content
stringlengths
0
129k
মুখটা ফ্যাকাশে
-.. আরও কিছু বলতে চাইল সে
কথা আটকে গেল
আলতো করে ওর হাতটা চাপড়ে দিয়ে ব্যারন বললেন, শান্ত হও
উলফ, এক কাপ চা দাও না ওকে
বলল, কিন্তু জায়গা ছেড়ে নড়ল না উলফ
লাল চোখ মেলে আমার দিকে তাকিয়ে রইল সে, কোরি বলল
আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে মনে হলো
বরফের মত ঠাণ্ডা হয়ে গেল
হঠাৎ সবকিছু
ঘরের বাতাস
চিৎকার করে উঠলাম
দেয়ালে মিশে গেল ওটা
ঘাড়ে কিসের যেন ঠাণ্ডা ছোঁয়া লাগল
আবার চিৎকার করে উঠলাম
দেয়ালের দিকে তাকিয়ে চুলের গোছা আঙুলে পেঁচাতে থাকল সে
রবিনের দিকে তাকাল কিশোর
রবিন কি ভাবছে বোঝার চেষ্টা করল
ভূত দেখেছে কোরি, এ কথা বিশ্বাস করতে পারছে না সে
নিশ্চয় কেউ ভয় দেখাতে চেয়েছে ওকে
কেরির দিকে ফিরল সে
এখনও ভয় পাচ্ছ?
ওর কথা যেন শুনতেই পায়নি কোরি
দেয়ালের দিকে তাকিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে আছে
হোটেলের পুরানো অংশে অনেক রহস্যময় ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যায়, ব্যারন বললেন
ও আবার আসবে, আচমকা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠল কোরি
ভূতটা ফিরে আসবে
আমার যেন কেমন লাগছে!
ঘুম আসছে না কিশোরের
নরম বালিশে মাথা রেখে চিত হয়ে শুয়ে ভাবতে লাগল
সিলিঙে নানা রকম ছায়ার খেলা
বাইরে কালো নির্মেঘ আকাশ, তারায় ভরা
সাদা কোমল চাঁদটা যেন ভেসে রয়েছে উপসাগরের ওপরে
ব্যারনের গল্পটার কথা ভাবছে সে
বনের মধ্যে ফুটফুটে দুটো ছোট্ট মেয়ের লাশ
পোড়া বাড়ি
খেপা মহিলা ভেরোনিকা
উন্মাদ রোজার ডি মেলবয়েস
তার বংশধর একই নামের বর্তমান ব্যারন, মেলবয়েস ডি থার্ড
ব্যারনের চাকর উলফ
মানে নেকড়ে! রাখার জন্যে আর কোন নাম খুঁজে পায়নি যেন ওর বাবা
নামের আকাল পড়েছিল যেন
লোকটা অদ্ভুত
নেকড়ের সঙ্গে মিল নেই মোটেও
বরং চেহারার দিকে তাকালে বিখ্যাত সেই ক্লাসিক ছবির দানবটার স্রষ্টার কথা মনে পড়ে-ড. জেকিল
কোরির কথা ভাবল
সত্যি, কি ভূত দেখেছে সে? কিছু একটা তো দেখেছে নিশ্চয়
নইলে অমন করে চিৎকার করত না
নাহ, ঘুমাতে আর পারবে না! বিছানা থেকে নেমে পড়ল সে
চাঁদটা চলে এসেছে যেন ঠিক তার জানালার বাইরে
হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায়
রূপালী জ্যোৎস্না ঘরে ঢুকে আলোর একটা আয়তক্ষেত্র তৈরি করেছে
আলো মাড়িয়ে আলমারির কাছে গিয়ে শার্টটা বের করে গায়ে দিল সে
রান্নাঘরে যাবে
কোক-টোক কিছু পায় কিনা দেখবে
দরজা খুলে সরু হলওয়েতে বেরিয়ে এল
বাতাসে কার্পেট ক্লীনার আর পোকা মারার ওষুধের গন্ধ
খুব মৃদু আলো জ্বলছে
রাতের বেলা ডিম লাইট জেলে রেখে উজ্জ্বল আলোগুলো সব নিভিয়ে দেয়া হয়
হেঁটে চলল সে
রবারসোল স্যান্ডেল পরা থাকায় শব্দ হলো না
দুপাশের দরজাগুলো আগের মতই বন্ধ
মোড় নিয়ে আরেকটা করিডরে বেরোল
বিচিত্র এক রকম গন্ধ
আবছা অন্ধকার
একই রকম নিঃশব্দ
যেন স্বপ্নের মধ্যে হেঁটে চলল সে
ঠিক এই সময় কানে এল শব্দটা
থমকে দাঁড়াল সে
নিঃশ্বাস বন্ধ করে ফেলল
মেঝের মচমচ না তো?
আবার হলো শব্দটা
আরেকটু জোরে
সেই সঙ্গে শেকলের ঝনঝনানি
শেকল? ভুল শুনছে না তো?
আবার হলো শব্দটা
এগিয়ে এসে থেমে গেল
মৃদু গোঙানি
মানুষের গোঙানির মত
হালকা বাজনার শব্দ ভেসে এল
বীণা বাজাচ্ছে কেউ
ফিসফিস করে ওর নাম ধরে ডাকল কে যেন
দূর! সব আমার কল্পনা, নিজেকে বোঝাল সে
বাতাসের শব্দ
সরু হলওয়েতে দমকা বাতাস এসব কারসাজি করছে
করুণ সুরে বেজেই চলল বীণা
ফিসফিস করে তার নাম ধরে ডাকল
একটা ছোট্ট মেয়ে
একেবারে কানের কাছে
ঘটনাটা কি? মোড়ের অন্যপাশে কেউ আছে নাকি? হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিল সে
পার হয়ে এল মোড়টা
কানে এল মানুষের কণ্ঠ
জোরে জোরে কথা বলছে
হাঁ করে ঢোক গিলে পানি খাওয়ার মত বাতাস গিলতে শুরু করল সে
যে ঘর থেকে কথা শোনা যাচ্ছে, তার দরজায় নম্বর নেই
নিচের ফাঁক দিয়ে চিলতে আলো এসে পড়েছে বাইরে
ভূতুড়ে ফিসফিসানি থেমে গেছে
এগিয়ে গিয়ে দরজায় কান পাতল সে
ব্যারনের কণ্ঠ
চিনতে কোন অসুবিধে হলো না