document_id
stringlengths 36
36
| text
stringlengths 253
70.2k
|
---|---|
1fb629bb-efa2-47f6-aa7c-4849f2f5c4b1 | কিভাবে শেয়ার ব্যবসায় সফল হবেন? প্রতিদিন হাজারো বিনিয়োগকারীর একই প্রশ্ন। প্রশ্নটির উত্তর দেয়া যায় এক কথাতেই। তাহলো, দেখে শুনে বুঝে শেয়ার কিনলে খুব সহজেই মুনাফা করা যায়। কিন্তু কিভাবে বুঝবেন, আপনি যে কোম্পানির শেয়ার কিনছেন, সেটি ভালো কোম্পানি। আবার শুধু ভালো কোম্পানি হলেইতো হবে না- কখন কিনবেন, কি দামে কিনবেন সেই কোম্পানির শেয়ার? আবার শুধু কিনলেইতো হবে না, বিক্রি করতে হবে সঠিক সময়ে, সর্বোচ্চ মুনাফায়। তাহলেই না- আপনি লাভবান হবেন।
আপনার সঠিক সিদ্ধান্তই পারবে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে
টাইকুন একটি জাপানী শব্দ। ‘টাই’ অর্থ মহান, ‘কুন’ অর্থ একজন সমর নায়ক। টাইকুন এমন এক ব্যক্তি যিনি উচ্চাকাঙ্খা ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিজকে এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করেছেন। সফল শেয়ার ব্যবসায়ী হতে হলে আপনাকেও টাইকুন মানসিকতা অর্জন করতে হবে।
শেয়ার বাজারে প্রতিদিন, প্রতি সপ্তাহে, বিভিন্ন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কারণ ও ধরন বিষয়ে আগাম ধারণা পাওয়ার জন্য বহু ধরনের দিক নিদের্শনা রয়েছে। অনেক শেয়ার ব্যবসায়ী এসব দিক নির্দেশনা কাজে লাগিয়ে হয়েছেন কোটিপতি।
শেয়ার বাজারের চরম মন্দাবস্থায়ও অনেকে প্রচুর অর্থ আয় করছেন। অথচ কীভাবে সুপ্ত সম্ভাবনাসমূহ কাজে লাগাতে হবে তা জানেন এবং বুঝেন এমন শেয়ার ব্যবসায়ীর সংখ্যা আমাদের দেশে অতি নগণ্য। যারা ব্যর্থতার পরেও শেয়ার ব্যবসাতে লেগে থাকেন তারা কোন না কোন সময়ে সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছে যান, সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। তবে এই সফলতার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার। প্রকৃতপক্ষে যতবেশি জ্ঞান অর্জন করা যাবে, সফলতার মাত্রাও সে পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।
শেয়ার ব্যবসা কোন প্রকার রহস্য বা ভাগ্যের ব্যাপার নয়। এটা এক ধরনের বিশেষ দক্ষতা; যা অর্জন করা যে কোনো ব্যবসায়ীর পক্ষেই সম্ভব। বিশেষ দক্ষতা বলতে সঠিক সময়ে সঠিক দরে সঠিক শেয়ার বেচা-কেনা করার দক্ষতাকে বুঝানো হয়েছে। এ বিষয়ে একজন শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ মূল্যবান একটি পরামর্শ দিয়েছেন।
‘শেয়ার বাজারে যখন মন্দাবস্থা বিরাজ করবে, এমনকি পত্র-পত্রিকাও শেয়ার বাজার বিষয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করবে তখনই যথাযথ বিবেচনার ভিত্তিতে সুপ্ত সম্ভাবনাময় শেয়ার ক্রয় করতে হবে এবং যখন বেশিরভাগ মানুষ একটি বিশেষ কোম্পানির শেয়ারকে অপেক্ষাকৃত ভালো এবং প্রচুর সম্ভাবনাময় মনে করবে সে সময়ে ঐ শেয়ারটি বিক্রী করার জন্য আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
সফলতার জন্য একজন শেয়ার ব্যবসায়ী (ডে-ট্রেডার) হিসেবে আপনাকে কোম্পানি ফান্ডামেন্টালের বিষয়টি নূন্যতম বিবেচনাতে নিয়ে শেয়ারের দর উঠানামায় ধরন বিশ্লেষণের ভিত্তিতে শেয়ার কেনা বেচা করার কৌশল আয়ত্ত্ব করতে হবে। তবে মেয়াদী বিনিয়োগের জন্য কোম্পানি ফান্ডামেন্টালের বিষয়টি অবশ্যই যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন। শেয়ার ব্যবসা নিয়ে ধারাবাহিক এই লেখায় সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আমার দীর্ঘ প্রায় দুদশকের বিনিয়োগ পরামর্শকের অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে অতি তুচ্ছ কারণ, অমার্জনীয় অবহেলা, বেখেয়াল, অজ্ঞতা বা সামান্য পরিশ্রমের অভাবে বহু মানুষ বহু কষ্টে সঞ্চিত মুল্যবান সঞ্চয় ভুলভাবে বিনিয়োগ করে নিঃস্ব হয়েছেন।
অন্যদিকে সঠিক সিদ্ধান্ত, সময়োচিত উদ্যোগ, দুরদর্শিতা ও সৃজনশীল প্রতিভা কাজে লাগিয়ে বহু মানুষের জীবনে অভাবনীয় সফলতা এসেছে। প্রকৃতপক্ষে শেয়ার ব্যবসাতে সফলতা বা ব্যর্থতার ঘটনাটি লটারি বা জুয়া খেলাতে জয়ী হওয়ার মত ভাগ্যের ব্যাপার নয়। বরং এমন ধারণা একজন শেয়ার ব্যবসায়ীর জন্য ক্ষতিকর।
নিত্যনতুন বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে বের করুন
শেয়ারবাজার নিয়ে গবেষনা করে নিত্যনতুন বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে বের করুন। অন্যেরা যে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার সন্ধান পাবে আগামীকাল, একজন টাইকুন ব্যবসায়ী হিসেবে আপনাকে আজই সেই শেয়ারটি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সাধারণ ব্যবসায়ীগণ যখন বিশেষ একটি শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহী থাকবেন না তখনই সুপ্ত সম্ভাবনা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে শেয়ারটি ক্রয় করতে হবে। সাধারণ ব্যবসায়ীগণ যখন শেয়ারটি ক্রয়ে উন্মুখ হয়ে উঠবেন তখন শেয়ারটি বিক্রী করে দিয়ে লাভ ঘরে তুলতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সফলতাই আপনাকে একজন টাইকুনে পরিণত করবে। |
ad058c55-7fb9-4a8a-9b29-61313c4bfbb0 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বে-মেয়াদী এটিসি শরীয়া ইউনিট ফান্ডের আবেদন চলছে। গত ১৭ আগস্ট আবেদন শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। ফান্ড ম্যানেজার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিএসইসি সূত্র জানায়, কমিশনের ৫৮০তম সভায় এটিসি শরীয়া ইউনিট ফান্ডের খসড়া প্রসপেক্টাসের অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।
বে-মেয়াদী এ ফান্ডটির প্রাথমিক আকার হবে ১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের অংশ হবে ১ কোটি টাকা। বাকি ৯ কোটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ইউনিট বিক্রির মাধ্যমে এ টাকা উত্তোলন করা হবে।
ফান্ডটির উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট। সম্পদ ব্যবস্থাপক এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান হিসেবে থাকবে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
নতুন এই ফান্ডের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমরান হাসান বলেন, বাংলাদেশে ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিসহ অনেক প্রতিষ্ঠান শরীয়াহভিত্তিক পরিচালিত হচ্ছে। ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি মানুষদের জন্য এই ফান্ড গঠন করা হয়েছে। |
e1bc3d4a-acbc-4ddb-bba3-5f55a5d9afdb | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সব শেয়ার ছেড়ে দিয়েছে ইউনাইটেড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হযরত শাহজালাল (রা.) ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ব্যাংকটির ৩ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৫টি শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ব্যাংকের পর্ষদ থেকেও সরে গেছে শাহজালাল (রা.) ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গ্র্যান্ড বিজনেস নামের একটি কোম্পানি এসব শেয়ার কিনেছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জুলাই শেয়ার বিক্রির পাশাপাশি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে তাদের মনোনীত পরিচালককে প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয় শাহজালাল (রা.) ইন্ডাস্ট্রিয়াল। ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদে তা গৃহীত হয়। এর পর গতকাল ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৩ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৫টি শেয়ার কেনাবেচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রতিটি শেয়ার ৩২ টাকা দরে হাতবদল হয়।
জানা গেছে, চলতি বছরেই ইসলামী ব্যাংকের বড় অঙ্কের শেয়ার কিনে হযরত শাহজালাল (রা.) ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি লিমিটেড। ব্যাংকের সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) কোম্পানিটির পক্ষে ইসলামী ব্যাংকের মনোনীত পরিচালক নির্বাচিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এএনএম সাইদুল হক খান।
এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল মান্নান বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান বা বিনিয়োগকারীর শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় সাধারণ ঘটনা। গত তিন মাসে ইসলামী ব্যাংকে মোট ১১ জন পরিচালক যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কেউ সম্পূর্ণ শেয়ার বিক্রি করে চলে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনসাপেক্ষে নতুন কেউ এর মালিক হবে। তাদের প্রতিনিধিও পর্ষদে আসতে পারে। ব্যাংকের ব্যবসার সঙ্গে এর তেমন সম্পর্ক নেই।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় প্রতিষ্ঠাকালীন বিদেশী উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে দেয়। শেয়ার বিক্রি করে দেয়া প্রসঙ্গে ইউনাইটেড গ্রুপের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ছেড়ে দেয়ার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ নেই। এটি কোম্পানির স্বাভাবিক বিনিয়োগ কার্যক্রমেরই অংশ।
ডিএসইর সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যের ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৬৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ৫ দশমিক ৮৪, বিদেশী ৮ দশমিক ৭৯ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে বাকি ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ শেয়ার।
চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ইসলামী ব্যাংকের কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৫৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ১৫ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ২ টাকা ১১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৫ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় ইসলামী ব্যাংক। বছর শেষে ইপিএস দাঁড়ায় ১ টাকা ৯৬ পয়সা। ২০১৪ সালের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডাররা।
তখন ইপিএস ছিল ২ টাকা ৪৬ পয়সা। আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২ সালের পর থেকেই ইসলামী ব্যাংকের নিট মুনাফা কমছে। ২০১২ সালে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী মুনাফা ছিল ৫৬১ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২০১৫ সালে যা ৩১৫ কোটির ঘরে নেমে আসে। ঋণমানে ব্যাংকটির অবস্থান দীর্ঘমেয়াদে ‘ডাবল এ প্লাস’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-১’।
ইসলামী ধারার প্রথম বাংলাদেশী ব্যাংকটি ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২ হাজার কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে বর্তমানে ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। রিজার্ভে আছে ৩ হাজার ১১৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। |
d19f84f7-b05c-4e2a-87b2-a1a5e6da9c40 | মো: সাজিদ খান, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: উদ্যোক্তারা সে পরিমাণ শেয়ার বিক্রি না করলেও গত এক বছরে প্রায় এক-চতুর্থাংশ কোম্পানিতে উদ্যোক্তা অংশের শেয়ার কমেছে। তালিকাভুক্তি বিধিমালার সংশোধনীতে উদ্যোক্তা শেয়ারের সংজ্ঞাগত পরিবর্তনের কারণেই শেয়ারধারণ এ পরিবর্তন এসেছে। ২০১৫ সালের ১২ জুলাই ঢাকা ও চট্টগ্র্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তি বিধিমালা সংশোধন করা হয়। সেখানেই প্রথমবারের মতো উদ্যোক্তার সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়।
নতুন সংজ্ঞা অনুসারে, কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড কিংবা সামষ্টিক বিনিয়োগ স্কিমের প্রারম্ভিক মূলধন জোগানদাতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানই শুধু উদ্যোক্তা হিসেবে বিবেচিত হবে। এর ফলে কোম্পানির উদ্যোক্তাদের শেয়ার কমেছে। স্টক এক্সচেঞ্জ উপস্থাপিত উপাত্ত পর্যালোচনায় এ চিত্র উঠে আসে।
কোম্পানির প্রারম্ভিক মূলধনদাতা ব্যক্তি বা উদ্যোক্তা মারা গেলে অথবা অন্য কোনো কারণে তার শেয়ার নিকটাত্মীয়দের কাছে হস্স্তান্তর করলে সে শেয়ার আর উদ্যোক্তা শেয়ার হিসেবে বিবেচিত হবে না। অর্থাত্ উত্তরাধিকার সূত্রে কেউ উদ্যোক্তার শেয়ার পেলেও তিনি উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন না।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শেয়ার সাধারণ শেয়ার হিসেবে গণ্য হবে এবং তা বিক্রিতে কোনো পূর্বঘোষণার প্রয়োজন হবে না। এদিকে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির যেসব শেয়ারহোল্ডার এ কারণে উদ্যোক্তা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তাদের শেয়ার এখন লকড-ইন (বিক্রয় কিংবা হস্তান্তর নিষেধাজ্ঞা) থাকবে কিনা, সে বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সংজ্ঞাগত পরিবর্তনের কারণে তালিকাভুক্ত অন্তত ৬৫টি কোম্পানির উদ্যোক্তা অংশের শেয়ার কমে গেছে। কিছু উদ্যোক্তা বাদ পড়ায় কয়েকটি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ধারণকৃত শেয়ার ৩০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু ও পুনঃগণপ্রস্তাবের (আরপিও) যোগ্যতা হারিয়েছে।
উদ্যোক্তার বর্তমান সংজ্ঞা নির্ধারণের পর স্কয়ার ফার্মা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, শাহজিবাজার পাওয়ার, একমি ল্যাবরেটরিজ, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং, আরএন স্পিনিং মিলস, ফারইস্ট ফিন্যান্স, মতিন স্পিনিং মিলস, জিবিবি পাওয়ার, লিবরা ইনফিউশন্স, বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকস, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ারধারণের পরিমাণ কমে গেছে।
এর মধ্যে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আফতাব অটো, এ্যাপোলো ইস্পাত, বারাকা পাওয়ার, ফ্যামিলিটেক্স, জেনারেশন নেক্সট, মিথুন নিটিং, তাল্লু স্পিনিং ও পিপলস ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ারধারণের পরিমাণ ৩০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এতে কোম্পানিগুলো রাইট শেয়ার ও আরপিওর মাধ্যমে মূলধন বাড়ানোর সুযোগ হারিয়েছে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোক্তা পরিচালদের সম্মিলিত শেয়ারের পরিমাণ ৩১ দশমিক ৫৩ শতাংশ থেকে ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৫ সালের ৩০ জুন স্কয়ার ফার্মার উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ছিল ৫৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্তি বিধিমালা সংশোধনের পর বর্তমানে এ কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার নেমে এসেছে ৩৬ দশমিক ৩৪ শতাংশে।
সদ্যতালিকাভুক্ত একমি ল্যাবরেটরিজের আইপিও প্রসপেক্টাসে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার দেখানো হয় ৫৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। চলতি বছরের জুলাই মাস শেষে তাদের শেয়ার নেমে এসেছে ৩৮ দশমিক ৮৮ শতাংশে। একই সময়ে বেঙ্গল উইন্ডসর কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ৬২ দশমিক ৫২ শতাংশ থেকে ৩২ দশমিক ২ শতাংশে নেমে এসেছে।
ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ৭৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ থেকে ৫১ দশমিক ৩২ শতাংশ, গোল্ডেন সান ৪৮ দশমিক ২৮ শতাংশ থেকে ৪১ দশমিক ৮৯ শতাংশে, মতিন স্পিনিং ৬৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ থেকে ৩২ দশমিক ৭২ শতাংশে, আরএন স্পিনিং ৬২ দশমিক ২১ থেকে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশে এবং লিবরা ইনফিউশন্সের উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ৪৮ দশমিক ২৮ থেকে ৩৪ দশমিক ৪২ শতাংশে নেমে এসেছে।
এর বাইরে একই কারণে জাহিন স্পিনিং মিলস, নর্দার্ন জুট, ফারইস্ট নিটিং ও সেন্ট্রাল ফার্মার উদ্যোক্তা অংশের শেয়ারও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ফারইস্ট ফিন্যান্স, ফার্স্ট ফিন্যান্স, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং, ডেল্টা লাইফ, এক্সিম ব্যাংক, আইএলএফএসএল, নিটল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, পপুলার লাইফ, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ও প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ারের পরিমাণও কমেছে। |
87316acd-de93-4c71-bd6f-c16023477e3e | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ।
গতকাল মঙ্গলবার কোম্পানির পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। কোম্পানির সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে এ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত সময়ে একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ টাকা ৫৫ পয়সা।
আর শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ৭৭ টাকা ৩৪ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য এ কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ১৩ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, একমি ল্যাবরেটরিজ ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। |
38134649-70fc-43bf-90b0-1e1fff83f766 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে মার্জিন ঋণ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে সরকারের কাছে স্বল্প সুদে ৬ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল চেয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। আজ সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠককালে বিএমবিএ এই তহবিল গঠন করার অনুরোধ জানায়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, মার্জিন ঋণ সমস্যার সমাধানে বেশ কিছুদিন আগে বিএমবিএ অর্থমন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল।
মূলত সেটির বিষয়ে আলোচনা করার জন্যেই সংগঠনের নেতারা আজ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বৈঠক শেষে বিএমবিএ সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান বলেন, তারা অর্থমন্ত্রীর কাছে পুঁজিবাজারের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
নেগেটিভ ইক্যুটি আছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ওই তহবিল থেকে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। এমন একটি তহবিল পাওয়া গেলে বাজারে গতির সঞ্চার হবে। এতে নেগেটিভ ইক্যুইটির অনেক অ্যাকাউন্টের অবস্থার উন্নতি হবে। আর প্রতিষ্ঠানগুলো তখন সংকট থেকে বের হয়ে আসতে পারবে।
তহবিল থেকে নেওয়া ঋণের অর্থও তারা ফেরত দিতে পারবে। তিনি আরও জানান, অর্থমন্ত্রী বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন তাদেরকে।
এই তহবিল কীভাবে গঠিত হবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমবিএ সভাপতি বলেন, এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে গঠন করে সরাসরি টাকাও দেওয়া যেতে পারে। আবার বন্ড ইস্যু করেও তা সম্ভব। সরকার তার সুবিধাজনক পন্থাটি বেছে নিতে পারে। সাক্ষাতকালে তার সঙ্গে ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ও প্রাইম ফাইন্যান্স ইনভেস্টমেন্টের সিইও ড. মোশাররফ হোসেন এবং লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সিইও খন্দকার কায়েস হাসান।
প্রসঙ্গত, মার্জিন বিশেষ ধরনের ঋণ। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীরা ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে এই ঋণ নিয়ে থাকে। ঋণের জামানত হিসেবে গ্রাহকের একাউন্টের সব শেয়ার ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা থাকে। শেয়ারের দাম কমে গিয়ে ঋণের বিপরীতে গ্রাহকের নিজস্ব মূলধন নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে এলে তাকে বাড়তি অর্থ জমা দিতে বলা হয়।
তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই অর্থ জমা না দিলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের গচ্ছিত শেয়ার বিক্রি করে ঋল সমন্বয় করে নিতে পারে। কিন্তু ২০১০ সালের ধসে সৃষ্ট বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকারের পরামর্শে বেশিরভাগ মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারহাউজ শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সময়ন্ব করেনি। ইতোমধ্যে শেয়ারের দাম এতো বেশি কমে গেছে যে, গ্রাহকের নিজম্ব মূলধন ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।
ফলে তার সব শেয়ার বিক্রি করেও ঋণ সমন্বয় করা সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় গ্রাহক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানকে এড়িয়ে চলছে, তাদের প্রাপ্য শোধ করছে না। অন্যদিকে এই ঋণে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারহাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ অর্থ আটকে যাওয়ায় তারাও তা শেয়ার কেনাবেচায় কাজে লাগাতে পারছে না। এতে বাজার গতি পাচ্ছে না। |
241e76b7-7a26-425b-925d-c7e35abdcd94 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি একমি ল্যবরেটরিজের ঘোষিত ডিভিডেন্ডে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছেন। কোম্পানির ঘোষিত ডিভিডেন্ড বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মিল নেই। যে কারনে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হলেন। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল কোম্পানটি প্রথম বছর বিনিয়োগকারীদের স্টক ডিভিডেন্ড দিবে। তবে কোম্পানিটি প্রথম বছর ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষনার ফলে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, একমি ল্যাবরেটরিজ একটি ভালো মৌল ভিত্তি কোম্পানি। তাছাড়া প্রথম বছল ৩৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেওয়া ভালো লক্ষন। তাছাড়া ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিলে কোম্পানির শেয়ার স্যখ্যা বাড়ে না। এটা বিনিয়োগকারীদের জন্য ভাল ।
একজন বিনিয়োগকারী জানান, আমার ১২০ টাকা করে কয়েক হাজার একমি কেনা। এত টাকায় যদি ওরা সাড়ে তিন টাকা দেয় তাহলে লাভ হলো কি? এতদিন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছিলাম। ভেবেছিলাম ডিভিডেন্ড ঘোষনা করলে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকার কাছাকাছি চলে যাবে, কিন্তু এখন এই ডিভিডেন্ডে তা কতটুকু হয় চিন্তার বিষয়।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজর বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরি জানান, ৩৫% হলেও তা যেহেতু ক্যাশ দিয়েছে তাই বলতে হবে এটি শুভ লক্ষন। কতৃপক্ষ শেয়ারের পরিমান বাড়াতে চায়নি। যা এবছর না হলেও আগামি বছরের জন্য ভালো হবে। আর বর্তমান বাজারে ৩৫% একেবারে কম নয়। তবে শেয়ারটির দামের তুলনায় লভ্যাংশ কম হয়েছে এটা ঠিক।
আর সংস্থাটির মহাসচিব আবদুর রাজ্জাক বলেন, দেশের প্রথম শ্রেনীর একটি ওষুধ কোম্পানি হিসাবে অন্তত ৫০% ডিভিডেন্ড দেয়া উচিত ছিল। আমরা এই কোম্পানির কাছ থেকে নগদের পাশাপাশি স্টক হিসাবেও কিছু চাচ্ছিলাম। সেটি না দেয়ায় আমাদের অনেক সদস্য মনক্ষুন্ন হয়েছেন। কর্তপক্ষ ৩৫ এর সাথে আরো ১৫ স্টক দিতে পারতো। অন্যান্য কোম্পানির ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, প্রথম বছর হিসাবে অনেকেই নগদের সাথে স্টক দেয়। শুধু একমির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখলাম। তবে তিনিও কোম্পানি হিসাবে একমিকে ভালো বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, ৩৫% হলেও বুধবারের বাজারে শেয়ারটির দাম বৃদ্ধির সম্ভবনা আছে।
উল্লেখ্, মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে । এর পুরোটাই নগদ। কোম্পানির সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে এ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত সময়ে একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ টাকা ৫৫ পয়সা। আর শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ৭৭ টাকা ৩৪ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য এ কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট ১৩ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, একমি ল্যাবরেটরিজ এবছরই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। |
5bf8456b-cdc6-4cf2-a66e-d8878d0097f6 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে আইন করেও তৈরি করা যায়নি মার্কেট মেকার। যে কারণে দীর্ঘদিনেও গতিশীল হয়নি পুজিবাজার। ১৫ বছরে আগে মার্কেট মেকার নামের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী তৈরি করতে আইন প্রণয়ন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শুরুর দিকে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী মার্কেট মেকার হওয়ার আগ্র্রহ দেখালেও এখন আর এ নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ নেই। এর ফলে পুঁজিবাজারে বিরাজ করছে অস্থিরতা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত মূলধন ও দক্ষতার অভাবেই মার্কেট মেকার গড়ে ওঠেনি। কিন্তু বাজারের স্বার্থে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর শেয়ারবাজারের ন্যায় আমাদের দেশেও মার্কেট মেকার গড়ে ওঠা প্রয়োজন। তাই মার্কেট মেকার সৃষ্টি করতে ফের চেষ্টা শুরু করেছে বিএসইসি। এজন্য বিদ্যমান আইনে সংশোধন করা প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মার্কেট মেকার হলো পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট এমন প্রতিষ্ঠান, যারা শেয়ার কেনাবেচার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের যৌক্তিক দর প্রতিষ্ঠা এবং বাজারকে গতিশীল করতে কাজ করে। মন্দা বাজারে যখন নতুন বিনিয়োগ করার কেউ থাকে না, তখন মার্কেট মেকার প্রতিষ্ঠান শেয়ার কিনে বাজারকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করে।
একই সঙ্গে বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতেও সহায়তা করে। আইন অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংক, ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি, মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকার বা স্বতন্ত্র কোনো প্রতিষ্ঠান মার্কেট মেকারের লাইসেন্স নিয়ে কার্যক্রম চালাতে পারে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মার্কেট মেকার গড়ে না ওঠার কারণ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মূলধন স্বল্পতা, ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমাবদ্ধতা এবং বাজারে আর্থিক জ্ঞান ভিত্তিক বিনিয়োগ প্রবণতা না থাকাকে দায়ী করছেন। তারা বলছেন, মার্কেট মেকার হওয়ার জন্য বিপুল অর্থ থাকা আবশ্যক।
কিন্তু পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা নির্ধারণ করে দেওয়ায় তাদের বা তাদের সহযোগী মার্চেন্ট ব্যাংক বা ব্রোকারেজ হাউসের পক্ষে মার্কেট মেকারের ভূমিকা নেওয়া কঠিন। তার ওপর ২০১০ সালের ধসে বড় অঙ্কের লোকসানে পড়ায় বাজারের প্রতি তাদের আগ্রহই কমে গেছে। এদের বাইরে মার্কেট মেকারের ভূমিকা নেওয়ার মতো খুব কম প্রতিষ্ঠানই আছে। এছাড়া বাজারে সার্বিক লেনদেন কম হওয়া এবং লেনদেন খরচ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এ বাজারে একই সঙ্গে ক্রেতা ও বিক্রেতার ভূমিকা নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কেট মেকার হিসেবে কার্যক্রম চালাতে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পোর্টফোলিও ম্যানেজার থাকা আবশ্যক। কিন্তু আমাদের দেশে তারও অভাব রয়েছে। যার সুষ্পষ্ট উদাহরণ হলো সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি পরিচালিত মিউচুয়াল ফান্ডের আয়ের পরিস্থিতি। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, অনেক ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউস বা সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি শুরুর দিকে এ ব্যবসায় আগ্রহী হলেও এখন পর্যন্তÍ কেউ লাইসেন্স নেয়নি। |
197bce8e-7d90-4ec5-a4a7-a0c0429935f7 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ৯টি কোম্পানি বিনিয়োগ অত্যন্ত ঝুঁকিতে বা ‘রেড জোন’এ ঢুকেছে। আর্থিক অবস্থান পর্যালোচনা বা মূল্যায়ন করে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ৯ কোম্পানিকে ‘রেড জোন’-এ ফেলেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর ভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে চাপ সহনশীল (স্ট্রেস টেস্টিং) প্রতিবেদন তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে রেড জোনে ফেলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রতিবেদন তৈরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদ হার বৃদ্ধিজনিত ঝুঁকি, ঋণ ঝুঁকি, সম্পত্তির (ইক্যুইটি) মূল্যজনিত ঝুঁকি ও তারল্য অভিঘাত—এ চার ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া হয়। চাপ সহনশীল প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে গ্রিন, ইয়েলো ও রেড—এ তিন জোনে ভাগ করা হয়। রেড জোনে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবিড়ভাবে তদারকিও শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রেড জোনে পড়া এ ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো: বাংলাদেশ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি (বিডি ফাইন্যান্স), বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), এফএএস ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফারইস্ট ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, প্রাইম ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স ও ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড। এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর ফেসভ্যালুর (অভিহিত মূল্য) নীচে লেনদেন হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মূখপাত্র উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, রেড জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মফিজউদ্দিন সরকার বলেন, আমাদের চলতি হিসাব আমানত নিতে পারি না, ঋণ করে ব্যবসা করতে হয়। আমরা জামানত ছাড়াই বড় প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে থাকি। আমাদের মূলধনও ছোট। ফলে অনেক ভালো প্রতিষ্ঠানও রেড জোনে পড়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৪৪ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা ঋণ বা লিজ দিয়েছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৪ হাজার ১ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিতরণের ৮.৯২ শতাংশ ঋণই খেলাপি।
সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৮৮৪ কোটি টাকা। বিতরণ করা ঋণের ৮৩.১২ শতাংশই খেলাপি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকদের অনিয়মের ফলে সরিয়ে দেওয়া হয় কয়েকজনকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে পর্যবেক্ষকও। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাতেও পরিবর্তন এসেছে।
প্রাইম ফিন্যান্সের খেলাপি ঋণ ১২০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৯.৭৪ শতাংশ। প্রিমিয়ার লিজিংয়ের খেলাপি ঋণ ১১৩ কোটি টাকা বা ৮.৯৯ শতাংশ। ইসলামিক ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের খেলাপি ঋণ ৬৭ কোটি টাকা বা ৮.৬১ শতাংশ। ইউনিয়ন ক্যাপিটেলের খেলাপি ১২১ কোটি টাকা বা ৮.৪১ শতাংশ।
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, বিআইএফসি, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স এবং প্রিমিয়ার লিজিংয়ের শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের নীচে লেনদেন হচ্ছে। এর মধ্যে ২০১৫ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য বিআইএফসি ও প্রাইম ফাইন্যান্স শেয়ারহোল্ডারদের কোন ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নিয়মানুযায়ী রেড জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তিন বছরের মূলধন ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা জমা দিতে হয়। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়, ঋণ বহুমুখীকরণ, শেয়ারে বিনিয়োগ ও আপত্কালীন তারল্য পরিকল্পনা জমা দিতে হয়। ইয়েলো জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও একইভাবে তদারকি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রিন জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো সূচকে অবনতি ঘটলে কঠোরভাবে তদারকি করা হয়। |
d5186085-d0a1-419a-a278-7aae04449eb1 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের এ কি কান্ড! দুই পক্ষের হৈ হুল্লোড় মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) পন্ড হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের তোপের মুখে পড়েছেন কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপন পরিচালকসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত এজিএমে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাক বিতন্ডা দেখা দেয়। পাশাপাশি এজিএমে উত্থাপনের আগেই সব এজেন্ডা কোম্পানির ভাড়া করা লোকজন পাস করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
জানা যায়, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরের এজিএমের শুরুতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এজেন্ডা উত্থাপনের আগেই হলের ভিতরের লোকজন সম্মিলিতভাবে পাশ পাশ বলে চিৎকার করতে থাকে। পরে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এতে বাধা প্রদান করলে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
উক্ত সংঘাতের পর পুলিশ এসে কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপন পরিচালকসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেয়। সে সময়েই এজিএম সম্পন্ন হয়েছে বলেও কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানা হয়। আর এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে হলের চেয়ার টেবিল ভাংচুরের চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারী পক্ষে পুঁজিবাজার ঐক্য পরিষদের সভাপতি সেলিম চৌধুরী বলেন, সমাপ্ত অর্থবছরে কোন প্রকার লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি পিপলস লিজিং। যাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মর্মাহত। আর কোম্পানির এ রকম হটকারী সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের মানতে বাধ্য করতেই এজিএমে বহিরাগত লোকজন এনে সকল এজেন্ডা পাশ করার পায়তারা করে।
পরবর্তীতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোন কথা না শুনেই পুলিশের সহায়তায় পালিয়ে যায় বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে কোম্পানির সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও কোন প্রকার মন্তব্য পাওয়া যায় নি।
উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ হিসাব বছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ সুপারিশ না করায় এরই মধ্যে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৫ হিসাব বছরে পিপলস লিজিংয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৩ পয়সা, আগের বছর যেখানে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৭৬ পয়সা। ২০১৪ সালের লভ্যাংশ হিসেবে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৪ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে পিপলস লিজিং, যেখানে আগের বছর একই সময়ে তাদের ইপিএস ছিল ১০ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১১ টাকা ৬৮ পয়সা, ২০১৫ সালের একই তারিখে যা ছিল ১৭ টাকা ৬২ পয়সা। সর্বশেষ সার্ভিল্যান্স রেটিং অনুসারে পিপলস লিজিংয়ের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান ‘ট্রিপল বি ২’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-৩’। |
3e35781a-4da8-468e-a15c-52b9d4366a6f | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আগামী সপ্তাহে প্রত্যাহার হতে পারে সামিট পাওয়ার লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনের ওপর আরোপিত স্থগিতাদেশ। যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মগুলোর অধিদপ্তরে (আরজেএসসি) সম্পদ মূল্যায়নে ভ্যালুয়ারের প্রতিবেদন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) দেয়ার পরই সামিট পাওয়ারের শেয়ার লেনদেনের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সামিট পাওয়ার লিমিটেডের লেনদেন জটিলতার বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এনফোর্সমেন্ট বিভাগে। বিএসইসির ৫৮৩ তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি এই বিভাগে পাঠানো হয়েছে। কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সামিট ইস্যুতে বিএসইসি কর্তৃক গঠিত কমিটি গত বুধবার সংস্থার চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদন বিএসইসির ৫৮৩ তম কমিশন সভায় গ্রহণ করে। এটি নিয়ে দীর্ঘ পর্যালোচনার পর কমিশন এনফোর্সমেন্ট বিভাগে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্র জানিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী এনফোর্সমেন্ট বিভাগ দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের শুনানিতে ডাকবে বিএসইসি। শুনানির পর বিষয়টি আবারও বিএসইসির কমিশন সভায় উঠানো হবে। সব দিক দেখে কমিশন সিদ্ধান্ত নিবে।
সামিট পাওয়ারের সঙ্গে এ গ্রুপের তিন কোম্পানি একীভূতকরণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া জটিলতায় উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে বন্ধ আছে কোম্পানির লেনদেন। একই সঙ্গে বিএসইসি ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ গঠন করেছে আলাদা তদন্ত কমিটি।
বিএসইসির অভিযোগ, কোম্পানিটি একীভুতকরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিবিধান সঠিকভাবে অনুসরণ করেনি। বিশেষ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে কোম্পানিটি মূলধন বাড়ানোর অনুমতি নেয়নি। কিন্তু কোম্পানি দুটি একীভূত হওয়ার কারণে সামিট পাওয়ারের পরিশোধিত মূলধন নিশ্চিতভাবেই বাড়বে। তাই একীভুতকরণ সম্পন্ন করার আগেই মূলধন বাড়ানোর অনুমতি নেওয়া অপরিহার্য। তবে লেনদেন বন্ধ করার পর গত ২৮ আগস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে মূলধন বাড়ানোর আবেদন করে কোম্পানিটি।
জানা গেছে, সামিট পাওয়ার অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দরে ১৯ কোটি ১৮ লাখ ৭৬ হাজার ৫১৮ টি শেয়ার ইস্যু করে ১৯১ কোটি ৮৭ লাখ ৬৫ হাজার ১৮০ টাকা মূলধন বাড়াতে চায়।
সুত্রে জানায়, এসপিপিসিএল তালিকাচ্যুত হয়ে সামিট পাওয়ারে একীভূত হলেও সামিট পাওয়ার লিমিটেড নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার বিপরীতে মূলধন বাড়ানোর অনুমোদন নেয়নি। এ জটিলতায় এসপিপিসিএল তালিকাচ্যুত হয়ে গেলেও এর শেয়ারহোল্ডাররা সামিট পাওয়ারের শেয়ার বুঝে পাননি।
আর স্টক এক্সচেঞ্জও আগের ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে একীভূতকরণের অংশ হিসেবে এসপিপিসিএলকে তালিকাচ্যুত করে। এতে যথাযথ বিধি অনুসরণের ব্যর্থতায় সামিট পাওয়ারের লেনদেন স্থগিতের পাশাপাশি তদন্তপূর্বক স্টক এক্সচেঞ্জের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সে সময়ের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, পরবর্তীতে সামিট পাওয়ার কর্তৃপক্ষ পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছে। আরএজেএসসিতে সম্পদ মূল্যায়নে ভ্যালুয়ারের প্রতিবেদন জমাও দিয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রাপ্তি স্বীকারপত্রও হাতে পেয়েছে কোম্পানিটি।
সামিট পাওয়ার লিমিটেডের কোম্পানি সচিব স্বপন কুমার পাল বলেন, বৃহস্পতিবার শেষ সময়ে আরজেএসসি থেকে সম্পদ মূল্যায়নে ভ্যালুয়ারের প্রতিবেদন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাওয়া গেছে, যা আগামী রোববার বিএসইসিতে দাখিল করা হবে। এর আগে আমরা কমিশনে মূলধন বৃদ্ধির অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছি। আমরা আশা করছি, বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুততম সময়ে লেনদেনে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হবে।
বিষয়টি নিয়ে একাধিক কমিশনারের সঙ্গে কথা বলছে আমাদের প্রতিবেদক। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, কমিশনের ভেতরকার বিরোধ যাই থাকনা কেনো বিনিয়োগকারীদের শেয়ার লেনদেন বন্ধ থাকায় সবাই সমভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং কিভাবে সেটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু করা যায় তার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
কিন্তু যেহেতু এ বিষয়টির ওপর মহামান্য আদালতের কয়েকটি শর্তারোপ করা আছে তাই সেগুলো ফুলফিল না করা পর্যন্ত কমিশনের কোনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনে কিছুটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একজন কমিশনার বলেন, কোম্পানিকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ইস্যু এবং মূলধন বাড়ানোর ডকুমেন্টস জমা দিতে বলা হয়েছে। এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার পর মূলধনের অনুমতি পেলে এবং বিনিয়োগকারীদের নামে শেয়ার ইস্যু হওয়ার পরই চিঠি ইস্যু করা হবে।
এসব কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরই কেবলমাত্র লেনদেনের স্থগিতাদেশ তুলে নেয়া হবে। তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, সেটি আমাদের হাতে জমা হয়েছে, এখন তা পর্যালোচনা করে দেখা হবে। সামিটের ব্যাপারে কোম্পানির কিংবা ডিএসই বা সিএসইর কেউ দোষী হলে তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে চেয়ারম্যানের কাছে সামিট ইস্যু নিয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটির প্রধান বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম। |
2b93623d-4ba8-4d55-8f7f-d19e6109b2de | মো: সাজিদ খান, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভ্ক্তু শীর্ষ ২০ কোম্পানির পণ্য বিক্রি ও নিট মুনাফায় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করে ভালো মূলধনি মুনাফা অর্জন করেছেন সংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীরা। তালিকায় উৎ্পাদনমুখী বহুজাতিক কোম্পানি যেমন রয়েছে, একই সঙ্গে রয়েছে দেশীয় কোম্পানিও।
খাতভিত্তিক বিবেচনায় তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। শীর্ষ কোম্পানি নির্বাচনে ৫০০ কোটি টাকা বাজার মূলধন রয়েছে, এমন কোম্পানিকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। বিবেচনায় নেয়া হয়েছে পণ্য বিক্রি ও নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি, পিই রেশিও (মূল্য-আয় অনুপাত) ও ডিভিডেন্ড ঈল্ডও (প্রকৃত লভ্যাংশ)। তবে প্রধান বিবেচ্য বিষয় ছিল বিনিয়োগের বিপরীতে মূলধনি মুনাফা।
শীর্ষ কোম্পানি নির্বাচনে সময়কাল ধরা হয়েছে ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। আর মূলধনি মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে ২০১২ সাল থেকে চলতি বছরের ২০ জুন পর্যন্ত। সারা বিশ্বেই কোম্পানিতে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রকৃত লভ্যাংশ ১ শতাংশ বা এর কাছাকাছি থাকে। তবে দেশীয় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সেরা কোম্পানিগুলোর প্রকৃত লভ্যাংশের পরিমাণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ১ শতাংশের বেশি।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশও ছাড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড ঈল্ডের চেয়ে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে মূলধনি মুনাফা। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেশীয় সেরা কোম্পানিগুলোর কোনো কোনোটি থেকে সর্বোচ্চ ৭৫৩ শতাংশ পর্যন্ত মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে বেশি মূলধনি মুনাফা পেয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে।
দেশে বিস্কুটের বাজারের বড় অংশ দখল করে আছে কোম্পানিটি। উন্নত প্রযুক্তি ও উত্পাদনসক্ষমতা বাড়ানোয় কোম্পানিটির পণ্য বিক্রির পরিমাণ নিয়মিত হারে বাড়ছে। চার বছরে অলিম্পিকের নিট মুনাফা বেড়েছে ১৩৫ শতাংশ। আর ২০১২ সাল থেকে ২০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূলধন বেড়েছে ৭৫৩ শতাংশ।
বর্তমানে কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূলধন ৬ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা, যা বাজার মূলধনে শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ষষ্ঠ। এ কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের।
ওষুধের বাজারের প্রায় ১৯ শতাংশ দখলে রয়েছে ওষুধ খাতের শীর্ষ কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের। ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে এ কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। আর এ সময় নিট মুনাফা বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। অবশ্য চলতি হিসাব বছরে বিক্রি ও মুনাফায় প্রবৃদ্ধির হার আরো বেশি। চার বছরে বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন ১৫৮ শতাংশ।
২০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত কোম্পানিটির বাজার মূলধন ১৬ হাজার ১৭৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা বাজার মূলধনে শীর্ষ কোম্পানি তালিকার তৃতীয়। উৎপাদনমুখী কোম্পানিগুলোর মধ্যে নিট মুনাফায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি)। উচ্চ করহারের কারণে গত বছর কোম্পানিটির নিট মুনাফা কিছুটা কমলেও ২০১২ সালের তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেড়েছে।
তবে এ সময়ে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে উল্লেখযোগ্য মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ২০১২ সালে বিএটিবিসির শেয়ারের বাজার মূলধন ছিল ৫ হাজার ৩৭ কোটি টাকা, যা গতকাল ১৬ হাজার ৬৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে চার বছরে ২১৮ শতাংশ মূলধনি মুনাফা হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।
বর্তমানে শেয়ারবাজারের সবচেয়ে দামি শেয়ার হচ্ছে এ কোম্পানির। ২০ জুন এ কোম্পানির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ২ হাজার ৭০৩ টাকা ৭০ পয়সা। বাজার মূলধনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিএটিবিসি। উৎপাদনসক্ষমতার প্রায় পুরোটা ব্যবহার করায় ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির রেভিনিউয়ে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। ভারতে ক্লিংকার খনির জটিলতা নিরসন হওয়ায় লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্র্রহ দেখা দেয়।
২০১০-১১ সালে লোকসানে থাকলেও ২০১২ সালেই কোম্পানিটি মুনাফায় ফেরে। এর পর প্রতি বছরই কোম্পানির মুনাফায় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি দেখা দিলেও ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী ক্লিংকারের দরপতনে মুনাফা খানিকটা কমেছে লাফার্জের। তবে বিশ্বব্যাপী লাফার্জ ও হোলসিম সিমেন্টের একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরুর কারণে দেশে এর শেয়ারদর বাড়ছে। এতে কোম্পানির বাজার মূলধনও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
২০১২ সালের তুলনায় বর্তমানে কোম্পানির বাজার মূলধন বেড়েছে ১২২ শতাংশ। যেসব বিনিয়োগকারী দীর্ঘমেয়াদে এ কোম্পানির শেয়ার ধারণ করেছেন, তাদের মূলধনি মুনাফাও একই হারে বেড়েছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে এগিয়ে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ৬১ শতাংশ। এ সময় কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ।
চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও কোম্পানির পণ্য বিক্রি ও মুনাফার ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। মুনাফার ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় শেয়ারবাজারে এ কোম্পানির শেয়ারদর ঈর্ষণীয় পর্যায়ে রয়েছে। ২০ জুন ২০১৬এ কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ২ হাজার ২৪৬ টাকা। ২০১২ সালের তুলনায় এ কোম্পানির বাজার মূলধন ৩২২ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসইর শীর্ষ বাজার মূলধনি কোম্পানির তালিকায় বার্জারের অবস্থান নবম। শেয়ার মূল্যের তুলনায় এ কোম্পানির প্রকৃত লভ্যাংশের হার ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
