content
stringlengths 0
129k
|
---|
দোহাই লাগে
|
তোমার রবিন, আর বোলো না..প্লীজ! উফ, দেয়ালেই হাত দিতে পারব না
|
ওর চিৎকারে মাথার ওপর ফড়ফড় করতে লাগল আবার বাদুড়ের ঝাক
|
শক্ত করে গলার লকেটটা চেপে ধরল কোরি
|
অন্ধকারে কেউ দেখতে পেল না সেটা
|
ধীরে ধীরে চোখে সয়ে এল অন্ধকার
|
পেছনের খোলা দরজাটা দিয়ে অতি সামান্য আলো আসছে
|
আবছামত দেখা যাচ্ছে এখন ভেতরটা
|
কংক্রীটে তৈরি সরু, নিচু ছাতওয়ালা একটা সুড়ঙ্গে ঢুকেছে ওরা
|
মুসা, কিশোর বলল, আলমারিতে টর্চ আছে
|
নিয়ে এসো তো দুটো
|
ঢুকেছি যখন ভাল করেই দেখে নিই কি আছে না আছে?
|
ভয়ের ভান করে রবিন বলল, না না, এগিয়ে না আর! বলা যায় না, কখন কাউন্ট ড্রাকুলার কফিন চোখে পড়ে যায়! এ ফালতু কথা বোলো না তো! লাফ দিয়ে দরজার দিকে সরে গেল কোরি
|
আমি যাব না!
|
ওর পাশ কেটে বেরিয়ে গেল মুসা
|
আলমারি খুঁজে দুটো টর্চ বের করে নিয়ে এল
|
মুসার কাছ থেকে একটা টর্চ নিল কিশোর
|
আগে আগে এগোল
|
যাব না বললেও কৌতূহল দমাতে পারল না কোরি
|
এগিয়ে চলল তিন গোয়েন্দার সঙ্গে
|
রোজার এসে যদি জিজ্ঞেস করেন, কাজ ফেলে কোথায় গিয়েছিলাম
|
আমরা, রবিন বলল, কি জবাব দেব?
|
সত্যি কথাই বলব, জবাব দিল কিশোর
|
সুড়ঙ্গটা দেখে কৌতূহল হয়েছিল
|
ভেতরে কি আছে দেখতে গিয়েছিলাম
|
স্বাভাবিক কৌতূহল এটা
|
তিনি কিছু মনে করবেন না
|
একটু চিন্তা করে বলল, তবে একটা কথা ভাবছি
|
এটার কথা কি উলফ জানে?
|
শুকনো গলায় কোরি বলল, আমার ভয় লাগছে!
|
সেটা তো বুঝতেই পারছি
|
শূন্য সুড়ঙ্গ
|
পায়ের নিচে কংক্রীটের মেঝে
|
দেয়াল ছুঁয়ে দেখল কিশোর
|
ভেজা ভেজা
|
ওই দেখো! হাত তুলল মুসা
|
ওর বলার ভঙ্গিতে চমকে গেল কোরি
|
আবার চিৎকার করে উঠল
|
তাকিয়ে দেখল দেয়াল বেয়ে এগিয়ে আসছে একটা বড় পোকা
|
গোঁ গো শুরু করল সে
|
যেন চোখ উল্টে দিয়ে পড়ে যাবে
|
ওয়াক ওয়াক করে বলল, আমার বমি আসছে!
|
নাহ, তোমাকে সঙ্গে নিয়ে এগোনোই তো মুশকিল! বিরক্ত হয়ে বলল কিশোর
|
যাও, তুমি চলে যাও, আমাদের সঙ্গে আর যাওয়া লাগবে না!
|
ঠিক আছে, আর চেঁচাব না
|
কিন্তু আধমিনিট পরেই বড় একটা মাকড়সা দেখে আবার চিৎকার করে উঠল কোরি
|
টারান্টুলা! ব্ল্যাক উইডো
|
স্পাইডার! পিষে ফেলো! কামড়ে দিলে সর্বনাশ!
