content
stringlengths 0
129k
|
---|
ঢাকনা তুলল মুসা |
ভেতরে তাকিয়ে বলল, হয়নি |
গলদা চিংড়ি |
হ্যাঁ, হয়েছে |
দারুণ সুগন্ধ! মুরগীর রোস্টও আছে |
আরেকটা ঝুড়ির ঢাকনা সরাল রবিন |
বড় এক পাত্র সালাদ বের করল |
আর বড় বড় দুটো ফ্রেঞ্চ ব্রেড |
আভন থেকে বের করেই ঝুড়িতে ভরে দিয়েছে উলফ |
মুখ গোমড়া করে রাখুক আর যাই করুক, নাক দিয়ে খাবারের সুগন্ধ টানতে টানতে বলল কোরি, খাবারগুলো ভালই দিচ্ছে |
চীনামাটির বাসন, রূপার চামচ, কাপড়ের ন্যাপকিন বের করে চাদরে নামিয়ে রাখল রবিন |
সুন্দর করে ওগুলো ঝুড়িতে সাজিয়ে দিয়েছে উলফ |
দুটো মোমও দিয়েছে |
আকাশের লালিমা মুছে কালো হয়ে যাচ্ছে |
উজ্জ্বল হতে শুরু করেছে |
তীরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের ছলাৎছল বাজনার মত লাগছে |
খেতে আরম্ভ করল ওরা |
সিনেমার মত লাগছে আমার কাছে! কোরি বলল |
এত সুন্দর দৃশ্য সিনেমাতে নেই, বলল রবিন |
হোটেলের দিকে তাকাল কোরি |
আকাশের পটভূমিতে কালো দেখাচ্ছে |
শুধু দোতলার দুটো জানালায় আলো জ্বলছে |
তাকিয়ে রয়েছে যেন বেড়ালের চোখের মত |
খাওয়ার পর সাতরাতে নামলে কেমন হয়? প্রস্তাব দিল মুসা |
বেদিং সুট তো পরে আসিনি, রবিন বলল |
তাতে কি? হাসল মুসা |
খালি গায়ে নামব |
চাঁদনী রাতে সাগরে সাঁতার কাটার স্বপ্ন দেখেছি আমি বহুদিন, কিশোর বলল |
তার মানে তুমিও নামবে? |
অসুবিধে কি? |
বালির ঢিবির ওপর দিকে তাকিয়ে হঠাৎ বলে উঠল কোরি, কে যেন আসছে! |
ফিরে তাকাল অন্য তিনজন |
অন্ধকার ছায়ায় মিশে ভূতের মত দাঁড়িয়ে রয়েছে একটা মূর্তি |
ভয় পেয়ে গেল কোরি |
জিজ্ঞেস করল, কে ওখানে? |
ছায়া থেকে চাঁদের আলোয় বেরিয়ে এল মুর্তিটা |
অবাক হলো কোরি |
মিস্টার মেলবয়েস! |
ঢিবির মাথায় দাঁড়িয়ে থেকে ওদের উদ্দেশে হাত নাড়লেন তিনি |
ধবধবে সাদাঁ পোশাকে ভূতুড়ে লাগছে তাঁকে |
ভয়টা এখনও কাটেনি কোরির |
বিশ্বাস করতে পারছে না সত্যি মানুষ কিনা |
পরীক্ষা করার জন্যে হাত নেড়ে ডাকল, আসুন না? |
অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে নেমে আসতে শুরু করলেন ব্যারন |
খাওয়া বন্ধ করে মুসাও তাকিয়ে রয়েছে হাঁ করে |
ভূত বুঝলে দেবে দৌড় |
কাছে এসে দাঁড়ালেন তিনি |
হাতে একটা মদের বোতল |
আরেক হাতে গ্লাস |
আন্ট জোয়ালিন এসেছে? উদ্বিগ্ন কণ্ঠে জানতে চাইল কোরি |
না, জবাব দিলেন ব্যারন |
লঞ্চ এসেছে, কিন্তু তোমার আন্টি আসেননি |
অত ভয়ের কিছু নেই |
সামান্য পেটব্যথা তো, সেরে যাবে |
আরও একআধ দিন বোনের ওখানে কাটিয়ে আসার ইচ্ছে |