২০১২ সাল থেকে ২০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে ৩২২ শতাংশ মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। চার বছরে বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের নিট মুনাফা বেড়েছে ১০৯ শতাংশ। দেশীয় ইস্পাত শিল্পে শীর্ষ এ কোম্পানির ২০১৫ সালে নিট মুনাফা হয় ২০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা, ২০১২ সালে যার পরিমাণ ছিল ৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৪২ শতাংশ। ২০১৫ সালে এ শেয়ারে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রকৃত লভ্যাংশের হার ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এ কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত ১৪ দশমিক ৪২। পুুঁজিবাজারের সেরা কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রকৃত লভ্যাংশের হার সবচেয়ে বেশি হাইডেলবার্গ সিমেন্টের। কোম্পানিটি তিন বছর ধরে ৩০০ কিংবা এর বেশি হারে লভ্যাংশ দিয়ে আসছে।
২০১৫ সালে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রকৃত লভ্যাংশ পেয়েছেন। ২০১২ সাল থেকে যেসব বিনিয়োগকারী এ কোম্পানির শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের মূলধনি মুনাফা প্রায় ৯৬ শতাংশ। এ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্টের বাজার মূলধন ১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা থেকে ২ হাজার ৯৩০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। আরএকে সিরামিকে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রকৃত লভাংশ হচ্ছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
লোকসানি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিক্রির পর কোম্পানির মুনাফা বাড়তে দেখা গেছে। ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে আরএকে সিরামিকের নিট মুনাফা প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়েছে। চার বছরে বাটা সুর সম্পদ মূল্য বেড়েছে ১১৭ শতাংশ। অর্থাত্ যারা ২০১২ সালে বাটা সুর শেয়ারে বিনিয়োগ করে এখন পর্যন্ত ধরে রেখেছেন, তাদের শুধু মূলধনি মুনাফা হয়েছে ১১৭ শতাংশ। এর বাইরে রয়েছে লভ্যাংশ থেকে প্রাপ্ত আয়। দেশে ইলেকট্রনিকস পণ্য বিক্রিতে একসময়ের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি ছিল সিঙ্গার বাংলাদেশ। ২০০৯ সাল পর্যন্ত শেয়ারবাজারের সবচেয়ে দামি শেয়ার ছিল এটি।
ধারাবাহিকভাবে বোনাস শেয়ার ঘোষণায় কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়লেও সে তুলনায় মুনাফা বাড়েনি। তার পরও দীর্ঘমেয়াদে এ কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগ থেকে উল্লেখযোগ্য মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ২০১২ সালে এ কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূলধন ছিল ৬৪৪ কোটি টাকা, যা ২০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ইলেকট্রনিকস পণ্যে প্রতিযোগী বেড়ে যাওয়ায় ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে এ কোম্পানির নিট মুনাফা কিছুটা কমে গেছে।
২০১২ সালে ম্যারিকো বাংলাদেশের নিট মুনাফা ছিল ৫৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা ২০১৫ সালে ১৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। চার বছরে কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ১৫১ শতাংশ। এ সময়ে যারা এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ধরে রেখেছেন, তাদের শুধু মূলধনি মুনাফাই হয়েছে ২৩৫ শতাংশ। এ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঈল্ড ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া বহুজাতিক কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনে চার বছরে বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফা হয়েছে ২০৩ শতাংশ। নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে এসিআই লিমিটেড।
২০১২ সালে ১৬ কোটি টাকা লোকসান হলেও পরের বছরই তা কাটিয়ে ওঠে তারা। ২০১৫ সালে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল ৭৬ কোটি টাকা। ২০১২ সাল থেকে যেসব বিনিয়োগকারী এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ধরে রেখেছেন, তাদের মূলধনি মুনাফা হয়েছে ৪৩২ শতাংশ। চার বছরে কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ।
সেরা কোম্পানির তালিকায় এসিআইয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসিআই ফর্মুলেশনস লিমিটেডও রয়েছে। চার বছরে এ কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে ৫২ শতাংশ। আর দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা এ সময়ে ১০৪ শতাংশ মূলধনি মুনাফা পেয়েছে। গত চার বছরে রেনাটার নিট মুনাফা বেড়েছে ৭৪ শতাংশ। ওষুধ খাতের শীর্ষস্থানীয় এ কোম্পানিটি প্রতি বছরই উচ্চ মুনাফায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীর আগ্রহে কোম্পানির শেয়ারদরও বাড়ছে।
আর্থিক প্রতিবেদন স্বচ্ছতা ও ভালো ব্যবস্থাপনার কারণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদেশী বিনিয়োগও রয়েছে কোম্পানিটির শেয়ারে। গত চার বছরে বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানির শেয়ার থেকে ১৯০ শতাংশ মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন। কয়েক বছর ধরেই ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। গত চার বছরে এ কোম্পানির পণ্য বিক্রি বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। এ সময়ে নিট মুনাফা বেড়েছে ১৬৫ শতাংশ। মুনাফা বাড়ায় সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।
গত চার বছরে এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে বিনিয়োগকারীরা মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন ২৮৭ শতাংশ। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান রেকিট বেনকিজার থেকে বিনিয়োগকারীরা মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন ১১৪ শতাংশ। এছাড়া একই সময়ে ওষুধ শিল্পের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মায় ৮৪ শতাংশ, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যাল থেকে ৪৫ শতাংশ মূলধনি মুনাফা এসেছে। আর এনভয় টেক্সটাইলসে মূলধনি মুনাফা না হলেও বিনিয়োগের বিপরীতে তুলনামূলক ভালো লভ্যাংশ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। সুত্র: দেশ প্রতিক্ষণ |
ea33700a-882b-4f3a-b1d5-948dd1aad6ba | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্ত্বেও পুঁজিবাজারে আসছে না সরকারি কোম্পানির শেয়ার। তবে গত ৬ বছওে মাত্র ৩টি সরকারি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে। আর ১৮টি প্রতিষ্ঠানেরই এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে শিগগিরই সরকারি ওসব কোম্পানির শেয়ার বাজারে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। অথচ মূলধ সঙ্কটে কোনো কোনো সরকারি কোম্পানি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে।
কিন্তু শেয়ার আপলোডের ক্ষেত্রে ওসব কোম্পানিতে থাকা সরকারি আমলারা গড়িমসি করছে। নতুন নতুন অজুহাত এবং সরকারি আমলাদের অসহযোগিতার কারণেই সরকারি কোম্পানির শেয়ার বাজারে আসার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাচ্ছে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে বাজার টেকসই হবে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর অব্যবস্থাপনা অনেকাংশে কমে আসবে। তখন কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতার কারণে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বাড়বে। পুঁজিবাজারের স্বার্থে এবং স্বচ্ছতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই সরকারের উচিত যথাসময়ে কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করা। এমনকি বাজার অস্থিতিশীল হলেও সরকারি কোম্পানির শেয়ার সরবরাহ বন্ধ করা ঠিক হবে না।
কারণ ভালো শেয়ার এলে নতুন বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হবে। তাতে বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং ভালো মিউচুয়াল ফান্ডও আসবে। ফলে বাজারের গভীরতাও বাড়বে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে মূল সমস্যা হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট। ওই সংকট কাটাতে ভালো শেয়ার থাকা জরুরি। যদিও এদেশের বিনিয়োগকারীরা হুজুগে দুর্বল বিনিয়োগ করে তবে ভালো শেয়ার এলে ওই প্রবণতা কমে আসবে।
সূত্র জানায়, বিগত ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি ৩৪ কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে তখন ওই উদ্যোগ বেশি দূর এগোয়নি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে বাজারে ভালো শেয়ারের ভয়াবহ সঙ্কট দেখা দেয়। তারপর সঙ্কট কাটাতে সরকারি কোম্পানিকে বাজারে আনার উদ্যোগ শুরু হয়। ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয় এক বৈঠকে সরকারি কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি শেয়ার পাবলিকের মধ্যে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ওই সময়ে কোম্পানিগুলোকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার ছাড়তে সময়সীমাও বেঁধে দেয়া হয়। তারপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়েছে কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার তাগিদ দেয়া হয়। তবে তার মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির সময়সীমা ২০১১ সালের ১৪ ও ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু ওই সময়ে মোট কোম্পানির সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে দাঁড়ায় ২৬টিতে।
সর্বশেষ শেয়ার ছাড়ার জন্য গতবছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়। তার মধ্যে গত ৬ বছরে ৫টি কোম্পানি শেয়ার ছাড়তে পেরেছে। ওগুলো হলো যমুনা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ও রূপালী ব্যাংক। কিন্তু বাকি ২১টি কোম্পানিই শেয়ার ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, দীর্ঘদিন পর চলতি বছরের এপ্রিলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেন। সেই লক্ষ্যে গত ৫ মে তার সভাপতিত্বে সরকারি মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক হয়। বৈঠকে তিনটি কোম্পানি তাদের শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে আগ্রহের কথা জানিয়েছে। ওগুলো হলÑ এসেনসিয়াল ড্রাগস, বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস এবং লিক্যুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস।
ওই বৈঠকে বাকি কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে অগ্রগতি নিজ নিজ মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়। কিন্তু কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞদের মতে- সরকারি কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে ছাড়তে অর্থমন্ত্রী একাধিকবার সময় বেঁধে দিয়েছেন। কিস্তু বাস্তবে তা সফল হয়নি। তবে অর্থমন্ত্রীর বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে সরকারি কোম্পানিগুলোর শেয়ার বাজারে ছাড়া প্রয়োজন ছিল।
অন্যদিকে সরকারি কোম্পানিতে থাকা সরকারি আমলাদের মতে-পুঁজিবাজারের বতর্মান অবস্থা খুবই নাজুক। তলানিতে এসেছে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম। তারপর সরকারি শেয়ার ছাড়া হলে বাজার আরো খারাপ হবে। ফলে শেয়ারের ভালো দাম পাওয়া যাবে না।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মো. রকিবুর রহমান জানান, ২০১০ সালে ভালো শেয়ারের অভাবে বাজারে বিপর্যয় হয়েছে। কারণ বাজারে যে পরিমাণ বিনিয়োগকারী এসেছিল বিপরীতে ওই পরিমাণ ভালো শেয়ার ছিল না। অথচ নির্ধারিত সময়ে সরকারি শেয়ার ছাড়া সম্ভব হলে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার বিশ্ববাসীর কাছে দৃষ্টান্ত হতো। |
ff071058-8523-4873-91ec-a1ca294f5e9d | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশ্যে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ধৈর্য ধরুণ, ক্ষতি পুষিয়ে দিবো।
শোনা যায় আস্থার অভাবে শেয়ারের দাম কমে বিনিয়োগকারীরা লোকসানে পড়ছে। কিন্তু আমার মনে হয় বিনিয়োগকারীরা আস্থাকে ব্র্যান্ডিং করতে পারে নাই। রোববার রাতে ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবিএ’র সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির সাবেক কমিশনার ও আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আরিফ খান।
অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন বক্তা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সমালোচনা করে বলেন, তারা একতরফাভাবে তিতাসের গ্যাস বিতরণ চার্জ কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। হাজার হাজার বিনিয়োগকারী এই সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারা এ বিষয়ে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এর জবাবে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিইআরসিসহ বিভিন্ন জায়গার দায়িত্বশীলরা পুঁজিবাজার বুঝে না। তাই এমন অনেক সিদ্ধান্ত চলে আসে।
উল্লেখ, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে বিইআরসি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কারো সঙ্গে আলোচনা না করে তালিকাভুক্ত কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির গ্যাস বিতরণ মাশুল (প্রতি ঘন মিটার গ্যাসের) ৩২ পয়সা থেকে কমিয়ে ২২ পয়সা নির্ধারণ করে। অথচ কোম্পানিটির গ্যাস বিতরণে খরচ হয় তার চেয়ে বেশি। প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিতরণে তিতাসের গড় ব্যয় ২৯ পয়সা।
নতুন হার ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর কার্যকর হয়। এতে তিতাস গ্যাসের মুনাফায় ধস নামে। নতুন বিতরণ হার কার্যকর হওয়ার পরবর্তী প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’১৫) তিতাস গ্যাসের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয় ৩২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে আয় কমে প্রায় ৮৫ শতাংশ। |
8cdd4cef-cb40-4323-9015-6b5291b0587b | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবেলস লিমিটেডের শেয়ারের দুই ইস্যুতে লেনদেন বাড়ছে। বর্তমান এ কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে।রাষ্ট্রাত্তর কোম্পানির ফলে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক একটু বেশি। সুত্রে জানায়, পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় স্থাপিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনটি ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে চালু হতে যাচ্ছে।
সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনটি চালু হলে ইন্টারনেটে তাৎক্ষণিকভাবে ২০০ জিবিপিএস সুবিধা পাওয়া যাবে, যা ১৫০০ জিবিপিএস পর্যন্ত সম্প্রসারণযোগ্য। ২০১৩ সালের শেষদিকে ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় । নতুন এ সাবমেরিন কেবলটি চালু হলে দেশীয় টেলিকম কোম্পানিগুলোকে বিদেশ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনতে হবে না। নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকবে।
কক্সবাজারের স্থাপিত প্রথম সাবমেরিন কেবল ওয়ানের তুলনায় প্রায় আট গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। এটি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি ব্যান্ডউইডথ রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ বড় অংকের অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাবে। বাড়বে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) মুনাফা।
এসইএ-এমই-ডব্লিউই ৫ প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মনন আশরাফ জানান, এ বছরের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর জানুয়ারিতে ল্যান্ডিং স্টেশনের সঙ্গে এর সংযোগ স্থাপন করবে বিএসসিসিএল। বীচ ম্যানহোল থেকে ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপন করা হয়েছে।
১০ একর জমিতে সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনটির অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সমুদ্র থেকে কেবল সংযোগের কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছে বিএসসিসিএল।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সাগরের নিচ দিয়ে ফ্রান্স থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ২০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ কেবল স্থাপন করা হয়েছে। ইউরোপ থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আসা সঞ্চালন লাইন সংযুক্তির জন্য ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনের কাজও শেষ পর্যায়ে।
এছাড়া ফাংশনাল বিল্ডিংয়ের মূল স্থাপনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে । ড্রেনেজসহ অবকাঠামোগত অন্যান্য কর্মকাণ্ড শেষের দিকে রয়েছে। ডরমিটরি, নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যারাক হাউস, রেস্ট হাউস নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এখন চলছে ভবনের সৌন্দর্য বর্ধন ও স্টাফ কোয়ার্টারের কাজ।
সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য স্থাপিত নিজস্ব ইলেকট্রিক্যাল কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটিতে সরকার ১৬৬ কোটি টাকা ও বিএসসিসিএল ১৪২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। প্রকল্পের বাকি টাকার ঋণসহায়তা দিয়েছে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি)।
উল্লেখ, দেশে একমাত্র সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ইন্টারনেট সরবরাহ করায় বর্তমানে লাইন কাটা পড়লে বিএসসিসিএলের হাতে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। কিন্তু দ্বিতীয় সাবমেরিন ল্যান্ডিং স্টেশনের মাধ্যমে বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশের সাবমেরিন যোগাযোগ ব্যবস্থার বহুমুখীকরণ করা সম্ভব হবে। ল্যান্ডিং স্টেশনের সংযুক্তির মাধ্যমে ডাটার পরিধি বৃদ্ধি এবং দেশের তথ্য প্রযুক্তির চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর সরবরাহ বৃদ্ধি করা হবে এবং সরকার এ খাতে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের সুযোগ পাবে
এদিকে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি (বিএসসিসিএল) থেকে ব্যান্ডউইডথ নিতে আগ্রহী ভুটান। এ লক্ষ্যে দেশটির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় পৌঁছেছে। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাতদিনের সফরে ব্যান্ডউইডথ নেয়ার বিষয়ে কারিগরি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করবে ভুটান সরকারের প্রতিনিধি দলটি।
বিএসসিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের ভুটান সফরের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সফরে আসে ভুটান সরকারের প্রতিনিধি দল। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখবেন। প্রতিনিধি দলটি এরই মধ্যে বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভা শেষ করেছে।
এসব বৈঠকে টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয় চিহ্নিত করার পাশাপাশি বিএসসিসিএল থেকে আইপি ব্যান্ডউইডথ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইসহ বিস্তারিত কারিগরি সিদ্ধান্ত নিতে বিএসসিসিএলের বিভিন্ন পপ ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিনিধি দলটি।
এ প্রসঙ্গে বিএসসিসিলের কোম্পানি সচিব আব্দুস সালাম বলেন, বিএসসিসিএল এরই মধ্যে ভারতে ব্যান্ডউইডথ রফতানি করছে। ভুটান সরকারও বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইডথ নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশ সফরে দেশটির সরকারি প্রতিনিধি দলটি এ বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাছাই করবে। পরবর্তীতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে।
প্রসঙ্গত, এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৪ কনসোর্টিয়ামের আওতায় কক্সবাজারে প্রথম সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ২০০ জিবিপিএস ব্র্যান্ড সরবরাহ করছে বিএসসিসিএল। এর মাধ্যমে দেশের আইসিটি ও টেলিকম কোম্পানিগুলোর চাহিদার বড় অংশ পূরণ করছে কোম্পানিটি।
দেশে ৩০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ চাহিদার মধ্যে ১২০ জিবিপিএস সরবরাহের পর ব্যান্ডউইথের বড় অংশই উদ্বৃত্ত থাকে কোম্পানিটির। ফলে অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ মজুদ থাকায় ভারতের রাষ্ট্রয়ত্ত কোম্পানি ভারত সঞ্চার নিগাম লিমিটেডকে (বিএসএনএল) ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে বিএসসিসিএল।
চলতি বছরের শুরুতে রফতানি শুরু হওয়া এ ব্যান্ডউইডথ থেকে বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় আসবে বিএসসিসিএলের। এর পরও বছর শেষে উল্লেখযোগ্য ব্যান্ডউইডথ উদ্বৃত্ত থাকবে বিএসসিসিএলের, যা থেকে ভুটানে রফতানির সুযোগ রয়েছে।
২০১৪-১৫ হিসাব বছরে ব্যান্ডউইডথ বিক্রিসহ এর মোট টার্নওভার দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। দেশে ব্র্যান্ডউইডথের দাম কমে যাওয়া আগের বছরের তুলনায় এ টার্নওভার প্রায় ২৮ শতাংশ কমেছে।
২০১৫-১৬ হিসাব বছরে প্রকাশিত তিন প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৫ সালের জুলাই থেকে চলতি মার্চ পর্যন্ত এ কোম্পানির টার্নওভার ৪০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কুয়াকাটায় স্থাপিত দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল জানুয়ারি থেকে চালু হয়েছে। এর ফলে কোম্পানিতে আরো দেড় হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথড যোগ হবে। |
1c223a67-7419-4aea-a305-fb9b3c74081a | ফাতিমা জাহান, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সররকারসহ নীতি নির্ধারকের আন্তরিকতায় পুঁজিবাজার শক্তিশালী অবস্থানে পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার পথে হাঁটছে। সরকারসহ নীতি নির্ধারকদের আন্তরকিতার বাজার তার নিজস্ব গতিতে চলছে। ফলে একদিন পরই ফের উত্থানে ফিরেছে পুঁজিবাজার। বর্তমান পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার দিকে হাটতে শুরু করায় বাজারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে সকলের আস্থা বেড়ে গেছে।
দীর্ঘ মন্দার পর অবশেষে দেশের শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতার দিকে হাটতে শুরু করেছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে মূলত বাজার উঠানামার মধ্য দিয়ে এ স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে চলছে। এ করণেই বাজারের প্রতি আস্থা বাড়ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘ মন্দার পর বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার কারণে সূচকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। মূলত প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় পুঁজির বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে বাজার স্থিতিশীলতার পথে হাটতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে লোকসানে থাকা সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা তাদের লোকসান কাটিয়ে উঠতে নতুন করে তাদের বিনিয়োগে অংশগ্রহণ বাজারকে আরও স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে বাজারে প্রতি হারিয়ে যাওয়া আস্থা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার ফিরতে শুরু করে।
এ বিষয়ে আইসিবি ইনভেস্টমেন্টসহ কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, আস্থা আর সন্তুষ্ট এক জিনিস নয়। আস্থা বলতে বাজারে বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশ রয়েছে এমন অবস্থায় বিনিয়োগে ফেরাকে আস্থা বলতে পারি। আর সন্তুষ্ট সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। তারা বলেন, ধসের কারণে কোন লোক যদি ২০ লাখ টাকা হারিয়ে ফেলেন।
সে এ টাকা বাজার থেকে তুলতে না পারা পর্যন্ত তিনি সন্তুষ্ট হতে পারে না। তারা আরো বলেন, অনেক বিনিয়োগকারী আছে যাদের ইক্যুইটি মাইনাসে রয়েছে। আবার লোকসানে থাকা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কষ্টিং প্রাইজে না আসা পর্যন্ত লেনদেনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না।
এ সকল বিনিয়োগকারীরা তো সন্তুষ্টের কাছাকাছিও আসতে পারেনি। বরং তাদের এ মুহুর্তে বিনিয়োগে ফেরার প্রত্যাশায় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এদিকে টানা ১৩ কার্যদিবস যাবৎ উত্থানে থাকার পর রোববার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার ঝোঁক ছিল।
ফলে গতকাল কিছুটা নিম্নমুখী ছিল সূচক। তবে এর প্রভাব সোমবার লেনদেনের শুরুতে থাকলেও শেষভাগে এসে টানা বাড়ে বাজার। সরকারসহ সকল মহলের ইতিবাচক প্রচেষ্টায় পুঁজিবাজার বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছে এবং এ ধারা আগামীতেও বিদ্যমান থাকবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
যারা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের আর ক্ষতি হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, মানুষের বিশ্বাসটাই হচ্ছে ব্র্যান্ড, এটাকে প্রতিষ্ঠা করেত হবে। অন্যেরা যা ব্র্যান্ড করছে, তাই আপনারা কিনছেন। কিন্তু নিজের যে ব্র্যান্ডটা আছে তা কারো কাছে তুলে ধরছেন না। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
মানুষের আস্থার স্থলটাকে বৃদ্ধি এবং ব্র্যান্ডিং করার মাধ্যমে আপাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে। পাশাপাশি দেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির সাথে চুক্তিও করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার পুঁজিবাজার থেকেও অর্থ সংগ্রহ করতে আগ্রহী। প্রয়োজনে আগামী বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ৫-১০ হাজার কোটি টাকার কম বরাদ্দ রেখে শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। যা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যার সুবাদে সোমবার বাজার বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা। একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে পুঁজিবাজার একটি সুন্দর অবস্থায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখন বাজারে চোখ-কান খোলা রেখে বিনিয়োগ করতে পারে। তবে বর্তমানে ক্যাপিটাল মার্কেটের ভালো অবস্থার মধ্যে অসংখ্য নিচুমানের কোম্পানিও রয়েছে।
যারা যেকোন সময় সুযোগ নিতে পারে। তাই তাদের ব্যাপারে বিনিয়োগকারীদের সজাগ থাকতে হবে। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতে বিনিয়োগকারীরা এখন অনেক চালাক হয়েছে। অর্জন করেছে অভিজ্ঞতাও। আগের মতো বিনিয়োগকারীরা হুজুগে বিনিয়োগ করে না। দেখে-শুনে ও বুঝে বিনিয়োগ করে। ফলে আগের মতো এখন আর বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। এটা পুঁজিবাজারের জন্য অত্যন্ত ভালো দিক। তারা আরও বলেন, সরকার বিগত কয়েক মাসে ক্যাপিটাল মার্কেটের উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। যা বাস্তবায়নও হচ্ছে।
যে কারণে ক্যাপিটাল মার্কেট দিনকে দিন ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে মার্কেটকে আরও ভালো করতে হবে। এজন্য ওটিসি মার্কেট ও জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে কিছু নীতিমালার প্রয়োজন। কেননা ওটিসি মার্কেটে যেসব শেয়ার রয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে মালিকপক্ষের যেন কোন দায়বদ্ধতা নেই। আর জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার বিক্রিতে ৮ কার্যদিবস সময় লাগার বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশজনক। তাই এ ওয়াকিং ডে’র সময় কমানো গেলে বাজার আরও উন্নত হবে। |
cc3f5fe2-1f2a-445b-8572-5efd597912c6 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানি অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার শেয়ার প্রতি ৮ টাকা ৩৬ পয়সা লোকসান করেছে। তবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে লোকসানের পরিমাণ কমেছে। ৬ মাসের (জানুয়ারি-জুন) নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, কোম্পানিটি জুলাই- জুন হিসাববছর নির্ধারণ করেছে। এর আগে জানুয়ারি –ডিসেম্বর ছিল কোম্পানির হিসাববছর। সর্বশেষ ৬ মাসে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি লোকসান করেছে ৮ টাকা ৩৬ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে এটি লোকসান ছিল ১২ টাকা ৩১ পয়সা। এ হিসাবে লোকসান কমেছে ৩২ দশমিক শূণ্য ৮ শতাংশ বা ৩ টাকা ৯৫ পয়সা।
প্রসঙ্গত, অর্থ বিল, ২০১৫ এ ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাদে সব প্রতিষ্ঠানকে সার্বজনীন হিসাববছর অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর জন্য জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত সময়কে নির্ধারণ করা হয়। জুলাই থেকে জুন হচ্ছে করবছর। করবছরের সঙ্গে মিল রেখে হিসাববছর নির্ধারণই ছিল অর্থ বিল, ২০১৫ এ আরোপ করা ওই শর্তের প্রধান উদ্দেশ্য। |
7b25caf7-c7dd-443c-8abe-37a70cd4c2c3 | ফাতিমা জাহান , শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: জিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক খাতের শেয়ারের দিকে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বাড়ছে। বেশ কিছুদিন ধরে এ খাতের শেয়ারের দিকে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগ করছেন। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে অধিকাংশ আর্থিক খাতের শেয়ারের দাম সহসশীল অবস্থায় থাকায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।
তাছাড়া স্মরনকালের দরপতনের পর এবারই প্রথম আর্থিক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক। অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিকাংশ আর্থিক খাতের কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ বাড়ায় বিনিয়োগকারীদেও ঝোঁক বাড়ছে।
যার ফলে গতকাল লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রায় ৯১ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। ঐদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আর্থিক খাতের ৪ কোম্পানি টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে এসেছে। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী,পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানি রয়েছে।
আজ ২১টি কোম্পানির দর বেড়েছে। গেইনার তালিকার শীর্ষে রয়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। শেয়ারটির দর ৪ টাকা ২০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারটি গতকাল সর্বশেষ ৪৬ টাকা ৪০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
ঐদিন কোম্পানিটি এক হাজার ২৫৩ বারে ১৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৫০টি শেয়ার লেনদেন করেছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জিএসপি ফিন্যান্স। এই শেয়ারটির দর ১ টাকা ৮০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল শেয়ারটি সর্বশেষ ২০ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়।
এদিন কোম্পানিটি এক হাজার ৪৮৪ বারে ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার ৩৭১টি শেয়ার লেনদেন করে। তালিকার পঞ্চম স্থানে থাকা ইসলামিক ফিন্যান্সের ৯০ পয়সা বা ৬ দশমিক ২১ শতাংশ দর বেড়েছে। আজ শেয়ারটি সর্বশেষ ১৫ টাকা ৪০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। গেইনার তালিকায় থাকা বে-লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ১ টাকা বা ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ দর বেড়েছে। |
759d0357-2bd4-429d-81a6-d5db65145617 | দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি সিটি ব্যাংকের দর বাড়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনার শেষ নেই। তবে কি কারনে বাড়ছে সিটি ব্যাংক এ নিয়ে চলছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে চুলছোড়া বিশ্লেষন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হস্তক্ষেপে মন গলছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। এতে নাকচ হয়ে যাওয়া সিটি ব্যাংকের শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব নতুন ভাবে জেগে উঠছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর সাথে গভর্নর ফজলে কবীরের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কাছে সিটি ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় এ বিষয়ে অনুমোদন দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেন অর্থমন্ত্রী।
এ বিষয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে সিটি ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে আলোচনা হয়েছে। আর এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ১৩১ কোটি টাকায় ৫ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য সিটি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে। শর্ত মানতে গিয়ে ব্যাংকটি সংঘবিধিতে ৫০-এর বেশি ধারায় পরিবর্তনের উদ্যোগও নেয়।
এতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন থাকলেও বাঁধা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকটিতে আইএফসির একক কর্তৃত্ব শুরু হবে—এ কারণে সংঘবিধি পরিবর্তনের অনুমতি দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া মূলধন ঘাটতি না থাকায় আটকে দিয়েছে ব্যাংকটির শেয়ার হস্তান্তরও। ফলে শেয়ার কেনার চুক্তি হলেও তা কার্যকর করা যায়নি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, আইএফসি চাইলে শেয়ারবাজার থেকে শেয়ার কিনে সিটি ব্যাংকের অংশীদার হতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য আবদেনও করে সিটি ব্যাংক।
সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইনের মতে, আইএফসির শেয়ার কেনা মানে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসা। এর ফলে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংও বাড়বে। তিনি বলেন, চুক্তির পর ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি সবার আগ্রহ বাড়ছে, ফলে সাধারণ শেয়ারধারীরাও উপকৃত হচ্ছেন।
জানা গেছে, সিটি ব্যাংকের ৫ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করে আইএফসি। ব্যাংকটির পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান এবং আইএফসির পক্ষে এ-দেশীয় ব্যবস্থাপক চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী, ব্যাংকটির ইস্যুকৃত নতুন ৫ শতাংশ শেয়ার কিনবে আইএফসি।
২৮ টাকা ৩০ পয়সা হিসাবে ১৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় এ শেয়ার কিনবে আইএফসি। ৫ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে আইএফসির দুজন পরিচালক থাকবেন সিটি ব্যাংকে। পাশাপাশি শেয়ার কেনার শর্ত হিসেবে আইএফসির পক্ষ থেকে ব্যাংকটির সংঘবিধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সিটি ব্যাংকও তাতে রাজি হয়। এ জন্য গত ২৭ মার্চ ও ৩১ মে বিশেষ সাধারণ সভার আয়োজন করে ব্যাংকটি, যাতে এসব সংশোধনী ও শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদন করেন শেয়ারহোল্ডাররা। ব্যাংকটি শেয়ার হস্তান্তরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করলে তাতে অনুমোদন পায়।
তবে বিএসইসি এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সিটি ব্যাংক শেয়ার হস্তান্তর ও সংঘবিধি পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক উভয় আবেদনই নাকচ করে দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র বলছে, সংঘবিধি পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যাংকের পর্ষদে আইএফসির দুজন পরিচালককে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আইএফসির প্রতিনিধির লিখিত অনুমতি নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আইনের লঙ্ঘন। কারণ, ব্যাংক কোম্পানি আইন ও কোম্পানি আইন অনুযায়ী সব পরিচালকের মর্যাদা ও ক্ষমতা সমান। মাত্র ৫ শতাংশ শেয়ার কিনে বাকি শেয়ারধারীদের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি না থাকায় পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধিকল্পে ৫ শতাংশ নতুন শেয়ার বিদেশি কোম্পানির কাছে হস্তান্তর না করে প্রয়োজনে কোনো বোনাস শেয়ার, রাইট শেয়ার ইস্যুর পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, আমরা ব্যাংকটিকে শেয়ার বিক্রির অনুমোদন দিয়েছি। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে কি করেছে তা আমাদের জানা নেই। |
f0e3a652-1ba6-45ae-b27a-d19ce5339f30 | এইচ কে জনি, দেশ প্রতিক্ষণ: উন্নত বিশ্বের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক পরিস্থিতি ও দেশের অন্যান্য খাতের সূচকের ওপর ভিত্তি করে নতুন নতুন রিসার্চ পেপার দেয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। যার মাধ্যমে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে সাধারণ ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরা।
কিন্তু বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণা ও বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট তৈরি ও প্রকাশ না কারায় সঠিক দিক-নির্দেশনা পাচ্ছে না সাধারণ ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশিত মূল্যসংবেদনশীল তথ্য ও গুজবে কান দিয়ে বিপাকে পড়ছেন তারা।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে নিয়ে যদি সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে গবেষণাপত্র প্রদান করা হতো সেক্ষেত্রে গুজবনির্ভর বিনিয়োগ কমে যেত। অন্যদিকে, নতুন আয়ের উৎস সৃষ্টি হতো সিকিউরিটিজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর।
তাদের মতে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে যদি তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক পরিস্থিতি ও অতীত তথ্য পর্যালোচনা করে গবেষণাপত্র তৈরির জন্য রিসার্চ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয় তবে লাভবান হবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
জানা যায়, ২০১০ সালে ধস-পূর্ববর্তী সময়ে দেশের খ্যাতনামা সিকিউরিটিজ হাউসগুলোর পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা পর্যালোচনা করে রিসার্চ রিপোর্ট প্রদান করা হতো। কিন্তু এর পর থেকে ধীরে ধীরে রিসার্চ রিপোর্ট প্রদান করা বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পৃথক একটি রিসার্চ বিভাগ থাকলেও তা শুধু বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের জন্যই সীমাবদ্ধ। ফলে, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা ও শেয়ার দরের যৌক্তিকতা সম্পর্কে জানতে পারে না। অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, পুঁজিবাজারে রিসার্চ ও বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্টগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বাজার সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা দেয়।
দেশের পুঁজিবাজারে থাকা ট্রেকহোল্ডার অর্থাৎ স্টক ব্রোকারদের অনুমোদন না থাকার ফলে বাজার সংক্রান্ত কোনো গবেষণা করার অনুমতি পান না তারা। জানা যায়, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বেশি হয়। বিগত কয়েক বছরের হিসাবে দেখা যায়, দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
অর্থাৎ মার্চেন্ট ব্যাংকের রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের তৈরি করা এসব গবেষণা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। এসব গবেষণার ওপর নির্ভর করে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও পুঁজিবাজারে নতুন দেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে না। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে টাকা তোলার সময় বিও অ্যাকাউন্টধারীদের আগ্রহ দেখা গেলেও লেনদেন শুরু হওয়ার সময়ই তারা বাজার থেকে শেয়ার বিক্রি করে চলে যান।
বাজার সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসেন না। বাজার সম্পর্কে যথাযথ প্রচার করা হলে এবং সাধারণ মানুষের মন থেকে পুঁজিবাজারে আসলেই লোকসান হবে এই ভয় দূর করতে পারলে নতুন বিনিয়োগকারীদের আগমন ঘটবে এবং বাজারে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে বলে মনে করছেন বাজার-বিশ্লেষকরা।
স্টক ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে মাত্র ১০ শতাংশ কোম্পানি গবেষণা কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে। এসব গবেষণা কাজের অধিকাংশই করা হচ্ছে বিদেশি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য। বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এ আশঙ্কায় স্টক ব্রোকারদের গবেষণা কাজের অনুমতি দেয়া হয় না। কিন্তু মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর এ সংক্রান্ত ব্যাপারে গবেষণা করার অনুমোদন ও তা করার জন্য দক্ষ জনবল উভয়ই আছে।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে এসব রিসার্চ রিপোর্টের ব্যাপারে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থাও নেই। তাই বিনিয়োগকারী ও বাজার বিশ্লেষকদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে বাজারকে গতিশীল ও কার্যকর করতে এসব রিসার্চ পেপার বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা। সেই সঙ্গে ব্যাপক পরিসরে তা প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা করা যাতে বিনিয়োগকারীরা এর মাধ্যমে বিনিয়োগের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ |
5cf0e4e2-5a1a-4c4f-a2b7-aded6d4f7124 | এইচ কে জনি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এমনও কোম্পানি আছে যার পরিশোধিত মূলধন মাত্র ৫ কোটি টাকা। অথচ কোম্পানিটির চলতি জুন পর্যন্ত হিসাবে লোকসানে আছে ২৬৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। মূলধনের চেয়ে লোকসানের পরিমান প্রায় ৫৪ গুন বেশি। আরেকটি প্রতিষ্ঠানের মূলধনের পরিমাণ ৬ কোটি টাকা। অথচ তারও পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ২০৬ কোটি টাকা। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো প্রতিষ্ঠান দুটিই রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। তবুও এদের মোট ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ২২৭ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- শ্যামপুর সুগার মিল এবং জিলবাংলা সুগার।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জেড ক্যাটাগরির এসব শেয়ারে বিনিয়োগ করে ক্রেতারা সর্বস্বান্ত হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি। আর বিনিয়োগকারীদের অজ্ঞাতেই এ শেয়ারে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের দায়ভার তাদের ওপর পড়ছে।
তথ্য বিশ্লেষনে দেখা গেছে, ১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় জিলবাংলা সুগার। জেড ক্যাটাগরির এ প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ লোকসানের পরিমাণ ২০৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লোকসান ২৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান ৪০.২৭ টাকা। আর ২০১৫ সালে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান ছিল ৫৬.৮৯ টাকা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ মূল্য ঋণাত্মক অবস্থানে রয়েছে। ১০ টাকার প্রতি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ লোকসান ৩৩৩ টাকা। এছাড়া ৬ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ১২৫ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় শ্যামপুর সুগার মিল। মাত্র ৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান লোকসানের পরিমাণ ২৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লোকসানের পরিমাণ ২৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান ৫১.৭২ টাকা। ২০১৫ সালে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান ছিল ৬৭.৫২ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের সর্বশেষ মূল্য ২০.৮০ টাকা।
এছাড়া ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ মূল্য লোকসান ৫২৯ টাকা। আর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের সর্বশেষ মূল্য ১৩.৬০ টাকা। অর্থাৎ যে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কিনছেন, তার কাঁধে ৫২৯ টাকার দায় চাপছে। বর্তমানে শ্যামপুর সুগারের ব্যাংক ঋণ ১০২ কোটি টাকা।
চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের আওতাধীন এ কোম্পানি দুটি ১০ বছরেও বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। অথচ এরপরও প্রতিষ্ঠান দুটির শেয়ারের দাম বাড়ছেই। গত ৬ মাসে এ দাম বাড়ার হার ১৭০ শতাংশ। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের দাম কেন বাড়ছে তার কোনো সন্তোষজনক জবাব মেলেনি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বলেন, বিএসইসির নজরদারির অভাবেই মূলত এই কোম্পাগুলো এখনো টিকে আছে। এরা কঠোর হলে এই কোম্পানি এতদিনে তালিকাচ্যুত হয়ে যেতো। তিনি বলেন, আমরা দাবি করছি অতি সত্বর যেনো বিএসইসি বাজার ধংসকারী এই লোকসানি কোম্পানিগুলোকে বাজার থেকে বিতাড়নের ব্যবস্থা করে। কারন তা না হলে এই কোম্পানির শেয়ার কিনে সাধারন বিনিয়োগকারীরা আবারো সর্বশান্ত হবে। ইতিমধ্যে সেই পরিবেশই তৈরী করেছে কুচক্রী মহল।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ সচিব আবদুর রাজ্জাক বলেন, পরিশোধিত মূলধনের ৪৪ গুন লোকসান নিয়ে কোম্পানিগুলো কিভাবে মূল মার্কেটে লেনদেন করছেন তা বোধগম্য নয়। নিয়মানুযায়ী এসব কোম্পানিকে ওটিসি মার্কেটে হস্তান্তরের কথা। এমতাবস্থায় দায়িত্বশীলদের ভূমিকা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেন। তিনি বলেন, নীতি-নির্ধারকদের এ ধরনের উদাসীনতার কারণে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীরা আস্থা রাখতে পারছেন না। তাই বিনিয়োগকারীদের আস্থার্জনে খুব দ্রুত ওটিসিতে স্থানান্তরের পাশাপাশি এই কোম্পানিগুলোর লোকসানের মূল কারণ উদ্ঘাটন করা জরুরি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্ট ভেঙ্গে দেয়া উচিত। তা না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যে উদ্দেশ্যে সরকারি কোম্পানি গঠন করা হয়েছিল, তা সফল হয়নি। কারণ লোকসান বৃদ্ধির অর্থ হল বাজার প্রতিযোগিতায় বেসরকারি কোম্পানির তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে এসব কোম্পানি। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ বাড়ছে। অর্থাৎ মুদ্রা এবং পুঁজি উভয় বাজারে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ড. আবু আহমেদ বলেন, কেন এসব কোম্পানি বছরের পর বছর লোকসানে রয়েছে তা খতিয়ে দেখা উচিত। প্রয়োজনে যদি কোম্পানির ঘুরে দাড়ানোর সম্ভাবনা থাকে তবে কোন বিশেষ ফান্ড গঠন করে পরিস্থিতির পরিবর্তন করা যেতে পারে। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ |
b4b7b1dc-27da-4df3-89fa-f0de42086916 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখার অর্থ লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করতে নভেম্বর মাসে লন্ডন যাবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এই তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মুহাম্মদ রাজি হাসান। তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখা মুদ্রা পাচারে জড়িত কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আগামী মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেখানে যাবেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের যুক্তরাজ্য শাখাগুলোর অর্থ লেনদেনের বিষয় তদন্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির ব্রাডফোর্ড, বার্মিংহাম, লন্ডনের প্রধান শাখা, কেমডেন শাখা, প্রধান নির্বাহীর কার্যালয় তদন্ত করবে। ৯ ও ১২ ডিসেম্বর দলটি যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি (এফসিএ) ও প্রুডেনশিয়াল রেগুলেটরি অথোরিটির (পিআরএ) সঙ্গেও বৈঠক করবে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথোরিটি (এফসিএ) বলেছে, সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য ব্যাংকটিকে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে। এর আগেও ব্যাংকটির যুক্তরাজ্য শাখাকে জরিমানা গুনতে হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এফসিএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য শাখাকে নতুন গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত গ্রহণের ওপর আগামী ছয় মাসের (২৪ সপ্তাহ) জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অবশ্য ব্যাংকটি বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠাতে পারবে। জানা গেছে, সম্ভাব্য মুদ্রা পাচার ঠেকাতে পদ্ধতি উন্নত করতে সোনালী ব্যাংককে ২০১০ সালে সতর্ক করেছিল এফসিএ। কিন্তু এরপরের চার বছরেও ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে ব্যর্থ হয় সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য শাখা। এ জন্য এই জরিমানা করা হয়।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে, বার্মিংহাম ও ব্রাডফোর্ডে সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখা রয়েছে। প্রবাসীদের সেবা দিতে ও ঋণপত্রের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ২০০১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যে যাত্রা শুরু করে সোনালী ব্যাংক। এতে সরকারের শেয়ার ৫১ ও সোনালী ব্যাংকের ৪৯ শতাংশ।
এর আগে ২০১৩ সালের ২ জুন সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্যর ওল্ডহ্যাম শাখা থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার (প্রায় ২ কোটি টাকা) হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক ইকবাল আহমেদ ব্যাংকের ভল্ট ও গ্রাহকের হিসাব থেকে অর্থ হাতিয়ে নিলে ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বন্ধ হয়ে যায় শাখাটি। ওল্ডহ্যাম শাখা বন্ধের পর গত ৩০ জুন লুটন শাখা ও ৩০ সেপ্টেম্বর কেমডেন শাখাও বন্ধ হয়ে যায়। আর এরই ধারাবাহিকতায় ব্যাংকটির ব্র্যাডফোর্ড শাখা বন্ধ করে দেওয়া হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর। |
0c757e1d-551b-4a80-a6ae-78c2d485d624 | ইসমাত জেরিন খান: বাংলাদেশের পুঁজিবাজার নতুন করে আশার আলো তৈরি করেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। আর ঈদ-পরবর্তী পুঁজিবাজারে প্রতিদিনই বেড়েছে সূচক ও লেনদেন। এরপর এক কার্যদিবস বাজার নেতিবাচক থেকে, পুঁজিবাজারের গতি তার পরের কার্যদিবসেই পরিবর্তন হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা যায়। আর এই ঊর্ধ্বমুখী থাকার প্রবণতা দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই অব্যাহত রয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ। যার কারণে দেশীয় বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আশাবাদী হচ্ছেন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণেই শুধু নয়, অর্থনীতির অন্য খাতেও ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতি রয়েছে। ডিএসইর হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
আলোচিত সময়ে বিদেশি লেনদেন হয়েছে ৬ হাজার ৩৯৭ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিলো ৫ হাজার ৪৬৭ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার। আর এ কারণে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ১৭ শতাংশের কাছাকাছি। আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজারে আগ্রহ প্রকাশ করায় দেশি বিনিয়োগকারীরাও লেনদেন বাড়িয়েছেন। এতে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা যেমন বাড়ছে, তেমনি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে।
পুঁজিবাজারে জুন ক্লোজিংয়ের কারণে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে কোম্পানিগুলোর অডিট শেষ করতে হবে। তাই অক্টোবর মাসই ডিকলারেশনের মাস। এজন্য এ মাসে পুঁজিবাজারে লেনদেন বাড়াটাই স্বাভাবিক। বাজার ভালো রয়েছে, বাড়ছে লেনদেন ও সূচকও। ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স, এনবিএফআই, বহুজাতিক কোম্পানি ছাড়া সব কোম্পানির জুন ক্লোজিং এ মাসেই। আর এ মাসে কোম্পানিগুলো তাদের ডিকলারেশন দেয়ায় কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদেরও আগ্রহ বাড়ছে।
বিনিয়োগকারীরা ভালো সংবাদের আশা করছে। আর অনেক কোম্পানির ভালো সংবাদে কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের চাহিদা তৈরি হয়েছে। এতে বাজারেও এর একটি ভালো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এদিকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো থাকায় এই বাজার নেতিবাচক হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই। আর বিনিয়োগকারীদের ভয় কেটে যাওয়ার কারণে পুঁজিবাজার আগামী মার্চ পর্যন্ত ভালো থাকার কথা।
চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক। আর এর একটা প্রভাব পুঁজিবাজারেও থাকবে। বাজারের ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা বাড়তে থাকলে ডিএসইর সূচক ছাড়াতে পারে ৫০০০ পয়েন্ট, যা এই বাজারে বিনিয়োগকারীদের অনেক দিনের প্রত্যাশা। দেশে হঠাৎ করে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো বিপর্যয় না থাকলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জেরই সূচক ও লেনদেন বাড়ার কথা। আর এখন এমন বড় কোনো আইপিও বাজারে আসছে না যে তারা বাজার থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাবে।
যা পুঁজিবাজারে নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এদিকে ইন্ডিয়া-পাকিস্তানের সম্পর্ক অবনতি হলেও তার বড় কোনো প্রভাব পুঁজিবাজারে নেই। এখন পর্যন্ত এই বড় দুটি দেশের যুদ্ধ লাগার মত কোনো আশঙ্কা তৈরি হয়নি। তাই আপাত দৃষ্টিতে পুঁজিবাজারে বিদেশি ও দেশীয় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও অবস্থা দেখে স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা যায় পুঁজিবাজারে আবারও আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোতে প্রচুর অলস অর্থ পড়ে থাকায় ব্যাংকের ইন্টারেস্ট রেট অনেক কমে গেছে। সামনে আরো কমবে বলে ধারণা করা যায়। আর ব্যাংকের ইন্টারেস্ট রেট কমলে স্বাভাবিকভাবে ব্যাংকে টাকা না রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহী হবে। এতে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তবে একটানা বাজার বেড়ে যাওয়ায় গত রোববার বাজারে বিক্রির চাপ ছিল বেশি। আর এতে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক কমেছে। সকালে সূচকের পতনে লেনদেন শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। দিনশেষে প্রধান সূচক ২৫ পয়েন্ট, শরিয়া সূচক ৮ ও থার্টি সূচক ২২ পয়েন্ট কমেছে। সূচকের সঙ্গে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। গত রোববার লেনদেন হয় ৫৫৯ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট।
লেনদেন হওয়া মোট ৩২৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম বাড়ে ৮৩টির, কমে ২০২টির ও অপরিবর্তিত আছে ৩৯টি কোম্পানির দাম। টাকার অংকে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানির মধ্যে দিনশেষে টপ টেনে স্থান করে নেয়- বিএসআরএম লি., সিঙ্গার বিডি, বিএসআরএম স্টিল, এমজেএল বিডি, এনবিএল, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, আর্গন ডেনিমস, একমি ল্যাবরেটরিজ লি., ইউনাইটেড পাওয়ার এবং এসআইবিএল।
লেখক : বিজনেস এডিটর, এটিএন বাংলা। একাধারে সাংবাদিক, লেখক, সংবাদপাঠিকা এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালক। এছাড়াও অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিষয়ে রয়েছে তার সংবাদ ও টেলিভিশন টক শো। সদস্য, এফবিসিসিআই। কো-চেয়ারম্যান এসএমই, পাট, ইয়াং এন্টারপ্রাইনার ও পুঁজিবাজার বিষয়ক স্টান্ডিং কমিটি । বর্তমানে এশিয়ান প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশনের সার্টিফাইড প্রশিক্ষক এবং উদ্যোক্তা। |
012b12dd-19c4-4262-a407-6a27c4424a2f | এইচ কে জনি, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিপর্যয়ের ধারা কাটিয়ে অনেকটাই স্থিতিশীলতার পথে হাটছে দেশের পুঁজিবাজার। চলতি বছরের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই ছোট খাটো কারেকশনের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে দৈনিক লেনদেন, বাজার মূলধন ও সূচকের পরিমাণ বাড়ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থাও ফিরে আসতে শুরু করেছে।
বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারে সরকারের সহযোগীতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষনে বিএসইসির একাধিক সিদ্ধান্তের কারণে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বাজারমুখী হচ্ছেন।
এছাড়া পুঁজিবাজারের স্টেক হোল্ডারদের সক্রিয়তাও পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে বর্তমানে এ স্থিতিশীলতা ধরে রাখাটাই পুঁজিবাজারের নীতি নির্ধারকদের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষনে দেখা গেছে, গত ১১ জুলাই বাজারে ২৭২ কোটি টাকায় লেনদেন হয়।
যা পরের দিনই বেড়ে ৩৯৪ কোটি টাকায় উঠে আসে। এরপর আর ২০০ কোটির ঘরে নামে নি পুঁজিবাজারের লেনদেন। বরং ছোটখাটো কারেকশনের মধ্য দিয়ে তা গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রায় ৭০০ কোটির কাছাকাছি চলে আসে। যদিও গতকাল বাজারে ৪০৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। তবে এটাকে কারেকশন বলেই মন্তব্য করেছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
এদিকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকার ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিরা একযোগে কাজ করে আসছেন। দেশের পুঁজিবাজারকে আরো উন্নত স্তরে উন্নীত করতে দ্রততার সঙ্গে বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এরমধ্যে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত নতুন নতুন প্রোডাক্ট চালু করা, ডিজিটালাইজড ক্লিয়ারিং ও সেটেলমেন্ট কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং পুঁজিবাজার সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি’ প্রোগ্রাম চালু করার উদ্যোগ অন্যতম।
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএসইসি ২০১০ সালের ধস পরবর্তী সময়ে অস্থিতিশীল বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ চিন্তা করে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিগত সময়ের ধারাবাহিক মন্দায় বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গাটা একেবারেই শুণ্যের কোঠায় নেমে এসেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। যার ফলে গত কয়েকদিন যাবত বাজারে সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে।
স্থিতিশীলতার পথে হাটছে থমকে যাওয়া পুঁজিবাজার। তবে এ স্থিতিশীলতা ধরে রাখাটাই পুঁজিবাজারের নীতি নির্ধারকদের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ বলে তারা মনে করছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ২০১০ সালের ধসের পর বাজার আর ঘুরে দাঁড়াতে পারে নি। মাঝে মধ্যে বাজারে স্থিতিশীলতার সুবাতাস বইলেও তার স্থায়ীত্ব ছিল না।
মুলত বাজারে কারসাজি চক্রের দৌরাত্ম, উচ্চ প্রিমিয়ামে ঝুঁকিপূর্ন কোম্পানির আইপিও অনুমোদন, কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা, নীতি নির্ধারক সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীন সিদ্ধান্ত, বিনিয়োগকারীদের অসচেতনতা, তদন্তের নামে কালক্ষেপন এবং বাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা না থাকার কারণেই বাজার স্থিতিশীলতার শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াতে পারে নি।
আর তাই পূর্বের অভিজ্ঞতার আলোকে এটা বলা যায় যে, বর্তমান বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিএসইসিকে এ বিষয়গুলোতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় বাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলেও মত দিয়েছেন তারা।
বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ধস পরবর্তী সময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোপরি সরকারের নানা উদ্যোগেও বাজারের সুদিন ফেরে নি। গত সাড়ে চার বছর ধরেই টাল-মাটালভাবে পুঁজিবাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। মন্দাবাজারেও অনেকে দিব্যি ব্যবসা করছেন, তবে লোকসানের মুখে পড়ছেন অধিকাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী। এর মূল কারণ হচ্ছে- বাজার সর্ম্পকে স্বচ্ছ ধারণা না থাকা।
এটাই স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে অন্যতম এবং বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। এমন পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে বিনিয়োগকারীদের সচেতনা ও আস্থার জায়গায় ফিরিয়ে আনা জরুরি বলে তারা মনে করছেন। এছাড়া কারসাজি চক্রের দৌরাত্ম, স্বল্পমূলধনী কোম্পানির আকাশচুম্বী শেয়ার দরের কারণ বিশ্লেষনে বিএসইসিকে বিশেষ মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে।
যেকোন অনিয়মের তদন্তেই কালক্ষেপন করলে চলবে না। কারণ অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময়কাল থেকে তদন্তের রিপোর্ট আসা সময় পর্যন্ত বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কাজেই যতদ্রুত সম্ভব তদন্তের কার্যক্রম শেষ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তারা বলেন, অনেক সময় দেখা যায় কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ার পর অনিয়মের তুলনায় শাস্তির পরিমাণ খুবই কম হয়। অর্থাৎ ‘গুরু পাপে লঘু দন্ড’। যা অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়। কারণ যে অপরাধ করে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়, সে অপরাধে শাস্তি স্বরুপ লাখ টাকা জরিমানাকে ব্যবসায়ের কমিশন হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।
কাজেই অপরাধ অনুযায়ী শাস্তির মাপকাঠি নিরুপনও বাজার স্থিতিশীলতা বিবেচ্য বিষয়। তারা বলেন, বর্তমান বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা মোটামোটি বাড়ছে। বিনিয়োগকারীদের এই আস্থার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বড় পুঁজির বিনিয়োগকারীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আর এক্ষেত্রে বিএসইসিকেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।
কারণ দীর্ঘ দরপতনে বিনিয়োগকারীদের আস্থা একেবারে তলানিতে চলে গিয়েছিল। বাজারকে তার স্বাভাবিক গতিতে ফিরিয়ে আনতে বাজারে যারা সক্রিয় ছিলেন, তারাও যেন দিক হারিয়ে ফেলছিলেন। বাজার যখনই একটু স্বাভাবিক অবস্থার দিকে যেতে শুরু করতো তখনই রাজনৈতিক অস্থিরতা, একশ্রেণীর অসাধু চক্রের ছড়ানো নানা গুজব বাজারের নেতিবাচক প্রবণতা আরো তরান্বিত করে।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এদের কারসাজির কবলে ক্রমাগত লোকসানের মুখে পড়ে। পরিনতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গা বারবার নড়বড়ে হয়ে যায় এবং তারা বাজারের প্রতি বারবার আস্থাহীন হয়ে পড়ে।
আর তাই অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমান বাজারের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার ভিতকে আরো শক্তিশালী করতে বিএসইসিকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রসঙ্গে তারা বলেন, বাজারের গতিধারা দেখে মনে হয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা চালকের ভূমিকায় রয়েছে। কারণ তারা বিনিয়োগে আসলে বাজার উর্ধ্বমূখী আর নিষ্কৃয়তা বাজার নিম্নমূখী আচরণ করে। এটা বাজারের জন্য খুবই নেতিবাচক দিক।
এ অবস্থায় বাজারকে ধরে রাখতে হলে সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। একই সঙ্গে বাজারে যাতে কোন ধরণের অনৈতিক কাজ ঘটতে না পারে সেজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করা প্রয়োজন।
সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা গেছে, পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির সমন্বয়হীন সিদ্ধান্তে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অবশ্য এ নিয়ে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিদের মধ্যে বাক-বিতন্ডাও হয়েছে।
তবে বাজারের স্থিতিশীলতার ধারা অব্যাহত রাখতে নীতি-নির্ধারণী মহলকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তারা। কারণ আর্থিক খাত ও বাজারের উন্নয়নের জন্যই এ দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্তা-ব্যক্তিদের নীতি-নির্ধারনীর আসনে বসানো হয়েছে। কিন্তু তাদের খাম-খেয়ালিপনা ও স্বেচ্ছাচারীতার কারণে বাজার ও আর্থিক খাত তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বেÑ তা কখনোই মেনে নেয়া যায় না।
এক্ষেত্রে এসব নীতি-নির্ধারণী মহলের কর্তা-ব্যক্তিদের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে বাজার বিশেষজ্ঞ ও বিনিয়োগকারীরা সরকারের উচ্চ মহলের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে সমন্বয়হীনতা দূর করতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট অন্য খাতগুলোর নীতি নির্ধারণী মহল ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে বিএসইসিকে মাসে অন্তত একবার বৈঠক করা জরুরী বলে তারা মনে করছেন।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফখর উদ্দীন আলী আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ না। তবে এক্ষেত্রে বাজারকে অস্থিতিশীল করে এমন বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করে তার ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি বলেন, কারসাজি চক্রের দৌরাত্ম বন্ধে বিএসইসিকে মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে। সেই সঙ্গে আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হতে হবে।
বিভিন্ন অনিয়মের শাস্তি প্রদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনিয়মের আকার বিবেচনা করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আবার কিছু কিছু অপরাধের ক্ষেত্রে শুধু নামমাত্র জরিমানা করলেই চলবে না। প্রয়োজনে অপরাধী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আরো কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি ইংল্যান্ডের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ওই দেশে কোন ড্রাইভার আইন ভঙ্গ করলে তাকে শুধু জরিমানাই করা হয় না, বরং তার লাইসেন্সে একটি ফুটো করে দেওয়া হয়। এভাবে তিনবার ফুটো করলে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে অনিয়মের মাত্রা কমে আসে।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, বর্তমান বাজার যথেষ্ট স্থিতিশীল রয়েছে। এমতাবস্থায় অধিক মুনাফা লাভের জন্য পুজিবাজারই বিনিয়োগের উপযুক্ত ক্ষেত্র। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুজবে কান না দিয়ে জেনে, শুনে ও বুঝে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন তিনি। |
52e55abe-542f-4640-bc55-a65308c515d4 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি সামিট পাওয়ারের হঠাৎ লেনদেন বাড়ার কারন কি। এ কোম্পানির শেয়ারের হঠাৎ লেনদেন বাড়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সামিট পাওয়ারের ইপিএস ঘেঅষনাকে কেন্দ্র করে এ কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।
সামিট পাওয়ার লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৪ পয়সা; যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানির ইপিএস ছিল ৯৬ পয়সা। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিটির গত ৩ মাসের (জুলাই,১৬-সেপ্টেম্বর,১৬) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে এই তথ্য বেরিয়ে আসে।
উল্লেখ্য, আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ৪৪ পয়সা। এদিকে গত সোমবারের (১০ অক্টোবর) লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টপ টেন গেইনারের শীর্ষে উঠে এসে ছিল সামিট পাওয়ার। ঐদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯.০৩ শতাংশ।
রবিবার সামিট পাওয়ারের শেয়ারের সমাপনী মূল্য ছিল ৩২.১ টাকা। সোমবার লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী মূল্য গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকায়। শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ৩৫ টাকা থেকে ৩৫.২০ পয়সা। |
7eb73feb-bb4e-4873-b04f-e0f6111cfd41 | আমিনুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্ঘিক খাতের কোম্পানি জেমিনি সি ফুডের শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। কারন হঠাৎ দর বাড়িয়ে কোম্পানির পরিচালকরা শেয়ার বিক্রির ঘোষনা দিয়েছেন। তাছাড়া লোকসানী কোম্পানির শেয়ারের দর টানা বাড়ছে। বর্তমানে কোম্পানিটি ঋণে জর্জরিত।
তবুও থেমে নেই দর বৃদ্ধি। ম্পানিটির শেয়ার দর লাগামহীনভাবে বাড়ছেই। ঋণে জর্জরিত কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়ায় কারসাজির আশঙ্কা করছেন বিনিয়োগকারীরা। আর সেই সঙ্গে উদ্যোক্তা পরিচালকের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে।
এসব শেয়ারের দর বাড়ার কারণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা খতিয়ে না দেখলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। এদিকে কোনো কারণ ছাড়াই জেমিনীর শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে। আর এ সুযোগে এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করছেন উদ্যোক্তা-পরিচালকরা।
জেমিনি সি ফুডের একদিকে লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে অন্যদিকে শেয়ারের দর বাড়ছে। আর এ অবস্থায় শেয়ার বিক্রি করার ঘোষণা দিয়েছেন উদ্যোক্তা পরিচালক। এ রকম ঘোষণার ফলে বিনিয়োগকারীরা এক ধরনের আতঙ্কে আছেন।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, জেমিনি সি ফুডের উদ্যোক্তা পরিচালক কাজী শাহেদ আহমেদ ১ লাখ শেয়ার বিক্রি করবেন। তার কাছে থাকা ৩ লাখ ৮২ হাজার ৩৩০টি শেয়ার বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বিক্রি করবেন।
বাজার বিশ্লেষনে দেখা গেছে, জেমিনি সি ফুডের শেয়ার দর গত ৪ অক্টোবর ছিল ৭৬১ টাকা ৮০ পয়সা। যা গত বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোববর) ছিল ৮৫২ টাকা। ৬ কার্যদিবসের চেয়ে ৩ কার্যদিবস শেয়ার দর কমছে। তাছাড়া বাকি ৩ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৯০ টাকা ২০ পয়সা। ওই দিনই কোম্পনির পরিচালক শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন।
ডিএসইর ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যানুসারে (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত) কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে পরিচালকদের নিকট ৫৫ দশমিক ৫১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিকট ৩৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার আছে।
অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কোম্পানির শেয়ার কমেছে ২৯ শতাংশ। এক বছর আগেও (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত) কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে পরিচালকদের কাছে ছিল ৭৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ছিল ১৬ দশমিক ৭০ শতাংশ শেয়ার।
জেমিনি সি ফুডের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষন করে দেখা গেছে, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে শেষ হওয়া আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪০২ টাকা।
যা আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুন বা ১৫ কোটি ৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪৭ টাকা বেশি। আগের বছর অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে কোম্পানিটির ঋণের পরিমান ছিল ১৫ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার ৭৫৫ টাকা। এছাড়া কোম্পানিটির ঋণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণও বাড়ছে। সর্বশেষ ডিএসইতে দেয়া তথ্যানুযায়ী জেমিনী সি ফুডের পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ লাখ টাকা।
কোম্পানিটি পুঞ্জিভূত লোকসান থাকার পরও ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে ১৫ শতাংশ ডেভিডেন্ড দিয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে সাড়ে ৭ শতাংশ ডেভিডেন্ড দিয়েছে কোম্পানিটি। তবে ২০১৩ সালে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ধরনের ডেভিডেন্ড দেয়নি জেমিনী সী ফুড। জেমিনী সি ফুড ১৯৮৫ সালে পুজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি ১০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, কিছু কোম্পানি বাজারে আছে যাদের শেয়ার সংখ্যা কম। তাদের ফান্ডামেন্টাল বলতে কোনো কিছু নেই। তবে এসব কোম্পানির শেয়ার অতি মূল্যায়িত হয়ে কেনাবেচা হতেই থাকে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সার্ভিলেন্স টিমের এদের বিষয়ে তদারকি করা উচিত। তাছাড়া সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এসব শেয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে করছেন তিনি। |
79864cd7-2246-4cc2-9543-ef36b1614871 | এইচ কে জনি, ঢাকা: পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষায় আর্থিক খাতের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবুও সময়ের বিবর্তনে দেশের পুঁজিবাজারে এ খাতের মূলধন ক্রমেই কমেছে। যদিও ২০১০ সালের ধস এবং ধস পরবর্তী ধারাবাহিক মন্দায় এ খাতের বাজার মূলধন অনেকটাই বেড়েছিল। তবুও ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত (সাড়ে তিন বছরে) এ খাতের বাজার মূলধন প্রায় ১৩ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা কমেছে। শতাংশ হিসেবে যা প্রায় ১০০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০০৯-১০ অর্থবছরে এ খাতের বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৩৫২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০১০-১১ অর্থবছরের শুরুতে তা বেড়ে ২৮ হাজার ৭১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকায় দাঁড়ালেও ২০১১-১২ অর্থবছরের শুরুতে তা ১৮ হাজার ৯৮৭ কোটি ৮০ লাখ টাকায় নেমে আসে। এরপর ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে এখাতের বাজার মূলধন। মুলত, ২০১০-১১ এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে এ খাতের কোম্পানিগুলো বাজারে বিনিয়োগ শুরু করে।
কিন্তু তা অব্যাহত না থাকায় পরবর্তীতে প্রায় প্রতিমাসেই এ খাতে বিনিয়োগ ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে তা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আগস্ট মাসে ১৪ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকায় নেমে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী চলতি বছরের আগস্ট মাসে এ খাতে বাজার মূলধনের পরিমাণ ১৪ হাজার ৩৯৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে এ খাতের মূলধন কমেছে ১৪ হাজার ৩২০ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাজারে অন্য খাতের কোম্পানির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গ্রামীণফোন, তিতাস গ্যাসের মতো বিশাল মূলধনের কোম্পানি বাজারে এসেছে। বাজারে ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারের সংখ্যাও এখন অনেক। এছাড়া মূলধন ও শেয়ার সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগের মতো ঝোঁক নেই।
এ কারণেই গত কয়েক বছরে বাজার মূলধন ও মোট লেনদেনে আর্থিক খাতের অংশ কমেছে। বিশেষ করে ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত টানা ঊর্ধ্বমুখী বাজারে অপেক্ষাকৃত দুর্বল মৌলের শেয়ারের আধিপত্য বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক খাত নিজের অংশ হারিয়েছে। অন্যদিকে ২০১১ সালে টানা মন্দায় ওইসব কোম্পানির তুলনায় আর্থিক খাতের দরপতন বেশি হওয়ায় বাজার মূলধন ও লেনদেনে আর্থিক খাতের অবস্থানের উন্নতি ব্যহত হয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি এ খাতের কোম্পানিগুলো বিনিয়োগে ফিরে আসলে বাজারে লেনদেন আবারো ৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে ওঠে আসবে। তারা বলেন, পুঁজিবাজারে অন্য কোম্পানিগুলোর তুলনায় ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক খাতের বিনিয়োগ অনেকটা টেকসই।
কারণ এ খাতের কোম্পানিগুলোর পোর্টফোলিও ম্যানেজার বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোম্পানির ভালো মৌলভিত্তি দেখেই শেয়ারে বিনিয়োগ করেন। পুঁজিবাজারে নিয়মিত আর্থিক খাতের বিনিয়োগ থাকলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে অনেকটা আস্থা ফিরে পাবে। আর এই তিন খাতের বিনিয়োগ হ্রাস পেলে বাজারে কিছুটা হলেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে অন্যসব খাতের তুলনায় বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের পিই সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া আর্থিক সক্ষমতার বিচারে এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে সম্পদমূল্য বিবেচনায় এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর অনেক কম। কাজেই এখানে বিনিয়োগ না করার কারণ তো আমি খুজে পাই না। বরং এ খাতে বিনিয়োগ করলেই বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে লাভ তুলে নিতে পারবে।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কোম্পানি সচিব মনিরুল আলম বলেন, আমাদের দেশের অধিকাংশ বিনিয়োগকারীই স্বল্পমেয়াদে মুনাফার্জনে ব্যকুল। এ খাতের পেইডআপ বেশী হওয়ায় কেউ চাইলেই শেয়ার দরকে প্রভাবিত করতে পারে না। তাই অনেকেরই দৃষ্টি থাকে স্বল্পমূলধনীর দিকে। এক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও ওইসব কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরের উলম্ফনে প্রভাবিত হন। তবে সার্বিক দিক বিবেচনায় দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক খাতই নিরাপদ বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষন, দেশ প্রতিক্ষণ ডটকম |
2474f442-a321-46a9-831b-a788301c29d5 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের রহিমা ফুড মালিকানা পরিবর্তন ইস্যুতে প্রথম থেকেই মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রদানে লুকোচুরি করেছে। মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ডিএসইকে প্রদান করা হলেও ডিএসইর পক্ষ থেকে যথাসময়ে তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়নি। এ ঘটনার আসল রহস্য বের করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
জানা যায়, গত বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিএসইসির উপপরিচালক আল মাসুম মৃধাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সহকারী মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম ভূইয়া ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ইকরাম হোসেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রহিমা ফুডের পরিচালকদের সব শেয়ার সিটি সুগার ইন্ডাষ্ট্রিজের কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি। এ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় কোম্পানির আট পরিচালকের হাতে থাকা ১ কোটি ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭০টি শেয়ার সিটি’র কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। |
b8110d8b-2e11-4a4b-9653-9bf91f140299 | এইচ কে জনি: যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার নিচে, সেসব কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে খুব শিগগিরই ভেঞ্চার ক্যাপিটাল রুলস গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। আজ রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬ ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট ফর স্টার্টআপ’ শীর্ষক সেমিনারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন এ কথা বলেন।
বেসিসের সাবেক সভাপতি ও ভিসিপিইএবির প্রতিষ্ঠাতা শামীম আহসান টাই গ্লোবালের চেয়ারম্যান ভেষ্ক শুকলা এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত হোসেন সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান; বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান, গ্রীণ ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা চৌধুরী প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নিয়ে বিশ্বে অনেক সফলতার গল্প আছে। আমাদের দেশেও এমন হতে পারে। আমরা লো-পেইড আপ কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে চাই। ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন হলে তারা বাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে- এ ধরনের সুযোগ আমরা তৈরি করে দিতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ‘এসব লো পেইডআপ কোম্পানিকে বাজারে তালিকাভুক্তির জন্য আমরা আইন করছি। যা শিগগিরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।’
বিএসইসি চেয়ারম্যানবলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য দেশের তুলনায় জিডিপিতে পুঁজিবাজারের অবদান অনেক কম। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট এই অবদানকে অনেকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
এদিকে এখনই স্বল্পমূলধনী কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার মোক্ষম সময় বলে মনে করেন আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান। তিনি বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমেই এটা হতে পারে।
আরিফ খান বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমে ছোট ছোট কোম্পানিগুলোকে এগিয়ে নিয়ে আসার মোক্ষম সময় এখনই। সরকার এখন তাদের আরও নীতি সহায়তা দিতে পারে। বিশেষ করে ট্যাক্স ইনসেনটিভে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকও এখানে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন, যারা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ম্যানেজ করে তাদের ৩ ধরনের ট্যাক্স দিতে হয়। যেখানে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তবে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সহায়ক হতে পারে। যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিতে অবদান রাখবে।
গ্রীণ ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা চৌধুরী বলেন, দেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে আলোচনা করতেই আজ আমরা এখানে মিলিত হয়েছি। অসংখ্য তরুণ আজ উদ্যোক্তা হতে চায়; যাদের ট্যাক্স ইনসেনটিভ দেওয়া উচিত। দেওয়া উচিত নতুন প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে নীতি সহায়তা। |
1ce3f8b0-2c86-4802-8888-8bac876b3e9c | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার । তবে ন্যাশনাল ব্যাংকের লেনদেনে হঠাৎ কিসের ইঙ্গিত বহন করছে এ নিয়ে আলোচনা চলছে বিনিয়োগকারীদের মাঝে।
অনেকেই বলেছেন, ন্যাশনাল ব্যাংক ভালো মৌল ভিত্তি শেয়ার হওয়া স্বত্বেও ফেসভ্য্যালুর নিচে ছিল। সপ্তাহজুড়ে এই ব্যাংকের লেনদেন বেড়েছে ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ন্যাশনাল ব্যাংক গত সপ্তাহে ১০ কোটি ৩০ লাখ শেয়ার লেনদেন করেছে। যার আর্থিক মূল্য ১০২ কোটি ৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডরিন পাওয়ার জেনারেশনস অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড।
এই কোম্পানির লেনদেন বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। পুরো সপ্তাহে কোম্পানিটি ১ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭১টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার আর্থিক মূল্য ৯০ কোটি ২৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা।
অন্যদিকে তালিকায় থাকা সিঙ্গার বাংলাদেশের দশমিক ৩৬ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে। তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা তিতাস গ্যাসের ১ দশমিক ৬১ শতাংশ লেনদেন কমেছে।
এছাড়া বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলসের ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ, স্কয়ার ফার্মার দশমিক ৬০ শতাংশ, সামিট পাওয়ারের ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ, বাংলাদেশ বিল্ডিংয়ের ১ দশমিক ৩২ শতাংশ ও এমজেএল বিডির ১ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন কমেছে। |
fa693983-b0b0-4991-baae-66df5f0b494e | ফয়সাল মেহেদী: শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা তোয়াক্কা করছে না পুঁজিবাজারের খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের লোকসানি কোম্পানি ফাইন ফুডস লিমিটেড।
বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী উদ্যোক্তা-পরিচালকদের এককভাবে নূন্যতম দুই শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাদকতা রয়েছে। তবে এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে ফাইন ফুডসের উদ্যোক্তা-পরিচালক মাত্র ১ দশমিক ০৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে।
এদিকে দীর্ঘ একবছর অভিহিত মূল্যে নিচে লেনদেন হলেও অতি সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে অভিহিত মূল্যে ফিরেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া স্বল্পমূলধনী ও পুঞ্জিভুত লোকসানি কোম্পানি ফাইন ফুডসের মোট ১ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার ৯৩টি শেয়ার রয়েছে।
২০১৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালক ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে ছিল। ওই সময় সাধারন বিনিয়োগকারীদের হাতে ৯৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার ছিল।
তবে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে ছিল মোট শেয়ারের মাত্র ১ দশমিক ০৬ শতাংশ। এসময় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী শূূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৯৮ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে।
শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত সর্বশেষ (২৯ সেপ্টেম্বর’১৬) হালনাগাদ প্রতিবেদনে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৯৮ দশমিক ৪৪ শতাংশই রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। অথচ কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালক আলোচ্য সময় মাত্র ১ দশমিক ০৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে।
অথচ বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, উদ্যোক্তা-পরিচালদেরে এককভাবে নূন্যতম দুই শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে মোট শেয়ারের ৩০ শতাংশ ধারণ করার কথা। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থার সেই নির্দেশনা লঙ্গন করেছে এ কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালক। জানা গেছে, কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের পাঁচ জনের মধ্যে চার জনই স্বাধীন পরিচালক।
শেয়ার দর একবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ: ২০১৪ সালের সমাপ্ত অর্থবছরে লোকসানের কারনে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। ফলে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহে শেয়ারটির দর ধারাবাহিকভাবে কমে ফেস-ভ্যালু বা অভিহিত মূল্যের নিচে অবস্থান করে। পরবর্তী সময়ে ফেস-ভ্যালুর নিচেই শেয়ারটি লেনদেন হয়।
ভরহব-ভড়ড়ফ-১-ুবধৎতবে সম্প্রতি শেয়ারটির দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করে। মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে শেয়ারটির দর ৯ টাকা ২০ পয়সা থেকে টানা বেড়ে ফেস-ভ্যালুতে উঠে আসে কোম্পানিটির শেয়ার দর। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ বা ১.১০ টাকা বেড়েছে। ওই দিন শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১২ টাকা ৯০ পয়সায়।
যা বিগত একবছরের মধ্যে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর। একবছরের মধ্যে শেয়ারটির সর্বনিন্ম দর ছিল ৭ টাকা ২০ পয়সা। সর্বশেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১টি শেয়ার ১৫১ বার লেনদেন হয়েছে।
কোম্পানিতে বিনিয়োগে উচ্চ ঝুঁকি: লোকসানের কারণে কোম্পানিটির প্রাইস আর্নিং (পিই) রেশিও নেগেটিভ অবস্থানে রয়েছে। ফলে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের উচ্চ ঝুঁকি বহন করতে হবে। তাছাড়া উচ্চ ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ারকে নন-মার্জিনেবল হিসেবে ঘোষণা করা হয়ে থাকে। এর মানে এই কোম্পানির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা কোনো মার্জিন ঋণ পাবেন না।
প্রসঙ্গত, শেয়ারের বাজার দরকে তার আয় দিয়ে ভাগ করলে মূল্য-আয় অনুপাত (প্রাইস আর্নিং রেশিও বা পিই রেশিও) পাওয়া যায়। ঝুঁকি নির্ণয়ে দর-আয় অনুপাতই সবচেয়ে কার্যকর মাপকাঠি।
লাভ-লোকসান-: ডিএসই সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, জুন ক্লোজিং কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১৩ সালে সমাপ্ত অর্থবছরে কর পরিশোধের পর ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুনাফা করে। পরবর্তীতে ২০১৪ ও ২০১৫ সমাপ্ত অর্থবছরে যথাক্রমে ৬২ লাখ ও ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা লোকসান করে। আগের বছরগুলোতে কম-বেশী স্টক ডিভিডেন্ড দিলেও গেল দুই বছর বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড দেয়নি কোম্পানিটি। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সর্বশেষ ২০১৩ সালে বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়ে ছিল।
পরবর্তীতে কোনো ডিভিডেন্ড না দেয়ায় কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেয়া হয়। এদিকে চলতি বছরের সর্বশেষ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’১৫-মার্চ’১৬) নয় মাসের হিসাবে ১৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা লোকসান করেছে এবং শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১৩ পয়সা। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ র্মল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা। যা ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছিল ৯ টাকা ৭৪ পয়সা।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকার বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অমান্য করে কোম্পানিটি প্রায় ৯৯ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাথায় চাপিয়ে দিয়েছে। কিন্তু লোকসান দেখিয়ে দুই বছর ধরে কোনো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে না। চলতি বছরের প্রান্তিকগুলোতেও লোকসানে রয়েছে।
কোম্পানিটি যে ভাবে তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে শিগিরই অস্তিত্ব হারাবে। এতে পথে বসবে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত দির্শেদনা অমান্য করে কেন কোম্পানিটি তাদের সব শেয়ার বিক্রি করছে অতি দ্রুত তা খতিয়ে দেখা। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ , দেশ প্রতিক্ষণ ডটকম |
06e5b653-cd24-467f-b997-d692e53a5627 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে চলছে ডিভিডেন্ড ঘোষণার মৌসুম। জুন ক্লোজিং করা বেশ কিছু কোম্পানি সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন হারে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। বাকী কোম্পানিগুলো ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে।
সব মিলিয়ে জুন ক্লোজিং করা কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ড ঘোষণা অব্যাহত রয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলোকে ঘিরে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা বাড়ছে। মুনাফার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কোম্পানিগুলো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে এমন প্রত্যাশা বিনিয়োগকারীদের।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে ক্যাপিটাল গেইন ও ডিভিডেন্ড গেইন সাধারনত এ দুই ধরনের মুনাফা করে বিনিয়োগকারীরা। তবে পুঁজিবাজারে প্রত্যাশিত গতি না থাকায় ক্যাপিটাল গেইন তেমন হচ্ছে না। বিনিয়োগ করা শেয়ারের দর তলানিতে নেমে যাওয়ায় বিক্রিও করতে পারছেন না।
এ অবস্থায় বছর শেষে কোম্পানিগুলোর ঘোষিত ডিভিডেন্ডই বিনিয়োগকারীদের একমাত্র ভরসা। তাই ডিভিডেন্ড ঘোষণার সময়ে এলে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে যায়।
তবে কিছু কিছু কোম্পানি বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড বঞ্চিত করে আসছে। আবার কিছু কোম্পানি মুনাফার সঙ্গে সঙ্গতি না রেখেই ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। এ কারণে প্রত্যাশিত ডিভিডেন্ড থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
বিনিয়োগকারীদের আশা ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা কোম্পানিগুলো মুনাফার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বলেন, বাজারের অধিকাংশ বিনিয়োগকারী দীর্ঘ দিন ধরে লাভের মুখ দেখছেন না। বিনিয়োগ করা শেয়ার দর কমে যাওয়ায় তাদের পুঁজিও আটকে আছে।
ফলে বছর শেষে কোম্পানি ডিভিডেন্ড দিলে আর্থিক সংকট কিছুটা কাটে। আর না দিলে তো সেই সংকট আরও বেড়ে যায়। তাই আমাদের অনুরোধ থাকবে ডিভিডেন্ড ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা কোম্পানিগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কথা মাথায় রেখে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে।
ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন খাতের প্রায় ৬০টি কোম্পানির ৩০ জুন, ২০১৬ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসবে। অবশ্য এর মধ্যে গতকাল (২৪ অক্টোবর) চারটি কোম্পানির ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুন্নু সিরামিকস, মুন্নু জুট এবং সায়হাম কটন সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন হারে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আইসিবি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে কিনা তার তথ্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া বাকী কোম্পানিগুলোর মধ্যে- আজ (২৫ অক্টোবর) ডিভিডেন্ডের ঘোষণা আসতে পারে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, অলেম্পিক এক্সসরিজ, ফু-ওয়াং ফুড এবং বিডি ওয়েল্ডিং- এর। আর ২৬ অক্টোবর সাইফ পাওয়ারটেক বিডি ওয়েল্ডিং,
এইচআর টেক্সটাইল, আরএসআরএম স্টীল, বিকন ফার্মা, জিলবাংলা সুগার মিলস, রেনউইক যজ্ঞশ্বর, শ্যামপুর সুগার মিলস, ইমাম বাটন, এসিআই ফরমুলেশন, এসিআই লিমিটেড, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম,
জিপিএইচ ইস্পাত এবং আমান ফিডের ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত ঘোষণা আসবে। এদিকে ইনটেক অনলাইন, তুংহাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং, শাহজিবাজার পাওয়ার, ইয়াকিন পলিমার, আনলিমা ইয়ার্ণ, দেশ গার্মেন্টস, বারাকা পাওয়ার, জিকিউ বলপেন, আরামিট সিমেন্ট, আরামিট লিমিটেড, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল,
খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, আজিজ পাইপস, দেশবন্ধু পলিমার, ফাইন ফুডস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, সাফকো স্পিনিং, আফতাব অটোমোবাইলস, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, হামিদ ফেব্রিক্স, নর্দার্ণ জুট স্টাফর্লাস, সেন্ট্রাল ফার্মাসিটিক্যাল, এপেক্স ফুডস, এপেক্স স্পিনিং,
আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, সিনোবাংলা ইন্ডাষ্ট্রিজ, এমআই সিমেন্ট, তিতাস গ্যাস, সায়হাম টেক্সটাইল, গ্লোবাল হেবি কেমিক্যাল, খান ব্রার্দাস পিপি ওভেন ব্যাগ, লিবরা ইনফিউশন, এএমসিএল প্রাণ, রংপুর ফাউন্ড্রি, আলহাজ টেক্সটাইল, বেঙ্গল উইন্ডসোর থার্মপ্লাস্টিকস এর ডিভিডেন্ড ঘোষণা আসবে ২৭ অক্টোবর। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ, দেশ প্রতিক্ষণ ডটকম |
