document_id
stringlengths 36
36
| text
stringlengths 253
70.2k
|
---|---|
fd3ed51b-f450-43ed-947c-42f7fc6c40cb | দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে online.forms.gov.bd ওয়েবসাইটের "সাধারণ আবেদন" - এর মাধ্যমে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে বাংলাদেশের নাগরিকগন অনলাইন সেবা পেতে পারেন । ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে আপনার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য রাখতে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
আবেদনের ধাপ সমূহঃ আপনি মোট ৫ টি ধাপ অতিক্রম করে আবেদন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে প্রেরন করতে পারেন ।
প্রথম ধাপঃ এখানে "সাধারণ আবেদন"-এর নির্দেশনাবলি পাবেন ।
দ্বিতীয় ধাপঃ আবেদনের “ফরম” পাবেন ।
০১। প্রাপক অফিস বাছাই করুনঃ আফিসের ধরণ বাছাই করুন - অধিদপ্তর । বাছাই করুন - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, এক্ষেত্রে ”ভূমি” শব্দটি কম্পোজ করলে সহজে সাজেশন হিসাবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পেয়ে যাবেন ।
০২। বরাবর - এর ৩টি ঘর ব্যবহার করে , প্রথম ঘরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পদবী , দ্বিতীয় ঘরে - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, তৃতীয় ঘরে - তেজগাঁও, ঢাকা -১২০৮। লিখতে হবে ।
০৩। সংক্ষেপে ও সুনির্দিষ্ট ভাবে বিষয় লিখতে হবে ।
০৪। আবেদন পত্রের ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ঘর গুলো পূরণ করতে হবে ।
০৫। আবেদন পত্রের ১০ নম্বর ঘরে ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ লিখতে হবে । অর্থাৎ আপনি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে যে সেবাটি পেতে চান বা আপনার বক্তব্যটি উল্লেখ করুন । আপনার বক্তব্যের শেষে আপনার ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করুন । প্রয়োজনে এই ই-মেইলে পত্র প্রেরণ করা হবে । ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ ঘরে আপনার ই-মেইল এড্রেস না দিলে , ই-মেইলের মাধ্যমে পত্র পাবেন না । উল্লেখ্য, ই-মেইল ঘরে ছাড়াও , অতিরিক্তভাবে এই ঘরে ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করতে হবে ।
তৃতীয় ধাপঃ আবেদন পত্রের সাথে কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংযুক্তি দিতে চাইলে, এই ধাপে সংযু্ক্ত করতে হবে । সংযুক্তি সমূহ আপনার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া , আপনার ছবি ও স্বাক্ষরের ছবি সংযু্ক্ত করতে পারেন এই ধাপে । সংযুুক্তি প্রদানের পূর্বে সফট ফাইলটির একটি উপযুক্ত নামকরণ করে নিন ।
চতুর্থ ধাপঃ পেমেন্ট । বর্তমানে অকার্যকর রয়েছে ।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনটি প্রেরণ করুন । আবেদন প্রেরণের পর ‘আবেদন গ্রহন নম্বর’ সম্বলিত একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন । এটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে “খুঁজুন” বাটনে ক্লিক করে এই নম্বরটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
251d8977-56ea-4982-acb9-1bd5cb27322a | দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে online.forms.gov.bd ওয়েবসাইটের "সাধারণ আবেদন" - এর মাধ্যমে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে বাংলাদেশের নাগরিকগন অনলাইন সেবা পেতে পারেন । ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে আপনার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য রাখতে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
আবেদনের ধাপ সমূহঃ আপনি মোট ৫ টি ধাপ অতিক্রম করে আবেদন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে প্রেরন করতে পারেন ।
প্রথম ধাপঃ এখানে "সাধারণ আবেদন"-এর নির্দেশনাবলি পাবেন ।
দ্বিতীয় ধাপঃ আবেদনের “ফরম” পাবেন ।
০১। প্রাপক অফিস বাছাই করুনঃ আফিসের ধরণ বাছাই করুন - অধিদপ্তর । বাছাই করুন - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, এক্ষেত্রে ”ভূমি” শব্দটি কম্পোজ করলে সহজে সাজেশন হিসাবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পেয়ে যাবেন ।
০২। বরাবর - এর ৩টি ঘর ব্যবহার করে , প্রথম ঘরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পদবী , দ্বিতীয় ঘরে - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, তৃতীয় ঘরে - তেজগাঁও, ঢাকা -১২০৮। লিখতে হবে ।
০৩। সংক্ষেপে ও সুনির্দিষ্ট ভাবে বিষয় লিখতে হবে ।
০৪। আবেদন পত্রের ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ঘর গুলো পূরণ করতে হবে ।
০৫। আবেদন পত্রের ১০ নম্বর ঘরে ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ লিখতে হবে । অর্থাৎ আপনি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে যে সেবাটি পেতে চান বা আপনার বক্তব্যটি উল্লেখ করুন । আপনার বক্তব্যের শেষে আপনার ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করুন । প্রয়োজনে এই ই-মেইলে পত্র প্রেরণ করা হবে । ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ ঘরে আপনার ই-মেইল এড্রেস না দিলে , ই-মেইলের মাধ্যমে পত্র পাবেন না । উল্লেখ্য, ই-মেইল ঘরে ছাড়াও , অতিরিক্তভাবে এই ঘরে ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করতে হবে ।
তৃতীয় ধাপঃ আবেদন পত্রের সাথে কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংযুক্তি দিতে চাইলে, এই ধাপে সংযু্ক্ত করতে হবে । সংযুক্তি সমূহ আপনার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া , আপনার ছবি ও স্বাক্ষরের ছবি সংযু্ক্ত করতে পারেন এই ধাপে । সংযুুক্তি প্রদানের পূর্বে সফট ফাইলটির একটি উপযুক্ত নামকরণ করে নিন ।
চতুর্থ ধাপঃ পেমেন্ট । বর্তমানে অকার্যকর রয়েছে ।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনটি প্রেরণ করুন । আবেদন প্রেরণের পর ‘আবেদন গ্রহন নম্বর’ সম্বলিত একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন । এটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে “খুঁজুন” বাটনে ক্লিক করে এই নম্বরটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
50c2fcba-b534-4a65-9a81-283166afef04 | দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে online.forms.gov.bd ওয়েবসাইটের "সাধারণ আবেদন" - এর মাধ্যমে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে বাংলাদেশের নাগরিকগন অনলাইন সেবা পেতে পারেন । ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে আপনার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য রাখতে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
আবেদনের ধাপ সমূহঃ আপনি মোট ৫ টি ধাপ অতিক্রম করে আবেদন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে প্রেরন করতে পারেন ।
প্রথম ধাপঃ এখানে "সাধারণ আবেদন"-এর নির্দেশনাবলি পাবেন ।
দ্বিতীয় ধাপঃ আবেদনের “ফরম” পাবেন ।
০১। প্রাপক অফিস বাছাই করুনঃ আফিসের ধরণ বাছাই করুন - অধিদপ্তর । বাছাই করুন - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, এক্ষেত্রে ”ভূমি” শব্দটি কম্পোজ করলে সহজে সাজেশন হিসাবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পেয়ে যাবেন ।
০২। বরাবর - এর ৩টি ঘর ব্যবহার করে , প্রথম ঘরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পদবী , দ্বিতীয় ঘরে - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, তৃতীয় ঘরে - তেজগাঁও, ঢাকা -১২০৮। লিখতে হবে ।
০৩। সংক্ষেপে ও সুনির্দিষ্ট ভাবে বিষয় লিখতে হবে ।
০৪। আবেদন পত্রের ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ঘর গুলো পূরণ করতে হবে ।
০৫। আবেদন পত্রের ১০ নম্বর ঘরে ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ লিখতে হবে । অর্থাৎ আপনি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে যে সেবাটি পেতে চান বা আপনার বক্তব্যটি উল্লেখ করুন । আপনার বক্তব্যের শেষে আপনার ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করুন । প্রয়োজনে এই ই-মেইলে পত্র প্রেরণ করা হবে । ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ ঘরে আপনার ই-মেইল এড্রেস না দিলে , ই-মেইলের মাধ্যমে পত্র পাবেন না । উল্লেখ্য, ই-মেইল ঘরে ছাড়াও , অতিরিক্তভাবে এই ঘরে ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করতে হবে ।
তৃতীয় ধাপঃ আবেদন পত্রের সাথে কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংযুক্তি দিতে চাইলে, এই ধাপে সংযু্ক্ত করতে হবে । সংযুক্তি সমূহ আপনার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া , আপনার ছবি ও স্বাক্ষরের ছবি সংযু্ক্ত করতে পারেন এই ধাপে । সংযুুক্তি প্রদানের পূর্বে সফট ফাইলটির একটি উপযুক্ত নামকরণ করে নিন ।
চতুর্থ ধাপঃ পেমেন্ট । বর্তমানে অকার্যকর রয়েছে ।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনটি প্রেরণ করুন । আবেদন প্রেরণের পর ‘আবেদন গ্রহন নম্বর’ সম্বলিত একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন । এটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে “খুঁজুন” বাটনে ক্লিক করে এই নম্বরটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
b20cccdd-d942-46b6-93f6-45a7b52d8e5b | দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে online.forms.gov.bd ওয়েবসাইটের "সাধারণ আবেদন" - এর মাধ্যমে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে বাংলাদেশের নাগরিকগন অনলাইন সেবা পেতে পারেন । ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে আপনার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য রাখতে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
আবেদনের ধাপ সমূহঃ আপনি মোট ৫ টি ধাপ অতিক্রম করে আবেদন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে প্রেরন করতে পারেন ।
প্রথম ধাপঃ এখানে "সাধারণ আবেদন"-এর নির্দেশনাবলি পাবেন ।
দ্বিতীয় ধাপঃ আবেদনের “ফরম” পাবেন ।
০১। প্রাপক অফিস বাছাই করুনঃ আফিসের ধরণ বাছাই করুন - অধিদপ্তর । বাছাই করুন - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, এক্ষেত্রে ”ভূমি” শব্দটি কম্পোজ করলে সহজে সাজেশন হিসাবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পেয়ে যাবেন ।
০২। বরাবর - এর ৩টি ঘর ব্যবহার করে , প্রথম ঘরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পদবী , দ্বিতীয় ঘরে - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, তৃতীয় ঘরে - তেজগাঁও, ঢাকা -১২০৮। লিখতে হবে ।
০৩। সংক্ষেপে ও সুনির্দিষ্ট ভাবে বিষয় লিখতে হবে ।
০৪। আবেদন পত্রের ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ঘর গুলো পূরণ করতে হবে ।
০৫। আবেদন পত্রের ১০ নম্বর ঘরে ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ লিখতে হবে । অর্থাৎ আপনি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে যে সেবাটি পেতে চান বা আপনার বক্তব্যটি উল্লেখ করুন । আপনার বক্তব্যের শেষে আপনার ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করুন । প্রয়োজনে এই ই-মেইলে পত্র প্রেরণ করা হবে । ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ ঘরে আপনার ই-মেইল এড্রেস না দিলে , ই-মেইলের মাধ্যমে পত্র পাবেন না । উল্লেখ্য, ই-মেইল ঘরে ছাড়াও , অতিরিক্তভাবে এই ঘরে ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করতে হবে ।
তৃতীয় ধাপঃ আবেদন পত্রের সাথে কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংযুক্তি দিতে চাইলে, এই ধাপে সংযু্ক্ত করতে হবে । সংযুক্তি সমূহ আপনার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া , আপনার ছবি ও স্বাক্ষরের ছবি সংযু্ক্ত করতে পারেন এই ধাপে । সংযুুক্তি প্রদানের পূর্বে সফট ফাইলটির একটি উপযুক্ত নামকরণ করে নিন ।
চতুর্থ ধাপঃ পেমেন্ট । বর্তমানে অকার্যকর রয়েছে ।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনটি প্রেরণ করুন । আবেদন প্রেরণের পর ‘আবেদন গ্রহন নম্বর’ সম্বলিত একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন । এটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে “খুঁজুন” বাটনে ক্লিক করে এই নম্বরটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
12a57346-0f9a-4bd0-84a6-e1d22f5381ab | দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে online.forms.gov.bd ওয়েবসাইটের "সাধারণ আবেদন" - এর মাধ্যমে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে বাংলাদেশের নাগরিকগন অনলাইন সেবা পেতে পারেন । ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে আপনার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য রাখতে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
আবেদনের ধাপ সমূহঃ আপনি মোট ৫ টি ধাপ অতিক্রম করে আবেদন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে প্রেরন করতে পারেন ।
প্রথম ধাপঃ এখানে "সাধারণ আবেদন"-এর নির্দেশনাবলি পাবেন ।
দ্বিতীয় ধাপঃ আবেদনের “ফরম” পাবেন ।
০১। প্রাপক অফিস বাছাই করুনঃ আফিসের ধরণ বাছাই করুন - অধিদপ্তর । বাছাই করুন - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, এক্ষেত্রে ”ভূমি” শব্দটি কম্পোজ করলে সহজে সাজেশন হিসাবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পেয়ে যাবেন ।
০২। বরাবর - এর ৩টি ঘর ব্যবহার করে , প্রথম ঘরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পদবী , দ্বিতীয় ঘরে - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, তৃতীয় ঘরে - তেজগাঁও, ঢাকা -১২০৮। লিখতে হবে ।
০৩। সংক্ষেপে ও সুনির্দিষ্ট ভাবে বিষয় লিখতে হবে ।
০৪। আবেদন পত্রের ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ঘর গুলো পূরণ করতে হবে ।
০৫। আবেদন পত্রের ১০ নম্বর ঘরে ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ লিখতে হবে । অর্থাৎ আপনি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে যে সেবাটি পেতে চান বা আপনার বক্তব্যটি উল্লেখ করুন । আপনার বক্তব্যের শেষে আপনার ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করুন । প্রয়োজনে এই ই-মেইলে পত্র প্রেরণ করা হবে । ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ ঘরে আপনার ই-মেইল এড্রেস না দিলে , ই-মেইলের মাধ্যমে পত্র পাবেন না । উল্লেখ্য, ই-মেইল ঘরে ছাড়াও , অতিরিক্তভাবে এই ঘরে ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করতে হবে ।
তৃতীয় ধাপঃ আবেদন পত্রের সাথে কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংযুক্তি দিতে চাইলে, এই ধাপে সংযু্ক্ত করতে হবে । সংযুক্তি সমূহ আপনার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া , আপনার ছবি ও স্বাক্ষরের ছবি সংযু্ক্ত করতে পারেন এই ধাপে । সংযুুক্তি প্রদানের পূর্বে সফট ফাইলটির একটি উপযুক্ত নামকরণ করে নিন ।
চতুর্থ ধাপঃ পেমেন্ট । বর্তমানে অকার্যকর রয়েছে ।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনটি প্রেরণ করুন । আবেদন প্রেরণের পর ‘আবেদন গ্রহন নম্বর’ সম্বলিত একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন । এটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে “খুঁজুন” বাটনে ক্লিক করে এই নম্বরটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
7177f1a8-5fdb-457d-b497-e1d8d6f6a649 | দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে online.forms.gov.bd ওয়েবসাইটের "সাধারণ আবেদন" - এর মাধ্যমে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে বাংলাদেশের নাগরিকগন অনলাইন সেবা পেতে পারেন । ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে আপনার আবেদনটি গ্রহণযোগ্য রাখতে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
আবেদনের ধাপ সমূহঃ আপনি মোট ৫ টি ধাপ অতিক্রম করে আবেদন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে প্রেরন করতে পারেন ।
প্রথম ধাপঃ এখানে "সাধারণ আবেদন"-এর নির্দেশনাবলি পাবেন ।
দ্বিতীয় ধাপঃ আবেদনের “ফরম” পাবেন ।
০১। প্রাপক অফিস বাছাই করুনঃ আফিসের ধরণ বাছাই করুন - অধিদপ্তর । বাছাই করুন - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, এক্ষেত্রে ”ভূমি” শব্দটি কম্পোজ করলে সহজে সাজেশন হিসাবে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পেয়ে যাবেন ।
০২। বরাবর - এর ৩টি ঘর ব্যবহার করে , প্রথম ঘরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পদবী , দ্বিতীয় ঘরে - ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, তৃতীয় ঘরে - তেজগাঁও, ঢাকা -১২০৮। লিখতে হবে ।
০৩। সংক্ষেপে ও সুনির্দিষ্ট ভাবে বিষয় লিখতে হবে ।
০৪। আবেদন পত্রের ০১ থেকে ১০ পর্যন্ত ঘর গুলো পূরণ করতে হবে ।
০৫। আবেদন পত্রের ১০ নম্বর ঘরে ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ লিখতে হবে । অর্থাৎ আপনি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর হতে যে সেবাটি পেতে চান বা আপনার বক্তব্যটি উল্লেখ করুন । আপনার বক্তব্যের শেষে আপনার ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করুন । প্রয়োজনে এই ই-মেইলে পত্র প্রেরণ করা হবে । ”আবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ “ ঘরে আপনার ই-মেইল এড্রেস না দিলে , ই-মেইলের মাধ্যমে পত্র পাবেন না । উল্লেখ্য, ই-মেইল ঘরে ছাড়াও , অতিরিক্তভাবে এই ঘরে ই-মেইল এড্রেস উল্লেখ করতে হবে ।
তৃতীয় ধাপঃ আবেদন পত্রের সাথে কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট সংযুক্তি দিতে চাইলে, এই ধাপে সংযু্ক্ত করতে হবে । সংযুক্তি সমূহ আপনার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে । এছাড়া , আপনার ছবি ও স্বাক্ষরের ছবি সংযু্ক্ত করতে পারেন এই ধাপে । সংযুুক্তি প্রদানের পূর্বে সফট ফাইলটির একটি উপযুক্ত নামকরণ করে নিন ।
চতুর্থ ধাপঃ পেমেন্ট । বর্তমানে অকার্যকর রয়েছে ।
পঞ্চম ধাপঃ আবেদনটি প্রেরণ করুন । আবেদন প্রেরণের পর ‘আবেদন গ্রহন নম্বর’ সম্বলিত একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন । এটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। পরবর্তীতে “খুঁজুন” বাটনে ক্লিক করে এই নম্বরটি দিয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে পারবেন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
84da0e63-fe1a-4307-8887-cfaee9fa6bf2 | একটি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে সমগ্র দেশ অথবা কোন জেলা অথবা জেলার কোন অংশের স্বত্বলিপি এবং মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত/সংশোধন।
পর্যায়ক্রমে সমগ্র দেশের প্রতিটি মৌজারঃ
প্রতিটি ভূমি মালিকের Records Of Right (ROR) বা স্বত্বলিপি/খতিয়ান প্রণয়ন এবং মুদ্রণ।
প্রতিটি থানা, জেলা এবং সমগ্র দেশের ম্যাপ প্রস্তুত, মুদ্রণ এবং পূর্নমুদ্রণ।
দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিত করণ, সীমানা স্ট্রীপ ম্যাপ প্রস্তুত এবং মুদ্রণ।
আন্তঃ জেলা এবং আন্তঃ থানার সীমানা নির্ধারনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কে কারিগরী সহায়তা প্রদান।
জেলা/থানা পূর্নগঠন সংক্রান্ত সরকারী প্রস্থাবে কারিগরী ও ভৌগোলিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে নিরীক্ষা করণ।
আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিতকরণ, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে এবং ভূমি সংস্কার কার্যক্রমে সরকারকে পরামর্শ প্রদান।
বি.সি.এস(প্রশাসন,পুলিশ) ও অন্যান্য ক্যাডারভূক্ত অফিসারসহ বিচার বিভাগের অফিসারগণের সার্ভে ও সেটেলমেন্ট ট্রেনিং এর আয়োজন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
2e1ca6d9-4fc9-47a2-9d8e-95e12166e073 | একটি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে সমগ্র দেশ অথবা কোন জেলা অথবা জেলার কোন অংশের স্বত্বলিপি এবং মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত/সংশোধন।
পর্যায়ক্রমে সমগ্র দেশের প্রতিটি মৌজারঃ
প্রতিটি ভূমি মালিকের Records Of Right (ROR) বা স্বত্বলিপি/খতিয়ান প্রণয়ন এবং মুদ্রণ।
প্রতিটি থানা, জেলা এবং সমগ্র দেশের ম্যাপ প্রস্তুত, মুদ্রণ এবং পূর্নমুদ্রণ।
দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিত করণ, সীমানা স্ট্রীপ ম্যাপ প্রস্তুত এবং মুদ্রণ।
আন্তঃ জেলা এবং আন্তঃ থানার সীমানা নির্ধারনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কে কারিগরী সহায়তা প্রদান।
জেলা/থানা পূর্নগঠন সংক্রান্ত সরকারী প্রস্থাবে কারিগরী ও ভৌগোলিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে নিরীক্ষা করণ।
আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিতকরণ, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে এবং ভূমি সংস্কার কার্যক্রমে সরকারকে পরামর্শ প্রদান।
বি.সি.এস(প্রশাসন,পুলিশ) ও অন্যান্য ক্যাডারভূক্ত অফিসারসহ বিচার বিভাগের অফিসারগণের সার্ভে ও সেটেলমেন্ট ট্রেনিং এর আয়োজন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
397168d3-67f3-49a0-82d8-5edc284d230d | একটি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে সমগ্র দেশ অথবা কোন জেলা অথবা জেলার কোন অংশের স্বত্বলিপি এবং মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত/সংশোধন।
পর্যায়ক্রমে সমগ্র দেশের প্রতিটি মৌজারঃ
প্রতিটি ভূমি মালিকের Records Of Right (ROR) বা স্বত্বলিপি/খতিয়ান প্রণয়ন এবং মুদ্রণ।
প্রতিটি থানা, জেলা এবং সমগ্র দেশের ম্যাপ প্রস্তুত, মুদ্রণ এবং পূর্নমুদ্রণ।
দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিত করণ, সীমানা স্ট্রীপ ম্যাপ প্রস্তুত এবং মুদ্রণ।
আন্তঃ জেলা এবং আন্তঃ থানার সীমানা নির্ধারনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কে কারিগরী সহায়তা প্রদান।
জেলা/থানা পূর্নগঠন সংক্রান্ত সরকারী প্রস্থাবে কারিগরী ও ভৌগোলিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে নিরীক্ষা করণ।
আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিতকরণ, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে এবং ভূমি সংস্কার কার্যক্রমে সরকারকে পরামর্শ প্রদান।
বি.সি.এস(প্রশাসন,পুলিশ) ও অন্যান্য ক্যাডারভূক্ত অফিসারসহ বিচার বিভাগের অফিসারগণের সার্ভে ও সেটেলমেন্ট ট্রেনিং এর আয়োজন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
e432c6f1-4c0b-49e8-9ec7-07b6109f58c0 | একটি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে সমগ্র দেশ অথবা কোন জেলা অথবা জেলার কোন অংশের স্বত্বলিপি এবং মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত/সংশোধন।
পর্যায়ক্রমে সমগ্র দেশের প্রতিটি মৌজারঃ
প্রতিটি ভূমি মালিকের Records Of Right (ROR) বা স্বত্বলিপি/খতিয়ান প্রণয়ন এবং মুদ্রণ।
প্রতিটি থানা, জেলা এবং সমগ্র দেশের ম্যাপ প্রস্তুত, মুদ্রণ এবং পূর্নমুদ্রণ।
দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিত করণ, সীমানা স্ট্রীপ ম্যাপ প্রস্তুত এবং মুদ্রণ।
আন্তঃ জেলা এবং আন্তঃ থানার সীমানা নির্ধারনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কে কারিগরী সহায়তা প্রদান।
জেলা/থানা পূর্নগঠন সংক্রান্ত সরকারী প্রস্থাবে কারিগরী ও ভৌগোলিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে নিরীক্ষা করণ।
আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিতকরণ, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে এবং ভূমি সংস্কার কার্যক্রমে সরকারকে পরামর্শ প্রদান।
বি.সি.এস(প্রশাসন,পুলিশ) ও অন্যান্য ক্যাডারভূক্ত অফিসারসহ বিচার বিভাগের অফিসারগণের সার্ভে ও সেটেলমেন্ট ট্রেনিং এর আয়োজন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
dcf94560-4007-44ab-b6bc-e29560b60c2d | একটি নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে সমগ্র দেশ অথবা কোন জেলা অথবা জেলার কোন অংশের স্বত্বলিপি এবং মৌজা ম্যাপ প্রস্তুত/সংশোধন।
পর্যায়ক্রমে সমগ্র দেশের প্রতিটি মৌজারঃ
প্রতিটি ভূমি মালিকের Records Of Right (ROR) বা স্বত্বলিপি/খতিয়ান প্রণয়ন এবং মুদ্রণ।
প্রতিটি থানা, জেলা এবং সমগ্র দেশের ম্যাপ প্রস্তুত, মুদ্রণ এবং পূর্নমুদ্রণ।
দেশের আন্তর্জাতিক সীমানা চিহ্নিত করণ, সীমানা স্ট্রীপ ম্যাপ প্রস্তুত এবং মুদ্রণ।
আন্তঃ জেলা এবং আন্তঃ থানার সীমানা নির্ধারনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কে কারিগরী সহায়তা প্রদান।
জেলা/থানা পূর্নগঠন সংক্রান্ত সরকারী প্রস্থাবে কারিগরী ও ভৌগোলিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে নিরীক্ষা করণ।
আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিতকরণ, ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে এবং ভূমি সংস্কার কার্যক্রমে সরকারকে পরামর্শ প্রদান।
বি.সি.এস(প্রশাসন,পুলিশ) ও অন্যান্য ক্যাডারভূক্ত অফিসারসহ বিচার বিভাগের অফিসারগণের সার্ভে ও সেটেলমেন্ট ট্রেনিং এর আয়োজন।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
08d539bf-664d-4f78-9974-a14e8be4ffb4 | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
d92c629f-c24d-482a-8e08-eae4f58ea34f | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
ea4c828d-0ebb-4e50-9582-625a8223dba5 | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
116b4306-b582-4bfc-9a1b-f949d4fb43f8 | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
414a1ee0-3a16-41cd-8586-1f50dcf11bdc | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
9290ce16-69d5-43a0-bf05-5c9b2417f7d1 | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
a196b4e7-2200-4185-a966-dad4c7badb47 | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
b2e8473c-e8bf-4e5d-9493-13efcf3db640 | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
4b3f8280-2d0c-48bb-b893-3f91563fd69c | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
38506dd4-6af7-41aa-a729-7d4ae79a20cf | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
60582e6d-3e37-4261-8780-9dde1c2a725a | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
df0cbcca-ba7f-41eb-9e10-391201a41c6f | ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ইতিহাস ও পরিচিতি:
ব্রিটিশ সরকার এদেশে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করার পর জমিদারগণ ভূমির মালিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। তারা প্রজাচাষীর ভাল-মন্দ, সুখ-দু:খ, সুযোগ সুবিধার দিকে মোটেও তাকাত না। ফলে কৃষকের অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। অনেকে কৃষি কর্ম ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে থাকে। ফলে কৃষি জমি অনাবাদি থাকার উপক্রম হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কৃষক বিদ্রোহ দেখা দেয়। ইত্যাকার কারণে ইংরেজদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন প্রণয়নের চিন্তা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৫ সনে ইংরেজ সরকার বঙ্গীয় সার্ভে আইন পাশ করে। কিন্ত কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ আইন যথেষ্ট না হওয়ায় ১৮৮৫ সনে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৮৮৩ সনের ২ মার্চ আইনটি ভারতীয় আইন সভায় পেশ করা হয় এবং ১৮৮৫ সনে তা অনুমোদন লাভ করে। উল্লিখিত আইনের অধীনে খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পর্যালোচনার জন্য ১৮৮৪ সনে ভূমি রেকর্ড ও কৃষি নামে একটি দপ্তর সৃষ্টি করা হয়। দপ্তরটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেয়া হয় বোর্ড অব রেভিনিউর হাতে। ১৮৮৮ সনে কৃষি একটি স্বতন্ত্র দপ্তর হিসেবে গঠিত হওয়ায় দপ্তরটি ভূমি রেকর্ড দপ্তর নামে পরিচিতি লাভ করে। তখন জরিপ কাজ পরিচালনা করত সার্ভে অব ইন্ডিয়া নামে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান।
১৯১৯ সনে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্ত করা হয় এবং দপ্তরটিকে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর নামে অভিহিত করা হয় যার সদর দপ্তর কোলকাতায় স্থাপিত হয়। ১৯৪৭ সনের দেশ বিভাগের পর অস্থায়ীভাবে বরিশাল জেলায় ব্রাউন কম্পাউন্ডে জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। ১৯৫৩ সনে টিপু সুলতান রোড হতে জরিপ অফিস বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সরকারের আমলে এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয় এবং এর কার্যক্রমের পরিধি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস। তখন হতে ১৯৭৪ সন পর্যন্ত উপসচিব পদ মর্যাদার একজন পরিচালকের অধীনে এ পরিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯৭৫ সনে যুগ্মসচিব পদ মর্যাদার একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পরিদপ্তরটি অধিদপ্তরে রূপান্তরিত হয়। তখন থেকে মহাপরিচালকের অধীন উপসচিব পদ মর্যাদার ২ জন পরিচালক যথাক্রমে (১) পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) ও (২) পরিচালক (জরিপ) দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে প্রশাসনিক সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি পরিচালক (প্রশাসন) এর পদ সৃষ্টি হয় এবং মহাপরিচালক পদটি অতিরিক্ত সচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করে পরিচালকের ৩টি পদ যুগ্নসচিব পদ মর্যাদায় উন্নীত করা হয়।
১৯৮৪ সনের পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতা উত্তর এদেশে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিয়ারা সেটেলমেন্ট, ঢাকার অধীনে অস্থায়ী সেটআপের ভিত্তিতে আর,এস জরিপ পরিচালিত হয়। ১৯৮৪ সনের নিকার এর প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একজন উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, খুলনা, ফরিদপুর, বরিশাল, যশোর, সিলেট, রংপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল এ ১০ টি স্থায়ী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০৯ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সৃষ্টি করা হয়।
২০১১ সনে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও পাবনা রিভিশনাল সেটেলমেন্ট বিলুপ্ত করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পাবনা, দিনাজপুর, পটুয়াখালী ও জামালপুর আরও ৯টি জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস এবং এর অধীনে ২০০ টি উপজেলায় স্থায়ী উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করা হয়।
অধিদপ্তরে রূপান্তর
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংযুক্ত বিভাগ।
বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের (১৮৮৫) অধীন ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত ম্যাপ ও খতিয়ান প্রণয়ন কাজ পরিচালনার লক্ষ্যে “বোর্ড অব রেভিনিউ” এর নিয়ন্ত্রণাধীন “ভূমি রেকর্ড ও কৃষি” নামে দপ্তর সৃষ্টি হয় ১৮৮৪ সালে।
১৮৮৮ সালে “ভূমি রেকর্ড দপ্তর” নামে একটি স্বতন্ত্র দপ্তর গঠন করা হয়। তখন জরিপ কাজ “সার্ভে অব ইন্ডিয়ার” উপর ন্যস্থ ছিল।
১৯১৯ সালে জরিপের কাজ ভূমি রেকর্ড দপ্তরের উপর ন্যস্থ হয় এবং এটি ভূমি রেকর্ড ও জরিপ পরিদপ্তর হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
১৯৭৫ সালে এটি একটি অধিদপ্তরে উন্নিত করা হয় এবং অফিসের নাম করণ করা হয় “ডিপার্টমেন্ট অব ল্যান্ড রেকর্ডস এন্ড সার্ভেস”।
অধিদপ্তরে স্থানান্তর
সি.এস জরিপের সময় সার্ভে ও সেটেলমেন্ট বিভাগের প্রধান অফিস ছিল কোলকাতায়। দেশ বিভাগের পর অস্থায়ী ভাবে বরিশাল জেলার “ব্রাউন কম্পাউন্ড” জরিপ বিভাগের অফিস স্থাপন করা হয়। তখন সেটেলমেন্ট প্রেস ছিল রংপুরে।
পরবর্তীতে বরিশাল জেলা হতে জরিপ অফিস ঢাকার ওয়াজ ঘাট নবাব এষ্টটের বাড়িতে ও আরো কিছুদিন পর টিপুসুলতান রোডের(ওয়ারী) ভাড়া বাড়িতে এবং অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ সমাপ্ত হলে ১৯৫৩ সালে বর্তমান স্থানে (তেজগাঁও) এ অধিদপ্তর টি স্থানান্তর করা হয়। এর কিছুদিন পর সেটেলমেন্ট প্রেস ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
06cf7d3b-a5fa-4c96-b1cd-4c60375e9ca6 | রেকর্ড তঞ্চকতা সংশোধন
চূড়ান্ত প্রকাশনার পূর্বে রেকর্ডের যে কোন জালিয়াতি সেটেলমেন্ট অফিসারের নজরে এলে তা ১৯৫৫ সালের প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৪২(ক) ও ৪২(খ) বিধিতে সংশোধনযোগ্য হতে পারে।
জালিয়াতি সমূহ নিম্নরুপ হতে পারে:
Ø ক)ভলিউমে অবৈধভাবে ঘষামাজা ও কাটাকাটি করে নাম ও দাগ পরিবর্তন।
Ø খ)নামের হিস্যা পরিবর্তন।
Ø গ)নতুন নাম সংযোজন।
Ø ঘ)দাগের এরিয়া পরিবর্তন।
Ø ঙ)আপত্তি/ আপীল স্তরে নোটিশ গোপন করে একতরফভাবে রায় হাসিল।
Ø চ)ভূয়া ব্যক্তিকে দাঁড় করিয়ে শুনানি সম্পাদন এবং তঞ্চকতাপূর্ণ রায় হাসিল।
Ø ছ)আপত্তি/ আপীল কেসের রায়ের পর কাটাকটি করে রায় পরিবর্তন এবং তদানুয়ায়ি রায় তামিল।
Ø জ)রায় তামিল না হওয়ায় সঠিক রেকর্ড প্রস্তুত না হওয়া।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
27999cab-8e2e-46fe-a963-d9e19e201920 | Ø তসদিক কাজ সম্পাদনের পর ৩০ দিন নকশা ও রেকর্ড দেখার সুযোগ থাকে।
Ø ডিপি চলাকালীন তসদিক কৃত পর্চা মিলিয়ে ডিপি নম্বর বসানো এবং ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য ১৯৫৫ সালের প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৩০ বিধিতে আপত্তি কেস দায়ের করা যায়।
Ø ডিপি সমাপ্ত হলে মৌজা ওয়ারী আপত্তি কেস শুনানী শুরু হয়।
Ø আপত্তি কেসের নোটিশ পেলে আপত্তি অফিসারের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে কাগজ-পত্র ও যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের সুযোগ থাকে।
Ø প্রতিটি আপত্তি কেসের রায়ের নকল কপি উঠানো যায়।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
de923dca-0a6b-46c0-a63f-0fdf94ef88d8 | Ø চূড়ান্ত প্রকাশনাকালীন সরকার নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের আওতাধীন খতিয়ান চুড়ান্ত প্রকাশনা ক্যাম্প হতে সংগ্রহ করা যায।
Ø চূড়ান্ত প্রকাশনা সমাপনান্তে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের দপ্তরে রেকর্ড হস্তান্তর করা হয়।
Ø রেকর্ড হস্তান্তরের পর জেলা প্রশাসকের রেকর্ড রুম থেকে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি(পর্চা) সংগ্রহ করা যায়।
Ø সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক রেকর্ডের কাস্টডিয়ান।
Ø জেলা প্রশাসকের রেকর্ড রুম ছাড়া অন্য কোন দ্প্তর হতে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি(পর্চা) সংগ্রহের সুযোগ নেই।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
8ee27fd1-2693-45ec-a72e-1e6bf0b3daf0 | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
1e62a410-fcec-47d6-834d-3cadf04f06ea | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
6d15fac6-3b5c-4bbc-b8f6-f294293013fb | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
0435ff40-0c1c-4a51-954d-c91d6b1754fc | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
f9f8e5ef-69e5-4287-a929-3b1322b0132a | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
82aacad2-2fff-498b-ba61-1d66acf0f5d0 | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
a0c303dc-5b5c-4011-b18d-2cb601d5bcef | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
f71d47df-3f0b-445b-9dee-8e3a0ef69fc6 | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
0fb003b9-75b2-403d-a00a-5aead11c614d | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
a822d6cb-b304-42a7-a13a-66609141eb42 | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
70736d93-096a-41eb-845d-14a1b11831c6 | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
3d8c3f20-2620-4842-a643-91407a654594 | ভিশন
বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ঘোষিত “রুপকল্প-২০২১” অনুসরণে তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে ক্রটিমুক্ত,জনবান্ধব,টেকসই এবং জনকল্যাণমুখী আধুনিক ভূমি জরিপ ও প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
মিশন
· তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে অনলাইনে ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
· আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ভূমি নক্সা ও রেকর্ড ডাটাবেইজ তৈরী করা।
· ভূমি প্রশাসনে দক্ষতা উন্নয়ন।
· স্বল্পতম সময়ে ভূমি মালিকদের অনুকূলে উন্নত নিরাপত্তা সম্বলিত ROR প্রদান।
· জরিপ,ম্যাপিং,ও ভূমি উন্নয়ন করের উন্নয়ন সাধন।
· ম্যাপ ডিজিটাইজড এবং ROR সহ ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড করা।
· প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার,মানব সম্পদ উন্নয়নমূলক ব্যবস্থাদি প্রবর্তন এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত ভূমি প্রশাসন উন্নয়ন (ওয়ান স্টপ সার্ভিস) কার্যক্রম প্রণয়ন করা।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
0216a5b9-0d91-4f35-8aac-98f996d54afe | Ø জেলা প্রশাসক এর পক্ষে সহকারী কমিশনার(ভূমি) 1950সালের প্রজাস্বত্ব আইনের 143ধারানুযায়ী রেকর্ড হালনাগাদ করে থাকেন।
Ø একই আইনের 1955সালের বিধিমালার 23 নং বিধির 03 নং উপবিধিতে করণিক ভুল সংশোধনের ক্ষমতা জেলা প্রশাসক এর পক্ষে সহকারী কমিশনার(ভূমি) বা রাজস্ব অফিসারকে দেয়া আছে।
Ø একই বিধিমালার 23 ( 4)নং উপবিধিতে তঞ্চকতামূলকভাবে লিপিবদ্ধ রেকর্ড সংশোধনের ক্ষমতা কেবলমাত্র জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে দেয়া হয়েছে।
Ø হস্তান্তরের ক্ষেত্রে, ভূমি মালিকের মৃত্যুতে উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে, বন্দোবস্ত প্রদানের ক্ষেত্রে, ভূমি মালিক কর্তৃক পরিত্যাগ করার কারণে, নদী সিকস্তি ও পয়স্তির কারণে, অধিগ্রহণের কারণে সহকারী কমিশনার(ভূমি) নামজারী বা জমা বিভাগের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ড সংশোধন করে থাকেন।
Ø 1950সালের প্রজাস্বত্ব আইনের 149(4) উপ-ধারানুযায়ী চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ডে বোনাফাইড মিস্টেক সংশোধনের ক্ষমতা সরকারের উপর ন্যস্ত আছে।
Ø রেকর্ড ম্যানুয়েল, 1943অনুযায়ী রেকর্ড রক্ষণাবেক্ষণের সার্বিক দায় দায়িত্ব কালেক্টরের।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
987045dc-8dcb-417d-8204-b28965290cee | (১) অধিদপ্তরের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে সার্বিক দায়িত্ব পালন।
(২) বিভাগীয় কারিগরী এবং নীতি নির্ধারণী বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়কে পরামর্শ প্রদান।
(৩) বাজেট বরাদ্দের আওতায় বিভাগীয় মুখ্য হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন।
(৪) আইন, অধ্যাদেশ, বিধি-বিধান এবং সময়ে সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ নির্দেশ অনুযায়ী অধিদপ্তরের যাবতীয় (প্রশাসনিক, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ এবং অন্যান্য) কার্য সম্পাদন।
(৫) দেওয়ানী মামলা ও অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সকল সংসদীয় প্রশ্ন সংক্রান্ত বিষয়াবলী।
(৬) অধিদপ্তরের ক্রিয়াকর্ম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব পালন, নিয়ন্ত্রন,তদারকি ও সমন্বয় সাধন।
(৭) অধিদপ্তরাধীন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নির্বাহী ও অপারেশনাল নির্দেশনাসহ তাদের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি।
(৮) প্রচলিত নিয়োগ বিধিমতে অধিদপ্তরাধীন দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শূন্য পদে নিয়োগ।
(৯) অধিদপ্তরাধীন সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীর বদলী এবং সকল কর্মচারীর পদোন্নতি, অবসর প্রস্তুতি, ছুটি, পেনশন ও কর্মচারী কল্যাণ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াবলী।
(১০) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃংখলামূলক কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়াবলী।
(১১) অধিদপ্তরাধীন সকল প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার অর্জিত ছুটির বিষয়াবলী।
(১২) অধীনস্থ কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা অর্পনের আদেশ প্রদান।
(১৩) প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের প্রতিনিধিত্ব করা এবং ক্ষেত্র বিশেষে তাঁর পক্ষে প্রতিনিধি প্রেরণ করা।
(১৪) অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত সকল প্রকার প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়।
(১৫) পরিচালকগণের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন লিখন উপ-পরিচালক ও সেটেলমেন্ট অফিসার এবং প্রেস অফিসারের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন প্রতিস্বাক্ষর করণ।
(১৬) অধীনস্থ কর্মকর্তাগণের মধ্যে দায়িত্ব বন্টন।
(১৭) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে রাজস্ব আয় নিশ্চিত করা এবং সরকারী সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান করা।
(১৮) অধিদপ্তরের সকল প্রকার ক্রয় বিক্রয় এবং টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়।
(১৯) অধিদপ্তরের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ, উন্নয়ন কর্মসূচী প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন।
(২০) আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিত ও সীমানা বিরোধ সংক্রান্ত বিষয়।
(২১) অধিদপ্তরের কোন গাড়ী ২৫ মাইলের উর্দ্ধে সরকারী কাজে যাতায়াতের অনুমতি প্রদান।
(২২) সরকার কর্তৃক অর্পিত যে কোন দায়িত্ব।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
adcb952e-6331-4cec-8d03-9884c174551d | (১) অধিদপ্তরের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে সার্বিক দায়িত্ব পালন।
(২) বিভাগীয় কারিগরী এবং নীতি নির্ধারণী বিষয়ে প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়কে পরামর্শ প্রদান।
(৩) বাজেট বরাদ্দের আওতায় বিভাগীয় মুখ্য হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন।
(৪) আইন, অধ্যাদেশ, বিধি-বিধান এবং সময়ে সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ নির্দেশ অনুযায়ী অধিদপ্তরের যাবতীয় (প্রশাসনিক, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ এবং অন্যান্য) কার্য সম্পাদন।
(৫) দেওয়ানী মামলা ও অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সকল সংসদীয় প্রশ্ন সংক্রান্ত বিষয়াবলী।
(৬) অধিদপ্তরের ক্রিয়াকর্ম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব পালন, নিয়ন্ত্রন,তদারকি ও সমন্বয় সাধন।
(৭) অধিদপ্তরাধীন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নির্বাহী ও অপারেশনাল নির্দেশনাসহ তাদের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি।
(৮) প্রচলিত নিয়োগ বিধিমতে অধিদপ্তরাধীন দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শূন্য পদে নিয়োগ।
(৯) অধিদপ্তরাধীন সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীর বদলী এবং সকল কর্মচারীর পদোন্নতি, অবসর প্রস্তুতি, ছুটি, পেনশন ও কর্মচারী কল্যাণ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াবলী।
(১০) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃংখলামূলক কার্যক্রম সংক্রান্ত বিষয়াবলী।
(১১) অধিদপ্তরাধীন সকল প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার অর্জিত ছুটির বিষয়াবলী।
(১২) অধীনস্থ কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা অর্পনের আদেশ প্রদান।
(১৩) প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের প্রতিনিধিত্ব করা এবং ক্ষেত্র বিশেষে তাঁর পক্ষে প্রতিনিধি প্রেরণ করা।
(১৪) অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত সকল প্রকার প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়।
(১৫) পরিচালকগণের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন লিখন উপ-পরিচালক ও সেটেলমেন্ট অফিসার এবং প্রেস অফিসারের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন প্রতিস্বাক্ষর করণ।
(১৬) অধীনস্থ কর্মকর্তাগণের মধ্যে দায়িত্ব বন্টন।
(১৭) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে রাজস্ব আয় নিশ্চিত করা এবং সরকারী সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান করা।
(১৮) অধিদপ্তরের সকল প্রকার ক্রয় বিক্রয় এবং টেন্ডার সংক্রান্ত বিষয়।
(১৯) অধিদপ্তরের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ, উন্নয়ন কর্মসূচী প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন।
(২০) আন্তর্জাতিক ও আন্তঃজেলা সীমানা চিহ্নিত ও সীমানা বিরোধ সংক্রান্ত বিষয়।
(২১) অধিদপ্তরের কোন গাড়ী ২৫ মাইলের উর্দ্ধে সরকারী কাজে যাতায়াতের অনুমতি প্রদান।
(২২) সরকার কর্তৃক অর্পিত যে কোন দায়িত্ব।
মোঃ তসলীমুল ইসলাম এনডিসি (অতিঃ সচিব)
মহাপরিচালক
100000 |
0c7a59d9-1a7b-428b-bfc7-7eae5a5af096 | মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচিতি
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার অতি প্রাচীন। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থে ভারতবর্ষে প্রথম আফিম চাষ ও আফিম ব্যবসা শুরু করেছিল এবং এর জন্য একটি ফরমান জারী ও কিছু কর্মকর্তা নিয়োগ করে। বৃটিশরা ভারতবর্ষে আফিম উৎপাদন করে চীনসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে রপ্তানি করে বিপুল অর্থ উপার্জন করে এবং এদেশে আফিমের দোকান চালু করে । ১৮৫৭ সনে আফিম ব্যবসাকে সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন এনে প্রথম আফিম আইন প্রবর্তন এবং ১৮৭৮ সনে আফিম আইন সংশোধন করে আফিম ডিপার্টমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়। অতঃপর গাঁজা ও মদ থেকেও রাজস্ব আদায় শুরু হয় এবং ১৯০৯ সনে বেঙ্গল এক্সাইজ অ্যাক্ট ও বেঙ্গল এক্সাইজ ডিপার্টমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়। আফিম, মদ ও গাঁজা ছাড়াও আফিম ও কোকেন দিয়ে তৈরী বিভিন্ন ধরনের মাদকের প্রসার ঘটলে ১৯৩০ সনে সরকার The Dangerous Drugs Act-1930 প্রণয়ন করে। একইভাবে সরকার আফিম সেবন নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৩২ সনে The Opium Smoking Act-1932 প্রণয়ন এবং ১৯৩৯ সনে The Dangerous Drugs Rules-1939 প্রণয়ন করে। ১৯৪৭ সনে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর মুমলমানদের জন্য মদ পান নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৯৫০ সনে TheProhibtion Rules-1950 তৈরী হয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৫৭ সনে The Opium sales Rules-1957 প্রণীত হয়। এরপর ষাটের দশকে বেঙ্গল এক্সাইজ ডিপার্টমেন্টকে এক্সাইজ এন্ড ট্যাক্সেশন ডিপার্টমেন্ট হিসেবে নামকরণ করে অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যস্ত করা হয়।
মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর ১৯৭৬ সনে এক্সাইজ এন্ড ট্যাক্সেশন ডিপার্টমেন্টকে পুনরায় পুনর্বিন্যাসকরণের মাধ্যমে নারকটিকস এন্ড লিকার পরিদপ্তর নামে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীন ন্যস্ত করা হয়। 1982 সনে কোডিন মিশ্রিত কফ সিরাপ, এ্যালকোহলযুক্ত কতিপয় হেলথ টনিক, ট্যাবলেট, সিরাপ ইত্যাদির উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৮৪ সনে আফিম ও মৃতসঞ্জীবনী সুরা নিষিদ্ধকরণ এবং ১৯৮৭ সনে গাঁজার চাষ বন্ধ ও ১৯৮৯ সনে সমস্ত গাঁজার দোকান তুলে দেয়া হয়।
