content
stringlengths 0
129k
|
---|
ওর বুকের মধ্যে সেঁধিয়ে যাই
|
ও সবল দুবাহুর মধ্যে আমাকে বন্দী করে
|
আমি ওর বুকে চৌদ্দ বছর আগের সেই স্পন্দন শুনি
|
ঢিপঢিপ ঢিপঢিপ...
|
বহুদিন পর আমি দীর্ঘ শাওয়ার নিয়ে বের হই
|
ও আমার শরীর ঘেঁষে দাঁড়ায়
|
আমার হাত ধরে
|
চব্বিশ বছরের যুবকের সাথে সাথে ঘর বারান্দা হেঁটে বেড়ায় আটত্রিশ বছরের একজন পরিণত নারী
|
বিকেলে ছাদে যাই
|
ফুল গাছের কেয়ারী করি
|
ও আমার সাথে সাথে কাজ করে
|
আকাশের কমলা রঙ আমাদের দুজনকে ভিজিয়ে দেয়
|
কখনো আমার হাতের চায়ের কাপে ওর হাত থেকে টুপ করে ঝরে পড়ে গোলাপের পাপড়ি
|
আমি সেই চা গোলাপ জল হিসেবে পান করি
|
আমার কানে গুঁজে দেয় সবথেকে বড় কসমসটি
|
আমরা যুগলে সেলফি তুলি
|
আমাদের দুজনের মাঝে থালার মত সূর্যটি রাঙা হাসে
|
খুব দ্রুত আমার দিনলিপি বদলে যায়
|
ও কখনও কিছু খায় না
|
কিন্তু খাবার টেবিলে বসে খুনসুটি করে
|
টেবিলের নীচে পায়ের সাথে পা জড়িয়ে রাখে
|
আমার সুড়সুড়ি লাগে, পা টেনে নেই
|
রান্নার সময় গলা পেঁচিয়ে ধরে গালের সাথে গাল ঘষে
|
উফ! বিভাস শেভ করে এসো, লাগছে তো!
|
ও শেভ করে না
|
বিভাসের দাড়ি লম্বা হচ্ছে
|
ওকে দেখতে এখন বেশ লাগে
|
চেগুয়েভারার মত
|
আমি মাঝে মাঝে মাঝে ওকে চে বলে ডেকে উঠি
|
বিভাস উঁ বলে সাড়া দেয়
|
ইদানিং বিভাস আমাকে বলে পুঁজিবাদী
|
রাতে ঘুমানোর সময় দু বেণী করা আমার অভ্যাস
|
ও প্রতি রাতে বেণী দুটি খুলে চুল ছড়িয়ে দেয়
|
খোলা চুলে নাকি আমাকে অপ্সরী লাগে
|
আগের মতই বিভাসের সাথে আমার তুমুল তর্ক চলে
|
প্রেম, রাজনীতি, বর্তমানের কমিউনিজম
|
আমি বলি কোমরভাঙা কমিউনিজম
|
বিভাস ক্ষেপে ওঠে
|
ওর চব্বিশ বছরের বুদ্ধি আর আমার আটত্রিশ বছরের পরিণত অভিজ্ঞতায় কখনও কখনও ম্যাচ করে না
|
ও রাগী যুবকের মত রেগে যায়
|
অভিমান করে বাচ্চাদের মত
|
আমি কখনও প্রেমিকার শাসনে, কখনও মায়ের মমতায় মান ভাঙ্গাই
|
আবার কখনও এমন হয়, অলস মোহময় মধ্যাহ্নে এক নিঃসঙ্গ নারী নির্মম ভাবে চব্বিশ বছরের পুরুষটিকে পেতে চায়
|
ও আসুক আমাকে ভেঙ্গে পুনঃ নির্মাণ করুক
|
বিভাস আসে
|
ওর যাদুর ছেনীর স্পর্শে বারবার পুনঃ নির্মিত হয় আমার শ্যাওলা ধরা প্রাচীন ভাস্কর্য
|
ফয়সাল বেশ রাত করে ঘোরে ফেরে
|
আমি অস্থির হয়ে অপেক্ষায় থাকি সকালের
|
এই সময়টুকু আমি বোবা হয়ে থাকতে চাই কিন্তু পারি না
|
ফয়সালের সামনেই বিভাস আমাকে পেছন থেকে আচমকা কোমর পেঁচিয়ে ধরে
|
খুব ভয় পাই
|
ফয়সাল যদি ওকে দেখে ফেলে? সরিয়ে দেই