57a97743-d0bf-4da0-b334-778fab86cfba | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের রাষ্ট্রত্তর কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড আজ দরপতনের তালিকায় চলে আসছে। তবে হঠাৎ কেন এমন দরপতন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আলোচনার শেষ নেই। তবে দুই ইস্যুতে কেন্দ্র করে পাওয়ার গ্রিডের দরপতন হয়েছে বলে শেয়ার বার্তা ২৪ ডটকমের অনুসন্ধানে জানা গেছে।
সুত্রে জানায়, রাষ্ট্রত্তর কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড পিডিবির কাছ থেকে কেনা সঞ্চালন অবকাঠামোর বিপরীতে তাদের নামে ২৫ কোটিরও বেশি নতুন শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
এজন্য আসন্ন বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন প্রয়োজন হবে তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানিটির। এদিকে অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যুর এ পরিকল্পনা প্রকাশের পর সোমবার পাওয়ার গ্রিড শেয়ারে বড় দরপতন দেখা গেছে।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, ছয়টি চুক্তির আওতায় বিপিডিবির কাছ থেকে বিদ্যুত্ সঞ্চালন অবকাঠামো কেনে পাওয়ার গ্রিড। এজন্য প্রদেয় অর্থের বিপরীতে মালিক প্রতিষ্ঠানটিকে অভিহিত মূল্যে মোট ২৫১ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার দেবে তারা। আসন্ন এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন পেলে নতুন করে পাওয়ার গ্রিডের ২৫ কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার শেয়ার পাবে বিপিডিবি।ৎ
সোমবার ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত ফলাফলের পাশাপাশি এ সময়ের জন্য ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পাওয়ার গ্রিড। বার্ষিক শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৯০ পয়সা। ২০১৫ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় পাওয়ার গ্রিড।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পাওয়ার গ্রিড ১ টাকা ২ পয়সা ইপিএস দেখিয়েছে, আগের বছর যা ছিল ৬০ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৭৯ টাকা ২ পয়সা।
নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, লভ্যাংশ ও নতুন শেয়ার ইস্যুর পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় রাজধানীর বিদ্যুত্ ভবনে এজিএম আয়োজন করবে পাওয়ার গ্রিড। রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১ ডিসেম্বর।
ডিএসইতে সর্বশেষ ৫৮ টাকা ৯০ পয়সায় পাওয়ার গ্রিডের শেয়ার হাতবদল হয়, আগের দিনের চেয়ে যা ৯ দশমিক ১ শতাংশ কম। দিনের সর্বনিম্ন দর ছিল ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ৬৬ টাকা ৮০ পয়সা। লেনদেন শেষে দর দাঁড়ায় ৫৯ টাকা ২০ পয়সা, আগের দিন যা ছিল ৬৪ টাকা ৮০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৪২ টাকা ৫০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ৬৯ টাকা ৭০ পয়সা।
বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘোষিত লভ্যাংশ ও কোম্পানির মুনাফা নিয়ে হতাশার কোনো কারণ ছিল না। সরকারকে বাজারদরের তুলনায় অনেক কম দামে শেয়ার দেয়ার পরিকল্পনায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা কাজ করছে, যার প্রভাব দেখা যায় সোমবারের লেনদেনে।
২০০৬ সালে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৪৬০ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে আছে ৪৫৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪৬ কোটি ৯ লাখ ১২ হাজার ৯৯১।
এর ৭৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৮ দশমিক ২৮, বিদেশী দশমিক ২১ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে বাকি ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শেয়ার।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে পাওয়ার গ্রিড শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৬৫ দশমিক ৭৮, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ১৪ দশমিক ৫১। |
0c9c2a59-e756-4aa5-8dd6-4638ebacda37 | ফয়সাল মেহেদী, ঢাকা: পুঁজিবাজারের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে বিএসইসির গঠিত স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় সভা আগামী ২০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও সভায় বিএসইসির গৃহীত সকল পদক্ষেপের অগ্রগতি নিয়েও পর্যালোচনা করা হবে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বিএসইসির কমিশন সভা কক্ষে আগামী ২০ নভেম্বর দুপুর ১২:৩০টায় দ্বিতীয় সভায় বসবে ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রাম সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটি।
সভায় ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রাম সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা, স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতী পর্যালোচনা, প্রোগ্রামের উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি অন্যানো বিষয়েও আলোচনা হবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান ও স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন সভাটির সভাপতিত্ব করবেন। গত ১০ নভেম্বর স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সচিব ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান সাক্ষরিত এক আদেশে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
আর সভায় বিশেষ আমন্ত্রন জানিয়েছেন কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রাম সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম।
এর আগে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল প্রথম সভা করে স্টিয়ারিং কমিটি। ওই সভায় তিন ধাপে (স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী) ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি কর্মসূচি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর ধাপগুলো বাস্তবায়নের জন্য আরও ১০টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটি বিনিয়োগকারীদের স্বক্ষমতা বাড়াতেও কার্যক্রম হাতে নিবে। অবশ্য তিনটি ধাপ হলেও প্রথম দিকের কাজও পরবর্তী ধাপে তদারকি করবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অর্থনৈতিক ইস্যুতে জনসাধারণের জ্ঞান বৃদ্ধিতে ‘ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রাম’ নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে বিএসইসি। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুই স্তর বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে সংস্থাটি।
কমিশনের চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটিতে রয়েছেন বিএসইসির ৪ জন কমিশনার, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান,
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট। এছাড়া কমিটিতে সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান।
জানা গেছে, এই কমিটি লিটারেসি প্রোগ্রামের মূলনীতি নির্ধারক হিসেবে কাজ করবে। সার্বিক নীতিমালা প্রণয়ন, জাতীয় কৌশলসমূহ বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ, অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের পাশাপাশি জাতীয় কৌশলের অন্তর্ভুক্তকরণ এবং প্রকল্প বাস্তায়নে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে কমিটি।
এছাড়া কর্মসূচি শুরুর আগে প্রচারণার আয়োজন এবং ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও প্রণয়ন করবে স্টিয়ারিং কমিটি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ব্যক্তির পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে কমিটি। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ |
697f8bcc-f860-4f4f-989a-a2ce9a33d857 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে সুবাতাস বইতে শুরু করছেন। দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে দর বাড়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছেন এ খাতের বিনিয়োগকারীরা। তাছাড়া সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজারে ব্যাংক খাতের শেয়ারের আধিপত্য বিস্তার ছিল। ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের প্রতি আস্থা ফিরতে শুরু করেছে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের।
দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি যারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তারা নতুন করে ব্যাংক খাতের শেয়ারের দিকে ঝুঁকছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন পর বাড়ছে ব্যাংকিং খাতের শেয়ার দর। সাধারনত দুই কারনে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা এমনই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের প্রতিবেদকের কাছে।
তারা বলেন, পুঁজিবাজারের গতি ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি কদর বাড়ছে। সামনে আরো বাড়বে। কারণ অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর কাছে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের প্রতি রয়েছে ব্যাপক আস্থা। যদিও পুঁজিবাজারের মন্দা সময়ে এ খাতের প্রতি আস্থা কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে আবার এ খাতের শেয়ারের প্রতি ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা।
বাজার বিশ্লেষকরা জানান, পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কারণ পুঁজিবাজার উন্নয়নের স্বাভাবিক গতি বাড়াতে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। এ খাতের শেয়ার এখনো কিছুটা বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত। পাশাপাশি রয়েছে বিনিয়োগে সর্বোচ্চ আস্থাভাজন।
তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের গুরুত্ব অপরিসীম। তারা আরো জানান, ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন এবং শেয়ার সংখ্যা বেশি। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এ খাতকে বিনিয়োগ প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। আবার কোম্পানিগুলোর লেনদেন ও দর ওঠানামা অনেকটাই স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
অন্যান্য কোম্পানির মতো ঢালাওভাবে এ খাতের শেয়ার দর উত্থান-পতন হয় না। কয়েক বছর ব্যবসায়িক মন্দার কারণে বেশি মুনাফা দিতে পারেনি এ খাতের কোম্পানিগুলো। তারপরও অন্যান্য খাতের চেয়ে ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।
পুঁজিবাজারের পতনের সময় বিনিয়োগকারীরা এ খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। ফলে এ খাতে বাজার সেলপ্রেসার বেশি হয়েছিল। পাশাপাশি প্রফিট টেক করেছে, যার প্রভাব পড়েছে পুরো খাতের ওপর। কিন্তু
বর্তমানে পুঁজিবাজার স্বাভাবিক গতিতে চলছে। বাজার একটানা যেমন বাড়ছে না, তেমনি বাজার একটানা দরপতন ঘটছে না। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাংক খাতের শেয়ার ধারণ বা বিনিয়োগ করতে হবে।
তাই এ খাতে বিনিয়োগ বাড়লে পুরনো লেনদেনের চমকে ফিরে আসবে বলে জানান তারা। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের এক পরিচালক জানান, ব্যাংক খাতের শেয়ার সংখ্যা বেশি। পুঁজিবাজারে সব ব্যাংকের শেয়ার দর সামান্য বাড়লে পুরো বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) ব্যাংক খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার লেনদেনের অন্যান্য খাতের তুলনায় ব্যাংক খাতে প্রায় শতভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।
প্রায় মাসখানিক পরে ব্যাংক খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ অনেকটাই বেড়েছে। যার জন্য আজকের বাজার ইতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ হয়েছে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত বাজারের লেনদেন অনেকটাই নির্ভর করে থাকে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের উপর। এছাড়া গত বছরের তুলনায় ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রবৃদ্ধি ও খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বেশি হওয়ার কারণে মুনাফা বেড়েছে।
সঞ্চয়পত্রসহ সার্বিকভাবে ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদ হার কমেছে। এর ফলে ভালো লাভের প্রত্যাশায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ারে ঝুঁকছেন। তাছাড়া এখাতে শেয়ার দর অন্যান্য খাতের তুলনায় অনেকটাই কম হওয়ার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনটোই বেড়েছে।
এদিকে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়িয়ে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংকগুলো। যা দেশীয়দের আস্থা ফেরাতে সহায়তা করছে পাশাপাশি ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ করাকে নিরাপদ হিসেবে দেখছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও। তাছাড়া সম্প্রতি এ খাতের প্রায় সব কোম্পানি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে। যার জন্য বিনিয়োগকারীরা এ খাতের প্রতি বিনিয়োগ করতে আগ্রহ অনেকটাই বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
জানা যায়, ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানির মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ২২ কোম্পানির, দর কমেছে ৫ কোম্পানির এবং দর অপরিবর্তীত রয়েছে ৩ কোম্পানির। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর বেড়েছে এবি ব্যাংকের। এমনকি ব্যাংকটি আজ টার্নওভারের শীর্ষে ও গেইনারের শীর্ষে তালিকায় উঠে আসে। বৃহস্পতিবার এবি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১.৭০ টাকা।
এছাড়াও আল-আরফাহ ব্যাংকের ০.১০ টাকা, ব্যাংক এশিয়ার ০.৩০ টাকা, সিটি ব্যাংকের ০.২০ টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ০.১০ টাকা, এক্সিম ব্যাংকের ০.২০ টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটজ ইসলামী ব্যাংকের ০.২০ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের ১ টাকা, যমুনা ব্যাংকের ০.২০ টাকা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ০.১০ টাকা,
এনসিসি ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, ওয়ান ব্যাংকের ০.৩০ টাকা, প্রাইম ব্যাংকের ০.৪০ টাকা, রুপালী ব্যাংকের ০.৯০ টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ০.১০ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ০.৫০ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ০.৪০ টাকা, ট্রাস্ট ব্যাংকের ০.৪০ টাকা এবং ইউনাইটেড কর্মাসিয়াল ব্যাংকের ০.২০ টাকা দর কমেছে।
এদিকে দর কমার তালিকায় থাকা ব্রাক ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ০.১০ টাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ০.৪০ টাকা, ইস্টার্ণ ব্যাংকের ০.১০ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ০.১০ টাকা এবং উক্তার ব্যাংকের ০.২০ শতাংশ। আর দর অপরিবর্তীত থাকা কোম্পানিগুলো হলো- আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। |
2d3f888c-46ee-4b0b-a341-c74556b81f82 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি কেয়া কসমেটিকসের ভবিষ্যত কি। এ প্রশ্ন খোদ বিনিয়োগকারীদের। টানা দরপতনে এ শেয়ারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছেন বিনিয়োগকারীরা। তাছাড়া স্মরনকালের ক্ষতি এখনো বিনিয়োগকারীরা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
তার মধ্যে নতুন করে লোকসানে রয়েছেন কেয়া কসমেটিকসের বিনিয়োগকারীরা। কোম্পানির প্রতি বছর ভালো ডিভিডেন্ড দিলেও ফেসভ্যালুর নিচে রয়েছে। বর্তমান বাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতের যে সকল কোম্পানি রয়েছে তার মধ্যে দরের দিক থেকে সর্বনিন্ম অবস্থানে রয়েছে কেয়া কসমেটিকস।
৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ১৮ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে কেয়া কসমেটিকসের পরিচালনা পর্ষদ। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন আড়াইশ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার কোটিতে উন্নীত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
অনুমোদিত মূলধন বাড়ানোর জন্য কোম্পানির সংঘস্মারক ও সংঘবিধিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন চাইবে কোম্পানি।
গেল হিসাব বছরে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৮৭ পয়সা। আগের বছর ইপিএস ছিল ২৯ পয়সা, সে বছর বিতরণকৃত ২০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ সমন্বয় করলে যা দাঁড়ায় ২৪ পয়সা। ৩০ জুন কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১৫ টাকা ৭৭ পয়সা।
ডিএসইতে সর্বশেষ ১০ টাকায় কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ১৬ টাকা ৩০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ৯ টাকা ৫০ পয়সা।
উল্লেখ্য, গত বছর গ্রুপের আরো তিন কোম্পানি কেয়া কসমেটিকসের সঙ্গে একীভূত হয়েছে। এর অংশ হিসেবে কোম্পানিগুলোর আয়-ব্যয়, সম্পদ ও দায়দেনা সবই কেয়া কসমেটিকসের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
২০০১ সালে শেয়ারবাজারে আসা কেয়া কসমেটিকসের বর্তমান অনুমোদিত মূলধন ৭৫০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৭০৭ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১৯৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মধ্যে বর্তমানে উদ্যোক্তা-পরিচালক ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ,
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ৭ দশমিক ৮৪ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে বাকি ২৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ শেয়ার। সর্বশেষ এজিএমে অনুমোদিত নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ৪১ দশমিক ৬৭। |
65a0c6e7-cd71-41da-93a3-66a4902d919b | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ২০১০ সালের ধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীরা। ধসের মুখে পড়ে লাভের বদলে পকেটের টাকায় ঋণের দায় শোধ করে অনেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন। আর যারা এটা করতে পারেননি তারা এখনও ঋণের বোঝা টেনে যাচ্ছেন। চাইলেও তারা মার্জিন ঋণধারী বিওতে নতুন বিনিয়োগ করতে পারছেন না।
কারণ এ্যাকাউন্টে টাকা জমা হওয়া মাত্র পাওয়াদার টাকা কেটে নিচ্ছেন। আর সে কারণে পুঁজিবাজারে টিকে থাকতে কৌশলী হয়েছেন এসব বিনিয়োগকারীরা। তারা নতুন বিও খুলে আবার লেনদেন করছেন। তবে নতুন করে ঋণ নেয়ার কথা ভাবছেন না কেউই। অন্যদিকে ব্রোকারেজ হাউসেগুলোতে মার্জিন ঋণ বাবদ টাকা আটকে রয়েছে প্রায় ৯ হাজার কোটি।
প্রাপ্ত তথ্য মতে দুমাস আগে নতুন বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণে কিছুটা আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তারা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। বাজারের বৈরী আচারণে কেউ আর মার্জিন ঋণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অন্যদিকে হাউসগুলোও ঋণ দেয়ার ব্যাপারে হিসাবে হয়েছেন। গ্রাহক যাতে বিপদে না পড়ে সেই জন্য অনেক হাউস ঋণ দেয়া বন্ধ রেখেছে।
এ প্রষঙ্গে জয়তুন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ঋণ নেয়ার বেলায় এখন বিনিয়োগকারীরা খুবই হিসাবি। কারণ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী ২০১০ সালের ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সে কারণে তারা আর নতুন করে ঋণ নিতে যাচ্ছেন না। তিনি বলেন, এখন বাজারের যে সার্বিক পরিস্থিতি তাতে মার্জিনধারীরা কতটুকু লাভবান হতে পারবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সে কারণে আমরা তাদের উৎসাহিত করছি না।
ঋণ না নেয়ার কারণ: বর্তমানে মার্জিন ঋণের অনুপাত ০.২৫। অর্থাৎ ১ লাখ টাকায় একজন বিনিয়োগকারী ২৫ হাজার টাকা ঋণ পাবেন। আর এ ঋণের বিপরীতে সুদ গুনতে হচ্ছে ১৪ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে ঋণের অনুপাত বিভিন্ন রকমের। যেখানে সুদ হিসাবে নেয়া হচ্ছে ১১ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত ১৮ শতাংশ। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে ৩ শতাংশ সার্ভিস চার্জ।
অর্থাৎ যিনি ১১ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছেন তার সুদ (সার্ভিস চার্চ) গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ১৪ শতাংশ। আর যিনি ১৫ শতাংশ হারে ঋণ নিচ্ছেন তার সুদ হচ্ছে ১৮ শতাংশ। সংশ্লিষ্টদের মতে এত উচ্চ মূল্যে ঋণ নিয়ে তা দিয়ে ব্যবসা করে লাভবান হওয়া কষ্টকর। যে কারণে মার্জিন ঋণ থেকে দূরে সরে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
বাজার কিছুটা গতিশীল হওয়ায় পুঁজিবাজারে ফিরে এসেছেন তারা আগের বিওতে লেনদেন করছেন না। কারণ এই বিওতে লেনদেন করতে হলে নিয়মানুযায়ী ইক্যুইটি মাইনাস থাকতে পারবে না। তাই টাকা জমা হওয়া মাত্রই তা মাইনাস ইক্যুইটিতে যোন হচ্ছে। সে কারণে নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন কোড বা নতুন বিও ব্যবহার করেছেন। কারণ এখানে টাকা কেটে নেয়ার ভয় নেই।
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে ঋণ নিয়ে খুব একটা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। একই সঙ্গে বাজারের পরিস্থিতিও তেমন নয় যে, বাজার থেকে মুনাফা করে কিস্তি দেয়া সম্ভব। তাই অনেকেই এ ঋণ নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হননি। ঋণের শর্ত আরও সহজ করার দাবি জানান তারা।
এ প্রসঙ্গে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সদস্য মিজানুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হাউসগুলোতে মার্জিন ঋণের হার অনেক। অন্যদিকে বাজারের অবস্থাকে ভাল বলা যায় না। ফলে এই অবস্থায় কেউ ঋণ নিতে সাহস পাচ্ছেন না। কারণ এই মার্কেট থেকে ব্যবসা করে ঋণ শোধ করা কঠিন। তিনি মার্জিন ঋণের সুদের হার আরও কমানোর অনুরোধ করেন। |
f2c04c01-3e82-4d34-b8e9-3623d87af526 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে ক্রমেই ভারি হচ্ছে ‘জেড’ ক্যাটাগরির পাল্লা। ফলে এটা বাজারের জন্য অশনি সংকেত মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কারন বিনিয়োগকারীদের টাকায় কোম্পানিগুলো ব্যবসা করলেও বছর শেষে মনগড়া নো ডিভিডেন্ড ঘোষনা করে। ফলে কোম্পানিগুলো ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে চলে যাচ্ছে। আর বিনিয়োগকারীরা দিনের পর দিন লোকসানের বোঝা বইছেন।
ব্যবসায় কাঙ্খিত মুনাফা করতে না পারায় বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত ও ন্যূনতম লভ্যাংশ দিতে পারছে না পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানি। ফলে এসব কোম্পানির এখন ঠাঁই হয়েছে ‘জেড’ক্যাটাগরিতে।
ফলে ক্রমেই ভারি হচ্ছে জেড ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানের পাল্লা। সম্প্রতি এই তালিকায় যোগ হয়েছে আরও ৩টি কোম্পানি। এগুলো হচ্ছে বঙ্গজ, তাল্লু ও সিনো বাংলা। লভ্যাংশ না দিতে পারায় কোম্পানিগুলো জেড ক্যাটাগরিতে নেমে গেছে। ফলে এখন জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৭। যা মোট তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রায় ১৬ শতাংশ।
এদিকে কোম্পানিগুলো জেড ক্যাটাগরিতে থাকায় এসব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্টদের মতে দুর্বল কোম্পানির আইপিওর অনুমোদন দেয়ার কারণেই ভারি হচ্ছে জেড ক্যাটাগরির পাল্লা।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের মন্দ ব্যবসার প্রভাবেই এবারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নো ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ না দেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে শেয়ারবাজারেও ওই কোম্পানিগুলোর দর কমেছে। এখন পর্যন্ত এ বছর নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৩০টি কোম্পানি।
কোম্পানিগুলো হলো : শাইনপুকুর সিরামিক,বেক্সিমকো সিনথেটিকস, ঝিল বাংলা সুগার, শ্যামপুর সুগার, বিডি ওয়েল্ডিং, সুহদ ইন্ডাস্ট্রিজ, আজিজ পাইপস, আইএসএন, জুটস স্পিনার্স, মেট্রো স্পিনার্স, বিআইএফসি, দুলা মিয়া কটন, দেশবন্ধু পলিমার, মেঘনা পেট, অলটেক্স, রহিমা ফুড,
সমতা লেদার, ইমাম বাটন, কে এ্যান্ড কিউ, বিডি সার্ভিসেস, বিচ হ্যাচারী, বঙ্গজ, ঢাকা ডাইং, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, লিগ্যাসি ফুটওয়ার, ম্যাকসন্স স্পিনিং, সিনো বাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ ও তাল্লু স্পিনিং।
ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, জেড ক্যাটাগরিতে চলে যাওয়া এই কোম্পানিগুলো বেশিরভাগই আগের অর্থবছরে নো ডিভিডেন্ড দেয়ার কারণে জেড ক্যাটাগরিতেই ছিল। এই তালিকায় নতুন করে যোগ হয়েছে অলটেক্স, সিনো বাংলা, বঙ্গজের মতো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি।
এই তিনটি কোম্পানিরই সমাপ্ত অর্থবছরে মুনাফা করেছে। কিন্তু কোম্পানি তিনটির পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। ফলে কোম্পানি তিনটির দরও হঠাৎ করেই তলানিতে চলে গেছে। বড় ধরনের লোকসানে পড়ে গেছে বিনিয়োগকারীরা।
কিন্তু লাভে থেকেও কোন লভ্যাংশ ঘোষণা না করায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা উভয় স্টক একচেঞ্জের পক্ষ থেকে তদন্ত করারও নজির নেই। এই কারণে কোম্পানিগুলোরও কোন জবাবদিহিতা নেই। উল্টো এজিএমে ভাড়াটে লোক দিয়ে এজেন্ডা পাশ করানোর অভিযোগও বেশ পুরনো।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বঙ্গজের কোম্পানি সচিব ফিরোজ ইফতেখার বলেন, কোম্পানির আয় কমে যাওয়ায় আমাদের সীমাবন্ধতা বেড়ে গেছে। যে কারণে আমরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও শেয়ার শেয়ার লভ্যাংশ দিতে পারেনি। যার ফলে আমাদের কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে নেমে গেছে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ট্রেজারি বন্ড, ডিবেন্ডার, মিউচুয়াল ফান্ড ছাড়া প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন খাতের কোম্পানির সংখ্যা ২৯৪টি। এর মধ্যে ব্যাংক, বীমা, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ছাড়া বাকি সব কোম্পানিরই হিসাব বছর জুন মাসে শেষ হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন আইন অনুসারে এই কোম্পানিগুলোই আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, কোম্পানিগুলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে শেয়ারবাজার থেকে টাকা তুলেছে। তালিকাভুক্তির পর থেকেই মুনাফা কমতে কমা শুরু হয়েছে। প্রথম দুই তিন বছর লভ্যাংশ প্রদান করলেও আস্তে আস্তে লভ্যাংশ দেয়া কমিয়ে দিতে দিতে নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। তাই আইপিও অনুমোদন করার সময় সংশ্লিষ্টদের আরও যত্নবান হওয়া উচিত। বিশেষ করে কোম্পানি সম্পর্কে তথ্য-যাচাই বাছাই করা ছাড়া আইপিও অনুমোদন দেয়া উচিত নয়।
এ প্রসঙ্গে সাবেক উপদেষ্টা মীর্জা আজিজুল ইসলাম বলেন কোম্পানির আইপও অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে একটু হিসাবি হওয়া দরকার। কারণ দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্তির সুযোগ পেলে তাতে বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন অব বাংলাদেশের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেনও আইপিও অনুমোদনে এ দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন। |
09b9d5de-a71e-42d1-ac0e-012913ecc8b7 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: এক প্রান্তিকে, অর্থাৎ তিন মাস শেষে প্রতি শেয়ারে লোকসান ৩ টাকা ৬ পয়সা। বছর শেষেও আগের বছরের চেয়ে আয় কমেছে। তাতে কী? শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দামের ঊর্ধ্বগতি দেখে বোঝার উপায় নেই কোম্পানিটির আয় ঋণাত্মক।
উল্টো গত বৃহস্পতিবার এক দিনে দাম বেড়েছে ২০ টাকা বা ১০ শতাংশ। এই মূল্যবৃদ্ধি দেখে যেকোনো বিনিয়োগকারীর আগ্রহ তৈরি হতে পারে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি। এতক্ষণ বলছিলাম নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির কথা। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার কোম্পানিটি ছিল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে।
শেয়ারের মালিকানা নির্ধারণের জন্য ঘোষিত রেকর্ড ডেটের কারণে গত বুধবার কোম্পানিটির লেনদেন বন্ধ ছিল। রেকর্ড ডেটে লেনদেন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় এটির লেনদেন শুরু হয়। আর এদিনই প্রতিটি শেয়ারের দাম ২০ টাকা বেড়ে উঠে যায় ২১৯ টাকায়।
এবার তাহলে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্যের বিপরীতে মিলিয়ে দেখা যাক আর্থিক কিছু তথ্য। ১৫ নভেম্বর ডিএসইর ওয়েবসাইটে নর্দান জুটের চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ঋণাত্মক। প্রতি শেয়ারে কোম্পানিটির লোকসান ৩ টাকা ৬ পয়সা। অথচ আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির প্রতি শেয়ারে আয় ছিল ১ টাকা ৩ পয়সা।
এক বছরের ব্যবধানে এসে কেন লোকসানে চলে গেল কোম্পানিটি? কোম্পানিটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদনের বিস্তারিত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বাড়লেও বিক্রি ও আর্থিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানে চলে যেতে হয়েছে।
আর এ খরচ বেড়েছে বিক্রি বাবদ ও অন্যান্য আর্থিক দায় মেটাতে গিয়ে।
চলতি বছরের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছর শেষে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের জন্য ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ঘোষিত এ লভ্যাংশের প্রকৃত দাবিদার নির্ধারণের জন্য গত বুধবার রেকর্ড ডেটে কোম্পানিটির লেনদেন বন্ধ ছিল।
গত জুনের আর্থিক বছর শেষে নর্দান জুট নিরীক্ষিত যে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে বছর শেষে ইপিএস দাঁড়ায় ৭২ পয়সা। ২০১৫ সালের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছর শেষে যা ছিল ৩ টাকা ৮ পয়সা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রতি শেয়ারে আয় ২ টাকা ৩৬ পয়সা কমেছে।
এর ফলে কোম্পানিটির মূল্য আয়ের অনুপাত বা পিই রেশিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১-এ। বিশেষজ্ঞরা ২০-এর বেশি পিই রেশিওর কোম্পানিকে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করে থাকেন। সেখানে ৭১ পিই রেশিও শেয়ারের দামের উল্লম্ফন দেখে বিনিয়োগকারীরা তাতে আগ্রহী হবেন কি না, তা বিনিয়োগকারীর নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।
কুষ্টিয়ার বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৪ সালে। এটির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন পৌনে দুই কোটি টাকার কিছুটা বেশি। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অত্যন্ত স্বল্প মূলধনি কোম্পানি হওয়ায় এটির শেয়ার নিয়ে কারসাজি বা অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কাজটিও সহজ।
কিন্তু বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি হলেও সেটি দেখার দায়িত্ব যাদের, তাদের চোখে তা যথাসময়ে ধরা পড়ে না। কখনো কখনো কোনো কোনো কোম্পানির বেলায় যদিও ধরা পড়ে, তবে সেটিকে ‘রোগী মারা যাওয়ার পর ডাক্তার আসার’ মতোই ঘটনা বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। |
d8df2bd8-ae58-472f-92ad-736e10e0865c | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্রোকারেজ হাউজ মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) নির্বাচন আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত । ডিবিএ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক হওয়ার (ডিমিউচুয়ালাইজেশন) পর প্রথমবারের মতো ডিবিএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে পরিচালক পদে চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়েছেন ১৯ জন। স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে ডিবিএর ১৫ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন। এরপর ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় সংগঠনটির দ্বিতীয় বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হবে।
এদিকে, নির্বাচন পরিচালনায় এরই মধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে ডিবিএ। কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হারুন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ। কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন গ্লোব সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান ও এম অ্যান্ড জেড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ।
আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে থাকছেন আলী সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান এম আকবর আলী। তিন সদস্যবিশিষ্ট আপিল বোর্ডের বাকি দুই সদস্য হলেন মার্চেন্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল উদ্দিন ও ফিনিক্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কাদের ।
পরিচালক নির্বাচনে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছেন ডিবিএল সিকিউরিটিজের মো. আলী এফসিএ, রাস্তি সিকিউরিটিজের সৈয়দ রিদওয়ানুল ইসলাম, এরিস সিকিউরিটিজের মো. মাসুদুল হক, পিপলস ইকুইটির কবির আহমেদ, সাদ সিকিউরিটিজের মো. দেলোয়ার হোসেন, শহিদুল্লাহ সিকিউরিটিজের শরিফ আনোয়ার হোসেন, মডার্ন সিকিউরিটিজের খুজিস্তা নূর-ই নাহরিন, প্রাইলিংক সিকিউরিটিজের ডা. জহিরুল ইসলাম, ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস লিমিটেডের মোস্তাক আহমেদ সাদেক,
গ্লোবাল সিকিউরিটিজের রিচার্ড ডি রোজারিও, কান্ট্রি স্টক বাংলাদেশ লিমিটেডের খাজা আসিফ আহমেদ, রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের আহমেদ রশিদ, শ্যামল ইকুইটি মানেজমেন্ট লিমিটেডের সাজেদুল ইসলাম, ইউনিক্যাপ সিকিউরিটিজের ওয়ালি উল ইসলাম, রয়েল গ্রিন সিকিউরিটিজের আব্দুল হক, থিয়া সিকিউরিটিজের মাহবুবুর রহমান, ই সিকিউরিটিজের এম মোয়াজ্জেম হোসেন, কে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কনসালট্যান্ট লিমিটেডের দিল আফরোজ কামাল ও শাহেদ সিকিউরিটিজের শাহেদ আব্দুল খালেক।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধক (আরজেএসসি) সার্টিফায়েড কপি পায় ডিএসই। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছর স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক হয় (ডিমিউচুয়ালাইজেশন)। ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদে ব্রোকারদের প্রতিনিধিত্ব এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। পরে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মালিকদের সংগঠন হিসেবে ২০১৪ সালে যাত্রা করে ডিবিএ। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে বর্তমানে সংগঠনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিএসইর সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু। |
de12096b-cc0b-4f09-8b01-42d02926d3bc | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে গত বছরের একই সময়ে মুনাফায় থাকলেও চলতি বছরে লোকসান করেছে ১১টি কোম্পানি। প্রকাশিত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা যায়।
কোম্পানিগুলো হলো তাল্লু স্পিনিং, বিডি অটোকারস, বঙ্গজ লি., স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, নর্দার্ন জুট, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মেট্রো স্পিনিং, আরএন স্পিনিং ও গোল্ডেন সন।
বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত তাল্লু স্পিনিংয়ের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ২০ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল দশমিক ৪০ টাকা।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় কোম্পানিটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ফিরোজ ইসতেখার মাসুদের সঙ্গে বলেন, ‘উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও মূলত উৎপাদন বাড়ানো যায়নি। প্রোডাকশন লসের কারণে বিদায়ী বছরে লোকসানে পড়তে হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার পর্ষদ সভায় বিনিয়োগকারীদের নো ডিভিডেন্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
১৯৯০ সালে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৬১ টাকা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য হয়েছে ১৪ দশমিক ২২ টাকা, যা এর আগের বছর ইপিএস ছিল দশমিক ১৩ টাকা ও শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ছিল ১৬ দশমিক ৩২ টাকা। তখন শেয়ারহাল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
বস্ত্র খাতের এ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৮৯ কোটি টাকা। তাল্লু স্পিনিংয়ের মোট শেয়ারের ২৯ দশমিক চার শতাংশ উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের মধ্যে রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার। আর বাকি ৫০ দশমিক ৮১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রকৌশল খাতের বিডি অটোকারসের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক তিন টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দশমিক ২৮ টাকা।
এ সময়ে বঙ্গজের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ১৬ টাকা, যা আগের বছরে ইপিএস ছিল দশমিক ৭৭ টাকা। জানা যায়, বাজারে বঙ্গজ বিস্কুট ও নুডলসের চাহিদা থাকলেও সে তুলনায় উৎপাদন করতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে তাদের আয়ও কমে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত বছর কোম্পানিটির আয় ছিল ১৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ বছর তা নেমে এসেছে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আয় কমে গেছে তিন কোটি ৩০ লাখ টাকা। অন্যদিকে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে এ কোম্পানির উৎপাদনও। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কোম্পানিটি চাহিদার তুলনায় উৎপাদন করে ১৫ লাখ ২১ হাজার কেজি বা ৫১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
পরের অর্থবছরে তা নেমে আসে ১২ লাখ ৬৪ হাজার কেজি বা ৪২ দশমিক ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে উৎপাদন কমেছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ কেজি বা ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। সূত্র জানিয়েছে, কোম্পানিটির উৎপাদন কমে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে, বর্তমানে যে মেশিনটি দিয়ে উৎপাদনের কাজ চলছে তা খুবই পুরোনো। ফলে উৎপাদন সক্ষমতা কমে গেছে।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির সচিব ফিরোজ ইসতেখার বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দিয়ে আসছি। কিন্তু এবার বাধ্য হয়েই তাদের জন্য কিছু করতে পারিনি। প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমাদের মেশিনটি পুরোনো হয়ে গেছে। যে কারণে কমে গেছে উৎপাদন, যার ফলে কমে গেছে আমাদের আয়ও। তবে কোম্পানির অবস্থা ভালো হলে আমরা নিশ্চয়ই আবার ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরে যাবো।’
আলোচ্য সময়ে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে এক দশমিক ৭০ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দশমিক ১৩ টাকা। সে হিসাবে আগের বছরের তুলনায় কোম্পানিটি লাভ থেকে লোকসানে রয়েছে। সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ২৮ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ২ দশমিক ৪৯ টাকা।
নদার্ন জুটের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩ দশমিক ৬ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ দশমিক ৩ টাকা। খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ছয় টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দশমিক ১৬ টাকা।
অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৩৮ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দশমিক ৪৭ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে আরএন স্পিনিংয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৪০ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দশমিক চার টাকা।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বস্ত্র খাতের মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৯ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দশমিক ছয় টাকা। এদিকে আলোচ্য সময়ে গোল্ডেন সনের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ১৩ টাকা, যা আগের বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল দশমিক ৪৫ টাকা। |
b1f912d7-8c03-4c2c-9511-72234fdb359e | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত লিবরা ইনফিউশন্স লিমিটেডে চলতি হিসাব বছরের প্রথম (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম প্রান্তিক শেষে লোকসানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যদিও আগের বছরের তুলনায় লোকসানের পরিমান সামান্য কমেছে।
অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫ টাকা ৭৮ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৭ টাকা ৬৬ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর লিবরা ইনফিউশন্সের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৭০ টাকা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ করেছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। গেল হিসাব বছরে এর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৬৫ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৩ টাকা ৪৪ পয়সা। |
1f8212de-30db-4f26-bee8-3d80a0bc3c22 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের অধিকাংশ কোম্পানির আয় গত প্রান্তিকে বেড়েছে। এ খাতে তালিকাভুক্ত ৩৩ কোম্পানির মধ্যে ৩২টিই জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, এর মধ্যে আয় বেড়েছে ১৮টির এবং কমেছে ১৩টির। এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের লোকসান আগের বছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে সামান্য কমেছে।
প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে লোকসানে থাকা তিন কোম্পানি চলতি বছরের একই সময়ে মুনাফায় ফিরে এসেছে। কোম্পানি তিনটি হলো— দেশবন্ধু পলিমার, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম ও আজিজ পাইপস।
গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশবন্ধু পলিমারের শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ২৮ পয়সা। গেল প্রান্তিকে লোকসান কাটিয়ে ১৬ পয়সা শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) করে কোম্পানিটি। বিডি থাইয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৫৬ পয়সা। চলতি প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪৬ পয়সা। এছাড়া প্রথম প্রান্তিকে আজিজ পাইপসের ইপিএস হয়েছে ১৪ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে লোকসানে ছিল।
প্রথম প্রান্তিকে আয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুন্নু জুট স্ট্যাফলার্সের। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে ১০৪ শতাংশ। এ সময়ে তাদের ইপিএস ১২ পয়সা থেকে ২৫ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে আয় প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ বুক বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড। এ কোম্পানির ইপিএস প্রথম প্রান্তিকে ৮৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫৪ পয়সা।
এ প্রসঙ্গে বিবিএস লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মহসিন বলেন, প্রথম প্রান্তিকে সহযোগী কোম্পানি বিবিএস কেবলসের আয় যুক্ত হওয়ায় কোম্পানির মুনাফা প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এছাড়া করপোরেট সেক্টরে তাদের মূল পণ্য প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং স্ট্রাকচারের চাহিদাও বাড়ছে। বর্তমানে গুলশানে নাসা গ্রুপের ১৫ তলা একটি ভবনের কাজ করছে বিবিএস।
২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় গেল প্রান্তিকে ইপিএস ২৯ শতাংশ বেড়েছে ইস্পাত শিল্পের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বিএসআরএম স্টিলসের। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৭১ পয়সা, যা চলতি প্রথম প্রান্তিকে ২ টাকা ২১ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। অবশ্য একই গ্রুপের কোম্পানি বিএসআরএম লিমিটেডের ইপিএস একই সময়ের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে।
চলতি প্রথম প্রান্তিকে বিএসআরএম লিমিটেডের ইসিএস দাঁড়িয়েছে ৭৪ পয়সায়, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭৮ পয়সা। এছাড়া ইপিএস বেড়েছে রংপুর ফাউন্ড্রি, কাশেম ড্রাইসেল, নাভানা সিএনজি, আফতাব অটোজ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বিডি ল্যাম্পস, আরএসআরএম, কেডিএস ও অলিম্পিক অ্যাকসেসরিসের।
বিপরীতে ২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৪৫ পয়সা ইপিএস দেখানোর পর চলতি প্রথম প্রান্তিকে লোকসানে চলে এসেছে গোল্ডেন সান। রফতানিতে সুবিধা করতে না পারায় পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিক মুনাফায় থাকা গোল্ডেন সান চলতি বছর লোকসানে পড়েছে।
প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছে ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। যদিও আগের বছরের প্রথম প্রান্তিকে গোল্ডেন সানের নিট মুনাফা ছিল ৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এতে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৩ পয়সা।
একইভাবে বিডি অটোকারসও লোকসানের মুখে পড়েছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে এ কোম্পানির ইপিএস ছিল ২৮ পয়সা। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তারা শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১৩ পয়সা।
এদিকে আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে ইস্টার্ন কেবলস, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল ও রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের। ইস্টার্ন কেবলের ইপিএস চলতি প্রথম প্রান্তিকে মাত্র ২ পয়সায় নেমে এসেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৬ পয়সা। রাষ্ট্রায়ত্ত আরেক কোম্পানি ন্যাশনাল টিউবসের লোকসান চলতি প্রথম প্রান্তিকে আরো বেড়েছে।
গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৭১ পয়সা, যা চলতি প্রথম প্রান্তিকে ১ টাকা ৪৩ পয়সায় ঠেকেছে। এদিকে একই সময়ের ব্যবধানে লোকসান কিছুটা কমেছে এটলাস বাংলাদেশের। এর বাইরে ইপিএস কমেছে ন্যাশনাল পলিমার, জিপিএইচ ইস্পাত, ইফাদ অটোজ, বেঙ্গল উইন্ডসর ও অ্যাপোলো ইস্পাতের। |
42cd44ca-a723-4f25-9506-a9572405112d | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেছেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিকে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। বিনিয়োগকারীরা এখন ভেবে চিন্তে বিনিয়োগ করলে লাভাবন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ শনিবার ২৬ নভেম্বর আগ্রাবাদ হোটেল ল্যান্ড মার্কে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিঃ এর চট্টগ্রাম বিভাগের আয়োজিত “পুঁজিবাজারে তথ্যই অর্থ” শীর্ষক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যের তিনি একথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইফুর রহমান গ্রাহকসেবা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে ১৫টি শাখার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে উন্নত সেবা প্রদানের বিপুল সম্ভাবনার কথা ব্যক্ত করেন।
এছাড়া বর্তমান বাজার পরিস্থিতিকে বিনিয়োগের শ্রেষ্ঠ সময় হিসাবে উল্লেখ করেন এবং বাজারে বিনিয়োগে বিপুল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেট ট্রেডের সহজলভ্যতা, বিনিয়োগের পূর্বে টেকনিক্যাল এনালাইসিস আগে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর গুরুত্বের বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আপনারা তখনই নিজেদের দক্ষ মনে করবেন যখন আপনারা সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে গ্রাহকের সন্তুষ্টি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন তার বক্তব্যে পুঁজিবাজারে তথ্যই অর্থ, তথ্যের উৎস, তথ্যের মূল্যায়ন, তত্যের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে নিরাপদ বিনিয়োগ করে তথ্যকে অর্থে রূপান্তর করা যায় তার কৌশল বর্ণনা করেন। তিনি নিরাপদ বিনিয়োগের কৌশল হিসাবে এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মুনাফার সম্ভাবনা তুলে ধরেন।
