content
stringlengths
0
129k
এর মধ্যে একবার ছোট টয়লেট ঘুরে এসেছি
বলাবাহুল্য সেই অফিসার টি সংগ ছাড়েন নি তখন ও
হঠাৎ আমার ফ্লাইট এর বোর্ডিং ঘোষনা শুনতেই এক লাফে হৃৎপিন্ড আমার গলায়
অরোরা র দেখা নেই
যা বুঝলাম, উনি আর দেখা দেবেন না
যা হবার এবার স্টেজ এই হবে
এইবার সেই আমার ল্যাজে রেখে যাওয়া অফিসার নড়ে চড়ে আমার মেক আপ নিয়ে পড়লেন
অরোরার টেবিল এর ড্রয়ার থেকে ছোট্ট একটা কুচকুচে কালো রিভলভার বের করে টেবিল এর উপর রাখতেই আমার আবার হিসু পেয়ে গেলো
বেশ বিরক্তি নিয়েই আবার আমাকে নিয়ে টয়লেট
চোখে মুখে জল দিয়ে একটু ধাতস্থ হয়ে একটু মনে জোর পেলাম যেনো
এইবার আমার পোশাক পরিধান এর সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে নিলেন সেই অফিসার
গোঁজা জামা এক টানে প্যান্ট থেকে মুক্ত হল
সুনিপুন হাতে ঠিক যেখানে শিরদাঁড়া টা শেষ, সেখানে রিভলভার টা অন্তর্বাস এর মধ্যে গুঁজে হাল্কা টেপ লাগিয়ে টাইট করে লাগালেন
( অন্তর্বাস এর ছিদ্র গুলো দেখেছিল কি না কে জানে? ) তারপর আবার জামা গুঁজে এত সুন্দর করে সেটিং করা হল আমার নিজের ই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল যে আমি শরীরে একটা রিভলভার নিয়ে রয়েছি
ততক্ষনে ফাইনাল বোর্ডিং ঘোষণা হয়ে গ্যাছে
অরোরার ঘরের আয়নায় চোখ পড়তেই নিজের মুখ টা অন্য কার সাথে যেন ভীষণ মিল খুঁজে পেলাম
সেই মগনলাল যখন জটায়ু কে দেওয়ালে সাঁটিয়ে ছুরি ছোড়ানো খেলছিল, ঠিক সেই সন্তোষ বাবুর মুখ
অরোরা কোথায় জিজ্ঞাসা করতেই যা বুঝলাম উনি ঘুর পথে বাইরে দিয়ে গিয়ে ডিপার্চার লাউঞ্জ এর কোন এক কোণে বসে থাকবেন
সোজাপথে গেলে ওনার ষন্ডা গুলো বুঝে যেতে পারে আজ ওনার চেকিং আছে
সাবধান হয়ে যাবে
আর ওদের কে অপ্রস্তুত করাটাই এনার কাজ
সব বসেদের এক ই বেলেল্লাপানা আর কি
ফাইনাল কল এবং আর ৫ মিনিটের মধ্যে গেট বন্ধ হবার হুমকি শুনেই আমাদের যাত্রা শুরু হল
দুড়দাড়িয়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে দৌড় দৌড় সিকিউরিটি জোন এ
আমার রক্তের আড্রেনালিন এ তখন পুরীর ভরা জোয়ার এর সমুদ্র
ঠিক সিকিউরিটি পৌছানোর আগেই সাথের অফিসার টিও কেটে গেলেন
বুঝুন কেস
কোমরে গোঁজা রিভলভার নিয়ে একা দিল্লী এয়ারপোর্ট এ
সিকিউরিটির পাদানি তে দাঁড়িয়ে আমার চোখ তখন এন্টার দি ড্রাগন এর ব্রুস লী
অরোরা কে খুঁজছি পাগলের মত
না, লোক টা ধোঁকা দেয় নি
বার তিনেক এপ্রান্ত ওপ্রান্ত চোখ বুলিয়েই চোখে পড়ে গেল দীর্ঘদেহী সাদা সাফারি পরা সাহেব কে
চুপটি করে প্রায় ১০০ ফিট দূরে এক কোনে বসে হাত নাড়ছেন আমাকে
সত্যি মাইরি ঠিক ওই মুহুর্তের আনন্দ টা একমাত্র দেওয়ালে টানানো জয়েন্ট এর রেসাল্ট লিস্ট এ আমার রোল নাম্বার টা দেখতে পাওয়ার মতই আশ্বসনীয়
এবার আমার সব ভয় এক লহমায় ধাঁ
খুব রেলা নিয়ে পাঁদানি তে দাঁড়ালাম
শুরু হল বডি ফ্রিস্কিং
সত্যি বলছি, সেই মুহুর্তে মন চাইছিলো এরা যেন ধরতে না পারে আমায়
এত টেনশন নিয়ে নেমেছি যখন, জিতেই ফিরবো
আমাকে চেকিং করছিলো এক সর্দার
বেশ ঘেঁটে ঘেঁটে পিছনের পকেট এ রাখা পার্স, চিরুনি সব বার করালো কিন্তু জাস্ট দু আংগুল দূরে গোঁজা রিভলবার টায় হাত ঠেকলো না
এদিকে মোদিলুফৎ এর গ্রাউন্ড স্টাফ পরিত্রাহি চিৎকার করছে আমায় বোর্ড করানোর জন্য
বোর্ডিং পাস টায় স্টাম্প মেরে আমার হাতে দিতেই বুঝলাম জিতে গেছি
সেটা ওই দূরে বসে অরোরাও বুঝেছে
আর সাথে সাথে ক্ষিপ্র গতিতে ওই অত দূর থেকে একদম আমার আর ওই সর্দার এর সামনে
অরোরা দু হাতের সামনে, কোমরে রিভলবার যেখানে ছিল সেখানেই আর আমায় দ্যাখে কে