কিন্তু ফোন করল না কেন? |
সকালে ফোন যখন খারাপ ছিল তখন হয়তো চেষ্টা করেছে |
ফোন খারাপ ভেবে পরে আর করেনি |
আজ রাতটা যাক, তাকে আর বিরক্ত করব না |
কাল সকালে যদি না করে আমরাই খোঁজ নেব |
প্রসঙ্গটা বাদ দেয়ার জন্যে খাবারগুলোর ওপর চোখ বোলালেন তিনি |
বাহ, উলফ তো নাস্তাটাস্তা ভালই দিচ্ছে তোমাদেরকে |
হেসে জবাব দিল কিশোর, নাস্তা নয়, একেবারে ভূরিভোজ |
উলফ কিন্তু আমাদের বাবুর্চি নয় |
বাবুর্চির নাম মনিকা |
আগামী শুক্রবারের আগে আসবে না |
মৃদু হেসে বললেন ব্যারন, এত কাজ একহাতে করতে হচ্ছে বলে অভিযোগের পর অভিযোগ করে চলেছে উলফ |
তবে রান্না করতে তার খারাপ লাগছে না এটাও বুঝতে পারছি |
সে তো বোঝাই যাচ্ছে, রুটি চিবাতে চিবাতে বলল মুসা |
কিন্তু এত বেশি পেট ভরিয়ে রাখছে আমাদের, আলসে হয়ে যাচ্ছি |
কাল কোন কাজই করতে পারব না |
হ্যাঁ, দশ পাউন্ড ওজন বেড়ে গেছে আমার, কোরি বলল |
ভয় নেই, কালই সেটা খসিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করব, হেসে বললেন ব্যারন |
চাদরের একধারে বসে বোতল থেকে মদ ঢাললেন গ্লাসে |
গ্লাসটা তুলে ধরলেন ওদের দিকে |
তোমাদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি |
লম্বা চুমুক দিলেন গ্লাসে |
গম্ভীর হয়ে বললেন, মিলারও আমাদের সঙ্গে থাকলে এখন ভাল হতো, আচমকা বদলে গেছে কণ্ঠস্বর |
কত করে বললাম আসতে |
আপনার ভাই কি অসুস্থ? জানতে চাইল কিশোর |
প্রশ্নটা যেন অবাক করল ব্যারনকে |
অসুস্থ? মোটেও না |
অতিমাত্রায় বিষণ্ণ |
আমরা মেলবয়েসরা এমনিতেই একটু খেয়ালী |
শুনেছি আমি, রবিন বলল |
ব্ল্যাক ফরেস্টের সবাই জানে আপনার পূর্বপুরুষদের কাহিনী |
আমাদের বাড়ির চিলেকোঠা থেকে মেলবয়েস ম্যানসন দেখা যায় |
চোখ বুজে যেন পূর্বপুরুষদের কীর্তিকলাপের দৃশ্য দেখার চেষ্টা করলেন |
হ্যাঁ, অনেক গল্প আছে ওদেরকে নিয়ে |
ভয়ঙ্কর সব কাহিনী |
চোখ মেলে তাকালেন রবিনের দিকে |
একঝলক হালকা বাতাস ওদের ঘিরে নেচে নেচে বয়ে গেল |
রোজার মেলবয়েস কি আপনার দাদা ছিলেন? জিজ্ঞেস করল রবিন |
আরেক চুমুক মদ খেলেন ব্যারন |
আমার দাদার ভাই |
আমার গ্রেট-আঙ্কেল |
তার নামে নাম রাখা হলো কেন আপনার? জানতে চাইল কোরি |
তার নামে রাখা হয়েছে কথাটা ঠিক না, বিচিত্র হাসি খেলে গেল ব্যারনের ঠোঁটে |
চাঁদের আলোয় রহস্যময় দেখাল হাসিটা |
আমার বাবার নামও ছিল রোজার |
Subsets and Splits
No community queries yet
The top public SQL queries from the community will appear here once available.