১৯৮৯ সন পর্যন্ত নারকটিকস এন্ড লিকার পরিদপ্তরের মূল লক্ষ্য ছিল দেশে উৎপাদিত মাদকদ্রব্য থেকে রাজস্ব আদায় করা। আশির দশকে সারা বিশ্বে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশে এ সমস্যার মোকাবেলায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার রোধ, মাদকের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে গণসচেতনতার বিকাশ এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে ১৯৮৯ সনের শেষের দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ, ১৯৮৯ জারী করা হয়। অতঃপর ২ জানুয়ারী, ১৯৯০ তারিখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন,১৯৯০ প্রণয়ন করা হয় এবং নারকটিকস এন্ড লিকারের স্থলে একই বছর তৎকালীন রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের অধীন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯১ তারিখ এ অধিদপ্তরকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাস্ত করা হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালেয়র অধীন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। দেশে অবৈধ মাদকের প্রবাহ রোধ, ঔষধ ও অন্যান্য শিল্পে ব্যবহার্য বৈধ মাদকের শুল্ক আদায় সাপেক্ষে আমদানি, পরিবহন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, মাদকদ্রব্যের সঠিক পরীক্ষণ, মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিতকরণ, মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নিরোধ কার্যক্রমের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন, জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে নিবিড় কর্ম-সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা অধিদপ্তেরর প্রধান দায়িত্ব।
আসাদুজ্জামান খাঁন
মোঃ শহিদুজ্জামান
জনাব মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ ২৯ জুন ২০১৭ তারিখে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করেছেন। তিনি অধিদপ্তরের ৩২তম মহাপরিচালক। |
aefac5bf-6a4b-4fe7-9f19-8741103de962 | ভারপ্রাপ্ত মেয়র আলহাজ্ব মো. জামাল মোস্তফার সংক্ষিপ্ত জীবন-বৃত্তান্ত
আলহাজ্ব মো. জামাল মোস্তফা ১৯৫৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার মিরপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মিরপুর মডেল হাই স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই জনগণকে সেবার মানসিকতা নিয়ে রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। লেখাপড়া শেষে ব্যবসা শুরু করলেও রাজনীতির সাথে তিনি বরাবরই জড়িয়ে আছেন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ১ নং ওয়ার্ড (বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪ নং ও ১৫ নং ওয়ার্ড) আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৫ সাল থেকে অদ্যাবধি কাফরুল থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলেনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন; সেসময়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যে সকল কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছিল তা যথাযথ পালন করেন। ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জনাব জামাল মোস্তফা ৪ নং ওয়ার্ডের কমিশনার নির্বাচিত হন।
২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে তিনি ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তাঁকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ হিসেবেও মনোনয়ন দেয়া হয়। ৩০ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর প্যানেল মেয়র-১ মো. ওসমান গণি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে প্যানেল মেয়র-১ মো. ওসমান গণির মৃত্যুর পর বর্তমানে আলহাজ্ব মো. জামাল মোস্তফা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র |
35f16447-7728-40df-b9cf-440c501b6595 | স্থানীয় সরকার মোতাবেক (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ (সংশোধনী ২০১১), প্রতিটি ওয়ার্ডে (সাধারণ) থেকে এক জন নাগরিক নিজ নিজ নাগরিকের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে এক জন নাগরিক নারী তিনটি ওয়ার্ড থেকে ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলারস কর্মীদের তাদের ওয়ার্ড জন্য একটি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা ডিএনসিসি সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকার জন্য কমিটির সভায় দাঁড়িয়ে ইত্যাদি তারা জোনাল এগজিকিউটিভ অফিস কর্মচারীদের সহায়তায় তাদের ওয়ার্ড সংক্রান্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ডিএনসিসি উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এটি জমা দিতে পারেন অনুমোদিত হয়।
ওয়ার্ড কাউন্সিলারস বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মীরা মাসিক বেতন বিল সেইসাথে রক্ষণাবেক্ষণ উপকরণ, ওয়ার্ডের রাস্তায় আলো জন্য খুচরা যন্ত্রাংশ জন্য অনুমোদিত স্বাক্ষরকারী হয়। তারা ডিএনসিসি ওয়ার্ড পর্যায়ের সেবা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র |
9ae97b50-e27b-4b3a-a38e-775012e2243a | কুয়াকাটা অঞ্চলের আদিবাসী রাখাইনরা নিজ দেশে পরবাসী
কুয়াকাটা : পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকার অংলকার খ্যাত রাখাইন সম্প্রদায় নিজ ভুমিতে পরবাসী হয়ে পড়েছেন। জমি বেদখল, হামলা-মামলা, অন্যায়, অবিচার, বঞ্চনার ও প্রতারণার শিকার হয়ে পার্শবর্তী দেশ মায়ানমার ফিরে যাচ্ছে। এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায় ৫০ হাজারের বেশী জনগোষ্ঠী থেকে দিন দিন কমে এখন ৪ হাজারে এসে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়ত এমন একদিন আসবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শুধু কাগজপত্রেই এ অঞ্চলের রাখাইন সম্প্রদায় সম্পর্কে জানতে পারবে। তবে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যাবে এমন আশংকা রয়েছে।
এর পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে বলে কুয়াকাটায় বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মালম্বী রাখাইন সমাজপতিরা দাবী করেছেন। তাদের মতে, জন্মসুত্রে ও পরিচয়গতভাবে রাখাইনরা বাংলাদেশে দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক হলেও স্থানীয় রাজনীতিতে আজও তারা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নিজ ভাষাসহ সাধারণ শিক্ষায় রাখাইনরা অনগ্রসর ও পশ্চাপদ। রাখাইন শিশুরা পিতা-মাতার নিকট থেকে নিজস্ব ভাষা আয়াত্ব করে কথা বলতে পারলেও তারা লিখতে-পড়তে পারে না। কারণ তাদের নিজস্ব ভাষা শিক্ষার জন্য কোন প্রতিষ্ঠানিক সুযোগ নেই।
প্রধান জনগোষ্ঠী বাঙ্গালি সমাজের একশ্রেনীর লোকদের ভূমিগ্রাসের হীন তৎপরতায় রাখাইনরা প্রতারিত ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে দিনের পর দিন। ফলে কৃষি জমি হারিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে দারিদ্র ক্রমশ ঘিরে ধরেছে তাদের। চলমান আইন শৃংখলা পরিস্থিতি কোনক্রমে বিপর্যস্ত হলেই এ সম্প্রদায় নিতান্তই নিরুপায় ও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তারা গা ঝাড়া দিয়ে আর উঠতে পারে না। নিজেদের মধ্যে সংগঠনিক শক্তিকে সংহত করতে না পেরে এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইনরা সকল ক্ষেত্রে সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। জাতিগত ও শ্রেনীগতভাবে প্রশাসনের লোকদের সাথে রাখাইনদের অবস্থানগত পার্থক্য রয়েছে এবং সে কারণেও প্রশাসনের সহযোগিতা ও অনুকম্পা থেকে তারা বিচ্ছিন্ন।
স্থানীয় ভূমিগ্রাসীদের আগ্রাসন মনোভাবের কারণে চাষের জমি হারিয়ে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে রাখাইনরা দেশান্তরিত হচ্ছে। গত ১০ বছরে শুধুমাত্র লতাচাপলী (কুয়াকাটা) ইউনিয়নের নয়াপাড়া বসবাসরত সেকালের জনপ্রতিনিধি সেচামং রাখাইন, সেঅংজান তালুকদার, গোড়াআমখোলাপাড়ার সমাজপতি মংনান্ট তালুকদার লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে দুই’শ কম ভোটের ব্যবধানে হেরেছিলেন। পরবর্তীতে জমিজমা বেহাত হওয়ায় ছেলেমেয়েদের মিয়ানমার পাঠিয়ে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে স্ব-স্ত্রীক জন্মভূমি ত্যাগ করেন।
একই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে গত বছর গোড়াআমখোলা পাড়া আশ্রায়ন প্রকল্পের বসাবাসকারী স্ব-পরিবারে মংনান্টচিন ও তেওয়ার দেশান্তরিত হয়েছে। দিয়ারআমখোলাপাড়া থেকে স্ব-পরিবারে থয়সাইচিন, লক্ষীপাড়ার লাক্রুসে জন্ম ভূমি ছেড়েছেন অনেক আগেই। এভাবে নাম না জানা কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকা থেকে অসংখ্যক রাখাইন পরিবার বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার পাড়ি দিয়েছেন। ইতোমধ্যে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন গোড়াআমখোলা পাড়ার চানসে রাখাইন ও তার পিতা লাচিমোর ৬ সদস্যের একটি যৌথ পরিবার। চলতি বছরের শেষদিকে অথবা আগামী বছরের প্রথমদিকে মিয়ানমার যাবেন বলে পরিবারটি জানিয়েছেন।
একই পাড়ার তেননান ও মংথুই পরিবার জমিজমা নিয়ে হামলা মামলার শিকার হয়ে এখন নিঃস্ব প্রায়। জমিজমা সংক্রান্ত ঝামেলা মিটাতে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ থেকে দ্রুত নিস্পত্তি না হলে হয়ত এ পরিবারটিও পাড়ি দিবেন।
তেননান রাখাইন এর বাবা মংথুই রাখাইন জানান, স্থানীয় ভূমিদস্যুরা তাদের পরিবারকে দেশ ছাড়া করার অসৎ লক্ষ্যে তার মালিকানাধীন ১৩ একর জমি জাল-জালিয়াতিভাবে ভূঁয়া বায়না দলিল সৃষ্টি পূর্বক হয়রানী করছে। তাদের প্রায় ১০একর জমি প্রভাবশালী ভূমিগ্রাসীরা গ্রাস করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এছাড়াও দেশ ত্যাগ করে পাশ্ববর্তী দেশ মায়ানমার, বার্মায় ফিরে যাওয়ার পিছনে কাজ করছে একটি কুসংস্কার। রাখাইন সম্প্রদায় অনেকেই বিশ্বাস করে তাদের বসবাসের আশেপাশে যখনই বাঁধ বা ভেরী নির্মান ও নদীগুলো ভরাট হবে এবং আরাকান ভূখন্ড হতে এ অঞ্চলে আগমনের মেয়াদ দু’শত বছর (১৭৮৪-১৯৮৪) অতিবাহিত হবে তখন আর এ অঞ্চলে তাদের বসবাস করা উচিত নয়। এরপরও কেউ বসবাস করলে তাদের ওপর নেমে আসবে নানা রকম দূর্যোগ ও বিপদ এমন বিশ্বাস রাখাইনদের পূর্ব পুরুষ থেকে চলে আসছে। এ কুসংস্কার এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইনরা আজও বিশ্বাস করছে।
কুসংস্কারের বিষয়ে প্রবীন রাখানইন সমাজপতি বাবু মংনান্ট তালুকদার এর একটি লেখা থেকে জানা যায়, এ অঞ্চলে বসবাসরত রাখাইনরা কুসংস্কার বিশ্বাস করে বিধায় কিছু সংখ্যক রাখাইন দেশ ত্যাগ করেছেন।
কখন কিভাবে এ অঞ্চলে রাখাইন উপজাতির আগমন ঘটে : আনুমানিক ২শ’ বছরেরও আগে ইংরেজী ১৭৮৪ খৃষ্টাব্দে, বাংলা ১১৯১ সালের শীতের হীম হাওয়ায় মগ্ন নিশিত রাতের অন্ধকারে আরকানের মেঘাবতী এলাকা থেকে ১শ’ ৫০টি রাখাইন পরিবার ৫০টি নৌকা নিয়ে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে পূর্ব থেকে সোজা পশ্চিম দিকে চলে আসে। ৩ দিন ৩ রাত পর বাংলার পটুয়াখালী (তৎকালীন বাকেরগঞ্জ) জেলার উপকূলীয় রাঙ্গাবালী দ্বীপে আশ্রয় নেয়। জন মানবহীন এক সমুদ্র দ্বীপে হিংস্র, জীবজন্তুুতে ভরা সেই অরণ্য ভূমি রাঙ্গাবালীতে আসার পেছনে রাখাইনদের ছিল এক করুন ইতিহাস। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রমান পাওয়া যায়, খ্রিঃ পূর্ব ২৬৬৬ থেকে ১৭৮৪ পর্যন্ত আরাকান ছিল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজ্য। ম্রাউ রাজ বংশের শেষ সম্রাট থামাদা (১৭৮২-১৭৮৪) যখন আরাকানের সিংহাসনে উপবিষ্ট ছিলেন, তখন বর্মী শাসক বোধপায়া (১৭৮২-১৮১৯) এই ক্ষুদ্র রাজ্যটিকে প্রায় ৩০ হাজার সৈন্য নিয়ে আক্রমন করেন।
আরাকানের আদিবাসীরা বর্মী শত্রু বাহিনীকে প্রচন্ডভাবে বাঁধা দেয়। কিন্তু আরাকানীরা বর্মী সেনাবাহিনীর নিকট এক সময় পরাজিত হন। কেননা বর্মীদের সৈন্য সংখ্যা আরাকানীদের অপেক্ষায় অনেক বেশি ও রণকৌশলী এবং সুদক্ষ। সম্রাট থামাদা বর্মীদের হাতে বন্দী হয়ে প্রানদন্ডে দন্ডিত হলেন। এভাবে আরাকান ১৭৮৫ খ্রিঃ তার স্বাধীন সত্ত্বা হারিয়ে বার্মার একটি প্রদেশে পরিনত হয়। বর্মী সেনাবাহিনী পরাজিত আরাকানীদের ওপর নৃশংস অত্যাচার শুরু করে। বর্মীদের অত্যাচার ও দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে আত্মরক্ষার জন্য ১শ’ ৫০টি পরিবার এভাবেই রাঙ্গাবালীর দ্বীপে সেসময় আশ্রায় নিয়েছিল।
এ অঞ্চলে রাখাইনদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম : তারা স্ব-দেশ হতে তাদের সঙ্গে আনা ধারালো অস্ত্র যেমন দাও, ছেনা, বল্লম, লেজা ইত্যাদি দিয়ে বনজঙ্গল পরিস্কার করে কৃষি ভূমিতে রূপান্তর করে। চলে আসার সময় স্বদেশ থেকে সাথে করে নিয়ে আসা ধান ও অন্যান্য ফলমূলের বীজ বপণ শুরু করে। তখনকার দিনে ওই সকল দ্বীপ ছিল বন জঙ্গলে ঘেরা জন মানবহীন বনভূমি। বন্য মহিষ, বন্য গরু, হিংস্র বাঘ অর্থাৎ পশুরাই ছিল সেখানকার আদিবাসী। নদী খালে ছিল অসংখ্য কুমীর। তারপরও গাছপালা কেটে ঝোপঝাড় পরিস্কার করে প্রথমে স্বপরিবারে থাকার টং ঘর তৈরি করে। দ্বিতীয়ত্ব আবাদ করা জমি তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে পত্তন নিয়েছিল তারা।
সাথে আনা হাতিয়ার দিয়ে হিংস্র জীবজন্তু দমন করতে পারলেও রাঙ্গাবালীতে বড় বড় ইদুরের উৎপাত ছিল অনেটা বেশী। এ কারনে তাদের আবাদকৃত অধিকাংশ ফসলই নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার বহু চেষ্টা করেও কোন প্রকার প্রতিকারের উপায় খুঁজে পাচ্ছিল না তারা। আরও একটা বড় সমস্যা ছিল সুপেয় পানীয় জলের। লবনাক্ত পানি খেয়ে খেয়ে তাদের পেটের পীড়া দেখা দিতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে একজন ইউরোপিয়ান নেভাল অফিসার ভাগ্যক্রমে রাখাইনদের অবস্থান খুঁজে পান। ওই অফিসার মাঝে মাঝে তাদের নিকট আসা যাওয়া করতেন। একসময় রাখাইন সমাজপতিদের সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কের সৃষ্টি হয়।
রাখাইনদের সমস্যার কথা শুনে ওই অফিসার প্রথমে তাদের জরুরী ঔষধপত্র, প্রয়োজনীয় কাপড় চোপড়, পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন। এরপর অফিসারের সাহায্য সহযোগীতায় রাখাইনরা ওই দ্বীপ ছেড়ে একটু পশ্চিমে একই জেলার বড়বাইজদিয়া নামক এলাকায় এসে পুনরায় বসতি স্থাপন করেন। এসময় নেভাল অফিসার কিছু অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে এমন তথ্যও পাওয়া যায়। এখানে যারা এসে ছিলেন সবাই কৃষিজীবি। জঙ্গল আবাদ করা, জঙ্গলের জন্তু জানোয়ারের সঙ্গে লড়াই করা, মাছ ধরার নিয়ম-পদ্ধতি এ সবই তাদের আয়ত্বে ছিল। রাখাইন জনগোষ্ঠি পটুয়াখালী এলাকায় আসার প্রায় ৫০ বছর যেতে না যেতেই ১৮৩৪-১৮৮৪ খ্রিঃ পর হতে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা ও কলাপাড়া এবং বরগুনা জেলার আমতলী ও তালতলী অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বসতি ছড়িয়ে পড়ে।
এছাড়াও অন্য একটি সূত্রে পাওয়া যায়, রাখাইন সম্প্রদায় প্রথম আরকান থেকে রামু ও কক্সবাজার আসে। পরে স্থানান্তরিত হয়ে বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলায় আসে (তখন বরগুনা জেলা ছিল না)।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-প্রান্তসীমার শেষ ভুখন্ড পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া ও গলাচিপা থানা এবং বরগুনা জেলার বরগুনা সদর ও আমতলী থানার মধ্য থেকে নতুন সৃষ্ট থানা তালতলী সমুদ্র উপকূল জুড়ে রাখাইন জনগোষ্ঠিরা একচেটিয়া বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি হলে তারা বিভিন্ন এলাকায় বসতি স্থাপন করে।
বিশেষ করে সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটার আশপাশের গ্রামগুলির মধ্যে কালাচানপাড়া, গোড়াআমখোলাপাড়া, দিয়ারআমখোলাপাড়া, নয়াপাড়া, নাইউরী পাড়া, মংথয়পাড়া, থঞ্জুপাড়া, মিশ্রিপাড়া, লক্ষ্মীপাড়া, বৌলতলীপাড়া, পক্ষীয়াপাড়া, কেরানীপাড়ায় এখনও রাখাইনরা বসবাস করছেন। আমতলী উপজেলার তালতলী থানার আশপাশে তালতলীপাড়া, ছাতনপাড়া, গোড়াঠাকুরপাড়া, আগাঠাকুরপাড়া, মনুসেপাড়া, অংকোজানপাড়া, তাতেপাড়া, লাউপাড়া, নামেসেপাড়া, কবিরাজপাড়া, সওদাগাড়পাড়া ও তালুকদারপাড়ায় এখনও রাখাইনরা স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে।
চল্লিশ শতকের শেষভাগে এ অঞ্চলগুলোতে সর্বমোট ২৪২টি রাখাইন পাড়া বা পল্লী ছিল বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়। তবে বাড়ি বা ঘরের সংখ্যা ও জনসংখ্যার পরিসংখ্যান সঠিকভাবে পাওয়া যায়নি। তখনকার সময়ের প্রবীন রাখাইনদের কাছ থেকে শোনা যায়, পটুয়াখালী জেলায় ৫০ হাজারের উপরে রাখাইনদের বসবাস ছিল। বর্তমানে রাখাইন জনসংখ্যা ৪ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। অপরদিকে বহু রাখাইন পাড়া আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং অবশিষ্টগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে।
বিলুপ্তি হওয়া রাখাইনদের নামকরণ : কুয়াকাটা ও এর আশেপাশে এবং তালতলীর বড় বগি এলাকার এরকম বহু পাড়া নামে থাকলেও সেখানে কোন রাখাইনদের বসবাস নেই। রাখাইনদের বসবাস না থাকায় তাদের দেয়া নাম ব্যবহৃত হয় না। রাখাইন পল্লীর প্রধান বা মাদবরের নামে গ্রামের নাম হলেও বর্তমানে তাও বিলুপ্তে পথে। দেশের প্রধান জনগোষ্ঠি মুসলামানদের নামে নতুন করে নামকরণ করেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, লতাচাপলী ইউনিয়নের পুনামাপাড়া থেকে ইসলামপুর, ডংকুপাড়া থেকে রসূলপুর, হুইচানপাড়া থেকে হোসেন পাড়া, কালাচানপাড়া থেকে আলীপুর, নাইউরীপাড়া থেকে খাজুরা নামকরণ করা হয়েছে।
রাখাইনদের পল্লীর বর্তমান অবস্থান : গলাচিপা উপজেলা বড়বাইজদায় ২৬টি পাড়া ও ৪২০টি ঘর থেকে এখন ৫টি পাড়া ২২টি ঘরে এসে দাঁড়িয়েছে। তেমনি বরগুনা সদর বালিয়াতলীতে ৯টি পাড়ায় ৩৯০টি ঘর ছিল এখন সেখানে পাড়ার সংখ্যা রয়েছে মাত্র ১টি এবং ঘরের সংখ্যা ৩টি। এভাবে কালক্রমে হারিয়ে যেতে থাকে দক্ষিনাঞ্চালে বেশী বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়।
যেভাবে রাখাইনদের সংখ্যাগরিষ্ঠাতা হ্রাস পায় : পঞ্চাশের দশকের শুরু থেকে রাখাইনদের বসবাসের এলাকাগুলোতে বাঙ্গালী মুসলমানদের আগমন ঘটে। তারা রাখাইনদের আবাদী জমি বর্গা চাষ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করত। পরবর্তীতে জমির ওপর এক শ্রেনীর চক্রান্তকারী ও সুযোগ সন্ধানী বাঙ্গালীদের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে এ সম্প্রদায় তাদের জমি হারাতে থাকে। এছাড়াও ৫০ থেকে ৬০ দশক জুড়ে অত্র এলাকায় ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ বিশেষ করে ঘূর্নিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, লবনাক্ততা, অনাবৃষ্টি, মহামারি ইত্যাদি কারণে রাখাইনরা অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী জীবনে ছেদ পড়ে। এক সময় রাখাইনরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রকৃতিক ঘূর্নিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে অসংখ্য মানুষ মারা যায় এবং জমির দলিলপত্র হারিয়ে গেলে এ সুযোগে বাঙালীরা ভূয়া জালজালিয়াতি দলিল সৃষ্টি করে জমি দখলে নেয়।
রাখাইনদের জমি হাতছাড়া হওয়ার ব্যাপারে গোড়াআমখোলাপাড়ার বাসিন্দা তেননান্ট রাখাইন বলেন, একটি স্বার্থনেশী প্রভাবশালী মহল ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে আমাদের জমি দখলে নেয়ার পায়তারায় সর্বদা লিপ্ত রয়েছে।
রাখাইনরা এক সময় জায়গা জমি ধন দৌলতে খুবই স্বনির্ভর ও সমৃদ্ধ ছিল। প্রত্যেক পরিবারে প্রচুর চাষের জমি ও ধন দৌলত থাকায় তাদের বাড়তি আয়ে তারা গড়ে তুলেছিলেন বড় বড় বৌদ্ধ বিহার (প্যাগোডা), শ্মশান (চে-শেই) ও শান বাধানো পুকুর। সাঁজ পোশাক, সোনা-গয়না পড়ে রাখাইন মেয়ে ও বৌ’রা সদা হাসি খুশিতে মেতে থাকত। ১৯৩০ হতে ১৯৬০ খ্রিঃ পর্যন্ত প্রতিটি রাখাইন পাড়ায় শত শত রাখাইন নারী-পুরষ ও শিশুরা নানা আমোদ ফূর্তিতে দিন কাটাত। প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং বৈশাখী পূর্নিমা, চৈত্র সংক্রান্তি বা সাংগ্রান, নববর্ষ উৎযাপনে জলকেলী উৎসবসহ সবকটি পূর্নিমার তিথিতে রাখাইনরা ব্যাপক আনন্দে করত। এছাড়া শ্রমন ও বিবাহ অনুষ্ঠান, মৃত্যুর পর শ্রদ্ধা নিবেদন, বিশেষ করে বৌদ্ধ বিহারাধ্যক্ষের মৃত্যু পরবর্তী শ্রদ্ধা নিবেদন ভাবগম্বীর পরিবেশে বৃহৎ উৎসব আকারে সম্পন্ন করা হত। রাখাইনরা আমোদ প্রমোদ অত্যন্ত পছন্দ করেন। কারো সঙ্গে দেখা হলে নারী পুরুষ নির্বিশেষে অভিবাদন জানান এবং মৃদু হেসে কুশল বিনিময় করেন। এটি রাখাইনদের ঐতিহ্যগত স্বভাবের অর্ন্তগত। সেই কল-কাকলিতে সদা মুখরিত রাখাইন জনপদ যেন বিরান ভূমে পতিত হচ্ছে। বর্তমানের এ সম্প্রদায়টি ভূলতে বসেছে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি। বছরে দু-একটি অনুষ্ঠান উৎযাপিত হলেও তা শুধুই নামে মাত্র।
সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাখাইন শিল্পগোষ্ঠি’র পৃষ্ঠপোষক গোড়া আমখোলাপাড়ার বাবু চোতেন বলেন, আর্থিক দৈন্যতায় দ’ুবেলা-দ’ুমুঠো খাবার সন্ধান করতেই যখন বেগ পোহাতে হচ্ছে তখন সংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করা অস্বাভাবিকই বটে। তারপরও বিলুপ্ত হওয়া এ রাখাইন সংস্কৃতি ধর্মীয় চেতনা ও মূল্যবোধের কারণে আকঁড়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সরকারী-বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ সংস্কৃতি পূনঃরূদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।
কুয়াকাটা শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার সভাপতি বাবু মংচুমিন তালুকদার জানান, তাদের আবাদি জমি বেদখল, হামলা-মামলা, অন্যায়, অবিচার, বঞ্চনার ও প্রতারণার শিকার এ সম্প্রদায় পার্শ্ববর্তী দেশে পাড়ি দিচ্ছেন।
কলাপাড়া উপজেলা রাখাইন সমাজকল্যান সমিতির সভাপতি উসুয়ে বাবু বলেন, আমরা এ অঞ্চলের আদিবাসী হলেও আজও আমাদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ থেকে উত্তোরণের জন্যই রাখাইন সমাজকল্যান সমিতি কাজ করছে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকার আর একটু আন্তরিক হলে আমরা আমাদের ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারব।
এ ব্যাপারে রাখাইন সমাজপতি ও রাখাইন বুড্ডিষ্ট ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন সভাপতি বাবু উথাচিন মাতুব্বর জানান, ৫০ থেকে ৬০ দশক জুড়ে এ এলাকায় ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঘূর্নিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে অসংখ্য মানুষ মারা যায় এবং বন্যা পরবর্তী সময়ে কিছু সংখ্যক লোক দেশ ত্যাগ করেছেন। তাছাড়া প্রাকৃতিক দূর্যোগে তাদের দখলীয় জমির দলিলপত্র হারিয়ে গেলে এই সুযোগে একটি স্বার্থনেশী মহল ভূয়া জালজালিয়াতি দলিল সৃষ্টি করে জমি দখলে নেয়। পরবর্তীতে আর্থিক অভাব অনটনের কারণে অনেকে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি দাবী করেছেন সরকার এসব ভূমি দস্যুদের কঠোর হাতে দমন করলে রাখাইনরা হারানো অস্তিত্ব ফিরে পাবে।
রাখাইনদের অস্তিত্ব সংকটের ব্যাপারে বেসরকারী সংস্থা কুয়াকাটা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’র নির্বাহী পরিচালক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, এ অঞ্চলের বসবাসরত রাখাইনরা তাদের নিজস্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি সংকটে ভুগছে সত্য। তাছাড়া এ এলাকার জমি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় ভূমি দস্যুদের প্রতারণার কবলে পড়ে তাদের জমি বেহাত হচ্ছে বিধায় তারা এখানকার জমি বিক্রয় করে পার্শ্ববর্তী দেশ মায়নমারে কম দামে জমি কিনতে পারছে। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য তারা ধীরে ধীরে দেশ ছাড়ছেন।
রাখাইন নারী আন্দোলনের নেত্রী ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস’র রাখাইন আইসিডিপি বরিশাল বিভাগীয় প্রকল্প ইনচার্জ মেইনথিন প্রমিলা বলেন, স্থানীয়ভাবে রাখাইনদের ভোগদখলীয় জমি বন্ধক রাখার কথা বলে বিভিন্ন চুক্তিতে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে একটি গোষ্ঠির জমি দখলে নেয়ার প্রচলন চালু ছিল। এ থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য তাদের পাশে কাউকে পায়নি। তবে গত পাঁচ বছরে এর প্রচলন কিছুটা হলেও কমেছে। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস ২০০৭ সাল থেকে রাখাইন সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার জন্য তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে।
//কাজী সাঈদ/উপকূল বাংলদেশ/কুয়াকাটা-পটুয়াখালী/০৭১১২০১৫// |
50cf1551-ba4e-414b-bab6-abbc9b867d02 | দাকোপের এই মুক্তিযোদ্ধার দিন চলে দিনমজুরিতে
দাকোপ (খুলনা) : সময়টা ১৩ ডিসেম্বর রবিবার বিকেল ৫টা। দাকোপের বাজুয়া -খুটাখালী বাজারের বাঁধ, কালি শীলের চায়ের দোকান। চা পান করতে করতে দোকানে রাখা টেলিভিশনে খবর দেখছেন প্রায় জনা ত্রিশ মানুষ। হঠাৎ একজন বৃদ্ধ গামছা গায়ে শীতে কাঁপতে কাঁপতে এসে এক কাপ চা খেতে চাইলেন। দোকান্দার চা দিলে তিনি বেঞ্চে বসে চা পান করে উঠে চায়ের দাম দিতে চাইলে দোকান্দার বলেন, চায়ের দাম দেওয়া লাগবে না। সাথে সাথে বলে উঠলেন ‘‘যারা মুক্তি যুদ্ধের বিরোধী ছিল তাদের অনেকে ভূয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সকল সুবিধা পাচ্ছে, আর তুমি যুদ্ধ করেও কিছু পেলেনা।’’
কপালের কি পরিহাস! এ কথা শোনার পর নজর গেল সেই অসুস্থ্য বৃদ্ধ মুক্তি যোদ্ধার উপর। ততক্ষনে তিনি উঠে দক্ষিণ দিকে মোটর সাইকেল স্ট্রান্ডের পথে যেতে শুরু করেছেন। আমি দ্রুত হেঁটে গিয়ে তিনবার বললাম , দাদু কেমন আছেন? তিনি আমাকে কোনো উত্তর না দিয়ে হাঁটতে লাগলেন।
পরিস্থিতি বুঝে পাশের থেকে একজন দোকান্দার বলেন, উনি কানে শুনতে পাননা। তারপর আমি ওনার হাত ধরে একটি দোকানের টুলে বসালাম। বার্ধক্যজনিত কারণে শ্রবন প্রতিবন্ধী এবং দন্তহীন গালের এই মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে অনেক জোরে কথা বলে জানতে পারলাম। তাঁর জীবনের অনেক কাহিনী।
তাঁর নাম অমূল্য বাওয়ালী, পিতার নাম- মৃত নকুল বাওয়ালী, মাতার নাম-মৃত ফুলবাসী বাওয়ালী বাড়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের দশঘর এলাকাতে ছিল। স্বাধীনতার পর তিনি বিবাহ করেণ এবং একই উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বাজুয়াতে ৪ কাঠা জায়গা কিনে বসবাস শুরু করেন।
তিনি জানান, ১৯৭১ সালে যখন স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় তখন তার বয়স ৩৫ বছর। তৃতীয় শ্রেনী পাশ এই যুবক জানতে পারেণ মুক্তি যোদ্ধাদের ভারতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যুদ্ধে যাওয়ার তার প্রচন্ড ইচ্ছা তাই ভারতে গিয়ে মানাভাটা ক্যাম্প থেকে মা ,বাবাকে না জানিয়ে পালিয়ে বশিরহাট ময়লাঘাটা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ভর্তি হন। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাতিয়ার নিয়ে তিনি মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার বরিশালের যুবক অমরেশ মন্ডলের দলে যোগ দেন।
অমূল্য জানান, সাতক্ষিরা এবং মোংলা বন্দরের যুদ্ধে তিনি পাক সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শুধুমাত্র কমান্ডার ছাড়া তার সহযোদ্ধাদের নাম এখন আর মনে করতে পারেণ না। তিনি জানান যুদ্ধ শেষ হলে স্বাধীনতার পর তিনি বাসন্তি নামের এক বালিকাকে বিবাহ করেণ। তাঁর স্ত্রী তাঁকে ভিষন ভালবাসত। স্বামী যাতে আবার যুদ্ধে না যেতে পারে তাই নিরক্ষর এই সহধর্মিনী মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর পরিচয় পত্রটি পুড়িয়ে ফেলে। সেদিন কে জানতো এই পরিচয় পত্র একদিন কাজে লাগতে পারে! পরে যখন সরকারীভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করা হয় তখন অমূল্য তার পরিচয়গত্র দেখাতে না পারায় মুক্তিযোদ্ধার সম্মান এবং মাসিক ভাতা থেকে বঞ্চিত হল।
এক ছেলে ও চার কন্যার জনক অমূল্য অন্যের বাড়ীতে কাজ করে বহু কষ্ট করে ছেলে মেয়েদের বড় করেছেন বিবাহ দিয়েছেন। তাদের নিজ নিজ পরিবার হয়েছে। অমূল্যও অতি বৃদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তার নিজের আয়-ইনকাম না থাকায় ছেলে মেয়েরা বাবাকে আর দেখে না। অমূল্য প্রতিদিন হোটেল- রেস্তোরায় পানি দিয়ে, কাঠ চেরাই করে যা পায় তা দিয়ে কোনোমতে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার কাটায়।
অমূল্য জানান প্রতিদিন তাঁরা তিন বেলা খেতে পায়না, রোগে চিকিৎসা হতে পারেনা, এখন শুধূ মৃত্যুর জন্য দিন গোনা ছাড়া তাঁদের করার কিছুই নেই। কয়দিন পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস তার অনুভূতি জানতে চাইলে অমূল্যর চোখ জলে ভিজে চক চক করে ওঠে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে নিজেকে সামলে তিনি বলেণ,দেশে আর পাকিস্থানীরা নেই,দেশ স্বাধিন হয়েছে সবাই ভালো থাকুক।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাওলাদ হোসেন বলেন, তিনি অমূল্যকে চিনেন না বা অমূল্য কোনোদিন তার কাছে এসে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচয় দেন নি।
বাজুয়ার সমাজসেবী কালিপদ শীল ও আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা লাউডোবের যতীন্দ্রনাথ গাইন বলেন, অমূল্য বাওয়ালী স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহন করেছিলেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁকে সম্মান করা উচিৎ।
//দীপক রায়/উপকূল বাংলাদেশ/দাকোপ-খুলনা/১৪১২২০১৫// |
d5bfba38-aea8-4792-bdce-2ad34a8ce76c | উপকূল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ ২০১৬-১৭ বাজেটে বিশেষ অগ্রাধিকারে রাখার দাবি
-
- ১৯:৩৮
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, এনজিও, জাতীয়-উপকূল, জীবনধারা, দুর্যোগ-দুর্বিপাক, প্রধান প্রতিবেদন, বাংলাদেশ, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ০
ঢাকা, ৪ জুন ২০১৬ : দেশের ২৪টি উপকূলীয় জেলার প্রায় ৪ কোটি মানুষের দাবি ও প্রয়োজনের প্রতি বাজেটে একবোরেই কোনও প্রতিফলন না থাকায় অর্থমন্ত্রী এবং সরকারের সমালোচনা করেছেন ২৮টি কৃষক, শ্রমিক ও অধিকারভিত্তিক নাগরিক সংগঠন।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত ”জাতীয় বাজেট ২০১৬-১৭ঃ উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জরুরি চাহিদা (বাঁধ সুরক্ষা) ও দাবিসমূহ উপেক্ষিত, শুধু প্রবৃদ্ধির অবকাঠামো নয়, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায়স্থায়ীত্বশীল অবকাঠামো চাই” - শীর্ষক এক মানববন্ধন এবং সমাবেশ থেকে তাদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন।
তারা বলেন, বজেটে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশে নেতিবাচক যে প্রভাব পড়ছে তার বিষয়ে কোনও উল্লেখ নেই। উল্লেখ নেই সম্প্রতি রোয়ানু ঘূর্ণিঝড় দেশের উপকূলীয় এলাকায় যে তা-ব চালিয়ে গেছে তার কথা। এই ঝড় উপকূলীয় এলাকায় ২৩টি মৃত্যুসহ ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এসব এলাকার মানুষ, বিশেষ করে কুতুবদিয়া দ্বীপের অনেক মানুষ এখনও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে যারা বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটেও ভুগছে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকাকে রক্ষা করা জন্য কনক্রিট বাধের মতো স্থায়ী-টেকসই ব্যবস্থার দাবি করেন এবং উপকূলের জমি রক্ষা এবং এই এলাকার মানুষদেরকে বন্যা-জোয়াভাটার হাত থেকে রক্ষার জন্য বাজেটে অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে অবস্থানপত্র তুলে ধরেন ইক্যুইটিবিডি’র সৈয়দ আমিনুল হক, এই অবস্থান পত্রে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবি উত্থাপন করা হয়, এগুলো হলো: (১) ঘূর্ণিঝড় এবং জোয়ারের পানি থেকে কুতুবদিয়াসহ কক্সবাজার জেলাকে রক্ষার জন্য ৬.৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা, (২) নদী ভাঙ্গন থেকে ভোলা জেলাকে রক্ষা করতে ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা, (৩) পানি উন্নয়ন বোর্ডে দ্বায়িত্বপ্রাপ্তদের জনমুখী মনোভাব গড়ে তোলা এবং জেলা পরিষদ এবং স্থানীয় সরকারের নিকট জবাবদিহি করার ব্যবস্থা করা, (৪) বিশেষ নির্মাণ কাজগুলো, বিশেষ করে কক্সবাজার এবং ভালায় বাধ নির্মাণ কাজে সেনাবাহিনীকে যুক্তকরণ, (৫) উপকূলীয় এলাকা রক্ষায় আগামী অথর্ বছরে বাধ নির্মাণকে অগ্রাধিকার ভিত্তিক মেগা প্রকল্প হিসাবে গ্রহণ করা।
মানববন্ধন ও সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ইক্যুইটিবিডি’র মোস্তফা কামাল আকন্দ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের এডভোকেট শফিকুল ইসলাম স্বপন,কোস্ট ট্রাস্টের রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ কিষাণী সভার জাহানারা বেগম, বাংলাদেশ কুষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের মো. আব্দুল মজিদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের মিহির বিশ্বাস,বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতির সুবল সরকার, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের আমিনুর রসুল বাবুল, যুব কৃষক ইউনিয়নের মহিন হওলাদার।
কোস্ট ট্রাস্টের নেতৃত্বে মানব বন্ধন ও র্যালিতে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলো হলো: অনলাইন নলেজ সোসাইটি, অর্পণ, উদ্দীপন, উদয়ন বাংলাদেশ, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্ট, এসডিএস, কোস্ট ট্রাস্ট, কৃষাণী সভা, গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা, জাতীয় কৃষাণী শ্রমিক সমিতি, জাতীয় শ্রমিক জোট, ডাক দিয়ে যাই, ডোক্যাপ, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা, নলসিটি মডেল সোসাইটি, পালস্, পিরোজপুর গণ উন্নয়ন সমিতি, প্রান, প্রান্তজন, পিএসআই (চঝও) বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন (জাই), বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতি, বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন, লেবার রিসোর্স সেন্টার, সংকল্প ট্রাস্ট, সংগ্রাম, সিডিপি ও হিউমিনিটি ওয়াচ।
সমাপনী বক্তব্যে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যত সংকটের কথা বিবেচনা করে এখনই সরকারকে প্রতিরক্ষামুলক বা অভিযোজন মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, তা করা না হলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে বাস্তবায়িত অবকাঠামোগত উন্নয়নও বিপর্যস্ত হয়ে যাবে।
//প্রতিবেদন/উপকূল বাংলাদেশ/০৪০৬২০১৬// |
359088d0-9586-46c6-a51c-eebd24099f91 | সুন্দরবন পর্যটন শিল্প, সমস্যা ও সম্ভবনা
-
- ১০:০৫
- অভিমত, উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, খুলনা জেলা, জাতীয়-উপকূল, পর্যটন, পশ্চিম-উপকূল, প্রধান প্রতিবেদন, মুক্তমঞ্চ, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ৪
পাইকগাছা, খুলনা : প্রাকৃতিক সম্পদের লীলাভূমি আমাদের বাংলাদেশ। এ দেশে রয়েছে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভবনা। অর্থনৈতিক একটি খাত পর্যটন। অপিমেয় সৌন্দর্যের এ দেশে বিদেশীদের ভ্রমনে আকৃষ্ট করে বিভিন্ন ধরণের সেবা ও সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জনে উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। সুন্দরবন হতে পারে দেশ তথা বিশ্বে অন্যতম পর্যটন শিল্প।
২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস। বিশ্বের নানা দেশের মত বাংলাদেশও দিবসটি পর্যটন মন্ত্রাণালয়, ট্যুরিজম বোর্ড, পর্র্যটন কর্পোরেশন, এনজিও সহ বিভিন্ন সংগঠন দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্যাসিক সংস্কৃতি, এবং ঐতিহ্যাসিক সব সম্পদ সমূহের আলকচিত্র, তথ্যচিত্র তুলে ধরে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমনে আকৃষ্ট করতে র্যালী, সভা সেমিনার সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
অপরিময় সৌন্দর্য ছড়িয়ে রয়েছে এদেশে। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে লীলাভূমি। আমাদের পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভবনা থাকারপরও নানা সমস্যার কারণে পর্যটন শিল্প বিকশিত হতে পারছে না। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, সুন্দরবন কেন্দ্রীক পর্যটন শিল্প বিকশিত হচ্ছে না। রাজনৈতিক কারণ সহ বনদস্যু চক্রের উপদ্রব, অনুন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা আর বন বিভাগের উদাসীনতার কারণে ব্যাপক সম্ভবনা থাকলেও সুন্দরবন কেন্দ্রীক পর্যটন শিল্প বিকশিত না হওয়ার অন্যতম কারণ। অভিযোগ আছে, আমাদের পর্যটন শিল্প নিয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের তেমন কোন মাথাব্যাথা নেই। তাছাড়া খুলনায় পর্যটন কর্পোরেশনে নিজস্ব অফিস ও তথ্য কেন্দ্র না থাকায় বিদেশী পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমন থেকে বিমুখ হচ্ছেন। যারা আসছেন, তারা পদে পদে পড়ছেন ভোগান্তিতে। বিশ্ব ঐতিহ্য এ সুন্দরবনকে ঘীরে আমাদের পর্যটন শিল্পের ব্যাপক বিকাশে ইতোমধ্যে কথাবার্তা বিস্তার হলেও মুলোত কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পর্যটনের জন্য যাতায়াত সুবিধা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়গুলি খুব জরুরী। অথচ রহুমুখী সমস্যার আবর্তে বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প সঙ্কটাপন্ন। পর্যটন শিল্পে বিদ্যমান সমস্যা সমূহ সমাধান করতে পারলে এবং উপযুক্ত পর্যটন পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান উৎস হতে পবে।
সুন্দরবন হতে পারে দেশ তথা বিশ্বের অন্যতম পর্যটন শিল্প। সুন্দরের রাণী সুন্দরবন ক্ষণে ক্ষনে তার রুপ বদলায়। খুব ভোরে এক রুপ, দুপুরে অন্যরুপ, পড়ন্ত বিকাল আর সন্ধ্যায় ভিন্ন ভিন্ন রুপে সজ্জিত হয়। মধ্য ও গভীর রাতে অন্যএকরুপ। আমাবশ্যায় ভয়াল সুন্দর আবার চাঁদনী রাতে নানান রুপ ধারণ করে সুন্দরী সুন্দরবন পর্যটকদের বিমহিত করে। বনের ভয়ংকরতা, বাঘের গর্জন, হরিণের চকিত চাইনি। বানর আর হরিণের বন্ধুত্ব, কুমিরের কান্না, পাখ পাখালির কলতান, শ্রবণ সুখ, বনের বিভিন্ন বৈচিত্র আর প্রাকৃতিক সুন্দর্য আর নৈস্বর্গিক দৃশ্য। আবার অশান্ত পানির বুকে উত্তাল ঢেউয়ের উন্মাদ নৃত্য অবলোকন করে পর্যাটক উলাসিত, বিমোহিত ও আপ্লাতু হয়। বিশ্বের একক বৃত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। জগত সেরা ও জীববৈচিত্রের আধার এ বন। সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্য বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের একমাত্র আবাসভুমি এই সুন্দরবন। বিশ্ব ঐতিহ্য স্বীকৃতি ও প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য নির্বাচনের পর থেকে সুন্দরবন নিয়ে প্রকৃতিপ্রেমী সহ বিশ্ববাসীর সুন্দরবন দেখার আগ্রহের শেষ নেই। যার ফলে দেশি, বিদেশী প্রকৃতি প্রেমীদের পদচারণে মুখরিত হচ্ছে সুন্দরবন। এর ফলে সুন্দরবন হতে পারে বিশ্বের অন্যতম পরিবশে বান্ধব পর্যটন শিল্প।
বনের মোট আয়তন, ১০ হাজার ২ শ ৮০ বর্গকিলোমিটার এর মধ্যে বাংলাদেশে ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমটিার। দেশের মোট আয়তনের ৪.২ শতাংশ এবং বনাঞ্চলের ৪৪ শতাংশ। এই বনে রয়েছে সুন্দরী, পশুর, গেওয়া, কেওড়া, গরাণ, বাইন সহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবল এবং ১৩ প্রজাতির অর্কিড সুন্দরবনে আছে বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিতল হরিণ, বানর, শুকর, গুইসাপ, পাইথন ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপ সহ ৩৭৫ প্রজাতি। এরও বেশি প্রজাতির বন্য প্রাণী। বন মোরগ, গাংচিল, মদনটাক, মাছাল সহ বিভিন্ন প্রজাতির ৩০০ এর বেশি পাখি। জালের মত বিছানো প্রায় ৪৫০টি ছোট বড় নদী ও খাল। এতে কুমির, হাঙ্গর, ডলপিন, ইলিশ, ভেটকি সহ প্রায় ২৯১ প্রজাতির মাছ আছে। প্রাণি ও বৃক্ষের বৈচিত্রময় সমাহারে এ বন বৈজ্ঞানিক নৃতত্ব ও প্রত্মতাম্বিক বিবেচনায় খুবই গুরুত্বপুর্ণ।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীব বৈচিত্রের কারণে পর্যটকদের কাছে এটি অত্যন্ত আকর্ষনীয় স্থান। ভয়াল সৌন্দর্যের প্রতিক সুন্দরবন। দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা উপেক্ষা করে প্রতি বছরই সুন্দরবনে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নের জন্য অনেক আগেই পর্যটন নীতিমালা করা হয়েছে। নীতিমালায় উলেখ রয়েছে, সুন্দরবন ও কক্সবাজারের জন্য নেয়া হবে মহাপরিকল্পনা। কিন্তু নীতিমালার আলোকে এখন পর্যন্ত কাজের তেমন কিছু হয়নি। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ৪টি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্রসহ বেশকিছু গুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা নির্মান করার পরিকল্পনা রয়েছে। সুন্দরবনে দেশি বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবনের করমজল, হারবাড়িয়া, চাঁদপাই ও শরণখোলা এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনা ও রক্ষনাবেক্ষন নামে একটি প্রকল্প তৈরী করে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য সুন্দরবনে যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক নিরাপদ ও আরামদায়ক হবে। ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষনা করে। বিশ্ব প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য নির্বাচনের পর থেকে সুন্দরবন নিয়ে প্রকৃতিপ্রেমি সহ বিশ্ব বাসীর সুন্দরবন দেখার আগ্রহের শেষ নেই। যার ফলে দেশী-বিদেশী প্রকৃতিপ্রেমিদের পদাচারণে মুখরিত হচ্ছে সুন্দরবন। এর ফলে সুন্দরবন হতে পারে বিশ্বে অন্যতম পরিবেশ বান্ধব পর্যটন শিল্প। বিশ্বের প্রকৃতি প্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে সুন্দরবন। সুন্দবন হতে পারে বিশ্বসেরা সম্পদ। এর ফলে বনের সুরক্ষার কাজ হবে শক্তিশালী। উপকুল এলাকার লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অবহেলিত জনপদে প্রানঞ্চাল্য এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। বিকশিত হবে পরিবেশবান্ধব পর্যটন শিল্প। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার যে সুযোগ আমাদের হাতের নাগালে রয়েছে সেগুলো কাজে লাগানো জরুরী। যদি এটি সম্ভব হয়, তাহলে পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে বদলে যাবে আমাদের দেশের অর্থনীতি। বিশ্বের পর্যটকদের আগমনে বৃদ্ধি পাবে বৈদেশিক মুদ্রা যাহা দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে।
লেখক : সংবাদিক |
bc91770f-4a9d-4b4f-a3a1-e17a4fe934e2 | সমুদ্রনির্ভর অর্থনীতি ডানা মেলছে
ঢাকা : ব্লু-ইকোনমি বা নীল অর্থনীতি হচ্ছে সমুদ্র সম্পদনির্ভর অর্থনীতির বিপ্লব। এ বিপ্লব বাস্তবায়নের পথে বাংলাদেশ। বিশাল সমুদ্র জয়ের পর এবার দুয়ার খুলছে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে আগুয়ান হওয়ার। আসছে ২০১৭ সালের মার্চের প্রথম সপ্তায় ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় ‘ইন্ডিয়ান ওশন রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ)’ সম্মেলনের মধ্যে বাংলাদেশ সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতির বৈপ্লবিক যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। ভারত মহাসাগর তীরবর্তী ‘আইওআরএ’-র সদস্য ২১টি দেশের সরকার/রাষ্ট্রপ্রধানরা সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা। পররাষ্ট্র ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়ায় বাংলাদেশ এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চল, ২০০ নটিক্যাল মাইলের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কর্তৃত্ব পায়। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠারও অধিকার পায়। বিশাল এই সমুদ্রসীমাকে ব্যবহারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ অর্থনীতির চাকা বদলে দিতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ সরকার।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ভারত মহাসাগর তীরবর্তী আইওআরএভুক্ত ২১টি দেশই ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্রনির্ভর অর্থনৈতিক বিপ্লবে আগ্রহী। এজন্য ‘আইওআরএ’ সদস্যভিত্তিক দেশগুলো প্রথমত গভীর সমুদ্রের বদলে ভারত মহাসাগরের তীর ঘেঁষে কন্টেইনার বা মালবাহী আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলে ‘কোস্টাল শিপিং’ চালুতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে। সদস্য দেশগুলো ঐকমত্য হলে এতে জাহাজের জ্বালানি ব্যয় অনেকখানি কমে আসবে, বাঁচবে সময়ও। বাংলাদেশসহ ভারত মহাসাগর তীরবর্তী ২ বিলিয়ন জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অঞ্চলের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থাটির সদস্যভুক্ত দেশগুলো আসন্ন ওই সম্মেলন নিয়ে সম্ভাব্য এ চুক্তি সম্পর্কিত খসড়া তৈরি করেছে। এ নিয়ে ইতিপূর্বে জাতিসংঘেও আলোচনা করেছে বাংলাদেশ। আলোচনা হয়েছে, ‘বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটি বিয়নড এরিয়াস অব ন্যাশনাল জুরিডিকশন (বিবিএনজে)’ শীর্ষক সংস্থার সঙ্গেও।
চুক্তি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোস্টাল শিপিং ছাড়াও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সদস্যভুক্ত এই সংস্থাটির মাধ্যমে গভীর মহাসাগরের নিরপেক্ষ এলাকা নিয়েও আলোচনা হবে মার্চের সম্মেলনে। কারণ বাংলাদেশসহ অন্যান্য উপকূলীয় দেশগুলো মহাসাগরের নির্দিষ্ট সীমারেখার মালিকানা পেয়েছে। এর বাইরে গভীর সমুদ্রের বড় একটা অংশই দেশ-নিরপেক্ষ বা মালিকানাবিহীন। সমতার ভিত্তিতে গভীর ওই সমুদ্রেও ন্যায্য হিস্যা পেতে আগ্রহী সদস্যভুক্ত প্রতিটি দেশ। এতে করে ওই অঞ্চলের মাধ্যমে অর্থনীতিতে অবদানই শুধু নয়, তৃতীয় কোনো ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ থাকবে না ওই বিশাল অঞ্চলে।
সূত্র বলছে, গভীর সমুদ্রের ন্যায্য অধিকার পেলে বেশি লাভবান হবে বাংলাদেশ। এতে সমুদ্রভিত্তিক ব্লকের (খনিজসম্পদ) সংখ্যা বাড়বে; টহল জোরদারের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকবে নিরাপত্তা; মৎস্য আহরণের বিপুল সম্ভাবনাও থাকবে। বিশেষ করে, সারা বিশ্বে টুনা মাছ খুবই জনপ্রিয়। সুস্বাদু ও দামি এই মাছটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানের হোটেলগুলোতে আমদানি করা হয়ে থাকে। টুনা মাছের বিচরণ গভীর সমুদ্রে। আর মালিকানা পেলে বাংলাদেশের ফিশিং ট্রলার গভীর সমুদ্রে টুনাসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করতে পারবে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গড়ে এক হাজার হেক্টর করে ভূখ- বাড়ছে। ব্লু ইকোনমি রূপরেখা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সমুদ্রে ভূখ- (ডেল্টা প্ল্যান) আরও বাড়ানো সম্ভব। কৃত্রিমভাবে বাঁধ তৈরি করে পলিমাটি জমাট/ চর জাগানোর মাধ্যমে সৃষ্ট ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূখ-ে মালদ্বীপের মতো দৃষ্টিননন্দন পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলাও সম্ভব। এতে দেশের অর্থনীতি বহুমাত্রিকতা পাবে।
জানা গেছে, সম্মেলনে সমুদ্রসীমায় পেট্রোলিয়াম শেয়ারিং কনট্রাক্টের (পিএসসি) মাধ্যমে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হবে।
ইন্ডিয়ান ওশন রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) সদস্যভুক্ত দেশগুলো হচ্ছেÑ বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, কমোরোস, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, মোজাম্বিক, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ইয়েমেন, ভারত, সিসিলি, সোমালিয়া, মাদাগাস্কার, মৌরিতাশ, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা, তানজানিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এদিকে সাগরকেন্দ্রিক অর্থনীতি চাঙা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে গত আগস্টে চুক্তি করেছে সরকার। জানা গেছে, এ চুক্তির মাধ্যমে ইইউর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের বিস্তৃত সমুদ্র সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এ চুক্তির আওতায় আগামী দুই বছর সমুদ্র অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ গবেষণা করবে সমুদ্র গবেষণায় দক্ষ ইইউ। এরপর এ সম্পদ কীভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশমালা তুলে ধরা হবে।
এ গবেষণায় ইতোমধ্যেই একজন ফরাসি ও একজন বাংলাদেশি গবেষক কাজ শুরু করেছেন এবং সরকার তাদের সব রকম সহযোগিতা করছে বলেও তিনি জানান।
এ ছাড়া সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও সমুদ্রসীমার ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে ভারত ও চিনের সঙ্গে পৃথক সমঝোতা স্মারকে স্বার করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে গত বছর জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় দিল্লির সঙ্গে এবং চলতি অক্টোবরে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরের সময় চিনের সঙ্গে সমুদ্র সম্পদবিষয়ক সহযোগিতার জন্য পৃথক সমঝোতা স্মারকগুলো স্বারিত হয়।
//দৈনিক আমাদের সময়ের সৌজন্যে//০১১১২০১৬// |
6f7d03ff-62d2-47ed-85a5-9b80a8d5a265 | ‘সিডর শিশুরা’ মানসিক ব্যাধি নিয়ে বড় হচ্ছে!