|
আরে কিসের টারান্টুলা? ধমক লাগাল কিপোর
|
খেয়ে আর কাজ পেল না
|
এখানে টারান্টুলা আসবে কোত্থেকে? না চিনেই চেঁচামেচি
|
একেবারে সাধারণ মাকড়সা
|
ডানে মোড় নিল সুড়ঙ্গ
|
ঢালু হয়ে গেছে মেঝে
|
গলিঘুপচির অভাব নেই
|
ওসবের মধ্যে না ঢুকে সোজা এগিয়ে চলল ওরা
|
মুসা বলল, আমার মনে হয় সাগরের দিকে গেছে সুড়ঙ্গটা
|
পানির ধারে গিয়ে শেষ হয়েছে
|
বানিয়েছিল কারা? রবিনের প্রশ্ন
|
জবাবটাও নিজেই দিল, বোধহয় প্রাচীন চোরাচালানির দল
|
রাতে জাহাজ থেকে গোপনে মাল খালাস করে
|
এনে হোটেলে লুকিয়ে রাখত
|
টর্চের আলো সামনে ধরে রেখে সাবধানে নিচে নামতে লাগল কিশোর
|
আরও কয়েক মিনিট এগোনোর পর দেখা গেল দুভাগ হয়ে গেছে সুড়ঙ্গ
|
মূল সুড়ঙ্গটা বাঁয়ে মোড় নিয়ে সোজা এগিয়েছে
|
ওটা থেকে বেরিয়ে আরেকটা সুড়ঙ্গ চলে গেছে ডানে
|
রসিকতা করে কিশোরকে জিজ্ঞেস করল মুসা, কোনদিকে যাব এবার, ক্যাপ্টেন কিড?
|
চলো আগে ডানেরটা ধরেই যাই, কোরি বলল
|
কেন, কোন বিশেষ কারণ?
|
না না, তাড়াতাড়ি জবাব দিল কোরি, কোন কোন ভূত বিশেষজ্ঞ বা দিকটাকে অশুভ মনে করে তো...
|
আর কিছু বলা লাগল না
|
মুহূর্তে ডান দিকে ঘুরে গেল মুসা
|
কয়েকশো গজ এগোনোর পর চিৎকার করে উঠল কোরি
|
কি হলো? জানতে চাইল কিশোর
|
মুখে কি জানি লাগল!
|
আলো ফেলল কিশোর
|
মাকড়সার জাল
|
তুমি কি ভেবেছিলে?
|
জবাব দিল না কোরি
|
কি আর ভাববে, হাসতে হাসতে বলল রবিন, ভ্যাম্পায়ারের ছোঁয়া
|
জালে দুলন্ত হালকা বাদামী মাকড়সাগুলো দেখতে দেখতে উত্তেজিত হয়ে উঠল কিশোর, সৈকতে বাস করে এসব মাকড়সা, পানির কিনারে
|
তারমানে বাইরে থেকে এসেছে এগুলো
|
আর বাইরে থেকে যেহেতু এসেছে, ঢোকার পথ আছে
|
এবং ঢোকার পথ মানেই বেরোনোর পথও
|
গতি বাড়িয়ে দিল ওরা
|
আঁকাবাঁকা সুড়ঙ্গের আরও কয়েকটা মোড় ঘুরে এসে দাঁড়াল একটা কাঠের দরজার সামনে
|
কয়েক ইঞ্চি ফাঁক হয়ে আছে
|
ওপাশে ঘন অন্ধকার
|
দরজায় হাত রাখল কিশোর
|
এক মুহূর্ত দ্বিধা করে ঠেলা দিল
|
কাচকোচ আওয়াজ তুলে খুলে গেল পাল্লা
|
টর্চের আলোয় দেখা গেল ছোট একটা ঘর
|
মাঝখানে একটা কাঠের টেবিল
|
দুই পাশে বেঞ্চ পাতা
|
টর্চের আলোয় দেখা গেল দেয়ালগুলোতে লাল রঙ লেগে আছে
|
যেন রক্ত গড়িয়ে পড়ছে
|
টেবিলের দিকে চোখ পড়তে খাইছে! বলে উঠল মুসা
|
হাত থেকে খসে গেল টর্চ
|
কিশোরের টর্চটা জ্বলছে
|
বিড়বিড় করে কোরি বলল, মরার খুলি!
|
Subsets and Splits
No community queries yet
The top public SQL queries from the community will appear here once available.