যারা শরীয়াহ্ ভিত্তিক বিনিয়োগ করতে চান তাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে শরীয়াহ্ ইনডেক্স এর নানান দিন বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি শরীয়াহ্ ভিত্তিক শেয়ার সমূহের তালিকা তুলে ধরে কোন দৃষ্টিকোন থেকে সেগুলো শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইনডেক্স এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা আলোচনা করেন। সর্বশেষে তিনি গ্রাহক সেবা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রেখে সবাইকে আরও ইনোভেটিভ ও ক্রিয়েটিভ হওয়ার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এফসিএমএ এবং পরিচালক মোহাম্মদ নাকিম উদ্দিন নিশাদ। এছাড়া আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ লিঃ এর কর্পোরেট অফিস, আগ্রাবাদ এক্সটেনশন অফিস, বহদ্দারহাট শাখা, শাহ্ আমানত শাখা, হাটহাজারি শাখা, মাইজদি শাখা ও চৌমুহনী শাখার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা কনফারেন্সে অংশগ্রহন করেন। |
8ec3a362-1bf0-44ab-854f-b1875913636f | ফয়সাল মেহেদী, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: মূল্য আয়ের অনুপাত বা পিই রেশিও রয়েছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে। তবুও থেমে নেই শেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রবণতা। শেয়ার দর যতই বাড়ছে বিনিয়োগ ঝুঁকির প্রবণতাও ততই বাড়ছে। বর্তমান এ চিত্র পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের। সম্প্রতি কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন করারও অভিযোগ ওঠে।
তাছাড়া উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনাও আমলে নিচ্ছে না প্রকৌশল খাতের কোম্পানি। ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের লেনদেনে শুরু হয়। ওই বছরের ৩ ডিসেম্বর শেয়ারটির দর ছিলো ৩৪.১০ টাকা।
যা বিগত দুই বছরের মধ্যে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর। বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল শেয়ার দর দাঁড়ায় ১০.১০ টাকায়। তবে এর পরের কার্যদিবস থেকে শেয়ার দর আরও কমে ফেস-ভ্যালুর নিচে নেমে যায়। অবশ্য এর পরে একাধিকবার ফেসভ্যালুতে ফিরলেও তা স্থায়ী হয়নি। বরং ২২ আগস্ট থেকে ফেস-ভ্যালুর নিচেই লেনদেন হচ্ছে কোম্পানিটির শেয়ার দর।
এদিকে ২১ নভেম্বর থেকে হঠাৎ করে শেয়ারটির দর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করেছে। শেয়ারটির দর ২০ নভেম্বর ছিলো ৮.৩০ টাকা। তবে পরবর্তী কার্যদিবস থেকে শেয়ার দর টানা বেড়ে ৯.৫০ টাকায় উঠে আসে। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে (২৪ নভেম্বর পর্যন্ত) শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৪.৪৬ শতাংশ বা ১.২০ টাকা।
সর্বশেষ কার্যদিবসে শেয়ার দর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ২.১৩ শতাংশ বা ০.২০ টাকা বেড়ে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯.৬০ টাকা দরে। শেয়ার দর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল্য আয়ের অনুপাত বা পিই রেশিও ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে।
গত ১৭ নভেম্বর পিই রেশিও ছিলো ২১০ পয়েন্টে; যা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ২৪ নভেম্বর দাঁড়িয়েছে ২৩৭.৫০ পয়েন্টে। বর্তমান এ পিই রেশিও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, বিশেষজ্ঞরা ২০-এর বেশি পিই রেশিওর কোম্পানিকে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করে থাকেন।
আর যে কোম্পানির পিই রেশিও ৪০-এর উপরে সেগুলোতে বিনিয়োগের জন্য মার্জিন ঋণ প্রদানে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিশেধাজ্ঞা রয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগের জন্য ওই কোম্পানিগুলোকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা লঙ্ঘন : উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা লঙ্গন করে ব্যবসা চালাচ্ছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। বিএসইসির পক্ষ থেকে বারবার উদ্যোক্তা পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনের নির্দেশনা দেয়া হলেও তার কোন পরোয়াই করছেন না এ কোম্পানিটি।
উল্টো নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে যাচ্ছেন। ৩০ জুন ২০১৫ শেষে কোম্পানির পরিচালকদের হাতে ৩২.৬২ শতাংশ শেয়ার থাকলেও ৩১ অক্টোবর ২০১৬’এ তা ৯.৪১ শতাংশে নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর বিএসইসির ধারা ২সিসি অর্পিত ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ (১৯৬৯ এক্সবিবিআই) প্রজ্ঞাপন জারিতে বলা হয় পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্য-বাধকতা পূরণ করতে হবে। তারপরেও কোম্পানিটি তা পরিপালন না করে ব্যবসা করছে।
হতাশ বিনিয়োগকারীরা : তালিকাভুক্তির প্রথম বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্টক ডিভিডেন্ড নামক কাগজ ধরিয়ে দিলেও পরের বছরেই বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে এ কোম্পানিটি। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষনা করে। ওই বছর ২০১৪ সালে কোম্পানিটি ৫ কোটি ১৩ লাখ মুনাফা করে। এরপরের বছরেই অর্থাৎ ২০১৫ সালের ৩০ জুনে সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটি ‘নো’ ডিভিডেন্ড দিয়ে বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে। সমাপ্ত অর্থবছরে ১৭ লাখ টাকা লোকসান দেয়।
আলোচিত সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসানের পরিমাণ দাড়ায় ০.০৩ টাকায়। এদিকে ৩০ জুন’ ১৬ সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০.০৪ টাকা। ফলে আলোচ্য বছরেও ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে।
ফলে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহে শেয়ার দর ফেস-ভ্যালুর নিচে অবস্থান করে। দীর্ঘ দিন ধরে শেয়ার দর ফেস-ভ্যালুর নিচে থাকায় এবং বছর শেষে ‘নো’ দেয়ায় ফেঁসে গেছেন কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা।
সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’১৬) কোম্পানিটি লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে। প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ০.০১ টাকা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ০.০১ টাকা (নেগেটিভ)।
আরও যত অভিযোগ : কোম্পানিটি আইপিও আবেদন করার আগে প্রাইভেট প্লেসমেন্টে শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধি করেছে বলে জানা গেছে। আইপিও আবেদন করার আগে কোম্পানিটি ২৪৫ জনের কাছে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট মোট ২৪ কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার ১০০ টাকার শেয়ার বিক্রি করে মূলধন বৃদ্ধি করে। এর আগে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারদের মোট শেয়ারের মূল্য ছিল ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যার কারণে কোম্পানিটি আবেদেনের আগে ২৮ কোটি টাকা লেনদেন দেখায়।
কিন্তু যখনই কোম্পানিটি আইপিও’র অনুমোদন পায় সাথে সাথে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকগণ তাদের হাতে থাকা শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তালিকাভুক্ত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে যা ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসে যা বিএসইসির আইন লঙ্ঘন।
২০১৪ সালে প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে কোম্পানিটির ৯ জন উদ্যোক্তা ও পরিচালকের তালিকা দেয়া হয়েছে। যাদের শেয়ার তিন বছরের জন্য লক-ইন থাকবে।
২০১৪ সালে মোট ১৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেয়। আর এ নিয়ে অনেকেই শেয়ার বিক্রয় করে কোম্পানি থেকে সরে যায়। কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের যে কোন শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে ঘোষণা দিতে হয়। কিন্তু কোম্পানির কোন উদ্যোক্তা ও পরিচালক ঘোষণা না দিয়েই শেয়ার বিক্রির করে দেয়।
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কোম্পানি সচিব এস কে সাহা জানান, ২০১৪ সালে নির্দিষ্ট সময়ে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত করতে না পারায় কোম্পানির এলসি আটকে যায়।
এমনকি প্রায় ৮ মাস এলসি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়াতে পিভিসি উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যায়। এ জন্য অনেক গ্রাহককে ঠিকমত করে পন্য সরবরাহ করা যায়নি। যার জন্য কোম্পানির অনেক লোকসান হয়।
তাছাড়া উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় মেশিনগুলোতে মরিচা পরে এবং মেইন ডিসি মোটর নষ্ট হয়ে যায়। বিদেশ থেকে কিছু পার্টস আমদানি করতে হয়। এতে কোম্পানির ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। তাই গত ২ বছর ধরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ডে দিকে পারছে না।
এ বিষয়ে বিএসইসি’র নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, যেসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ শতাংশের নিচে তাদের তালিকা দেওয়ার জন্য ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) একটি চিঠি দিয়েছি আমরা। যে কতোগুলো কোম্পানি আইন পরিপালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যেসব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেনি বা শেয়ার ধারন করতে পারছে না তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তাছাড়া যারা এ আইন মানবে না কমিশন তাদের মূলধন বাড়ানোর অনুমোদনও দিবে না বলে জানান তিনি। |
98d158c6-1618-4e33-9a86-6ff20b8b61dc | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: এক বছরের ব্যবধানে ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিক্রি বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। তবে কোম্পানির নিট মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কমে গেছে। মূলত বিলম্বিত করের (ডেফার্ড ট্যাক্স) কারণেই কোম্পানির নিট মুনাফা কমেছে। ২০১৫-১৬ হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অবশ্য চলতি প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির বিক্রির পাশাপাশি মুনাফাও বেড়েছে। এ বছর তৈরি পোশাক শিল্পে শীর্ষ করদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় রয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নিট পোশাক প্রস্তুতকারী কোম্পানিটি।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িংয়ের তৈরি পোশাক রফতানির পরিমাণ ছিল ৩১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা বেশি। রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি কোম্পানির উত্পাদন ব্যয়ও (কস্ট অব গুডস সোল্ড) কিছুটা কমেছে।
২০১৪-১৫ হিসাব বছরে ফার ইস্ট নিটিংয়ের উত্পাদন ব্যয় ছিল মোট বিক্রির ৭৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা সর্বশেষ হিসাব বছরে ৭৫ শতাংশে নেমে এসেছে। রফতানি বৃদ্ধি ও উত্পাদন ব্যয় কমে আসায় সর্বশেষ হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির মোট (গ্রস) মুনাফা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে।
২০১৫-১৬ সমাপ্ত বছরে ফার ইস্ট নিটিংয়ের কর-পূূর্ব মুনাফা দাঁড়ায় ৪৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, যা আগের বছর ছিল ৪০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সর্বশেষ হিসাব বছরে আয় বাড়লেও বিলম্বিত কর বাবদ ব্যয় বৃদ্ধির কারণে কোম্পানির নিট মুনাফা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমে যায়। ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে কোম্পানিটি আয়কর বাবদ ব্যয় করে ৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যা সর্বশেষ হিসাব বছরে দ্বিগুণ হয়ে যায়।
২০১৫-১৬ সমাপ্ত বছরে ফার ইস্ট নিটিং কর বাবদ ব্যয় করেছে ১৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিলম্বিত করের পরিমাণ ৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মূলত বিলম্বিত করের কারণেই ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে কোম্পানির নিট মুনাফা দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৪০ লাখ টাকায়, যা আগের বছর ছিল ৩১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
বিলম্বিত কর বা ডেফার্ড ট্যাক্স হচ্ছে কোম্পানির স্থায়ী সম্পদের বিপরীতে ধার্য কর, যা এ বছরই পরিশোধ করতে হবে না। তবে কোম্পানির আয় থেকে বিলম্বিত কর বাবদ ধার্য করা অর্থ কেটে আলাদা হিসাবে রাখতে হয়। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, অবচয় ও অ্যামরটাইজেশন (ক্রম শোধ) হিসাব করে কোম্পানির স্থায়ী সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮১ কোটি ২২ লাখ টাকা।
এর মধ্যে ট্যাক্স বেজের পরিমাণ ১৩৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য (ট্যাক্সেবল টেম্পোরারি ডিফারেন্স) হচ্ছে ৪৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ পার্থক্যের ওপর ২০ শতাংশ হারে কর ধার্য করলে ২০১৬ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির বিলম্বিত করের দায় দাঁড়ায় ৯ কোটি ৩০ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে ফার ইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িং ইন্ডাস্ট্রিজের কোম্পানি সচিব এমএস জামান বলেন, নতুন নিয়মের কারণে ২০১৫-১৬ হিসাব বছর থেকে ডেফার্ড ট্যাক্স চার্জ করা হচ্ছে, যার প্রভাব পড়েছে নিট মুনাফায়। তবে কোম্পানির বিক্রিতে ধারাবাহিকতা রয়েছে, যা প্রথম প্রান্তিকেও প্রতিফলিত হয়েছে। সাধারণত অন্যান্য প্রান্তিকের তুলনায় প্রথম প্রান্তিকে আমাদের রফতানি তুলনামূলক কম থাকে।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রসারণের আওতায় যে প্রকল্প নেয়া হয়েছিল, তা এরই মধ্যে বাণিজ্যিক উত্পাদনে এসেছে। সব মিলিয়ে আশা করছি, আমাদের রফতানিতে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
এদিকে বিলম্বিত কর দায়ের পরও চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে ফার ইস্ট নিটিংয়ের নিট মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানির রফতানি বেড়েছে ১৩ শতাংশের বেশি। ২০১৫-১৬ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে ফার ইস্ট নিটিংয়ের পোশাক রফতানি হয় ৫৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার, যা চলতি প্রথম প্রান্তিকে ৬৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
এ সময় কোম্পানির মোট মুনাফা বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। চলতি প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি ৬০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বিলম্বিত কর ধার্য করেছে। এর পরও কোম্পানির নিট মুনাফা আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। সব মিলিয়ে চলতি প্রথম প্রান্তিকে ফার ইস্ট নিটিংয়ের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ১১ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। |
084929b6-984b-40e5-b5ad-e9eeec14d948 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে । তবে ঘোষিত ডিভিডেন্ডে বিনিয়োগকারীদের মাঝে স্বস্তি মিলেনি। কোম্পানিটির কাছ থেকে বিনিয়োগকারীরা আরো ভালো ডিভিডেন্ড প্রত্যাশা করছিল।
তাছাড়া কোম্পানিটি গত বছরের তুলনায় এ বছর কম ডিভিডেন্ড ঘোষনা করেছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মিল নেই। আজ শনিবার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা যায়, কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩.৩৩ টাকা, শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৭.২৩ টাকা এবং শেয়ার প্রতি নেট ক্ল্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ১.৩২ টাকা।
কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ৩১ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায়, আইডিইবি ভবন, কাকরাইল, ঢাকাতে অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড ডেট নিধারণ করা হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর। |
839b0bbd-5999-4eef-a1cb-89ed7ce8dce9 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে অস্থিরতা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করছে। সরকার যেকোনো মূল্যে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখবে বানিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে বিনিয়োগকারীরা বাজার নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করছেন। এছাড়া বাজার যেকোনো মূল্যে স্থিতিশীল রেখেই দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে বলে তোফায়েল আহম্মেদ বলেছেন।
একটি দেশের উন্নয়নের জন্য পুঁজিবাজার একটি গুরুত্ব ভূমিকা পালন করে। প্রতিটি রাষ্ট্রের উন্নতির পেছনে পুঁজিবাজার বড় অবদান রাখে। আমাদের বাজারও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।
বানিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তেব্যর পর বিনিয়োগকারীদের মাঝে আশার আলো জাগতে শুরু করছে। আর সপ্তাহজুড়ে লেনদেন বাড়াকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আলোচনার শেষ নেই। বিনিয়োগকারীরা বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করছে।
তেমনি বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগমুখী হওয়ার চিন্তা ভাবনা শুরু করছেন। সরকারের নীতি নির্ধারকসহ সব মহলে আন্তরিকতার ফলে বাজার স্থিতিশীলতার আভাস দেখা গেছে। এ গতি অব্যাহত থাকলে শিগরিই লেনদেন হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে এই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সও আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে উপরে উঠে এসেছে। বুধবারের লেনদেনে হাসি দেখা গেছে ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও বিনিয়োগকারীসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে।
সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে ১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গেলো সপ্তাহে প্রথম কার্যদিবস রোববারে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৩২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা এবং শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারে (১ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা বা দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এদিকে ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি ৫০ লাখ টাকা; যা এর আগের সপ্তাহের চেয়ে ৮৮৭ কোটি বা ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ৯৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, আগের সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে তালিকাভুক্ত খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) উদ্যোক্তা পরিচালকদের ৮২৮ কোটি ৫৫ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। যার ফলে পাঁচ বছরের সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড হয় ডিএসইতে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ৭২০ কোটি ১০ লাখ টাকা; যা তার আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৭৯৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩১ পয়েন্ট বেড়ে চার হাজার ৮২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। শরিয়া সূচক ডিএসইএস ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৪৯ পয়েন্ট এবং ডিএস৩০ সূচক ১৮ পয়েন্টে বেড়ে ১ হাজার ৭৮৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৭টির, কমেছে ১০৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টি কোম্পানির শেয়ারদর। এছাড়া লেনদেন হয়নি দুটি কোম্পানির শেয়ার।
সপ্তাহের ব্যবধানে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে ১৪ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে গত সপ্তাহে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে দশমিক ৭৮ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৩০ শতাংশ, সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে দশমিক ৬৮ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে দশমিক ১৬ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ২৯ শতাংশ।
সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৮৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৬টির, কমেছে ৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। গত সপ্তাহে সিএসইতে টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে ২২১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। |
2b079b99-6d7a-4b9e-9a36-beed9e81ce78 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ইউরোপের বাজারে প্রথম স্থান দখল করেছে বাংলাদেশের ডেনিমস। অল্প সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও তৃতীয় স্থান দখল করেছে ডেনিমস। এ কারণে এ খাতে উদ্যোক্তাদের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববাজারে দেশের ডেনিম (জিন্স) পণ্য রফতানির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।
কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ ও ক্রমাগত গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। ফলে কাক্সিক্ষত বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে একদিকে রফতানির মাধ্যমে বিপুল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা আসবে, অপরদিকে দেশীয় বাজারেও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ইউরো স্টেটের তথ্য মতে, ২০১৫ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪ হাজার ৬৫১ মিলিয়ন ইউরোর ডেনিম পণ্য আমদানি করে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ১৭৬ মিলিয়ন ইউরোর ডেনিম পণ্য রফতানি হয়েছে।
২০১৪তে ৯৩৯ মিলিয়ন, ২০১৩তে ৮০৮ মিলিয়ন, ২০১২তে ৭২৫ মিলিয়ন, ২০১১তে ৫৯১ মিলিয়ন এবং ২০১০ সালে ৪৪৪ মিলিয়ন ইউরোর ডেনিম পণ্য রফতানি হয়েছে ইউরোপে। বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক। এরপরের স্থানে যথাক্রমে রয়েছে পাকিস্তান ও চীন। এ চার দেশের মধ্যে পাকিস্তানের রফতানি প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৩১ শতাংশ।
ডেনিমস উৎপাদন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডেনিম বা জিন্স পণ্য রফতানি খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। যমুনা, পারটেক্স ও এনভয়, শাশা , এগ্রো ডেনিমসসহ স্বনামধন্য ২৮টি প্রতিষ্ঠান ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেনিম রফতানি করে দেশের সুনাম বয়ে আনছে।
এছাড়া রফতানিকে উৎসাহিত করতে এবং বিদেশী ক্রেতাদের বাংলাদেশের ডেনিম পণ্য সম্পর্কে অবহিত করতে একাধিক প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন করছে। বিশ্ববাজারে চাহিদা থাকায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
কিন্তু এতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি। একটি রফতানিমুখী ডেনিম কারখানা স্থাপনে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন। ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদের কারণে উদ্যোক্তারা শুরুতেই হোঁচট খাচ্ছেন।
সুদ পরিশোধ করতে তাদের গলদঘর্ম অবস্থা। অন্যদিকে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। যার ফলে প্রতিযোগিতার সক্ষমতাও কমছে।
এ বিষয়ে যমুনা ডেনিমের ব্যবস্থাপক (বিপণন) মনিরুজ্জামান বলেন, সম্ভাবনাময় খাত হলেও গ্যাস, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদের কারণে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকা যাচ্ছে না। একদিকে গ্যাসের স্বল্প চাপের কারণে কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। অন্যদিকে ক্রমাগতভাবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হচ্ছে। গ্যাস নিয়ে বিপাকে রয়েছেন উদ্যোক্তারা।
আর ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ থাকায় যেসব প্রতিষ্ঠানের অর্ডার রয়েছে তারাও কারখানা সম্প্রসারণ করতে পারছে না। এছাড়া ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি বাতিল হওয়ায় রফতানিতে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এ সেক্টরকে বিকাশের স্বার্থে সরকারকে অবশ্যই জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালে শক্তিশালী উদ্যোগ নিতে হবে।
এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বেড়েছে। অধিকাংশ কোম্পানির দর ফেসভ্যালুর কাছাকাছি থাকায় ও দর কমে আসার প্রথম প্রান্তিকে বেশকিছু কোম্পানির ইপিএস ভালো আসায় এসব কোম্পানির শেয়ারের প্রতি ঝোঁক বেড়েছে।
আজ ৪৫টি কোম্পানির মধ্যে ২৩ শেয়ার দর বেড়েছে, কমেছে ১৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টি। এদিকে এ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোট ১০৮ ৪০ লাখ শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এছাড়া শাশা ডেনিমস টপ-২০ শেয়ারের তালিকায় প্রথম স্থানে ওঠে এসেছে।
এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর এর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৭.১৪ শতাংশ বেড়ে ৭২ টাকায় ওঠে এসেছে। মোট ৪৬ লাখ ২৩ হাজার ৯০টি শেয়ার ৩২ কোটি ২১ লাখ টাকায় ৩ হাজার ৩৯১ বার হাতবদল হয়।
এছাড়া লেনদেনের ভিত্তিতে টপ-২০ শেয়ারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এ খাতের আরেক কোম্পানি আরগন ডেনিমস। কোম্পানিটি এ তালিকার নবম স্থানে রয়েছে।
আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর এর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৬.১৯ শতাংশ বেড়ে ৩০.৯০ টাকায় ওঠে এসেছে। মোট ৪৬ লাখ ৬৯ হাজার ৫৯৬টি শেয়ার ১৪ কোটি ১০ লাখ টাকায় ২ হাজার ৭৮৪ বার হাতবদল হয়।
অন্যদিকে সর্বোচ্চ দরে বিক্রি হলো শাশা ডেনিমসের শেয়ার। আজ সোমবার দিনশেষে এ শেয়ার লেনদেন হয় ৭২ টাকায়। ২০১৫ সালে তালিকাভুক্তির পর এ শেয়ারের সর্বোচ্চ দর ছিল ৬৯ টাকা। বরাবরই এ শেয়ারের চাহিদা থাকার কারণে দর বেড়েছে বলে মনে করছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
কোম্পানিটি গতকালের লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, চাহিদা থাকার কারণে সকাল থেকে ঊর্ধ্বমুখী ছিল শেয়ারদর। দিনজুড়ে শেয়ারের দর ওঠানামা করা ৬৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৭৩ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে। দিন শেষে মূল্য স্থির হয় ৭২ টাকায়। এক দিনের ব্যবধানে প্রতিটি শেয়ারের দর বাড়ে চার টাকা ৮০ পয়সা।
এ দিন কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ৪৬ লাখ ২৩ হাজার ৯০টি। আর এ শেয়ারগুলো বেচাকেনা হয় তিন হাজার ৩৯১ বার হাতবদলের মধ্যে দিয়ে।
শেয়ারের দর বাড়ার বিশেষ কোনো কারণ রয়েছে কি না তা জানতে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (ফাইন্যান্স) আহসানুল হক সোহেল বলেন, ‘শেয়ারদর বাড়ার বিশেষ কোনো কারণ আমার জানা নেই। তবে শুরু থেকে আমাদের শেয়ারের চাহিদা রয়েছে। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি আস্থা রয়েছে ক্রেতাদের। হয়তোবা ক্রেতাদের সে চাহিদা থেকে দর বাড়তে পারে।’
এদিকে সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে এক টাকা ১০ পয়সা। গত বছর যা ছিল এক টাকা পাঁচ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ৪৪ টাকা ৪৬ পয়সা। গত বছর যা ছিল ৪৪ টাকা ৮৬ পয়সা।
ধারাবাহিক মুনাফায় থাকা এ প্রতিষ্ঠানটি এ বছর মুনাফা করেছে ৮৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের বছর যা ছিল ১৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ শেয়ারহোল্ডারদের ২৫ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেন।
২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে পরিচালকদের কাছে। এছাড়া সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ২৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে এবং বিদেশিদের কাছে রয়েছে ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ শেয়ার।
তবে এতোগুলো কোম্পানির মধ্যে ডেনিম প্রস্তুতকারী এ দুই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে একাধিক বিনিয়োগকারী জানান, একসময় ওভেন পোশাকে ভালো করলেও আমরা এখন নিট পোশাকে ভালো করছি। কারণ, পশ্চাৎমুখী সংযোগ শিল্প অর্থাৎ নিটের কাপড় দেশেই হচ্ছে।
এতে করে পোশাক তৈরির লিড টাইম কমে এসেছে। ডেনিমের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনাই হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের প্রতি তিনজন মানুষের একজন জিনস পরে। আর শীত প্রধান দেশে জিনস ছাড়া তো উপায়ই নেই।
আর এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ডেনিম রপ্তানিতে শীর্ষ তিন দেশের তালিকায় ওঠে এসেছে। কাজেই এটা নি:সন্দেহে বলা যায়, ডেনিম প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ ঝুঁকি অনেক কম।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে তুরস্ককে পেছনে ফেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ডেনিম পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে পৌঁছায় বাংলাদেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সালে ৯৩ কোটি ৯০ লাখ ইউরোর (১ ইউরোয় ৮৬ টাকা) ডেনিম রপ্তানি করে বাংলাদেশ। পরের বছর ২৫ শতাংশ বেড়ে ডেনিম পোশাক রপ্তানি ১১৭ কোটি ৬১ লাখ ইউরোতে দাঁড়ায়।
চলতি বছরের (জানুয়ারি থেকে জুন) ছয় মাসে ৫৬ কোটি ইউরোর ডেনিম রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া ইউনাইটেড স্টেটস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশনের তথ্য বলছে, দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে ডেনিম পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে। |
0a5cdbd2-07d8-4f72-871f-b4048626ab4d | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: লেনদেন শুরু প্রথম কার্যদিবসেই ইস্যু মূল্যের নিচে নেমে এসেছে সদ্য তালিকাভুক্ত ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ড। সোমবার ফান্ডটির সমাপনী বাজার দর ছিল ৯.৫০ টাকা।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সোমবার দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে একযোগে লেনদেন শুরু করে ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ড। এসময় ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বোচ্চ ১১.১০ টাকা হলেও সর্বনিম্ন ৯.২০ টাকায় হাতবদল হতে দেখা গেছে। দিনশেষে ফান্ডটির ৩ লাখ ৫০ হাজার ৯১৫টি ইউনিট হাতবদল হয়। এছাড়া চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ফান্ডটির কোন ইউনিট লেনদেন হয়নি।
সূত্র জানায়, সোমবার উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন শুরু করে ফান্ডটি। যার ট্রেডিং কোড ‘ঠঅগখজইইঋ’। ফান্ডটির ডিএসইতে ট্রেডিং আইডি হবে ১২১৯৮। আর সিএসইর স্কিপ আইডি-২১০৪৭।
জানা গেছে, এর আগে ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ড ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন ও চাঁদা গ্রহণ করে। ফান্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। আর ৫০০ শেয়ার নিয়ে এর মার্কেট লট।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির আকার ২০০ কোটি টাকা। ফান্ডটিতে উদ্যোক্তার অংশ ৪০ কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রি-আইপিও প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ৬৫ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। বাকি ৯৫ কোটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত ছিল ৩৮ কোটি টাকার ইউনিট। ইউনিট সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ, আর মার্কেট লট সংখ্যা ৭৬ হাজার।
অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ছিল ৯৫ লাখ ইউনিট। সমসংখ্যক ইউনিট সংরক্ষিত ছিল মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর জন্য। অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত ছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ ইউনিট।
ফান্ডটির উদ্যোক্তা রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। ফান্ডটি পরিচালনা করবে ভ্যানগার্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। ফান্ডটির ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান হিসেবে কাজ করছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২ আগস্ট ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ডের প্রসপেক্টাস অনুমোদন করে। ক্লোজইন্ড এ মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির মেয়াদ ১০ বছর। |
8db2a9a4-ee08-4e44-ab5b-c15244f7ff70 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির অস্তিত্ব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। বছর শেষে প্রতিটি কোম্পানির কাছ থেকে ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ আশা করেন বিনিয়োগকারীরা। অথচ তালিকাভুক্ত পর থেকে এসব কোম্পানি নানা ধরনের সমস্যা দেখিয়ে টানা বছরের পর বছর ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করে আসছে বিনিয়োগকারীদের।
টানা লোকসানে ঋণ ও দায়ের পরিমাণ সম্পদের তুলনায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় দেউলিয়ার পথে রয়েছে কিছু কিছু কোম্পানি। এতে বিনিয়োগ হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। কোম্পানিগুলো হলো- আজিজ পাইপস, দুলামিয়া কটন, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, মেঘনা পেট, সমতা লেদার, শ্যামপুর সুগার এবং ঝিলবাংলা সুগার মিলস লিমিটেড, ইমাম বাটন, জুট স্পিনার্স, রহিমা ফুড।
এ কোম্পানিগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষকদের মতামত থেকে জানা যায়, উৎপাদন ক্ষমতা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় ব্যবসা হারাচ্ছে কোম্পানিগুলো। অপরদিকে টানা লোকসানে কোম্পানিগুলোর সমন্বিত লোকসান লাগামহীনভাবে বাড়ছে।
এর পাশাপাশি ঋণ ও দায়ের পরিমাণ বাড়তে বাড়তে কোম্পানিগুলোর সম্পদমূল্যকেও ছাড়িয়েছে। পরিণতিতে এ কোম্পানিগুলো দায় পরিশোধের ক্ষমতা হারিয়ে বর্তমানে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। আর এ কোম্পানিগুলো মুনাফায় না আসতে পারলে ভবিষ্যতে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আইন অনুযায়ী টানা লোকসান, উৎপাদন বন্ধ, অনিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ইত্যাদি সমস্যা সংকুল কোম্পানিগুলোকে মূল মার্কেট থেকে সরিয়ে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে পাঠানোর ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে।
এ ছাড়া যেসব কোম্পানি লোকসানের কারণে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিন ধরে ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না সেসব কোম্পানির পর্ষদে প্রশাসক বা পর্যবেক্ষক বসানোর ক্ষমতাও কমিশনের রয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসর মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, কমিশনে জনবলের ঘাটতি থাকায় আর্থিক ও ব্যবস্থাপনায় দুর্বল কোম্পানিগুলোতে প্রশাসক কিংবা পর্যবেক্ষক বসানো যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, তবে কোম্পানিগুলোকে ওটিসেতে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু এসব দুর্বল কোম্পানির মধ্যে বেশকিছু সরকারি কোম্পানি থাকায় ওটিসিতে পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশকিছু জটিলতা রয়েছে। তবে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় এ বিষয়ে কমিশন কাজ করছে।
আজিজ পাইপস : ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রকৌশল খাতের আজিজ পাইপসের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানিটির দায়ের পরিমাণ ৬১ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরিশোধিত মুলধনের ১৫ গুণ দায় বহন করছে কোম্পানিটি।
দুলামিয়া কটন : বস্ত্র খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি দুলামিয়া কটনের অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অথচ কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ কোম্পানির নিরীক্ষকের মতে, কোম্পানিটি দায় পরিশোধের ক্ষমতা হারাচ্ছে। অর্থাৎ কোম্পানিটি দেউলিয়ার দিকে যাচ্ছে।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংক : ব্যাংক খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৬৬৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অথচ কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ১ হাজার ৬২৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
এর মোট ৬৬ কোটি ৪৭ লাখ ২ হাজার ৩০০টি শেয়ারের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ৫৯.৭৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১৬.৩৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ২৩.৮৮ শতাংশ শেয়ার। বর্তমানে এটি একটি লোকসানি কোম্পানি যার অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।
মেঘনা পেট : ২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি মেঘনা পেটের অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১২ কোটি টাকা। কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ১৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
অডিটরের মতে, বর্তমানে কোম্পানিটি ১৬ কোটি টাকা সমন্বিত লোকসানে রয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানিটির মোট দায় সম্পদমূল্যের চেয়ে ৬৪ লাখ টাকা বেশি। আর এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই কোম্পানিটি দেউলিয়ায় পরিণত হবে।
সমতা লেদার : চামড়া খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি সমতা লেদারের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১ কোটি ৩ লাখ ২০ হাজার শেয়ারের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ৫০.০০ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কছে রয়েছে ১৪.২৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৩৫.৭৬ শতাংশ শেয়ার।
শ্যামপুর সুগার : চামড়া খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি শ্যামপুর সুগার অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকা। অডিটরের মতে, প্রতি বছর কোম্পানিটির দায়, ঋণ ও সুদের পরিমাণ বাড়ছে। কোম্পানিটির মোট ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে সরকারি বিনিয়োগ রয়েছে ৫২.৬০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৭.৪০ শতাংশ শেয়ার।
ঝিলবাংলা : খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ঝিলবাংলার অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি টাকা। এর পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ১৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ৬০ লাখ শেয়ারের মধ্যে সরকারের কাছে রয়েছে ৫১.৫০ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কছে রয়েছে ০.৩৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৮.১২ শতাংশ শেয়ার।
ইমাম বাটন: ইমাম বাটনের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান। নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ইমাম বাটন সম্পর্কে বলা হয়, চলমান সংকট কাটাতে না পারলে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটির কার্যক্রম ভবিষ্যতে ধাক্কা খেতে পারে। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে কোম্পানিটি সম্পর্কে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান আনিসুর রহমান অ্যান্ড কোম্পানির এ পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করা হয়েছে।
ডিএসইতে প্রকাশিত নিরীক্ষকের মতামত অনুযায়ী, কোম্পানিটির উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে। চলতি বছরের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছরে কোম্পানিটি তাদের উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ২১ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছে।
উৎপাদন যন্ত্রপাতির কারিগরি সমস্যা, পণ্যের বাজার চাহিদা ও ক্রমাগত বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণেই মূলত বছরজুড়ে এটির উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় কোম্পানিটি টেকসই করতে হলে এটির উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবহার করতে হবে। নিরীক্ষকের হিসাবে কোম্পানিটির বর্তমান পরিচালন ক্ষতি বা লোকসানের পরিমাণ প্রায় এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
কোম্পানিটির অবকাঠামোগত ও পরিচালন সমস্যার সমাধান এবং আর্থিক অবস্থা ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো না হলে ভবিষ্যতে এটির চলমান কার্যক্রম ধাক্কা খেতে বা অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে।
নিরীক্ষকের এসব পর্যবেক্ষণের বিষয়ে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে একাধিকবার ফোনে ও খুদে বার্তায় যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
চট্টগ্রামভিত্তিক বোতাম উৎপাদনকারী এ কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১১ সাল থেকে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দেয়নি। এ কারণে নিয়ম অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটিকে দুর্বল মৌলভিত্তির ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করেছে।
সাত কোটি ৭০ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সংখ্যা ৭৭ লাখ। যার মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩৫ শতাংশ শেয়ার।
জুট স্পিনার্স: জুট স্পিনার্সের কোম্পানির ভবিষ্যত কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে এর নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে পুঞ্জীভূত লোকসান বেড়ে যাওয়ায় এ মতামত দিয়েছে নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড কোম্পানি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরে জুট স্পিনার্সের নিট লোকসান হয়েছে ৭ কোটি ১৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬৯ টাকা।
এর সঙ্গে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৬৩ টাকা।
এত বড় লোকসান নিয়ে ভবিষ্যতে কোম্পানিটির এগিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে বেশকিছু অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান।
নিরীক্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, জুট স্পিনার্স বাংলাদেশ লেবার ল ২০০৬-এর সেকশন ২৩৪ (বি) পরিপালন করেনি। বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোম্পানিটি শ্রমিকদের অংশগ্রহণমূলক মুনাফা তহবিলে (ডবি¬উপিপিএফ) কোনো সুদ প্রদান করেনি। অন্যদিকে পরিচালকদের ২ কোটি ৭৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬ টাকা প্রদান করলেও এ-সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র প্রদান করতে পারেনি।
এর বাইরে কোম্পানির একজন পরিচালককে সুদ বাবদ ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা প্রদান করলেও তার এআইটি (অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স) কাটেনি, যাতে ভবিষ্যতে কোম্পানিটিকে জরিমানা গুনতে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, লোকসানের কারণে ২০১৬ হিসাব বছরে কোনো লভ্যাংশ সুপারিশ করেনি জুট স্পিনার্সের পরিচালনা পর্ষদ। গেল হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪২ টাকা ১০ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ১৯ টাকা ৬৯ পয়সা।
সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য এজেন্ডা অনুমোদনের জন্য আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে (জেডিপিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করবে তারা।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি ১০ টাকা ১৭ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে জুট স্পিনার্স। যেখানে আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট দায় ১৫৭ টাকা ৬১ পয়সা।
১৯৮৪ সালে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৩ কোটি ৫০ লাখ ও পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুসারে এর পুঞ্জীভূত দায় ১৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জবাবদিহিতার অভাবে কোম্পানিগুলো দীর্ঘ সময় ধরে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। একে ‘দিনেদুপুরে ডাকাতি’ বলেও অভিহিত করেছেন তারা। যে সব কোম্পানি নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয় না এবং যেগুলোর উৎপাদন বন্ধ, সেগুলো ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করে।
নিয়মানুযায়ী সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে না পারলে ওই কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেয়া হয়। শুধু তা-ই নয় ওইসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণ থেকেও বঞ্চিত হয়।
এমন অনেক কোম্পানি রয়েছে যেগুলো আইপিওর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরের বছর থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে। সঠিকভাবে খোঁজখবর না নিয়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করার অনুমোদন দেয়ার কারণে এসব দুর্বল কোম্পানির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদাসীনতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেছেন, “কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। এমন কোনো আইনও নেই যেখানে কোনো কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকলে ফাইন হবে। অর্থাৎ কথিত আইনের মাধ্যমে বাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে দিনেদুপুরে মানুষের টাকাগুলো ডাকাতি করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান নেয় তাদের তদারকির বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না। তা ছাড়া কোম্পানিগুলোকে বাজারে আসার অনুমোদন দেয়ার আগে তাদের ভিত্তি সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া বিএসইসির দায়িত্ব। আর এতে ভালো কোম্পানি বাজারে আসবে। ফলে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে।’ |
e3a3c3f5-fa49-439d-8dfa-c44e4db93ecc | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের কোম্পানি সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, ১৬ কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৫০ শতাংশ। ডিএসই সূত্রে রোববার এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছে ২৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল ৫০ পয়সা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ১৬ টাকা ৯৮ পয়সা।
এদিকে প্রথম প্রান্তিক শেষে কোম্পানিটির নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ০.২৮ টাকা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ০.১৪ টাকা। |
c8e60a4f-3c8c-4950-92cd-f4c2421430aa | এস. এম. হোসেন, অতিথি লেখক, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আসলে অনেক বিনিয়োগকারীর এই আক্ষেপ যে তারা শেয়ার কিনলেই দাম কমে যায়। তারা বুক ভরা হতাশা নিয়ে কথাগুলো বলেন। কিন্তু আসলে তারা কি করেন? শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার ব্যাপারটি কি সবার ক্ষেত্রে ঘটে নাকি কারো কারো ক্ষেত্রে। আসলে যারা সঠিক দামে শেয়ার কিনতে পারেন না তাদেরই কেনার পর দাম কমে যায়!
তাহলে শেয়ার ব্যবসায় সফলতা লাভের অন্তরায় কি? আসলে কিছু ভ্রান্ত ধারণাই সফলতার পেছনে পথ আগলে রাখে। কিছু বিষয় আজকে তুলে ধরব বিনিয়োগকারীরা এ বিষয়গুলো যদি মনে রাখনে তাহলে সফলতা লাভের পথে এগিয়ে যাবেন।
সকল পরিস্থিতিতে একই কৌশলকে বেদবাক্য মনে করা!