ঢাকা : ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাত। বাংলাদেশের উপকূলীয় ১১ জেলায় আঘাত হানে ২৪০ কিলোমিটার গতির ঘূর্ণিঝড় সিডর। ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারান সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ, আহত হন আরো অন্তত অর্ধলাখ। এক রাতেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হাজার হাজার ঘরবাড়ি। প্রলয়ঙ্করী এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষদর্শী আক্রান্ত অঞ্চলের শিশুরা। দুঃসহ স্মৃতির কারণে মানসিক ব্যাধি নিয়ে বড় হচ্ছে এসব শিশুর একটি অংশ।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, পটুয়াখালী, বরগুনা পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলায় সিডর-পরবর্তী সময়ে বেড়ে ওঠা পাঁচ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের ৪৮ শতাংশই কোনো না কোনো ধরনের মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ও কুমিল্লার ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চিকিত্সকদের একটি দল শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ-পরবর্তী শিশু ও কিশোরদের বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে জানতেই এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়।
বাগেরহাটের বাসিন্দা তারেক হাসান। সিডরের সময় তার বয়স ছিল ১১ বছর। ভয়ঙ্কর এ ঘূর্ণিঝড়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, সারা দিন ঝড়-বৃষ্টি ছিল। উপকূল এলাকায় বাড়ি হওয়ায় এসব দেখে দেখে অভ্যস্ত ছিলাম। সারা দিন কিছু মনে হয়নি। তবে রাতে ঝড়ের প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। আমাদের বাড়ির সব ভেসে গিয়েছিল। মা-বাবা আর ছোট বোন নিয়ে আমরা ঘরের চালা ধরে সারা রাত দাঁড়িয়ে ছিলাম। সিডরের আঘাত থেকে আমরা কোনো রকম প্রাণে বাঁচলেও আমাদের সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। বই-খাতা সব ভেসে গিয়েছিল। বিড়ালটিকে আর পাওয়া যায়নি। সারা দিন আমি আর আমার বোন প্রিয় জিনিসগুলোর জন্য কান্নাকাটি করতাম। পড়াশোনায়ও গ্যাপ পড়ে যায়। এখনো আকাশে মেঘ করলে ও বৃষ্টি হলেই আমার মনে হয় আবার সেই রাত ফিরে আসছে। এটি এক ধরনের ঘোরের মতো হয়ে গেছে, ব্যাপারটি থেকে এখনো বের হতে পারিনি।
গবেষণার জন্য পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলায় হেলথ ক্যাম্প এবং পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলায় কমিউনিটি সার্ভের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। চারটি ভিন্ন ভিন্ন এলাকার পাঁচ থেকে ১৬ বছর বয়সী ১৫৮ শিশুর ওপর পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা গেছে, তাদের মধ্যে মানসিক রোগে আক্রান্তের হার ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ। পাঁচ থেকে ১০ বছর বয়সীদের মধ্যে এ হার ৫০ শতাংশ। আর ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে মানসিক রোগে আক্রান্তের হার ৫৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে মানুষের যেসব আচরণ মানসিক অসংলগ্নতার আওতায় পড়ে তা হলো- যেকোনো ধরনের অসামঞ্জস্য, অসংলগ্ন আবেগ, হাইপারকাইনেসিস, আচরণগত ও বিকাশের অসংলগ্নতা। গবেষণায় দেখা গেছে, সিডর আক্রান্ত এলাকায় শিশুদের মধ্যে এগুলোর হার যথাক্রমে ৮১, ৭৩ দশমিক ৪১, শূন্য দশমিক ৬৩, ৩ দশমিক ১৬ ও ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
পটুয়াখালী, বরগুনা, বাগেরহাট ও পিরোজপুরে মানসিক রোগে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ১১ শতাংশ ছেলে ও ৪৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ মেয়ে। সামগ্রিকভাবে এগুলোর মাধ্যমে আইসিডি-১০ সাইকিয়াট্রিক ডিসঅর্ডার প্রকাশ করা হয়েছে।
গ্রাম, শহর ও বস্তিতে বসবাসরত শিশু-কিশোরদের মানসিক অবস্থা নির্ণয়ে ২০০৫ সালের অন্য একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ শতাংশ শিশু মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সিডরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানার পর তার প্রভাব পরবর্তী বংশধরদের মধ্যেও স্থায়ী প্রভাব রেখে যেতে পারে, যা এ গবেষণায় উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, সিডর-পরবর্তী এক থেকে চার মাস পর্যন্ত সময় সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসীরা উচ্চমাত্রায় মানসিক সমস্যা ও ভারসাম্যহীনতায় ভোগে।
এ বিষয়ে গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ঝুনু শামসুন নাহার বলেন, প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট বড় ধরনের দুর্যোগের পর সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের ওপর ভীতি ও আশঙ্কার প্রভাব রয়ে যায়। শিশুদের স্বাভাবিক মানসিক বিকাশে এটি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এজন্য দুর্যোগ-পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে একই সঙ্গে শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়েও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া পরবর্তী সময়ে যাতে শিশুদের মনে এর প্রভাব দীর্ঘায়িত না হয়, সেজন্য কাউন্সেলিং ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া উচিত।
শিশুর এ ধরনের ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতার ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সময়ে শিশুদের ওপর এর প্রভাবের বিষয়টি। এছাড়া পারিবারিক ও সংশ্লিষ্ট এলাকার ক্ষতির পরিমাণ এবং দুর্যোগ-পরবর্তী উদ্ধারকাজের ওপরও এটি নির্ভরশীল। এ ধরনের দুর্যোগে শারীরিক ক্ষতি হলে, দীর্ঘমেয়াদে তার প্রভাবে শিশুদের মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষের সমন্বিত ও সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়া উচিত বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পেশাদার মনোচিকিত্সকের মাধ্যমে এ চিকিৎসা দিতে হবে। এজন্য জরুরি বহুমাত্রিক (মাল্টিডিসিপ্লিনারি) দল গঠন করা যেতে পারে। এটির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে পারে সরকারি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, সিডরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে পরিচিত পরিবেশ ওলটপালট হয়ে যায়। অনেক সময় প্রিয় মানুষ হারানোর মতো ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে শিশুদের খেলার সামগ্রী, সঙ্গী হারিয়ে যায়। প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনার ছাপ রেখে যায় তাদের মানসিক বৃদ্ধিতে। ফলে শিশুদের মধ্যে মানসিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসায় এসব শিশুকে স্বাভাবিক করে তোলা সম্ভব।
//প্রতিবেদন/বণিক বার্তা’র সৌজন্যে/১৭১১২০১৬// |
168a6754-7054-4283-8e26-8bf16a0cfd19 | প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে উপকূলীয় ও দ্বীপ অঞ্চলের মানুষ
-
- ১৭:৩৮
- অভিমত, উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, জাতীয়-উপকূল, প্রধান প্রতিবেদন, মুক্তমঞ্চ, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ১
একটা কথা মোটামুটি সবারই জানা, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের প্রথম সারিতে রয়েছে। আর দেশের মধ্যে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ, আঘাতপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে উপকূলীয় ও দ্বীপ এলাকাগুলো। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশ সচেষ্ট। তবে প্রাপ্ত তথ্য থেকে ধারণা হয় যে, এ সকল অভিঘাতের কারণে জাতীয় আয় ন্যূনপক্ষে এক থেকে দেড় শতাংশ কম হচ্ছে। অর্থাৎ বলা যায়, যদি এভাবে ক্ষয়ক্ষতি না হতো তাহলে গত বছর অর্থাত্ ২০১৫-১৬ সালে জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১১ শতাংশের স্থলে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বা তারও বেশি হতে পারত। তাই এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় আরো ব্যাপক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অবশ্যই একাজে বাংলাদেশ এককভাবে এবং শুধু নিজস্ব সম্পদ দিয়ে বেশিদূর এগোতে পারবে না। উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ মোটেই দায়ী নয়। মূল দায়িত্ব উন্নত বিশ্বের। এ ক্ষেত্রে তাই বাংলাদেশসহ অন্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া উন্নত বিশ্বের দায়িত্ব। কিন্তু এখন পর্যন্ত নানা দেন-দরবার ও উন্নত বিশ্বের নানা অঙ্গীকার তেমন ফলপ্রসূ সহায়তায় রূপান্তরিত হয়নি। আন্তর্জাতিক এই দেন-দরবার অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে, জোরদার করতে হবে। কিন্তু আক্রান্ত ও বিধ্বস্ত মানুষ এবং ভেঙে-পড়া অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পুনর্বাসনে নিজস্ব সামর্থ্যে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ কার্যকরভাবে নেওয়া জরুরি। আর অবশ্যই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে প্রাপ্ত অর্থ-প্রযুক্তি যতটুকুই হোক তার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় অবস্থার ক্রমাবনতি ঘটবে এবং পরে ঘুরে দাঁড়ানো জটিল ও কঠিন হয়ে উঠবে।
সম্প্রতি পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীমউদ্দিনসহ আমি হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপ (বিগত ১৬-১৯ জানুয়ারি ২০১৭) এবং পরে মহেশখালী ও কুতুবদিয়া দ্বীপে (বিগত ২৯ জানুয়ারি-১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭) পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম স্থানীয় পর্যায়ে পরিদর্শন করতে যাই এবং এই এলাকাগুলোর মানুষের সঙ্গে তাদের সমস্যা ও সেগুলো নিরসনে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় করি। মহেশখালী ও কুতুবদিয়া পরিদর্শনে পিকেএসএফ-এর এমডি মো. আবদুল করিমও ছিলেন। এই দ্বীপগুলোর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা এবং সেখানকার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করার ফলে তাদের মূল সমস্যাগুলোর চিত্র আমার কাছে আরো পরিষ্কার হয়েছে। লেখা পড়ে বা অন্যদের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যা ও বাস্তবতার সম্যক উপলব্ধি সম্ভব নয়।
এই দ্বীপগুলোতে পরিদর্শন ও মত বিনিময়ের ফলে যে বিষয়গুলোতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে নজর দেওয়া উচিত সেগুলো আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। এই লেখায় শুধু আমি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ করতে চাই। এসব এলাকার সর্বত্র যে সমস্যাটি খুবই গুরুতর তা হচ্ছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। নদী-নালা ও ভূগর্ভস্থ পানি উঁচুমাত্রায় লবণাক্ত। এই পানি পান করা বা গৃহস্থালি, কৃষি এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা সম্ভব নয়। কাজেই গুরুত্বের সঙ্গে যে বিষয়টার দিকে নজর দেওয়া উচিত তা হচ্ছে প্রয়োজনীয় লবণাক্ততা-নিরোধ প্ল্যাণ্ট অথবা গভীর নলকূপ বসানো। অনেক জায়গায় ৮-৯ শ’ ফুট নিচে না গেলে গভীর নলকূপের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায় না। কোথাও কোথাও অবশ্য আরো কিছু কম গভীরেও ভালো পানি পাওয়া যায়। একটি গভীর নলকূপ থেকে ৮০ পরিবার পর্যন্ত বা ৩০০ থেকে ৩৫০ জন প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি নিয়মিত পেতে পারেন। আর তা বসাতে এক লাখ টাকার মতো খরচ হয়। অপরদিকে স্থানীয় পর্যায়ে ছোট আকারের একটি লবণাক্ততা-নিরোধ প্ল্যাণ্ট বসাতে খরচ পড়ে ২০-২২ লাখ টাকা (যদি বিদ্যুত্ থাকে); আর সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হলে খরচ হয় ৪৪-৪৫ লাখ টাকা। যেখানে অনেক গভীরেও বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায় না সেখানে এ ধরনের প্ল্যাণ্ট স্থাপন করা হচ্ছে। এই সাইজের প্ল্যাণ্ট থেকে ঘন্টায় ৮০০ থেকে ১,০০০ লিটার বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়। জনপ্রতি আট লিটার হিসেবে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১২৫ জনের জন্য পানি সরবরাহ করা যায়। বাস্তবতার আলোকে কিছু গভীর নলকূপ ও লবণাক্ততা-নিরোধ প্ল্যাণ্ট পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন বিভিন্ন উপকূলীয় ও দ্বীপ অঞ্চলে বসানোর ব্যবস্থা ইতোমধ্যে করেছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজন আরো অনেক অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, নিঝুম দ্বীপে ৯টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে অসংখ্য মানুষ বিশুদ্ধ পানির অভাবে শারীরিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটি করে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। আমরা সরেজমিনে দেখে এসেছি যে, একটি নলকূপ থেকে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর মধ্যে ৮০টি পরিবার বা ৩৫০ থেকে ৪০০ ব্যক্তি প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি পেতে পারেন। কিন্তু আরো অনেক পরিবার বিশুদ্ধ পানি বঞ্চিত। প্রত্যেক ওয়ার্ডে আরো একটি করে গভীর নলকূপ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। তবে আরো নলকূপ অথবা লবণাক্ততা-নিরোধ প্ল্যাণ্ট লাগবে। আশা করি সেদিকে সরকার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নজর দিবে। নিঝুম দ্বীপ ছোট হওয়ায় এবং জনসংখ্যা ৬০ হাজারের মতো হওয়ায় সেখানে বিশুদ্ধ পানির সমস্যা সমাধান তেমন কঠিন নয়। প্রয়োজনীয় আরো গভীর নলকূপ এবং লবণাক্ততা-নিরোধ প্ল্যাণ্ট বসানোর ব্যবস্থা করতে স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনকে আরো উদ্যোগী হতে হবে। হাতিয়ায় এটা সম্ভব নয়, সেখানকার বাস্তবতা ভিন্ন। সেখানে বড় লবণাক্ততা-নিরোধ প্ল্যাণ্ট-এর প্রয়োজন যা পিকেএসএফ-এর পক্ষে স্থাপন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সরকারের বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা জানি, পানিই জীবন এবং বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানুষ সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে না। তাই পিকেএসএফ-এর একটি অগ্রাধিকার হচ্ছে যেখানে যেখানে সম্ভব বিশুদ্ধ পানি-বঞ্চিত মানুষের প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তবে সামর্থ্যের স্বল্পতার কারণে পিকেএসএফ এক্ষেত্রে বেশিদূর যেতে পারে না।
একইভাবে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট বিদ্যমান। এই সংকট সমাধানে পিকেএসএফ সাধ্যমত চেষ্টা করবে। কুতুবদিয়ার কথা ধরা যাক। এই দ্বীপে প্রায় দেড় লাখ মানুষের বাস। এখানে জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ব্যাপক এলাকা প্লাবিত করে থাকে। গতবছর ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে এ দ্বীপের বেড়িবাঁধ অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে। যখন এই বাঁধটি তৈরি করা হয় তখন এর উচ্চতা ৭ ফুট না করে ৫ ফুট করা হয়েছিল। তাই এখন যেহেতু পৃথিবীর উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠ উঁচু হচ্ছে তাই জোয়ারের সময় বাঁধের উপর দিয়েও পানি ঢুকছে। আর যেখানে যেখানে বাঁধ ভেঙে গেছে সেখান দিয়ে তো পানি ঢুকছেই এবং বাড়িঘর ও কৃষির ব্যাপক ক্ষতি করছে। লবণাক্ত পানির এই দৈনিক আক্রমণের ফলে কৃষিজমি আর কৃষিজমি থাকছে না। এসব এলাকায় তাই লবণ উত্পাদন করা হচ্ছে। কাজেই এই দ্বীপের মানুষ এবং অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখা এবং টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে সর্বপ্রথম করণীয় হচ্ছে যথাযথভাবে বেড়িবাঁধটি পুনর্নির্মাণ করা। চল্লিশ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বেড়িবাঁধ হতে হবে যথাযথভাবে উচ্চতা ও ঢালুসম্পন্ন এবং শক্ত। বর্তমান বাস্তবতা এবং আগামীর প্রাকৃতিক সম্ভাব্য বিবর্তন বিবেচনায় নিয়ে বেড়িবাঁধটির উচ্চতা নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি এর ঢালু যথাযথ হতে হবে কেননা খাড়া বাঁধে পানির আঘাত বেশি লাগে এবং দৈনিক জোয়ারের পানির আঘাত এটিকে দুর্বল করে ফেলে এবং বিভিন্ন স্থানে তা ভেঙে যায়। এছাড়া সব এলাকায় দারিদ্র্য ব্যাপক ও গভীর, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপক অপ্রতুলতা এবং প্রকট বিদ্যুত্ সংকট রয়েছে। রয়েছে ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট। সার্বিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এ বিষয়গুলোর দিকে যথাযথভাবে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
পিকেএসএফ সাধ্যমতো বিভিন্নখাতে বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, প্রশিক্ষণ, উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন, অর্থকরী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন কর্মসূচি এসব এলাকায় এর সহযোগী সংস্থাদের মাধ্যমে পরিচালনা করছে। হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপে যেমন দ্বীপ উন্নয়ন এবং অন্যান্য সহযোগী সংস্থা তেমনি কুতুবদিয়া ও মহেশখালীতে কোস্ট ট্রাস্ট, প্রত্যাশী ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থা এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আমাদের পরিদর্শন-ভিত্তিক বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্নভাবে পিকেএসএফ-এর কার্যক্রম এই অঞ্চলগুলোতে জোরদার ও সম্প্রসারিত করা হবে এবং কিছু নতুন পদক্ষেপও নেয়া হতে পারে।
বাংলাদেশ বর্তমানে টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এতে রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার বিশদভাবে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। টেকসই উন্নয়নের একটি মৌলিক বিষয় হচ্ছে কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না, সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দেশের সকল অঞ্চলের সকল মানুষ তাদের বাস্তবতার আলোকে যাতে কার্যকরভাবে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। দেশের প্রত্যেক পরিবেশ-সংক্রান্ত অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল (যথা- উপকূল, দ্বীপ, চর, হাওর-বাঁওড়, পাহাড়, খরা-আক্রান্ত) এবং প্রত্যেক পিছিয়ে পড়া মানবগোষ্ঠীর (যথা- উপকূল-হাওর-বাঁওড়-দ্বীপচর-পাহাড়বাসী দরিদ্র মানুষ, প্রতিবন্ধী, দলিত-পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নারী কৃষি শ্রমিক) কিছু কিছু বিশেষ বিশেষ সমস্যা রয়েছে। সেগুলো অনেকক্ষেত্রে চিহ্নিত আছে এবং বাস্তবক্ষেত্রে অন্যান্য সমস্যাও সামনে আসতে পারে। এসব সমস্যার কার্যকর সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। এই আঙ্গিক থেকে উপকূলীয় ও দ্বীপ অঞ্চলগুলোর মানুষের যে বিশেষ বিশেষ এবং প্রকট সমস্যা রয়েছে সেগুলো অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে সমাধান করতে হবে- যাতে এসব অঞ্চলের মানুষ দ্রুত দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারেন।
//দৈনিক ইত্তেফাক থেকে সংগৃহিত/ লেখক: অর্থনীতিবিদ |
2a7bb932-4f22-4f0a-a4d4-b2c52cb32d90 | বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন
১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস। দিনটি আমাদের কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমন তাৎপর্যপূর্ণ। নদী মাতৃক এই দেশে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ধলেশ্বরী, মধুমতি, শীতলা, ব্রহ্মপুত্রসহ অসংখ্য নদ-নদী জালের মতো ছড়িয়ে আছে সমস্ত দেশব্যাপী। সাধারণত এই নদীগুলো উত্তরে পাহাড়ী উচুভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে দেিণ নীচু ভূমি বঙ্গোপোসাগরে পতিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সমুদ্রের বুকে পলি জমতে জমতে তৈরী হয়েছে সমতল ভূমি। যার উদাহরণ আমাদের সুন্দরবন। বঙ্গোপোসাগরের কোল ঘেঁষে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল সবুজের সমারোহ সুন্দরবন। এটি প্রায় ১৩০ মাইল লম্বা ও ৯০ মাইল চওড়া। যার আয়তন ৫ লাখ ৭৭ হাজার ২’শ ৮৫ হেক্টর বা প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশের রয়েছে ৫ হাজার ৮’শ বর্গকিলোমিটার। অর্থাৎ বাংলাদেশ ও ভারতের আনুপাতিক হার ৬ঃ৪। এ বন আমাদের গর্বের ধন; তাই আসুন বিশ্ব ভালোবাসার এই দিনে সুন্দরবনকে ভালোবসি।
১৪ই ফেব্রæয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইন্স ডে। তবে ১৪ই ফেব্রæয়ারি কিভাবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে পরিণত হলো, সেটা অনেকের কাছেই অজানা। কারণ এ নিয়ে রয়েছে অনেক ঘটনা, অনেক কাহিনী ও অনেক গল্প। প্রথম ও প্রধান কহিনীটি এ রকম- ২৭০ খৃষ্টাব্দের কথা। রোমের সম্রাট “কডিয়াস ডি সেকেন্ডরের” মনে হলো বিয়ে করলে মানুষ অলস হয়ে যায়। কারণ নারীর সংস্পর্শে বিবাহিত মানুষের মন ঘরমুখী হয়ে যায়। কিন্তু সম্রাট চান দুর্ধর্ষ কঠিন যোদ্ধা। যে কারণে সম্রাট বিয়ে না করার জন্যে বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন অর্থাৎ কেউ বিয়ে করতে পারবে না। তখন রোমে ‘‘সাধু ভ্যালেন্টাইন ইস্টারমনার’’ নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সম্রাটের নিষেধাজ্ঞার প্রতি বিরোধিতা করে গোপনে তরুণ প্রেমিকদের বিবাহ মন্ত্রের দীা দিতে শুরু করলেন এবং কোন এক সময় সম্রাট এটা জেনে গেলেন। তারপর সম্রাট সাধুকে ডেকে রাজদরবারে এনে কৈফিয়ত তলব করলেন এবং সাধুর যুক্তিতে সম্রাট তাকে মা করে দিলেন, তবে একটা শর্তে। শর্তটি হল তাকে খৃষ্টধর্ম পরিত্যাগ করে প্রচলিত ধর্ম গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু সাধু সম্রাটের কথায় রাজিতো হলেনই না বরং সম্রাটকেই উল্টে খৃষ্ট ধর্মে দিা দিতে চাইলেন। এ কথা শুনে সম্রাট আরও প্তি হয়ে সাধুকে বন্দী করে শিরোচ্ছেদের নির্দেশ দিলেন। বন্দী হওয়ার পূর্বে সাধু ভ্যালেন্টাইন এক অন্ধ মেয়ের চোখের চিকিৎসা করতেন এবং কোন এক সময় সাধু ঐ মেয়েটির প্রেমে পড়ে যায়। শিরোচ্ছেদের পর্যন্তও সাধু ঐ মেয়েটির নিকট প্রেমপত্র লিখতেন এবং সেই পত্রে লিখতেন ‘ফ্রম ইয়োর ভ্যালেন্টাইন’ তবে আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে সাধু ভ্যালেন্টাইনের যেদিন শিরোচ্ছেদ করা হয় সেদিনই মেয়েটি চোখের দৃষ্টি ফিরে পায়। দৃষ্টি ফিরে পেয়ে মেয়েটি চিঠি থেকে প্রথম যে লাইনটি পড়েছিল সে লাইনটি ছিল ‘ফ্রম ইয়োর ভ্যালেন্টাইন’ এবং যেদিন এই ঘটনা ঘটেছিল সেদিনটি ছিলো ১৪ই ফেব্রæয়ারি।
আবার অন্য একটি কাহিনীতে আছে প্রাচীন রোমবাসীদের কুমারী মেয়েরা বছরের একটি দিন প্রেমের কবিতা লিখে মাটির পাত্রে জমা করতো এবং প্রত্যেক যুবক ঐ পাত্র থেকে চোখ বন্ধ করে একটি লেখা তুলে নিতো। সে যুবকটির হাতে যে মেয়েটির লেখা আসতো সেই যুবক সেই মেয়েকে ভালবাসতো এবং পরবর্তীতে বিয়ে করে জীবনসঙ্গিনী করতো। এখানেও উল্লেখ্য বছরের যে দিনটিতে এটি হতো সে দিনটিও ছিল ১৪ই ফেব্রæয়ারি।
অপরদিকে ‘‘বিশ্ব ভালবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালবাসুন’’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে খুলনার উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর ও এর সহযোগী সংগঠন সুন্দরবন একাডেমিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে খুলনাসহ দণি পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন সংলগ্ন পাাঁচটি জেলা, এর উপজেলায় এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও দিবসটি পালন হয়ে আসছে ২০০২ সাল থেকে। দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বসেরা এ বনাঞ্চল রায় ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি এ বন ধ্বংসের সাথে প্রত্য ও পরোভাবে জড়িতদের প্রতিহত করা এবং একই সাথে সুন্দরবন সংরণে সরকারের উদ্যোগসমূহ বাস্তবায়নে সহায়তা করা।
খুলনা, বাগেরহাট, সাতীরা, পিরোজপুর ও বরগুনা এই পাঁচটি জেলার ১৭টি উপজেলায় প্রায় ২’শটি ইউনিয়নে সুন্দরবন অবস্থিত হলেও বেশী অংশ রয়েছে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতীরা জেলাতে। তবে নাম নিয়ে যত মতভেদ থাকুক না কেন আমাদের সুন্দরবন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জোয়ার ভাটা দ্বারা প্রভাবিত ব-দ্বীপ যেখানে লবনাক্ত বা ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের আধিক্য। বাংলাদেশের আয়তনের প্রায় ৪.২ শতাংশ এবং সমগ্র বনভূমির প্রায় ৪৪ শতাংশের এ বনে প্রাকৃতিক সম্পদের কি নেই? গাছ, মাছ, বহুজাতির প্রাণী, মধু, কাকড়া, ঝিনুক, চিংড়ি, গোলপাতা, পাখি, সাপ, নদ-নদীসহ অসমূল্য সম্পদের আঁধার এই সুন্দরবন। সুন্দরবনে মোট ২’শ ৪৫টি পরিবারের ৩’শ ৩৪টি প্রজাতির বড় বৃ, গুল্ম-লতা ও পরজীবী উদ্ভিদ পাওয়া যায়। মাছ পাওয়া যায় ২৭টি পরিবারের ৫৩টি প্রজাতির (সমুদ্রচর) ও ৪৯টি পরিবারের ১’শ ২৪ প্রজাতির (তলদেশ বিহারী)। চিংড়ি পাওয়া যায় ৫ পরিবারের ২৪ প্রজাতির। সুন্দরবনের প্রায় ৩৫ ভাগ জলাভূমি, যার ১লাখ ৭৫হাজার ৬’শ ৮৫ হেক্টর এলাকায় ছোট বড় ৪’শ ৫০টি নদী ও খাল রয়েছে। শুধু এ পর্যন্তই নয়, মধু, গোলপাতা ছাড়াও এ বনে রয়েছে তেল ও গ্যাস। বাংলাদেশের পেট্রোবাংলা পেট্রোলিয়ামজাত তেল-গ্যাস কার্যক্রমকে ২৩টি বøকে ভাগ করেছে। যার মধ্যে সুন্দরবন ৫ ও ৭নং বøকের অর্ন্তগত। এ বনে বন্যপ্রাণী রয়েছে ৪’শ ২৫ প্রজাতির, যার মধ্যে ৩’শ ১৪ প্রজাতির পাখি, ১৪ প্রজাতির কাছিম, ৯ প্রজাতির অজগর, কালকেউটে, বোড়া, গোসাপসহ ৩০ প্রজাতির সাপ ও কুমির, ৫৪ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী। সব কিছুর মধ্যে এখানের অন্যতম প্রাণী হচ্ছে পৃথিবীর বিরল প্রজাতির রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ১৯৮৫ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৪’শ ৫০টি। ১৯৯৩ সালের গণনা অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ৩’শ ৫০ থেকে ৪’শ ৫০টি। ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ৩’শ ৬৯টি এবং সর্বশেষ ২০০৪ সালে সুন্দরবনের বাঘ শুমারী ফলাফল পুরুষ বাঘ ১’শ ২১টি, স্ত্রী বাঘ ২’শ ৯৮টি ও ২১টি বাচ্চাসহ সব মিলিয়ে ৪’শ ৪০টি।
কিন্তু এই সম্পদের আধার ধ্বংস হতে বসেছে। দিনে দিনে কমে যাচ্ছে এর সম্পদ এবং রাজস্ব আয়। অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনের আয়তন বর্তমানের প্রায় দ্বিগুণ ছিল। মূলত বৃটিশরা এদেশ শাসন গ্রহণের পর থেকে সুন্দরবনের আয়তন ক্রমশঃ কমতে থাকে। ইতিহাস বলে এখন যেখানে কলকাতা ও খুলনা শহরের অবস্থান, ১৭৬৫ সালে সে পর্যন্ত ছিল সুন্দবনের বিস্তৃতি। রাজস্ব আয় বাড়ানো ও জীবজন্তুর হাত থেকে রার জন্য প্রথম ১৭৭০ সালে কালেক্টর জেনারেল কড রাসেলের সময় থেকে চাষের জন্য সুন্দরবনকে ইজারা দেওয়া শুরু হয়। এ সময় বনের কোন সীমানা নির্ধারণ ছিল না। প্রথম বনের সীমানা নির্ধারিত হয় ১৭৮৩ সালে যশোরের তৎকালীন জর্জ ও কালেক্টর টিনম্যান হেংকেল এর সময় থেকে। ১৭৮৫ সালে হেংকেল বনের ছোট ছোট জমি ১৫০ জনকে লীজ দেন। তবে হেংকেলের এই তৎপরতায় বন নিধনের সাথে সাথে আবাদী জমি বাড়তে থাকে। ১৮১১ সাল থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত লেফটেনেন্ট ডাবলু ই মরিশন সমগ্র সুন্দরবন এলাকা জরিপ কাজ শুরু করেন এবং এই জরিপ কাজ শেষ করেন মরিশনের ভাই ক্যাপ্টেন হিউজ মরিশন। অবশ্য এ সময় দু ভাইয়ের মিলে একটি আংশিক ম্যাপও তৈরী করেন এবং তাদের আংশিক ম্যাপ নিয়ে ও জরিপকৃত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে ১৮২২ থেকে ১৮২৩ সালে সর্ভেয়ার টমাস প্রিন্সেস সাহেব সুন্দরবনের একটি ম্যাপ তৈরী করেন। যা ১৮৩০ সালে সম্পূর্ণ আঙ্গিকে রূপ দেন সুন্দরবনের প্রথম কমিশনার উইলিয়াম ড্যাম্পিয়ার ও জরিপ কর্মকর্তা হজেয ।
১৮১৭ সালে সুন্দরবন এলাকার জন্য জেলা কালেক্টরের মতা সম্পন্ন পদ সৃষ্টি করে প্রথম দায়িত্ব পান ইউলিয়াম ড্যাম্পিয়ার। ১৮২৮ সালে বৃটিশ সরকার সুন্দরবনের স্বত্ত¡াধিকার অর্জন করেন। অবশ্য এর পূর্বে সুন্দরবনের প্রথম দপ্তর স্থাপন করা হয় কলকাতার আলীপুরে। ১৮৫৩ সালে অনাবাদী ও জঙ্গল এলাকা বিতরণের জন্য নতুন আইন তৈরী হয়। ১৭৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ইংরেজরা পতিত এবং বন কেটে নতুন আবাদী জমি সৃষ্টি করে, যা একাধারে চলে ১৮৭৩ সাল পর্যন্ত। ১৮৭৮ সালে সমগ্র সুন্দরবন এলাকাকে সংরতি বন হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ১৮৭৯ সালে সমগ্র সুন্দরবনের দায় দায়িত্ব বন বিভাগের উপর ন্যস্ত করা হয়। সুন্দরবনের প্রথম বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নাম এম.ইউ.গ্রিন। তবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন ১৮৮৬ সাল থেকে, কারণ ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল তৎকালিন কতিপয় জমিদারের অধীনে।
সে কারণে দেখা যাচ্ছে সুন্দরবনের উপর অত্যাচার সেই অনাদী কাল থেকে। মনুষ্যসৃষ্ট নানান কারণসহ সুন্দরবন তির জন্য দায়ী প্রাকৃতিক কারণও। সুদীর্ঘকাল থেকে এ ধারা চলে আসলেও বর্তমানে তা বিপজ্জনক অবস্থানে পৌঁছে গেছে। এ দুরবস্থা কাটাতে চাই সামাজিক ভাবে একটি গণআন্দোলন। ১৯৯৪ সালের ৬ই ডিসেম্বর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ২১তম অধিবেশনে জাতিসংঘের শিা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) সুন্দরবনকে হেরিটেজ সাইট বা বিশ্ব সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে পৃথিবীর ৫২২টি বিশ্ব ঐতিহ্যের মধ্যে সুন্দরবনের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
শুধু কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ল ল মানুষের জীবন জীবিকার সঙ্গে সুন্দরবন সম্পৃক্ত নয়। বাংলাদেশের পরিবেশগত দিক বিবেচনায়ও এটিকে হাল্কা করে দেখার সুযোগ নেই। দণি-পশ্চিমাঞ্চলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে আগলে রেখেছে সুন্দরবন। অনেকটা মাতৃক্রোড়ে যেমনটি একটি শিশু পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকে। তাই আসুন ভালোবাসার এই দিনের মতো প্রতিটি দিনে সুন্দরবনকে ভালোবেসে এটিকে রা করে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব পালন করি।
(লেখকঃ- সাংবাদিক ও উন্নয়নকর্মী) |
fe60adb1-0c80-489e-bd8a-1e4f70a1e4dc | ঝিনুকে মুক্তা, সম্ভাবনা রয়েছে উপকূলেও
অলঙ্কার শিল্পে মুক্তার ব্যবহার দীর্ঘকালের। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত অমূল্য রত্ন সম্ভারের ক্ষেত্রে মুক্তার অবস্থান হীরার পরেই। অলঙ্কার ছাড়াও মুক্তার ব্যবহার হয় ওষুধ শিল্পে। ব্যবহার হয় জ্যেতিষশাস্ত্রে। মুক্তার উৎপত্তি ঝিনুক থেকে। ঝিনুকের বাস জলাশয়ে। আর আমাদের দেশে রয়েছে অন্তহীন জলাশয়। পুকুর-ডোবা, হাওড়-বাঁওড়, নদ-নদী, খাল-বিল থেকে শুরু করে জলাশয় নেই, দেশে এমন এলাকা নেই বললেই চলে। এসব জলাশয়ে পরিকল্পিত উপায়ে ঝিনুকের চাষ করা গেলে, মুক্তা হতে পারে ভাগ্য বদলে দেয়ার চাবিকাঠি। অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে মুক্তা খুলে দিতে পারে নতুন দিগন্ত। বিশেষত বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে এটি হতে পারে নতুন ক্ষেত্র। আশার কথা, বর্তমান সরকার বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ঝিনুক ও মুক্তা চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে নেয়া হয়েছে ব্যাপক পরিকল্পনা। চলছে গবেষণা। এরইমধ্যে অনেক ক্ষেত্রে এসেছে আশাতীত সফলতা।
ঝিনুক মূলত শামুক জাতীয় অমেরুদন্ডী জলজপ্রাণী। বাংলাদেশের উপকূলীয় লোনা পানিতে ৩শ’ প্রজাতির এবং মিঠা পানিতে ২৭ প্রজাতির ঝিনুক রয়েছে। তবে পাঁচ ধরনের ঝিনুকে মুক্তা পাওয়া গেছে। গবেষণায় এখন পর্যন্ত কমলা, গোলাপি, সাদা, ছাই- এই চার রঙের এবং গোল, রাইস ও আঁকাবাঁকা- এই তিন আকারের মুক্তা পাওয়া গেছে। উপকূলীয় মহেশখালী দ্বীপের পিঙ্ক পার্ল বা গোলাপি মুক্তা খুবই বিখ্যাত। এছাড়া, বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী এলাকাসহ দেশের প্রায় সব জায়গাতে কমবেশি মুক্তা বহনকারী ঝিনুক পাওয়া যায়। মুক্তাচাষের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮৬০ সালে জন লাটেনড্রেস নামের এক আমেরিকান প্রথম মুক্তার চাষ করেন। এর আগে স্পেনের সৈনিকরা ভেনিজুয়েলার উপত্যকায় মুক্তার প্রথম সন্ধান পায়। উনিশ শতকে জাপানে মুক্তার বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়। চীনেরও রয়েছে মুক্তা চাষের প্রাচীন ইতিহাস। বাংলাদেশে এক সময়ে বেদেরা ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ করত। বর্তমানে বিশ্বের কয়েকটি দেশ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লোনা এবং মিঠা উভয় পানির ঝিনুক তথা মুক্তাচাষে সফলতা লাভ করেছে। এর মধ্যে লোনা পানির মুক্তা উৎপাদনে অস্ট্রেলিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও জাপান এবং মিঠাপানির মুক্তা উৎপাদনে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, জাপান, আমেরিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত শীর্ষে অবস্থান করছে। ভারতও মুক্তা উৎপাদন ও রফতানিতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে নিয়েছে। বাংলাদেশেও রয়েছে মুক্তা চাষের অপার সম্ভাবনা।
এদেশে শীতকালের স্থায়িত্ব কম বরং প্রায় সারা বছর উষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে। এ পরিবেশ ঝিনুকের দৈহিক বৃদ্ধি ও মুক্তা চাষের অনুকূল। এছাড়া, এদেশের ঝিনুক থেকে সংগ্রহ করা মুক্তার রং যথেষ্ট উজ্জ্বল। যা বিশ্ববাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত জলাশয়। যেখানে একই সঙ্গে মাছ ও ঝিনুকের চাষ সম্ভব। রয়েছে শ্রমশক্তি। এত বিপুল সুযোগ-সুবিধা ও সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দেশে এর আগে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ঝিনুকচাষে খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১১-১২ অর্থবছরে একটি ‘কোর’ গবেষণা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ঝিনুকে মেন্টাল টিস্যু ঢুকিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গভীরতর পুকুরে ছেড়ে দেয়া হয় এবং নিয়মিত পরিচর্যা করা হয়। এতে পাঁচ মাসেই ঝিনুকে দুই থেকে তিন মিলিমিটার আকারের মুক্তা জন্মে, যা ‘রাইস পার্ল’ নামে পরিচিত। পরবর্তীতে ২০১২ সালের জুলাই মাসে ১৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মুক্তাচাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের অধীনে মুক্তা গবেষণাগার, ল্যাবরেটরি স্থাপন ও গবেষণা পুকুর সংস্কারসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করা হয় এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ভিয়েতনাম থেকে উন্নত প্রজাতির ২১০ কেজি রাজসিক ঝিনুক আমদানি করা হয়েছে। এসব ঝিনুকের প্রতিটির ওজন প্রায় এক কেজি। ভিয়েতনামে মিঠাপানিতে এ ঝিনুকের চাষ হয়। এতে বড় আকারের মুক্তা হয়। যার আন্তর্জাতিক চাহিদা অত্যন্ত বেশি।
এসব ঝিনুক ময়মনসিংহের বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) দেয়া হয়েছে। সেখানে এ ঝিনুকে কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে নতুন করে আরও ঝিনুক তৈরি করা হবে এবং পরীক্ষামূলকভাবে মুক্তা চাষের উপযোগী করে তোলা হবে। এতে প্রায় বছর দুই সময় লেগে যাবে। এরপরে তা বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য চাষীদের দেয়া হবে। এর পাশাপাশি ময়মনসিংহের ত্রিশাল, ঈশ্বরগঞ্জ ও ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ঝিনুকের প্রদর্শনী খামার করা হয়েছে। এরইমধ্যে ৫শ’ নারী-পুরুষকে মুক্তা চাষের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এছাড়া, মুক্তাচাষ নিয়ে গবেষণাও অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমান বাজারে ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার একটি মুক্তার দাম ৫০ মার্কিন ডলার। আর একটি ঝিনুকে মুক্তা হয় ১০ থেকে ১২টি। সে হিসেবে মাত্র একটি ঝিনুক থেকে বছরে ৫ থেকে ৬শ’ মার্কিন ডলার বা ৪০ হাজার থেকে ৪৮ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। অথচ এতে খরচ হবে মাত্র ১৫ থেকে ১৬শ’ টাকা। গবেষণায় আরও বেরিয়ে এসেছে, মুক্তা উৎপাদনের জন্য অস্ত্রোপচার করার পর ঝিনুকের বেঁচে থাকার হার ৭৬ ভাগ এবং মুক্তা তৈরির হার ৮২ ভাগ।
প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পরিকল্পিত উদ্যোগে মুক্তাচাষ সম্প্রসারণ করা গেলে এ খাত থেকে বছরে অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের যেমন সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনি ২০-৩০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। মুক্তা ছাড়া ঝিনুক থেকেও আমাদের অর্জনের সম্ভাবনা একেবারে কম নয়। ঝিনুকের খোলস থেকে নানা ধরনের সৌখিন সামগ্রী ও অলঙ্কার তৈরি করা সম্ভব। তাই এটিও হতে পারে রফতানি পণ্য।
// শংকল লাল দাশ/সূত্র : দৈনিক জনকণ্ঠ/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭// |
2f2b251a-0e30-47c2-a108-a40176b034a4 | উপকূলীয় এলাকা বাঁচাতে বিশেষ সমন্বিত উন্নয়ন উদ্যোগ প্রয়োজন
-
- ১২:২১
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, এনজিও, ঘটনাপ্রবাহ, জাতীয়-উপকূল, জীবনধারা, দুর্যোগ-দুর্বিপাক, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ১
ঢাকা, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। আজ জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে হলে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন যে, দেশীয় সম্পদ দিয়েই উপকূলীয় এলাকার ভূমি ও মানুষকে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। তবে এর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কার প্রয়োজন এবং এই সংস্থাটিকে সরকারের অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতির কার্যালয় ও কোস্ট ট্রাস্ট আয়োজিত জলবায়ু অভিঘাত হতে বাংলাদেশের উপকূলকে সুরক্ষা: র্বষাকালে সামূদ্রিক জোয়ারের প্লাবন থেকে রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. হাছান মাহমুদ এমপি। আলোচনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ট্রাস্টের রেজাউল করিম চৌধুরী এবং এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম এমপি।
এতে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, সংসদ সদস্য জেবুন নেসা আফরোজ, সংসদ সদস্য পংকজ নাথ, সংসদ সদস্য শেখ নুরুল হক এবং সংসদ সদস্য দিদারুল ইসলাম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ট্রাস্টের মো. মজিবুল হক মনির।
মুল প্রবন্ধে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক বিভিন্ন প্রভাবের উহারণ উল্লেখ করে মো.মজিবুল হক মনির দেশে রোয়ানু ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীকালে জরুরি বাধ নির্মাণ কর্মসূচির করুণ কিছু চিত্র তুলে ধরেন। তিনি কুতুবদিয়া দ্বীপে বাধ নির্মাণ পরিস্থিতির উদাহরণ দিয়ে উল্লেখ করেন যে, প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ৯ মাস চলে গেলেও কাজ হয়েছে মাত্র অর্ধেক, যেটুকু কাজ হয়েছে তারও গুণমত মান নিয়ে আছে প্রশ্ন। তিনি আশংকা করেন যে, আগামী বর্ষার আগে পুরো কাজ মান সম্মতভাবে সম্পন্ন করা না গেলে কুতুবদিয়াবাসীকে দুর্যোগে ভুগতে হবে। উপকূলকে দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচাতে তিনি কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন, যেমন: ১) পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তার কাজের জন্য স্থানীয় মানুষ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, ২) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এবং দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় রক্ষা করে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে, ৩) দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনকে জরুরি আপদকালীন তহবিল বরাদ্দ দিতে হবে।
সীতাকুন্ড এলাকার সংসদ সদস্য দিদারুল ইসলাম, বরিশালের সংসদ সদস্য জেবুন্নেসা, মেহেদিগঞ্জের সংসদ সদস্য পংকজ নাথ, কয়রার সংসদ সদস্য নুরুল হক এবং খুলনার সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস নিজ নিজ এলাকার মানুষের সংকট আর দুর্গতির কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, তাদের এলাকায় নদী ভাঙ্গন ও জলোচ্ছাসের কারণে আগামী বর্ষা নিয়ে মানুষ আতংকের মধ্যে আছে। এসব সমস্যা সমাধানে তাঁরা স্লুইজ গেট সংস্কার, খাল ও নদী পুনর্খনন, নদী শাসনের উপর গুরত্বারোপ করেন। তারা তাদের এলাকার পানীয় জলের তীব্র সংকটের কথাও উল্লেখ করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন যে, মাঠ পর্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের খুব কমই পাওয়া যায়।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, উপকূলের বাধগুলোর উচ্চতা আরও ৭ মিটার পর্যন্ত বাড়াতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রমে স্থানীয় জনসাধারণের অংশগ্রহণ এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি দাতা সংস্থার প্রস্তাবিত ডেল্টা পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেন।