ঠিক শোলের ওই সিন টা, যেখানে হেমা নেচেই চলেছে, সানির বাবা কুত্তো কুত্তো করছে আর গুরু দূর থেকে এক গুলিতে সাম্বার বন্দুক উড়িয়ে দিয়ে সেই ডায়লগ টা " আগর কোই হিলনে কা কোসিস কি, তো ভুন্দকে রাখ দুংগা" ঠিক ওইরকম একটা ফিলিং এসেছে আমার
কোমর থেকে লোম টোম সমেত একটানে রিভলবার টা বার করে উঁচু করে ধরেছি
মনে হচ্ছে চারিদিকে যেনো সিটি ও পড়ছে
ঠিক দশ হাত দূরে বসা বিশাল বপু মাড়োয়ারি তখন আমার সেই রিভলবার হাতে রুদ্র মূর্তি দেখে মুখ ভরা জর্দা আর থুতু গিলে ফেলে সিট ছেড়ে পালানোর জন্য হাঁইফাই করছে
ও তো আর জানে না আমি কে? গুলি গোলা চলবেই এবার ভেবে হনুমান চালিসা শুরু করবে কি না ভাবছে
আমি তখন একদম শৌর্যের চূড়ায়
সেই সর্দার এর মুখ টা তখন ৭ টা স্কচ এর পরে খুশবন্ত সিং এর মুখের মত, সাথে আমার তীব্র প্রশ্নবান
" আপ জাইসা লোগ কে হাত মে হামারা দেশ কা সুরক্সা কা ভবিস্য? আপকো সরম আনা চাইয়ে টাইয়ে " বলে দেদার পাংগা নিচ্ছি
অরোরাও ধমকাচ্ছে
ব্যাটা মোদিলুফৎ এর চ্যাংড়া টা প্রায় আমার হাত ধরে টান তে টান তে বাস এ না ওঠালে সেইদিন একটা হেস্তনেস্ত করেই আসতাম
অরোরা শেষ বারের মত একটা থ্যাংকু দিয়ে টাটা করে বিদায় নিলেন
সেই শেষ দেখা
তারপর কতবার দেশের কত এয়ারপোর্ট এ গেছি
আর কোনদিন দেখিনি ওকে
কলকাতা এয়ারপোর্ট এ নেমে ট্যাক্সি নিয়ে পাড়ায় ঢুকেই বাপিদের বাড়ি
নিচ থেকে হাঁকডাক করতেই বারান্দায় মাসিমা
উত্তেজনায় তখনো কাঁপছি
সটান মাসিমা কে জিজ্ঞাসা করলাম " লেবু বাপি আছে?"
মাসিমা লেবু টা না বুঝলেও বাকি টা বুঝলেন
বললেন আছে স্নান করছে
মাসিমা কে বলে দিলাম বেরোলেই মাঠে আসতে বলুন, আমি ততক্ষনে কাতলা আর ঘ্যাম বাপি কে ডেকে নিয়ে আসি
হেব্বি গল্প বলার আছে
মলয় ভট্টাচার্য
১৫.০৬.২০১৭
বিভাগ : ব্লগ | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ | ১১০৫♦ বার পঠিত
জমিয়ে রাখুন
পুনঃপ্রচার
প্রিন্ট/
কোনোরকম কর্পোরেট ফান্ডিং ছাড়া সম্পূর্ণরূপে জনতার শ্রম ও অর্থে পরিচালিত এই নন-প্রফিট এবং স্বাধীন উদ্যোগটিকে বাঁচিয়ে রাখতে
গুরুচণ্ডা৯-র গ্রাহক হোন
গুরুচণ্ডা৯তে প্রকাশিত লেখাগুলি হোয়াটসঅ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন
টেলিগ্রাম অ্যাপে পেতে চাইলে এখানে ক্লিক করে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটির গ্রাহক হোন
কীভাবে লিখবেন
পুরোনো-গুরু
গুগল পদ্ধতি গুরু পদ্ধতি যেমন খুশি
বিষয়বস্তু*:
আপনার নাম:
দ | 144.159.168.72 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:০৪62362
উরেদ্দাদাআআ
গুরুদেব লোক আপনি অ্যাদ্দিন বাদে এলেন! সেই খোকাখুকু সামলানোর পরে এই আবার
| 120.143.69.7 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:০৩62363
এটা দারুন জমেছে
| 69.185.236.55 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৫৯62364
ব্যাপক, ব্যাপক!! ঃ))
| 165.69.191.251 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ১১:০৪62365
| 213.99.211.135 (*) | ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৭62370
গুরুর (মলয় বাবু কে গুরু না মানার কোন কারণ নেই, রামদেব স্যার বাংলা পড়তে পারলে হায়, এঁর পদধূলি প্যাকেট করে বিক্রি করতেন) প্রতিটা লেখাই হীরক খন্ড
জাস্ট কোন কথা হবে না
চেপে খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতে হাসতে কাশি হয়ে গেল
সিকি | 158.168.40.123 (*) | ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২১62366
চরম জিনিস, জাস্ট চ্রম!!
| 59.205.218.108 (*) | ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২২62367
দারুন দারুন
| 108.228.61.183 (*) | ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৯62368