‘শেয়ারের সংখ্যা কম হলে দর বৃদ্ধি পাবে, বেশি হওয়ার কারণে দাম বাড়বে না, এজিএম এর সময় এসেছে তাই দাম বাড়বে। পঁচা শেয়ার বা ব্যবসায়িক অবস্থা যত বেশি খারাপ হওয়ার খবর প্রকাশিত হবে শেয়ারের দর তত বেশি বৃদ্ধি পাবে, বিক্রী না করে ধরে রাখলেই লাভ পাওয়া যাবে’- এ ধরনের বহুবিধ ধারণার কোনো একটিকে সকল সময়ের সকল পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর হ্রাস বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান বা একমাত্র কারণ বা বিবেচ্য বিষয় মনে করে অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকেন।
প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো একক নির্দিষ্ট কারণ নেই যার ফলে সব সময়ে সব পরিস্থিতিতে যে কোনো শেয়ারের দর তাৎক্ষণিকভাবে হ্রাস বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে থাকে। অবশ্য এ যুক্তির কিছু বিরল ব্যতিক্রমও রয়েছে। এ অবস্থায় কোনো এক বিশেষ সময়ে বিশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনাপূর্বক ট্রেন্ড বা ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণের আলোকে শেয়ার কেনা বেচা করা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন।
গড় করার ভ্রান্ত ধারণা
গড় করার ভ্রান্ত ধারণা শেয়ার বাজারে বহুল প্রচলিত। আপনি গড় করার জন্য যে দামে একটি শেয়ার ক্রয় করছেন ঐ কোম্পানির শেয়ারের দর যদি পরবর্তীতে আরও পড়ে যায় তাহলে বেশি দামে ক্রয় করে গড় করার অর্থ কি আর্থিক ক্ষতির সম্মখীন হওয়া নয়? একটি বিশেষ সময়ে ঐ শেয়ারটির সর্বনিম্ন বাজার দর কত হওয়া উচিত তা বিশ্লেষণে যদি আপনি দক্ষ হন তাহলেই গড় করার জন্য বিশেষ দরে ঐ শেয়ারটি ক্রয় করা যেতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে গড় করার জন্য আপনি যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছেন, অন্য কোনো শেয়ারে ঐ পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে যদি আরও বেশি প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে গড় করার ধারণা বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সম্ভাবনাময় শেয়ারটিতে বিনিয়োগ করাই উত্তম। এভাবে ঝুঁকির মাত্রাকেও কমানো যায়। অবশ্য সুচিন্তিত বিশ্লেষণ ভিত্তিক গড় করার কৌশলটি শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ কৌশল, বিশেষভাবে চাঙ্গা বাজারে ট্রেন্ড বিশ্লেষণভিত্তিক কেনা বেচার ক্ষেত্রে।
তাৎক্ষণিকভাবে ভুল সংশোধন না করা
১৯৯৬ ও ২০১০ সালের সেই অনাকাঙ্খিত এবং অস্বাভাবিক শেয়ারের দর বৃদ্ধির ঘটনা চিন্তা করুন। এক ব্যক্তি তার সারা জীবনের সঞ্চয় ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে ২০১০ সালের জানুয়ারী মাসে শেয়ারবাজারে ঢুকেছিলেন এবং এর পরপরই শেয়ার বাজারে ধস নামে। পড়তি বাজারের শুরুতে লাখ তিনেক টাকা ক্ষতি স্বীকার করে নিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে তিনি বের হয়ে আসতে পারতেন।
কিন্তু আসেননি। ফলাফল তার একাউন্টে এখন আছে সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো। কিন্তু তিনি যদি ধ্বসের শুরুতেই তাৎক্ষণিক ভুল সংশোধন করে শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে আসতেন তাহলে পরবর্তীতে তিনি ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করে তিন লাখ টাকার লোকসান পুষিয়ে নিতে পারতেন। ‘সব সময় কেনা বেচা হয় না এমন শেয়ার ক্রয় না করার ভ্রান্ত ধারনা’
সব সময় কেনা বেচা হয় না এমন শেয়ার না কেনাই ভালো এটা একটি বিজ্ঞজনোচিত পরামর্শ। তবে এ ধারণার ভুল ব্যাখ্যা করে মাত্র ২/১টি কোম্পানির শেয়ার কেনা বেচাতে সীমাবদ্ধ থাকা সমীচীন নয়। ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জে প্রতি ট্রেডিং দিবসেই নিয়মিতভাবে শতাধিক কোম্পানির শেয়ার কেনা বেচা হয়।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা কম থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম ষ্টক এক্সচেঞ্জে নিয়মিতভাবে লেনদেন হওয়া শেয়ারের সংখ্যাও নগণ্য নয়। তাই সর্বাধিক কেনা বেচা হয় এ ধরনের অতি সীমিত সংখ্যক শেয়ার কেনা বেচা করতে হবে এমন যুক্তির কোনো ভিত্তি নেই।
একটি বিশেষ কোম্পানির কী পরিমাণ শেয়ার নিয়মিতভাবে বেচা-কেনা হয় তার ভিত্তিতে ঐ কোম্পানির কতটি শেয়ার ক্রয় করা সঙ্গত তাই এক্ষেত্রে মূল বিবেচ্য বিষয়। এ কৌশল অবলম্বন করে আপনি আপনার বিনিয়োগ বহুমুখীকরণের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত বেশি সংখ্যক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র থেকে লাভ অর্জন করতে পারেন এবং এভাবে ঝুঁকিও হ্রাস করা সম্ভব।
বেশি লেনদেন হয় এমন অতি অল্প সংখ্যক কোম্পানির বাহিরে অতি সস্তায় বেশ কিছু শেয়ার ক্রয় করার সুযোগ প্রায়ই সৃষ্টি হয়, যেখানে বিনিয়োগ করে অনেকে ঝুঁকিমুক্তভাবে অপেক্ষাকৃত বেশি মাত্রায় লাভবান হয়ে থাকেন। অবশ্য একথাও মনে রাখতে হবে যে, একই সঙ্গে প্রচুর সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা ও ম্যানেজ করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। সঠিক দর বিবেচনা না করে কোম্পানি ফান্ডামেন্টালকে একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হিসেবে গণ্য করা
শেয়ার ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন নূন্যতম কোম্পানি ফান্ডামেন্টাল বিবেচনাতে নেয়া প্রয়োজন তেমনি ঝুঁকির মাত্রা কমাতে হলে কোম্পানি ফান্ডামেন্টালকে অবশ্যই যথাযথভাবে বিবেচনা করতে হবে। তবে শেয়ারটির বাজার দর অনেক বেশি কিনা, সঠিক দর কত হওয়া উচিত এ সকল বিষয় বিবেচনা না করেই নামী দামী কোম্পানির শেয়ার মাত্রাতিরিক্ত বেশি দরে ক্রয় করা অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকর।
এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, মূলধনী লাভ, লভ্যাংশ বা অন্যান্য প্রাপ্তির বিষয় বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা প্রয়োজন। প্রতিটি শেয়ার কেনা বেচা করার ক্ষেত্রেই সঠিক দর বিশ্লেষণের বিষয়টি যথাযথভাবে অবশ্যই বিবেচিত হতে হবে।
ফেস ভ্যালু ও কম দাম এবং বেশি দামের ভ্রান্ত ধারণা: এক ব্যক্তি কয়েক লক্ষ টাকা পুঁজির সমুদয় অর্থ নির্দিষ্ট একটি শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন। ঐ কোম্পানিটির উপর এত বেশি আগ্রহ কেন এ প্রশ্নের জবাবে জানা যায়, তার দৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট শেয়ারটির দর কম। তিন চার হাজার টাকা মূল্যের শেয়ারও যেহেতু বাজারে বিক্রী হচ্ছে তাই ৫০ টাকা দরে একটি শেয়ার ক্রয় করা তার যুক্তিতে সস্তাই বটে। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন ধরনের শেয়ারসমূহকে এভাবে তুলনা করার কোন ভিত্তি নেই। বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়:
ফেস ভ্যালু শেয়ারের বাজার দর শেয়ার প্রতি আয় শেয়ার প্রতি সম্পদ লভ্যাংশ
১০০(একশত) টাকা ১০০০ টাকা ১৩০ টাকা ১০০০ টাকা ৯০ টাকা
১০০(একশত) টাকা ৪০০ টাকা ৭০ টাকা ৫৪০ টাকা ৪৫ টাকা
১০০(একশত) টাকা ৫০ টাকা ৩ টাকা ১৫ টাকা ৩ টাকা
উপরের দৃষ্টান্ত থেকে এ বিষয়টি পরিষ্কার যে, উক্ত ১০০০, ৪০০ ও ৫০ টাকার শেয়ারগুলোকে একই পাল্লায় মাপা যায় না। বরং এক্ষেত্রে ফেস ভ্যালু বা সম্পদ বা আয়ের সঙ্গে বাজার দরের আনুপাতিক সম্পর্ক, সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি, বাজার দরের তুলনায় ভবিষ্যৎ প্রাপ্তি, ইত্যাদির তুলনামূলক পর্যালোচনা গুরুত্বপূর্ণ।
বাস্তবে চিরস্থায়ী কম দাম এবং বেশি দাম বলতে কিছু নেই। ব্যবসায়িক সফলতা, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ বিষয়ক সম্ভাবনা/হতাশা ইত্যাদি বিষয়ের আলোকেই বিশেষ পরিস্থিতি বিশেষভাবে বিবেচনার ভিত্তিতে শেয়ারের উচিত দর নির্ধারিত হয়।
কোম্পানির ব্যবসয়িক অবস্থা বা লাভ-ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস বৃদ্ধির প্রতি সবসময় দৃষ্টি না রাখা
দক্ষ শেয়ার ব্যবসায়িদের অনেকে নূন্যতম কোম্পানি ফান্ডামেন্টাল বিবেচনা ব্যতীত কোনো শেয়ার ক্রয় করেন না। বিজ্ঞ ব্যবসায়িগণ কোনো শেয়ারের ব্যবসায়িক ক্ষতির খবরে তাৎক্ষণিকভাবে শেয়ারটি বিক্রি করে দেন। অন্যদিকে টেকসই ও ক্রমবর্ধমান লাভের ইঙ্গিত পেয়ে সেই শেয়ার অপেক্ষাকৃত সস্তায় ক্রয় করে ঝুঁকিমুক্তভাবে প্রচুর লাভ অর্জন করেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ব্যবসায়িক মন্দাবস্থা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনাও বিবেচনা করুন।
দর বৃদ্ধি সব সময়ের জন্য শুভ লক্ষণ নয়
এক সময়ের নামী দামী ব্যবসা সফল কোম্পানিও বর্তমানে লোকসানের সম্মুখীন হতে পারে। কোনো একটি কোম্পানি দীর্ঘস্থায়ী মন্দা কবলিত হয়ে পড়তে পারে। অথচ বর্তমান লোকসানের খবর প্রকাশ হওয়ার পূর্বেই কিছু ব্যক্তি যাদের কাছে প্রচুর শেয়ার রয়েছে তারা সাময়িকভাবে কৃত্রিম চাহিদা সৃষ্টি করে, শেয়ারটির দর বাড়িয়ে তুলতে পারেন কিম্বা অন্য কোনো কারণে শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পেতে পারে।
যে বৃদ্ধি টেকসই হয় না এবং অনেক ব্যবসায়ী এ ধরনের শেয়ার বেশি দামে ক্রয় করে অনেক ক্ষেত্রে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হন। বিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এ ধরণের শেয়ারের দর বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
শুধু একটি বিষয়ের ভিত্তিতে দুটি শেয়ারের তুলনা: একজন শেয়ার ব্যবসায়ীর প্রশ্ন, দুটি কোম্পানি একই পণ্য তৈরি করছে অথচ একটির দর ১১০ টাকা অন্যটির দর ২০ টাকা কেন? মনে করা যাক প্রথম কোম্পানিটি দীর্ঘ দিন যাবত ব্যবসা করছে এবং সন্তোষজনক লভ্যাংশ প্রদানের পরেও ঐ কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ (পুঞ্জীভুত লাভসহ) ৯০ টাকা ও শেয়ার প্রতি আয়ের পরিমাণ ১১ টাকা। দ্বিতীয় কোম্পানিটির ক্ষেত্রে শেয়ার প্রতি সম্পদ ও আয়ের পরিমাণ যথাক্রমে ১৩ টাকা ও ১ টাকা।
যদিও দ্বিতীয় কোম্পানিটির ব্যবসায়িক সম্ভাবনা উজ্জ্বল তথাপিও বর্তমান ব্যবসায়িক অবস্থা, সম্পদ প্রভৃতির প্রেক্ষাপটে দুটি কোম্পানির শেয়ার দরের ভিন্নতার যৌক্তিকতা সহজেই বোঝা যায়। এ ধরনের বহু কারণের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু একক বিষয়ের ভিত্তিতে শেয়ারের দর তুলনা করা ঠিক নয়। অথচ প্রথম কোম্পানিটির শেয়ারের দর ১১০ টাকা দেখে দ্বিতীয় এবং নবাগত কোম্পানিটির শেয়ারের দর সহসা ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে অনুমান করে ঐ শেয়ার উচ্চ মূল্যে ক্রয় করে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ঘটনাও শেয়ার বাজারে দেখা যায়।
লভ্যাংশের ভিত্তিতে শেয়ার ক্রয় করা: লভ্যাংশই শেয়ার ক্রয়ের জন্য একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না। লভ্যাংশ প্রদানের ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা, ব্যবসায়িক অবস্থা, ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পরিবর্তন এ ধরনের বহুবিধ বিষয়ও এক্ষেত্রে বিবেচনা করতে হবে।
সবার জন্য একই কৌশল সঠিক মনে করা: শেয়ার ব্যবসাকে একটি যুদ্ধ ক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা যায়। যুদ্ধে জয়লাভের জন্য যেমন সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে হয় এবং বেশি সংখ্যক সৈন্য অপেক্ষা অল্প সংখ্যক সৈন্যের ক্ষেত্রে ভিন্নতর কৌশল অবলম্বন করতে হয়, শেয়ার ব্যবসাতেও তেমন বিভিন্ন কৌশলে পোর্টফোলিও সাজাতে হয়।
যার অপেক্ষাকৃত বেশি বিনিয়োগযোগ্য মূলধন রয়েছে, যার পক্ষে বিনিয়োগযোগ্য মূলধনের কিছু অংশ থেকে লাভ প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি দিন অপেক্ষা করা সম্ভব, যার পক্ষে কিছু বেশি দামে শেয়ার ক্রয়ের পরেও উক্ত শেয়ারের দর তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রায় হ্রাস পাওয়ার পর সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বেশি পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করে গড় ক্রয় মূল্য হ্রাস করা সম্ভব, শেয়ার দর ওঠানামার ছন্দ অনুসরণ করে ক্রয় করা
শেয়ার বিক্রীযোগ্য হওয়ার পূর্বেই, স্বল্প সময়ে, পূর্বের মজুদ থেকে শেয়ার বিক্রী করে লাভ অর্জন করা সম্ভব, তার কৌশল এবং অতি অল্প পুঁজির, একজন ব্যবসায়ীর কৌশল এক হতে পারে না- এ বিষয়টি অনুধাবনে করতে হবে। |
03c3e870-8eb2-437d-a95f-0ad554148979 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তথ্য প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি বিডিকম অনলাইন লিমিটেডের ২০তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার রাজধানীর ধানমন্ডির এ্এমএম কনভেনশন সেন্টরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত অক্টোবরে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ চলতি বছরের (জুন, ১৬) জন্য ১২শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। আজকের সভায় এ লভ্যাংশ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিডিকম অনলাইন লিমিটেড প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ১৬) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয় ৪২ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৪৩ পয়সা। এসময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ১৫ টাকা ৪৮ পয়সা।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হক সিদ্দিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস.এম গোলাম ফারুক আলমগীর, স্বতন্ত্র পরিচালক দাস দেবা প্রসাদ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম চৌধুরী, কোম্পানি সচিব এ.কে.এম কুতুব উদ্দিন প্রমুখ। |
9ddee751-5f0c-472e-8fbf-0f04418b3834 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের ৬৪ জেলায় উন্নয়ন মেলা আয়োজন করার উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। মেলায় সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। মূলত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশের প্রেক্ষিতে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশের প্রেক্ষিতে উন্নয়ন মেলা আয়োজন করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের সঙ্গে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক জরুরী বৈঠক করেছে।
বৈঠকে উন্নয়ন মেলা আয়োজনের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে সফলভাবে মেলায় অংশগ্রহণের জন্য উদ্যোগ নিতে মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)।
বিএসইসির সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের নেতৃত্বে উন্নয়ন মেলায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), সিকিউরিটিজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহন করবে। ইতিমধ্যেই বিএসইসির পক্ষ থেকে মেলায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের যে ২৮ জেলায় ব্রোকারেজ হাউজসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শাখা রয়েছে সেসব জেলায় ৩ দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা পর্যায়ে উন্নয়ন মেলা তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসককে। এজন্য ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ২৮ জেলার জেলা প্রশাসকের কাছে উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণের বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বাকী ৩৬ জেলায়ও পরবর্তীতে ওই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে বিএসইসির দ্বায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে দেশের ৬৪ জেলায় উন্নয়ন মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। প্রাথমিকভাবে যে সকল জেলায় সিকিউরিটিজ হাউজের শাখা রয়েছে সে সকল জেলার উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করবে বিএসইসি।
ইতিমধ্যেই মেলায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নেয়াও শুরু হয়েছে। মেলায় বিএসইসিসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের (ডিএসই, সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক ও সিকিউরিটিজ হাউজ) সমন্বিত স্টল থাকবে। |
851eaa24-43b0-4474-bfaf-2966068ed461 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের অনুমোদন পাওয়া বস্ত্র খাতের কোম্পানি প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেডের আইপিও লটারির ড্র’য়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ১০ জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট, রমনায় আবেদনকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দের জন্য এ ড্র অনুষ্ঠিত হবে।
কোম্পানি সচিব মো: সোরহাব আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আজ একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্যাসিফিক ডেনিমস এর আইপিও লটারির ড্রয়ের তারিখ ১২ জানুয়ারি উল্লেখ করায় বিনিয়োগকারীদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এ বিভ্রান্তি দূর করে কোম্পানি সচিব জানান, ১২ জানুয়ারি নয় ১০ জানুয়ারিই হবে প্যাসিফিক ডেনিমসের আইপিও লটারির ড্র।
এর আগে ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কোম্পানির আইপিওতে সকল প্রকার বিনিয়োগকারীরা আবেদন করেন। আর গত ১০ নভেম্বর তারিখে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি প্যাসিফিক ডেনিমসের অনুকূলে এ কনসেন্ট লেটার বা সম্মতি পত্র ইস্যু করেছে।
জানা যায়, আইপিও’র মাধ্যমে কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে ৭ কোটি ৫০ লাখ সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ৭৫ কোটি টাকা উত্তোলন করার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। আইপিওর অর্থে ব্যবসা সম্প্রসারণ, যন্ত্রপাতি ক্রয়, অবকাঠামো উন্নয়ন, ঋণ পরিশোধ ও আইপিও খাতে ব্যয় করবে কোম্পানিটি।
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ সমাপ্ত আর্থিক বছরের নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২.৬৩ টাকা ও শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২২.৫৯ টাকা। এর ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে এএফসি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
উল্লেখ্য, গত ১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৫৮২ তম কমিশন সভায় প্যাসিফিক ডেনিমসের ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আইপিও অনুমোদন করা হলেও অনেকদিন পর কোম্পানিটিকে আইপিও আবেদন শুরু করতে সম্মতিপত্র দেয় বিএসইসি।
মূলত, আর্থিক আইন পরিপালনের জন্য পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর আর্থিক বছর ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের বদলে জুন ক্লোজিংয়ে পরিবর্তনের কারণে প্যাসিফিক ডেনিমসের ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করার প্রয়োজনীয় দেখা দেয়। আর কোম্পানিটি বিএসইসির কাছে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত আর্থিক প্রতিবেদন দাখিল করার প্রেক্ষিতে সেটি যাচাই-বাছাই শেষে কোম্পানিটিকে সম্মতিপত্র প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল বিএসইসি। |
9e81110e-c984-4d80-a83c-acdd901f44db | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ডিএসইতে আজ ব্লক মার্কেটে ১০ কোম্পানির ১৪ কোটি টাকার বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, আরএসআরএম স্টীল, সাইফ পাওয়ার টেক, শাশা ডেনিমস, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিক হোটেল এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ব্লক মার্কেটে গতকাল আলোচিত কোম্পানিগুলোর মোট ১৭ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৮টি শেয়ার ১৬বার হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ১৪ কোটি ১৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা।
এর মধ্যে- ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের ১৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের ৬২ লাখ ১০ হাজার টাকা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ১০ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা, আরএসআরএম স্টীলের এক কোটি ৫২ লাখ ৭০ হাজার টাকা,
সাইফ পাওয়ার টেকের ১০ লাখ ৯০ হাজার টাকা, শাশা ডেনিমের ১৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৩৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ইউনিক হোটেলের ২৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকা এবং ইউনাটেড এয়ারওয়েজের ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। |
2912f597-c739-4f5d-b3ff-30ed6133fbe4 | এইচ এম তারেকুজ্জামান ও আরিফুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে সুবাতাস বইতে শুরু করছেন। দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতের শেয়ারে দর বাড়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তাছাড়া আজ সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে বাজারে ব্যাংক খাতের শেয়ারের আধিপত্য বিস্তার ছিল। ঘুরে ফিরে ব্যাংক খাতের শেয়ার টপটেনে অবস্থান ছিল।
তেমনি ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের প্রতি আস্থা ফিরতে শুরু করেছে পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীদের। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি যারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তারা নতুন করে ব্যাংক খাতের শেয়ারের দিকে ঝুঁকছেন।
এছাড়া দীর্ঘদিন পর বাড়ছে ব্যাংকিং খাতের শেয়ার দর। সাধারনত তিন কারনে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। গতকাল পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা এমনই মনোভাব ব্যক্ত করেছেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের প্রতিবেদকের কাছে।
তারা বলেন, পুঁজিবাজারের গতি ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকের খাতের শেয়ারের প্রতি কদর বাড়ছে। সামনে আরো বাড়বে। কারণ অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর কাছে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের প্রতি রয়েছে ব্যাপক আস্থা। যদিও পুঁজিবাজারের মন্দা সময়ে এ খাতের প্রতি আস্থা কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে আবার এ খাতের শেয়ারের প্রতি ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা।
বাজার বিশ্লেষকরা জানান, পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কারণ পুঁজিবাজার উন্নয়নের স্বাভাবিক গতি বাড়াতে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। এ খাতের শেয়ার এখনো কিছুটা বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত। পাশাপাশি রয়েছে বিনিয়োগে সর্বোচ্চ আস্থাভাজন।
তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাংকিং খাতের শেয়ারের গুরুত্ব অপরিসীম। তারা আরো জানান, ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন এবং শেয়ার সংখ্যা বেশি। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এ খাতকে বিনিয়োগ প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। আবার কোম্পানিগুলোর লেনদেন ও দর ওঠানামা অনেকটাই স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। অন্যান্য কোম্পানির মতো ঢালাওভাবে এ খাতের শেয়ার দর উত্থান-পতন হয় না। কয়েক বছর ব্যবসায়িক মন্দার কারণে বেশি মুনাফা দিতে পারেনি এ খাতের কোম্পানিগুলো। তারপরও অন্যান্য খাতের চেয়ে ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। পুঁজিবাজারের পতনের সময় বিনিয়োগকারীরা এ খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। ফলে এ খাতে বাজার সেলপ্রেসার বেশি হয়েছিল। পাশাপাশি প্রফিট টেক করেছে, যার প্রভাব পড়েছে পুরো খাতের ওপর। কিন্তু বর্তমানে পুঁজিবাজার স্বাভাবিক গতিতে চলছে। বাজার একটানা যেমন বাড়ছে না, তেমনি বাজার একটানা দরপতন ঘটছে না। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যাংক খাতের শেয়ার ধারণ বা বিনিয়োগ করতে হবে। তাই এ খাতে বিনিয়োগ বাড়লে পুরনো লেনদেনের চমকে ফিরে আসবে বলে জানান তারা।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বছর শেষে সোমবার পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ৩০ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৮ টি কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ছে। এছাড়া অপরিবর্তিত ছিল ২ কোম্পানির শেয়ারের দর। শতাংশের হিসাবে যার পরিমাণ ৯৫ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টদের মতে, এই বছর ব্যাংকের শেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রধান কারণ ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সমন্বয় ও অধিকাংশ ব্যাংক কোম্পানি মুনাফায় ফেরা। এই দুই কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এই খাতের শেয়ারের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। এবছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া সময় ও বিশেষ সুযোগে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আইনী সীমায় নামিয়ে আনে ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
এতে ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে আরও ১৫শ’ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়। সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ওই ব্যাংকের আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, বিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন আর্নিংসের ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। ১৩টি ব্যাংকের এ সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ সুযোগের কারণে সবকটি ব্যাংক ২১ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের বিনিয়োগ সমন্বয় করে। এছাড়া আগের তুলনায় লাভে ফিরেছে অধিকাংশ ব্যাংক। যাতে এই খাতের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।
বছরের সার্বিক চিত্রে দেখা যায়, বছরজুড়ে অল্প অল্প হলেও বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দর বাড়ছে। ফলে এই খাতে আবারো সুদিন ফিরছে এমন মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত চলতি বছর ব্যাংকিং খাতের কোম্পানিগুলো মুনাফায় রয়েছে যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে পুঁজিবাজারে। ফলে বাড়ছে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর শেয়ারের দর।
এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং খাতের কিছু সমস্যা ছিল তবে ব্যাংকগুলো তাদের বিনিয়োগ সমন্বয় করায় এখন সে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আশা করছি বিনিয়োগকারীদের এখন এই শেয়ারের প্রতি আগ্রহ বাড়বে। তবে এই ক্ষেত্রে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের। তারা যদি এসব শেয়ারের দিকে নজর দেন তবেই খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, এ বছর বেশিরভাগ ব্যাংক মুনাফায় ফিরেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যাংকগুলোর আমানত বাবদ সুদ কমা। গত বছরের তুলনায় এ বছরের আমানতের সুদ বাবদ ব্যয় কমেছে। ফলে ব্যাংকের মুনাফা বাড়ছে। যার প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের এক পরিচালক জানান, ব্যাংক খাতের শেয়ার সংখ্যা বেশি। পুঁজিবাজারে সব ব্যাংকের শেয়ার দর সামান্য বাড়লে পুরো বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। অন্য খাতের তুলনায় বছরজুড়ে এ খাতের শেয়ারের প্রতি তাদের চাহিদা বেশি দেখা গেছে। সেই সঙ্গে এসব শেয়ারের দরও ছিল স্থিতিশীল পর্যায়ে। বছর শেষেও যার প্রতিফলন দেখা গেছে।
ব্যাংকগুলোর মুনাফার দিকে তাকালে দেখা যায় চলতি বছরের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ ব্যাংকের নিট মুনাফা ও শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রবৃদ্ধি ও খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিল বেশি হওয়ার কারণে মুনাফা বেড়েছে।
ব্যাংকগুলোর প্রকাশিত অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বছরের প্রথম ছয় মাসে ৩০ ব্যাংকের মধ্যে ২০টির নিট মুনাফা ও ইপিএস বেড়েছে। কমেছে ৯টির। একটির অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে ১৫ ব্যাংকের নিট মুনাফা ও ইপিএস বেড়েছে। কমেছে ১৪টির। একটির ইপিএস অপরিবর্তিত রয়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকের হিসাব অনুযায়ী যেসব ব্যাংকের নিট মুনাফা ও ইপিএস বেড়েছে সেগুলো হলো সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।
এক্ষেত্রে ইপিএস অপরিবর্তিত রয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংকের। বিপরীতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় নিট মুনাফা ও ইপিএস কমেছে প্রাইম ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, পূবালী, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, ব্যাংক এশিয়া, আল-আরাফাহ্, ঢাকা, ইসলামী, সাউথইস্ট, ওয়ান, শাহজালাল, উত্তরা, এনসিসি এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক।
প্রসঙ্গত, ব্যাংকিং খাত বলা হয়ে থাকে পুঁজিবাজারের সব চেয়ে শক্তিশালী খাত। এক সময় পুঁজিবাজারে মোট লেনদেনের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ থাকত এই খাতের অবদান। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পরিস্থিতি বদলে গেছে। লেনদেনে ব্যাংকের অবদান নেমে এসেছে ১০ শতাংশের নিচে। ব্যাংকিং খাতে হলমার্কসহ নানা অনিয়ম সর্বোপরি রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনায় সাধারণ গ্রাহকের যেমন ব্যাংকের প্রতি আস্থা কমেছে। তবে এই পরিস্থিতি অনেকটা কেটে গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। |
95072b6c-0714-4728-90f6-a3c439c7508d | আমিনুল ইসলাম ও ফাতিমা জাহান, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সেবা ও আবাসন খাতের কোম্পানি পেনিনসুলা হোটেলের শেয়ারের দর কোন কারন ছাড়াই টানা বাড়ছে। ফলে এ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। কোন কারন ছাড়াই তিন কার্যদিবস দরে এ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৩২.৫০ শতাংশ, যা টাকার হিসেবে ৭.৮০ টাকা। এর দর বাড়ার কোন যুক্তিকতা নেই বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা। এদিকে অস্বাভাবিক দর বাড়ার বিষয়টি নজর পড়েছে বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টদের।
যে কারনে পেনিনসুলা হোটেলের এর কাছে শেয়ার দর বাড়ার কারন ও জানতে চায় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ডিএসই কর্তৃপক্ষের চিঠির জবাবে কোম্পানি জানিয়েছে, এ দরবৃদ্ধির নেপথ্যে কোনো অপ্রকাশিত মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই। তবে প্রশ্ন হলো কি কারনে দর বাড়ছে পেনিনসুলা হোটেলের এর কারন খুঁজতে বের হয়েছেন দেশ প্রতিক্ষণের অনুসন্ধানী টিম।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পেনিনসুলা হোটেলের শেয়ার দর বাড়ার কোন কারন নেই। একটি চক্র বাজারে নানা গুজব ছড়িয়ে শেয়ারের দর বাড়াচ্ছে। এ গুজব চক্রটি বাজারে গুজব ছড়াচ্ছে যে এ শেয়ারের দর সামনে আরো বাড়বে। আজ ডিএসই মতিঝিল ভবনে একাধিক সিকিউরিটিজ হাউস ঘুরে বিনিয়োগকারীদের বলতে শোনা যায় পেনিনসুলা হোটেলের শেয়ারের দর আরো বাড়বে।
তবে কি কারনে বাড়বে তারা বলতে পারছেন না। তারাও গুজবে কান দিয়ে শেয়ার কিনছেন। তবে কোম্পানিটির শেয়ারের দরবৃদ্ধির দৌরাতেœ গতিবিধি নিয়ে সন্দেহ পোশন করছেন বিনিয়োগকারীরা। কেউ বলতে পারছেন না যে এই শেয়ারের দরবৃদ্ধির পেছনে কোনো মুল্য সংবেদনশীল তথ্য রয়েছে কিনা।
এ বিষয় জানতে চাইলে পুঁজিবাজার তদন্ত কমিটির প্রধান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজারে কিছু কোম্পানির শেয়ার নিয়ে জুয়া চলছে। একটি শক্তিশালী চক্রের সাথে কোম্পানির নিজস্ব লোকেরা কারসাজি করছে। এ বিষয় ভালো করে তদন্ত করলে সব কিছু বেরিয়ে আসবে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৩ অক্টোবর কোম্পানিটির শেয়ার দর অস্বাভাবিক বাড়ার কারন জানতে চেয়ে নোটিশ দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর পেক্ষিতে ১৬ ই অক্টোবর কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, এর দরবৃদ্ধির পেছনে অপ্রকাশিত মুল্যসংবেদনশীল কোন তথ্য নেই। এদিকে গত তিন কার্যদিবসে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৩২.৫০ শতাংশ বা ৭.৮০ টাকা। অথাৎ আলোচ্য সময়ে গড়ে প্রতিদিন দর বেড়েছে ১০ শতাংশের ও বেশি। যার কোন যুক্তিকতা খুঁেজ পাচ্ছে না বাজার সংশ্লিষ্টসহ বিনিয়োগকারীরা।
গত দু’ বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে মুনাফাও কমলেও হঠাৎ প্রথম প্রান্তিকে মুনাফ বাড়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রথম প্রান্তিকে প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ার প্রতি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ১২ পয়সা বেড়েছে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কর্তৃক কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা উচিত বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫০ পয়সা। যা আগের বছরের একই সময় ছিল ৩৮ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আয় বেড়েছে ১২ পয়সা।
২১ ডিসেম্বর কোম্পানির শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ২৪ টাকা। সর্বশেষে কার্যদিবসে অর্থাৎ গতকাল পর্যন্ত শেয়ারটির দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ টাকা ৮০ পয়সা। আজ একদিনেই শেয়ারটির দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ বা ২.৬০ পয়সা এবং সর্বশেষ লেনদেন হয় ৩১ টাকা ৬০১ পয়সা।
এদিন কোম্পানিটির মোট ৬০ লাখ ৬১ হাজার ৭১৪ টি শেয়ার ২ হাজার ৫৬৪ বার হাতবদল হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৩১ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ গত এক বছরে শেয়ারটির দর বেড়েছে দ্বিগুনেরও বেশি। তবে সেই তুলনায় বাড়েনি কোম্পানিটির মুনাফা ও শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস)।
সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুয়ারী বর্তমানে কোম্পানির মুল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশি দাঁড়িয়েছে ৩৭.৪৬। যা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপুর্ণ বলেই বিবেচনা করা হয়। কারন বিশ্লেষকরা মনে করেন কোন কোম্পানির পিই রেশিও ১৫ থেকে ২০ এর উপরে গেলেই তাতে বিনিয়োগ ঝুঁকিপুর্ণ। তবে বিষয়টি সম্পর্কে ডিএসই একবার নোটিশ দিলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সে বিষয়ে কোনো খোঁজ নেয়নি। আর এ অবস্থায় দর বাড়তে থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের সংশয় দেখা দিয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, কিছু কোম্পানির শেয়ারদর হঠাৎ বাড়তে থাকে। এ ব্যাপারে ডিএসইর পক্ষ থেকে দায়সারা নোটিশ দেওয়া হয়। যাতে বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়ার কারণ অনুসন্ধান করা হয় না। ফলে দর বাড়ার প্রকৃত কারণও উদঘাটন হয় না।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত, যেসব কোম্পানির শেয়ারদর হঠাৎ বাড়ে, তদন্তের মাধ্যমে তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা। এতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ ঝুঁকি কমার পাশাপাশি বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন তারা। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদেরও বুঝে-শুনে আর্থিক ভিত্তি দেখে শেয়ারে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন তারা।
এ সম্পর্কে মশিউর সিকিউরিটিজের জিএম এ এল ভট্টাচার্য টুটুল দেশ প্রতিক্ষণ বলেন, ‘যেসব কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে, সেগুলোকে ডিএসই থেকে জানতে চাওয়া হয় যে, আপনাদের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে কি না। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো জানায় তাদের কাছে মূল্য সংবেদনশীল কোন তথ্য নেই।
যদি পরবর্তী সময়ে জানা যায় ওই কোম্পানির দর বাড়ার বিষয়ে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে এবং তা কিছু লোক জেনে লাভবান হয়েছে, তখন ডিএসই তদন্ত করতে পারে। অপরদিকে কোনো কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বাড়লে বিএসইসি যে কোনো মুহূর্তে তদন্ত করতে পারে’ বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগের আগে তাদের আর্থিক প্রতিবেদন, ইতিহাস পর্যালোচনা করে নেওয়া উচিত।’ হুজুগের কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ না করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। এদিকে পেনিনসুলা হোটেল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আগে ধারাবাহিক ভাবে মুনাফা বাড়লেও তালিকাভুক্তির পর বছর থেকে ধারাবহিক ভাবে বড় অঙ্কের মুনাফা কমেছে।
তালিকাভুক্তির বছর ২০১৪ সালে কোম্পানিটির মুনাফা ছিল ১৮ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, পরের বছর যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে যার পরিমান আরো কমে দাঁড়ায় ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
অর্থাৎ তিন বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ৪৫. ১৮ শতাংশ বা ১৮ কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। নভভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩৮. ৩২ শতাংশ শেয়ার, এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ১৬.৬৫ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ০.২০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৪৪.৪৩ শতাংশ। |
ab15b1df-716d-45bf-9314-5dda5b7d80c6 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকাধ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বিনিয়োগকারীরা পুঁজি নিয়ে দু:চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। এ কোম্পানির শেয়ারের দর দীর্ঘদিন ধরে বাড়ছে না। তাছাড়া চাঙ্গাবাজারে তিতাস গ্যাসের শেয়ারে কোন প্রভাব নেই। ফলে এ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা দু:চিন্তায় রয়েছেন। তাছাড়া কোম্পানিটির ব্যবসার পরিধি বাড়লেও মুনাফা না বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
সম্প্রতি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির চেয়ারম্যান জ্বালানি সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, বেশি মুনাফা পেতে চাইলে বাসাবাড়ির গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে তা শিল্প খাতের জন্য সরবরাহ করা উচিত। এতে মুনাফা বেশি হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পেট্রোবাংলার তথ্য মতে এখন বাসাবাড়িতে মোট গ্যাসের ২০ শতাংশ ব্যবহার হয়; যা বিক্রি করে আসে ১ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। এটা যদি পাওয়ার সেক্টরে সরবরাহ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি তবে এই গ্যাস বিক্রি করে আসবে ৮০ হাজার কোটি টাকা। তাই বেশি মুনাফা চাইলে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া উচিত।”
নাজিমউদ্দীন চৌধুরী বলেন, ঢাকা শহরের নিচ দিয়ে যেভাবে গ্যাসের লাইন গেছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় তাহলে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পৃথিবীর খুব কম দেশেই ন্যাচারাল গ্যাস ব্যবহারে রান্না করা হয়। এখান থেকে বেরিয়ে আসছে সবাই। তিনি বলেন, গ্যাসের মার্জিন পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য আমরা জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিইআরসির কাছে আবেদন করেছি। আমরা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করছি।
তবে গত পাঁচ বছরে কোম্পানির গ্যাস বিক্রি প্রায় ৫৯ শতাংশ বাড়লেও এ সময়ের ব্যবধানে মুনাফা উল্টো ১৮ শতাংশ কমেছে। এ জন্য মূলত সরকার কর্তৃক বিতরণ চার্জ কমিয়ে দেয়াকে দায়ী করছে কোম্পানিটি। যদিও এর পেছনে কোম্পানির পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি ও সুদ আয় কমে যাওয়াকেও দায়ী করছেন অনেকে।
তিতাসের সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি, সার কারখানা, শিল্প, ক্যাপটিভ পাওয়ার, সিএনজি ও আবাসিক-অনাবাসিকসহ সব খাতে গত পাঁচ বছরে তিতাসের গ্যাস বিতরণ ও রেভিনিউ বেড়েছে।
২০১১-১২ হিসাব বছরে মোট রেভিনিউ ছিল ৭ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে তা ১১ হাজার ৩১৭ কোটিতে উন্নীত হয়। এর আগে তা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ২০১২-১৩ হিসাব বছরে ৭ হাজার ৪৬২ কোটি, ২০১৩-১৪ হিসাব বছরে ৭ হাজার ৭৭৩ কোটি ও ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে ৮ হাজার ১৬০ কোটি টাকা হয়। পাঁচ বছরে কোম্পনিটির রেভিনিউ ধারাবাহিক ও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও নানা কারণে মুনাফা উল্টো কমে গেছে।
২০১১-১২ হিসাব বছরে তিতাসের কর-পরবর্তী মুনাফা ছিল ৮৯০ কোটি ১২ লাখ টাকা, যা ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে ৭২৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকায় নেমে গেছে। মূলত কোম্পানির পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি, সুদ বাবদ আয় কমে যাওয়া ও সরকার কর্তৃক গ্যাস বিতরণ চার্জের ফি কমিয়ে দেয়ায় মুনাফার ওপর এ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে কোম্পানিটির।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, তিতাসের আয়ের ৬০ শতাংশ আসে বিতরণ চার্জ থেকে। ২০১৫ সালের আগস্টে ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য ও তিতাস গ্যাসের বিতরণ চার্জ পুনর্র্নিধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। একই সঙ্গে তিতাসকে বিতরণ চার্জ বাবদ প্রাপ্ত আয় আলাদা হিসাবে নেয়ার নির্দেশনা দেয় বিইআরসি। বিতরণ চার্জ থেকে প্রাপ্ত আয় কোম্পানির আয়-ব্যয়ের হিসাবে না নেয়ার নির্দেশ দেয় দেশের জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
ফলে কোম্পানির রাজস্বের প্রধান উত্সই আলাদা হিসাবে চলে যায়, যার প্রভাব পড়ে নিট মুনাফায়। সর্বশেষ হিসাব বছরেও এই খাতে বড় ধরনের মুনাফা হারায় কোম্পানিটি।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে আগের বছরের তুলনায় তিতাসের পরিচালন ব্যয় প্রায় ৫০ কোটি টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে এ সময়ে ব্যাংকে আমানতের বিপরীতে সুদ আয় কমেছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। এর ওপর যোগ হয় বিতরণ চার্জ কমার প্রভাব।
উল্লেখ্য, আগের হিসাবে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রিতে তিতাস গ্যাসের আয় হতো ৯৭ পয়সা। এর মধ্যে ৫৫ পয়সা আসত বিতরণ চার্জ থেকে। আর গ্যাস ট্রান্সমিশন চার্জ, সুদ ও বিবিধ আয় থেকে আসত বাকি ৪২ পয়সা। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর জারি করা আদেশে বিতরণ চার্জ ৫৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ২৯ পয়সায় নামিয়ে দেয় বিইআরসি।
কমানোর যুক্তি হিসেবে তারা জানায়, তিতাস গ্যাসের বিতরণ রাজস্ব চাহিদা মেটাতে প্রতি ঘনমিটারে গড়ে ২৯ পয়সা প্রয়োজন হয়। আর বিদ্যমান অন্যান্য আয় (গ্যাস ট্রান্সমিশন চার্জ, সুদ ও বিবিধ আয়) বাবদ ৪২ পয়সা প্রাপ্তি বিবেচনায় তিতাস গ্যাস কোম্পানির বিতরণ চার্জ বাবদ আর কোনো আয়ের প্রয়োজনই হয় না।
তবে বিষয়টি ভিন্ন মত দিয়ে চার্জ পুনর্র্নিধারণে বিইআরসির কাছে একটি আবেদনপত্র দিয়েছে তিতাস। পরবর্তীতে এক বছরের বেশি সময়ে এ বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষ থেকে উদ্যোগ দেখা গেলেও বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও মুনাফা কমার ধারাবাহিকতায় ছিল তিতাস। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ১ টাকা ৮ পয়সা ইপিএস দেখিয়েছে কোম্পানিটি, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৫৭ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৩ টাকা ৭৩ পয়সা।
২০০৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় তিতাস গ্যাস। বর্তমানে এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ২ হাজার কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৯৮৯ কোটি ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা। রিজার্ভে আছে ৫ হাজার ২০০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৮ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজার ৮৩১টি; বর্তমানে যার ৭৫ শতাংশ রয়েছে সরকারের হাতে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৩ দশমিক ৬৩, বিদেশী ১ দশমিক ৭৪ এবং বাকি ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বশেষ ৪৮ টাকা ৩০ পয়সায় তিতাস গ্যাসের শেয়ার হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ৫২ টাকা ৯০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ৪১ টাকা ২০ পয়সা। |
62baae6a-840b-481f-bc39-891ca1c202d6 | এ কে এম তারেকুজ্জামান , শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার দর কোন কারন ছাড়াই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তবে এ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়াটা বাজারের জন্য অশনি সংকেত। ২০১০ সালে এমন কিছু কোম্পানির শেয়ারের দর লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছিল। পরে পরিস্থিতি সবারই জানা।
বর্তমানে মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ কোম্পানির শেয়ারের দর কোন কারন ছাড়াই লাগাতর বাড়ছে। এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নজরদারীতে দাপট কমছে না মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের শেয়ার। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও এক ধরনের আশঙ্কা কাজ করছে।
বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন বাজার নিয়ে বারবার কারা খেলছে। তাদের আসল উদ্দেশ্য কি এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত। এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীল করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সব ধরনের বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা যার যতটুকু সাধ্য তা নিয়ে চেষ্টা করছেন।
কিন্তু তারপরও কোথাও যেনো একটি গলদ থেকে যাচ্ছে এবং বাজার উঠতে গেলেই একটি অদৃশ্য শক্তি সূচকের পেছন থেকে নিচের দিকে টেনে ধরে। মূলত এই অদৃশ্য শক্তিটিই বার বার পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে কাজ করছে।
২০১০ সালের পুঁজিবাজার ধ্বসে এদের সক্রিয়তা ছিল। এদের কারনে নিংস্ব হয়েছে লাখ লাখ বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন এরা কারা? বিএসইসির চেয়ে কি এরা শক্তিশালী?
একাধিক বিনিয়োগকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএসইসিতে নাকি অত্যাধুনিক সার্ভিল্যান্স সফটওয়্যার আছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বসানো হয়েছে এ সফটওয়্যার। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ সফটওয়্যারের কাজ কি? সবচেয়ে বড় কথা হলো যা খালি চোখে দেখলেই অস্বাভাবিক মনে হয় তার জন্য সার্ভিল্যান্সেরই কি প্রয়োজন?
এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারগুলো ননমার্জিনেবল, বেশিরভাগের মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) রয়েছে ৪০-এর উপরে। এসব শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। আর ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় এসব শেয়ার কিনতে সিকিউরিটিজ হাউস বা মার্চেন্টব্যাংকগুলো ঋণ সরবরাহ করে না। কিন্তু তারপরও এসব কোম্পানির শেয়ারের দর প্রতিনিয়ত বাড়ছে। যাকে ‘ব্যাকরণ বর্হিভূত’বলে আখ্যায়িত করেছেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা।
তবে বিষয়টি নজর এড়ায়নি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের। ইতোমধ্যে কয়েকটি কোম্পানিকে দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাদের শেয়ারদর বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ডিএসইতে এক মাসে মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের শেয়ারদর বেড়েছে ৫৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ২৪ নভেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৬ টাকা ৭০ পয়সা। ২৭ ডিসেম্বর তা ১০ টাকা ৩০ পয়সায় উন্নীত হয়।
লোকসানের কারণে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৬ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক। এ সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৩৫ পয়সা। ৩০ জুন পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি দায় (ঋণাত্বক এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা ৯২ পয়সা।
সর্বশেষ প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম (জুলাই- সেপ্টেম্বর) প্রান্তিকে এর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৬৩ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ১ টাকা ৮ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর এর শেয়ারপ্রতি দায় (ঋণাত্বক এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৫৫ পয়সা।
ডিএসইতে সর্বশেষ ১১ টাকা ৬০ পয়সায় মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের শেয়ার হাতবদল হয়। গত এক বছরে এ শেয়ারের সর্বনিম্ন দর ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ১১ টাকা ৩০ পয়সা। |
69bfbc20-1d44-44aa-8fe3-f76090a62419 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: চলতি বছর দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। ২০১৬ সাল শেষে দেশের প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আগের বছরের তুলনায় বিদেশীদের লেনদেন ১৮ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জটিতে চলতি বছর বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেনের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা, যা ২০১৫ সালে ছিল ৭ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা।
ডিএসই জানিয়েছে, বিদেশীদের লেনদেন ২০১৬ সালে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। একই সঙ্গে তাদের সিকিউরিটিজ বিক্রির পরিবর্তে ক্রয়ের হারও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। চলতি বছর বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ৮ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকার লেনদেনের মধ্যে ক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৫ হাজার ৫৭ কোটি ও বিক্রীত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৩ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ২০১৫ সালে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ৭ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকার লেনদেনের মধ্যে ক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ও বিক্রীত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা।
এদিকে যেসব কোম্পানিকে ঘিরে বিদেশিরা তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে চলছে সেখানে ১০টি কোম্পানি চিহ্নিত হয়েছে যেখানে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ ১৩ হাজার ৬৪১ টাকা। অর্থাৎ মোট বিনিয়োগের বেশিরভাগই রয়েছে এই ১০ কোম্পানিকে ঘিরে।
ডিএসই থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত নভেম্বর শেষে শেয়ারের বাজার মূল্যে বিদেশিদের সর্বাধিক প্রায় ২ হাজার ৪১১ কোটি টাকার বিনিয়োগ ছিল স্কয়ার ফার্মায়। এরপরের অবস্থানে ছিল অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজে ২ হাজার ২২৬ কোটি টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোতে ২ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। এছাড়া বাজারদরের হিসেবে বিদেশিদের বিনিয়োগ করা শেয়ারের মূল্যে ব্র্যাক ব্যাংকের ক্ষেত্রে ১ হাজার ৯২২ কোটি টাকা,
রেনেটাতে ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা, বেক্সিমকো ফার্মাতে ১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা, গ্রামীণফোনে ৮৫৭ কোটি টাকা, বিএসআরএম লিমিটেডে ৭৭৬ কোটি টাকা, ডিবিএইচে ৪৩৯ কোটি টাকা, ইসলামী ব্যাংকে ৩০৯ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ এই ১০ কোম্পানিকে বিদেশিদের বিনিয়োগের পরিমাণ ১৩ হাজার ৬৪১ টাকা।
এছাড়া শেয়ার ধারণের বিষয় বিবেচনায় গত নভেম্বরে সর্বাধিক প্রায় ৩ শতাংশ শেয়ার ধারণ বেড়েছে ডেফোডিল কম্পিউটার্সে। গত অক্টোবর শেষে এ কোম্পানিতে বিদেশিদের কোনো বিনিয়োগ ছিল না। অর্থাৎ নভেম্বরে তা ২ দশমিক ৯১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া জিএসপি ফাইন্যান্সে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মায় ১ দশমিক ০৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ বেড়েছে। উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারণ বেড়েছে আর্গন ডেনিম, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বারাকা পাওয়ার, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, এপেক্স ফুডস, বে লিজিংসহ কিছু কোম্পানিতে।
তবে বিদেশিরা কোনো কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে (শতাংশের হারে) সর্বাধিক ৪১ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছে ব্র্যাক ব্যাংকের। এরপরের অবস্থানে আছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ৩৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার প্রায় ৩৯ শতাংশ, ডিবিএইচের ৩৫ শতাংশ, নর্দার্ন জুটের ৩০ শতাংশ, বিএসআরএম লিমিটেডের ২৯ দশমিক ৩১ শতাংশ, রেনেটাতে পৌনে ২২ শতাংশ, স্কয়ার ফার্মার পৌনে ১৯ শতাংশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সাড়ে ১৪ শতাংশ, বেক্সিমকো লিমিটেডের প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিদেশিদের পোর্টফোলিওতে। |
ea3c3650-3ca7-4a04-ba2f-86c54110078d | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের কোম্পানি সামিট পাওয়ার লিমিটেড উৎপাদিত বিদ্যুত্ সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে করা চুক্তির মেয়াদ আরো পাঁচ বছর বাড়িয়েছে । ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
১০২ মেগাওয়াট এইচএফও নারায়ণগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট থেকে বিদ্যুত্ সরবরাহের জন্য করা পূর্ববর্তী চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি গত ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে।
জুন ক্লোজিংয়ের বাধ্যবাধকতায় এবার ছয় মাসে হিসাব বছর গণনা করেছে সামিট পাওয়ার। এ সময়ে বিদ্যুত্ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৬১ পয়সা। ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ২৬ টাকা ৪৮ পয়সা।
এর আগে ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৫ হিসাব বছরে ১২ শতাংশ নগদ ও ৬ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয় সামিট পাওয়ার। তখন ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৭৬ পয়সা।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৯৬ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৭ টাকা ৪৪ পয়সা।
ডিএসইতে গতকাল সর্বশেষ ৩৬ টাকা ৯০ পয়সায় সামিট পাওয়ারের শেয়ার হাতবদল হয়। সমাপনী দর ছিল ৩৭ টাকা, আগের কার্যদিবসেও সমাপনী দর ছিল ৩৭ টাকা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর ছিল ৪৩ টাকা ৮০ পয়সা ও সর্বনিম্ন ৩১ টাকা ৭০ পয়সা।
২০০৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। রিজার্ভে আছে ৮৭৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৫৬ দশমিক ৬১ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ২৫ দশমিক ১৫, বিদেশী ৩ দশমিক ৬৫ ও বাকি ১৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর সামিট পাওয়ার শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ১০ দশমিক ৪৫, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ৮ দশমিক ৮৯। |
5fde21ba-d1f4-43db-8bbf-331670a0bde2 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। ২০১৬ সালে দেশের পুঁজিবাজারে বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। চলতি বছরে ডিএসইতে বৈদেশিক লেনদেন ছাড়িয়েছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। নিট বিনিয়োগও ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তেমনি ২০১৭ সালে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার হবে বিনিয়োগকারীদের কাছে স্মরনীয় বছর। বাজার নিয়ে সরকারসহ নীতি নির্ধারকদের আন্তরিকতায় সুচক পাঁচ হাজার অতিক্রম করেছে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক। তাছাড়া দিন দিন লেনদেন বাড়ছে, বাজারে নতুন নতুন বিনিয়োগকারীর আগমন ঘটছে।
যা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক দিক। বাজারের এ গতি চলমান থাকলে ২০১৭ সালে বিনিয়োগকারীরা তাদের পুরানো ক্ষত শুকাতো পারবেন বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাজার উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মহলের নেয়া ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে গত কয়েক মাস যাবৎই বাড়ছে সূচক ও লেনদেন। সেই ধারাবাহিকতা বছরের শেষ কার্যদিবসেও (২০১৬ সাল) যেন বিদ্যমান থাকলো।
যা আগামী বছর জুড়ে বিদ্যমান থাকবে বলে সবার প্রত্যাশা। কেননা নীতিনির্ধারকদের নেয়া পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন শুরু হলে বাজার পুরোদমে তার কাঙ্খিত গতি ফিরে পাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে সেল প্রেসার থাকলেও পরে ঠিকই ঘুরে দাড়িয়েছে। দিনের পর দিন সূচক এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। এরই ধারবাহিকতায় আজ সূচক ৫০৪৯ পয়েন্টে উঠে গিয়েছিল এক পর্যায়ে। তবে বছরটি শেষ হয়েছে সূচক ৫ হাজার ৩৬ পয়েন্টে রেখে। অতএব এ কারনে বলাই যায় শেষ ভালো যার সব ভালো তার। বিশ্লেষকদের অভিমত, আগামি বছরের শুরুর দিনটাও একটি বড় ধরনের উত্থান দিয়ে চমকে দেবে বিনিয়োগকারীদের।
২০১৬ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৭৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা৷ এর মধ্যে ক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৫ হাজার ৫৭ কোটি টাকা এবং বিক্রয় সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৩ হাজার ৭১৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা৷ সেই হিসেবে নিট বিনিয়োগ হয়েছে এক হাজার ৩৪০ কোটি ৭০ কোটি টাকা।
এক বছরে ব্যবধানে (২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে বৈদেশিক লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ৩০৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। নিট বিনিয়োগ বেড়েছে ৯৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।
এদিকে ২০১৫ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৪৬৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা৷ এর মধ্যে ক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৩ হাজার ৮২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং বিক্রয়কৃত সিকিউরিটিজের পরিমাণ ৩ হাজার ৪৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা৷ অর্থাৎ পুঁজিবাজারে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩৮৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেন বাড়াকে ইতিবাচক মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। দীর্ঘদিনের আস্থাহীনতার বাজারে এখন সুবাতাস বইছে। যার কারণে দেশি বিনিযোগকারীর পাশাপাশি বাজারমুখী হচ্ছেন বিদেশিরা। পুঁজিবাজারের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্রয় প্রবণতা লক্ষণীয় যা বাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের সংকেত প্রদান করে৷
পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজার পর্যবেক্ষণ করেন এবং মার্কেটে শেয়ারের দাম কম থাকলে তারা বিনিয়োগ করেন। পুঁজিবাজারে অনেক ভালো শেয়ারের এখন দাম কম রয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হচ্ছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হওয়া মানে সামনে বাজার আরও ভালো হবে। |
c84847a1-e1e5-4e9c-a47f-7fb424bb7889 | আরিফুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা২৪ ডটকম, ঢাকা: লোকসানে থাকার পরেও কোনো কারন ছাড়াই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের কোম্পানি সমতা লেদার কমপ্লেক্সের শেয়ার দর দিন দিন হু হু করে বাড়ছে। তবে এর কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না বাজার বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা।
জানা গেছে, কোনো কারণ ছাড়াই গত তিন কার্যদিবস দরে এ কোম্পানির শেয়ার দর টানা বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৩৪.৯২ শতাংশ বা ৮.৮০ টাকা। সম্প্রতি দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে সমতা লেদারের অস্বাভাবিক শেয়ার দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে জবাবে লোকসানের চিত্র তুলে ধরে কোম্পানিটি।
ডিএসইর চিঠির জবাবে কোম্পানিটি জানায়, কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত তথ্য নেই। দীর্ঘ সময়ের জন্য কোম্পানির ব্যবসার অবনতি হয়েছে। কোম্পানিটি ৩০ জুন, ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরে ৬ লাখ টাকার বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
এদিকে কোম্পানিটি প্রথম প্রান্তিকে ৯ লাখ ৭৯ হাজার টাকা লোকসান করেছে। কোম্পানিটির অর্ধবার্ষিকীতে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বিক্রি রাজস্ব ও অন্যান্য আয় কমেছে।
আর কোম্পানিটি এই তথ্যগুলো বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসইর মাধ্যমে যথাসময়ে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে। কোম্পানিটি আরও জানায়, বিসিকের ট্যানারি শিল্প এলাকা সরানোর কারণে কোম্পানিটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্র্ণ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় দর বাড়ার কোন যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা।
আজ ডিএসই মতিঝিল ভবনে একাধিক সিকিউরিটিজ হাউস ঘুরে বিনিয়োগকারীদের বলতে শোনা যায় সমমতা লেদারের শেয়ারের দর আরো বাড়বে। তবে কি কারনে বাড়বে তারা বলতে পারছেন না। তারাও গুজবে কান দিয়ে শেয়ার কিনছেন। তবে কোম্পানিটির শেয়ারের দরবৃদ্ধির গতিবিধি নিয়ে সন্দেহ পোশন করছেন বিনিয়োগকারীরা। কেউ বলতে পারছেন না যে এই শেয়ারের দরবৃদ্ধির পেছনে কোনো মুল্য সংবেদনশীল তথ্য রয়েছে কিনা।
সালাউদ্দিন খান নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, পুঁজিবাজারের এখনও কারসাজি চক্র সক্রিয়। তাদের সক্রিয়তায়ই স্বল্পমূলধনী ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। যার বলি হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এখনই এ ধরনের কোম্পানির লাগাম টানা না গেলে চরম ক্ষতির মুখে পড়বে বিনিয়োগকারীরা, যার প্রভাব পড়বে বাজারেও। |
294395b2-4e35-4991-9bba-ec7c1bfc4425 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ২০১৬ সালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল। যদিও উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগ ছিল কম। তবে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের উপকরণ সরবরাহকারীরা ঋণ নিয়েছেন। মাঝারি ও ছোট ব্যবসায়ীরাও ভালো ব্যবসা করেছেন। এসব ঋণের বিপরীতে সুদ হিসাবই ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বাড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে বছরের শেষ সময়ে সব ব্যাংকই বড় অঙ্কের ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করেছে। ফলে সুদ আয় বেশি দেখানো সম্ভব হয়েছে। এ কারণে ডিসেম্বর মাসে একাধিক পর্ষদ সভাও করতে হয়েছে। এতে পরিচালন মুনাফাও বেড়েছে। ঋণ নবায়নে বিশেষ ছাড় ও পুনর্গঠন করা ঋণ নিয়মিত থাকার প্রভাবও পড়েছে মুনাফায়।
এতে আগের বছরের তুলনায় ২০১৬ সালে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বাড়ার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ হিসাব প্রাথমিক। চূড়ান্ত হিসাব শেষে পরিচালন মুনাফা থেকে সঞ্চিতি ও কর কেটে প্রকৃত মুনাফা মিলবে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর কর কেটে রাখা হবে ৪০ শতাংশ, অন্যগুলোর সাড়ে ৪২ শতাংশ ও নতুন ব্যাংকগুলোর ৪০ শতাংশ।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন, ২০১৬ সালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল। অনেক বড় প্রকল্প স্বাক্ষরিত হয়েছে, কার্যক্রমও চলছে, যা ব্যবসায়ীদের মনোভাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তবে বিনিয়োগ আরও বাড়তে পারত।
আনিস এ খান আরও বলেন, যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।
তবে হিসাবে ২০১৬ সালের খেলাপি ঋণ অনেক বাড়বে। এ কারণে ব্যাংকগুলোকে অনেক নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হবে। ফলে চূড়ান্ত হিসাবে মুনাফা কমেও যেতে পারে। ব্যাংকগুলোর ২০১৫ সালের পরিচালন মুনাফার তথ্য নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে। আর ২০১৬ সালের তথ্য পাওয়া গেছে ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০১৫ সালে যা ছিল ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। যদিও চূড়ান্ত হিসাবে মুনাফা হয় ৩১৫ কোটি টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংক ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০১৫ সালে ব্যাংকটি ৬৮১ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা দেখিয়েছিল। চূড়ান্ত হিসাবে মুনাফা হয় ৩৮৮ কোটি টাকা। ব্র্যাক ব্যাংক ৯২২ কোটি টাকা মুনাফার কথা জানিয়েছে। আগের বছর ৪৬২ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা দেখালেও চূড়ান্ত মুনাফা হয় ২৩২ কোটি টাকা।
সাউথইস্ট ব্যাংক ৮৬৩ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। আগের বছর ৫৬৭ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করলেও প্রকৃত মুনাফা ছিল ৩০৭ কোটি টাকা। দি সিটি ব্যাংক ৭৫৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। ২০১৫ সালে ছিল ৪৭৭ কোটি টাকা, আর প্রকৃত মুনাফা ৩৫৯ কোটি টাকা। আল-আরাফাহ্ ব্যাংক ৭৫৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে এবার। আগের বছর ৪০৫ কোটি টাকা মুনাফা দেখানো হলেও প্রকৃত মুনাফা হয় ২২৩ কোটি টাকা।
ঢাকা ব্যাংকের মুনাফা ২৬১ থেকে বেড়ে ৫৭০ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংকের ২০০ কোটি বেড়ে ৪৩০ কোটি, যমুনা ব্যাংকের ২৪০ থেকে বেড়ে ৪৪২ কোটি, এনসিসি ব্যাংকের ২৭৫ থেকে ৪৭০ কোটি,
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২২৯ কোটি থেকে ৩৬০ কোটি, ওয়ান ব্যাংকের ২৭০ থেকে ৪৭০ কোটি, শাহ্জালাল ব্যাংকের ১৭৮ থেকে ৩১৪ কোটি ও ট্রাস্ট ব্যাংকের পরিচালক মুনাফা ৩০৯ কোটি থেকে বেড়ে ৫০১ কোটি টাকা হয়েছে। কমার্স ব্যাংকের মুনাফা ১ কোটি থেকে বেড়ে ২৩ কোটি ও লোকসানে থাকা বেসিক ব্যাংক ১৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে।
ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ৭৮ থেকে বেড়ে ১৮৫ কোটি, সাউথ বাংলার ৭৩ কোটি থেকে বেড়ে ১৫৪ কোটি, ফারমার্স ব্যাংকের ৪২ কোটি থেকে বেড়ে ৯৮ কোটি, মেঘনা ব্যাংকের ৫৪ কোটি থেকে বেড়ে ১০২ কোটি,
মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৬২ কোটি থেকে বেড়ে ৯২ কোটি, এনআরবি ব্যাংকের ৩৪ কোটি থেকে বেড়ে ৮১ কোটি, এনআরবি কমার্শিয়ালের ৮২ কোটি থেকে বেড়ে ১৭১ কোটি ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ১১ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৮ কোটি টাকা। |
77dc0ad5-0267-4ebb-a772-9daf89ae3ba4 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো শেয়ারের মূল্য বাড়াতে কৃত্রিম উপায়ে বেশকিছু ব্যাংক অতিরিক্ত মুনাফা দেখিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খেলাপি ঋণের উচ্চ বোঝা, অলস টাকার পাহাড় ও ভয়াবহ আর্থিক কেলেংকারির মধ্যেও পরিচালন মুনাফা বৃদ্ধি সন্দেহজনক বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর এ প্রেক্ষিতে প্রতিটি ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন খতিয়ে দেখতে বিবি মাঠে নেমেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে অধিকাংশ ব্যাংকের মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো ‘জোক অব দ্য ইয়ার’ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিটরা। তারা বলছেন, ব্যাংকগুলোর কৃত্রিম মুনাফা বৃদ্ধি শুভংকরের ফাঁকি ছাড়া কিছ্ইু নয়। গ্রাহক আকর্ষণের হাতিয়ার হিসেবে বিদায়ী বছরে ব্যাংকিং খাতের যে আচরণ ছিল তার সঙ্গে মুনাফার কোনো মিল নেই।
সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের মুনাফা দেখানোর ক্ষেত্রে কোন কারসাজি করছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সমাপ্ত বছরে ব্যাংকগুলোর মুনাফা বেড়ে যাবার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। খুব শিগগিরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০ থেকে ১২টি দল মাঠে নেমে মুনাফার বিষয়টি পর্যালোচনা করবে।
জানা গেছে, খেলাপি ঋণ গোপন করে অথবা বাড়িয়ে মুনাফা দেখানোর মাধ্যমে কোন ব্যাংক বিশেষ সুবিধা নিচ্ছে কিনা তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, অতিরিক্ত মুনাফা দেখালে কয়েকটি ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব পড়ে। প্রথমত বেশি মুনাফা করলে পুঁজিবাজারের সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শেয়ারের দর চাঙ্গা হয়। এতে প্রতারিত হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। আমানতকারীরাও ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আমানত রাখতে প্রলুব্ধ হন। এর সরাসরি সুবিধাভোগী হন ব্যাংক পরিচালকরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, অতীতে প্রকৃত খেলাপি ঋণ গোপন করাসহ নানা কারসাজির আশ্রয় নিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা দেখিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, প্রচলিত নীতিমালা অনুযায়ী একটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ যত বেশি থাকে ওই ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত মুনাফা তত কমে যায়। খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা মেনে চললে কোন ব্যাংকের বেশি মুনাফা হবার কথা নয়।
সূত্র জানায়, বর্তমানে ব্যাংক খাতে অবলোপনসহ মোট খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা আদায় অনিশ্চিত। এছাড়া বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে স্থবিরতা রয়েছে। ফলে ব্যাংকের কাছে অলস পড়ে আছে প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা। উচ্চ সুদের কারণে কেউ বিনিয়োগে আসছেন না।
ব্যাংকগুলো ঋণের সুদহার যৌক্তিক পর্যায়ে কমায়নি। এখনও সুদের হার ১২ থেকে ১৬ শতাংশ। এর বাইরে রয়েছে উচ্চ সার্ভিস চার্জ। ছিল বিভিন্ন আর্থিক কেলেংকারি। তবুও ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৫টির পরিচালন মুনাফার প্রাথমিক চিত্র পাওয়া গেছে। ২০১৬ সালে ৩৫টি ব্যাংক প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা মুনাফা দেখিয়েছে, যা ২০১৫ সালে ছিল প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে সরকারি রূপালী ব্যাংক ১০০ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। তবে ২০১৫ সালে ২৮২ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল ব্যাংকটি। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, আগে সব তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে হিসাব করেছে। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকটির লোকসান ছিল ২৪০ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে তা কমে ১০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
তবে ২০১৬ সালে বেসিক ব্যাংক পরিচালন মুনাফা দেখিয়েছে ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যদিও ব্যাংকটি গত ৩ বছর লোকসানে ছিল। বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোন্দকার মো. ইকবাল বলেন, গত ৩ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম আমরা লাভের মুখ দেখেছি। নতুন করে সরকার কিছু বন্ড দেয়ার কথা ভাবছে। বন্ডগুলো ছাড় পেলে আগামী বছর মুনাফা কয়েক গুণ বেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।
ব্যাংকগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও মুনাফার শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে মুনাফা করেছে রেকর্ড ২০০৩ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল এক হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। দেশের ব্যাংকিং খাতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো একক ব্যাংক তার পরিচালন মুনাফা দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়াল। এর আগে কোনো ব্যাংকের মুনাফা এটা অতিক্রম করেনি।
জানা গেছে, ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য আয় আসে এলসি কমিশন থেকে। পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র স্থাপন করে ব্যাংকগুলো উল্লেখযোগ্য মুনাফা করে। কিন্তু বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকটের পাশাপাশি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ স্থবির হয়ে পড়েছে।
এদিকে ৩১ ডিসেম্বরের ক্লোজিং হিসাব অনুযায়ী মুনাফার দিক থেকে শীর্ষ কয়েকটি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক ২ হাজার ৩ কোটি টাকা, আগের বছরে ছিল এক হাজার ৮০৮ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা, আগের বছর ছিল ৮৪৬ কোটি টাকা, ব্র্যাক ব্যাংকের ৯২২ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৭৮০ কোটি টাকা। সাউথইস্ট ব্যাংকের মুনাফা ৮৬৩ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৮৩৩ কোটি টাকা।
ইউসিবিএলের ৮১৫ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৮৪০ কোটি টাকা। ব্যাংকটির গত বছরের তুলনায় মুনাফা কমে গেছে। সিটি ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৭৫৬ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৬৯১ কোটি টাকা। পূবালী ব্যাংকের মুনাফা আগের বছরের চেয়ে কমে গেছে। ব্যাংকটি আগের বছরে মুনাফা ছিল ৭৮৫ কোটি টাকা, যা বিদায়ী বছরে কমে ৭২০ কোটি টাকা হয়েছে। এক্সিম ব্যাংক ৬৯০ কোটি টাকা মুনাফা করে নবম হয়েছে।
আগের বছরে ছিল ৬৫০ কোটি টাকা। আগের বছরের চেয়ে মুনাফা কমে গেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে মুনাফা করেছে ৬৩০ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৬৪৩ কোটি টাকা। এবি ব্যাংক এবার মুনাফা করেছে ৫৮০ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৫০২ কোটি টাকা।
বিদায়ী বছরে প্রাইম ব্যাংক ৬২৫ কোটি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ৬০৫ কোটি, ব্যাংক এশিয়া ৫৯০ কোটি, এবি ব্যাংক ৫৮০ কোটি, মার্কেন্টাইল ৫০৮ কোটি ও ট্রাস্ট ব্যাংক ৫০১ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে।
এছাড়া ঢাকা ব্যাংক ৪৭০ কোটি, এনসিসি ৪৭০ কোটি, যমুনা ব্যাংক ৪৫১ কোটি, আইএফআইসি ৪৩০ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ৩৭৫ কোটি, মিউচুয়াল স্ট ৩৬০ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৩৫০ কোটি ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৩১৪ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে।
২০১৬ সালে ১৭০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের। আগের বছর ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ৯৪ কোটি টাকা। সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক পরিচালন মুনাফা করেছে ১৫৪ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৮০ কোটি টাকা। ফারমার্স ব্যাংকের মুনাফা ৬৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
মিডল্যান্ড ব্যাংক মুনাফা করেছে ১১২ কোটি টাকা। আগের বছর ছিল ৭৮ কোটি টাকা। তবে মধুমতি ব্যাংকের মুনাফা ১০২ কোটি টাকা থেকে কমে ৯২ কোটি টাকা হয়েছে। এনআরবি ব্যাংক মুনাফা করেছে ৯৩ কোটি টাকা, ২০১৫ সালে ছিল ৩৯ কোটি টাকা।
আমানতকারীদের প্রাপ্য লভ্যাংশ, খেলাপি ঋণের প্রভিশন ও সরকারের প্রাপ্য কর যখন পরিশোধ করা হবে তখন উল্লিখিত অনেক ব্যাংক লাভের পরিবর্তে লোকসানে পড়ে যাবে। তবে এসব খরচ বাদ দিলেও প্রতিবারের মতো ইসলামী ব্যাংক লাভে থাকবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, পরিচালন মুনাফা কৃত্রিম উপায়ে দেখানো হয়েছে। সব খরচ বাদ দিলে এটা অনেক কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এটাকে মুনাফা না বলে ব্যাংকের আয়-ব্যয়ের আংশিক চিত্র বলা যায়। তিনি বলেন, উচ্চ সুদের কারণে বিনিয়োগ হচ্ছে না। আমানতের সুদ ২ থেকে ৩ শতাংশে নামিয়ে একদিকে গ্রাহককে ঠকানো হচ্ছে, অন্যদিকে ঋণের সুদ এখনও ১০ থেকে ১৬ শতাংশে আটকে আছে। তার মতে, ব্যাংকগুলো সাময়িক গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে পরিচালন মুনাফা বেশি দেখিয়ে থাকতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বেসিক ব্যাংকের মুনাফা দেখানো ‘জোক অব দ্য ইয়ার’। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে বোঝা যায় ব্যাংকগুলোর দেখানো পরিচালন মুনাফা সঠিক নয়। তার মতে, মুনাফা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো হয়েছে। কারণ ব্যাংকিং ব্যবসা ভালো ছিল না। অসৎ ঋণ গ্রহীতার কারণে ভালো ঋণ গ্রহীতারা ছিল ব্যাংকের কাছে জিম্মি। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে শেয়ারের মূল্য বাড়াতে কৃত্রিম উপায়ে মুনাফা বাড়িয়ে থাকতে পারে ব্যাংকগুলো।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক খাতে কিছুটা শুভংকরের ফাঁকি আছে। কারণ কোনো কোনো ব্যাংক ‘আগাম মুনাফা’ সমন্বয় করে মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা করে। তাছাড়া পরিচালন মুনাফা প্রকৃত মুনাফা নয়। খেলাপি ঋণের প্রভিশন, লভ্যাংশ ও সরকারকে কর দেওয়ার পর যে অর্থ থাকবে, তাই নেট মুনাফা। পরিচালন মুনাফা দেখে গ্রাহকরা প্রতারিত হতে পারেন বলে মনে করেন তিনি। |
13f5002e-97e2-4c73-a1ab-d735e70fd93f | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭ কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধিতে দু:চিন্তায় পড়েছেন বিনিয়োগকারী সহ বাজার সংশ্লিষ্টরা। এসব কোম্পানির শেয়ার বর্তমানে ডেঞ্জার জোনে অবস্থান করেছে, পাশাপাশি এসব কোম্পানির কারনে বাজারকে ফেলেছে ঝুঁকিতে। তবে এসব কোম্পানির কারসাজিতে কারা জড়িত, নিয়ন্ত্রন সংস্থার তদন্ত করে শাস্তি দেওয়া উচিত। কারন ৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। কোন কোন কোম্পানির শেয়ারের দাম ১০ গুন বাড়ছে।
তেমনি তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারে না এই কোম্পানি। ৫৫ কোটি পরিশোধিত মূলধনের এই প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক ঋণ ৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০ টাকার শেয়ার যিনি কিনছেন, তার ঘাড়ে প্রায় ১৮ টাকার ঋণের দায় চাপছে।
এরপরও কোনো কারণ ছাড়াই গত এক সপ্তাহে দুর্বল মৌল ভিত্তির এই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম ৩১ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে ১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ১৪ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে।
এভাবেই মৌল ভিত্তি উপেক্ষা করে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দুর্বল প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এরমধ্যে অধিকাংশই লোকসানি কোম্পানি। দীর্ঘ দিন পর্যন্ত এরা বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারছে না। এরপরও বাড়ছে এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম। এরফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে পুঁজিবাজার।
সূত্র বলছে, বড় কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস ও কয়েকজন বড় বিনিয়োগকারী মিলে এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে। এরা কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে। এর ফাঁদে পা দিচ্ছে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারী।
ফলে ওই চক্রটি বাজার থেকে বের হয়ে গেলে বিনিয়োগকারীরা পথে বসবেন। এ কারণে তদন্ত করে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ তাদের। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বলছে, কয়েকটি কোম্পানির ব্যাপারে তারা তদন্ত করছে।
জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু দুর্বল মৌল ভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কোম্পানির শেয়ারের দাম, তাদের মৌল ভিত্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ না হলে বুঝতে হবে এখানে কোনো কারসাজি আছে।
মির্জ্জা আজিজ বলেন, শেয়ারের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করে বিএসইসিকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে, সেগুলো দুর্বল মৌল ভিত্তির, লোকসানি ও ছোট মূলধনের কোম্পানি। এরমধ্যে শ্যামপুর সুগার মিলের শেয়ারের দাম গত দেড় মাসে ১৩ থেকে ২৪ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ৩০ কোটি টাকা লোকসান রয়েছে। আর প্রতি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান ৬৯ টাকা। একই সময়ে জিলবাংলা সুগার মিলের শেয়ারের দর ২০ থেকে বেড়ে ৩৬ টাকায় উঠেছে। কিন্তু লোকসানি এই প্রতিষ্ঠানটির ১৩৭ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ রয়েছে।
অর্থাৎ মুদ্রা ও পুঁজি উভয় বাজারেই তারা সংকট সৃষ্টি করছে। গত দেড় মাসে মেঘনা কনডেন্স মিল্কের শেয়ার দর ৬ থেকে বেড়ে প্রায় ১০ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। এ সময়ে মেঘনা পেটের শেয়ার দর ৫ থেকে বেড়ে ৭ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে।
এক মাসে ফাইন ফুডসের শেয়ার দর ২০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে ২৩ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। একই ভাবে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে বিডি অটোকার্স ও ইমাম বাটনের শেয়ার দর। এর আগে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল ডরিন পাওয়ার ও রহিমা ফুডের শেয়ারের দাম।
এছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হল- স্টাইল ক্র্যাফট, আজিজ পাইপ, কাসেম ড্রাইসেল, দেশ গার্মেন্টস, শাহজিবাজার পাওয়ার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, সোনালী আঁশ, অ্যাপেক্স স্পিনিং, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিস ও খুলনা পাওয়ার কোম্পানি।
জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ৭টি কোম্পানির ব্যাপারে আমাদের তদন্ত চলছে। অন্যান্য বেশ কিছু কোম্পানি আমাদের নজরদারিতে আছে। তিনি বলেন, দাম বাড়লেই খারাপ বলা যাবে না। তবে আমরা দেখছি, দাম বৃদ্ধির পেছনে আসলেই কোনো যুক্তি আছে নাকি টেনে বাড়ানো হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যে ৭টি কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির তদন্ত চলছে সেগুলো হল- জিলবাংলা সুগার, শ্যামপুর সুগার, মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, মেঘনা পেট, ইমাম বাটন, ফাইন ফুডস ও বিডি অটোকার্স। |
59fa234d-bf33-4520-b371-b4edfce5cf52 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আমেরিকার বাজারে চীনের পোশাক রপ্তানি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সারাবিশ্বে পোশাক রপ্তানি চীনের সব্বোর্চ অবস্থান থাকলে হঠাৎ তা ধ্বস নামেছে। চীনের ব্যবসায়িক বাজার বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
গত বছর বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার পোশাক আমদানীর মুল্য ছিল ৬ দশমিত ৩৪ শতাংশ। এখন তা বৃদ্ধি পেয়েঠে ১৩.০৪ শতাংশ। চলতি বছরে প্রখম আট মাসে জানুয়ারী-আগষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.৫৭ শতাংশ। সুত্রে বার্ষিক বানিজ্য প্রতিবেদন বিভাগ, আমেরিকা।
চীন পোশাক রপ্তানি আমেরিকার বাজার দখল ছিল দীর্ঘ সময় ধরে। তবে নিন্মলিখিত চারটি সব্বোর্চ অবস্থানের দেশগুলোর নিন্মরুপ, ভিয়েটনাম, বাংলাদেশ, ইন্দেনিয়া, ভারত। আমেরিকার বাজার চীনসহ অনেক দেশের পোশাক রপ্তানি হ্রাস পাচ্ছে।
কিন্ত ঐসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে। ফারুক হোসেন নামে এক বিশ্লেষক বলেন, আমি মনে করি সামনের বছরগুলোতে বাংলাদেশ পোশাক রাপ্তানিতে অনেক দুর এগিয়ে যাবে।
সূত্রমতে, ইউরোপ-আমেরিকার পোশাক ক্রেতাদের জোট এ্যাকর্ড ও এ্যালায়েন্সের তত্ত্বাবধানে দেশের পোশাক কারখানার অগ্নিব্যবস্থাপনা, ভবনের কাঠামো ও বৈদ্যুতিক সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং শ্রম অধিকার নিশ্চিতে পোশাক খাতের ওপর এই দুই জোটের বরাবর চাপ রয়েছে। পোশাকের সঠিক দাম নির্ধারণের বিষয়টি নিয়েও ক্রেতাদেশগুলোর সঙ্গে উদ্যোক্তাদের দরকষাকষি চলছে।
এতসব চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও পোশাক রপ্তানিতে স্বস্তি এনে দিয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকায় উৎসবের পোশাক তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। তৈরিকৃত এসব উন্নতমানের পোশাক এখন ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে পাঠানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পোশাক রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে পোশাক রফতানি দিন দিন বেড়েছে। এবার ১৯-২০ শতাংশ রফতানি প্রবৃদ্ধি হবে। ইতোমধ্যে তৈরিকৃত পোশাকের শিপমেন্ট শুরু হয়েছে। |
f1c2eac2-0d6e-4fac-8be8-9d1951a27bae | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: হঠাৎ মুনাফার ব্যাপক উল্লম্ফন দেখিয়ে সম্প্রতি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে শেয়ার ক্রয়ের আজ থেকে আবেদন সংগ্রহ করেছে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।। ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের করতে চায় শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। তবে অর্থ উত্তোলনের আগেই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক মুনাফার উল্লম্ফন, সম্পদের অতিরঞ্জিত প্রকাশ, যথাযথ ভাবে অবচয় নির্ধারনের অভিযোগ উঠেছে।
কিন্তু পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে, অর্থ উত্তোলনের অনুমোদনে দেওয়ার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একইভাবে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজও মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়েছে। তেমনি কোম্পানিটিতে আইনভঙ্গসহ নানা অসঙ্গতি রয়েছে।
কিন্তু মুনাফাধারী কোম্পানিটি যাথাসময়ে শ্রমিকদের বেতন বাতা পরিশোধ না করায় কোম্পানিটির কারখানায় বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, বেতন-ভাতা নিয়ে মালিক পক্ষের টালবাহানা অব্যাহত থাকলে যেকোন সময় কোম্পানিটির উৎপাদনে বড়ধরনে বিপত্তি ঘটতে পারে।
অভিযোগ রয়েছে, শ্রমিকদের কর্মঘন্টার অতিরিক্ত কাজ করানো হলেও অতিরিক্ত কাজের মুজরি প্রদান করা হয় না। যদি কেউ অতিরিক্ত কাজের মুজরি চায় তবে তাকে চাকুরি থেকে অব্যহতি প্রদান করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
শ্রম আইন অনুযায়ী, কর্মসময় ৮ ঘন্টা হলেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আটকে রেখে জোরপূর্বক ১০ থেকে ১২ ঘন্টা কাজ করায় এমন অভিযোগ শ্রমিকদের। অতিরিক্ত কাজের বিপরীতে শ্রমিকদের বোনাস দেওয়ার কথা থাকালেও গায়ের জোরে তা পরিশোধ করছে না কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া শ্রমিকদের সাথে নিয়মিত প্রতারণা করছে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, এমন অভিযোগও রয়েছে। একইসঙ্গে শ্রমিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। কোম্পানিটি ২০০৬ সালের বাংলাদেশ শ্রম আইনানুযায়ী, নীট আয়ের ৫শতাংশ হারে ফান্ড গঠন এবং বিতরণ কোনোটাই করছে না। ফলে শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
হিসাববিদদের মতে, বিএএস-৩৬ অনুযায়ি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ইমপেয়ারম্যান্ট লস হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কোম্পানিগুলো তা না করে সম্পদ ও মুনাফা বেশি দেখায়। এ ক্ষেত্রে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজও এর ব্যতিক্রম না। কোম্পানিটিও সম্পদ এবং মুনাফা বেশি দেখিয়ে আসছে। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে স্থায়ী সম্পদ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে।
কোম্পানিটি ২০১৬ সালের এপ্রিল-জুনে ৬ লাখ টাকার মটর যানবাহন বিক্রয় করেছে। যে মটর যানবাহন ৮.১৪ লাখ টাকা হিসাবে সম্পদ দেখিয়ে আসছিল। অর্থাৎ সম্পদ বেশি দেখিয়ে আসছিল। এসব সম্পদের ক্ষেত্রে ইমপেয়ারম্যান্ট লস দেখাতে হয়। যাতে ব্যয় বেড়ে মুনাফা কম হয়। একইসঙ্গে সম্পদের প্রকৃত চিত্র থাকে। কিন্তু তা না করে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পদ ও মুনাফা বেশি দেখায়। এই কোম্পানিটিই আবার বলেছে ইমপেয়ারম্যান্ট লস হয়নি।
প্রাচীর, ফ্যাক্টরির ভিতরে রাস্তা, পার্কিং প্লেস, বাগান ইত্যাদি ল্যান্ড ডেভোলপমেন্ট। এসব সম্পত্তির নির্দিষ্ট আয়ুস্কাল আছে। যে কারণে বিএএস-১৬ অনুযায়ী, ল্যান্ড ডেভোলপমেন্ট অবচয়যোগ্য সম্পদ। কিন্তু শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এ সম্পদের ওপর অবচয় চার্জ না করে সম্পদ ও মুনাফা বেশি দেখিয়ে আসছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, তালিকাভুক্তির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মাত্র ১৬ শতাংশ শেয়ার ছাড়লেও প্লেসমেন্ট বিক্রি ও প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মালিকানার ৯২ শতাংশই ছাড়ছে কোম্পানিটি। ফলে, কোম্পানির ভবিষৎ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এছাড়াও রোববার (৮ জানুয়ারি) কোম্পানিটির আইপিও আবেদন শুরু হলেও সোমবার রাতে (নিউজ লিখা পর্যন্ত) কোম্পানিটির প্রসপেক্টাস বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। এতে করে কোম্পানিটির তর্থ প্রকাশে বিএসইসির অনিহাও ফুটে উঠেছে বিনিয়োগকারীদের সামনে।
শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করলেও শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ারবাজারে আসছে। কোম্পানিটি ২ কোটি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায়। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে শেয়ার ইস্যু করা হবে।
এ বিষয় শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারে আইপিও মাধ্যমে এসে অধিকাংশ কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের টাকা লুটেপাটে খাচ্ছে। এখন কোম্পানিগুলো ইস্যু ম্যানেজারদের সহযোগিতায় বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা করছে। কোম্পানিতে কিছু না থাকলেও তারা সুন্দর করে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে। এমন কোম্পানির আইপিও অনুমোদনে বিএসইসির সতর্ক হওয়া দরকার।
এসব বিষয়ে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আতাউর রহমান সাথে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
চলবে ………………… |
d95bba55-d169-4108-b2b2-bd4f61095bf2 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুঁজিবাজারে উন্নয়নে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আজ রোববার বেলা পৌনে ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে নবনির্মিত সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনের ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার উন্নত অর্থনীতি গড়ে তোলার অন্যতম শর্ত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশে পুঁজিবাজারের অবদান বাড়ছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করতে শিল্প ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে দীর্ঘমেয়াদীয় বিনিয়োগের অন্যতম উৎসব হিসেবে পুঁজিবাজারের সুদৃঢ় অবস্থান আমাদের কাম্য।
তিনি বলেন, দারিদ্র বিমোচনের মূল চালিকাশক্তি অর্থনৈতিক উন্নতি। আর্থিক খাতের অন্যতম স্তম্ভ পুঁজিবাজারের বিকাশে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। একটি স্থিতিশলী, স্বচ্চ, জবাবদিহিতামূলক পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ফলে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। বিশ্বে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার দ্রুত বিকাশমান সম্ভবনাময় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। উন্নয়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছাবে বাংলাদেশ।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার আগে কোম্পানির বার্ষিক আয়, আর্থিক বিবরণী, উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে হবে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সরকার ও অর্থমন্ত্রীকেই দায়ী করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। মূলত পুঁজিবাজার সম্পর্কে কোনো জ্ঞান অর্জন না করে বিনিয়োগ করার ফলেই ক্ষতির মুখে পড়ে তারা।
এর আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন ভবনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলক উন্মোচনের পর দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, বিএসইসির চেয়ারম্যান এম. খায়রুল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। |
45d7ff49-649f-421b-bb49-5f1219249292 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার আগে কোম্পানি সম্পর্কে জানতে হবে। বিনিয়োগ করার আগে কোম্পানির বার্ষিক আয়, আর্থিক বিবরণী, উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে হবে। আজ রোববার বেলা পৌনে ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে নবনির্মিত ‘সিকিউরিটিজ কমিশন ভবন’ এর ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পুঁজিবাজার তথা সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত আনন্দের।” নঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও বিএসইসির চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ফলক উন্মোচনের পর প্রধানমন্ত্রী দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন এবং পরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে দেশব্যাপী ফিনানশিয়াল লিটারেসি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
নতুন ভবনে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ‘সুন্দর পরিবেশে’ কাজ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। ঢাকার শেরেবাংলা নগরে শূন্য দশমিক ৩৩ একর জমির ওপর ‘সিকিউরিটিজ কমিশন ভবন’ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৬০ কোটি টাকা। ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর শেখ হাসিনাই এ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।
নকশা অনুযায়ী, দশ তলা এ ভবনের মোট আয়তন ৮৯ হাজার ২৫০ বর্গফুট। বিএসইসির নিজস্ব অফিস ছাড়াও আন্তর্জাতিক মানের কনফারেন্স হল, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারের এজলাস, লাইব্রেরি, ডে-কেয়ার সেন্টার ও ক্যান্টিন থাকবে এ ভবনে। মতিঝিলের পুরনো অফিস থেকে ধাপে ধাপে কমিশনের সব কার্যক্রমই নতুন ভবনে নিয়ে আসা হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। |
e0410c53-ee2c-4f4c-ba2a-8aead3e69e2c | আমিনুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে ২১ সরকারি কোম্পানির শেয়ার। মন্ত্রণালয়কে সরকারি শেয়ার অফলোড বা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে শেয়ার ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি প্রতি মাসে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার সরবরাহ (অফলোড) সংক্রান্ত অগ্রগতি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে ২১ কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে আনার বিষয় সস্প্রতি অর্থ সচিবের নেতৃত্বে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের একটি মিটিং হয়। ওই মিটিংয়ে শেয়ার অফলোডের ব্যাপারে কোম্পানিগুলোকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। শিগগিরই বাজারে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কোম্পানিগুলো। এদিকে সরকারি কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
তাদের মতে, বতর্মানে বাজারে ভালো শেয়ার কম। ফলে দুর্বল শেয়ার নিয়ে কারসাজি হচ্ছে। জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এসব কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী একাধিকবার সময় বেঁধে দিয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, তিনি কোনোবারই কথা রাখতে পারেননি।
তার মতে, সরকারি কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হলে বাজার টেকসই হবে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর অব্যবস্থাপনা অনেকাংশে কমে যাবে। কোম্পানিগুলোর জবাবদিহির কারণে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের স্বার্থে ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই সরকারি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করা উচিত।
কারণ ভালো শেয়ার এলে নতুন বিনিয়োগকারীরা আসবে। এতে বিদেশী বিনিয়োগকারী ও ভালো মিউচুয়াল ফান্ড আসবে। ফলে বাজারের গভীরতাও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। মির্জ্জা আজিজ বলেন, বাজারে মূল সমস্যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট। এ সংকট কাটাতে ভালো শেয়ার থাকা জরুরি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক সূত্র জানায়, ভালো দামের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় এতদিন শেয়ার ছাড়ার বিষয়টি ঝুলে ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাজার চাঙ্গা হয়েছে। ফলে কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। এতে বিনিয়োগকারী ও সরকার উভয়ের লাভ। সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে এসব বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও গত ৬ বছরে বাজারে আসেনি সরকারি ২১ কোম্পানির শেয়ার। এর মধ্যে মাত্র ৩টি কোম্পানি প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে। বাকি ১৮টি প্রতিষ্ঠানের এতদিন কোনো অগ্রগতি ছিল না। মূলধন সংকটে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। কিন্তু শেয়ার অফলোডের ক্ষেত্রে গড়িমসি করেছে এসব কোম্পানিতে থাকা সরকারি আমলা।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সরকারি ৩৪ কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে ওই সময় সে উদ্যোগ বেশি দূর এগোয়নি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে বাজারে ভালো শেয়ারের ভয়াবহ সংকট দেখা দেয়। এরপর সংকট কাটাতে সরকারি কোম্পানিকে বাজারে আনার উদ্যোগ শুরু হয়।
২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয় এক বৈঠকে সরকারি কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি শেয়ার পাবলিকের মধ্যে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সময় কোম্পানিগুলোকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার ছাড়তে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি আরেকটি বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়ে কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার তাগিদ দেয়া হয়।
এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির সময়সীমা ২০১১ সালের ১৪ ও ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে এ সময়ে মোট কোম্পানির সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে দাঁড়ায় ২৬টিতে। সর্বশেষ শেয়ার ছাড়ার জন্য গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়। এর মধ্যে গত ৬ বছরে ৫টি কোম্পানি শেয়ার ছাড়তে পেরেছে। এগুলো হল- যমুনা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ও রূপালী ব্যাংক। কিন্তু বাকি ২১টি কোম্পানিই শেয়ার ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছে।