আবদুল্লাহ আল ইসলাম এমপি বলেন, মেঘনা অববাহিকার মনপুরা, ঢালচর ও কুকরি মুকরির মতো দ্বীপগুলোকে জোয়ারের পানি থেকে বাঁচাতে বাধ নির্মাণের বিকল্প নেই।
ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, স্থানীয় সম্পদ ব্যবহার করে সরকার কিভাবে উপকূলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে পারে সে ব্যাপরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে পরামর্শ দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের কাছে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ প্রস্তাব নিয়ে আসা উচিত নয় বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কার প্রয়োজন এবং উপকূল রক্ষায় ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
//প্রতিবেদন/১৯০২২০১৭// |
5e37cd5c-b15d-4200-88a8-3f604adddfec | কলাপাড়ায় সবুজ উপকূল পরিণত হচ্ছে বিরান ভূমিতে
-
- ১২:৪৫
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, কৃষি ও কৃষক, জীবনধারা, পটুয়াখালী জেলা, প্রধান প্রতিবেদন, মধ্য-উপকূল, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ৩
কলাপাড়া, পটুয়াখালী : ভূমিগ্রাসীর আগ্রাসী থাবায় কলাপাড়ার উপকূলীয় সবুজ জনপদ এখন বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। হয়ে যাচ্ছে বিরাণভূমি। সবুজ আস্তরণের কৃষিজমি চাপা পড়ছে বালুর নিচে। হাজার হাজার একর কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। স্থায়ীভাবে এসব জমি কৃষকের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ জীবন-যাত্রার নির্মল দৃশ্য। আগ্রাসী থাবা থেকে বাদ পড়ছেনা বাড়ি-ঘর থেকে গ্রামীণ প্রকৃতি। যেন সবকিছুই ওলট-পালট হয়ে যাচ্ছে। বালুতে ভরাট হয়ে বিলীন হচ্ছে পুকুর, গোয়ালঘর থেকে বাপ-দাদার কবর পর্যন্ত।
বনবিভাগের সংরক্ষিত বাগানের গাছপালাসহ বাগান পর্যন্ত আগ্রাসী হানায় বালুর নিচে চাপা পড়ছে। রক্ষা পাচ্ছে না নদী-খাল থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক লেক পর্যন্ত। কখনও অধিগ্রহণ। কখনও আগ্রাসী থাবায় জবরদখল চলছে। সব যেন চলছে ফ্রি-স্টাইলে। কোন নিয়ম কানুনের বালাই নেই। এক কথায় পর্যটন সমৃদ্ধ কলাপাড়ায় এখন বালুর নিচে চাপা পড়ছে সবুজের সুন্দর আচ্ছাদন। হয়ে যাচ্ছে কৃত্তিম মরুভূমি। অধিগ্রহন প্রক্রিয়ায় যেসব স্থাপনার জন্য সবুজ তিন ফসলী কৃষিজমিসহ বসতভিটা এলাকা বালুতে ভরাট করা হয়েছে তা নিয়েও রয়েছে এন্তার অভিযোগ। কারণ বিদ্যুত প্লান্ট করতে কী পরিমান জমির দরকার। আর কী পরিমাণ অধিগ্রহণ করা হয়েছে এ নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন।
একই অবস্থা পায়রা বন্দর নির্মাণ নিয়ে। নৌঘাটি নির্মাণসহ বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সবুজে ঘেরা কৃষি উৎপাদনের তিন ফসলী জমি অধিগ্রহণের বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্নের যেন শেষ নেই। ধানখালীতে ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য ১০০২ একর তিন ফসলী কৃষিজমিসহ বসতভিটা অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্ল্যান্ট করতে কতটুকু জমির প্রয়োজন তা নিয়ে এখন সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যাদের জমিজমা, বসতভিটা গেছে তাদের মনে প্রচন্ড ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে।
এসব মানুষের জমি বুঝে নেয়ার দুই বছর পরেও পুনর্বাসনের আওতায় আনা হয়নি। অধিগ্রহণের টাকা আজও পায়নি প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ। সুখে-স্বাচ্ছন্দে থাকা গেরস্ত পরিবারগুলো এখন বেড়িবাঁধের রিভার সাইটের ¯েøাপে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। তাদের চোখের সামনেই সবুজে ঘেরা মাঠে এখন কৃত্তিম বালুর পাহাড় দাড়িয়ে আছে। গত সাত বছরে অন্তত দশ হাজার একর কৃষি জমির ধরন পাল্টে এখন অনাবাদী হয়ে গেছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
এভাবে সরকারি বেসরকারি উদ্যোক্তা কিংবা ভূমি ব্যবসায়ীরা শিল্প প্রতিষ্ঠান করার নামে বেড়িবাঁধের বাইরের সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড় করে বালুতে ঢেকে দিয়েছে। শত শত গাছপালা কেটে সাবাড় করে দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহন করা জমিজমা দখল ও ভরাট করে নেয়া হয়েছে। স্লুইসসংযুক্ত খাল পর্যন্ত ভরাট করা হয়েছে। মিলিয়ে গেছে রাখাইনদের শ্মশানসহ ভূমিহীনদের জমিজমা। পায়রা বন্দর প্রকল্প এলাকার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে এ চিত্র বিরাজমান।
নাচনাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় চাকামইয়া-টিয়াখালী দোন নদীর তীর দখল করে বনাঞ্চল কেটে সাফ করে দোকানপাটসহ বাড়িঘর করা হয়েছে। চাকামইয় ব্রিজ থেকে রজপাড়া পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। কুয়াকাটা মহাসড়ক লাগোয়া আলীপুর-কুয়াকাটা সড়কের মাঝ বরাবর প্রায় ৮০ বিঘা জমি তিন ফসলী কৃষিজমি এক ব্যক্তি কিনে রাখেন অন্তত ১৫ বছর আগে। এ জমিতে এখনও কিছু ধানের আবাদ হয়। সব জমি আবাদ করলে ফি বছল অন্তত দেড় হাজার মণ ধান উৎপন্ন হতো। কিন্তু এ জমি পড়ে আছে অনাবাদী। অথচ মূল মালিক কৃষকের হাতছাড়া হয়ে গেছে কৃষি জমি । এখন বালুতে ঢেকে গেছে সবুজের এই বির্স্তীণ এলাকা।
এমন দৃশ্য কুয়াকাটা পৌর এলাকাসহ খাজুরা, আলীপুর, গঙ্গামতি, লতাচাপলী, কাউয়ারচর, গঙ্গামতিসহ সর্বত্র। পর্যটন এলাকা কুয়াকাটার দশ বর্গকিলোমিটার এলাকার সবুজে ঘেরা জমি বালুতে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। অধিকাংশই কৃষকের হাতছাড়া হয়ে গেছে। এসব এলাকার অন্তত পাঁচ হাজার একর জমি যুগ ধরে অনাবাদী পড়ে আছে। মহাসড়কের পাশে তিনফসলী কৃষিজমিতে কোন বাধা ছাড়া গড়ে উঠেছে আটভাটা। আর বেড়িবাঁধের বাইরের বনাঞ্চলসহ পাউবোর খাস জমি দখল করে গাছপালা উজাড় করে গড়ে তোলা হচ্ছে হাজার হাজার বাড়িঘর। এমনদৃশ্য সবক’টি বেড়িবাঁধের বাইরে। মাইলের পর মাইল জুড়ে সবুজের আচ্ছাদন উজাড় করে বিরানভূমিতে পরিণত করার যেন তান্ডব চলছে।
ভূমিগ্রাসীচক্র এমনসব আগ্রাসী তান্ডব চালালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বন্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয় না। ফলে কলাপাড়া উপকূলের সবুজ বনায়ন, সবুজ কৃষিজমি এখন পরিণত হচ্ছে বিরানভূমিতে। বালুর আস্তরণে স্থায়ীভাবে ঢাকা পড়ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। উপজেলা প্রশাসন, কৃষিবিভাগ, পানিউন্নয়ন বোর্ড, বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তা ব্যক্তিরা এসব নিয়ে তেমন তৎপর নয়। ফলে ভূক্তভোগীরা হতাশ হয়ে পড়ছে। দ্রæত কমে যাচ্ছে কৃষিকাজে ব্যবহারের জমিসহ বনাঞ্চল। ধানসহ কৃষিউৎপাদন দ্রুত কমে যাওয়ায় কৃষকসহ ভূমির মালিকরা হতাশ হয়ে পড়ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান জানান, সারা দেশে বছরে মোট ভূমির ০.৭২ ভাগ কৃষি ভূমি কমে যাচ্ছে। কিন্তু কলাপাড়ায় এর পরিমান আরও বেশি। বর্তমানে যা উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌছেছে। তবে কী পরিমান জমি অনাবাদী হয়ে শ্রেণি পরিবর্তন হয়েছে তার সঠিক পরিস্যংখ্যান তিনি দিতে পারেন নি। সাধারণ সচেতন মানুষের দাবি তিন ফসলী কৃষি জমি রক্ষায় এখনই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হোক।
//প্রতিবেদন/২৫০৪২০১৭// |
a7e32309-f8a7-4a2d-b8c7-06c017e38b26 | উপকূল আলোকচিত্র প্রদর্শনী || উপকূলে নজর বাড়ানোর দাবি দর্শনার্থীদের
ঢাকা : এরা বাস্তবে কখনোই উপকূল দেখেননি। সংবাদপত্র আর টেলিভিশনে হয়তো বিপন্নতার খবর দেখেছেন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর পড়েছেন। আবার কেউ হয়তো উপকূলের কোন পর্যটন এলাকায় বেড়াতে গেছেন। কিন্তু উপকূলের মানুষের দুর্দশার চিত্র সেভাবে দেখা হয়ে ওঠেনি। রাজধানীর দৃক গ্যালারিতে ‘উপকূল আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ থেকে তারা জানতে পারলেন উপকূলের কিছু অজানা কাহিনী।
উপকূল আলোকচিত্র প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিনে আগত দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেল। দর্শনার্থীরা জানালেন, এখানে এসে উপকূল নিয়ে তাদের ধারণাটাই বদলে গেছে। এতটা বিপন্নতায় মানুষ বসবাস করতে পারে, তা কখনোই তারা কল্পনা করেননি। উপকূলের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের নজর বাড়ানোর দাবি জানালেন তারা।
‘উপকূল বাংলাদেশ’ শিরোনামে ৩দিনব্যাপী এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে বুধবার (২৬ এপ্রিল ২০১৭)। শেষ হবে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল ২০১৭)। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলছে। উপকূলের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ছবি নিয়ে শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ - সিসিডিবি এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী জয়ন্ত অধিকারী বলেন, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সিসিডিবি মানবিক সহায়তা নিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে আছে। আমরা জানি, উপকূলের মানুষেরা বহু সংগ্রামে বেঁচে আছে। জলবায়ু পরিবর্তন তাদের জীবনকেই সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে। সে কারণে তাদের দিকে নজর দিতে হবে। বিপন্ন উপকূলের চিত্র নীতিনির্ধারণী মহলে তুলে ধরে সংকট উত্তরণের পথ খুঁজতেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন।
উপকূল অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে চারজন আলোকচিত্রীর ছবি স্থান পেয়েছে। এরা হলেন, দীন মোহাম্মদ শিবলী, রফিকুল ইসলাম মন্টু, হাবিব তরিকুল ও নাইমুল ইসলাম।
দ্বিতীয় দিনে প্রদর্শনীতে আসা দর্শনার্থী শ্যামা শারমিন রহমান পেশায় ফার্মাসিষ্ট। গণমাধ্যমে খবর পেয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছেন। লক্ষ্য উপকূল বিষয়ে নিজেদের জানা এবং ছেলেদের জানানো। শ্যামা শারমিন বলেন, উপকূলের মানুষেরা যে এতটা বিপন্নতায় আছে, সেটা আমাদের আগে জানা ছিল না। প্রদর্শনীর ছবিগুলো যেন তাদের দুর্দশার কথাই বলছে। উপকূলের মানুষগুলো অনেক সংগ্রাম করে বেঁচে আছে। তাদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত।
প্রদর্শনী ঘুরে দেখে শ্যামা শারমিন রহমানের সানিডেল স্কুলে ৩য় শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে আশাজ সাদান বললো, নগরে বসে আমরা কল্পনাই করতে পারছি না উপকূলের মানুষেরা কেমন আছেন। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ওই এলাকার মানুষের ঝুঁকি যে বেড়ে যাচ্ছে তা এই ছবিগুলো দেখে বুঝতে পারি। প্রদর্শনীতে এসে উপকূলের জীবনযাত্রা বিষয়ে বেশ ধারণা হলো।
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ’র শিক্ষার্থী মৌমি প্রদর্শনী ঘুরে দেখে জানালো, ছবি দেখে বুঝতে পারি, উপকূলের মানুষগুলো প্রকৃতিক সঙ্গে লড়াই-সংগ্রাম করে বেঁচে আছে। নগরে বসে আমরা যেটা ধারণা করতে পারিনা, এখানে এসে সে বিষয়ে অনেক ধারণা লাভ করলাম। ছবিগুলো এক একটি সুনির্দষ্ট বিষয়ের ওপরে ফোকাস করায় বিষয়গুলো দর্শকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এভাবে উপকূলের বিভিন্ন ইস্যুতে বিষয়ভিত্তিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হলে উপকূলকে মানুষ আরও ভালোভাবে জানতে পারবে।
প্রদর্শনীতে আসা দর্শনার্থী ও বিশিষ্ট আলোকচিত্রী নিজামউদ্দিন হায়দার বলেন, উপকূলের জন্য যে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন, তা এই ছবিগুলোই বলে দেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপকূলের জীবনজীবিকায় কী ধরণের প্রভাব পড়েছে, জীবনযাপনে তাদেরকে কতটা লড়াই করতে হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে প্রদর্শনীর দেয়ালগুলোতে। প্রান্তিকের ছবিগুলো তুলে আনায় আমার বেশ ভালো লেগেছে, আবার মানুষের দুর্দশার চিত্রগুলো দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। এমন একটি উদ্যোগ আরও আগেই নেওয়া উচিত ছিল।
ইউএই ভিত্তিক জিও টেলিভিশনের বাংলাদেশ ব্যুরো চিফ সেলিম রেজা বলেন, এটা দেখে ভালো লাগার মত কোন প্রদর্শনী নয়। এটা অনুধাবনের বিষয়। এই ছবি দেখতে সবাই আসবে না। উপকূলের ছবি নিয়ে ঢাকায় প্রদর্শনীর আয়োজন আমার জানামতে এটাই প্রথম। এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। প্রদর্শনীর ছবিগুলোকে সামনে রেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উপকূল নিয়ে ভালো প্রতিবেদন করতে পারে। উপকূলের ছবি নিয়ে এভাবে আরও প্রদর্শনীরআয়োজন করতে হবে। তাহলেই মানুষের মাঝে সচেতনতা আসবে। উপকূলের মানুষও ফিরে পাবে সুন্দর আগামী।
//প্রতিবেদন/২৭০৪২০১৭// |
8f3c9caa-96aa-45ff-b47b-063ffa7220b6 | ঢাকার দৃক গ্যালারিতে ৩ দিনব্যাপী উপকূল আলোকচিত্র প্রদর্শনীর সমাপ্তি
ঢাকা : রাজধানী ঢাকায় দৃক গ্যালারিতে তিনদিনব্যাপী ‘উপকূল বাংলাদেশ আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ শেষ হল শুক্রবার (২৮ এপ্রিল ২০১৭)। শুরুর দিন বুধবার থেকেই প্রদর্শনীতে ব্যাপক দর্শক সমাগম ঘটে। দেশি দর্শনার্থীর পাশাপাশি উপকূলের ছবি দেখতে অাসেন বিদেশি নাগরিকগণ। গবেষক, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার নাগরিকগণ উপকূলের আলোকচিত্র দেখতে প্রদর্শনীতে ভিড় করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনে বিপন্ন উপকূলের চিত্র সবার সামনে তুলে ধরতে শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ-সিসিডিবি রাজধানীতে প্রথমবারের মত উপকূল বিষয়ে এ চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রদর্শনীতে জলবায়ু পরিবর্তনে বদলে যাওয়া উপকূলের গল্প তুলে ধরা হয়েছে ছবির ভাষায়।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুগুলোকে উন্নয়নধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য সামনে রেখে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অনেক ইস্যু সবার অগোচরে থেকে যাচ্ছে। সেগুলোকে সামনে এনে উন্নয়নধারায় সম্পৃক্ত করতে সহায়তা করবে এই প্রদর্শনী। উদ্যোক্তাদের প্রত্যাশা, এভাবেই উপকূলে ফিরে আসবে একটি সুন্দর আগামী।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ - সিসিডিবি’র প্রধান নির্বাহী জয়ন্ত অধিকারী বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সিসিডিবি মানবিক সহায়তা নিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে আছে। আমরা জানি, উপকূলের মানুষেরা বহু সংগ্রামে বেঁচে আছে। জলবায়ু পরিবর্তন তাদের জীবনকেই সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে। সে কারণে তাদের দিকে নজর দিতে হবে। বিপন্ন উপকূলের চিত্র নীতিনির্ধারণী মহলে তুলে ধরে সংকট উত্তরণের পথ খুঁজতেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন।”
প্রদর্শনীতে চারজন আলোচিত্রী-সাংবাদিকের তোলা ছবি স্থান পেয়েছে। এরা হলেন, দীন মোহাম্মদ শিবলী, রফিকুল ইসলাম মন্টু, হাবিব তরিকুল ও নাইমুল ইসলাম। এরা উপকূলের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে জলবায়ু পরিবর্তনের চিত্রগুলো তুলে এনেছেন। প্রদর্শনী প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা ছিল।
আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান সিসিডিবি’র ক্লাইমেট চেইঞ্জ প্রোগ্রামের প্রধান তানজির হোসেন বলেন, ‘‘উপকূলের উন্নয়ন-অগ্রগতির লক্ষ্যে সেখানকার চিত্রগুলো সবার সামনে উঠে আসার প্রয়োজন। প্রদর্শনীর মাধ্যমে ছবিতে উপস্থাপিত তথ্যগুলো নীতিনির্ধারণী মহলসহ সব শ্রেণীর-পেশার মানুষের কাছে পৌঁছাবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। এরফলে বিপন্ন উপকূল এগোবে সুন্দর আগামীর পথে।’’
প্রদর্শনীর ছবিগুলো দেখে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গবেষক মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘‘উপকূলীয় জলবায়ু ঝুঁকিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও সংকটগুলো এই প্রদর্শনীতে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এ চিত্রগুলো গবেষক ও উন্নয়নকর্মীদের নতুন ও ভিন্নভাবে ভাবতে সাহায্য করবে। এ প্রদর্র্শনীতে সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলের চিত্র ফুটে উঠেছে, যা ঢাকায় উপস্থাপিত প্রথম উদ্যোগ ’’
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোস্টট্রাষ্টের সহকারী পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, ‘‘এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত প্রতিটি ছবিই এক একটি গল্প। ছবিগুলো যেসব সমস্যার কথা বলছে, তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেবে। আর এর মধ্যদিয়ে সমস্যা সমাধানের দিকে এগোবে উপকূল। সমুদ্ররেখায় বিপন্ন জনপদের এই ইস্যুগুলো নিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ ধরণের উদ্যোগে সংশ্লিষ্টদের পাশে থাকতে হবে। এই উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়া মানে উপকূলকেই এগিয়ে নেওয়া।’’
ঢাকায় প্রথমবারের মত উপকূল বাংলাদেশ আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) প্রতিষ্ঠাকাল থেকে মানবিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসাবে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৭৩ সালে। তবে ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী সাইক্লোন এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তীকালে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সহায়তা নিয়ে। দেশের অধিকাংশ স্থানে কাজ করছে সিসিডিবি। এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের কেন্দ্রে রয়েছে গ্রামামাঞ্চলে কমিউনিটি ও মানবিক উন্নয়ন।
//প্রতিবেদন/২৮০৪২০১৭// |
eb0a45c7-8497-458b-9a4d-a888d76afb0a | উপকূল আলোকচিত্র প্রদর্শনী শেষ || উপকূল সুরক্ষায় নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ বিশিষ্টজনদের
-
- ১৪:২৯
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, ঘটনাপ্রবাহ, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতীয়-উপকূল, বিশেষ বিভাগ, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ১
ঢাকা : উপকূল আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে এসে বিশিষ্টজনের বলেছেন, এটা ব্যতিক্রমী আয়োজন। উপকূল নিয়ে এর আগে পূর্নাঙ্গভাবে কোন চিত্র প্রদর্শনী ঢাকায় হয়নি। সবার মাঝে উপকূলের তথ্য ছড়িয়ে দিতে এবং নীতিনির্ধারণে প্রভাব ফেলতেএ ধরণের উদ্যোগ আরও ব্যাপকভাবে নেওয়া প্রয়োজন। তারা বলেন, উপকূল সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
রাজধানী ঢাকায় দৃক গ্যালারিতে ‘উপকূল বাংলাদেশ আলোকচিত্র প্রদর্শনী’র শেষদিনে এসে গবেষক, উন্নয়নকর্মী, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ এসব কথা বলেন। তিনদিনব্যাপী এ আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুক্রবার (২৮ এপ্রিল ২০১৭) শেষ হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিপন্ন উপকূলের আলোকচিত্র নিয়ে বুধবার (২৬ এপ্রিল ২০১৭) এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছিল।
সমাপনী দিনে প্রদর্শনীর ছবিগুলো দেখে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গবেষক মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ‘‘উপকূলীয় জলবায়ু ঝুঁকিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও সংকটগুলো এই প্রদর্শনীতে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এ চিত্রগুলো গবেষক ও উন্নয়নকর্মীদের নতুন ও ভিন্নভাবে ভাবতে সাহায্য করবে। এ প্রদর্র্শনীতে সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলের চিত্র ফুটে উঠেছে, যা ঢাকায় উপস্থাপিত প্রথম উদ্যোগ।”
তিনি বলেন, ‘‘সমগ্র উপকূল নিয়ে আমরা খুব বেশি কাজ করছি না। সে ক্ষেত্রে এ আয়োজন সমগ্র উপকূল নিয়ে কাজের একটা প্ল্যাটফরম তৈরি করবে বলে আমার বিশ্বাস। উপকূলের সমস্যা নিরসনে আমাদেরকে একযোগে কাজ করতে হবে। এর মাধ্যমেই বিষয়গুলোকে নীতিনির্ধারণী মহলে পৌঁছানো সম্ভব হবে।”
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোস্টট্রাষ্টের সহকারী পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, ‘‘এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত প্রতিটি ছবিই এক একটি গল্প। ছবিগুলো যেসব সমস্যার কথা বলছে, তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেবে। আর এর মধ্যদিয়ে সমস্যা সমাধানের দিকে এগোবে উপকূল। সমুদ্ররেখায় বিপন্ন জনপদের এই ইস্যুগুলো নিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ ধরণের উদ্যোগে সংশ্লিষ্টদের পাশে থাকতে হবে। এই উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়া মানে উপকূলকেই এগিয়ে নেওয়া।”
অনলাইন নিউজপোর্টাল পরিবর্তন ডটকম-এর সম্পাদনা পর্ষদ সদস্য ড. কাজল রশীদ শাহীন বলেন, ‘‘কোস্টাল বাংলাদেশের দু:খী-সংকটের চেহারাটা ফুটে উঠেছে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে। যারা উপকূলে গিয়ে দেখতে পারেননি, তাদেরকেও উপকূলের বিপন্নতা অনুধাবন করতে সহায়তা করেছে এ প্রদর্শনী। তবে মানুষের কষ্টের বিষয়গুলো আরও পিন পয়েন্টে দেখানো যেতে পারতো। যা খুব কম ছবিতেই এসেছে। কিছু ছবি দেখে হেলিকপ্টার থেকে বন্যা দেখার মত মনে হয়েছে। ফিচারাইজড না, জার্নালিষ্টিক ভিউয়ের ছবিটা দেখতে চাই আরও বেশি করে।”
তিনি বলেন, ‘‘নি:সন্দেহে এটা ভালো উদ্যোগ। উপকূলের ছবি নিয়ে এর আগে এভাবে কোন প্রদর্শনী হয়েছে বলে আমার জানা নেই। নগরে এনে উপকূলের ছবি দেখানোর ফলে এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী মহলের দৃষ্টি আকৃষ্ট হবে। আসলে সবাই মিলে উপকূল নিয়ে কাজ করা উচিত।”
প্রদর্শনীর ছবি দেখে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অ্যাকশন এইড-বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার নুসরাত ফাতেমা বলেন, ‘‘উপকূলের ছবিতে যা দেখলাম, নগরে বসে তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনা। দূর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করার কথা আমরা ভাবতেও পারি না। ঘর ভেঙে যায়, আবার তা তৈরি করতে হয়। প্রতি বছরই তাদের ওপর দিয়ে হাজারো বিপদ বয়ে যায়। এগুলো সামাল দিয়েও তারা কীভাবে বেঁচে থাকে কল্পনাও করা যায় না। এসব বিষয়ে সবার মাঝে যেমন সচেনতা বাড়াতে হবে, সরকারেরও নজর বাড়াতে হবে।”
শুরুর দিন বুধবার থেকেই প্রদর্শনীতে ব্যাপক দর্শক সমাগম ঘটে। দেশি দর্শনার্থীর পাশাপাশি উপকূলের ছবি দেখতে অাসেন বিদেশি নাগরিকগণ। গবেষক, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার নাগরিকগণ উপকূলের আলোকচিত্র দেখতে প্রদর্শনীতে ভিড় করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনে বিপন্ন উপকূলের চিত্র সবার সামনে তুলে ধরতে শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ-সিসিডিবি রাজধানীতে প্রথমবারের মত উপকূল বিষয়ে এ চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রদর্শনীতে জলবায়ু পরিবর্তনে বদলে যাওয়া উপকূলের গল্প তুলে ধরা হয়েছে ছবির ভাষায়।
প্রদর্শনীতে চারজন আলোচিত্রী-সাংবাদিকের তোলা ছবি স্থান পেয়েছে। এরা হলেন, দীন মোহাম্মদ শিবলী, রফিকুল ইসলাম মন্টু, হাবিব তরিকুল ও নাইমুল ইসলাম। এরা উপকূলের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে জলবায়ু পরিবর্তনের চিত্রগুলো তুলে এনেছেন। প্রদর্শনী প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা ছিল।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যুগুলোকে উন্নয়নধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য সামনে রেখে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অনেক ইস্যু সবার অগোচরে থেকে যাচ্ছে। সেগুলোকে সামনে এনে উন্নয়নধারায় সম্পৃক্ত করতে সহায়তা করবে এই প্রদর্শনী। উদ্যোক্তাদের প্রত্যাশা, এভাবেই উপকূলে ফিরে আসবে একটি সুন্দর আগামী।
ঢাকায় প্রথমবারের মত উপকূল বাংলাদেশ আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান ক্রিশ্চিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) প্রতিষ্ঠাকাল থেকে মানবিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসাবে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৭৩ সালে। তবে ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী সাইক্লোন এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরবর্তীকালে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সহায়তা নিয়ে। দেশের অধিকাংশ স্থানে কাজ করছে সিসিডিবি। এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের কেন্দ্রে রয়েছে গ্রামামাঞ্চলে কমিউনিটি ও মানবিক উন্নয়ন।
//প্রতিবেদন/২৯০৪২০১৭// |
1a738d85-f071-4547-b712-61b93fd2f038 | উপকূল এখনও সুরক্ষিত নয়, নজর বাড়াতে হবে : আরিফুর রহমান
২৯ এপ্রিল ১৯৯১। উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়। নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা উপকূল। প্রাণ হারিয়েছিল লাখ লাখ মানুষ। ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয় পুরো উপকূল। প্রায় দুই দশক অতিবাহিত হয়েছে দিবসটির। এতদিনে কতটা সুরক্ষিত হতে পেরেছে উপকূল? দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার চিত্রটাই বা কেমন? এসব নিয়ে ২৯ এপ্রিল বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান করেছে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর, চট্টগ্রাম কেন্দ্র। ‘ডায়মন্ড সিমেন্ট প্রসঙ্গ চট্টগ্রাম অনুষ্ঠান’ শিরোনামের এ অনুষ্ঠানে উপকূল সুরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলেছেন ইপসা’র প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের কামাল পারভেজ। অনুষ্ঠানের কথোপকথন হুবহু :
♦ কামাল পারভেজ : আমরা একটু শুরুতেই যেতে চাই সেই ভয়াল ঘূর্ণিঝড়, আড়াই দশক পর আসলে কতটা সুরক্ষিত উপকূল?
♦ আরিফুর রহমান : ২৯ এপ্রিল ১৯৯১ সাল। আড়াই দশক ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়েছে। আমি অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে চাই, আমাদের উপকূল এখনও অরক্ষিত। কিন্তু এরমধ্যে অনেক শুভ খবরও আছে। সেগুলো আমরা দেখেছি; আমরা সরাসরি যেহেতু উপকূল অঞ্চলে কাজ করি মানুষের সাথে। কিন্তু ওভারঅল যদি বলতে হয়, এখনও আমাদের উপকূল পুরোপুরি অরক্ষিত। ২৯ এপ্রিলের মতো ভয়াবহ কোন ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন হলে ঠিক একইভাবে এখানকার মানুষজন ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
♦ কামাল পারভেজ : গত দু’তিন বছরে মধ্যে আমরা অনেকগুলো ঘূর্ণিঝড় দেখেছি। সবগুলোতেই আমরা দেখেছি, চট্টগ্রাম উপকূলের ১০ থেকে ১২ লাখ বাস করে, সেই মীরেরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড় হলে এই মানুষগুলোকে অ্যাকোমোডেট করার ব্যবস্থা কিন্তু খুবই নাজুক। যেমন আমরা দেখি, আশ্রয়কেন্দ্রে যেগুলো আছে, সেগুলোতে সর্বোচ্চ তিন থেকে চার লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারে। এ বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
♦ আরিফুর রহমান : আসলে যখন বড় ধরণের ঘূর্ণিঝড় হয়, অনেক প্রাণহানি হয়, তখন এগুলো মিডিয়াতে আসে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজর পড়ে। সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদ্যোগে অনেক ধরণের স্থাপনা নির্মাণ হয়। কিন্তু যেটা হয়েছে, আমরা যদি গত ৪০ বছরের খতিয়ান দেখি, এটা সংখ্যা জনসংখ্যার অনুপাতে খুবই কম। কিন্তু এখানে একটা বিষয় হচ্ছে, আমরা যারা উন্নয়নকর্মী, আমরা দেখেছি যে, যেসব কাঠামোগুলো গড়ে ওঠে, এগুলো পরবর্তীতে কিছু অব্যবস্থাপনা থাকে এবং এগুলোর সংস্কার কাজ হয় না। ফলে যা-ও আছে, সেগুলো কিন্তু সঠিকভাবে মানুষের জন্য ঠিক উপকার বয়ে আনে না। যেগুলো সংস্কার হয়, সেগুলো কাজে আসে। আর অনেকগুলো সেন্টার আছে, যেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। প্রায় ৫০ ভাগ এরকম। আপনারা জানেন, যে উপকূলীয় অঞ্চল বেশিরভাগই লবনাক্ত। পুরো আবহাওয়াটাই হচ্ছে লবনাক্ত। ফলে যেকোন অবকাঠামো যত বছর টিকে থাকার কথা; লবনাক্ততা ও সংস্কারের অভাবে আরও দ্রুত এটা নষ্ট হয়ে যায়।
♦ কামাল পারভেজ : তার মানে কী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এখনও কী ঘাটতি রয়ে গেছে বলে আপনি মনে করেন?
♦ আরিফুর রহমান : ঘাটতি আছে। কিন্তু এর পাশাপাশি কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপও আছে। আমি যদি সেগুলো বলি, একটা হচ্ছে মানুষের মাঝে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বেড়েছে। মানুষজন এখন অনেক সচেতন। উপকূলে যারা বাস করে, তারা প্রত্যেকেই সতর্ক সংকেতগুলো সম্পর্ক জানে। তারা সবাই জানে যে দুর্যোগ আগে কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। দুর্যোগ চলাকালে এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে তারা কী করবে, সে বিষয়ে তারা সচেতন। এই প্রস্তুতির বিষয়ে আপনি যদিএকটু দেখেন, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল যে প্রাণহানি হয়েছিল এবং তার পরবর্তীতে যতগুলো সাইক্লোন হয়েছে, কোমেন রোয়ানু; এগুলোতে প্রাণহানির সংখ্যা অনেক কম ছিল। এগুলো এদিকেই আঘাত করেছে। একমাত্র কারণ হচ্ছে মানুষের সচেতনতা। এটি একটি অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ যে, মানুষ নিজেরাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় তাদের তৈরি করেছে। তাদের বাড়িঘর থেকে শুরু করে সবকিছু। এটি যেমন সত্য, তেমনি আরেকটি চরম সত্য হচ্ছে, আমাদের পুরো উপকূলে যে বেড়িবাঁধ রয়েছে, সেটি কিন্তু অরক্ষিত। এবং অসংখ্য জায়গায় এ বাঁধ ভেঙে গিয়েছে এবং যেখান দিয়ে সমুদ্রের লবনাক্ত পানি ঢুকে যাচ্ছে। এতে করে মানুষের সম্পদ, বিশেষ করে তাদের কৃষিজমি, যেগুলোর ওপর নির্ভর করে তাদের জীবন চলে, সেগুলো কিন্তু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, উপকূলীয় অঞ্চলে যেহেতু বেশিরভাগই দরিদ্র মানুষ, তাদের বাড়িঘরগুলো খুবই কাঁচা। সামান্য সাইক্লোনের বাতাসেই এগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এগুলোর ব্যাপারে আমরা কিন্তু ইতিবাচক কোন পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না।
♦ কামাল পারভেজ : দুর্যোগে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে যোগাযোগ। বিশেষ করে, আমরা দেখি, জেলেরা সমুদ্র-নদীতে মাছ ধরতে যায়। তাদের সাথে ঘূর্ণিঝড়ের ওই সময়কালীন যোগাযোগের বিষয়টা আসলে কতটা আধুনিক হয়েছে, বা কতটা উন্নত হয়েছে বলে আপনি মনে করেন। বা কোথাও কোন ঘাটতি আছে কীনা?
♦ আরিফুর রহমান : আমি যদি ১৯৯১ সালের সাথে তূলনা করি, সেক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে, আমাদের যে সরকারি বেতার রয়েছে, সেটি সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে। এবং আপনি জেনে খুশি হবেন যে, চট্টগ্রামের একমাত্র কমিউনিটি রেডিও স্টেশন, যেটি সীতাকুন্ডে অবস্থিত। যেটি সীতাকুন্ড এবং সন্দ্বীপ এই চ্যানেল এলাকায় কমিউনিটি রেডিও মাধ্যমে তথ্য প্রচার করা হয়। কিন্তু এটি শুধুমাত্র একটি নির্দষ্ট এলাকার জন্য। আমাদের যে বিশাল কোস্টাল এরিয়া; আমরা যদি সেন্টমার্টিন থেকে মীরেরসরাই পর্যন্ত ধরি, এখানে কিন্তু আরেকটি কমিউনিটি রেডিও কাজ করে নাফ নদীর কাছে টেকনাফে। এর বাইরে কিন্তু কমিউনিটি ভিত্তিক কোন রেডিও কমিউনিকেশনস নেই। সুতরাং তাদেরকে নির্ভর করতে হয় বেতারের ওপর। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যখন ঘূর্ণিঝড় হয়, তখন তো প্রচন্ড বাতাস থাকে। রেডিও সিগন্যাল অনেক সময় পৌঁছে না। কিন্তু এখন পর্যন্ত কমিউনিকেশনের জন্য আসলে আমাদের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির অধীনে যে স্বেচ্ছাসেবীরা আছে, তাদের যে প্রচারণা, এটিই কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যকরী। আমরা কমিউনিটির বিষয়টি জানলাম। আরেকটি হলো যে, পুরো উপকূলীয় অঞ্চলে রেডক্রিসেন্টের অধীনে হাজার হাজার ভলান্টিয়ার তৈরি হয়েছে, যারা ঘূর্ণিঝড়ের সিগন্যাল দেওয়ার সাথে সাথেই তারা কমিউনিটিতে যায় এবং এ তথ্যগুলো তারা প্রচার করে। তারা হ্যান্ডমাইক ও মাইক ব্যবহার করে। তারপর পতাকা টাঙানো হয়।
♦ কামাল পারভেজ : এই যে রেডিওর কথা বলছিলেন, এক্ষেত্রে যারা ট্রলার নিয়ে যেসব জেলেরা মাছ ধরতে যায়, তাদের কাছে কী পর্যাপ্ত বেতারযন্ত্র আছে বলে আপনি মনে করেন?
♦ আরিফুর রহমান : না। এটা অবশ্যই নাই। কারণ হচ্ছে, যে এখানে আমরা দেখি যে, যেগুলো একটু বড় ট্রলার, মালিকপক্ষ খুব সচেতন, সেখানে রেডিও’র ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু অধিকাংশ, যেগুলো ছোট ছোট যে ডিঙ্গি নৌকাগুলো আছে, যারা সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, এদের অধিকাংশের কাছেই কিন্তু তথ্য পাওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা, সেটা নেই। একটা পজেটিভ দিক বলি, এখন যেহেতু মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে; অনেক মোবাইল ফোন এফএম রেডিও রিসিভ করতে পারে, এক্ষেত্রে আমরা আগামীতে মনে করছি যে, আমাদের মোবাইল ফোন একটা বড় ধরণের ভূমিকা রাখতে পারে কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে।
♦ কামাল পারভেজ : সংকেত নিয়ে অনেকের অনেক কথা আছে। আমরা দেখেছি যে, সংস্কার হয়েছে সংকেতগুলো। সেখানে কী কোন ধরণের সমস্যা আছে? যেমন অনেকে অভিযোগ করে যে, আসলে সংকেতটা ঠিক সময়ে মিলে না।
♦ আরিফুর রহমান : আমাদের নির্ধারিত যে সংকেত আছে, সেটি মোটামুটি জনপ্রিয়। সবাই জানে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অন্য জায়গায়। মানুষ যে বুঝবে, এটা জানার জন্য যে কমিউনিকেশন; আপনি জানেন যে, আমাদের এলাকায় অধিকাংশ মানুষ নিজস্ব ভাষায় কথা বলে। কিন্তু আমাদের যে প্রচার মাধ্যম, সেটি রেডিও হোক, মোবাইল হোক, এর মাধ্যমে যে তথ্যগুলো দিচ্ছে, এগুলো কিন্তু প্রমিত বাংলায়। ফলে মানুষ কিন্তু প্রমিত বাংলার এই শব্দ অথবা অর্থ, এগুলো অনেক সময় কিন্তু সঠিকভাবে গ্রহন করতে পারে না। আর প্রতীকের যে কথা বলেছেন; এখন যেটা হচ্ছে যে, যারা ট্রেনিং পেয়েছে, যাদের সচেতনতা আছে; তারা কিন্তু এই প্রতীকের অর্থটা বোঝে। কিন্তু আমাদের উপকূলে এখনও ব্যাপক সংখ্যক মানুষ রয়েছে, যারা এখনও শিক্ষাএবং সচেতনতায় পিছিয়ে আছে। তাদের জন্য কিন্তু এটা একটা বড় সমস্যা।
♦ কামাল পারভেজ : সংকেতটা তাহলে আর কীভাবে সহজ করা যায়?
♦ আরিফুর রহমান : এটার জন্য একটা উদ্যোগ আছে। এটার জন্য সরকারি একটা উদ্যোগ আছে। আপনারা জানেন যে, এটা তো কমন করা হবে। করলে পুরো উপকূলের জন্য এটা করা হবে। এটার জন্য সরকারের অনেক প্রচেষ্টা আছে। আমরা আশা করছি, এই সংকেত এবং তথ্য আদান প্রদানের বিষয়টিকে আরও কীভাবে সহজীকরণ করা যায়; এবং সেখানে যাতে প্রত্যেকটি মানুষ, যারা শিক্ষিত, যারা অল্প শিক্ষিত, অথবা একেবারে যারা নিরক্ষর, সবাই যাতে কমিউনিকেট করতে পারে, তার জন্য হয়তো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
♦ কামাল পারভেজ : আরেকটি বিষয় জানতে চাই, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। তার পাশাপাশি চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। এই দুইয়ের সম্পর্ক এবং উপকূল নিয়ে বিস্তারিত একটু জানতে চাই।
♦ আরিফুর রহমান : আমরা আসলে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে, বিশেষভাবে দুই দশক আন্তর্জাতিকভাবে এবং আমাদের জাতীয় ভিত্তিতে এগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এবং আপনারা জানেন, এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যারা উপকূলবাসী, আমরা কিন্তু দেখছি; প্রতিদিনই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকারক দিক, তার সাথে আমরা পরিচিত হচ্ছি। তারমধ্যে একটা হচ্ছে, আমাদের সাইক্লোন এবং দুর্যোগগুলো। আপনি যদি উপকূলীয় অঞ্চলগুলো দেখেন, আপনি দেখবেন, আমাদের উপকূল কীভাবে ভেঙে যাচ্ছে। আমাদের এই অঞ্চল, আমাদের সন্দ্বীপ, আমাদের কুতুবদিয়া আইল্যান্ড প্রায় অর্থক হয়ে গেছে ভাঙণে। আমাদের এই যে মানুষেরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের সম্পদ হারিয়ে ফেলছে, তারা কোথায় যাচ্ছে? তারা উদ্বাস্ত হয়ে যাচ্ছে। তারা চলে আসছে চট্টগ্রাম শহরে। অনেকে চলে যাচ্ছে কক্সবাজারে, এইসব শহরগুলোতে। সেখানে কিন্তু তারা একজন উদ্বাস্তু হিসাবে বাস করছে। কারণ, তাদের সবকিছুই হারিয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাই যে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টাকে এমনভাবে বোঝানো হয় যে; এটা প্রকৃতিগতভাবেই ঘটছে। আসলে বিষয়টি তা নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরাই কিন্তু সহায়ক হিসাবে কাজ করছি। আপনারা জানেন যে, শিল্পোন্নত দেশগুলো; তাদের কিন্তু অনেক দায় আছে। সেজন্য আমরা যারা ভুক্তভোগী, আমরা মনে করি যে, আজকে যে সাইক্লোন হচ্ছে, এই যে গত কয়েকদিন ধরে যে আবহাওয়া আমরা দেখছি; আমাদের যে অতি বৃষ্টি হচ্ছে। যখন বৃষ্টি হওয়ার কথা না, তখন বৃষ্টি হচ্ছে। এবং আবহাওয়ার যে উষ্ণতা বেড়ে গেছে, যার ফলে ছোট ছোট শিশুদেরসহ বয়স্ক মানুষের রোগ দেখা দিয়েছে; এগুলো সবগুলোই কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের যে নেতিবাচক দিক, তা-ই কিন্তু এগুলো। আমরা যেটা বলতে চাই, আমরা কোন বিতর্কে নাই; আমাদের এই দুর্যোগ এবং আমাদের যে ক্ষয়ক্ষতি, এর দায়িত্ব কিন্তু নিতে হবে যারা এ এই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী; তাদেরকে। সরকার এবং মিডিয়া সকলকে আমরা বলবো, আমরা দুর্যোগকে কেবল একটা মানবিক বিষয় হিসাবে চিন্তা না করে, এটার জন্য যারা দায়ী, তাদেরকে কিন্তু এর দায় নিতে হবে। এবং আমাদের উপকূলবর্তী মানুষের জীবনযাপন যাতে সহায়ক হয়, তার জন্য তাদেরকে অনেকগুলো উদ্যোগ নিতে হবে। তাদেরকে এর ক্ষতিপূরণ দিকে হবে। আমরা মনে করছি, সরকার এবং মিডিয়া সকলে মিলে এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলুন।
♦ কামাল পারভেজ : আমরা এই যে দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্রের কথা বলছি, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা অনেকদিন ধরে কলছেন যে, এইরকম একটা একটা করে আশ্রয়কেন্দ্র না করে যদি উপকূলে যারা বসবাস করে, তাদের জন্য যদি ঘূর্ণিঝড় সহায়ক ঘরবাড়ি তৈরি করা যায়, তাহলে অনেকখানি সহায়ক হয় তাদের জন্য; বিষয়টাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
♦ আরিফুর রহমান : আমাদের যে জনসংখ্যা, সে তূলনায় সােইক্লোন শেলটার করতে গেলে অনেক সম্পদ দরকার। আরেকটি হচ্ছে, সাইক্লোন শেলটারের ব্যবস্থাপনা একটি বড় বিষয়, যেটি আমি প্রথমার্ধে বলেছি; যদি সংস্কার না হয়, তাহলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে আমরা যদি প্রতিটি মানুষকে, যারা উপকূল থেকে আসতে পারবে না; কেননা তার জীবনজীবিকা সেখানে, তার সম্পদ সেখানে; সুতরাং তাকে যদি দুর্যোগ সহনীয় বাসস্থান তৈরির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা যায়। আপনি শুনলে খুশি হবেন, রোয়ানু পরবর্তীতে বাঁশখালীর খানখানাবাদ যে ইউনিয়ন; সবচেয়ে বেশি যেখানে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল, সেখানে আমাদের প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অান্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে কয়েকটি কাজ করেছি। তারমধ্যে একটি হচ্ছে আমরা ৫০টি বাড়ি করেছি; একদম দুর্যাগ সহনীয় বাড়ি। যেগুলো ইউএনডিপি এবং অ্যাকশন-এইড বাংলাদেশ বলে প্রতিষ্ঠান, তারা আমাদেরকে সহায়তা করেছে। তো আমরা এটা দেখছি, বাড়িগুলোর ভবিষ্যত কী হয়। এরকম আরও কিছু কাজ হয়েছে সরকারি-বেসরকারিভাবে। মূল কথা হচ্ছে, আসলে এর কোন বিকল্প নাই। কারণ, ওই মানুষকে ওখানেই থাকতে হবে। ওখানে থেকেই তাকে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে হবে। তাইলে তাকে এমনভাবে বাড়িঘর তৈরি করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে হবে, যাতে সেটা দুর্যোগ সহনীয় হয়।
♦ কামাল পারভেজ : সেটা তো এমনও হতে পারে যে, একটা ঘর করার জন্য ওই মানুষ কিছু অর্থ যোগান দিল, বাকিটা সরকার দিল। এরকমও হয়তো একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
♦ আরিফুর রহমান : অবশ্যই। আমরা যেটা করেছি, সেগুলো অনেকটা এরকম। এগুলো অনেকটা কন্ট্রিব্যুটরি। যে একটা অংশ আমরা সাপোর্ট করেছি, আরেকটা অংশ সে দিয়েছে। এখানে কিন্তু সরকারের একটা বড় ভূমিকা আছে। স্থানীয় সরকারের একটা ভূমিকা আছে। আমরা সঠিক যে উপকারভোগী বাছাই করা; সেখানে যাতে স্বচ্ছতা থাকে, প্রকৃত মানুষটা যাতে বঞ্চিত না হয়, এভাবে অনেকগুলো বিষয় এখানে দেখার আছে। এভাবেই আসলে কাজগুলো ভবিষ্যতে করতে হবে।
♦ কামাল পারভেজ : এক্ষেত্রে আমরা দেখি যে, সরকারি তরফে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, উপকূলের জন্য, ঘূর্ণিঝড়ের পরবর্তী সময়ে। আপনি কী মনে করেন এগুলো কী পর্যাপ্ত?
