি ১তলা বিশিষ্ট
এখানে উপরে উল্লেখিত প্রায় সব কিছুই রয়েছে দেখলাম
জাদুঘরে প্রচুর দর্শনার্থীর ভিড় রয়েছে
তবে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা খুবই বেশি দেখলাম না
যাই হোক, আমরা অনেকক্ষণ ধরে ধিরে ধিরে সব গুলো দেখার পর মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর থেকে বের হয়ে এলাম
মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ভ্রমণ গাইড
ঢাকা থেকে মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর এর দূরত্ব প্রায় ২০৭.২ কিলোমিটার
আর বগুড়া থেকে দূরত্ব প্রায় ১৩.৬ কিলোমিটার
আপনি সিএনজি নিয়ে বগুড়া জেলা শহর থেকে সরাসরি জাদুঘরে চলে আসতে পারেন
তবে মনে রাখবেন এটি শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত
ঢাকা থেকে বাস ভ্রমণ
ঢাকা থেকে বগুড়া যাওয়ার জন্য অনেগুলো পরিবহন রয়েছে
রাজধানী ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, শ্যামলী, আবদুল্লাহপুর ও কল্যাণপুর থেকে প্রতিদিন বগুড়ার উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়
ঢাকা থেকে বাস যোগে যেতে উল্লেখযোগ্য পরিবহন গুলো হলঃ
হানিফ এন্টারপ্রাইজ
শ্যামলী পরিবহন
এস আর ট্রাভেলস
শাহ ফতে আলি
টি আর ট্রাভেলস
হুন্দাই এসি বাস সার্ভিস: তবে, এদের ভিতরে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এস আর ট্রাভেলস, নাবিল এবং মানিক পরিবহন এর ৩ সিট হুন্দাই এসি বাস সার্ভিস রয়েছে
বাস টিকিট মূল্য: ঢাকা থেকে বগুড়া যাওয়ার বাস টিকিট সর্বনিম্ন ৩৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকা পর্যন্ত
ঢাকা থেকে ট্রেন ভ্রমণ
ঢাকা থেকে ২টি ট্রেন সার্ভিস রয়েছে
ট্রেন ২টি হলঃ লালমনি এবং রংপুর এক্সপ্রেস
২টি ট্রেনই বগুড়া হয়ে যাতায়াত করে
ঢাকা থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টায় রংপুর এক্সপ্রেস এবং রাত ১০ টা ১০ মিনিটে লালমনি এক্সপ্রেস কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায়
তবে, রংপুর এবং লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন যথাক্রমে রবিবার এবং শুক্রবার বন্ধ থাকে
বগুড়া থাকার হোটেল
বগুড়া থকার জন্য রয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল, মোটেল, কটেজ এবং গেস্ট হাউজ
এখানে থাকার ব্যাবস্থা বেশ উন্নত
আপনি কম খরচেও থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল পাবেন
বগুড়ার কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেল এর নামঃ
হোটেল নাজ গার্ডেন
হোটেল মম ইন বগুড়া
হোটেল সিএসটা
পর্যটন মোটেল
আকবরিয়া হোটেল
হোটেল রয়াল প্যালেস, উপশহর
হোটেল সান ভিউ, শেরপুর রোড
প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ভ্রমণ টিপস