content
stringlengths
0
129k
কয়েক ঘণ্টা ধরে জুলল নরকের আগুনের মত
পরদিন লোকে যখন দেখতে এল, পোড়া ছাই ছাড়া আর কিছুই দেখল না
সাগরের দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ চুপ করে রইলেন ব্যারন
মেলবয়েস আর ভেরোনিকার কি ঘটেছিল? জানার জন্যে তর সইছে না
আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ভেরোনিকা, ব্যারন বললেন
ব্ল্যাক ফরেস্টের গোরস্থানে কবর দেয়া হয়েছে তাকে
কোন নামফলক লাগানো হয়নি তাতে
আর মেলবয়েসের কি হয়েছে কেউ বলতে পারে না
তাঁকে আর কখনও দেখেনি কেউ
বাতাসে কাত হয়ে গিয়ে আবার লাফিয়ে সোজা হলো মোমের শিখা
শীত লাগল কোরির
উঠে দাঁড়িয়ে বলল, গরম কাপড় নিয়ে আসিগে
কিশোর, তোমাদের জন্যে কিছু লাগবে?
উম, আমার জন্যে আনতে পারো, রবিন বলল
ব্যারনের দিকে তাকাল কোরি, আমি না আসা পর্যন্ত আর কোন গল্প বলবেন না, প্লীজ! বালির ঢিবির ঢাল বেয়ে প্রায় দৌড়ে হোটেলের দিকে উঠে গেল সে
অদৃশ্য হয়ে গেল অন্ধকারে
সাংঘাতিক এক গল্প শোনালেন, কিশোর বলল
মানুষের শরীর থেকে কঙ্কাল উধাও হয়ে যায়, এরকম কথা আর শুনিনি
ভ্যাম্পায়ারের কাজ নয়তো? জিজ্ঞেস করতে গিয়ে গলা কেঁপে উঠল মুসার
ভ্যাম্পায়ার হয় কি করে? রবিন বলল, তাহলে রক্ত থাকত না শরীরে
হাড় থাকবে না কেন?
তাহলে এমন কোন ভূত হতে পারে, যে হাড় খায়! ভয়ে ভয়ে বলল মুসা
এর অন্য কোন ব্যাখ্যা আছে, কিশোর বলল
কিংবা লোকে বানিয়েও বলতে পারে
সাতদিনে লাশ এতটাই ফুলে গিয়েছিল, মনে হয়েছে হাড় নেই
লোকে সেটাকে রঙ চড়িয়ে বানিয়ে দিয়েছে উদ্ভট এক ভয়াল কাহিনী
এই শুরু হলো তোমার যুক্তি দেয়া, রেগে গেল মুসা
উল্টোপাল্টা যুক্তি দিয়ে কাহিনীটাকে নষ্ট করছ কেন?
উল্টোপাল্টা নয়, এটাই ঠিক
কারণ ভূত বলে কিছু নেই
হেসে উঠলেন ব্যারন
বাতাসে দুলে উঠল তার কোটের কোণা
চাঁদের আলোয় মনে হলো ডানা মেলতে চাইছে ওটা
বললেন, লোকে তো কত কথাই বলে
রোজার মেলবয়েস ভ্যাম্পায়ার ছিলেন, একথাও বলেছে অনেকে
মুসার দিকে তাকালেন, আমি যেরকম পোশাক পরে এসেছি, আমাকেও আবার ভুত মনে হচ্ছে না তো তোমার? ন
মাথা নাড়ল মুসা
কথা বেরোল না তার মুখ থেকে
সবাই চুপচাপ
অনেকক্ষণ পর নীরবতা ভাঙলেন ব্যারন
ঠাণ্ডা পড়ছে
কথা শেষ হলো না তার
শোনা গেল তীক্ষ্ণ চিৎকার
লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল সবাই
আবার শোনা গেল চিৎকার
রাতের বাতাসকে চিরে দিল
হো-হো-হোটেল থেকে আসছে! চেঁচিয়ে উঠল মুসা
কোরি! বলল কিশোর
দমকা বাতাস নিভিয়ে দিল মোমের আলো
বালির ঢিবি বেয়ে উঠতে শুরু করল কিশোর
পিছু নিল মুসা আর রবিন
চিৎকার থেমে গেছে
ওপরে উঠে ফিরে তাকাল কিশোর
ব্যারনও উঠে আসছেন
তবে ওদের চেয়ে অনেক ধীর
এখনও একশো-গজ নিচে রয়ে গেছেন
আবার ছুটল সে
পুল হাউজের পাশ কাটিয়ে, সুইমিং পুলের ধার দিয়ে ছুটে চলল অন্ধকার বাড়িটার দিকে
পেছনের দরজা দিয়ে একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে ছুটে আসতে লাগল ওর দিকে
কথা বলার জন্যে মুখ খুলেও মূর্তিটাকে চিনতে পেরে থেমে গেল
কোরি! কি হয়েছে?
আ-আমি...আমি ওকে দেখেছি! ঘোরের মধ্যে কথা বলছে যেন কোরি
কি দেখেছ? জানতে চাইল রবিন
হাঁপাচ্ছে
সে আর মুসা দুজনেই এসে দাঁড়িয়েছে কিশোরের পাশে
চিৎকার করলে কেন? ওদের পেছনে শোনা গেল ব্যারনের অস্থির কণ্ঠ
আমি ওকে দেখেছি, আবার একই কথা বলল কোরি
সাদা কোটের কোণা উড়িয়ে দৌড়ে কাছে এসে দাঁড়ালেন ব্যারন
উলফও বেরিয়ে এল
আমি-আমি ভূতটাকে দেখেছি! কোরি বলল
গুঙিয়ে উঠল মুসা
কো-কো-ক্কোথায়?
এমন ভাবে চিৎকার করে উঠলে... হাত দিয়ে বুক চেপে ধরলেন ব্যারন
আপনাআপনি বেরিয়ে গেল মুখ দিয়ে
ভেতরে চলো সবাই
বলে ব্যারনের হাত চেপে ধরে টেনে নিয়ে চলল উলফ
ওদের অনুসরণ করল তিন গোয়েন্দা আর কোরি
মিনিটখানেকের মধ্যেই লবিতে জমায়েত হলো
চামড়ায় মোড়া বড় একটা চেয়ারে বসল, কোরি
তার পাশে ব্যারন
দম নিতে কষ্ট হচ্ছে এখনও
বায়ের করিডরের দিকে হাত তুলে কোরি বলল, হলঘরে দেখলাম ওটাকে
একজন মহিলার ভূত
দেয়াল ভেদ করে বেরিয়ে এল
দেখতে কেমন? জানতে চাইল উলফ
চমকে দিল কিশোরকে
কিশোর জানত না ঠিক ওর পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে লোকটা
কপালের ওপর এসে পড়া একগাছি চুল আঙুলে পেঁচাতে পেঁচাতে
সামনের দেয়ালটার দিকে তাকিয়ে রইল কোরি
যেন ভূতের চেহারা, মনে করার চেষ্টা করছে
পুরানো আমলের পোশাক পরা
সাদা নাইটগাউন
লম্বা কালো বেনি
খুব সুন্দরী
চেয়ারে নড়েচড়ে বসল সে
অস্বস্তি বোধ করছে
নজর এখনও সামনের দেয়ালের দিকে
ওর চোখ দুটোই বেশি নাড়া দিয়েছে আমাকে
বাপরে বাপ! কি বড় বড়
টকটকে লাল