♦ আরিফুর রহমান : না। এগুলো অবশ্যই পর্যাপ্ত নয়। এবং এগুলো খুবই অপ্রতূল। সরকারি আসলে যে সাহায্যটা বেশি আসে; সেটি হচ্ছে যে ইমিডিয়েট ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কাছে সহায়তাটা পৌঁছানো। বিশেষ করে, খাদ্য সামগ্রী এবং গৃহনির্মাণের জন্য তাকে কিছু সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া। এটা খুবই অপ্রতূল। কারণ হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের যে ব্যাপক ক্ষতি, সেই তূলনায় যে বরাদ্দ, সেটা কিন্তু খুবই কম।
//উপকূল বাংলাদেশ/০১০৫২০১৭// |
adc32593-4124-4fe5-9705-c30c175feef1 | শিক্ষা সুযোগ বঞ্চিত চরফ্যাশনের চরাঞ্চলের শিশুরা
চরফ্যাশন, ভোলা : পড়াশোনার ইচ্ছে থাকলেও তার উপায় নেই, ভোলা চরফ্যাশনের চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের। চরে পর্যাপ্ত মাধ্যমিক স্কুল না থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষেই থমকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া। শিক্ষা সুযোগ বঞ্চিত হয়ে বাল্য বিবাহসহ নানা সামাজিক বিচ্যুতি ও চরভিত্তিক নানা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, চরএলাকায় নতুন মাধ্যমিক স্কুল হলে চরে উন্মোচিত হতে পারে শিক্ষার নতুন দিগন্ত। এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন জনপ্রতিনিধির।
অভিভাবকদের অভিযোগ এখানে যে স্কুল আছে তাতে শিক্ষক না আসায় ঘরের কাজে ব্যস্ত রেখেছেন সন্তানকে। একই কারণে পড়ার সময় স্কুল মাঠে খেলাধুলায় ব্যস্ত বালক/বালিকারা।
চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, চরকুকরি মুকরি, চরহাসিনা, খুড়চিরচর, চরফারুকি, চরমোতাহার, চরলিউলিন, চরনিজাম, চরকচুয়াখালি, সিকদারচর, চরআশ্রফআলম, পাতিলার চরসহ ছোট-বড় ১১ টি চরের একই অবস্থা।
এসব চরে ৬ টি জীর্ণ জুনিয়র হাইস্কুল ও দাখিল মাদ্রাসা থাকলেও শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই থাকে তালাবদ্ধ। চরের ১০টি প্রাথমিক স্কুলে ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়ার সুযোগ পেলেও পিএসসি শেষে মাধ্যমিক স্কুল সংকটে শিক্ষা বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে তারা। পাশাপাশি সন্তানকে শহরে রেখে পড়ানোর সামর্থ্য না থাকায় উচ্চ শিক্ষায় সরকারি সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে চরের কিশোর কিশোরীরা। বাড়ছে মেয়েদের বাল্যবিবাহ আর চরভিত্তিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে ছেলেরা।
চরবাসীরা বলেন, আমরা গরীব মানুষ কতদিন মেয়েকে ঘরে রাখবো । মেয়ে ঘরে থাকলে নানা ঝই জামেলা তাই মেয়ে বিয়ে দিয়ে দেবো।
পশ্চিমঢালচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল হক বলেন , এখানে আমরা কষ্ট করে চাকরি করি। থাকার তেমন ব্যাবস্তা নেই বলেলই চলে। তাই আসার পরেই ট্রান্সফার হয়ে চলে যায় শিক্ষকরা।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, দুর্গম চরাঞ্চলে নতুন প্রয়াসে বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক স্কুল হলে চরের শিক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনের পাশাপাশি নিশ্চিত হবে মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষাও। শিক্ষাবিদ মো: আবুল হাসেম মহাজন বলেন, নতুন করে মাধ্যমিক স্কুল হলে লেখাপড়ার মাধ্যমে তারা সামাজিক অনগ্রসরতা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। এবং চরাঞ্চলেও শিক্ষার আলোর পথ উন্মোচিত হবে। এ ব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
অন্যদিকে এখান কার বেশ কিছ ুচরে ২০ বছরেও বিদ্যালয় স্থাপন না হওয়ায় চরের শিশু শিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত রয়েছে।চরের ছেলেরা গরু চড়িয়ে কিংবা নদীতে মাছ ধরে দিন কাটালেও রান্না-বান্না আর গৃহস্থালির কাজ করে বেড়ে উঠছে মেয়েরা। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে কোমলমতী এসব শিশুদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্য পড়েছে।
সরেজমিন চরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৪০ বছর আগে তেঁতুলিয়ার বুক চিরে জেগে উঠা কচুয়াখালী চর । সেখানে বসতি গড়ে উঠলেও গড়ে উঠেনি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে সেখানকার শিশুরা প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছেনা। ইচ্ছা থাকা সত্তেও অভিভাবক কিংবা কোমলমতী শিশুরা বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখলেও বিদ্যালয়ের অভাবে সে স্বপ্ন থেকে তারা বঞ্চিত।
চরের কৃষক আ কাদের বলেন, বিদ্যালয় না থাকায় তিন মেয়ে ও দুই ছেলেকে পড়ালেখা করাতে পারছিনা। আমাদের এখানে একটি স্কুল হলে শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পেতো।
কৃষক বধূ সকিনা বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা করার ইচ্ছা থাকলেও বিদ্যালয়ের অভাবে সে সুযোগ তারা পাচ্ছেনা। কৃষক বাহাদুর বলেন, চর কচুয়াতে স্কুল নেই, পার্শ্ববর্তী জেলায় ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাই। কিন্তু প্রতিদিন তারা স্কুলে যেতে পারেনা। অনেক দূর, তাও আবার খাল-বিল পাড়ি দিয়ে যেতে হয়।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
তবে উপজেলা শিক্ষা অফিস দেয়া তথ্য মতে, চরে মাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ১৭-১৮ অর্থবছরে চর গুলিতে শিক্ষার সকল সুযোগ সুবিধা সম্মিলিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এই বিষয় কাজ চলছে ।
//প্রতিবেদন/১৩০৫২০১৭// |
d97c19d7-b521-42fd-8e61-3fcb1325b0ce | জাতিসংঘ গ্লোবাল কমপ্যাক্টকে প্রভাবিত করতে জলবায়ুতাড়িত বাস্তুচ্যুতি বিষয়ে সরকার ও নাগরিক সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে
-
- ০০:৫৬
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতীয়-উপকূল, বিশেষ বিভাগ, সর্বশেষ
- ১
ঢাকা, ১৩ মে ২০১৭। আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে জলবায়ু তাড়িত বাস্তুচ্যুতির বিষয়ে সরকার ও নাগরিক সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন বক্তাগণ। সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “জাতিসংঘ গেøাবাল কম্প্যাক্ট এবং জলবায়ু বাস্তচ্যুতি: নাগরিক সমাজের অভিমত” শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলা হয়।
বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্ট এবং ইক্যুইটিবিডি, সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক প্ল্যাটফরম অন ডিজাস্টার ডিসপ্লেসম্যান্ট এবং নরওয়ে ভিত্তিক নরওয়েজিয়িান রিফিউজি কাউন্সিল যৌথভাবে এই সেমিনারটির আয়োজন করে।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ শীর্ষ সম্মেলনে ২০১৮ সালের মধ্যে দুটি গেøাবাল কমপ্যাক্ট তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মত বিনিময় চলছে, তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এই সেমিনারটির আয়োজন করা হলো।
পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ট্রাস্ট এবং ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরী।
এতে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ড. রুস্তম আলী ফরাজী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদুল হক, বাংলাদেশ সেন্টার ফর এডভান্স স্টাডিজের ড. আতিক রহমান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. আব্দুস সাত্তার, পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শারমিন্দ নিলর্মি, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থার ড. নিলোপাল আদরি, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট-এর শামসুদ্দোহা, ব্রিটিশ কাউন্সিলের ক্যাথরিন সিসিল, ডবিøউআরবিইই-এর সৈয়দ সাইফুল ইসলাম এবং ব্র্যাকের শশাঙ্ক শাদি। কোস্ট ট্রাস্টের সৈয়দ আমিনুল হক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থ্াপন করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে সৈয়দ আমিনুল হক আন্তর্জাতিক আইনী ব্যবস্থাসমূহগুলো পুনর্বিবেচনা করে জলবায়ু বাস্তচ্যুতির বিষয়টিকে আইনী কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেন। তিনি বলেন, জলবায়ু বাস্তচ্যুতির বিষয়ে সুস্পষ্ট সংজ্ঞা এবং কর্মপরিকল্পনা থাকতে হবে। জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি বিষয়টিকে উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে এবং আন্তর্জাতিক আলোচনায় এটিকে সোচ্চারভাবে তুলে ধরতে বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন।
নাহিদা সোবহান গেøাবাল কম্প্যাক্ট প্রক্রিয়ায় প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ড. শারমিন্দ নিলর্মি এবং ড. নিলোপাল আদরি বলেন, এই বিষয়ে জ্ঞান বৃদ্ধি এবং প্রমাণ ভিত্তিক তথ্য তুলে ধরার জন্য প্রচুর গবেষণা প্রয়োজন।
ড. আতিক রহমান বলেন, জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি একটি মানব সৃষ্ট সংকট, কারণ ধনী দেশগুলোর অতি কার্বন নিঃসরণের কারণেই এই সংকট তৈরি। তিনি কার্যকর গেøাবাল কমপ্যাক্ট নিশ্চিত করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নাগরিক সমাজকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। ড. আব্দুস সাত্তার বলেন, জলবায়ু বাস্তচ্যুতদেরকে ‘পরিবেশগত উদ্বাস্তু’ হিসেবে অভিহিত করা উচিৎ।
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, গেøাবাল কম্প্যাক্ট প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখতে আগামী দুই বছর সরকার এবং নাগরিক সমাজকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। সাধারণ অভিবাসন থেকে জলবায়ু বাস্তুচ্যুতিকে আলাদা করে দেখা যাবে না। প্রায় ১০৭টি দেশ কর্তৃক গৃহীত নানসিন প্রটেকশান এজেন্ডাকে গেøাবাল কম্প্যাক্টের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে ।
ড. রুস্তম আলী ফরাজী এমপি বলেন, জনগণকে এই সংকট থেকে বাঁচাতে নিজস্ব সামর্থ্য দিয়ে লড়াই করতে হবে। ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, নাগরিক সমাজ, সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, কারণ তারা সবাই মানুষের পক্ষেই কাজ করে যাচ্ছেন এবং জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি দেশের মানুষের জন্য একটি বড় সংকট হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
//প্রতিবেদন/১৩০৫২০১৭// |
c4caa3d5-038e-4f67-8331-8f374ef386da | ওরা সুযোগ চায়, আলোকিত মানুষ হতে চায়!
সুবর্ণচর, নোয়াখালী : পথের ধূলা গায়ে জড়ায়ে অন্যের ঠিকানায় ছাপড়া ঘরের মাটির বিছানায় অন্ধকার মাথায় নিয়ে জন্ম যাদের। বাসস্থান, জীবন জীবিকা, সুশিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বেড়ে ওঠার সার্বিক দিক থেকে বঞ্চিত হয়েই তাদের পথ চলা। একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালে ওরাই গড়ে নিতে পারবে ওদের ভবিষ্যৎ। বেঁচে থাকার ভাল পরিবেশ ও সুযোগ পেলে ওরাও হতে পারে আগামীর আলোকিত মানুষ।
যদি সমাজ, সরকার বা আমাদের দায়িত্ব এদের প্রতি না থাকে তবে সেই অবহেলিত পিছিয়ে পড়া সমাজের মত এরা বরাবরই বঞ্চিত থেকে যাবে। ওদের বিদ্যালয়ে যাওয়া, দিনশেষে আলো জ্বালিয়ে বর্ণ পরিচয়ে, ওদের শিতি, যোগ্য মানুষ হিসেবে গডে ওঠা হবে কিনা- তা আজো অনিশ্চয়তার কালো মেঘে ঢাকা। ওরা বেদে পল্লীর চিরবঞ্চিত অবহেলিত শিশু।
প্রায় প্রত্যেকটি ঘরের সামনে মহিলারা টিনের চুলায় রাতের রান্না বসিয়েছে,কেউ রান্নার আয়োজন করছে। কয়েকজন বসে নানা ধরনের গল্প করছে। পুরুষরা মহিলাদের রান্নার কাজে সহযোগিতা করছে।শিশুরা এদিক সেদিক ছোটাছুটি করছে। আবার কেউ শিশুদের নিয়ে বানরের খেলা ও সাপ খেলার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। নোয়াখালীর সুবর্ণচর এর চরবাটা ইউনিয়নের ভূঁঞার হাট সংলগ্ন সড়কের পাশে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। এখানে একজন সরদার এর নেতৃত্বে পলিথিন দিয়ে তৈরি ১০/১৫টি ছাপড়া ঘর নিয়ে এক সপ্তাহের জন্য আস্তানা গড়ে একটি বেদের দল।
বেদে পল্লীতে দেখা যায়, ছাপড়া ঘরের সামনে বেদে শিশুরা মনের আনন্দে ছোটাছুটি করে খেলছে। গোধুলীর সোনালী আলো ওদের স্নান না করা মলিন বিবর্ণ চেহারাকে সযত্নে ঢেকে দিয়ে যেন পরম আদরে খানিকটা সোনালী করে দিয়েছে, দৃশ্যটা মনে রাখার মত। এ দৃশ্য কোন শিল্পীর চোখে পড়লে হয়তো বা তুলির পরশে একটি মনে মত ছবি বেরিয়ে আসতো। কিন্তু এদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করলে সচেতন যে কোন মানুষেরই হৃদয়কে বিষাদে আচ্ছন্ন করে দেবে। কারণ এদের জীবন অবহেলা ও বঞ্চনায় চাদরে ঢাকা।
সড়কের পাশে, পতিত জমিতে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খোলা মাঠে তীব্র শীতে, মুষলধারে ঝড় বৃষ্টিতে অথবা উড়িয়ে নেওয়া ঝড়ের মুখে মাঠের ময়লাযুক্ত বিছানায় রাত কাটায় বেদে শিশুরা। এদের নিয়ে নির্বিকার সভ্য সমাজের সবাই।
বেদে পল্লীর মেয়ে শিশুটি বড় হয়ে একদিন তার মায়ের মত শালীনতাহীন ভাবে কালোদৃষ্টির রোগ সারানোর মত অদ্ভূত পেশা গ্রহন করবে। সেখানে ভাল উপার্জন না করতে পেরে হয়ত শহরের ভিড়ে কিশোরী মা হয়ে, কোলে নোংরা খাড়ি ওঠা চুলের একটি বাচ্চাকে নিয়ে অশোভনীয় ভিক্ষা পেশা, না হয় নিষিদ্ধ পল্লীর অন্ধকার পথেই হবে তার ঠিকানা। ছেলেরা বড় হয়ে পান খাওয়া দাঁত আর অপরিচ্ছন্ন শরীর নিয়ে ছাপড়া পাহারা দিবে আর সময় সুযোগ মত সাপ ধরা, বানরের খেলা দেখানো, পুকুরে হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণ খোঁজা বা কোন বাজারে পাতা লতার ঔষধ বিক্রির মত প্রতারনামূলক পেশায় নিজেকে ব্যস্ত রাখবে।
বেদে ফারুক এর স্ত্রী জরিনা খাতুন (৩৫) জানালেন, শিঙ্গা দেওয়া, কোমরের ব্যাথা চিকিৎসা ও দাঁতের পোকা সারিয়ে চলে আমাদের জীবনের চাকা। সংসার চালাতে যেখানে আমরা হিমশিম খাচ্ছি , সেখানে শিশুদের জীবনে শিক্ষার আলো জ্বালাবো কীভাবে? তাছাড়া বাড়ি ফেরার কথা যেখানে অজানা সেখানে বিদ্যালয়ের কথা তো ভাবাই যায়না। আমাদের যাযাবর জীবনে শিশুদের শিার কথা ভাবনা তো কালের মহা অভিষাপ।
অপরিচ্ছন্ন পোশাকে ১২ বছরের কিশোরী সুমি ও ১৩ বছরের কিশোর মামুন জানায়, আমাদেরও ইচ্ছে করে বই হাতে বিদ্যালয়ে যেতে, অন্যদের মত শিক্ষিত হতে। কিন্তু আমাদের জন্মই যে আজন্মের পাপ। অশিক্ষিত হয়ে বড় হওয়া আর ঠিকানা বিহীন পথে অন্যের তাড়া খেয়ে বেড়ানো আমাদের মত হাজার হাজার বেদে শিশু কিশোর হারিয়ে যাচ্ছে যাযাবর জীবনের অন্ধকার ছায়া পথে।
বেদে সরদার আব্দুল মান্নান ও শেফালী আক্তার আক্ষেপ করে বলেন, এখন আর সাপ ধরা হয় না গ্রামের মানুষ প্রায় সচেতন। অসচেতন গরীবরা ছাড়া কেউ চিকিৎসা করায় না। আমাদের যাযাবর জীবনের জীবিকা নির্বাহের পৃথিবীটা অনেক ছোট হয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর কথা তো আমরা ভাবতে পারছি না। এমন মানবেতর জীবনের চাকায় পিষ্ট হয়েও আমরা ভিক্ষা চাই না, চায় কাজের বিনিময়ে আমাদের সন্তানদের সামাজিক ভাবে মানুষ করতে।
বেদে মধুমিতা ও চারু বেগম জানায়, আমাদের বেদে দলে ১৫টি পরিবারে ২২জন শিশু রয়েছে। এভাবে সারা দেশে আমাদের বেদে পরিবারে হাজারও শিশু রয়েছে। তারা আক্ষেপ করে বলেন, দেশের সকল শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষার বাধ্যতামূলক হলেও, আমাদের শিশুরা বরাবরের মত বঞ্চিতই রয়ে গেলো। আমাদের শিশুদের আমরা দেশের বোঝা করতে চায় না। জন্মসূত্রে পাওয়া এ পেশা এবং যাযাবর জীবন আমাদের প্রজন্মকে অভিশাপে পরিনত করেছে।
প্রতিবেদকের সামনে জড়ো হওয়া বেদে পল্লীর বেদেনীরা জানান, থেমে না থাকা সময় আমাদের সাথে বড়ই নিষ্ঠুর আচরণ করছে। পেশা হয়েছে অভিশাপ, প্রজন্ম চলছে ঠিকানা বিহীন অজানা অন্ধকার পথে। আজ আর সাপ খেলা আমাদের শিশুদের বিনোদন দেয় না। আমাদের শিশুরা কম্পিউটারে গেম খেলে, ইন্টারনেটে বিশ্ব ভ্রমন করে। তাই সাপের খেলার ব্যবসা আগের মত জনপ্রিয় নেই।
তারা আরও জানান, এদিকে আইনি বাধায় সাপ ধরা দন্ডনীয় অপরাধ। অপরদিকে আমাদের সন্তানের মত এরাও এদশের সন্তান। আমাদের শিশুরা যখন প্রযুক্তির ছোয়ায় শিক্ষিত আগামীর কথা ভাবছে , তখন এই বেদে শিশুরা তাদের মা বাবার অভিশপ্ত যাযাবর জীবনের কারনে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা কি তাদের কথা ভাবছি ? তারা শেওলার মত অন্তহীন পথে ভেসে চলছে দিক দিগন্তে।
নোয়াখালী সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: বেলাল হোসেন জানান, দলিত জনগোষ্ঠী সেবার আওতায় সরকার বেদেদের জন্য সেবামূলক নানা প্রকল্প নিয়েছে। তবে কিছু সেবা আমরা দিচ্ছি। এ অঞ্চলে বেদেদের পরিসংখ্যান জরিপ কাজ হয়েছিল কয়েক বছর আগে। কিন্ত এরা ভাসমান হওয়ায় এদের সঠিক পরিসংখ্যান করা সম্ভব হয়নি। এদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষোর কাছে সুপারিশমালা প্রেরণ করেছি।
//প্রতিবেদন/১৫০৬২০১৭// |
d9984cc2-420c-419d-be66-801453e551ca | ‘সবুজ উপকূল’ বদলে দিচ্ছে উপকূলের পরিবেশ
কমলনগর, লক্ষ্মীপুর : উপকূলের পড়ুয়াদের নিয়ে ব্যতিক্রমীধারার পরিবেশ সচেতনতামূলক কর্মসূচি ‘‘সবুজ উপকূল’’ বদলে দিয়েছে স্কুল ক্যাম্পাস। উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও ফজুমিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ ক্যাম্পাস তারই দৃষ্টান্ত বহন করছে। যেখানে কোন গাছপালাই ছিল না, সেখানে এখন সবুজের সমারোহ। কর্মসূচি উপলক্ষে লাগানো গাছের চারা মাথা তুলছে আকাশের দিকে।
“সবুজ বাঁচাই, সবুজে বাঁচি’’ নিয়ে এই দু’টি প্রতিষ্ঠানেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘‘সবুজ উপকূল’’ কর্মসূচি। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে উপকূল জুড়ে বাস্তবায়িত এই কর্মসূচির আওতায় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দু’টোর সামনে লাগানো হয় বিভিন্ন জাতের গাছের চারা। ২০১৫ সালে কর্মসূচির আওতায় উল্লেখিত দু’টো প্রতিষ্ঠানেই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পরের বছর ২০১৬ সালে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। ফার্স্ট সিকিউরিটিইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রীণ ব্যাংকিং কার্যক্রমের আওতায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান উপকূল বাংলাদেশ।
কর্মসূচির আওতায় ছিল গাছের চারা রোপণ। আরও ছিল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সৃজনশীল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। যারমধ্যে ছিলো, উপকূলের সবুজ বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতা, পত্র লিখন, সংবাদ লিখন, কবিতা লিখন, ছবি আঁকা। এছাড়াও অনুষ্ঠানের অংশহিসেবে ছিলো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা, উপস্থিত বক্তৃতা, কোরআনতেলওয়াত, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের বক্তব্যে উপকূলের সবুজ সুরক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনুষ্ঠানের পর দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে লাগানো হয় সবুজের চারা। সবুজ উপকূলের ছোঁয়ায় পড়ুয়ারা এখন নিজেরাই উপকূলের সবুজ সুরক্ষায় সচেতন। নিজেদের বিদ্যালয়ে লাগানো গাছগুলো নিজেরাই পরিচর্যা করে টিকিয়ে রেখেছে। সবুজ গাছগুলো এখন বিদ্যালয় আঙ্গিনাকে সবুজ করে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন নিজেরাই উপকূলের সবুজ সুরক্ষায় সচেতন। নিজের টিফিনের টাকা খরচ না করে গাছ কিনে বাড়ির আঙ্গিনায় লাগায়, সবুজকে ভালোবাসে, সবুজের সুরক্ষা করে।
কমলনগরের দু’টি শিক্ষাঙ্গনের ক্যাম্পাস পরিদর্শন করলে নজরে পড়ে “সবুজ উপকূল” কর্মসূচির ছোঁয়ায় লাগানো গাছগুলোর এক একটি এখন মানুষের মাথার উপরে উঠে গেছে। একটু গরমে এই গাছগুলোর ছায়াতলে আশ্রয় নেয় মানুষজন। যার প্রমাণ তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়। এলাকার শিক্ষার্থী ও খেলোয়াড় স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলে। কয়েকটি গাছ অনেক বড় হয়ে গেছে। নিচে জন্মেছে ঘাস। ফলে গাছের নিচে বসতে অসুবিধা নেই। এই কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, থানার একজন এসআই ও প্রাক্তন পড়ুয়ারাও কর্মসূচির পর গাছ লাগিয়েছে। এখনক্যাম্পাসের সৌন্দর্য্য নজর কাড়ানো।
একই চিত্র ফজু মিয়ারহাট উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে। বেড়িবাঁধ ঘেঁষে গেছে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ। এর সঙ্গেই “সবুজউপকূল” এর ছোঁয়ায় লাগানো গাছ। গাছগুলো এখন আকাশে উঁকি দিচ্ছে, ক্যাম্পাসকে মুগ্ধ করেছে।
কর্মসূচির ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ রতন এ সম্পর্কে অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক “সবুজ উপকূল” অনুষ্ঠানটিতে আমি অতিথি হিসেবে অংশ নিয়েছি। অনুষ্ঠানের কার্যক্রমগুলোতে আমি মুগ্ধ। এধরণের উপকূলের সব জায়গায় ব্যাপক বিস্তৃতির মধ্যে করা দরকার। এতে করে মানুষ সচেতন হবে, দুর্যোগের কড়াল গ্রাস থেকে নিরাপদ থাকবে উপকূল।
বাংলাদেশের পথিকৃত উপকূল সাংবাদিক এবং উপকূল অঞ্চলে ‘‘উপকূল বন্ধু’’ হিসাবে পরিচিত রফিকুলইসলাম মন্টু’র হাত ধরে উপকূল জুড়ে চলছে ‘‘সবুজ উপকূল’’ নামের কর্মসূচি। যার পৃষ্ঠপোষক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন রফিকুল ইসলাম মন্টু।
খবরের খোঁজে উপকূলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়ুয়াদের নিয়ে দেয়াল পত্রিকা “বেলাভূমি” প্রকাশ করে আসছেন রফিকুল ইসলাম মন্টু। এতে পড়ুয়াদের সৃজনশীল মেধার বিকাশ ঘটছে। আলোকিত জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছে তারা। যা উপকূলকে এগিয়ে নিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। বিষয়টি নজরে আসে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় “সবুজ উপকূল’’ কর্মসূচি। ২০১৫ সালে উপকূলের ১৫টি স্থানে এবং ২০১৬ সালে ২৬টি স্থানে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সবুজ উপকূল কর্মসূচিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী রফিকুল ইসলাম মন্টু বলেন, দুর্যোগের আঘাতে উপকূলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। উপকূলের সবুজ সম্পর্কে পড়ুয়ারা মোটেও সচেতন নয়। ওদের সচেতন করতে পারলে উপকূলে বাঁচবে, সবুজ বাঁচবে। দুর্যোগের কবল থেকে মানুষ বাঁচবে। আশারাখি, “সবুজ উপকূল” কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। এর মাধ্যমে উপকূলের মানুষের জীবন অনেকটাই নিরাপদ হবে।
//প্রতিবেদন/১৯০৬২০১৭// |
1082ddfe-9810-4e6a-aadb-e9297db0e533 | উৎসবমূখর পরিবেশে খুলনার পাইকগাছায় ‘সবুজ উপকূল’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
-
- ০১:৪৬
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, খুলনা জেলা, পশ্চিম-উপকূল, সবুজ উপকূল, সবুজ উপকূল ২০১৭, সর্বশেষ
- ২
পাইকগাছা, খুলনা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭: উৎসবমূখর পরিবেশে খুলনার প্রান্তিক জনপদ পাইকগাছার গদাইপুরে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সবুজ উপকূল ২০১৭’ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে উপকূলের পড়ুয়াদের প্রতি সবুজ সুরক্ষার আহবান জানান বিশিষ্টজনেরা।
কর্মসূচির আওতায় ছিল রচনা লিখন, পত্র লিখন, ছবি আঁকা ও সংবাদ লিখন প্রতিযোগিতা। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ‘এসো সবুজের আহ্বানে, গড়ি সবুজ উপক‚ল’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং গাছের চারা রোপণ করা হয়। কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া পরিবেশ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। বিদ্যালয়ে প্রকাশিত হয় দেয়াল পত্রিকা ‘বেলাভূমি’র বিশেষ সংখ্যা।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে উপকূল বিষয়ক সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান ‘উপকূল বাংলাদেশ’। উপকূলের পড়–য়াদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো, সৃজনশীল মেধার বিকাশ, লেখালেখি চর্চার মাধ্যমে তথ্যে প্রবেশাধিকারসহ জীবন দক্ষতা বাড়ানো এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট স. ম. বাবর আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানারা খাতুন, পাইকগাছা কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মিহির বরণ মন্ডল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন, পাইকগাছার ডি-সার্কেলের সিনিয়র এএসপি মো. ইব্রাহিম, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম হাবিব, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক খুলনা শাখার ব্যবস্থাপক এইচ এম সাকিল আহমেদ, কপিলমুনি শাখার ব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) অঞ্জলি রানী শীল।
আলোচনা সভায় বক্তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, উপকূল সুরক্ষায় আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। উপকূল অঞ্চল বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস এ অঞ্চলে প্রতি বছর হানা দেয়। এইসব কারণে আজকের পড়ূয়ারা ঝুঁকির মুখে আছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে নানান সমস্যা। এইসব সমস্যা মোকাবেলায় আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু গাছ লাগানো নয়, এর পাশাপাশি চারপাশের পরিবেশ রক্ষায় সজাগ হতে হবে। পরিবেশ ও ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। লেখালেখির মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীরা অনেক তথ্য আহরণের পাশাপাশি সচেতন হয়ে উঠতে পারে।
অনুষ্ঠান সূচনা ও উপস্থাপনায় ছিল আয়োজক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন ও সঙ্গীতা রানী। সূচনা বক্তব্য তুলে ধরেন সবুজ উপকূল কর্মসূচির স্থানীয় সংগঠক ও প্রেসক্লাব পাইকগাছার সভাপতি প্রকাশ ঘোষ বিধান। কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ও উপকূলের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন, সবুজ উপকূল ২০১৭ কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান ‘উপকূল বাংলাদেশ’-এর পরিচালক রফিকুল ইসলাম মন্টু। এরআগে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরে বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ময়ূরী ঘোষ ও তূর্ণা সরকার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সবুজ উপকূল ২০১৭ কর্মসূচির ব্যানার নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। অনুষ্ঠানে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ দলের পক্ষ থেকে পরিবেশ প্রতিবেদন উপস্থাপন করে দশম শ্রেণীর সুরাইয়া আক্তার রীনা। এই পর্যবেক্ষণ দলটি পাইকগাছার বোয়ালিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) বীজ উৎপাদন খামার পরিদর্শন করে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে। এ প্রতিবেদনের পুরস্কার অর্জন করে সুরাইয়া ইয়াসমিন ও সুরাইয়া আক্তার রীনা।
অনুষ্ঠানে ৪টি বিষয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। ৯ম-১০ম শেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত রচনা লিখ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে শহীদ জিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের ফারজানা আক্তার, দ্বিতীয় হয়েছে আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাসরিন সুলতানা উর্মি, তৃতীয় হয়েছে শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তুলি বিশ্বাস।
ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত পত্র লিখন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের রাসমনি সাধু, দ্বিতীয় হয়েছে একই বিদ্যালয়ের নাজিয়া ফেরদৌস, তৃতীয় হয়েছে আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জান্নাতুল ফেরদৌস। একই শ্রেণীর মধ্যে অনুষ্ঠিত ছবিআঁকা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রাসমনি সাধু, দ্বিতীয় হয়েছে একই বিদ্যালয়ের হাসনা থাকুন সুমাইয়া, তৃতীয় হয়েছে আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের রাইসুল ইসলাম।
ষষ্ঠ-দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংবাদ লিখন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মরিয়াম আক্তার লিয়া, দ্বিতীয় হয়েছে আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তাজিয়া স্বর্না, তৃতীয় হয়েছে শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তূর্ণা সরকার।
গাছের চারা বিতরণ ও রোপণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম অংশ শেষ হয়। দ্বিতীয় অংশ ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে আয়োজক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে।
কর্মসূচিতে সহ-আয়োজক হিসাবে থাকছে উপকূলের স্কুল পড়ুয়াদের সংগঠণ আলোকযাত্রা দল, আইটি পার্টনার হিসাবে থাকছে ডটসিলিকন, মিডিয়া পার্টনার হিসাবে থাকছে এটিএন বাংলা ও দৈনিক সমকাল।
এবার উপকূলের ১৪টি জেলার ১৯টি উপজেলার ২০টি স্থানে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। পাইকগাছায় তৃতীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলো। এরআগে এবার সাতক্ষীরার শ্যানগরের মুন্সীগঞ্জ ও গাবুরায় পৃথক দু’টি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এবার সমগ্র উপকূলে ২০টি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব কর্মসূচিতে ১০০ স্কুলের প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এ নিয়ে তিন বছরে উপকূলের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপকূল কর্মসূচির আওতায় আসছে। স্কুল শিক্ষার্থীরা পেয়েছে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা, যা তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সাল থেকে সবুজ উপকূল কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৫ সালে ১০টি জেলার ১৩টি উপজেলার ৪০টি স্কুলের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়। পরের বছর ২০১৬ সালে ১৪টি জেলার ২৫টি উপজেলার ১১৬টি স্কুলের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে তিন বছরে উপকূলের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপকূল কর্মসূচির আওতায় আসবে।
//প্রতিবেদন/১৪০৯২০১৭// |
28d2a41e-2fcd-4613-a126-2c11ecdfc6d7 | বাগেরহাটে উৎসবমূখর পরিবেশে ‘সবুজ উপকূল’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
-
- ২৩:২৮
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, পশ্চিম-উপকূল, বাগেরহাট জেলা, সবুজ উপকূল, সবুজ উপকূল ২০১৭, সর্বশেষ
- ২
বাগেরহাট, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭: উপকূলের পড়ুয়াদের সবুজ সুরক্ষার আহবানের মধ্যদিয়ে পশ্চিম উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট সদরের বৈটপুরে উদ্দীপন বদর-সামছু বিদ্যানিকেতনে ‘সবুজ উপকূল ২০১৭’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচির আওতায় ছিল রচনা লিখন, পত্র লিখন, ছবি আঁকা ও সংবাদ লিখন প্রতিযোগিতা। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ‘এসো সবুজের আহবানে, গড়ি সবুজ উপকূল’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং গাছের চারা রোপণ করা হয়। কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া পরিবেশ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। বিদ্যালয়ে প্রকাশিত হয় দেয়াল পত্রিকা ‘বেলাভূমি’র বিশেষ সংখ্যা।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে উপকূল বিষয়ক সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান ‘উপকূল বাংলাদেশ’। উপকূলের পড়ুয়াদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো, সৃজনশীল মেধার বিকাশ, লেখালেখি চর্চার মাধ্যমে তথ্যে প্রবেশাধিকারসহ জীবন দক্ষতা বাড়ানো এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য। ব্যতিক্রমধর্মী পরিবেশ সচেতনতামূলক এ কর্মসূচি এবার তৃতীয় বছরে পা রাখলো।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট মো. মমিনুর রশিদ। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি মোহাম্মদ শফিক। বিশেষ অতিথি হিসাবে আলোচনায় অংশ নেন খানজাহান আলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ খোন্দকার আছিফউদ্দিন রাখী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক বাগেরহাট শাখার ব্যবস্থাপক শেখ নিয়াজ হাসান ও বেলায়েত হোসেন ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মো. শিবলী হাওলাদার।
আলোচনা সভায় বক্তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু পাঠ্য বইয়ের পড়া মুখস্ত করে পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করলেই চলবে না। এর পাশাপাশি চারপাশের জগত সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। উপকূলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ভালো ফলাফলের সঙ্গে সাধারণ জ্ঞানের সংমিশ্রনই পারে মানুষের মত মানুুষ করে তুলতে। তোমাদেরকে ভালো মানুষ হয়ে প্রদীপের মত আলো জ্বালাতে হবে, যাতে তোমার আলোতে আরও অনেকজন আলোকিত হতে পারে।
অনুষ্ঠান সূচনা ও উপস্থাপনায় ছিল আয়োজক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর হেলাল মল্লিক ও নবম শ্রেণীর মারিয়া জামান মুন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সামছউদ্দীন নাহার ট্রাস্টের সমন্বয়কারী সুব্রত কুমার মুখার্জী। কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ও উপকূলের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন, সবুজ উপকূল ২০১৭ কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান উপকূল বাংলাদেশ-এর পরিচালক রফিকুল ইসলাম মন্টু। অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরে কে বি ফতেহপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাসরিন আক্তার ও মনিম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. রাশেদুল ইসলাম মিতুল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিভিন্ন সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তিনি বিদ্যালয় প্রধানের কাছে গাছের চারা হস্তান্তর করেন। সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা ঘটে।
কর্মসূচিতে সহ-আয়োজক হিসাবে রয়েছে উপকূলের স্কুল পড়ুয়াদের সংগঠণ আলোকযাত্রা দল, আইটি পার্টনার হিসাবে থাকছে ডটসিলিকন, মিডিয়া পার্টনার হিসাবে থাকছে এটিএন বাংলা ও দৈনিক সমকাল।
সবুজ উপকূল ২০১৭-এর চতুর্থ কর্মসূচি বাগেরহাটে অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে খুলনার পাইকগাছা, সাতক্ষীরার গাবুরা ও মুন্সীগঞ্জে পৃথক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এবার উপকূলের ১৪টি জেলার ১৯টি উপজেলার ২০টি স্থানে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। কর্মসূচিতে ১০০ স্কুলের প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এ নিয়ে তিন বছরে উপকূলের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপকূল কর্মসূচির আওতায় আসছে। স্কুল শিক্ষার্থীরা পেয়েছে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা, যা তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগছে।
এবার সাতক্ষীরার শ্যানগরের মুন্সীগঞ্জ, গাবুরা, খুলনার পাইকগাছা, বাগেরহাটের সদর ও শরণখোলা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া, বরগুনার তালতলী, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ও চরমোন্তাজ, ভোলার চরফ্যাসন ও তজুমদ্দিন, চাঁদপুরের হাইমচর, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়া, ফেনীর সোনাগাজী, চট্টগ্রামের স›দ্বীপ এবং কক্সবাজারের টেকনাফ ও মহেশখালীতে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০১৫ সাল থেকে সবুজ উপকূল কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৫ সালে ১০টি জেলার ১৩টি উপজেলার ৪০টি স্কুলের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়। পরের বছর ২০১৬ সালে ১৪টি জেলার ২৫টি উপজেলার ১১৬টি স্কুলের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে তিন বছরে উপকূলের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপকূল কর্মসূচির আওতায় আসবে।
//প্রতিবদন/১৭০৯২০১৭// |
c3979d94-b7b5-44e3-bcc6-3f1e431bc839 | লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে উৎসবমূখর পরিবেশে ‘সবুজ উপকূল’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
-
- ১৬:২৯
- আলোকযাত্রা, উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, পূর্ব-উপকূল, লক্ষীপুর জেলা, সবুজ উপকূল, সবুজ উপকূল ২০১৭, সর্বশেষ
- ২
কমলনগর, লক্ষ্মীপুর, ৮ অক্টোবর ২০১৭: উপকূলের পড়ুয়াদের সবুজ সুরক্ষার আহবানের মধ্যদিয়ে ৮ অক্টোবর পূর্ব-উপকূলীয় জেলা ল²ীপুরের কমলনগর উপজেলার ফলকন উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘সবুজ উপকূল ২০১৭’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচির আওতায় ছিল রচনা লিখন, পত্র লিখন, ছবি আঁকা ও সংবাদ লিখন প্রতিযোগিতা। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ‘এসো সবুজের আহ্বানে, গড়ি সবুজ উপকূল’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং গাছের চারা রোপণ করা হয়। কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের একদল পড়–য়া পরিবেশ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। বিদ্যালয়ে প্রকাশিত হয় দেয়াল পত্রিকা ‘বেলাভূমি’র বিশেষ সংখ্যা।
উপকূলের পড়–য়াদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো, সৃজনশীল মেধার বিকাশ, লেখালেখি চর্চার মাধ্যমে তথ্যে প্রবেশাধিকারসহ জীবন দক্ষতা বাড়ানো এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য। ব্যতিক্রমধর্মী পরিবেশ সচেতনতামূলক এ কর্মসূচি এবার তৃতীয় বছরে পা রাখলো। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে উপকূল বিষয়ক সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান ‘উপকূল বাংলাদেশ’।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন হাজীরহাট হামিদিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জায়েদ হোসাইন ফারুকী। সভায় সভাপতিত্ব করেন ভেন্যু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু জাকের।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আলতাফ হোসেন, ইসলামী ব্যাংক হাজীরহাট শাখার ব্যবস্থাপক মনছুরুল আলম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ইকবাল হোসেন, হাজীরহাট মিল্লাত একাডেমীর প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেন, ল²ীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে হলে শুধু পাঠ্য বইয়ের পড়া মুখস্ত করে পরিক্ষায় ভালো করলেই হবে না। জীবন দক্ষতা গড়ে তুলতে চারপাশের জগত সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। উপকূলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ভালো ফলাফলের সঙ্গে সাধারণ জ্ঞানের সংমিশ্রনই পারে মানুষের মত মানুুষ করে তুলতে। তোমাদেরকে ভালো মানুষ হয়ে প্রদীপের মত আলো জ¦ালাতে হবে, যাতে তোমার আলোতে আরও অনেকজন আলোকিত হতে পারে।
সূচনা পর্বে বক্তব্য দেন কর্মসূচির স্থানীয় সমন্বয়কারী ও কমলনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান ও ল²ীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র খুদে সংবাদকর্মী জুনাইদ আল হাবিব। কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ও উপকূলের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন সবুজ উপকূল ২০১৭ কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান উপকূল বাংলাদেশ-এর পরিচালক রফিকুল ইসলাম মন্টু। অনুষ্ঠান সূচনা ও উপস্থাপনায় ছিল আয়োজক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মো. পারভেজ হোসেন ও অস্টম শ্রেণীর সামিয়া নাজনীন প্রীতি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরে ফলকন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. মিরাজ হোসেন এবং পরিবেশ পর্যবেক্ষণ দলের পক্ষ থেকে লুধুয়া এলাকার ভাঙণের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে তোয়াহা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর নুসরাত জেবিন জেসিয়া।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিভিন্ন সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। সকালে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে কর্মসূচির সূচনা ঘটে।
কর্মসূচিতে সহ-আয়োজক হিসাবে থাকছে উপক‚লের স্কুল পড়–য়াদের সংগঠণ আলোকযাত্রা দল, আইটি পার্টনার হিসাবে থাকছে ডটসিলিকন, মিডিয়া পার্টনার হিসাবে থাকছে এটিএন বাংলা ও দৈনিক সমকাল।
সবুজ উপক‚ল ২০১৭-এর দশম কর্মসূচি ফলকন উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো। এবার উপক‚লের ১৪টি জেলার ১৯টি উপজেলার ২০টি স্থানে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। কর্মসূচিতে ১০০ স্কুলের প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এ নিয়ে তিন বছরে উপক‚লের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপক‚ল কর্মসূচির আওতায় আসছে। স্কুল শিক্ষার্থীরা পেয়েছে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা, যা তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগছে।
এবার সাতক্ষীরার শ্যানগরের মুন্সীগঞ্জ, গাবুরা, খুলনার পাইকগাছা, বাগেরহাটের সদর ও শরণখোলা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া, বরগুনার তালতলী, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ও চরমোন্তাজ, ভোলার চরফ্যাসন ও তজুমদ্দিন, চাঁদপুরের হাইমচর, ল²ীপুরের কমলনগর, নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়া, ফেনীর সোনাগাজী, চট্টগ্রামের স›দ্বীপ এবং কক্সবাজারের টেকনাফ ও মহেশখালীতে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০১৫ সাল থেকে সবুজ উপক‚ল কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৫ সালে ১০টি জেলার ১৩টি উপজেলার ৪০টি স্কুলের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়। পরের বছর ২০১৬ সালে ১৪টি জেলার ২৫টি উপজেলার ১১৬টি স্কুলের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে তিন বছরে উপক‚লের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপক‚ল কর্মসূচির আওতায় আসবে। |
77c0e6ad-dd0f-45a4-a434-529fc9a67f86 | ফেনীর সোনাগাজীতে উৎসবমূখর পরিবেশে ‘সবুজ উপকূল’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
-
- ০০:৩৫
- আলোকযাত্রা, উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, পূর্ব-উপকূল, ফেনী জেলা, সবুজ উপকূল, সবুজ উপকূল ২০১৭, সর্বশেষ
- ৪
সোনাগাজী, ফেনী, ১০ অক্টোবর ২০১৭: উৎসবমূখর পরিবেশে ফেনীর উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর সোনাপুরে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সবুজ উপকূল ২০১৭’ কর্মসূচি। ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার সোনাপুর হাজী এম এস হক উচ্চ বিদ্যালয়ে সবুজ উপকূল অনুষ্ঠানে উপকূলের পড়ুয়াদের প্রতি সবুজ সুরক্ষার আহবান জানান সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমানসহ বিশিষ্টজনেরা।
উপকূলের পড়ুয়াদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো, সৃজনশীল মেধার বিকাশ, লেখালেখি চর্চার মাধ্যমে তথ্যে প্রবেশাধিকারসহ জীবন দক্ষতা বাড়ানো এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে উপকূল বিষয়ক সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান ‘উপকূল বাংলাদেশ’।
কর্মসূচির আওতায় ছিল রচনা লিখন, পত্র লিখন, ছবি আঁকা ও সংবাদ লিখন প্রতিযোগিতা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের একদল পড়–য়া পরিবেশ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। বিদ্যালয়ে প্রকাশিত হয় দেয়াল পত্রিকা ‘বেলাভূমি’র বিশেষ সংখ্যা। কর্মসূচির আওতায় বিদ্যালয়ের আশাপাশে গাছের চারা রোপণ করা হয়। সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা ঘটে।