|
ফয়সাল আমার পরিবর্তন ধরে ফেলে
|
ও বিস্মিত হয় যতটা, অখুশি হয় তার থেকে অনেক বেশি
|
খোঁচা দিয়ে বলে, কি ব্যাপার আজকাল তোমার মধ্যে অনেক চেঞ্জ
|
শরীরে জেল
|
নতুন প্রেমে পড়েছ নাকি? আমি নির্লিপ্ত
|
ও খুব করে ক্ষেপে যায়
|
মাতলামি বাড়ে
|
স্বামীত্ব ফলাতে এসে আক্রোশে আরও নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে
|
আমি বরাবরের মত দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে থাকি নির্মোহ
|
ওর সম্ভ্রমে লাগে
|
একসময় কালিহীন কলমের মত ছুঁড়ে ফেলে
|
অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়
|
শালীর শরীর তো নয়, লাশ
|
শরীরের তেজ যায় কোথায়? আমি কিছু বুঝিনা ভেবেছ? মর
|
মেয়ে মানুষের অভাব রয়েছে আমার?
|
আমি অট্টহাসিতে ফেটে পড়ি,
|
পালাচ্ছ কেন ফয়সাল? আমাকে গ্রহণ কর
|
এর জন্যই না তুমি বিভাসকে সরিয়েছ? দেখ, বিভাস আবার ফিরে এসেছে
|
বিভাসের ফিরে আসার কথা শুনে ফয়সাল ধন্দে পড়ে যায়
|
বিক্ষিপ্ত দৃষ্টিতে চারপাশে দেখে
|
প্রায় দৌড়ে নিজের ঘরে প্রবেশ করে
|
ওর আর আমার ঘর আলাদা
|
ও এখন বোতল নিয়ে বসবে
|
কিছুক্ষণ বাদে মাতাল হয়ে অনুতাপে দগ্ধ হবে
|
নিজের মৃত্যু কামনা করবে
|
আমাকে নিজের করে না পাওয়ার যন্ত্রণায় চিৎকার করে কাঁদবে
|
প্রতিরাতে ওর এই সময়টুকুই আমার পরম আনন্দের
|
ফয়সাল হাঁটু গেঁড়ে প্রার্থনায় বসে
|
আমার চোখে ঘুম আসে মোহন ভঙ্গিতে
|
আমাকে টেনে নিয়ে চলে রাতের গভীরে
|
যাবার মুহূর্তে আমি বিভাসের দীর্ঘশ্বাস শুনি
|
ও কখনও ঘুমায় না
|
এরপর দিন কাল বছর কিছুই আমার হিসেব নেই
|
কতকাল পরে মনে হলো আমি গভীর ঘুম থেকে ধীরে ধীরে জেগে উঠছি
|
চোখ খুলতে কষ্ট হয়
|
মাথায় প্রচন্ড ব্যথা
|
ঘরটা আমার নয়
|
অপরিচিত সাদা ধবধবে পর্দায় ঘেরা
|
আশে পাশে সবুজ অ্যাপ্রোন পরা লোকজন ঘুরছে
|
কিন্তু ওদের চলফেরায় কোন শব্দ নেই
|
ওরা কি পায়ে নরম সোলের জুতা পরেছে, নাকি খালি পা? প্রশ্নের জবাব খুঁজতে আমি কাৎ হবার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারা গেল না
|
শরীরটা যেন ভারী পাথর
|
মানুষ গুলোকে অশরীরী মনে হয়
|
আমার মুখের উপর দুজন নারী-পুরুষের মুখ ঝুলে থাকে
|
গলায় স্টেথোস্কোপ
|
ওরা বুক দেখে, চোখ দেখে
|
বাহুতে প্রবল চাপ অনুভব করি
|
এতসময়ে আমি ভাসা ভাসা কথা শুনি,
|
Subsets and Splits
No community queries yet
The top public SQL queries from the community will appear here once available.