‘এসো সবুজের আহŸানে, গড়ি সবুজ উপক‚ল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, উপকূল সুরক্ষায় আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। উপকূল অঞ্চল বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার। ঝড়-জলোচ্ছ¡াস এ অঞ্চলে প্রতি বছর হানা দেয়। এইসব কারণে আজকের পড়–য়ারা ঝুঁকির মুখে আছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে নানান সমস্যা। এইসব সমস্যা মোকাবেলায় আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু গাছ লাগানো নয়, এর পাশাপাশি চারপাশের পরিবেশ রক্ষায় সজাগ হতে হবে। পরিবেশ ও ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। লেখালেখির মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীরা অনেক তথ্য আহরণের পাশাপাশি সচেতন হয়ে উঠতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন সোনাপুর হাজী এম এস হক উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ ইসমাইল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বক্তারমুন্সি শেখ শহীদুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোমমিনুল হক, আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক বক্তারমুন্সি শাখার ব্যবস্থাপক মো. শাহাব উদ্দিন, ব্যাংকের অফিসার মো. আবদুল হাই, সোনাগাজী উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নাজনীন সুলতানা, ফেনী প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আনোয়ার সোহেল প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ভেন্যু বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক। সূচনা বক্তব্য দেন সবুজ উপক‚ল ২০১৭-এর স্থানীয় সংগঠক ও আলোকিত সোনাগাজী’র সম্পাদক শেখ আব্দুল হান্নান। কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ও উপকূলের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন সবুজ উপকূল ২০১৭ কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান ‘উপকূল বাংলাদেশ’-এর পরিচালক উপক‚ল-সন্ধানী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সবুজ উপক‚ল ২০১৭ কর্মসূচির ব্যানার নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। গাছের চারা বিতরণ ও রোপণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম অংশ শেষ হয়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিল ভেন্যু বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মেহেরীন সুলতানা নিহা ও অস্টম শ্রেণীর নুসরাত জাহান তিশা।
কর্মসূচিতে সহ-আয়োজক হিসাবে থাকছে উপক‚লের স্কুল পড়–য়াদের সংগঠণ আলোকযাত্রা দল, আইটি পার্টনার হিসাবে থাকছে ডটসিলিকন, মিডিয়া পার্টনার হিসাবে থাকছে এটিএন বাংলা ও দৈনিক সমকাল।
এবার উপক‚লের ১৪টি জেলার ১৯টি উপজেলার ২০টি স্থানে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। পাইকগাছায় তৃতীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলো। এরআগে এবার সাতক্ষীরার শ্যানগরের মুন্সীগঞ্জ ও গাবুরায় পৃথক দু’টি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এবার
এবার সমগ্র উপক‚লে ২০টি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব কর্মসূচিতে ১০০ স্কুলের প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এ নিয়ে তিন বছরে উপক‚লের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপক‚ল কর্মসূচির আওতায় আসছে। স্কুল শিক্ষার্থীরা পেয়েছে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা, যা তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সাল থেকে সবুজ উপক‚ল কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৫ সালে ১০টি জেলার ১৩টি উপজেলার ৪০টি স্কুলের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়। পরের বছর ২০১৬ সালে ১৪টি জেলার ২৫টি উপজেলার ১১৬টি স্কুলের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে তিন বছরে উপক‚লের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপক‚ল কর্মসূচির আওতায় আসবে। |
38c04edc-63eb-4dbf-a7f3-174981a61133 | শরণখোলার ধানসাগরে উৎসবমূখর পরিবেশে ‘সবুজ উপকূল’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
শরণখোলা, বাগেরহাট, ১২ অক্টোবর ২০১৭: উৎসবমূখর পরিবেশে বর্ণিল আয়োজনে পশ্চিম-উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগরে ‘সবুজ উপকূল ২০১৭’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) ধানসাগর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপকূলের পড়–য়াদের প্রতি সবুজ সুরক্ষার আহবান জানান বিশিষ্টজনেরা।
কর্মসূচির আওতায় ছিল রচনা লিখন, পত্র লিখন, ছবি আঁকা ও সংবাদ লিখন প্রতিযোগিতা। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ‘এসো সবুজের আহবানে, গড়ি সবুজ উপকূল’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং গাছের চারা রোপণ করা হয়। কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া পরিবেশ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। বিদ্যালয়ে প্রকাশিত হয় দেয়াল পত্রিকা ‘বেলাভূমি’র বিশেষ সংখ্যা।
উপকূলের পড়–য়াদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো, সৃজনশীল মেধার বিকাশ, লেখালেখি চর্চার মাধ্যমে তথ্যে প্রবেশাধিকারসহ জীবন দক্ষতা বাড়ানো এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য। ব্যতিক্রমধর্মী পরিবেশ সচেতনতামূলক এ কর্মসূচি এবার তৃতীয় বছরে পা রাখলো। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে উপকূল বিষয়ক সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান ‘উপকূল বাংলাদেশ’।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুল হোসেন টিপু। বিশেষ অতিথি ছিলেন শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল জলিল, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক মোড়েলগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক এ কে রশীদ উদ্দিন, শরণখোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইসমাইল হোসেন লিটন, ধানসাগর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ফরহাদ হোসেন ফরাজী, ধানসাগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য তপু বিশ^াস, ধানসাগর রাধাল²ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নির্মল কুমার, মাতৃভাষা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক সহ-শিক্ষক মাহফুজুর রহমান আশরাফী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভেন্যু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় বক্তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু পাঠ্য বইয়ের পড়া মুখস্ত করে পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করলেই চলবে না। এর পাশাপাশি চারপাশের জগত সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। উপকূলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ভালো ফলাফলের সঙ্গে সাধারণ জ্ঞানের সংমিশ্রনই পারে মানুষের মত মানুুষ করে তুলতে। তোমাদেরকে ভালো মানুষ হয়ে প্রদীপের মত আলো জ¦ালাতে হবে, যাতে তোমার আলোতে আরও অনেকজন আলোকিত হতে পারে।
সূচনা বক্তব্য দেন ধানসাগর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আল আমীন। আয়োজন নিয়ে বক্তব্য দেন সবুজ উপক‚ল ২০১৭ কর্মসূচির স্থানীয় সংগঠক ও শরণখোলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আলী। কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ও উপকূলের সার্বিক অবস্থা নিয়ে কথা বলেন সবুজ উপকূল ২০১৭ কর্মসূচির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ও আয়োজক প্রতিষ্ঠান উপকূল বাংলাদেশ-এর পরিচালক রফিকুল ইসলাম মন্টু।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরে ধানসাগর ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান ও নাঈমা সুলতানা। অনুষ্ঠান সূচনা ও উপস্থাপনায় ছিল ভেন্যু বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মারিয়া আক্তার ও সিরাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ পর্যবেক্ষণ দলের পক্ষ থেকে পরিবেশ প্রতিবেদন উপস্থাপন করে নবম শ্রেণীর ইকরা আক্তার। এই পর্যবেক্ষণ দলটি সুন্দরবন লাগোয়া দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিভিন্ন সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। শেষে বিদ্যালয় অঙ্গণে একটি গাছের চারা রোপণের মধ্যদিয়ে সবুজায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা ঘটে।
কর্মসূচিতে সহ-আয়োজক হিসাবে থাকছে উপক‚লের স্কুল পড়–য়াদের সংগঠণ আলোকযাত্রা দল, আইটি পার্টনার হিসাবে থাকছে ডটসিলিকন, মিডিয়া পার্টনার হিসাবে থাকছে এটিএন বাংলা ও দৈনিক সমকাল।
এবার উপক‚লের ১৪টি জেলার ১৯টি উপজেলার ২০টি স্থানে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। কর্মসূচিতে ১০০ স্কুলের প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এ নিয়ে তিন বছরে উপক‚লের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপক‚ল কর্মসূচির আওতায় আসছে। স্কুল শিক্ষার্থীরা পেয়েছে পরিবেশ সচেতনতার বার্তা, যা তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগছে।
এবার সাতক্ষীরার শ্যানগরের মুন্সীগঞ্জ, গাবুরা, খুলনার পাইকগাছা, বাগেরহাটের সদর ও শরণখোলা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া, বরগুনার তালতলী, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ও চরমোন্তাজ, ভোলার চরফ্যাসন ও তজুমদ্দিন, চাঁদপুরের হাইমচর, ল²ীপুরের কমলনগর, নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়া, ফেনীর সোনাগাজী, চট্টগ্রামের স›দ্বীপ এবং কক্সবাজারের টেকনাফ ও মহেশখালীতে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০১৫ সাল থেকে সবুজ উপক‚ল কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৫ সালে ১০টি জেলার ১৩টি উপজেলার ৪০টি স্কুলের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়। পরের বছর ২০১৬ সালে ১৪টি জেলার ২৫টি উপজেলার ১১৬টি স্কুলের প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে এ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। এবারের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে তিন বছরে উপক‚লের ২৫৬টি স্কুলে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সবুজ উপক‚ল কর্মসূচির আওতায় আসবে। |
aab538fe-9b7c-4985-910f-90858c75ec27 | ‘সবুজ উপকূল’-এর পথে হাঁটছে অসংখ্য সবুজযোদ্ধা
-
- ০২:২৭
- আলোকযাত্রা, উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, জাতীয়-উপকূল, সবুজ উপকূল, সবুজ উপকূল ২০১৭, সর্বশেষ
- ১
জলবায়ু পরিবর্তনে ক্রমাগত হুমকির মুখে উপকূল। পরিবেশ দূষণ বেড়েছে। কমছে সবুজের সংখ্যাও। দুর্যোগের ধাক্কায় এখনোও প্রাণ কেড়ে নেয়। তবুও সচেতন নয় মানুষ। ফলে এখানকার জীবন-জীবিকায় বিরূপ আঘাত ক্রমেই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে চাই সবুজ সচেতনতা। আন্দোলন চাই সবুজের জন্য। এমনি একটি কর্মসূচির নাম “সবুজ উপকূল”। গ্রীণ ব্যাংকিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে যার পৃষ্ঠপোষক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। ২০১৫ সাল থেকে টানা ৩ বছর কর্মসূচিটি চলছে।
পূর্বে টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ থেকে পশ্চিমে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কালিঞ্চি গ্রাম। এই ৭১০কিলোমিটার তটরেখা জুড়ে বিস্তৃত পরিসরে মাঠ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছিলো। ইতিমধ্যে টানা ৩ বছর সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম। বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকায়। যেখানে দেশের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। মাঠ কর্মসূচির আওতায় ছিলো র্যালী, আলোচনা সভা, সবুজ বিষয়ক সৃজনশীল প্রতিযোগিতা, দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ, বক্তব্য, উপস্থাপনা, গাছের চারা লাগানো। পড়ুয়ারা নিজেরাই অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, নিজেরাই অসাধারণ বক্তা।
সবুজ উপকূল অনুষ্ঠানগুলোতে বিশিষ্টজনদের মুখ থেকে পড়ুয়ারা শুনেছে, সবুজ কেন দরকার? কেনই বা সবুজের সুরক্ষা জরুরী? কিংবা এই সবুজ সুরক্ষায় তাদের ভূমিকা কী হতে পারে? এভাবেই পড়ুয়ারা উপকূলের সবুজ সম্পর্কে সজাগ হচ্ছে। উপকূলের শিক্ষার্থীদের বৃহৎ এক অংশ এখন এই কর্মসূচির ছোঁয়ায় এসে জীবন পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে। ওদের কেউ এখন গাছ লাগায়, কেউ গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করছে মানুষকে। সবুজ নিয়ে লেখা, বলা, চিত্রাঙ্কনে এগিয়ে ওরা। উপকূলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকজন সবুজ যোদ্ধা’র খন্ডচিত্র-
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের তোয়াহা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির নুসরাত জেবিন জেসিয়া। তাদের বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত “সবুজউপকূল-১৬” তে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ হয় তার। সে বক্তব্য দিয়েছে, দেয়াল পত্রিকায় লিখে পুরস্কারও জিতেছে। পুরস্কার পাওয়ার আনন্দে সবুজের প্রতি তার ভালোবাসা এখন নিবিড়। এবার “সবুজ উপকূল” কর্মসূচিতে নতুন যুক্ত হওয়া পরিবেশ পর্যবেক্ষণে সে গিয়েছে। দলের সদস্যের নিয়ে তার তৈরিকৃত প্রতিবেদন চমৎকারভাবে অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করে সে। একদিকে সে যেমন নিজে সবুজ সচেতন। অন্যদিকে তার মাধ্যমে অন্যরাও সবুজ সুরক্ষায় সচেতন হচ্ছে।
নিজ অনুভূতি প্রকাশ জেসিয়া বললো, “এটি এমন একটি সৃজনশীল কর্মসূচি, যা আমাদের চিন্তার জগতকে প্রসারিত করেছে। পরিবেশ পর্যবেক্ষণে গিয়ে আমি সংকট অনুসন্ধান করার যে পদ্ধতি শিখেছি, তা আমার বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারবো।”
চট্টগ্রামের বাঁশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নুসরাত তাসনীম ও নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরবাটা খাসেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের অভি মজুমদার। বয়সের দিকে থেকে ওরা এখনো অনেক ছোট। দু’জন অসাধারণ উপস্থাপক। রাজধানীর বাংলামটরের বিশ্বসাহিত্যে কেন্দ্রে “সবুজ উপকূল-১৬” সর্বশেষ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির পুরো অনুষ্ঠান ওদের উপস্থাপনায় শেষ হয়। প্রশংসা কুড়িয়েছে বিশিষ্টজনদের থেকেও। ওরা এখন ব্যতিক্রমীভাবে সবুজ সুরক্ষার আহবান জাগাচ্ছে তাদের সীমারেখার বাহিরেও।
দু’জন বললো,”আমরা যে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে পারবো, তা কখনই ভাবিনি। কিন্তু এই কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে শিখেছি। আমরা এখন আমাদের বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানগুলোও উপস্থাপন করি।”
বিন ইয়ামিন সিফাত ও দিদার আহমেদ। ভোলা জেলার দক্ষিণের একটি জনপদ মনপুরা দ্বীপের হাজীরহাট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০১৫ সালে “সবুজউপকূল” কর্মসূচিতে অংশ নেয়। সিফাত এখন ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের দ্বাদশের ছাত্র। আর দিদার স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে অধ্যয়নরত। দু’জনেই স্থানীয় বন্ধুদের নিয়ে সবুজ সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছে। পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবুজ সুরক্ষার প্রচারণায় লেখালেখিও করছে দু’জন। দ্বীপে গাছ লাগালে দুর্যোগে নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে তাদের এই প্রয়াস অব্যাহত।
খুলনার পাইকগাছার সুখদা সুন্দরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আরজু সুলতানা হ্যাপি। “সবুজ উপকূল” কমসূচির গোড়ার দিকেই যুক্ত সে। সৃজনশীল প্রতিযোগিতার অংশ রচনায় প্রথম স্থান এবং কবিতা দ্বিতীয় স্থানের পুরস্কার জিতেছে সে। উপকূল নিয়ে লেখালেখি করে সে। সেক্ষেত্রে উপকূলের সবুজ বাঁচানোর তাগিদ তুলে ধরে তার কবিতা, রচনা ও প্রতিবেদনে। ইতিমধ্যে তার সহপাঠীরাও তার ইতিবাচক কাজে পাশে দাড়িয়েছে। ওদেরকেও সে উপকূলের সবুজ গাছপালা নিয়ে লেখালেখি করার তাগিদ দিচ্ছে।
কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ হাজী বশির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ওমর হায়াত তাহসান ও মো. ইসহাক শাহ। ওদের বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিত সবুজ উপকূল অনুষ্ঠানে তাহসান বক্তব্য দিয়েছিলো। অন্যদিকে ওরা দু’জনে মিলে পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছে। দু’জনেই এখন খুদে সংবাদকর্মী। লিখছে নিয়মিত। ওদের ভেতর সবুজ সচেতনতা বেড়েছে। ওরা অন্যদেরও লেখালেখি, বক্তব্য, উপস্থাপনার মাধ্যমে সবুজ সুরক্ষায় দক্ষ করে তুলছে।
তাদের মতই নোয়াখালী সুবর্ণ চরের এ. এম.রাফিদুল্লাহ। ভোলার রিয়াজ আহমেদ, হাবিব আদনান। লক্ষ্মীপুরের শাহিনুর আক্তার শানু, রাবেয়া বসরি, মাহি আক্তার, তানভী বিন লিয়াকত, শাওন আহমেদ। চাঁদপুরের হাইমচরের রেহমুনা মাহজাবিন রাদিন, সুমি আক্তার। ওরা উপকূলের সবুজ সুরক্ষায় সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তাদের মতই নাম না প্রকাশ করা অসংখ্য তরুণ এখন “সবুজ উপকূল” কর্মসূচির ফসল।
//প্রতিবেদন/২৫১১২০১৭// |
ef49e880-fe46-4bc5-a4a8-4a1c745fc529 | তৃতীয়বারের মত ডিআরইউ অ্যাওয়ার্ড পেলেন রফিকুল ইসলাম মন্টু
-
- ১৬:২০
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, গণমাধ্যম, ঘটনাপ্রবাহ, জাতীয়-উপকূল, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ৩
ঢাকা: উপকূলের খবর লিখে এবার তৃতীয়বারের মত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড জিতলেন উপকূল সন্ধানী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু। অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকম-এ ‘সম্ভাবনার দুয়ারে উপকূল’ শিরোনামে দশ পর্ব ধারাবাহিক প্রতিবেদনের জন্য তিনি এবার এই অ্যাওয়ার্ড পেলেন।
রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে ‘ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০১৭’ প্রদান করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ডিআরইউ এর সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন জুরি বোর্ড-এর সভাপতি শাহজাহান সরদার ও ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানী।
এবার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২৭জন সাংবাদিক ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ডিআরইউ গঠিত বিচারকমন্ডলীর মূল্যায়নে এ বছরের সেরা রিপোর্টারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী। তাদেরকে ক্রেস্ট, চেক ও সনদপত্র দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, উপকূলের জেলেদের নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন লিখে ২০১৪ সালে এবং ২০১৫ সালে অরক্ষিত উপকূল বিষয়ে প্রতিবেদন লিখে এই অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন তিনি। এবার তৃতীয়বারের মত রিপোর্টারদের সম্মানজনক এই অ্যাওয়ার্ড গ্রহন করেন রফিকুল।
রফিকুল ইসলাম মন্টু দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চল ঘুরে সরেজমিন প্রতিবেদন লিখছেন। তার প্রতিবেদনে উঠে আসছে টেকনাফ থেকে শুরু সুন্দরবনেএই দীর্ঘ উপকূলীয় তটরেখার বিভিন্ন বিষয়। উপকূলের অন্ধকার প্রকাশের আলোয় আনতে নিরন্তর চেষ্টা করছেন তিনি। তার প্রতিবেদনের বিষয় হিসাবে উঠে আসছে মানুষের জীবনযাত্রা, পরিবেশ, প্রতিবেশ, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, নারী-শিশু, এমনকি সরকারি বেসরকারি সেবা পরিস্থিতির তথ্য-উপাত্ত।
উপকূল নিয়ে ভিন্নধারার রিপোর্টিং:
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উপকূল নিয়ে নিবিড়ভাবে ব্যতিক্রম ধারার রিপোর্টিং শুরু করেন রফিকুল ইসলাম। সমুদ্র উপকূলবর্তী দুর্গম জনপদ ঘুরে রিপোর্টিংয়ের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের তথ্য নীতিনির্ধারক মহলে পৌঁছে দেওয়া।
অবহেলায় ডুবে থাকা পশ্চাদপদ উপকূলের চর, দ্বীপ, বিচ্ছিন্ন গ্রাম আর প্রত্যন্ত জনপদের সব খবর উঠে আসছে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে। এরই মধ্যে উপকূলের রিপোর্টগুলো ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।
বিচ্ছিন্ন জনপদের সব তরতাজা খবর পাঠককে জানাতে রফিকুল ইসলাম অধিকাংশ সময়ই উপকূলীয় জনপদে অবস্থান করে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। পূর্ব, পশ্চিম ও মধ্য উপকূলের অধিকাংশ এলাকা ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন তিনি।
এ ছাড়াও তিনি পূর্ব উপকূলের কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, পতেঙ্গা, সন্দ্বীপ, নোয়াখালীর হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, কমলনগর, রায়পুর, চাঁদপুরের হাইমচর, মধ্য উপকূলের ভোলার মনপুরা, দৌলতখান, চরফ্যাশন, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী, কলাপাড়া, কুয়াকাটা, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া, পশ্চিম উপকূলের বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা, দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা, সাতক্ষীরা জেলার তালা ও শ্যামনগর উপজেলার প্রান্তিক জনপদের সরেজমিন তথ্য তুলে এনে প্রকাশ করেছেন।
এ সময়ে রফিকুল ইসলামের দুর্যোগ, জীবন-জীবিকা, মানবাধিকার, দুর্নীতি, পরিবেশ, সরকারি-বেসরকারি সেবা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই শতাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আর এ কাজ করতে গিয়ে তাকে নানা ধরনের প্রতিকূলতার মুখোমুখিও হতে হয়েছে। সে সব উৎরে খবরের মূলে গিয়ে তুলে ধরেছেন সবহারা প্রান্তিক মানুষের অসহায়ত্বকে, বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সংগ্রামী জীবনকে।
কাজের ক্ষেত্র:
উপকূলভিত্তিক এই রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয়, উপকূলীয় ১৬টি জেলা। এগুলো হচ্ছে- পূর্ব উপকূলের কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, মধ্য উপকূলের বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, চাঁদপুর, শরীয়তপুর এবং পশ্চিম উপকূলের খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে উপকূলের তথ্য উঠে এসেছে নীতিনির্ধারক মহলে। সরকারি-বেসরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
পুরস্কার:
রফিকুল ইসলাম এর আগেও বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৫ সালে পিআইবি-এটুআই গণমাধ্যম অ্যাওয়ার্ড, অক্টেবরে ইউনিসেফ-মীনা অ্যাওয়ার্ড, ২০১৪ সালে ডিআরইউ-গ্রামীণফোন অ্যাওয়ার্ড, ১৯৯৮ সালে পটুয়াখালীর চরাঞ্চলের সরেজমিন সিরিজ প্রতিবেদনের জন্য ‘মোনাজাতউদ্দিন স্মৃতি পুরস্কার’, ২০০০ সালে বরগুনার প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক সিরিজ প্রতিবেদনের জন্য ‘এফপিএবি পুরস্কার’, ২০০১ সালে ভোলার শিশুদের নিয়ে ফিচারের জন্য ‘পিআইবি-ইউনিসেফ ফিচার পুরস্কার’, ২০০৬ সালে দুবলার চরের শিশুদের ওপর অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য ‘ইউনিসেফ-মীনা অ্যাওয়ার্ড’, একই বছর দক্ষিণাঞ্চলের নদী ভাঙনের ওপর সিরিজ প্রতিবেদনের জন্য ‘ইউএনডিপি-বাংলাদেশ সরকার পুরস্কার’, ২০১০ সালে জলবায়ু পরিবর্তনে বিপন্ন উপকূল বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য ‘কানাডিয়ান অ্যাওয়ার্ড’। এছাড়াও ১৯৮৮ সালে বরগুনা জেলা পর্যায়ে ‘একুশে সাহিত্য পুরস্কার’ ও ‘জাতীয় তরুণ সংঘ পুরস্কার’ অর্জন করেন তিনি।
বই:
উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের ওপর তথ্যভিত্তিক ‘সিডর: বিপন্ন জনপদের বিবর্ণ রূপ’ বই লিখেছেন তিনি। মোনাজাতউদ্দিন স্মৃতি পুরস্কারপ্রাপ্ত ‘পটুয়াখালীর চরাঞ্চলের জীবনযাত্রা ও মানবাধিকার’ শীর্ষক সিরিজ প্রতিবেদন সংকলন করে বই প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯৮ সালে।
গবেষণা:
সরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে ২০১০ সালে ‘উপকূলীয় অঞ্চলে সিডর আক্রান্ত জনগনের জীবন সুরক্ষায় কৌশল উদ্ভাবন’, ২০০৮ সালে ‘সমুদ্রগামী মৎস্যজীবীদের জীবন জীবিকা’ এবং ২০০৪ সালে ‘উপকূলীয় জেলা বরগুনায় তৃণমূলস্তরের নারীর ক্ষমতায়নে ইউপি নারী সদস্যদের ভূমিকা বিষয়ে গবেষণা সম্পন্ন করেছেন সাংবাদিক ও গবেষক রফিকুল ইসলাম।
এছাড়া বরগুনা জেলা পর্যায়ে টোটাল লিটারেসি মুভমেন্ট (টিএলএম), বেড়িবাঁধে রুটিন মেইনটেন্যান্স কার্যক্রম (আরএমপি) ও ইউনিসেফের ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি (ওআরটি) বিষয়ে প্রভাব যাচাই গবেষণা করেছেন।
ফেলোশিপ:
রফিকুল ইসলাম ‘উপকূলীয় এলাকায় সর্বজনীন সম্পদ ব্যবহার’ বিষয়ে সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএফএসডি)’র অধীনে ফেলোশিপ করেছেন ১৯৯৩ সালে।
কর্মরত গণমাধ্যম:
২০০২ সাল থেকে ঢাকায় মূলধারার সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন রফিকুল ইসলাম। এ সময়ে তিনি পলিটিক্যাল বিট, নির্বাচন কমিশন বিট ও জেনারেল বিটে কাজ করেছেন। এর মধ্যে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কণ্ঠ, দৈনিক সমকাল ও দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম এবং জুনিয়র রিপোর্টার হিসেবে সংবাদ, ভোরের কাগজ ও মানবজমিনে কাজ করেছেন।
ঢাকায় মূলধারার সাংবাদিকতায় আসার আগে বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন রফিকুল ইসলাম।
//প্রতিবেদন/২৬১০২০১৬// |
d2558c5c-e219-4212-b088-79340d41ce97 | ‘সমৃদ্ধশালী মডেল ঢালচর গড়তে চাই’ : আবদুস সালাম হাওলাদার
-
- ১৬:০৩
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, ঘটনাপ্রবাহ, ভোলা জেলা, মধ্য-উপকূল, মুক্তমঞ্চ, মুখোমুখি, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ৬
আবদুস সালাম হাওলাদার। চরফ্যাসনের ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। সম্প্রতি উপকূল বাংলাদেশ-এর সাথে কথা বলেছেন দ্বীপের সমস্যা-সংকট ও সম্ভাবনা নিয়ে। বলেছেন দ্বীপকে ঘিরে তার স্বপ্নের কথা। তুলে ধরেছেন এলাকার মানুষের কল্যাণে তার দাবিসমূহ। একটি সমৃদ্ধশালী মডেল ঢালচর গড়ার প্রত্যাশা তার। স্বেপ্ন দেখেন এখান মানুষ ফিরে পাবে খাসজমির অধিকার। নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে দ্বীপবাসীর। সাক্ষাতকারের পূর্ন বিবরণ নিচে তুলে ধরা হলো:
আপনার এলাকার প্রধান সমস্যা কি?
আবদুস সালাম হাওলাদার: ঢালচরে সবচেয়ে বড় সমস্যা নদীভাঙণ। এই সমস্যার বিপরীতে এই চরেই রয়েছে কয়েক হাজার একর খাসজমি। এই চরে নেই রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট। দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হওয়া সত্বেও এখানে নেই আশ্রয়কেন্দ্র। বিপুল সংখ্যক গবাদিপশু থাকলেও এদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। ভূমিহীন-নি:স্ব মানুষের জন্য নেই পর্যাপ্ত আবাসন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতাও ঢালচরের জন্য অন্যতম প্রধান সমস্যা।
সমস্যাগুলো সমাধানে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
আবদুস সালাম হাওলাদার: সমস্যাগুলো সমাধানে বিভিন্ন সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন জানানো হয়েছে। সমস্যাগুলো লিখিতভাবে তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। এতে সমস্যার বিবরণ ও দাবিসমূহ তুলে ধরা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে। যেমন, কিছু সংখ্যক নলকূপ বসানো হয়েছে। একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। কিছু রাস্তাঘাট হয়েছে। কিন্তু আমাদের দাবি অনুযায়ী সব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পাঁচ বছরে আপনার ইউনিয়ন কতটা এগিয়েছে?
আবদুস সালাম হাওলাদার: বিগত ৪০ বছরের তূলনায় গত পাঁচ বছরে ঢালচর অনেক এগিয়েছে। বিগত ৪০ বছরে এখানে তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কিন্তু পাঁচ বছরে এখানে একটি পাকা বাজার হয়েছিল; ইতিমধ্যে সেটি আবার নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন হয়েছে। এলজিইডি’র একটি ভবন হয়েছিল; সেটিও নদীগর্ভে। বেশকিছু নলক‚প বসেছে। রাস্তা হয়েছিল; তার মধ্যে অনেকখানি ভেঙে গেছে নদীতে। আগের চেয়ে দ্বীপটির দিকে উপর মহলের নজর বেড়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে ঢালচরে কি ধরণের প্রভাব পড়েছে?
আবদুস সালাম হাওলাদার: গত কয়েক বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পড়েছে ঢালচরে। জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় বলা যায় ক্ষতবিক্ষত সম্ভাবনাময় এই দ্বীপ। গত কয়েক বছরে এখানে দুর্যোগের মাত্রা অস্বাভাবিক বেড়েছে। আগে এতটা দেখা যায়নি। জোয়ারের পানি আগে এতটা বাড়ত না, জলোচ্ছ¡াসের প্রভাব এতটা ছিল না। কিন্তু এখন বর্ষাকাল আসতে না আসতেই জোয়ারের পানিতে বিপন্ন হয়ে পড়ে দ্বীপের জনজীবন। ঘূর্ণিঝড় এই দ্বীপের মানুষ আগে এতটা দেখেনি। মনে হয়, দুর্যোগের সময়কালটা অনেকখানি বেড়ে গেছে। আগে বছরে ২-৪টি নিম্নচাপ হতো, এখন তো বছরে অন্তত ১২-১৪বার নিম্নচাপ হয়। আর এটা জনজীবনে, বিশেষ করে জেলেদের জীবনে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব ফেলে। পানিতে লবনাক্ততাও বেড়েছে বলে লক্ষ্য করা যায়। অক্টোবর থেকে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত লবণ পানির প্রভাব থাকে। এক সময় এই দ্বীপের জমিতে কৃষকেরা ইরি ধান আবাদ হতো। কিন্তু এখন ইরি আবাদ তো দূরের কথা; রবিশস্য পর্যন্ত আবাদ করতে পারেন না কৃষকেরা। ফলে বহু জমি পতিত থেকে যায়।
ইউনিয়নের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনায় প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাচ্ছেন কী?
আবদুস সালাম হাওলাদার: ইউনিয়নের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া যায় না। হয়তো এটা দ্বীপ বলে কিংবা ভাঙণপ্রবণ এলাকা বলে এখানে কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ দিতে চাইছে না। কিন্তু এখানে বরাদ্দ বাড়িয়ে মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা সম্ভব, এখানকার সম্ভাবনার বিকাশ ঘটানো সম্ভব। অন্যান্য ইউনিয়নের ত‚লনায় বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্যও লক্ষ্য করা যায়। যেমন, দ্বীপে মোট ১৮০০ জেলে তালিকাভ‚ক্ত থাকলেও সহায়তা আসে মাত্র ৭০০ জনের জন্য। এভাবেই সব ক্ষেত্রেই বরাদ্দ কম দেয়া হয়।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কতটা রক্ষা করতে পেরেছেন?
আবদুস সালাম হাওলাদার: নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি শতভাগ পূরণ করতে পারিনি। ইতিমধ্যে নলক‚প স্থাপন, রাস্তা নির্মানের মত কিছু কিছু প্রতিশ্রুতি পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারে আমার সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি ছিল পতিত খাসজমিতে নি:স্ব মানুষের পূনর্বাসন। ঢালচরের দক্ষিণ-পশ্চিমে কয়েক হাজার একর খাস জমি বন বিভাগের আওতায় রয়েছে। সেখানে কোন বন নেই। বনায়নের সুযোগও নেই। ইতিমধ্যে ওই জমির বয়স প্রায় ৫০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে বন্দোবস্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর মাধ্যমে যোগাযোগের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
ইউনিয়নকে ঘিরে আপনি কি স্বপ্ন দেখেন?
আবদুস সালাম হাওলাদার: এ কথা সকলেই জানেন, গোটা চরফ্যাসন উপজেলার মধ্যে ঢালচর ছিল একটি মডেল দ্বীপ। কিন্তু গত কয়েক বছরে ভাঙণের তীব্রতা অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের সে ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে। বিপুল পরিমাণ পতিত খাসজমি দ্বীপে আশার আলো জ্বেলে রেখেছে। আমিও সেটাই স্বপ্ন দেখি। খাসজমিতে ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করা সম্ভব হলে, ভাঙণ প্রতিরোধের জন্য চারদিকে বেড়িবাঁধ দেওয়া হলে ঢালচর আবার সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। দ্বীপবাসীর জীবনযাপনে ফিরবে নিশ্চয়তা।
স্বপ্ন পূরণের পথে প্রধান বাঁধাসমূহ কি কি?
আবদুস সালাম হাওলাদার: ঢালচরকে ঘিরে আমার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে বহুমূখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দ্বীপের সম্ভাবনার কথা, সমস্যার কথা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে জানানো হয়েছে। কিন্তু দ্বীপের বিচ্ছিন্নতা ও ভাঙণপ্রবণতার কারণে কর্তৃপক্ষের অনীহা আমার সেইসব স্বপ্ন পূরণের পথে প্রধান বাঁধা বলে মনে করি।
ঢালচরের কি কি সম্ভাবনা রয়েছে?
আবদুস সালাম হাওলাদার: যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচরে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। তারুয়া সৈকতসহ ঢালচরের একাধিক সমুদ্র সৈকত ঘিরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। শুধুমাত্র যোগাযোগ সমস্যার কারণে এখানে পর্যটকেরা অনায়াসে যাতায়াত করতে পারেন না। ঢালচরের দক্ষিণ-পশ্চিমে সমুদ্রের বুকে জেগে উঠছে আরেক বাংলাদেশ। এসব সম্ভাবনা বিকাশের উদ্যোগ নেওয়া হলে গোটা অঞ্চলের চিত্র বদলে যাবে। একইসঙ্গে সম্ভাবনা বিকাশের উদ্যোগ নেওয়া হলে সরকারও এ থেকে পাবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। এ বিষয়ে এলাকার সাংসদ ও উপমন্ত্রী মহোদয় এবং জেলা-উপজেলা প্রশাসন বরাবরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
ইউনিয়নকে আরও সমৃদ্ধশালী করতে আপনার প্রস্তাব কি?
আবদুস সালাম হাওলাদার: ঢালচরকে সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে প্রধানত এখানকার পতিত খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বরাদ্দ দিতে হবে। এরপর দ্বীপের ভেতর দিয়ে একটি খাল খনন করতে হবে। ঢালচরের চারিদিকে বেড়িবাঁধ দিতে হবে। সেইসঙ্গে মূলভূখন্ডের সঙ্গে ঢালচরের যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আর তাহলেই ঢালচর হয়ে উঠবে সমৃদ্ধশালী দ্বীপ।
//প্রতিবেদন/১৩০২২০১৮// |
fe376ffb-9231-42c4-9493-b1afe90a2093 | শ্যামনগরে পড়ুয়ারা গড়ে তুলেছে পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন
শ্যামনগর, সাতক্ষীরা: ওরা এখন নিজেদের চারপাশের পরিবেশ সুরক্ষায় অনেক সচেতন। বন্ধুরা একত্রিত হয়ে সভায় বসে। ঠিক করে কাজের বিষয়। এরপরে পরিবেশ সুরক্ষার নেমে পড়ে মাঠে। নিজেদের জ্ঞান চর্চার লক্ষ্যে গড়ে তুলেছে পাঠাগার। বাল্যবিয়ের প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেয়। ঝড়ে পড়া শিশুদের স্কুলে ফেরানোর উদ্যোগ নেয়। নিজেদের সৃজনশীল জ্ঞান বিকাশে যুক্ত হয় নানাবিধ কাজের সঙ্গে।
এটা পশ্চিম উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ আর দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার গল্প। গত দু’বছরে মুন্সিগঞ্জের সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে দু’টি এবং গাবুরার চাঁদনিমূখা মাধ্যমিক বিদ্যালয় একটি ‘সবুজ উপকূল কর্মসূচি’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পৃষ্ঠপোষকতা করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। ২০১৫ সাল থেকে উপক‚ল জুড়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়। সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান উপকূল বাংলাদেশ এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে।
কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরে এলাকায় কি ধরণের পরিবর্তন এসেছে? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে পাওয়া যায় অনেক ইতিবাচক গল্প। গাবুরার চাঁদনিমূখা এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী (এসএসসি ফলপ্রার্থী) খান আবু হাসান বললো, ওরা সবুজ উপকূল কর্মসূচি থেকে পাওয়া ধারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পরিবেশ সুরক্ষার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। নিজেদের সচেতনতার পাশাপাশি ওরা গ্রামবাসীকে সচেতন করে তুলছে।
গাবুরার সমস্যা ও সবুজ উপকূল কর্মসূচির প্রভাব প্রসঙ্গে খান আবু হাসান বলে, চারিদিকে নদী বেষ্টিত সুন্দরবনের কোলঘেঁসে অবস্থিত দ্বীপ অঞ্চল গাবুরা। এই দ্বীপের ৪৫ হাজার মানুষের প্রতিনিয়ত নদী ভাঙণের মত ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবিলা করে টিকে আছে। ২০০৯ সালের ২৫শে মে সোমবার দিনটির কথা এই জনপদের মানুষেরা আজও ভুলতে পারে না। ঘূর্ণিঝড় আইলার প্রলয় বয়ে গিয়েছিল সেদিন। অনেকেই হারিয়েছে তাদের পিতা-মাতা, আবার অনেকেই তাদের পরম স্নেহের সন্তানদের হারিয়েছে। সহায় সম্পদ হারিয়ে বহু মানুষ পথে বসে।
খান আবু হাসান বলেন, গত কয়েক বছরে গাবুরার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবে মানুষের মাঝে পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতার মাত্রা এখনও অনেক কম। ২০১৭ সালে এখানকার চাঁদনিমূখা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ব্যতিক্রমী এক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। যার নাম ‘সবুজ উপকূল’। এই কর্মসূচির আওতায় আমরা পড়ূয়া দল দ্বীপের পরিবেশ পর্যবেক্ষণে যাই। পরিবেশ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আমরা জানার চেষ্টা করি কিভাবে এই দ্বীপ দিনের পর দিন পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই দ্বীপকে কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায়; সে বিষয়ে আমরা মানুষের মতামত নেই। তথ্য সংগ্রহ করি এবং প্রতিবেদন তৈরি। আর সে প্রতিবেদন অনুষ্ঠানের দিন সকলের সামনে উপস্থাপন করি। এরফলে আমাদের মাঝে এক ভিন্ন উপলব্ধি আসে।
খান আবু হাসান বলেন, সবুজ উপকূল কর্মসূচি এবং এর আওতায় পরিবেশ পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ফলে আমাদের গাবুরার জন্য কিছু একটা করার চিন্তা মাথায় আসে। আমরা বন্ধুরা মিলে গাবুরায় পরিবেশ সুরক্ষার আন্দোলন শুরু করি। একটি বসার জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে পাঠাগার প্রতিষ্ঠারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এলাকার মনুষ আমাদের সহযোগিতাও করছে।
শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চাঁদনীমুখা এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উৎসবমূখর পরিবেশে সবুজ উপকূল কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। কর্মসূচির আওতায় ছিল রচনা লিখন, পত্র লিখন, ছবি আঁকা ও সংবাদ লিখন প্রতিযোগিতা। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ‘এসো সবুজের আহ্বানে, গড়ি সবুজ উপকূেল’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং গাছের চারা রোপণ করা হয়। কর্মসূচিতে বিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া পরিবেশ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। বিদ্যালয়ে প্রকাশিত হয় দেয়াল পত্রিকা ‘বেলাভূমি’র বিশেষ সংখ্যা।
সৃজনশীল মেধা বিকাশের অন্যতম মাধ্যম দেয়াল পত্রিকা ‘বেলাভূমি’ এখন নিয়মিত বের হচ্ছে শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জে সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে। শিক্ষার্থীরাই বিষয় নির্ধারণ করে, তারাই তথ্য সংগ্রহ করে, তারাই প্রতিবেদন লেখে। ওদের মধ্যেই কেউ কেউ আমার সম্পাদনার দায়িত্ব নেয়। কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার বৈদ্য বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক কর্মসূচি হয়। কিন্তু সবুজ উপকূল কর্মসূচি একটু আলাদা। এ কর্মসূচির মাধ্যমে স্কুলের ছাত্রীদের মেধা বিকাশের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা আগামী জীবনে কাজে লাগবে।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জে সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সবুজ উপকূল কর্মসূচিতে অংশ নেয় আশপাশের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রথমবার শ্যামনগর ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আহসান উল্লাহ শরীফী এবং দ্বিতীয়বার শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মহসীন উল মূলক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে আসেন। দুটো অনুষ্ঠানেই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সকলেই উপকূলের পড়ুয়াদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো, সৃজনশীল মেধার বিকাশ, লেখালেখির মাধ্যমে তথ্যে প্রবেশাধিকারসহ জীবন দক্ষতা বাড়াতে এ ধরণের কর্মসূচির ওপর জোর দেন।
শ্যামনগরের তিনটি অনুষ্ঠানেরই উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক শ্যামনগর শাখার ব্যবস্থাপক মো. রাশিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, শুধু পাঠ্য বইয়ের পড়া মুখস্ত করে পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করলেই চলবে না। এর পাশাপাশি চারপাশের জগত সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। উপকূলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ভালো ফলাফলের সঙ্গে সাধারণ জ্ঞানের সংমিশ্রনই পারে মানুষের মত মানুুষ করে তুলতে। তোমাদেরকে ভালো মানুষ হয়ে প্রদীপের মত আলো জ্বালাতে হবে, যাতে তোমার আলোতে আরও অনেকজন আলোকিত হতে পারে।
সবুজ উপকূল কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্থানীয় সংগঠকের দায়িত্বে থাকা সুন্দরবন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিক রনজিৎ বর্মন এ কর্মসূচির ইতিবাচক পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, সবুজ উপকূল কর্মসূচি এলাকার ছেলেমেয়েদের চোখ খুলে দিয়েছে। দেয়াল পত্রিকা এত সহজে বের করা যায়; তা ছেলেমেয়েরা এই কর্মসূচির মাধ্যমেই শিখেছে। তারা এখন নিয়মিত দেয়াল পত্রিকা বের করছে।
তিনি বলেন, সবুজ উপকূল কর্মসূচির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল, এ অনুষ্ঠান উপস্থাপনের দায়িত্ব পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। এরফলে ওদের মধ্যে সাহস তৈরি হয়েছে। যা ওদের পরেও কাজে লাগছে। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা যে উপস্থাপন করেছে, তা নয়, ওরা বক্তব্য রেখেছে। পরিবেশ পর্যক্ষেণ, প্রতিবেদন তৈরি এবং উপস্থাপনের মত কাজও করেছে ওরা। এর মধ্যদিয়ে ওদের ভেতরে চারপাশের পরিবেশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা প্রসঙ্গেও সচেতনতা এসেছে।
শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় অনুষ্ঠিত সবুজ উপকূল কর্মসূচির স্থানীয় সংগঠকের দায়িত্ব পালনকারী দৈনিক পত্রদূত-এর স্থানীয় প্রতিনিধি আবদুল হালিম বলেন, প্রান্তিক জনপদের শিশুদের মেধা বিকাশ ও পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে এটা ছিল ব্যতিক্রমী এক আয়োজন। আমার নিজের কাছেও ভালো লেগেছে, এ ধরণের একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে। সবুজ উপকূল কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছেলেমেয়েরা এখন নিজেরাই পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে।
//প্রতিবেদন/২১০৪২০১৮// |
e6f21a9a-f5b5-43b9-bf37-fe0c9da3eca6 | কমলনগরে পড়ুয়াদের সবুজ জগত, অনুপ্রেরণায় ‘সবুজ উপকূল’
কমলনগর, লক্ষ্মীপুর: সবুজময় জীবন গঠনের প্রত্যয়ে সবুজ আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে উপকূলের ঝাঁকে ঝাঁকে পড়ুয়া। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে এর সংস্পর্শে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের কিছু পড়ুয়া। ভাবনা-চিন্তা, স্বপ্নময় জগতে ওরা এখন সবুজ। সবুজের রঙেই তারা রঙিন। সমাজের জন্য কিছু করার মন মানসিকতা। সবুজময় বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ার স্বপ্নে ওদের চেতনার বিকাশ ঘটেছে। বদল হয়েছে সমাজ কাঠামোর।
এমনটা পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে “সবুজ উপকূল” কর্মসূচির ফসলে; যার পৃষ্ঠপোষক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে সৃজনশীল প্রতিষ্ঠান উপকূল বাংলাদেশ।
সবুজ উপকূল অনুষ্ঠানের বক্তা নুসরাত জেবিন জেসিয়া। কমলনগর উপজেলা সদরের প্রানকেন্দ্র হাজীরহাটের তোয়াহা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন এ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয় সে। এখন সে কি করছে? এন প্রশ্নের জবাবে জেসিয়া বললো, ‘সবুজ উপকূল অনুষ্ঠানকে ঘিরে দেয়ালপত্রিকা বের করি, ওই অনুষ্ঠানেই বক্তব্যে সবুজ সচেতনতার জন্য নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরি। এর মাধ্যমে মেঘনাপাড়ের বিপন্ন মানুষের খবর সংগ্রহের পদ্ধতি শিখেছি। যা ওই অনুষ্ঠানে সবার সামনে উপস্থাপন করেছি। এখন আমি সবুজের ভাবনায় ভাবি। সবুজের আলোকিত হওয়ার স্বপ্ন দেখি।’
জেসিয়ার মতোই ওর সহপাঠী শানু আক্তার, তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের তানভী বিন লিয়াকত, নুসরাত জাহান মীম, ফজুমিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাহমুদুল হাসান লাতু ও জহিরুল ইসলাম প্রমূখ এখন নিজেদের সামাজিক কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে সম্পৃক্ত রাখছে। সবুজ উপক‚ল কর্মসূচি থেকে তাদের ভাবনায় এসেছে সবুজ সুরক্ষার তাগিদ।
প্রান্তিক, বিপন্ন, নদীভাঙা, পিছিয়ে পড়া, সবুজ সংকটপূর্ণ এলাকা হিসেবে এ কর্মসূচি শুরুর বছর ২০১৫ সাল থেকে টানা তিন বছর কমলনগরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘সবুজ উপকূল’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপজেলার তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, ফজুমিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয়, হাজিরহাট তোয়াহা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং ফলকন উচ্চ বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে স্থানীয় প্রশাসন, গণ্যমান্য, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, সচেতন ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ওতপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন।
সবুজ উপকূল অনুষ্ঠানে সবুজ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পড়ুয়ারা দেয়ালপত্রিকা বেলাভূমি বের করেছে এবং পুরস্কৃত হয়েছে, সবুজ বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে। এবং কী ওরা নিজেরাই অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মুখ থেকে ওরা সবুজ সচেতনতার দিকনির্দেশনা পেয়েছে।
সবুজ উপকূল ভেন্যু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আঙিনায় অতিথিদের সাথে শিক্ষার্থীরা নিজের প্রিয় ক্যাম্পাসে যে সবুজের চারা রোপণ করেছিল, তা আজ আকাশের দিকে উঁকি দিচ্ছে। সবুজে ভরে স্কুল প্রাঙ্গণ। যেখানে ছিল প্রখর রোদ, সেখানে এখন শীতল ছায়া। যার উদহারণ তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও ফজুমিয়ারহাট উচ্চ বিদ্যালয়। ২০১৫ সালের ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর এ দু’টি বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে “সবুজ উপকূল” কর্মসূচি কর্তৃক সবুজের চারা রোপণ করা হয়। এগুলো মাত্র কয়েক বছরের ব্যাবধানে সবুজ করে তুলেছে ক্যাম্পাস।
অন্যদিকে এসব পড়ুয়ারা সামাজিক বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত। এ কর্মসূচির অনুপ্রেরণায় তারা লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে দেয়াল পত্রিকা বেলাভূমি বের করেছে, কলেজ সংলগ্ন এলাকার পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করে তা দিয়ে সবাই প্রতিবেদন লিখেছে, কমলনগরের হাজিরহাট তোয়াহা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত বছর মা দিবস পালন করেছে, মায়ের কাছে তারা চিঠি লিখেছে এবং পুরস্কারও পেয়েছে। যা তাদের উদ্যোগই।
আরো একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা হচ্ছে, এদের উদ্যোগেই গত বছর মেঘনাপাড়ের শিশুদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বাস্তব জগতে ওদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মানুষ। এবারও তারা এ ধরণের উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে। এইসব কার্যক্রমের মূলে সবুজ উপকূল কর্মসূচি। এ কর্মসূচিতে অংশ না নিলে হয়তো এই পড়ুয়ারা অন্যকিছু ভাবতো; কেউ হতো বিপথগামী।
‘সবুজ উপকূল’ কর্মসূচির অর্থ কেবল উপকূলে সবুজ গাছপালা লাগানো, কিংবা তার সঠিক পরিচর্যা করা নয়। শিক্ষার্থীদের মেধা-মননে সবুজ চিন্তা, নিজেকে সবুজময়ভাবে গড়ে তোলা, সমাজ পরিবর্তনে নিজকে যুক্ত রাখা, আর্ত-মানবতার সেবায় নিজকে সম্পৃক্ত করাসহ নানান ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির সংমিশ্রন ঘটেছে এখানে। এ কর্মসূচির জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক সমস্যা অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া শিখেছে। নিজেরাই এখন সংগঠন তৈরি করেছে। যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেয়াল পত্রিকা বের করছে, অন্য শিক্ষার্থীদেরও তারা সবুজ সচেতনতায় উদ্বুদ্ধ করছে।
কমলনগরের তোরাবগঞ্জে সবুজ উপকূল কর্মসূচির স্থানীয় সংগঠক শিক্ষক ও সাংবাদিক সানাউল্লাহ সানু বলেন, এটা ব্যতিক্রমী এক কর্মসূচি। গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে ভিন্ন ধরণের এক কর্মসূচি পরিকল্পনা করে সবুজ উপকূল; যা শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সচেতনতা ও মেধা বিকাশে বিশেষভাবে সহায়ক।
কমলনগরে সবুজ উপকূল কর্মসূচির আরেকজন সংগঠক বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম-এর স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সাজ্জাদুর রহমান বলেন, এক কথায় এ এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি। এ কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের পরিবেশ মনস্ক হতে সহায়তা করছে। পরিবেশ সুরক্ষায় দায়িত্বশীল করে তুলছে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধা বিকাশে বিশেষ সহায়ক এ কর্মসূচি। গত তিন বছরে সবুজ উপকূল কর্মসূচি কমলনগরের অসংখ্য সৃজনশীল ছেলেমেয়েদের খুঁজে বের করেছে।
//প্রতিবেদন/২৩০৪২০১৮// |
0fe61397-3e53-4f65-a1a5-8cf6fb12976b | উপকূলের উদীয়মান সংবাদকর্মী ছোটন সাহা’র ছুটে চলার গল্প
-
- ০৩:২৬
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, গণমাধ্যম, ঘটনাপ্রবাহ, ভোলা জেলা, মধ্য-উপকূল, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ৪
ঢাকা: যেখানে খবর, সেখানে উপস্থিত তিনি। খবরের খোঁজে ছুটে চলেন তিনি। তৈরি করেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শেকড়ের খবর। আর সে খবর তাৎক্ষণিক পৌঁছে দেন পাঠকের চোখের সামনে। তিনি আর কেউ নন; দ্বীপ জেলা ভোলার উদীয়মান তরুণ সাংবাদিক ছোটন সাহা।
উপকূলের প্রান্তিক জনপদ ঘুরে যেসব সাংবাদিক বিশেষ প্রতিবেদন লেখেন, তাদের মধ্যে ছোটন সাহা অন্যতম। দ্বীপজেলা ভোলার তরুণ উদীয়মান এক সংবাদকর্মী তিনি। বিপন্ন উপকূল নিয়ে একের পর এক সংবাদ পরিবেশন করে ইতোমধ্যে বেশ আলোচনায় চলে আসছেন তিনি।
বাঁধে আশ্রিত জনবসতি, ঠিকানাহীন ছিন্নমূল মানুষের গল্প, মেঘনা পাড়ে শিশু এবং মানতা সম্প্রদায়ের জীনচিত্র নিয়ে অসংখ্য প্রতিবেদন উঠে এসেছে তার লেখনিতে। ভোলা জেলার দুর্গম জনবসতিপূর্ন এমন চরাঞ্চল নেই; যেখানে তার পা পড়েনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ছুটে চলেন মেঘনা ও তেতুলিয়ার এক প্রাপ্ত থেকে অন্য প্রান্তে।
ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, রেশমি, কোমেনসহ অসংখ্য ঝড়ে বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের চিত্র তুলে ধরেছেন তিনি। তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর অধরা গল্প পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ায়। ঈদের আনন্দ ম্লান? ঈদেও দু’মুঠো খাবার জুটেনা বঞ্চিত মানুষের! সেসব অভাবী মানুষের কথা উঠে এসেছে তার লেখায়। ঘূর্ণিঝড়সহ যেকোন দুর্যোগের খবর এলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিদ্রুত পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে। টেলিভিশন দর্শক ও অনলাইন মিডিয়ার পাঠকদের জানিয়ে দেন সর্বশেষ আপডেট।
ছোটন সাহা তার সাংবাদিকতার স্বল্প সময়ে জেলেদের সুখ-দু:খ এবং জেলে জীবন নিয়ে ১০ পর্ব, সীমানা বিরোধ নিয়ে ৩ পর্ব, সিডর ও জীবন নিয়ে ৫ পর্ব, দ্বীপের জীবন নিয়ে ৭ পর্ব, জলদস্যুদতা নিয়ে ৪ পর্ব, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিয়ে একাধিক পর্বের রিপোর্ট করে করেছেন; যা পাঠক মহলে ব্যাপক প্রশংসা অর্জিত হয়েছে। এছাড়াও তিনি জলবায়ু পরির্বতন ঝুঁকি, সীমানা বিরোধ, কৃষি, অপরাধ, উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা এবং আশ্রয়ন কেন্দ্র নিয়ে রিপোর্ট করে সুনাম অর্জন করেছেন।
২০০৫ সালের দিকে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। শুরুতেই তিনি বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক দক্ষিনাঞ্চল পত্রিকার সাথে যুক্ত হন। পরে ভোলা থেকে প্রকাশিত আজকের ভোলার বার্তা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহনের পর সাপ্তাহিক-২০০০ কাজ করেন।
২০১০ সালে তিনি বাংলানিউজের ভোলা প্রতিনিধি হিসাবে কাজ শুরু করেন। একই বছর দেশটিভিতে কাজ শুরু করেন। জাতীয় গণমাধ্যম হিসাবে বাংলানিউজ ও দেশটিভি তার বর্তমান কর্মস্থল। আর স্থানীয় দৈনিক আজকের ভোলার বার্তা সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি দৈনিক ভোরের অঙ্গীকার, বরিশাল বার্তা, দৈনিক খোলা কাগজ এবং দুই তিনটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় কাজ করেন।
সাংবাদিকতা বিষয়ে তিনি পিআইবি, টিআইবি, কোস্টাল বাংলাদেশ থেকে একাধিক প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। এসব প্রশিক্ষণের মধ্যে অনুসন্ধানী সংবাদিকতা, জলবাযু পরিবর্তন ও তথ্য সংগ্রহের কৌশলসহ গুরুত্বপূর্ন বিষয় ছিলো। তিনি ভোলা প্রেসক্লাবের সদস্য এবং ভোলা রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও ২০১৭ সালের দিকে তিনি ‘সংবাদ সংগ্রহের কৌশল বিষয়ে’ জেলার ৫০ জন তরুন সাংবাদিককে প্রশিক্ষন দিয়েছেন।
ঝড়ের সময় তিনি ছুটে গিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কাছে। তুলে ধরেছেন ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের আর্তি। দুর্যোগকালীন মানবিক প্রতিবেদন পত্রিকায় ও টিভিতে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। যা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সাড়া ফেলেছে। পানিবন্দী মানুষের করুন চিত্র তুলে ধরে তিনি। এছাড়াও জেলে, কৃষক, দিন মজুর ও অসহায় নারী নিয়ে রিপোর্ট করেছেন। প্রতিনিয়ত তিনি ছুটে চলেছেন উপকূলের বিপন্ন পথে। এরমধ্যে রামদাসপুর, মদনপুর, মেদুয়া, হাজিপুর, গাজীপুর চর, কচুয়াখালীর চর, কুরকী-মুকরী, চর পাতিলা, ঢালচর, চর জহির উদ্দিন, মাঝের চর, কলাতলীর চর, ঢালচর, চর উড়িল, সিকদারের চর, গাগুরিয়ার চর অন্তত ২৫টি চর ঘুরে রিপোর্ট করেছেন। এসব রিপোর্ট ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক ছোটন সাহা বলেন, আমি এরআগে উপকূল নিয়ে কাজ করিনি। বাংলাদেশের সমগ্র উপকূল নিয়ে কর্মরত উপকূল-সন্ধানী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু ভাইকে দেখে উপকূল নিয়ে কাজ করার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সেই থেকে কাজ শুরু করি। এখনও তাকে অনুসরণ করি। পাঠকদের দোয়া এবং ভালোবাসায় উপকূল নিয়ে আরো বেশী বেশী রিপোর্ট করতে চাই যার মাধ্যমে উপকূল সমগ্র দেশের কাছে আলোকিত হয়ে উঠবে। উপকূল নিয়ে কাজের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
//প্রতিবেদন/২৩০৪২০১৮// |
146cfc18-29d4-4b96-b2d1-0807f4d4fdcb | বরগুনায় বাণিজ্যিক সূর্যমুখী চাষে লাভবান কৃষক
বরগুনা: কৃষি অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল উপকূলীয় জেলা বরগুনায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও এই অঞ্চলের বেশিরভাগ কৃ্ষকের জমি ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় চার পাচ মাস পতিত অবস্থায় পরে থাকত। বর্তমানে সুর্যমুখী ফুলের চাষ করে কৃষি অর্থনীতিতে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। অনেক কম পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করে কৃষক পরিবারগুলো অন্যান্য ফসলের চেয়েও সূর্যমুখী চাষে বেশি লাভবান হয়েছে। তাই কৃষকেরা এগিয়ে এসেছে সূর্যমুখী চাষে। এভাবে দিনে দিনে সূর্যমুখী হয়ে উঠছে কৃষকের জন্য দারুণ এক অর্থকরী ফসল।
উপকূলীয় এই অঞ্চলে এ পর্যন্ত যে কয়টি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে তার বেশিরভাগই এপ্রিলের শেষ ও নভেম্বর মাসে আঘাত হেনেছে। নভেম্বর এর শেষ দিকে সূর্যমুখীর বীজ বপন শুরু হয় এবং মধ্য এপ্রিল থেকে ফসল কাটা হয়। তাই এই ফসল আবাদে ঝুঁকির সম্ভাবনা কম থাকে।
সিডর ও আইলা পরবর্তী সময়ে উপকূলীয় এই অঞ্চলে যখন লবণাক্ততার প্রভাব বেড়ে যায়। তখন সরকারী কৃষি অধিদপ্তরের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা অক্সফ্যাম এবং ব্রাক বিভিন্ন কর্মসূচির অধীনে সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে চাষের আবাদ বাড়াতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় ভাবে ‘কোস্টাল এগ্রো বিজনেস লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান বানিজ্যিকভাবে সুর্যমুখী ফুলের কৃষকদের সাথে চুক্তিভিত্তিক উতপাদনের জন্য তাদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের কাজ শুরু করে। পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে সূর্যমুখী ফুলের বীজ ক্রয় করে স্থানীয় ভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে তেল উৎপাদন করে “সান অয়েল” নামে বাজারজাত করছে। এরই ফলে বরগুনায় সূর্যমুখীর আবাদ ধীরে ধীরে বাড়ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১ হাজার ৫৩২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়।
খুব অল্প দিনে অর্থাৎ ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বীজ থেকে বীজ উৎপাদন সম্ভব। এবং প্রতি একর জমিতে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রকারভেদে লাভ হয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা, যা অন্য কোন ফসলে সম্ভব নয়। বীজে তেল যেমন পাওয়া যায় ভালো, তেমন ভালো তেলের মান। সবচেয়ে বড় কথা তেলের বাজার ভালো। উপূকুলীয় এই অঞ্চলের জমিও সূর্যমুখী চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। তবে সূর্যমুখী চাষের সাফল্য আনতে প্রয়োজন বীজ থেকে তেল আহরণের সহজলভ্য প্রযুক্তি।
বাংলাদেশে ২১ লাখ টন তেল আমদানি করতে বছরে খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। সূর্যমুখী তেল এই আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে এনে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ সূর্যমুখী বীজে তেল থাকে শতকরা ৪০ ভাগ, যেখানে সয়াবিন তেলে থাকে মাত্র ১৬ ভাগ।
কূ্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারজাতকরণে এখনো নানামুখী সমস্যা রয়ে গেছে। অন্যদিকে, কূ্ষকদের সূর্যমুখী চাষের উন্নত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা নেই। প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পেলে এগিয়ে যেতে পারে সূর্যমুখী চাষ, এমনটাই বলছেন কৃষক। সূর্যমুখী থেকে তেলের পাশাপাশি মৌচাষেরও সম্ভাবনা রয়েছে। সূর্যমুখীর ফুল বড় বলে প্রচুর মধু আহরণ সম্ভব। আবার মৌচাষে প্রাকৃতিক পরাগায়নের জন্য সূর্যমুখীর ফলনও হয় বেশি।
বরগুনা সদর উপজেলার ১০নং নলটোনা ইউনিয়নের কৃষক গাজি মাহমুদও আ: ছত্তার জানান, বছরের শুরুতে বৃষ্টি থাকায় অনেক কৃষকই এবার সূর্যমুখীর চাষ করতে পারেনি। তবে গতবারের চেয়েও এবারের ফলন ভাল দেখা যাচ্ছে। যদি কোন ঝড়-বাদল বা দুর্যোগ না হয় তবে আশা করছি অধিক আয় হবে। সূর্যমুখী চাষ আরও লাভজনক হত যদি বরগুনায় আধুনিক প্রযুক্তির একটি তেল শোধনাগার থাকতো।
কৃষকের চোখে নতুন এই স্বপ্ন জাগানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করছেন ‘কোস্টাল অ্যাগ্রো বিজনেস লিমিটেড’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মসুদ আলম। তিনি বলেন, ‘আমরা সিডর ও আইলা পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অক্সফ্যামের সহযোগিতায় সুর্যমুখী ফুলের আবাদ নিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের কাজ করি। পরবর্তীতে আমরা দেখি সূর্যমুখী চাষ এই অঞ্চলের জন্য খুবই উপযোগী এবং লাভজনক। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় বীজ বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে আর এই সমস্যার কথা মাথায় রেখে এবং নতুন এক ব্যবসার উজ্জ্বল সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে প্রতিষ্ঠা করি বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান কোস্টাল অ্যাগ্রো বিজনেস লিমিটেড। আর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু করি কৃষকদের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক সূর্যমুখী ফুলের উৎপাদন এবং উৎপাদিত পণ্য স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে তেল উৎপাদন করে ‘সান অয়েল’ নামে বাজারজাতকরণ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারনে কৃষকদের সহযোগীতার ক্ষেত্রে অপূর্নতা রয়ে গেছে। তাছাড়া আধুনিক প্রযুক্তিতিতে প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্ভব হচ্ছেনা। এক্ষেত্রে যথাযথ সহযোগীতা পেলে সূর্যমুখী ফুলের আবাদের মাধ্যমে এই অঞ্চলের কৃ্ষি অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে; যা জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনার উপ-পরিচালক সাইনুর আজম খান বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি এবং বীজের দাম বেশি থাকায় এ বছর সূর্যমূখী চাষীদের বেশ খানিকটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। একটা সময় বিভিন্ন উন্নয়ন সংগঠন থেকে সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে বীজ, সার এবং নানাবিধ কৃষি সহায়তা দেয়া হত। এখন কৃষকরা নিজেরাই তা চাষ করছে। তবে বর্তমানে এ বীজের দাম প্রতি কেজি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা হওয়ায় তুলনামুলকভাবে অনেক কৃষকের পক্ষে তা কিনে চাষ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সূর্যমুখীর বীজের সহজলভ্যতা এবং স্থানীয়ভাবে একটি আধুনিক তেল পরিশোধনাগারের ব্যবস্থা করা গেলে সূর্যমুখী চাষে চাষীরা আরও আগ্রহী হয়ে উঠতো।’
//প্রতিবেদন/০৯০৫২০১৮// |
e9905ee4-c604-4eb9-ae6d-1a51897c673d | ‘কুকরির জনারণ্যে সম্প্রীতির সুবাতাস’ -আবুল হাসেম মহাজন
-
- ০৪:০৫
- উপকূল সংবাদ, ঘটনাপ্রবাহ, ভোলা জেলা, মধ্য-উপকূল, মুক্তমঞ্চ, মুখোমুখি, শীর্ষ সংবাদ
- ৬
দ্বীপ জেলা ভোলার দক্ষিণের উপজেলা চরফ্যাসনের চরকুকরী মুকরী দ্বিতীয় বারের মতো বরিশাল বিভাগের শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন নির্বাচিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ১১ জুলাই ২০১৮ বুধবার সকালে বরিশালের অশ্বিনী কুমার টাউন হলে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আলোচনা সভায় বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার গোলাম মোস্তফা সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন কুকরী মুকরী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজনের হাতে। কুকরী মুকরী সম্পর্কে কী বলেন ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন? কেমন আছেন কুকরির বাসিন্দারা? উপকূলের প্রান্তিকের এই জনপদ এগিয়েছে কতটা? এই দ্বীপের সম্ভাবনা বিকাশে কী-ই বা তাঁর স্বপ্ন? সাক্ষাতকারে বিস্তারিত-
উপকূল বাংলাদেশ: কুকরি মুকরির মানুষ কেমন আছেন?
আবুল হাসেম মহাজন: কুকরি মুকরির মানুষ ভালো আছেন। এক সময় এখানে বেড়িবাঁধ ছিল না; রাস্তাঘাট ছিল না; শিক্ষার পরিবেশ বলতে কিছুই ছিল না। ২০-২২ বছর আগে এখানে যে মৌসুমী বিয়ে হতো; ছ’মাস এখানে মানুষ এসে বসবাস করতো এবং সেই সময়কালের জন্য একটি বিয়ে করে ফেলতো। এগুলো থেকে আমরা অনেক উত্তরণ হয়ে এসেছি। এখন মৌসুমী বিয়ে নেই। আগে এখানে রাস্তাঘাট ছিল না। সেই থেকে আমরা অনেক উত্তরণ হয়ে আজকে পাকা রাস্তায় পথ চলছি; রেষ্ট হাউস হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়েছে। বিগত দশ বছর পেছনে ফিরে তাকালে দেখবো, এই দ্বীপে হয়তোবা বড়জোর ২০-৩০টি টিনের ঘর ছিল। আর এই ১০-১৫ বছরের ব্যবধানে এখন ১০-১৫টি কুড়েঘর অথবা গোলপাতার ঘরও নেই। এখন প্রায় সবই টিনের ঘর। শিক্ষার ক্ষেত্রে এ দ্বীপ অনেক দূর এগিয়েছে। এ বছরই এখানকার এসএসসি ও দাখিল পর্যায়ে প্রায় ৭০-৮০জন ছেলেমেয়ে উত্তীর্ন হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, মন্দের ভালোর মধ্যে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।
উপকূল বাংলাদেশ: কুকরি মুকরির প্রধান সমস্যাগুলো কী?
আবুল হাসেম মহাজন: এখানকার প্রধান সমস্যা বাল্যবিয়ে। অল্প বয়সেই এখানে মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে। আরেকটি সমস্যা হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লবনাক্ততা বেড়ে গেছে। জোয়ারের পানির সাথে লবনাক্ত পানি আসে। অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা মোটামুটি ভালো; তবে আরও কিছু রাস্তাঘাট ও ব্রীজ কালভার্ট হলে ভালো হয়। দেশ এগিয়ে গেলেও সেই সাথে পাল্লা দিয়ে আমরা ততটা এগোতে পারছি না। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা আশানুরূপ এগোতে পারছি না। এখানে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয়। দাখিল মাদ্রাসাটি এখনও এমপিওভূক্ত হয়নি। এখানে এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশুনার সুবিধার্থে একটি কলেজ হওয়া খুবই জরুরি। অথচ আমরা মাধ্যমিক স্তরেই পূর্নাঙ্গ কিছু করতে পারছি না। এখানে মা-বোনেরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। এখানে ডাক্তার নেই, প্যারামেডিক ডাক্তারও নেই। এখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি দিয়ে। যাদের এখানে দায়িত্ব পালনের জন্য পাঠানো হয়, তারা ওপারে চলে যায়।
উপকূল বাংলাদেশ: দ্বীপ কুকরি মুকরির দুর্যোগ ঝুঁকি কতটা কমানো সম্ভব হয়েছে?
আবুল হাসেম মহাজন: দুর্যোগ ঝুঁকি বলতে যেটা বুঝি, এখনও আমরা সেই দুর্যোগ ঝুঁকিতে আছি। কিছুটা হয়তো হ্রাস পেয়েছে; তবে ঝুঁকি এখনও রয়েই গেছে। এখানে বেড়িবাঁধ নির্মিত হয়েছে। এরফলে ঘূর্ণিঝড়ের সময়কালে মানুষের সমস্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। তারপরও পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত করা যায়নি। সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত এ দ্বীপের ঝুঁকি হ্রাসে সবচেয়ে কাজ করেছে বেড়িবাঁধ ও ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট। কুকরির চারপাশে ঢাল স্বরূপ মানুষকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে বেড়িবাঁধ ও ম্যানগ্রোভ। দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসাবে এখানে যে পরিমাণ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও মাটির কিল্লা থাকা প্রয়োজন, তা এখনও নির্মিত হয়নি।
উপকূল বাংলাদেশ: কুকরিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কী প্রভাব পড়ছে?
আবুল হাসেম মহাজন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইতিমধ্যে এখানে দৃশ্যমান। ৫-১০ বছর আগে এ এলাকায় যে লবনাক্ততা ছিল, সেটা এখন অনেকগুন বেড়ে গেছে। সমুদ্রের পৃষ্ঠদেশ উঁচু হয়েছে বলে আমরা লক্ষ্য করছি। অমাবশ্যা, পূর্ণিমার স্বাভাবিক জোয়ারের পানি অনেক বেড়েছে আগের চেয়ে। বসতি, ফসলি এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। আগের বছরগুলোর তূলনায় দিন দিন পানির স্তর বেড়ে যাচ্ছে বলে আমাদের মনে হয়। আমরা মনে করি, এটা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পাশ্ববর্তী দ্বীপ ইউনিয়ন ঢালচর নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে চরফ্যাসনের মানচিত্র থেকে। সেখানে নদীভাঙণ বেড়েছে তীব্র আকারে। এটাও জলবায়ু পরিবর্তনেরই প্রভাব বলে আমরা মনে করি। কুকরির দক্ষিণ-পশ্চিমে সোনারচর নামে দৃষ্টিনন্দন একটি সৈকত ছিল। গত দু’বছরে ওই সৈকত ভেঙে গেছে। দক্ষিণে শিবচর নামের একটি চর ছিল, সেখানে ছিল ঘন বাগান। জেলেরা সেখানে আশ্রয় নিত। কিন্তু তারা খবর দিয়েছে, শিবচরে এখন আর আশ্রয় নেওয়ার মত অবস্থা নেই। এগুলো সবই আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেই হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।
উপকূল বাংলাদেশ: কুকরি মুকরির সম্ভাবনা কী?
আবুল হাসেম মহাজন: সম্ভাবনার ক্ষেত্রে এখানে পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনাই সবচেয়ে বড়। পর্যটন শিল্প বিকাশ করার ক্ষেত্রে কুকরিকে মূল কেন্দ্র করে পাশ্ববর্তী ঢালচরের তারুয়া সৈকত, দক্ষিণ-পশ্চিমের সোনারচর সৈকত ঘিরে সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন করা যেতে পারে। পর্যটকদের যাতায়াত এবং আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারলে পর্যটন শিল্পের আরও বিকাশ ঘটতে পারে। ইতিমধ্যে কুকরিতে থ্রিস্টার মানের একটি রেস্টহাউস নির্মিত হয়েছে। পর্যটন কর্পোরেশন এখানে কিছু জমি অধিগ্রহন করার প্রক্রিয়া চলছে। এভাবে যোগাযোগ, আবাসন, ইত্যাদির ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হলে পর্যটন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মধ্যে কুকরি এক সম্ভাবনাময়ী অঞ্চল হিসাবে গড়ে উঠবে। এ বিষয়ে ভোলা-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য, বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব-এর ব্যাপক পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা ক্যাবল কারের মাধ্যমে পর্যটকদের আরও ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করতে চাই। কুকরির রাস্তাঘাট উন্নয়নের কাজ চলছে। বাগানের ভেতর দিয়ে নদীর পাড় পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ চলছে। এ কাজ সম্পন্ন হলে চরফ্যাসনের মূল ভ‚-খন্ড থেকে কুকরি আসতে নদীপথে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগবে। এই কাজগুলো হলে পর্যটকেরা খুব সাচ্ছন্দে অল্প সময়ে কুকরিতে আসতে পারবেন। আগামী দিনগুলোতে কুকরিতে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটবে। এখানে পর্যটনের ক্ষেত্রে বিরাট বিপ্লব ঘটবে।
উপকূল বাংলাদেশ: বিগত ১০-১৫ বছরে কুকরির অগ্রগতি কতটা হয়েছে?
আবুল হাসেম মহাজন: এখানে শান্তিপূর্ন রাজনৈতিক সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। সৌহার্দ্য সম্প্রীতি বজায় রাখার মধ্যদিয়ে দ্বীপের মানুষগুলোকে আমরা একই সূতোয় গেঁথে রাখতে পেরেছি। কুকরির যে উন্নয়ন, তা গত দশ বছরের মধ্যেই হয়েছে। এর আগে এখানে কোন উন্নয়ন হয়নি। এখানে এক ইঞ্চি পাকা রাস্তা ছিল না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কুকরির দক্ষিণে মনুরা থেকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হয়েছে। এখন বিভিন্ন দিকের রাস্তা পাকার কাজ চলছে। কুকরির চারিদিকে নির্মিত হয়েছে বেড়িবাঁধ। বিলাসবহুল রেষ্টহাউস নির্মিত হয়েছে। দু’টো মাটির কিল্লা নির্মিত হয়েছে। এখানকার উন্নয়ন এখন চোখে দেখা যায়, সবই দৃশ্যমান। এগুলো সবই হয়েছে এই সরকারের আমলে। দশ বছর আগের কুকরি এবং বর্তমান কুকরির মধ্যে অনেক ফারাক।
উপকূল বাংলাদেশ: কুকরিকে নিয়ে আগামীদিনে কী স্বপ্ন দেখেন?
আবুল হাসেম মহাজন: ছোট্ট একটি দ্বীপ কুকরি। একে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি। এখানকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো আমার প্রধান লক্ষ্য।
উপকূল বাংলাদেশ: সে স্বপ্ন পূরণে কী পরিকল্পনা রয়েছে?
আবুল হাসেম মহাজন: এখানে ইপিজেড করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে। জাহাজ শিল্প স্থাপনে সরকার ৫০০ একর জমির চাহিদা দিয়েছে। আমরা সে জমি দেয়ার চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে ভোলা জেলা প্রশাসক সাইট ভিজিট করেছেন। এখানে জাহাজ শিল্প কারখানা হলে এখানকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে; বেকারত্ব দূর হবে। সেইসঙ্গে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। কুকরি মুকরিকে শিক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে এখানে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা রয়েছে আমার; যাতে এসএসসি সম্পন্ন করে ছেলেমেয়েরা এখানেই এইচএসসি পড়তে পারে। মেয়েরা যাতে লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে পারে; সেই স্বপ্ন আমার রয়েছে। আগামী দিনে আমার সবচেয়ে বড় টার্গেট হচ্ছে, দেশ ও বিশে^র মাঝে এখানকার পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো। সে ক্ষেত্রে আমাদের সরকারের মন্ত্রী মহোদয়ের পরিকল্পনা রয়েছে, ক্যাবল কার থেকে শুরু করে আরও হোটেল-মোটেল এবং বিভিন্ন রাইডস স্থাপনের মাধ্যমে কুকরিকে দৃষ্টিনন্দন করা। এরফলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো। আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগে এই অঞ্চলে একটি মোটরবাইক ছিল। আজকে এখানে প্রায় ৩০/৪০টি মোটরবাইক আছে। অটো চলছে, কাঁকড়া ট্রলি চলছে। আমি আশাকরি, কুকরি এক সময় উপশহর হবে এবং পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হবে। এখানকার মানুষের অবস্থা বদলাবে, কাজ পাবে। এখানে উন্নতমানের নৌযান চালু হবে, তাতেও এখানকার মানুষ কাজ করবে। এক সময় উর্ধ্বতন মহলের কেউ কুকরি আসতে চাইলে ভোলার ভেদুরিয়া থেকে স্পীডবোট ভাড়া আনতে হতো। এখন এখানেই স্পীডবোট চলে। প্রথমে আমি ৫০ ভাগ টাকা বিনিয়োগ করে একজন চালককে দিয়ে স্পীডবোট চালু করি। লক্ষ্য ছিল, মানুষের জরুরি যাতায়াত এবং মুমূর্ষু রোগীদের যথাসময়ে ডাক্তারের কাছে পৌঁছানো। এখন কুকরি-কচ্ছপিয়া লাইসে ১০-১২টি স্পীডবোট চলে। শিক্ষা-স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আমি আরও অনেক উন্নয়ন চাই। কোন প্রাইভেট সেক্টরের সহায়তা পেলে এখানকার মানুষগুলোর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারতাম। একবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। প্রতিশ্রুতিও পাওয়া গিয়েছিল সেখান থেকে। কিন্তু পরবর্তীতে আর হয়নি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতকে বিকশিত করে কুকরি মুকরিকে আমি আরও আধুনিক জনপদে রূপান্তরিত করতে চাই।
//উপকূল বাংলাদেশ/১২০৭২০১৮// |
679c2065-62b0-428c-8c85-8afc6858eaf0 | উপকূল দিবসের দাবি
-
- ০১:০৩
- উপকূল সংবাদ, ঘটনাপ্রবাহ, জাতীয়-উপকূল, শীর্ষ সংবাদ
- ৯
‘ভয়াল ১২ নভেম্বর’ আঁতকে ওঠা একটি দিনের নাম, মহাপ্রলয়ের নাম। ১৯৭০ সালের এই প্রলয় আজো বিশ্ব ইতিহাস। বছর ঘুরে আবার এসেছে সেই শোকের দিন।
সেদিন উপকূল পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। এক রাতের প্রলয়ে প্রাণ হারিয়েছিল দশ লক্ষাধিক মানুষ। পুকুর-ডোবা, খাল-বিল এমনকি গাছের ডালে লাশ ঝুলে থাকার দৃশ্য দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বহু মানুষ সব হারিয়ে পথে বসেছিলেন।
‘ভোলা সাইক্লোন’ নামের এই ঘূর্ণিঝড়টি প্রচন্ড শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করে। যথাযথভাবে আবহাওয়া বার্তা পাওয়া যায়নি, ছিল না আশ্রয়কেন্দ্র, বেড়িবাঁধ। রাস্তাঘাটের ছিল নাজুক অবস্থা। এরফলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। জাতিসংঘ এই ঘূর্ণিঝড়কে পৃথিবীর ইতিহাসে এ যাবৎকালে সবচেয়ে বিধ্বংসী বলে আখ্যায়িত করেছে।
দাবি উঠেছে, ১২ নভেম্বরই হোক উপকূলবাসীর দিন, উপকূল দিবস। ২০১৭ সাল থেকে সমগ্র উপকূল জুড়ে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং বিভিন্ন স্তরের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ প্রস্তাবিত এই দিবসের পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। একটি দিবস উপকূলকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে। উপকূল সুরক্ষার কথা যেমন হতে পারে, তেমনি জনগোষ্ঠীর অধিকার ও ন্যায্যতার কথাও আলোচনা হতে পারে এই দিবসে। আবার সেদিনের প্রয়াত মানুষদের স্মরণও হতে পারে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন জনপদের বয়সী ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপ করে সেদিনের ভয়াবহতা ধারণা করা যায়। তারা বলেছেন, হঠাৎ করে কীভাবে পানি বেড়ে গেছে তা কেউ বলতে পারেন না। দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে আসা প্রবল বাতাসের সঙ্গে ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, সেইসঙ্গে বাড়তে থাকে পানি। মানুষগুলো প্রথমে ঘরের ভিটিতে, পরে ঘরের মাচায়, এরপর গাছের চালায় আশ্রয় নেয়। পানির প্রবল তোড়ে ঘরের চালা ভাসিয়ে নিয়ে বহু মানুষ ভেসে যায়। অনেকে ঘরের চালার ওপর ভেসে বাঁচার চেষ্টা করেছে, অনেকে আবার গাছের ডাল ধরে বাঁচার চেষ্টা করেছেন। প্রায় ১৭-১৮ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায় গোটা উপকূল। এ অবস্থা দীর্ঘক্ষণ চলার পর বৃষ্টি ও বাতাস থেমে যায়। সকলে ভেবেছেন ঝড় থেমে গেছে। কিন্তু খানিক বিরতির পর উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আরও তীব্র বেগে আসা ঝড়ো হাওয়ায় সব ভাসিয়ে নেয়। ভাটার টানে পানি নেমে যায় সমুদ্রে। সেইসঙ্গে ভেসে যায় মানুষজন, গবাদি পশু, ঘরবাড়ি। পরেরদিন ভোরে পুব আকাশে ঝকঝকে সূর্য উঁকি দিলে ভয়াল চিত্র স্পষ্ট হতে থাকে। চারিদিকে চোখে পড়ে শুধু লাশ আর লাশ। বেঁচে থাকা মানুষেরা অনেকটা মৃতের মতোই বেঁচেছিলেন।
দ্বীপ জেলা ভোলার তজুমদ্দিনের শশীগঞ্জের বাসিন্দা মিজানুর রহমান নজু, যার বয়স এখন ৬০ বছর। ‘৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। হাকিমুদ্দিন প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পানির প্রবল তোড়ে ঘর ভেসে যাওয়ার পর একটি আমগাছ ধরার সুযোগ পাই। ওই আমগাছে থাকা ৭জন প্রায় ২ঘন্টা পানির সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। ভোরে আমগাছ থেকে নেমে আর বাড়িঘর চিনতে পারছিলেন না। নিথর দাঁড়িয়ে থাকেন। দু’এক কিলোমিটারের মধ্যে কোন বাড়িঘর দেখতে পাননি। তিনি বলেন, আমাদের কোন ধরণের প্রস্তুতি ছিল না। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাইনি। আশ্রয়ের কোন ব্যবস্থা ছিল না। বেড়িবাঁধ থাকলেও তা ধ্বসে গিয়ে পানি প্রবেশ করে। কীভাবে যে সেই বিপদ সামাল দিয়েছি, তা জানিনা। আমাদের আবার নতুন করে শুরু করতে হয়েছে।
‘৭০-এর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে চরম সংকট নেমে আসে উপকূলীয় জনজীবনে। বহু মানুষ সারাজীবনের গচ্ছিত সহায়-সম্পদ হারিয়ে পথে বসে। পরিবারের সকলকে হারিয়ে অনেকে নির্বাক হয়ে যায়। অধিকাংশ মানুষ আবার শূন্য থেকে জীবন শুরু করে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার থেকে যথাযথভাবে সাহায্য সহযোগিতা আসেনি। ঘূর্ণিঝড়ের এক সপ্তাহেও উপকূলের বিপন্ন এলাকার অনেক স্থানে পৌঁছেনি ত্রাণ সহায়তা। রোগবালাই দেখা দিলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল অপ্রতূল। শিশুদের অনেকেই ঝড়ে বেঁচে থাকলেও চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। বহু বাড়িতে পুরুষেরা বেঁচে থাকলেও নারীরা বেঁচেছিলেন না। ফলে ঘরের কাজ করতে গিয়ে চরম সংকটে পড়েন বেঁচে থাকা পুরুষেরা। বেঁচে থাকা মানুষেরা অতিকষ্টে আবার নতুন করে জীবন শুরু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার ওপর দিয়ে মহাপ্রলয় বয়ে গেলেও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য পরিচালনায় চরম অবহেলা দেখায়। সংবাদপত্রের সূত্র এবং ঘূর্ণিঝড় কাভারকারী রিপোর্টারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ওই সময়ে উপদ্রুত এলাকার মানুষ যথাযথভাবে ত্রাণ পায়নি। দিনের পর দিন না খেয়ে থেকেছে বহু মানুষ। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট উপকূলে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আসেন ১৪দিন পরে। এসময় তিনি মাত্র ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলে বিপন্ন মানুষেরা তা প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীতে বিদেশি সংস্থার পক্ষ থেকে ত্রাণ হিসাবে খাবার, শীতবস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরণের উপকরণ আসে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের ১৭টি আসনের ‘৭০-এর সাধারণ নির্বাচন স্থগিত হয়। এসব আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ‘৭১-এর ১৭ জানুয়ারি।
তথ্যসূত্রগুলো বলছে, ‘৭০-এর ওই ঘূর্ণিঝড়টির উৎপত্তি হয় সে বছরের ৭ নভেম্বর এবং বিলুপ্ত হয় ১৩ নভেম্বর। ঘূর্ণিঝড়ে প্রথম বাতাস আসে দক্ষিণ-পূর্ব কোন থেকে। খানিক বিরতির পর দ্বিতীয় দফা প্রবল বাতাস আসে পশ্চিম-উত্তর কোন থেকে। দ্বিতীয় দফা বাতাসের সঙ্গে ছিল প্রবল বৃষ্টি। বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ছিল খুবই তীব্র। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। তখন ছিল রমজান মাস। ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় উপকূলের ভোলা, মনপুরা, তজুমদ্দিন, দৌলতখান, চরফ্যাসন, ঢালচর, কুকরি মুকরি, হাতিয়া, রামগতি, চর আব্দুল্লাহ, সন্দ্বীপ, ঢালচর, চর জব্বার, বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম। ঘূর্ণিঝড়ে সমুদ্র তীরের উপজেলা ভোলার তজুমদ্দিনের ৪৬ শতাংশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ১৬৭০০০ মানুষের মধ্যে জীবিত ছিলেন মাত্র ৭৭০০০ মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘন্টায় ১৮৫ কিলোমিটার (তিন মিনিট স্থিতি), ঘন্টায় ২০৫ কিলোমিটার (এক মিনিট স্থিতি)।
ঘূণিঝড়ের স্মৃতিচারণ বিষয়ক নিবন্ধে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা তোফায়েল আহমেদ উল্লেখ করেন, ‘১২ নভেম্বর সকালে আমি নদীর পাড়ে গিয়ে অবাক ও বিস্মিত হলাম। শুধু কাতারে কাতারে মানুষের মৃতদেহ। আমি দিশাহারা হয়ে গেলাম। এখনো স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে শিবপুর ইউনিয়নে রতনপুর বাজারের পুকুর পাড়ে শত শত লোককে দাফন করার দৃশ্য। এত মৃতদেহ যে, দাফন করে আর কুলাতে পারছি না। যতদূর যাই শুধু মানুষের হাহাকার আর ক্রন্দন। এই শিবপুর ইউনিয়নে একটা বাড়ি, যেখানে ৯০ জন লোক ছিল। কিন্তু বেঁচে ছিলেন মাত্র ৩ জন। সবাই মৃত্যুবরণ করেছে। যখন তজমুদ্দিনের খবর পাই তখন শুনি, সেখানকার ৪০ শতাংশ লোকের মৃত্যু ঘটেছে। যে দাসের হাটে জনসভা করার কথা ছিল, সেখানে কিছুই ছিল না।’
উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা এ এইচ এম নোমান স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ে রামগতি উপজেলার চর আব্দুল্লাহ ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মৎসজীবী অধ্যুষিত গোটা ইউনিয়ন প্রায় নারী-শিশু শূন্য হয়ে পড়ে। চর আব্দুল্লাহর বাসিন্দা ইয়াসিন ভূঁঞা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের সহকারী সচিব গর্ভনর হাউজে চাকরিরত। তার বাবা-দাদীসহ বাড়ির প্রায় সকলেই ভেসে যায় পানির তোড়ে। হাজী আলী হোসেনের ষোড়শী মেয়ে ঢেউয়ের টানে কিভাবে হাত থেকে ছিটকে চলে গেল তা বলতে পারেন না। চর কোলাকোপা এলাকায় সিএসপি আবদুর রব চৌধুরীর ২২ জন আত্মীয়-স্বজনকে জলোচ্ছ্বাসের রাতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তারা আর দিনের আলো দেখতে পাননি। এ ধরনের হাজারো করুণ ও নির্মম কাহিনী রেখে গেছে ‘৭০-এর ১২ নভেম্বর।
প্রয়াত সাংবাদিক এম সানাউল্লাহ্ নূরী তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তানের হয়ে ‘৭০-এর ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় কাভার করেছেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘রামগতি বাজারের নিকটবর্তী চর এলাকায় পৌছেই যে স্তুপীকৃত লাশ এবং মৃত গবাদি পশুর চিত্র দেখলাম, তা ভাষায় অবর্ণনীয়। চর বাদাম, চর সীতা এবং চর জব্বরে ধান ক্ষেতগুলোতে নাকে মুখে লোনা পানি লেপ্টানো হাজার হাজার লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেছি। সাগরে ভাসতে দেখেছি অসংখ্য লাশ। রামগতি, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, ভোলা এবং পটুয়াখালী পরিণত হয়েছিলো ধ্বংসস্তুপে। একটি গাছের ৩০ ফুট উঁচু মাথায় অসহায় দুর্গত কুকুরকে দেখেছি হাহাকার করতে। কোথাও পানি উঠেছে ৪০ ফুট ওপরে। গোটা উপকূল অঞ্চলে প্রায় অর্ধকোটি লোক মৃত্যুবরণ করেছে। ১২৮৩ সনের ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে বহুগুণে ভয়াবহ ছিলো ‘৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়।’
‘৭০-এর ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষেরা আজও সেদিনের কথা মনে করতে পারছেন না। প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপে তাঁরা এখনও শিহরিয়ে ওঠেন। সমগ্র উপকূলে এমন পানির উচ্চতা তারা এর আগে আর কখনো দেখেনি। বিষাক্ত সাপসহ অন্যান্য সরীসৃপ প্রাণির সঙ্গে একসঙ্গে বসবাস করেছে বহু মানুষ। ভয়াল সেই রাতের মুখোমুখি উপকূলের মানুষেরা মনে করেন, এখনও অরক্ষিত উপকূলের বহু এলাকা। শক্ত এবং উঁচু বেড়িবাঁধের দাবি তাঁদের। তারা চায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র। সকল স্কুলের ভবন আশ্রয়কেন্দ্রের মত করে তৈরি করা হলে অনেক মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। একইসঙ্গে রাস্তাঘাট নির্মাণের ওপর জোর দিতে হবে।
বছর ঘুরে বার বার আসে ১২ নভেম্বর। এবার শক্তিশালী এই প্রলয়ের ৪৮তম বার্ষিকী। এরইমধ্যে ঝাপসা হতে চলেছে স্মৃতি। সংবাদপত্রে সেইদিনের খবরটিও ক্রমেই ছোট হতে চলেছে। আমরা সেদিনের স্মৃতি ভুলতে চাই না। সেই প্রলয় থেকে শিক্ষা নিতে চাই। আরও জোরদার প্রস্তুতি নিতে চাই। আসুন, ১২ নভেম্বর উপকূল দিবসের পক্ষে দাঁড়াই। উপকূলবাসীর জন্য হোক একটি দিন। |
e33cb52c-9aa7-4c8d-9fa4-002f27746044 | ড. আতিউর রহমান, ঘুরে দাঁড়ানো জীবনের গল্প
-
- ১৭:৫৩
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, জাতীয়-উপকূল, প্রধান প্রতিবেদন, মুক্তমঞ্চ, মুখোমুখি, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ১
ঢাকা : নিজের জীবনের গল্পটা বলতে বেশ সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তাঁর জীবনের গল্প থেকে অনেককিছুই শেখার আছে। দারিদ্র্যতা থাকতে পারে, তিনবেলা ভাতও না জুটতে পারে। বই কিংবা জামা কাপড় কেনার টাকাও না থাকতে পারে। পড়াশুনার স্পৃহা থাকলে এগোনো যায় অনেক দূর, পাওয়া যায় প্রতিষ্ঠা। ড. আতিউর রহমান তা প্রমাণ করেছেন স্তরে স্তরে। কোন বাঁধাই যে লেখাপড়ার পথে অন্তরায় হতে পারে না, তার প্রমাণ এই ব্যক্তিত্ব। তাঁর মুখ থেকেই শোনা যায় তাঁর জীবনের গল্পটা।
আমার জন্ম জামালপুর জেলার এক অজপাড়াগাঁয়ে। ১৪ কিলোমিটার দূরের শহরে যেতে হতো পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চড়ে। পুরো গ্রামের মধ্যে একমাত্র মেট্রিক পাস ছিলেন আমার চাচা মফিজউদ্দিন। আমার বাবা একজন অতি দরিদ্র ভূমিহীন কৃষক। আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো আমাদের।
আমার দাদার আর্থিক অবস্থা ছিলো মোটামুটি। কিন্তু তিনি আমার বাবাকে তাঁর বাড়িতে ঠাঁই দেননি। দাদার বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটা ছনের ঘরে আমরা এতগুলো ভাই-বোন আর বাবা-মা থাকতাম। মা তাঁর বাবার বাড়ি থেকে নানার সম্পত্তির সামান্য অংশ পেয়েছিলেন। তাতে তিন বিঘা জমি কেনা হয়। চাষাবাদের জন্য অনুপযুক্ত ওই জমিতে বহু কষ্টে বাবা যা ফলাতেন, তাতে বছরে ৫/৬ মাসের খাবার জুটতো। দারিদ্র্য কী জিনিস, তা আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি- খাবার নেই, পরনের কাপড় নেই; কী এক অবস্থা !
আমার মা সামান্য লেখাপড়া জানতেন। তাঁর কাছেই আমার পড়াশোনার হাতেখড়ি। তারপর বাড়ির পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কিন্তু আমার পরিবারে এতটাই অভাব যে, আমি যখন তৃতীয় শ্রেণীতে উঠলাম, তখন আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলো না। বড় ভাই আরো আগে স্কুল ছেড়ে কাজে ঢুকেছেন। আমাকেও লেখাপড়া ছেড়ে রোজগারের পথে নামতে হলো।
আমাদের একটা গাভী আর কয়েকটা খাসি ছিল। আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওগুলো মাঠে চরাতাম। বিকেল বেলা গাভীর দুধ নিয়ে বাজারে গিয়ে বিক্রি করতাম। এভাবে দুই ভাই মিলে যা আয় করতাম, তাতে কোনরকমে দিন কাটছিল। কিছুদিন চলার পর দুধ বিক্রির আয় থেকে সঞ্চিত আট টাকা দিয়ে আমি পান-বিড়ির দোকান দেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে বসতাম। পড়াশোনা তো বন্ধই, আদৌ করবো- সেই স্বপ্নও ছিল না !
এক বিকেলে বড় ভাই বললেন, আজ স্কুল মাঠে নাটক হবে। স্পষ্ট মনে আছে, তখন আমার গায়ে দেওয়ার মতো কোন জামা নেই। খালি গা আর লুঙ্গি পরে আমি ভাইয়ের সঙ্গে নাটক দেখতে চলেছি। স্কুলে পৌঁছে আমি তো বিস্ময়ে হতবাক ! চারদিকে এত আনন্দময় চমৎকার পরিবেশ ! আমার মনে হলো, আমিও তো আর সবার মতোই হতে পারতাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, আমাকে আবার স্কুলে ফিরে আসতে হবে।
নাটক দেখে বাড়ি ফেরার পথে বড় ভাইকে বললাম, আমি কি আবার স্কুলে ফিরে আসতে পারি না ? আমার বলার ভঙ্গি বা করুণ চাহনি দেখেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণেই হোক কথাটা ভাইয়ের মনে ধরলো। তিনি বললেন, ঠিক আছে কাল হেডস্যারের সঙ্গে আলাপ করবো।
পরদিন দুই ভাই আবার স্কুলে গেলাম। বড় ভাই আমাকে হেডস্যারের রুমের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ভিতরে গেলেন। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট শুনছি, ভাই বলছেন আমাকে যেন বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগটুকু দেওয়া হয়। কিন্তু হেডস্যার অবজ্ঞার ভঙ্গিতে বললেন, সবাইকে দিয়ে কি লেখাপড়া হয় ! স্যারের কথা শুনে আমার মাথা নিচু হয়ে গেল। যতখানি আশা নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম, স্যারের এক কথাতেই সব ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল। তবু বড় ভাই অনেক পীড়াপীড়ি করে আমার পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি যোগাড় করলেন। পরীক্ষার তখন আর মাত্র তিন মাস বাকি। বাড়ি ফিরে মাকে বললাম, আমাকে তিন মাসের ছুটি দিতে হবে। আমি আর এখানে থাকবো না। কারণ ঘরে খাবার নেই, পরনে কাপড় নেই- আমার কোন বইও নেই, কিন্তু আমাকে পরীক্ষায় পাস করতে হবে।
মা বললেন, কোথায় যাবি ? বললাম, আমার এককালের সহপাঠী এবং এখন ক্লাসের ফার্স্টবয় মোজাম্মেলের বাড়িতে যাবো। ওর মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। যে ক’দিন কথা বলেছি, তাতে করে খুব ভালো মানুষ বলে মনে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাকে উনি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।
দুরু দুরু মনে মোজাম্মেলের বাড়ি গেলাম। সবকিছু খুলে বলতেই খালাম্মা সানন্দে রাজি হলেন। আমার খাবার আর আশ্রয় জুটলো; শুরু হলো নতুন জীবন। নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলাম। প্রতিক্ষণেই হেডস্যারের সেই অবজ্ঞাসূচক কথা মনে পড়ে যায়, জেদ কাজ করে মনে; আরো ভালো করে পড়াশোনা করি।
যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হলো। আমি এক-একটি পরীক্ষা শেষ করছি আর ক্রমেই যেন উজ্জীবিত হচ্ছি। আমার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাচ্ছে। ফল প্রকাশের দিন আমি স্কুলে গিয়ে প্রথম সারিতে বসলাম। হেডস্যার ফলাফল নিয়ে এলেন। আমি লক্ষ্য করলাম, পড়তে গিয়ে তিনি কেমন যেন দ্বিধান্বিত। আড়চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছেন। তারপর ফল ঘোষণা করলেন। আমি প্রথম হয়েছি ! খবর শুনে বড় ভাই আনন্দে কেঁদে ফেললেন। শুধু আমি নির্বিকার- যেন এটাই হওয়ার কথা ছিল।
বাড়ি ফেরার পথে সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। আমি আর আমার ভাই গর্বিত ভঙ্গিতে হেঁটে আসছি। আর পিছনে এক দল ছেলেমেয়ে আমাকে নিয়ে হৈ চৈ করছে, স্লোগান দিচ্ছে। সারা গাঁয়ে সাড়া পড়ে গেল ! আমার নিরক্ষর বাবা, যাঁর কাছে ফার্স্ট আর লাস্ট একই কথা- তিনিও আনন্দে আত্মহারা; শুধু এইটুকু বুঝলেন যে, ছেলে বিশেষ কিছু একটা করেছে। যখন শুনলেন আমি ওপরের কাসে উঠেছি, নতুন বই লাগবে, পরদিনই ঘরের খাসিটা হাটে নিয়ে গিয়ে ১২ টাকায় বিক্রি করে দিলেন। তারপর আমাকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুর গেলেন। সেখানকার নবনূর লাইব্রেরি থেকে নতুন বই কিনলাম।
আমার জীবনযাত্রা এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। আমি রোজ স্কুলে যাই। অবসরে সংসারের কাজ করি। ইতোমধ্যে স্যারদের সুনজরে পড়ে গেছি। ফয়েজ মৌলভী স্যার আমাকে তাঁর সন্তানের মতো দেখাশুনা করতে লাগলেন। সবার আদর, যত্ন, স্নেহে আমি ফার্স্ট হয়েই পঞ্চম শ্রেণীতে উঠলাম। এতদিনে গ্রামের একমাত্র মেট্রিক পাস মফিজউদ্দিন চাচা আমার খোঁজ নিলেন। তাঁর বাড়িতে আমার আশ্রয় জুটলো।
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে আমি দিঘপাইত জুনিয়র হাইস্কুলে ভর্তি হই। চাচা ওই স্কুলের শিক্ষক। অন্য শিক্ষকরাও আমার সংগ্রামের কথা জানতেন। তাই সবার বাড়তি আদর-ভালোবাসা পেতাম।
আমি যখন সপ্তম শ্রেণী পেরিয়ে অষ্টম শ্রেণীতে উঠবো, তখন চাচা একদিন কোত্থেকে যেন একটা বিজ্ঞাপন কেটে নিয়ে এসে আমাকে দেখালেন। ওইটা ছিল ক্যাডেট কলেজে ভর্তির বিজ্ঞাপন। যথাসময়ে ফরম পুরণ করে পাঠালাম। এখানে বলা দরকার, আমার নাম ছিল আতাউর রহমান। কিন্তু ক্যাডেট কলেজের ভর্তি ফরমে স্কুলের হেডস্যার আমার নাম আতিউর রহমান লিখে চাচাকে বলেছিলেন, এই ছেলে একদিন অনেক বড় কিছু হবে। দেশে অনেক আতাউর আছে। ওর নামটা একটু আলাদা হওয়া দরকার; তাই আতিউর করে দিলাম।
আমি রাত জেগে পড়াশোনা করে প্রস্তুতি নিলাম। নির্ধারিত দিনে চাচার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে রওনা হলাম। ওই আমার জীবনে প্রথম ময়মনসিংহ যাওয়া। গিয়ে সবকিছু দেখে তো চক্ষু চড়কগাছ ! এত এত ছেলের মধ্যে আমিই কেবল পায়জামা আর স্পঞ্জ পরে এসেছি ! আমার মনে হলো, না আসাটাই ভালো ছিল। অহেতুক কষ্ট করলাম। যাই হোক পরীক্ষা দিলাম; ভাবলাম হবে না। কিন্তু দুই মাস পর চিঠি পেলাম, আমি নির্বাচিত হয়েছি। এখন চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যেতে হবে।
সবাই খুব খুশি; কেবল আমিই হতাশ। আমার একটা প্যান্ট নেই, যেটা পরে যাবো। শেষে স্কুলের কেরানি কানাই লাল বিশ্বাসের ফুলপ্যান্টটা ধার করলাম। আর একটা শার্ট যোগাড় হলো। আমি আর চাচা অচেনা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলাম। চাচা শিখিয়ে দিলেন, মৌখিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে আমি যেন দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বলি: ম্যা আই কাম ইন স্যার ? ঠিকমতোই বললাম। তবে এত উচ্চস্বরে বললাম যে, উপস্থিত সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
পরীক্ষকদের একজন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ এম. ডাব্লিউ. পিট আমাকে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে সবকিছু আঁচ করে ফেললেন। পরম স্নেহে তিনি আমাকে বসালেন। মুহূর্তের মধ্যে তিনি আমার খুব আপন হয়ে গেলেন। আমার মনে হলো, তিনি থাকলে আমার কোন ভয় নেই। পিট স্যার আমার লিখিত পরীক্ষার খাতায় চোখ বুলিয়ে নিলেন। তারপর অন্য পরীক্ষকদের সঙ্গে ইংরেজিতে কী-সব আলাপ করলেন। আমি সবটা না বুঝলেও আঁচ করতে পারলাম যে, আমাকে তাঁদের পছন্দ হয়েছে। তবে তাঁরা কিছুই বললেন না। পরদিন ঢাকা শহর ঘুরে দেখে বাড়ি ফিরে এলাম। যথারীতি পড়াশোনায় মনোনিবেশ করলাম। কারণ আমি ধরেই নিয়েছি, আমার চান্স হবে না।
হঠাৎ তিন মাস পর চিঠি এলো। আমি চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছি। মাসে ১৫০ টাকা বেতন লাগবে। এর মধ্যে ১০০ টাকা বৃত্তি দেওয়া হবে, বাকি ৫০ টাকা আমার পরিবারকে যোগান দিতে হবে। চিঠি পড়ে মন ভেঙে গেল। যেখানে আমার পরিবারের তিনবেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা নেই, আমি চাচার বাড়িতে মানুষ হচ্ছি, সেখানে প্রতিমাসে ৫০ টাকা বেতন যোগানোর কথা চিন্তাও করা যায় না !
এই যখন অবস্থা, তখন প্রথমবারের মতো আমার দাদা সরব হলেন। এত বছর পর নাতির (আমার) খোঁজ নিলেন। আমাকে অন্য চাচাদের কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, তোমরা থাকতে নাতি আমার এত ভালো সুযোগ পেয়েও পড়তে পারবে না ? কিন্তু তাঁদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো ছিল না। তাঁরা বললেন, একবার না হয় ৫০ টাকা যোগাড় করে দেবো, কিন্তু প্রতি মাসে তো সম্ভব নয়। দাদাও বিষয়টা বুঝলেন।
আমি আর কোন আশার আলো দেখতে না পেয়ে সেই ফয়েজ মৌলভী স্যারের কাছে গেলাম। তিনি বললেন, আমি থাকতে কোন চিন্তা করবে না। পরদিন আরো দুইজন সহকর্মী আর আমাকে নিয়ে তিনি হাটে গেলেন। সেখানে গামছা পেতে দোকানে দোকানে ঘুরলেন। সবাইকে বিস্তারিত বলে সাহায্য চাইলেন। সবাই সাধ্য মতো আট আনা, চার আনা, এক টাকা, দুই টাকা দিলেন। সব মিলিয়ে ১৫০ টাকা হলো। আর চাচারা দিলেন ৫০ টাকা। এই সামান্য টাকা সম্বল করে আমি মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হলাম। যাতায়াত খরচ বাদ দিয়ে আমি ১৫০ টাকায় তিন মাসের বেতন পরিশোধ করলাম। শুরু হলো অন্য এক জীবন।
প্রথম দিনেই এম. ডাব্লিউ. পিট স্যার আমাকে দেখতে এলেন। আমি সবকিছু খুলে বললাম। আরো জানালাম যে, যেহেতু আমার আর বেতন দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাই তিন মাস পর ক্যাডেট কলেজ ছেড়ে চলে যেতে হবে। সব শুনে স্যার আমার বিষয়টা বোর্ড মিটিঙে তুললেন এবং পুরো ১৫০ টাকাই বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিলেন। সেই থেকে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এস.এস.সি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম স্থান অধিকার করলাম এবং আরো অনেক সাফল্যের মুকুট যোগ হলো।
আমার জীবনটা সাধারণ মানুষের অনুদানে ভরপুর। পরবর্তীকালে আমি আমার এলাকায় স্কুল করেছি, কলেজ করেছি। যখন যাকে যতটা পারি, সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতাও করি। কিন্তু সেই যে হাট থেকে তোলা ১৫০ টাকা; সেই ঋণ আজও শোধ হয়নি। আমার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করলেও সেই ঋণ শোধ হবে না!
(অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমানের নিজের ভাষায় তাঁর জীবন কথা) |
090c0af2-d2d2-474b-b2ba-a4e7a37e40bb | ভিশন:
মিশন:
কৌশলগত উদ্দেশ্য:
১) দেশের সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত উচ্চ গতির ইলেক্ট্রনিক্স সংযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টি করা।
২) সারা দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে যথাযথ অবকাঠামো সৃষ্টি করা।
৩) সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডের সমন্বয়সাধন।
৪) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো হতে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের উদ্দেশ্য
কার্যকর রক্ষণাবেক্ষন।
৫) সরকারি পর্যায়ে দক্ষ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রোফেশনাল সৃষ্টির লক্ষ্যে আইসিটি সার্ভিস সৃষ্টি।
৬) দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির জন্য প্রশিক্ষিত জনবলের সক্ষমতা বৃদ্ধি।
৭) সরকার ও জনগনের সকল স্তরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি জ্ঞান সম্প্রসারণ।
8) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট আইন, নীতিমালা, গাইডলাইন ও প্রমিতকরণ প্রস্তুতকরণ।
৯) আইসিটি সেবা ও পণ্যের ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ইন্টার-অপারেবিলিটি সৃষ্টি ও রক্ষণাবেক্ষন।
১০)গবেষণা, নিত্য-নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং প্রয়োগে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান।
কার্যাবলী:
১) সরকারের সকল পর্যায়ে আইসিটি’র ব্যবহার ও প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ ও সমন্বয় সাধন।
২) মাঠ পর্যায় পর্যন্ত সকল দপ্তরে আইসিটি’র উপযুক্ত অবকাঠামো সৃষ্টিতে সহায়তা প্রদান, রক্ষণাবেক্ষণ
এবং সাপোর্ট প্রদান।
৩) সকল পর্যায়ের সরকারি দপ্তরে পেশাগত দক্ষতাসম্পন্ন লোকবল নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন
এবং বদলীকরণ।
৪) সকল পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির কারিগরী ও বিশেষায়িত জ্ঞান হস্তান্তর।
৫) সরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনবলের সমতা উন্নয়নে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
৬) তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট জনবলের সমতা উন্নয়নে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন
৭) তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত জনগণকে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সেবা প্রদানে উদ্যোগ গ্রহণ
এবং এতদ্বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ, বিতরণ ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা।
৮) যন্ত্রপাতি ইত্যাদির চাহিদা, মান ও ইন্টারঅপারেটিবিলিটি নিশ্চিতকরণ।
৯) সকল পর্যায়ে আধুনিক প্রযুক্তি আত্মীকরণে গবেষণা, উন্নয়ন ও সহায়তা প্রদান।
১০) অধিদপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মেধা, অভিজ্ঞতা, যোগ্যতার যথাযথ
মূল্যায়নের মাধ্যমে যথাযথ মর্যাদা প্রদান ও স্বার্থ সংরক্ষণ।
মাননীয় মন্ত্রী
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী
সচিব
মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
100000 |
ef227c2d-8316-4b6e-b38f-693edcea96ef | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
383da525-47f1-4c82-a655-b6bfacdcd72e | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
d872d4ce-807e-46b3-a2bb-72e26c51081e | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
1c8d65e9-9d0c-464c-afb3-706b18c88966 | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
cb8d510a-e842-4da3-a986-0e33e79a3e88 | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
bacf8049-fe06-4e87-a4c5-2815f570689e | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
e09592ad-570a-4037-ba3b-70699e00aeaa | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
0048a1b3-3ce7-4444-8d65-b2253a45ddb9 | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
f4b7e8bd-d7bb-4971-9f13-661a3642e34e | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
3fb28a5c-7a36-40b5-b90b-97538796a6be | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
966a332b-ce8a-4c0b-a7f3-230adaf29754 | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
be4e3376-9bc0-4b40-9a11-751207637135 | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
b94e4916-6163-429c-b592-429b5536c0e9 | Bangladesh Merchant Shipping Ordinance,1983 এর অধীনে প্রণীত ” বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘণ্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১ এর বিধি-৩৭ অনুসারে ডেক ক্যাডেট এবং ইঞ্জিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণ ও নিয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নবর্নি ত শর্তসমূহ পূরণ করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) বয়স সর্বনিম্ন ১৮ বত্সর এবং সর্বোচ্চ ২৫ বত্সর;
(খ) এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর অথবা জি.পি.এ-৩.৫০ প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে এবং এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পদার্থ বিদ্যা ও গণিত সহ প্রথম বিভাগ অর্থাত্ ৬০% নম্বর বা জি.পি.এ ৩.৫০ থাকিতে হইবে এবং পদার্থ বিদ্যা ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে ৬০% নম্বর এবং ইংরেজী বিষয়ে ৫০% নম্বর প্রাপ্ত হইয়া উত্তীর্ণ হইতে হইবে; ইংরেজী ৫০% নম্বর বা জি.পি.এ-৩.০০ এর ঘাটতি থাকিলে IELTS পরীক্ষায় ৫.৫ স্কোর থাকিতে হইবে।
(গ) ইংলিশ মিডিয়াম পাঠ্যক্রমের আওতায় পদাথবিদ্যা ও গণিতসহ C-গ্রেডে A-Level সনদপ্রাপ্ত এবং পদাথবিদ্যা, গণিত, ইংরেজীসহ নূন্যতম ৫টি বিষয় নিয়ে C-গ্রেডে O-Level সনদপ্রাপ্ত;
(ঘ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্য প্রার্থীদের বেলায় প্রশিক্ষণে যোগদানের পূর্বে জাহাজের মালিক বা কোম্পানী কর্তৃক নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হইত হইবে।
(ঙ) ‘সরকারী শিপিং অফিস’ চট্টগ্রাম হইতে সি-ডি-সি ইস্যুর সময় স্বীকৃত চিকিৎসক হইতে প্রার্থীকে মেডিকেল ফিটনেস সনদ, চক্ষু ও কালার ভিশন ফিটনেস সনদ, হিয়ারিং ফিটনেস সনদপ্রাপ্ত হইতে হইবে এবং প্রার্থীর সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোটপ্রাপ্ত হইতে হইবে।তবে কোন মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হিইতে প্রি-সী ট্রেনিং সনদপ্রাপ্ত প্রার্থীর সি.ডি.সি ইস্যুর ক্ষেত্রে শিক্ষায়তন কর্তৃক সন্তোষজনক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্টপ্রাপ্ত হইয়া থাকিলে নতুন করিয়া পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন হেইবে না।
(চ) মেরিন একাডেমী ব্যতীত অন্যান্য প্রার্থীদের জাহাজে যোগদানের পূর্বে কোন অনুমোদিত মার্চেন্ট মেরিন শিক্ষায়তন হইতে অন্যূন ৬ মাসের প্রি-সী ট্রেনিং সম্পন্ন করিতে হইবে। |
8908a449-7bc4-4864-93de-82a36ea21631 | সম্ভাবনাময় বস্ত্র শিল্পের উন্নয়ন, বিকাশ ও সম্প্রসারনের লক্ষ্যে বস্ত্র খাতের পোষক কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন এবং বস্ত্র শিল্পের জন্য দক্ষ জনবল তৈরীর উদ্দেশ্যে ১৯৭৮ সালে বস্ত্র পরিদপ্তর সৃষ্টি করা হয়। বাংলাদেশের বস্ত্র শিল্প দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের রপ্তানী আয়ের ৮১.১৩% বস্ত্রখাত হতে অর্জিত হয়। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ রয়েছে যে, ‘‘বস্ত্র শিল্প খাতকে নিরাপদ, শক্তিশালী এবং প্রতিযোগিতায় সক্ষম করে তোলা’’। ইহা সরকারের রূপকল্প। সরকারের রূপকল্প বাস্তবায়নের অংগীকার মোতাবেক মিশন প্রস্তুত, অনুরূপভাবে উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী নির্দ্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যমান ও বিকাশমান বস্ত্র শিল্প কারখানার জন্য মান সম্পন্ন বস্ত্র উৎপাদনে দক্ষ বস্ত্র প্রযুক্তিবিদ প্রয়োজন। এ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বস্ত্র অধিদপ্তর সরকারি পর্যায়ে স্বল্প খরচে ৪০ টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল, ৩টি টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট এবং ৫টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মাধ্যমে বস্ত্র খাতের জন্য দক্ষ শ্রমিক, সুপারভাইজার, ডিপ্লোমা প্রযুক্তিবিদ সর্বপরি স্নাতক পর্যায়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার তৈরী করে দক্ষ Need based জনশক্তি বস্ত্র শিল্প কারখানায় সরবরাহ করছে। বর্ণিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে ৩৩০৯ জন প্রযুক্তিবিদ বের হচ্ছে। এ সকল প্রযুক্তিবিদ বিদ্যমান বস্ত্র শিল্প কারখানায় কর্ম খুঁজে পাচ্ছে এবং উন্নত মানের বস্ত্র উৎপাদনে অবদান রাখছে। বর্তমান অর্থনীতিতে ইহা চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করছে। অধিদপ্তরের অধীনে প্রতিষ্ঠিত সকল বস্ত্র শিল্প বিষয়ক কারিগরি ও টেক্সটাইল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, বেসরকারি, আধাসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত একই প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান নিশ্চিত করণার্থে বস্ত্র অধিদপ্তর বস্ত্র সম্পর্কিত শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের সাথে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছে। বস্ত্র অধিদপ্তর সামগ্রিক ভাবে বস্ত্র খাতে কি পরিমান দক্ষ জনবল প্রয়োজন তা নির্ধারন করে চাহিদা ভিত্তিক বস্ত্র খাতে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করছে এবং স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমানে বস্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মানের জন্য চলমান প্রকল্প ৬৭৪ কোটি এবং স্থাপীতব্য প্রকল্প ৪৭০ কোটি টাকা। ভবিষ্যতে দক্ষ জনবলের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানীর উদ্যোগ সরকার ইতোমধ্যে গ্রহণ করছে। বস্ত্র অধিদপ্তর বস্ত্র শিল্পের পোষক কর্তৃপক্ষ হিসাবে বস্ত্র ও তৈরী পোষাক শিল্পের যাবতীয় কাজ ২৬/০৫/২০১৩ হতে পুনরায় শুরু করেছে। উক্ত কাজ অতি দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এ শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে শিল্প উদ্যোক্তদেরকে শিল্প স্থাপনে কারিগরি পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত দিক নির্দেশনা দিয়ে সেবা দিচ্ছে। বস্ত্র অধিদপ্তর বস্ত্রখাতের সাথে সম্পৃক্ত সকল সংস্থা/স্টেকহোল্ডারদের সাথে সমন্বয় সাধন করে বস্ত্র শিল্পকে স্থিতিশীল রাখার কার্যক্রম গ্রহণ ও দ্রুততম সময়ে সেবা প্রদান করে থাকে। নিবন্ধিত বস্ত্র শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের মাধ্যমে কমপ্লায়েন্স পর্যবেক্ষণ ও নিশ্চিতকরণে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। বস্ত্র শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে ভবিষ্যতে বস্ত্র অধিদপ্তর আরও গতিশীল ভূমিকা রাখবে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
জনাব মোহাম্মদ ইসমাইল (অতিরিক্ত সচিব) |
9322ddb1-e84e-4893-a710-18afcffca019 | পেটেন্ট কি?
পেটেন্ট হচ্ছে একচেটিয়া অধিকার, কোনো কিছু উদ্ভাবনের জন্য এটা অনুমোদন করা হয়। উদ্ভাবনটি হতে পারে একটি পণ্য বা একটি প্রক্রিয়া যা কোনো কিছু সম্পাদনের নতুন পদ্ধতি প্রদান করে বা কোনো সমস্যার নতুন কারিগরী সমাধান প্রস্তাব করে। একটি পেটেন্ট, এর মালিককে তার উদ্ভাবনের সুরক্ষা প্রদান করে। সীমিত সময়ের জন্য এই সুরক্ষা বলবৎ থাকে, সাধারণত ২০ বছর পর্যন্ত।
কোন ধরনের সুরক্ষা প্রস্তাব করে পেটেন্ট?
পেটেন্ট সুরক্ষার অর্থ হচ্ছে পেটেন্ট মালিকের অনুমতি ছাড়া তার উদ্ভাবনটি বাণিজ্যকভাবে তৈরি, ব্যবহার, বিতরণ বা বিক্রি করা যাবে না। পেটেন্ট সংশ্লিষ্ট অধিকারগুলো সাধারণত কার্যকর করে আদালত, যে প্রতিষ্ঠান অধিকাংশ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পেটেন্ট লঙ্ঘন বন্ধের কর্তৃত্ব রাখে। আবার, আদালত তৃতীয় কোনো পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে একটি পেটেন্টকে অবৈধও ঘোষণা করতে পারে।
পেটেন্ট মালিকের কি অধিকার রয়েছে?
পেটেন্টকৃত উদ্ভাবনটি অনুমোদিত সময়ের মধ্যে কে বা কারা ব্যবহার করতে পারবে বা কারা পারবে না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার একজন পেটেন্ট মালিকের রয়েছে। পেটেন্ট মালিক পারস্পারিকভাবে সম্মত কোনো চুক্তির মাধ্যমে অন্য কোনো পক্ষকে তার উদ্ভাবনটি ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন বা লাইসেন্স প্রদান করতে পারেন। এছাড়া পেটেন্ট মালিক তার উদ্ভাবনটির অধিকার অন্য কারও কাছে বিক্রিও করতে পারেন, যার কাছে বিক্রি করবেন তিনি হবেন ঐ পেটেন্ট’র নতুন মালিক। পেটেন্ট’র মেয়াদ শেষ হলে এর সুরক্ষাও শেষ হয় এবং উদ্ভাবনটি তখন জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ এর উপর মালিকের একচেটিয়া অধিকার আর থাকে না, অন্যরা নিজেদের সুবিধা মতন কাজে লাগিয়ে বানিজ্যকভাবে সেটা ব্যবহার করতে পারে।
পেটেন্ট কেন প্রয়োজন?
বিপণনযোগ্য উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার স্বীকৃতি ও বস্তুগত পুরষ্কার প্রদানের মাধ্যমে পেটেন্ট ব্যক্তি বিশেষকে উদ্দীপ্ত করে। এই পুরষ্কার পুনরায় নতুন কিছু প্রবর্তনে উৎসাহ জোগায়, যা মানুষের জীবন-যাপনের মান ক্রমাগত এগিয়ে নিয়ে যায়।
প্রতিদিনকার জীবনে পেটেন্ট কি ভূমিকা রাখে?
পেটেন্টকৃত উদ্ভাবন আসলে মানুষের জীবনের সবক্ষেত্রেই ছড়িয়ে আছে-বৈদ্যুতিক বাতি (পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী এডিসন ও সোয়ান) থেকে প্লাস্টিক (পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী বেকল্যান্ড), বলপয়েন্ট কলম ((পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী বিরো) থেকে মাইক্রো প্রসেসর (উদাহরণস্বরুপ পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী ইন্টেল)।
বিশ্বের কারিগরী জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধি করতে পেটেন্ট সুরক্ষার বিনিময়ে সব পেটেন্ট মালিক তাদের উদ্ভাবন সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য থাকেন। ক্রমবর্ধমান এই জ্ঞান ভাণ্ডার অন্যদের মধ্যে আরো বেশি সৃষ্টিশীলতা ও নতুন উদ্ভাবনের প্রসার ঘটায়। এভাবে, পেটেন্ট কেবল এর মালিককে সুরক্ষা প্রদান করে না, একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গবেষক ও উদ্ভাবকদের মূল্যবান তথ্য দিয়েও অনুপ্রাণিত করে।
পেটেন্ট কিভাবে মঞ্জুর করা হয়?
পেটেন্ট লাভের প্রথম ধাপটি হচ্ছে একটি পেটেন্ট আবেদনপত্র দাখিল করা। এই আবেদনপট্রে সাধারণত উদ্ভাবনের নাম ও কোন কারিগরী শাখায় এটা প্রযোজ্য সে বিষয়ক তথ্য থাকে। তাছাড়া আবেদনপত্রে উদ্ভাবনটির পটভূমি ও এর বিস্তারিত বিবরণ স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করতে হয়, যেন ওই নির্দিষ্ট বিষয়ে গড়পড়তা ধারণা সম্পন্ন কোনো ব্যক্তি এটা ব্যবহার করতে পারেন বা পুনরুৎপাদনে সক্ষম হন। বিবরণের পাশাপাশি বিষয়টি আরো বোধগম্য করতে দৃষ্টিগ্রাহ্য উপাদান যেমন ড্রয়িং (Drawing), পরিকল্পনা (Plan) বা ডায়াগ্রামও (Diagram) প্রদান করতে হয়। আবেদনপত্রে আরো থাকে বিভিন্ন ধরনের ‘দাবি’, অর্থাৎ এমন সব তথ্য যা পেটেন্ট-এর মাধ্যমে মঞ্জুরকৃত সুরক্ষার মেয়াদ নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
কোন ধরনের উদ্ভাবনগুলো সুরক্ষা করা যায়?
পেটেন্ট’র মাধ্যমে সুরক্ষিত হতে হলে একটি উদ্ভাবনকে অবশ্যই কিছু শর্তপূরণ করতে হবে। উদ্ভাবনটির বাস্তবিক ব্যবহার থাকবে; এতে থাকবে অভিনব কিছু উপাদান, অর্থাৎ নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য যেগুলো ওই কারিগরি ক্ষেত্রে বিদ্যমান জ্ঞান ভান্ডারে অপরিচিত। বিদ্যমান জ্ঞান ভান্ডারকে বলা হয় ‘প্রায়র আর্ট’(Prior Art)। একটি উদ্ভাবনে অবশ্যই থাকতে হবে একটি উদ্ভাবনকুশল পদক্ষেপ বা ধাপ যেন গড়পড়তা জ্ঞানসহ সংশ্লিষ্ট কারিগরি শাখার কেউ তা অনুমান করতে না পারেন। চুড়ান্ত বিচারে, আইন অনুসারে এর বিষয়বস্তু ‘পেটেন্টযোগ্য’ বলে স্বীকৃত হতে হবে। অনেক দেশেই সাধারণত বৈজ্ঞানিক তত্ব, গাণিতিক পদ্ধতি, উদ্ভিদ বা প্রাণীর ভিন্ন প্রজাতি, প্রাকৃতিক বস্তু আবিষ্কার, বাণিজ্যিক পদ্ধতি বা চিকিৎসা সেবার পদ্ধতি (চিকিৎসা সামগ্রী ব্যতিত) পেটেন্টযোগ্য নয়।
কে পেটেন্ট অনুমোদন করে?
পেটেন্ট মঞ্জুর করে জাতীয় পেটেন্ট অফিস বা আঞ্চলিক পেটেন্ট অফিস। আঞ্চলিক পেটেন্ট অফিস অনেকগুলো দেশের হয়ে কাজ করে, যেমন ইউরোপীয় পেটেন্ট অফিস (EPO) এবং আফ্রিকান মেধা সম্পদ সংস্থা (OAPI)। এধরণের আঞ্চলিক পদ্ধতিতে, একটি মাত্র আবেদন পত্রের মাধ্যমে এক বা একাধিক দেশে পেটেন্ট সুরক্ষার অনুমতি প্রার্থনা করা যায় এবং প্রত্যেকটি দেশ তাদের ভূখন্ডে সুরক্ষার আবেদন গ্রহণ করবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। WIPO পরিচালিত পেটেন্ট সহযোগিতা চুক্তি (Patent Cooperation Treaty) এক্ষেত্রে একটি মাত্র আন্তর্জাতিক আবেদনপত্র দাখিলের সুবিধা প্রদান করে, যেটা অনেকটা নিজ দেশের পেটেন্ট অফিসে আবেদন করার মত। সুরক্ষা পেতে আগ্রহী কোনো আবেদনকারী একটি মাত্র আবেদন দাখিল করতে পারেন এবং যতগুলো দেশ সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তার সবগুলো দেশে তিনি সেটা সুরক্ষার অনুরোধ জানাতে পারেন।
জনাব মোঃ সানোয়ার হোসেন ১৯ জুন, ২০১৪ তারিখে রেজিস্ট্রার পদে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব। তার সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল শিল্প মন্ত্রণালয়। |
9cfc7f92-36b4-41a3-b448-45ea78de4844 | পেটেন্ট কি?
পেটেন্ট হচ্ছে একচেটিয়া অধিকার, কোনো কিছু উদ্ভাবনের জন্য এটা অনুমোদন করা হয়। উদ্ভাবনটি হতে পারে একটি পণ্য বা একটি প্রক্রিয়া যা কোনো কিছু সম্পাদনের নতুন পদ্ধতি প্রদান করে বা কোনো সমস্যার নতুন কারিগরী সমাধান প্রস্তাব করে। একটি পেটেন্ট, এর মালিককে তার উদ্ভাবনের সুরক্ষা প্রদান করে। সীমিত সময়ের জন্য এই সুরক্ষা বলবৎ থাকে, সাধারণত ২০ বছর পর্যন্ত।
কোন ধরনের সুরক্ষা প্রস্তাব করে পেটেন্ট?
পেটেন্ট সুরক্ষার অর্থ হচ্ছে পেটেন্ট মালিকের অনুমতি ছাড়া তার উদ্ভাবনটি বাণিজ্যকভাবে তৈরি, ব্যবহার, বিতরণ বা বিক্রি করা যাবে না। পেটেন্ট সংশ্লিষ্ট অধিকারগুলো সাধারণত কার্যকর করে আদালত, যে প্রতিষ্ঠান অধিকাংশ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পেটেন্ট লঙ্ঘন বন্ধের কর্তৃত্ব রাখে। আবার, আদালত তৃতীয় কোনো পক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে একটি পেটেন্টকে অবৈধও ঘোষণা করতে পারে।
পেটেন্ট মালিকের কি অধিকার রয়েছে?
পেটেন্টকৃত উদ্ভাবনটি অনুমোদিত সময়ের মধ্যে কে বা কারা ব্যবহার করতে পারবে বা কারা পারবে না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার একজন পেটেন্ট মালিকের রয়েছে। পেটেন্ট মালিক পারস্পারিকভাবে সম্মত কোনো চুক্তির মাধ্যমে অন্য কোনো পক্ষকে তার উদ্ভাবনটি ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন বা লাইসেন্স প্রদান করতে পারেন। এছাড়া পেটেন্ট মালিক তার উদ্ভাবনটির অধিকার অন্য কারও কাছে বিক্রিও করতে পারেন, যার কাছে বিক্রি করবেন তিনি হবেন ঐ পেটেন্ট’র নতুন মালিক। পেটেন্ট’র মেয়াদ শেষ হলে এর সুরক্ষাও শেষ হয় এবং উদ্ভাবনটি তখন জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ এর উপর মালিকের একচেটিয়া অধিকার আর থাকে না, অন্যরা নিজেদের সুবিধা মতন কাজে লাগিয়ে বানিজ্যকভাবে সেটা ব্যবহার করতে পারে।
পেটেন্ট কেন প্রয়োজন?
বিপণনযোগ্য উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার স্বীকৃতি ও বস্তুগত পুরষ্কার প্রদানের মাধ্যমে পেটেন্ট ব্যক্তি বিশেষকে উদ্দীপ্ত করে। এই পুরষ্কার পুনরায় নতুন কিছু প্রবর্তনে উৎসাহ জোগায়, যা মানুষের জীবন-যাপনের মান ক্রমাগত এগিয়ে নিয়ে যায়।
প্রতিদিনকার জীবনে পেটেন্ট কি ভূমিকা রাখে?
পেটেন্টকৃত উদ্ভাবন আসলে মানুষের জীবনের সবক্ষেত্রেই ছড়িয়ে আছে-বৈদ্যুতিক বাতি (পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী এডিসন ও সোয়ান) থেকে প্লাস্টিক (পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী বেকল্যান্ড), বলপয়েন্ট কলম ((পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী বিরো) থেকে মাইক্রো প্রসেসর (উদাহরণস্বরুপ পেটেন্ট স্বত্বাধিকারী ইন্টেল)।
বিশ্বের কারিগরী জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধি করতে পেটেন্ট সুরক্ষার বিনিময়ে সব পেটেন্ট মালিক তাদের উদ্ভাবন সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য থাকেন। ক্রমবর্ধমান এই জ্ঞান ভাণ্ডার অন্যদের মধ্যে আরো বেশি সৃষ্টিশীলতা ও নতুন উদ্ভাবনের প্রসার ঘটায়। এভাবে, পেটেন্ট কেবল এর মালিককে সুরক্ষা প্রদান করে না, একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গবেষক ও উদ্ভাবকদের মূল্যবান তথ্য দিয়েও অনুপ্রাণিত করে।
পেটেন্ট কিভাবে মঞ্জুর করা হয়?
পেটেন্ট লাভের প্রথম ধাপটি হচ্ছে একটি পেটেন্ট আবেদনপত্র দাখিল করা। এই আবেদনপট্রে সাধারণত উদ্ভাবনের নাম ও কোন কারিগরী শাখায় এটা প্রযোজ্য সে বিষয়ক তথ্য থাকে। তাছাড়া আবেদনপত্রে উদ্ভাবনটির পটভূমি ও এর বিস্তারিত বিবরণ স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করতে হয়, যেন ওই নির্দিষ্ট বিষয়ে গড়পড়তা ধারণা সম্পন্ন কোনো ব্যক্তি এটা ব্যবহার করতে পারেন বা পুনরুৎপাদনে সক্ষম হন। বিবরণের পাশাপাশি বিষয়টি আরো বোধগম্য করতে দৃষ্টিগ্রাহ্য উপাদান যেমন ড্রয়িং (Drawing), পরিকল্পনা (Plan) বা ডায়াগ্রামও (Diagram) প্রদান করতে হয়। আবেদনপত্রে আরো থাকে বিভিন্ন ধরনের ‘দাবি’, অর্থাৎ এমন সব তথ্য যা পেটেন্ট-এর মাধ্যমে মঞ্জুরকৃত সুরক্ষার মেয়াদ নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
কোন ধরনের উদ্ভাবনগুলো সুরক্ষা করা যায়?
পেটেন্ট’র মাধ্যমে সুরক্ষিত হতে হলে একটি উদ্ভাবনকে অবশ্যই কিছু শর্তপূরণ করতে হবে। উদ্ভাবনটির বাস্তবিক ব্যবহার থাকবে; এতে থাকবে অভিনব কিছু উপাদান, অর্থাৎ নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য যেগুলো ওই কারিগরি ক্ষেত্রে বিদ্যমান জ্ঞান ভান্ডারে অপরিচিত। বিদ্যমান জ্ঞান ভান্ডারকে বলা হয় ‘প্রায়র আর্ট’(Prior Art)। একটি উদ্ভাবনে অবশ্যই থাকতে হবে একটি উদ্ভাবনকুশল পদক্ষেপ বা ধাপ যেন গড়পড়তা জ্ঞানসহ সংশ্লিষ্ট কারিগরি শাখার কেউ তা অনুমান করতে না পারেন। চুড়ান্ত বিচারে, আইন অনুসারে এর বিষয়বস্তু ‘পেটেন্টযোগ্য’ বলে স্বীকৃত হতে হবে। অনেক দেশেই সাধারণত বৈজ্ঞানিক তত্ব, গাণিতিক পদ্ধতি, উদ্ভিদ বা প্রাণীর ভিন্ন প্রজাতি, প্রাকৃতিক বস্তু আবিষ্কার, বাণিজ্যিক পদ্ধতি বা চিকিৎসা সেবার পদ্ধতি (চিকিৎসা সামগ্রী ব্যতিত) পেটেন্টযোগ্য নয়।
কে পেটেন্ট অনুমোদন করে?
পেটেন্ট মঞ্জুর করে জাতীয় পেটেন্ট অফিস বা আঞ্চলিক পেটেন্ট অফিস। আঞ্চলিক পেটেন্ট অফিস অনেকগুলো দেশের হয়ে কাজ করে, যেমন ইউরোপীয় পেটেন্ট অফিস (EPO) এবং আফ্রিকান মেধা সম্পদ সংস্থা (OAPI)। এধরণের আঞ্চলিক পদ্ধতিতে, একটি মাত্র আবেদন পত্রের মাধ্যমে এক বা একাধিক দেশে পেটেন্ট সুরক্ষার অনুমতি প্রার্থনা করা যায় এবং প্রত্যেকটি দেশ তাদের ভূখন্ডে সুরক্ষার আবেদন গ্রহণ করবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। WIPO পরিচালিত পেটেন্ট সহযোগিতা চুক্তি (Patent Cooperation Treaty) এক্ষেত্রে একটি মাত্র আন্তর্জাতিক আবেদনপত্র দাখিলের সুবিধা প্রদান করে, যেটা অনেকটা নিজ দেশের পেটেন্ট অফিসে আবেদন করার মত। সুরক্ষা পেতে আগ্রহী কোনো আবেদনকারী একটি মাত্র আবেদন দাখিল করতে পারেন এবং যতগুলো দেশ সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তার সবগুলো দেশে তিনি সেটা সুরক্ষার অনুরোধ জানাতে পারেন।
জনাব মোঃ সানোয়ার হোসেন ১৯ জুন, ২০১৪ তারিখে রেজিস্ট্রার পদে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব। তার সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল শিল্প মন্ত্রণালয়। |
b20fbfff-615b-4483-b84c-dc34394c2931 | সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। কিছুদিন পর পরই এই আন্দোলন হয়। সে জন্য আমরা কোটা পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছি এটা ঠিক। তবে, একটা নীতিমালা আমরা তৈরি করছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠী বা অনগ্রসর জাতি- তারা যেন যথাযথভাবে চাকরি পায় এবং চাকরিতে তাদের অধিকার নিশ্চিত হয় নীতিমালায় সেই ব্যবস্থাটা অবশ্যই করা হবে।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৭তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২০তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ‘সাম্য ও অভিন্ন যাত্রায় প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য দিয়ে সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকেই প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুরক্ষায় তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ হিসেবে তাদের প্রাপ্য অধিকারটা আমরা যেন দিতে পারি এবং তাদের ভেতরে যে শক্তি আছে সেটাকে আমরা যেন কাজে লাগাতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’ এবং ‘নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩’ নামে দুটি আইন পাস করে। ইতিমধ্যে এর বিধিমালাও প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, যত স্থাপনা হবে প্রতিটি জায়গায় প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যেন থাকে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ টয়লেটের ব্যবস্থাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সব স্থানে তাদের জন্য যেন সুযোগ-সুবিধা থাকে, সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।
প্রতিবন্ধীদের জন্য কল্যাণ ফাউন্ডেশন তৈরি এবং তাদের মধ্যে যারা খেলাধুলায় সম্পৃক্ত তাদের বিশেষ অলিম্পিকে সম্পৃক্ত করাসহ আরও নানা ধরনের সুযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারাই আমাদের জন্য স্বর্ণ জয় করে আনছে, এর মাধ্যমেই বোঝা যায় তাদের সুপ্ত প্রতিভাটা। কাজেই আমাদের দেশের কাজেও তারা লাগতে পারে।’
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জিল্লার রহমান এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি সায়েদুল হকও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি সারাদেশে সমাজসেবা অধিদফতরের সকল বিভাগীয় কার্যালয়, জেলা কার্যালয় ও উপজেলা কার্যালয়ে পৃথকভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে। |
6efd8abd-6b55-4d04-8c37-33af49bc801b | সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। কিছুদিন পর পরই এই আন্দোলন হয়। সে জন্য আমরা কোটা পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছি এটা ঠিক। তবে, একটা নীতিমালা আমরা তৈরি করছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠী বা অনগ্রসর জাতি- তারা যেন যথাযথভাবে চাকরি পায় এবং চাকরিতে তাদের অধিকার নিশ্চিত হয় নীতিমালায় সেই ব্যবস্থাটা অবশ্যই করা হবে।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৭তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২০তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ‘সাম্য ও অভিন্ন যাত্রায় প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য দিয়ে সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকেই প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুরক্ষায় তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ হিসেবে তাদের প্রাপ্য অধিকারটা আমরা যেন দিতে পারি এবং তাদের ভেতরে যে শক্তি আছে সেটাকে আমরা যেন কাজে লাগাতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’ এবং ‘নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩’ নামে দুটি আইন পাস করে। ইতিমধ্যে এর বিধিমালাও প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, যত স্থাপনা হবে প্রতিটি জায়গায় প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যেন থাকে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ টয়লেটের ব্যবস্থাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সব স্থানে তাদের জন্য যেন সুযোগ-সুবিধা থাকে, সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।
প্রতিবন্ধীদের জন্য কল্যাণ ফাউন্ডেশন তৈরি এবং তাদের মধ্যে যারা খেলাধুলায় সম্পৃক্ত তাদের বিশেষ অলিম্পিকে সম্পৃক্ত করাসহ আরও নানা ধরনের সুযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারাই আমাদের জন্য স্বর্ণ জয় করে আনছে, এর মাধ্যমেই বোঝা যায় তাদের সুপ্ত প্রতিভাটা। কাজেই আমাদের দেশের কাজেও তারা লাগতে পারে।’
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জিল্লার রহমান এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি সায়েদুল হকও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি সারাদেশে সমাজসেবা অধিদফতরের সকল বিভাগীয় কার্যালয়, জেলা কার্যালয় ও উপজেলা কার্যালয়ে পৃথকভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে। |
00d8e876-499f-44df-acae-82bbf0849266 | ইলেকট্রনিক (G2P) পদ্ধতিতে ভাতা প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৭ জুলাই ২০১৮, গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা এবং অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভাতার টাকা সরাসরি গ্রহণ করলেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীর দৌরাত্ম্য রোধ, বয়স্ক, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট এক যুগান্তকারী ও সাহসী পদক্ষেপ। এর ফলে আর দীর্ঘক্ষণ ব্যাংকের সামনে লাইনে দাড়িয়ে কষ্ট করে ভাতা গ্রহণ করতে হবে না। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রবর্তনের দিক নির্দেশনা রেখেছেন এবং স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পূর্বেই পঁচাত্তরে ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে স্বপরিবারে শহীদ হন। তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে দেশে ফিরে আমি দীর্ঘদিন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ঘুরে সমাজের অসহায় বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, ভূমিহীন মানুষের কান্না স্বচক্ষে দেখি এবং তাদের কল্যাণে কি করা যায় সে নিয়ে পরিকল্পনা করি। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরে দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভাল না থাকার পরেও অসহায় মানুষের জন্য এ সকল নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করি। মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকেন সেজন্যই আমার এ প্রচেষ্টা’।
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী চার জেলার জেলা প্রশাসক ও ভাতাভোগীর সাথে কথা বলেন এবং ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক উপায়ে ভাতা গ্রহণ দৃশ্য অবলোকন করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ভাতাভোগীদের বক্তব্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ উপস্থিত সকলকে আবেগে আপ্লুত করে তোলে। ভাতাভোগী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু, সুস্থতা কামনা করে পুনরায় তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব জনাব নজিবুর রহমান গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। চার জেলা থেকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কানফরেন্স এর মাধ্যমে ভাতাভোগীগণ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ জিল্লার রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বলেন ১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী ক্ষুদ্র পরিসরে এ ভাতা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারাদেশে ৪০ লক্ষ জন বয়স্কভাতা, ১৪ লক্ষ জন বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা এবং ১০ লক্ষ জন অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। প্রাথমিকভাবে চার জেলার এগারো উপজেলায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৮ জন ভাতাভোগীর মাঝে ইলেকট্রনিক উপায়ে ভাতার অর্থ বিতরণ শুরু হচ্ছে। তিনি বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশব্যাপী সকল ভাতাভোগীদের ইলেকট্রনিক উপায়ে ভাতার অর্থ বিতরণ সম্ভব হবে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব নূরুজ্জামান আহমেদ বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের আরেকটি স্বপ্ন সত্যি করলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান গণভবনে মাননীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী জনাব আব্দুল মান্নান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জনাব আবুল কালাম আজাদ, অর্থসচিব জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার, নবনিযুক্ত কম্প্ট্রোলার জেনারেল অব বাংলাদেশ জনাব মুসলিম চেীধুরীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ, সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির এবং মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া চার জেলায় স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, ভাতাভোগী বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।
গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির (অতিরিক্ত সচিব) ২৯ এপ্রিল ২০১৫ তারিখ মহাপরিচালক হিসেবে সমাজসেবা অধিদফতরে যোগদান করেন। বিস্তারিত |
04d320b2-3d46-4ccf-a552-d1aceb472b1f | ইলেকট্রনিক (G2P) পদ্ধতিতে ভাতা প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৭ জুলাই ২০১৮, গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে গোপালগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা এবং অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভাতার টাকা সরাসরি গ্রহণ করলেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীর দৌরাত্ম্য রোধ, বয়স্ক, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য ডিজিটাল পেমেন্ট এক যুগান্তকারী ও সাহসী পদক্ষেপ। এর ফলে আর দীর্ঘক্ষণ ব্যাংকের সামনে লাইনে দাড়িয়ে কষ্ট করে ভাতা গ্রহণ করতে হবে না। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রবর্তনের দিক নির্দেশনা রেখেছেন এবং স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পূর্বেই পঁচাত্তরে ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে স্বপরিবারে শহীদ হন। তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে দেশে ফিরে আমি দীর্ঘদিন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে ঘুরে সমাজের অসহায় বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, ভূমিহীন মানুষের কান্না স্বচক্ষে দেখি এবং তাদের কল্যাণে কি করা যায় সে নিয়ে পরিকল্পনা করি। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পরে দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভাল না থাকার পরেও অসহায় মানুষের জন্য এ সকল নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করি। মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকেন সেজন্যই আমার এ প্রচেষ্টা’।
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী চার জেলার জেলা প্রশাসক ও ভাতাভোগীর সাথে কথা বলেন এবং ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক উপায়ে ভাতা গ্রহণ দৃশ্য অবলোকন করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ভাতাভোগীদের বক্তব্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ উপস্থিত সকলকে আবেগে আপ্লুত করে তোলে। ভাতাভোগী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু, সুস্থতা কামনা করে পুনরায় তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব জনাব নজিবুর রহমান গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। চার জেলা থেকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কানফরেন্স এর মাধ্যমে ভাতাভোগীগণ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ জিল্লার রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বলেন ১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী ক্ষুদ্র পরিসরে এ ভাতা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারাদেশে ৪০ লক্ষ জন বয়স্কভাতা, ১৪ লক্ষ জন বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা এবং ১০ লক্ষ জন অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। প্রাথমিকভাবে চার জেলার এগারো উপজেলায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৮ জন ভাতাভোগীর মাঝে ইলেকট্রনিক উপায়ে ভাতার অর্থ বিতরণ শুরু হচ্ছে। তিনি বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশব্যাপী সকল ভাতাভোগীদের ইলেকট্রনিক উপায়ে ভাতার অর্থ বিতরণ সম্ভব হবে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব নূরুজ্জামান আহমেদ বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের আরেকটি স্বপ্ন সত্যি করলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান গণভবনে মাননীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী জনাব আব্দুল মান্নান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জনাব আবুল কালাম আজাদ, অর্থসচিব জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার, নবনিযুক্ত কম্প্ট্রোলার জেনারেল অব বাংলাদেশ জনাব মুসলিম চেীধুরীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ, সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির এবং মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া চার জেলায় স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, ভাতাভোগী বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।
গাজী মোহাম্মদ নূরুল কবির (অতিরিক্ত সচিব) ২৯ এপ্রিল ২০১৫ তারিখ মহাপরিচালক হিসেবে সমাজসেবা অধিদফতরে যোগদান করেন। বিস্তারিত |
c44eae1c-f730-46c2-8f94-3f9900b212b0 | একনেক চেয়ারপারসন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২৯ আগস্ট ২০১৭ রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৬৪ জেলায় জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স স্থাপন (১ম ফেজ: ২২ জেলা) প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। যা এ অধিদফতরের উপকারভোগীদের আরও উন্নত ও যুগোপযোগী সেবা প্রদানের নতুন দিগন্ত উন্মোচনসহ অধিদফতরকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, সভায় উপস্থাপিত ৯টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় করা হবে ১০ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। সরকারি কোষাগার থেকেই এসব ব্যয় করা হবে। তিনি বলেন, ১৯৬১ সাল থেকে সমাজসেবা অধিদফতরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সমাজসেবা অধিদফতরের ম্যান্ডেট হল সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, দরিদ্র এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদান করা। কিন্তু নিজস্ব কোনো অফিস নেই। তাই এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য যথাযথ দাফতরিক স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা করা হবে। মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত সব কার্যক্রম সুচারুভাবে বাস্তবায়ন করা, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতাধীন কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিবীক্ষণ করা, কর্মজীবী মায়েদের কর্মের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা, প্রতিবন্ধীদের জন্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন, এবং উপকারভোগী জনগোষ্ঠীকে অধিকতর উন্নত সেবা দেয়া হবে। ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী। |
Subsets and Splits