দীর্ঘদিন পর চলতি বছরের এপ্রিলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান এ বিষয়ে উদ্যোগ নেন। গত বছরের ৫ মে তার সভাপতিত্বে সরকারি মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তিন কোম্পানি তাদের শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে আগ্রহের কথা জানিয়েছে।
এগুলো হল- এসেনসিয়াল ড্রাগস, বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস ও লিক্যুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস। ওই বৈঠকে বাকি কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ছাড়ার ব্যাপারে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে অগ্রগতি নিজ নিজ মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয় জানতে চাইলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, ২০১০ সালে ভালো শেয়ারের অভাবে বাজারে বিপর্যয় হয়েছে। কারণ বাজারে যে পরিমাণ বিনিয়োগকারী এসেছে, বিপরীতে ওই পরিমাণ ভালো শেয়ার ছিল না।
তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ে সরকারি শেয়ার ছাড়া সম্ভব হলে বিশ্ববাসীর কাছে দৃষ্টান্ত হতো বাংলাদেশের শেয়ারবাজার। তিনি আরও বলেন, ঋণ নয়, শেয়ারবাজার থেকে টাকা নিয়ে সরকারও পদ্মা সেতুর মতো বড় বড় প্রকল্পের কাজ করতে পারত।
জানা গেছে, শেয়ার ছাড়তে যেসব কোম্পানি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সেগুলো হলো- বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন রুরাল পাওয়ার কোম্পানি, ডেসকো ও পাওয়ার গ্রিড, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতায়- তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, জালালাবাদ গ্যাস টিঅ্যান্ডটি সিস্টেম, পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ, ন্যাশনাল টিউবস, বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি, কর্ণফুলী পেপার মিলস ও ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন- বঙ্গবন্ধু সেতু, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের হোটেল সোনারগাঁও, বাংলাদেশ সার্ভিসেসের হোটেল শেরাটন (বর্তমানে ইন্টারকন্টিনেন্টাল), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের টেলিটক বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ক্যাবল শিল্প। |
722b6dd6-0015-49e2-a1f6-dfedbebda39f | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ২০২০ সালের মধ্যে দেশে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার সৃষ্টি হবে। ওই সময়ে দেশের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের উন্মোচিত হবে। তারপর আমরা নতুন জগতে চলে যাবো। গতকাল ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেডের একটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে আমাদের একটা শক্তিশালী পুঁজিবাজার সৃষ্টি হবে। যেখান থেকে আমরা বিভিন্ন বিনিয়োগে আগ্রহ নিতে পারবো।
মাত্র ৩ বছর বাকি; এর মধ্যেই পুঁজিবাজার শক্তিশালী হবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমরা সঠিক পথেই চলছি। যদি আরও কিছু পরিবর্তন আমরা করতে পারি, তবে এ দশকে মানে ২০২০ সালের মধ্যেই আমাদের অনেকগুলো নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, গত ২০ বছরে আমাদের দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের নিচে নামেনি। এ রকম রেকর্ড খুব কম দেশেরই রয়েছে।
মাইডাস সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, আশির দশকে এনজিও হিসেবে কার্যক্রম শুরু করেছিল মাইডাস। তখন বিদেশের আর্থিক সহযোগিতায় চলতো এ প্রতিষ্ঠান। এখন মাইডাসের নিজস্ব সম্পত্তি রয়েছে। তারা এখন স্বাবলম্বী- এটা খুবই প্রসংশনীয়। ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মাইডাস ফাইন্যান্স।
মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিডেটের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের চেয়ারম্যান রোকেয়া আফজাল রহমান। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড সফল উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইতোমধ্যে এ যাত্রা ১৬টি মাইলফলক অতিক্রম করেছে। সুদীর্ঘ ১৬ বছর ধরে উদ্যোক্তাদের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে আর্থিক সেবা ও সহায়তা দিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সুদৃঢ় কাঠামো বিনিমার্ণে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে।
রোকেয়া আফজাল রহমান বলেন, এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির আরেকটি কার্যকর ও জনপ্রিয় ক্ষেত্র পুঁজিবাজারে কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো। |
183cfffc-25e7-4484-b5e5-1e99d10c728d | ফয়সাল মেহেদী, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সুবাতাস বইছে ব্যাংক খাতে। ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে ব্যাংকিং খাতের সিংহভাগ ব্যাংকের শেয়ার দর। আর ব্যাংক খাতের উপর ভর করে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সূচক ও লেনদেন। পুঁজিবাজারেও চলছে রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার খেলা। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের ২৮ ব্যাংকের শেয়ার দর এক থেকে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হচ্ছে। তবে এ নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরেই অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার দর তলানিতে ছিল। এমনকি বেশকিছু ব্যাংকের শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের নিচে অবস্থান করে। এতে করে এ খাতে নতুন করে বিনিয়োগের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে ৩১ ডিসেম্ভর এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব বছর সম্পন্নœœ হওয়ায় ডিভিডেন্ড ঘোষণার সময়ও ঘনিয়ে এসেছে। সর্বশেষ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকেও বেশিরভাগ ব্যাংকের মুনাফা ও শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস বেড়েছে।
ফলে পুঁজিবাজারের মৌলভিত্তি হিসেবে খ্যাত ব্যাংকিং খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। এদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো নতুন করে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। আর ব্যাংকের আমানতের সুদ হার সর্বনিন্ম পর্যায়ে থাকায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে টাকা না রেখে শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে শেয়ার দরে।
এছাড়া পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয় নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল তাতে এ খাতে বিনিয়োগ করা নিয়ে বিনিয়োগকারীরা দ্বিধা-দন্দ্বে ছিলেন। ইতোমধ্যে সেই জটিলতারও অবসান হয়েছে।
সার্বিক দিক বিবেচনায় ব্যাংকিং খাতের শেয়ার দর বাড়ার যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়। তাই এ খাতের শেয়ার দর যেভাবে বাড়ছে তা স্বাভাবিক এবং এনিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বর্তমানেও এ খাত বিনিয়োগ অনুকূলে রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মশিহর সিকিউরিটিসের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এ. এল. ভট্টাচার্য্য টুটুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকিং খাতের শেয়ার দর যে অবস্থানে ছিল তাতে বাড়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। অন্যদিকে বাংকের আমানতের সুদের হারও সর্বনিন্ম পর্যায়ে রয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে টাকা না রেখে ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। যার প্রভাব পড়েছে বাজার ও শেয়ার দরে। এনিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ব্যাংকিং খাতে বর্তমানে মোট ৩০টি ব্যাংক রয়েছে। এরমধ্যে গতকাল এক থেকে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে ২৮ ব্যাংকের শেয়ার। সদ্য সমাপ্ত হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (৯ মাসের) অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকিং খাতের ৩০ ব্যাংকের মধ্যে ২০টির শেয়ারপ্রতি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে।
অন্যদিকে আট ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেলেও লোকসান বেড়েছে একটি ব্যাংকের। এছাড়া তৃতীয় প্রান্তিক শেষে অপর ব্যাংকটি মুনাফা থেকে ব্যাপক লোকসানে নেমেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিগত এক থেকে দুই বছেরের মধ্যে যে ব্যাংকগুলোর শেয়ার দর সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে তার মধ্যে- এবি ব্যাংক শেয়ার দর গত একবছরে মধ্যে ১৪.৭০ টাকা থেকে বেড়ে ২৬.৭০ টাকায় উঠে আসে। এদিন শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয় ২৫.৫০ টাকা দরে এবং যা সমাপনী দর ছিল ২৫.৪০ টাকা। একইভাবে আল-আরাফাহ ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার দর ১২.১০ টাকা থেকে বেড়ে ২০.১০ টাকায় উঠেছে।
আজ সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ২০ টাকা দরে এবং সমাপনী দর ছিল ১৯.৯০ টাকা। ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার দর ১৩.৪০ টাকা থেকে আজ ২০.১০ টাকায় উঠেছে। দিনশেষে শেয়ারটি লেনদেন হয় ২০ টাকা দরে এবং সমাপনী দর ছিল ২০ টাকা।
আজ সিটি ব্যাংকের শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৩৫.৯০ টাকা দরে এবং সমাপনী দর ছিল ৩৫.৬০ টাকা। অবশ্য এদিন শেয়ারটির দর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে, আর্থাৎ আগের কার্যদিবসে শেয়ারটি সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি ২২.৪০ টাকা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১১৯.৪০ টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৩৪.৫০ টাকা,
এক্সিম ব্যাংকের ১৫.৩০ টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের ১৬.০০ টাকা, আইসিবি ইসলামি ব্যাংকের ৫.৫০ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকের ২৬.৪০ টাকা, ইসলামি ব্যাংকের ৪২.৭০ টাকা, যমুনা ব্যাংকের ২০.২০ টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১৯.৫০ টাকা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৩০.০০ টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৫.৭০ টাকা, এনসিসি ব্যাংকের ১৫.৮০ টাকা,
ওয়ান ব্যাংকের ২১.২০ টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১৩.৯০ টাকা, প্রাইম ব্যাংকের ২১.৩০ টাকা, পূবালী ব্যাংকের ২৭.৩০ টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১৭.২০ টাকা, সোস্যাল ইসলামি ব্যাংকের ১৯.৭০ টাকা, সাউথইস্ট ব্যাংকের ২১.৫০ টাকা, স্টান্ডার্ড ব্যাংকের ১৪.৯০ টাকা,
ট্রাস্ট ব্যাংকের ২৬.৭০ টাকা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ২৫.১০ এবং উত্তরা ব্যাংকের ২৮.৪০ টাকা দরে শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ সবগুলো কোম্পানিরই শেয়ারপ্রতি দর এক থেকে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক আবু আহম্মদ বলেন, ধস পরবর্তী সময়ে সূচক ও লেনদেনের টানা পতন অব্যাহত থাকায় বাজারের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারই অবমূল্যায়িত্ব অবস্থায় ছিল। আর ব্যাংক খাতের শেয়ার দর এমন পর্যায়ে ছিল, যা নতুন করে বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করে। সাম্প্রতিক সময়ে লেনদেনের টানা উত্থানে গতি ফিরেছে শেয়ার দরে।
এছাড়া সমাপ্ত বছরে অধিকাংশর ব্যাংকেরই পরিচালন মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এতে পুঁঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ ব্যাংকের নিরীক্ষিত হিসাবে মুনাফা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সমাপ্ত বছরের জন্য ব্যাংকগুলোর ডিভিডেন্ডের হার বাড়তে পারে এমন প্রত্যাশায় ব্যাংকিং খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। দর বাড়ার এ প্রবণতা স্বাভাবিক বলেই মনে হয়। |
d97292f6-bd40-479a-b99d-1fdcc3d93cf1 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেছেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান গতি ও লেনদেন সামঞ্জস্যপূর্ণ কি-না সেদিকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নজর দিতে বললেন তিনি। তবে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও টেকসই পুঁজিবাজার গঠনই আমাদের কাম্য। এর জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, আজকের বাজার মূলধন অনুযায়ী, জিডিপির ২১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। এই হার ৫০ শতাংশে উন্নীত করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশের বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে যদি বাজারকে ব্যবহার করা হয়, তবে সেদিন আর দূরে নয়।
আজ সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, দীর্ঘ মন্দার পর পুঁজিবাজারে গতি ফিরে পেয়েছে। এখানে সূচক ও লেনদেনে কোনো সামঞ্জস্যহীনতা হচ্ছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ সেদিকে নজর দিতে হবে।
“স্বল্প মুনাফার লোভে কেউ যাতে দায়িত্ব ভুলে না যায়- সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।” ডিএসই চেয়ারম্যান বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে.এ.এম মাজেদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ডিএসইর দীর্ঘ পথচলা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান, সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, ডিএসইর সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু প্রমুখ
খায়রুল হোসেন বলেন, ২০১০ সালের ধসের পর পুঁজিবাজারে ব্যাপক সংস্কার হয়েছে। বাজার এখন একটি স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন আগামী ২০২০ সালে বাজার একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাবে। তার মতোই আমরাও এটি বিশ্বাস করি। |
acfc0c53-458e-41f4-bfda-1a64758839a3 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ডিএসই তালিকাভুক্ত হয়েছে সদ্য আইপিও শেষ হওয়া বস্ত্র খাতের কোম্পানি প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেড। আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে কোম্পানিটির তালিকাভুক্তির আবেদন অনুমোদন করা হয়। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে শেয়ার জমা করে ডিএসইতে রিপোর্ট জমা দিলে কর্তৃপক্ষ লেনদেন শুরুর তারিখ চূড়ান্ত করবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্র জানায়, এই কোম্পানির আইপিওতে ৭৫ কোটি টাকার বিপরীতে আবেদন পড়েছে এক হাজার ৫৮৩ কোটি ৩৯ লাখ এক হাজার ৮০০ টাকার; যা কোম্পানির চাহিদার তুলনায় ২১.১১ গুণ বেশি।
এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪৬৯ কোটি ৫৫ হাজার টাকার, ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৫৪ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার টাকার, এনআরবি কাছ থেকে ৪৪ কোটি ৬ লাখ টাকার, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাছ থেকে ২৮৩ কোটি ৪৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৭৩২ কোটি ১৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮০০ টাকার আবেদন পড়েছে।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি কোম্পানিটির আইপিওর লটারি ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির আইপিও আবেদন গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৫৮২তম সভায় এ কোম্পানির আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়।
আইপিওর মাধ্যমে প্যাসিফিক ডেনিমস পুঁজিবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা তুলেছে। কোম্পানিটি অভিহিত মূল্যে ১০ টাকা দরে ৭ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করছে।
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসা সম্প্রসারণ (পূর্ত নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি ক্রয়), ঋণ পরিশোধ এবং আইপিওর খরচ বাবদ এই টাকা ব্যয় করা হবে।
কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড। আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী,৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ শেষ হওয়া হিসাববছরে প্যাসিফিক ডেনিমসের শেয়ার প্রতি আয় ২ টাকা ৬৩ পয়সা; আর শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) ২২ টাকা ৫৯ পয়সা। |
9196ed07-f08b-468c-8cd9-cd1d1563a93e | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্ভিল্যান্স থেকে লেনদেনের স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কে কোন কোম্পানির শেয়ার কিনছে, তা সহজেই জেনে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। ডিএসইর বিরুদ্ধে এভাবে তথ্য পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যদিও তারা বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগকারীদের তথ্য অন্যত্র পাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার একটি কমিটি করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক কায়কোবাদের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ডিএসই সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে অধ্যাপক কায়কোবাদ বৃহস্পতিবার বলেন, আমার নেতৃত্বে কমিটি গঠনের বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তিনি বলেন, বর্তমানে বাজার বড় হচ্ছে। আর ডিএসইর বোর্ড অত্যন্ত সচেতন। ফলে কোনো অভিযোগ এলে তারা তদন্ত কমিটি করতেই পারে।
জানা গেছে, শেয়ারবাজারে সবচেয়ে স্পর্শকাতর হল স্টক এক্সচেঞ্জের সার্ভিল্যান্স। কারণ দৈনন্দিন লেনদেনের সব তথ্য এখানে থাকে। এ জন্য সর্বোচ্চ গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়, যাতে বাইরে তথ্য ফাঁস না হয়।
কোনো বড় ব্রোকারেজ হাউস, মিউচুয়াল ফান্ডসহ কোন বিনিয়োগকারী কোন কোম্পানির শেয়ার কী মূল্যে কিনছে, তার সব তথ্য মুহূর্তেই এখান থেকে জানা যায়। এসব কারণে সার্ভিল্যান্স রুমে স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ড সদস্যদেরও প্রবেশের অনুমতি নেই। সব সময় সিসিটিভি দিয়ে সংরক্ষিত সার্ভিল্যান্স রুমটি চিফ রেগুলেটর অফিসারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এ টিম সরাসরি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে দায়বদ্ধ।
টিমে যেসব কর্মকর্তা কাজ করছেন, তারা লেনদেনের সময় মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু সর্ষের মধ্যেও ভূত আছে। এত সতর্কতা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে সার্ভিল্যান্স থেকে বিনিয়োগকারীদের তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও সাধারণ কারও পক্ষে তা অসম্ভব। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে ভেতরের কেউ না কেউ তথ্য ফাঁসের সঙ্গে জড়িত।
এর আগে ২০১১ সালে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু তাতে খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ ছাপা হলে ডিএসই বোর্ডের নজরে আসে। এরপর গত রোববার অনুষ্ঠিত ডিএসইর বোর্ড সভায় অভিযোগটি উপস্থাপন করা হলে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়।
তবে এ বিষয় জানতে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি। তবে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি ম্যানেজমেন্টের।
এ ব্যাপারে তারা ভালো বলতে পারবেন। তবে অধ্যাপক কায়কোবাদের নেতৃত্বে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতেও স্বতন্ত্র পরিচালক রয়েছেন। শেয়ারধারী পরিচালকদের এখানে কোনো ভূমিকা নেই।
এদিকে ডিএসইর কাজে গতি আনতে ম্যানেজমেন্টে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। কোম্পানি সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ উল্লাহকে ইন্টারন্যাল অডিটের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক আসাদুর রহমানকে কোম্পানির সেক্রেটারির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সুত্র: যুগান্তর |
19ffe36c-28d7-40f8-ae8e-eb3b2a1e5985 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার দীর্ঘ দিন ধরে নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে বিদ্যমান জটিলতা কাটিয়ে যখন বাজার স্বাভাবিক গতিতে ফিরতে শুরুতে করছে ঠিক সেই মুহুর্তে ফের কারসাজির খপ্পরে পড়েছে পুঁজিবাজার। ফলে গত কয়েক কার্যদিবস ধরে বাজারে অস্থিতিশীল আচরন করেছে। কোন সুস্থ পুঁজিবাজারে আচরন ১০৮ সুচকের দরপতন নয়। বিনিয়োগকারীরা গত কয়েক দিনের বাজারকে কারসাজি বাজারের লক্ষণ বলে মনে করছেন। তাছাড়া বিএসইসি, ডিএসই, সিএসইসি নিরব আচরন করছেন।
তাদের নিরব আচরন মেনে নিতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। ফলে ফের বাজার নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের। তাছাড়া গত ১২ কার্যদিবসের ব্যবধানে ২ হাজার কোটি থেকে লেনদেন এসেছে সাড়ে ৮ শত কোটির ঘরে। ফলে লেনেদেন কমে যাওয়ায় দু:চিন্তায় পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে সরকার নানামুথী পদেক্ষেপ নিলেও অদৃশ্য শক্তির কাছে বার বার বাজার জিম্মিী হয়ে পড়েছে। কিন্তু স্বার্থান্বেসী সিন্ডিকেট চক্রের কারণে পুরো সফলতার মুখ দেখেতেছে সরকারসহ নীতি নির্ধারকরা।
২০১০ সালের ধস পরবর্তী সময়ে বাজার বারবার স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিলেও তা স্থায়ী হয়নি। বরং এই ইঙ্গিতে যখনই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আশায় বুক বাধেন, তখনই কারসাজির হোতারা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু নয় বলে ধারণা করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, কোন ধরনের মৌলিক পরিবর্তন ছাড়াই বাজারে সূচকের উলম্ফন এবং কয়েকদিনের ব্যবধানেই এর নিম্নগতি কারসাজিরই ইঙ্গিত করে। এ পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশনের (বিএসইসি) ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
তাদের মতে, আবারো পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কায় আতঙ্কিত সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। আর এজন্য বরাবরের মতো এবারো অভিযোগের তীর কারসাজি চক্রের দিকে। তারা জানান, সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর কারসাজি থেকে কোনোভাবেই বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। এ কারসাজি চক্র পরিকল্পিতভাবে বাজার বিপর্যস্ত করছে।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দাবি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংস্থাটি সোচ্চার। কিন্তু বাস্তবে এ বাজার সিন্ডিকেটমুক্ত হয়নি। তাই ভবিষ্যতে সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার উপহার দিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আরো সোচ্চার হতে হবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
দীর্ঘ অস্থিরতা কাটিয়ে দেশের পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলেও এখনো আস্থা সংকট পুরোপুরি কাটেনি। সিন্ডিকেট চক্রের অনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে নানা সংশয়ে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
ইতিপূর্বে বাজার কারসাজিকারীরা অনৈতিক কর্মকান্ড করেও শাস্তি না পাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা বাজারের উপর এখনো পুরোপুরি আস্থা পাচ্ছেন না। এছাড়া বর্তমান বাজারে সিন্ডিকেট চক্রের অবাধ পদচারণা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আরো ভাবিয়ে তুলেছে। যে কারণে অনেকে এখনো নিজের পকেটকে নিরাপদ মনে করছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া কিছু অসৎ পুঁজিপতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা লেনদেনের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যে কারনে গত সাড়ে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করেও বাজারকে স্থিতিশীল করা যায়নি।
একটি চক্র খুব সহজেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শেয়ারের দর নিয়ন্ত্রন করে চলেছে। আর লেনদেন করতে না পারা বিনিয়োগকারীরা বসে বসে তাদের হাতে থাকা শেয়ারের দর কমতে দেখছে। সিন্ডিকেট চক্রটি কি অপ্রতিরোধ্য, এমন প্রশ্ন এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
ফলে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে উভয় পুঁজিবাজারের সূচক পতনের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে বলে মনে করছেন বাজারর সংশ্লিষ্টরা। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন কোন কারনে বাজার প্রতিনিয়ত দরপতন হচ্ছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। বরং অদৃশ্য শক্তিতে ঘুরপাত খাচ্ছে পুঁজিবাজার।
র্যাপিড সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী আবুল কাশেম বলেন, ২০১০ সালের ধসের রেশ এখনও কাটেনি তার। সেজন্য আগের পোর্টফোলিও সমন্বয় করতে যাননি তিনি। জমানো চার লাখ টাকা নিয়ে কিছুদিন আগে সাজিয়ে ছিলেন নতুন পোর্টফোলিও। ভেবেছিলেন মাঝেমধ্যে কারেকশন হলেও এবার বাজারে ধস নামবে না। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে বদলে গেছে এ বিনিয়োগকারীর ধারণা। কারণ ইতোমধ্যে লোকসানে পড়েছেন তিনি। সংশোধনের বদলে ধস তার সব ভাবনাকে এলোমেলো করে দিয়েছে।
বাজার কারেকশন বা শেয়ারের দর সংশোধন হবে এটা চেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। সেজন্য তারা মানসিকভাবে প্রস্তুতও ছিলেন। কিন্তু এর বদলে পুঁজিবাজারে ধস নেমে আসবে তারা এমন ভাবতে পারেননি।
তারা অভিযোগ করেন, বাজারে আবারও খেলোয়াড়রা সক্রিয় হয়েছেন। তারাই বাজার নিয়ে খেলা করছেন। আর এ কারণেই বাজার তার স্বাভাবিক গতি হারিয়েছে। বাজারের লাগাম টেনে ধরার জন্য তারা সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানান।
মশিউর সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী বজলুর রহমান বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে আবার পুঁজিবাজারে ফিরে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম এবার আমরা বাজার থেকে প্রতারিত হব না। কিন্তু এখন দেখছি ধারণা ভুল। প্রতিদিনই লোকসানের বোঝা ভারী হচ্ছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে পুঁজিবাজারে আবারও আগের মতো হয়ে যেতে পারে’ বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আইসিবির বিনিয়োগকারী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি চক্র আবারও বাজার নিয়ে কারসাজি শুরু করেছে। তারা শেয়ারের দর বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে বাজার থেকে বের হয়ে যায়। আর শেষ পর্যন্ত এর ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। ‘পুঁজিবাজারের আগের অবস্থা আর এখনের অবস্থার মধ্যে খুব একটা ফারাক নেই।’
অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী মাহাবুবুল আলম বলেন, বর্তমান বাজার নিয়ে কারসাজি চলছে। বাজার স্থিতিশীল হতে না হতে কারসাজির চক্রের নজর পড়েছে বাজারে। এছাড়া এটা কোন স্থিতিশীল বাজারের লক্ষণ নয়। যেখানে ১০০ শত উপরে দরপতন হয় সেটা স্বাভাবিক বাজারের লক্ষণ হয় কি ভাবে। বর্তমান বাজার পুরোপুরি কারসাজি চক্র নিয়ন্ত্রক করছে। |
e1d0fb88-a2dc-4873-93d9-888311dbf178 | ফয়সাল মেহেদী, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ফের শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস কারসাজি করছে স্বল্পমূলধনী কোম্পানি লিবরা ইনফিউশনস লিমিটেড। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের এ কোম্পানি চলতি অর্থবছরের প্রকাশিত অর্ধবার্ষিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হলেও তা আয় হিসাবে দেখিয়েছে। এর আগেও ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির বিরুদ্ধে মুনাফা ও শেয়ারপ্রতি আয়ে (ইপিএস) গড়মিল করার অভিযোগ উঠেছিল।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, আজ ডিএসই’র ওয়েবসাইটে লিবরা ইনফিউশনসের চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকের (জুলাই-ডিসেম্বর’ ১৬) অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে কোম্পানিটি ছয় মাসের মোট শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দেখিয়েছে ০.৭৮ টাকা।
তবে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বা প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’ ১৬) শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছিল ৫.৭৮ টাকা। আর পরবর্তী তিন মাসে বা দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’ ১৬) শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৪.৭৪ টাকা। সে হিসাবে দুই প্রান্তিক মিলে অর্ধবার্ষিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান হওয়ার কথা ১.০৪ টাকা। অথচ কোম্পানিটি অর্ধবার্ষিকে শেয়ারপ্রতি আয় দেখিয়েছে ০.৭৮ টাকা। এদিকে এ গড়মিল তথ্য ডিএসইরও নজরে এসেছে। ফলে কোম্পানির প্রোফাইলে অর্ধবার্ষিকের প্রতিবেদন ‘লাল চিহ্ন’ দেয়া হয়েছে।
এদিকে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি পর্ষদ সভার আয়োজন করতে চাইলে তা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় পত্রিকায় মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হিসেবে প্রকাশ করার বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। লিবরা ইনফিউশনস ঘোষণা না দিয়েই ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের সভা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কবে-কখন পর্ষদ (বোর্ড) সভা করেছে তার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অথচ মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হওয়ার সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে আইন লঙ্গন করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান-উর-রশীদ চৌধুরি দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, ‘লিবরার বিরুদ্ধে মুনাফা ও ইপিএস কারসাজির অভিযোগ আগেও এসেছে। বিএসইসি কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি। তাই আবারো একই ধরনের অন্যায় করার সাহস পেয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিলে বার বার কারসাজি করার সাহস পেত না’। এসব অনিয়মে বলির পাঠা সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
জানা গেছে, এর আগের অর্থবছরেও (২০১৫-১৬) লিবরা ইনফিউশনসের বিরুদ্ধে মুনাফা ও ইপিএস কারসাজির অভিযোগ উঠেছিল। ওই অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর’ ১৫) এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দেখানো হয়েছিল ৮.১৪ টাকা। অথচ আলোচ্য হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’ ১৫) শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৭.৬৬ টাকা। ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ না করে মুনাফা হিসেবে দেখানোর কারণে ওই অর্থবছরের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে লিবরার মুনাফা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়।
আর ওই আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর ৯ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ারদর প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে ডিএসই লিবরার আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ওই সময় একটি প্রতিবেদন তৈরি করে গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে জমা দেয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী কারসাজি করে মুনাফা বেশি দেখানো হয়েছে মনে করে দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসই’র এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের ভুল তথ্য দেওয়া কোম্পানিগুলো আমাদের নজরে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে কোম্পানির তথ্যে কোনো গড়মিল থাকলে তা লাল কালিতে চিহ্নিত করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে গড়মিল বা ইচ্ছাকৃত কারসাজির কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে’। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ |
e42604df-6ac3-48ed-a1de-c20ff54d39a3 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ঢাকা চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে প্রকৌশল খাতের অর্ধেকের বেশি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। সর্বশেষ প্রকাশিত অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ খাতের ৫১ শতাংশ কোম্পানির ইপিএস কমেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে আরো বেশি কোম্পানির মুনাফা নিম্নমুখী ছিল।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রকৌশল খাতে শেয়ারবাজারে ৩৩টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে। এর মধ্যে অর্ধবার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করেছে ৩১টি কোম্পানি। বড় মূলধনিসহ ১৫টি কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। ফলাফল আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে খারাপ হয়েছে ১৬টি কোম্পানির।
এর মধ্যে চার কোম্পানির লোকসান আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে। এক বছর আগে মুনাফায় থাকলেও এ বছর প্রথমার্ধে লোকসানে পড়েছে একটি কোম্পানি। বিপরীতে আগের বছর একই সময়ে লোকসানে থাকলেও মুনাফায় ফিরেছে তিনটি কোম্পানি।
খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা ও অবকাঠামো উন্নয়নের গতি কমে আসায় বেশ কয়েকটি কোম্পানির মুনাফা কমেছে। পাশাপাশি বেতন-ভাতাসহ কোম্পানির পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টিও তুলে ধরেছে তাদের কেউ কেউ।
লোকসানে থাকা সুহূদ ইন্ডাস্ট্রিজের কোম্পানি সচিব মো. আনিসুর রহমান বলেন, বিদ্যুত্ ও গ্যাসের সমস্যার কারণে কারখানার উত্পাদন বাড়ানো যায়নি। নতুন একটি ইউনিটের কাজ সম্পন্ন হলেও বিদ্যুতের অভাবে সেখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। অন্যদিকে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ পরিচালন ব্যয় বেড়েছে। সব মিলিয়েই কোম্পানির লোকসান বেড়েছে।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে মুনাফা হ্রাসে বা লোকসান বৃদ্ধিতে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল সরকারি কোম্পানিগুলো। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সরকারের চারটি প্রকৌশল কোম্পানির মধ্যে দুটির শেয়ারপ্রতি লোকসান আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে।
এর মধ্যে ন্যাশনাল টিউবস প্রথমার্ধে শেয়ারপ্রতি লোকসান করে ২ টাকা ৭৪ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যেখানে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৫৪ পয়সা। এটলাস বাংলাদেশের শেয়ারপ্রতি লোকসান ১ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের বছরের প্রথমার্ধে ছিল ৯১ পয়সা। অন্যদিকে লোকসান না দেখালেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় মুনাফা কমেছে রেনউইক যজ্ঞেশ্বর ও ইস্টার্ন কেবলসের। এর মধ্যে ইস্টার্ন কেবলসের ইপিএস ৪ পয়সা থেকে ৩ পয়সা ও রেনউইকের ইপিএস ১ টাকা ৫৩ পয়সা থেকে ১ টাকা ১৭ পয়সায় নেমে গেছে।
প্রথমার্ধে প্রকৌশল খাতে লোকসানে পড়া অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কে অ্যান্ড কিউ। এক বছরের বেশি সময় ধরে উত্পাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিটি জুলাই-ডিসেম্বর প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান দেখিয়েছে ১ টাকা ২৯ পয়সা, আগের বছরেরও একই সময়ে লোকসানে ছিল কোম্পানিটি।
অন্যদিকে গোল্ডেন সনের অর্ধবার্ষিক শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২৭ পয়সা, আগের বছর যেখানে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৪২ পয়সা। পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিক মুনাফায় থাকলেও রফতানিতে সুবিধা করতে না পারায় চলতি বছর বিপাকে পড়েছে এ কোম্পানি। এদিকে সুহূদ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারপ্রতি লোকসান ১ পয়সা থেকে বেড়ে ৮ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।
মুনাফা কমে যাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিএসআরএম লিমিটেডের অর্ধবার্ষিক ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ১ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ২৯ পয়সা। বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকসের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ২২ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ১ টাকা ৭৬ পয়সা। আফতাব অটোমোবাইলের ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪২ পয়সা, আগের বছর ছিল ১ টাকা ৪৬ পয়সা।
এর বাইরে মুনাফা কমে বিডি ল্যাম্পসের ইপিএস ১ টাকা ১৪ পয়সা থেকে হয়েছে ৮২ পয়সা, এ্যাপোলো ইস্পাতের ইপিএস ১ টাকা ৬৫ পয়সা থেকে ১ টাকা ৩৬ পয়সা, ইয়াকিন পলিমারের ৬৬ পয়সা থেকে ৫৮ পয়সা ও অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজের ইপিএস ৬৭ পয়সা থেকে ৬২ পয়সায় নেমে আসে।
এদিকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোম্পানির মুনাফা কমলেও আগের বছরের তুলনায় ভালো ফলাফল দেখিয়েছে ৪৯ শতাংশ প্রকৌশল কোম্পানি। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধের ফলাফলে সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছে ইস্পাত কোম্পানি আরএসআরএম লিমিটেড। অর্ধবার্ষিক বিক্রয় দ্বিগুণে উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি এই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ১০৩ শতাংশ। চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বর প্রান্তিকে এর ইপিএস হয় ৩ টাকা ১২ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৫৪ পয়সা।
ইস্পাত খাতের অন্য কোম্পানি বিএসআরএম স্টিলসের মুনাফা বেড়েছে ২০ শতাংশ। জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয় ৩ টাকা ৬৭ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ৫ পয়সা। প্রথমার্ধে ভালো করেছে বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমও (বিবিএস)। চলতি বছর কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৫৩ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ১৭ পয়সা।
জানতে চাইলে বিবিএস লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মহসিন বলেন, অর্ধবার্ষিকে সহযোগী কোম্পানি বিবিএস কেবলসের আয় যুক্ত হওয়ায় কোম্পানির মুনাফা প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এছাড়া করপোরেট সেক্টরে তাদের মূল পণ্য প্রি ফ্যাব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং স্ট্রাকচারের চাহিদাও বাড়ছে। বর্তমানে গুলশানে নাসা গ্রুপের ১৫ তলা একটি ভবনের কাজ করছে বিবিএস।
এর বাইরে আয় বৃদ্ধির তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের ইপিএস ৫৮ পয়সা থেকে ৬৪ পয়সা, ইফাদ অটোসের ২ টাকা ৬৫ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৪ পয়সা, ন্যাশনাল পলিমারের ১ টাকা ৩৭ পয়সা থেকে ১ টাকা ৮১ পয়সা, বিডি অটোকারসের ১৩ পয়সা থেকে ১৫ পয়সা, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৩৫ পয়সা থেকে ৪৫ পয়সা, রংপুর ফাউন্ড্রির ১ টাকা ৮৮ পয়সা থেকে ১ টাকা ৯৯ পয়সা ও কেডিএস অ্যাকসেসরিজের ইপিএস ১ টাকা ৮ পয়সা থেকে ১ টাকা ২৮ পয়সায় উন্নীত হয়েছে।
এছাড়া আগের বছরের একই সময়ে লোকসানে থাকলেও চলতি বছরের অর্ধবার্ষিকে মুনাফায় ফিরেছে জিকিউ বলপেন, দেশবন্ধু পলিমার ও আজিজ পাইপস। এর মধ্যে জিকিউ বলপেনের ইপিএস হয়েছে ১৭ পয়সা, যেখানে আগের বছর শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৩৫ পয়সা,
দেশবন্ধু পলিমারের ইপিএস হয় ৩৮ পয়সা, আগের বছর এর ঋণাত্মক ইপিএস ছিল ৯ পয়সা, আর আজিজ পাইপসের ইপিএস হয়েছে ৩১ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৭৫ পয়সা।
বণিক বার্তা |
7c0f28e7-2b34-49f9-b67a-394aee7ef11d | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: অবশেষে আপন ঠিকানায় যাচ্ছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরের আগারগাঁওয়ে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত নতুন অফিস ভবনে আগামী রোববার থেকে সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে সংস্থাটি। সে অনুযায়ীই চলছে প্রস্তুতি। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি বিএসইসির নবনির্মিত ১০তলা ওই ‘সিকিউরিটিজ কমিশন ভবন’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার বিএসইসি’র বর্তমান (পুরাতন) অফিসে গিয়ে দেখা যায়, নিজস্ব ভবনে যাওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন। চলছে ফাইল-পত্র গুছানোর কাজ। জানা গেছে, ইতোমধ্যে নতুন ভবনে কার্যক্রম শুরু করেছে কমিশনের সার্ভিল্যান্স বিভাগ। এ সপ্তাহের মধ্যে অন্যান্য বিভাগগুলোও স্থানান্তর করা হবে। সবকিছু ঠিক-ঠাক থাকলে রোববারই নতুন ভবনে সকল কার্যক্রম শুরু করবে বিএসইসি।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে জানান, কমিশনের সবগুলো বিভাগই ধাপে ধাপে নতুন ভবনে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে আমাদের সার্ভিল্যান্স বিভাগ নতুন ভবনে অফিস শুরু করেছে। পরিকল্পনা রয়েছে, আগামি রোববার থেকে নিজস্ব ভবনে কমিশনের সকল বিভাগের কার্যক্রম শুরু করার এবং সেভাবেই প্রস্তুতি চলছে’।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ৮ জুন এ কমিশন গঠন করার পর থেকে রাজধানীর দিলকুশার জীবন বীমা টাওয়ারে ভাড়া করা অফিসে সকল দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে সংস্থাটি। তবে ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রস্তাবিত ১০০ ফুট রাস্তার পাশে বিএসইসি নিজস্ব ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএসইসির নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে একতলা বেজমেন্টসহ ১০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ভবনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (এনডিই) সঙ্গে চুক্তি করে বিএসইসি ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। শূন্য দশমিক ৩৩ একর নিজস্ব জমির ওপর ‘সিকিউরিটিজ কমিশন ভবন’ নির্মাণে ব্যয় হয় ৬০ কোটি টাকা।
নকশা অনুযায়ী, এ ভবনের মোট আয়তন ৮৯ হাজার ২৫০ বর্গফুট। বিএসইসির নিজস্ব অফিস ছাড়াও অত্যাধুনিক এ ভবনে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের কনফারেন্স হল, বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারের এজলাস, আধুনিক লাইব্রেরি, ডে-কেয়ার সেন্টার, ক্যান্টিনসহ অন্যান্য সুবিধা। ভবনের যাতায়াতকারীদের সুবিধার্থে রয়েছে তিনটি আধুনিক লিফট।
এছাড়াও সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ ভবনের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে রয়েছে উচ্চ শক্তিসম্পন জেনারেটর ও সৌরশক্তির ব্যবস্থা। আশা করা হচ্ছে, সম্পূর্ণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিএসইসি ভবন প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিএসইসি’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। |
87e24f40-b0ba-4a45-9835-4c3397f95acd | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ারের দর কোন কারন ছাড়াই টানা বাড়ছে। ফলে এ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি বাজারে নানামুখী গুজব ছড়িয়ে পড়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সকে ঘিরে।
আর গুজবের উপর ভর করে শেয়ারের দর টানা বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, টানা দর বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির উপর কোন নজরধারী নেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ন্ত্রন কাদের হাতে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আর্থিক খাতের লংকাবাংলা ফাইন্যান্স শেয়ার নিয়ে ভিত্তিহীন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে। এসব খবরের উপর ভিত্তি করে কোম্পানিটির শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যদিও কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দাবী, যে খবর ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ গুজব। সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স রাইট ইস্যু করবে।
এদিকে টানা শেয়ারের দর বাড়ার বিষয় ডিএসই এবং সিএসই’র চিঠির জবাবে দর বাড়ার কোন কারন নেই বলে জানিয়েছেন খোদ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ অস্বাভাবিক হারে শেয়ারদর বাড়লেও তার কোন কারণ জানে না লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত ৬১ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২৯.৭০ টাকা, যা শতকরা হিসেবে প্রায় ১০৯ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি; যা অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ নভেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৭ টাকা ৩০ পয়সা। সর্বশেষ কার্যদিবসে (বৃহস্পতিবার) যার সমাপনী দর ছিল ৫৭ টাকা। সে হিসেবে, ৬১ কার্যদিবসে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় ১০৯ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে দর বাড়ার শীর্ষে ছিল লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। এদিন শেয়ারটির দর চার টাকা ১০ পয়সা বা সাত দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়েছে। শেয়ারটি সর্বশেষ ৫৭ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। এদিন কোম্পানিটি চার হাজার ৭৩১ বারে এক কোটি তিন লাখ ৭২ হাজার ৪০৭টি শেয়ার লেনদেন করে। যার বাজার দর ছিল ৫৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
জানতে চাইলে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স কোম্পানি সচিব মোস্তফা কামাল বলেন, ‘কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। কে বা কারা বাড়াচ্ছে, তা-ও আমাদের জানা নেই। আমি এর বেশি কিছু বলতে রাজি না।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লংঙ্কাবাংলা ফিন্যান্সের এক কর্মকর্তা দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, আমার দৃষ্টিতে শেয়ারের দর বাড়ার বা কমার কোন কারন আমাদের জানা নেই। তবে কিজন্য বাড়ছে তা আমরা বুঝি না। ফেসবুকে আমাদের কোম্পানি সম্পর্কে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজব হিসেবে যেসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে এর সাথে কোম্পানির কোন সম্পর্ক নেই। আমরা বিষয়টি বিএসইসি, ডিএসই এবং সিএসই-কে জানিয়েছি। তবে কারা এ গুজব ছড়াচ্ছে তা আমরা ধরতে পারি নাই।
এদিকে ২০১৬ সালের অক্টোবরে লংকাবাংলা ফিন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদ রাইট শেয়ার ও সেকেন্ড নন-কনভারটেবল জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নেয়। কোম্পানিটি ২:১ অনুপাতে অর্থাৎ দুটি সাধারণ শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি রাইট শেয়ারের মূল্য ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। লংকাবাংলা ফিন্যান্স বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদনসাপেক্ষে রাইট শেয়ার ও বন্ড ইস্যু করতে পারবে।
‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০০৬ সালে। লংকাবাংলা ফিন্যান্সের মোট শেয়ারের ৩৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে। প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে যথাক্রমে ৩১ দশমিক ৮১ ও তিন দশমিক ৭৬ শতাংশ। বাকি ২৯ দশমিক ৬০ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, পুঁজিবাজারে ইদানিং হরহামেশা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে এ কোম্পানিটির শেয়ার নিয়েও গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। আর কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বলেছে, এসব গুজব ভিত্তিহীন। পরিস্থিতি বিবেচনায় বোঝা যাচ্ছে শেয়ার নিয়ে কারসাজি চলছে। এ অবস্থায় সাধারন বিনিয়োগকারীর স্বার্থে কোম্পানির লেনদেন নজরদারীতে রাখা উচিত।
পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারি তদন্ত কমিটির প্রধান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি হযবরল অবস্থা। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিকে পুঁজিবাজার বলা যায় না। এটা একটা খেলার বাজার হয়ে গেছে। আমি মনে করি, এখন যেসব শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে, তা কোম্পানির নিজেদের লোকেরাই করছেন। তারা নিজেরাই লেনদেন করে শেয়ারের দর বাড়াচ্ছেন। আর দর বাড়িয়ে একসময় তারা এই শেয়ারগুলো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে চলে যাবেন। অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত এর দায়ভার নিতে হবে সাধারণ বিনিয়োগকরীদের। বিষয়টি বিনিয়োগকারীদেরই বোঝা উচিত।
এ প্রসঙ্গে আরিফ হোসেন নামে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, তালিকাভুক্তির পর থেকেই এ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে নানা ধরনের গুজব শুনে আসছি। কোনো কারণ ছাড়াই বেশ কিছু দিন ধরে এ কোম্পানির শেয়ারের দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বিষয়টি সন্দেহজনক।
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, যারা বেশি দামে শেয়ার কেনেন, আমার মতে তারা বিনিয়োগকারী নন। তারা হচ্ছেন ডে ট্রেডার। এরা বেশি দামে শেয়ার কিনে আরও বেশি দামে বিক্রির মনোভাব পোষণ করেন। কিন্তু এর ফল শুভ হয় না।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এদের চরম মূল্য দিতে হয়। কারণ শেয়ারের দাম যতই বাড়–ক না কেন, একটা সময়ে দাম আবার নি¤œমুখী হতে শুরু করে। ফলে বেশি দামের শেয়ার সর্বশেষ যার কাছে থাকে, তাকেই ভোগান্তি পোহাতে হয়। তিনি বলেন, যারা প্রকৃত বিনিয়োগকারী, তারা সবসময় তুলনামূলক কম দামে শেয়ার কিনতে চান। আর এটাই হওয়া উচিত। |
1cd20d8b-a719-4b14-b56b-4b737c64d681 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বুক-বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসছে সেবা ও আবাসন খাতের কোম্পানি শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেড। এজন্য আগামী ১৯ এপ্রিল রোড-শো’র আয়োজন করেছে কোম্পানিটি।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্দেশ্য ও শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে কোম্পানিটির কো-অর্ডিনেটর (এইচআর অ্যান্ড ব্র্যান্ডিং) সৈয়দ নুরুল হাসান শাহান বলেন, ‘দেশের সেবা ও আবাসন খাতের এক বিশ্বস্ত নাম শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেড (এসএআরই)। সেবা ও আবাসন খাতের কোম্পানি গুলোর মধ্যে শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেড (এসএআরই) শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান।’
তিনি বলেন, ‘উত্তম আবাসন উত্তম জীবন’ শ্লোগান নিয়ে শামসুল আলামিন গ্রুপের এ কোম্পানিটি যাত্রা শুরু করে ২০০৩ সালে। সুনামের সঙ্গে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এসএআরই। কাজ করছে ১৬ কোটি মানুষের আবাসন চাহিদা পুরনে।
নুরুল হাসান শাহান জানান, ‘শহর এবং উপ-শহরের জনগনের আবাসন সমস্যা দুর করার লক্ষ্যে কাজ করছে কোম্পানিটি। বর্তমানে নগরীতে উন্নত মানের আবাসন সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। এ কোম্পানির আবাসিক এবং বানিজ্যিক প্রকল্পগুলো নগরীর সবচেয়ে সুবিধা জনক জায়গায় অবস্থান করছে। যা অন্যদের চেয়েও ভিন্নতা আনয়ন করে।’
কোম্পানিটির উর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা আরও জানান, ‘শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেড সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো সাধারন মানুষদের সামর্থ্যরে মধ্যে সর্ব্বোচ গুনগত মানের আবাসন ব্যবস্থা করে থাকে। আমাদের প্রকল্পগুলোর বর্তমান অবস্থানে জনগনের আস্থা অর্জন করেছে। পাশাপাশি আমাদের মার্কেটিং কার্যক্রমের কারনে বর্তমানে আমাদের ব্যান্ড সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেছে। আমরা পুঁজিবাজারে আসার অপেক্ষায় রয়েছি। পুঁজিবাজারে আসার মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রম আরো বিস্তৃতি লাভ করবো।’
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করা। এক্ষেত্রে শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে শতভাগ ভূমিকা রাখবে।’
কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, এসএআরই’র চলমান বানিজ্যিক ও আবাসিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে আলামিন আপন হাইট (শ্যামলী, ঢাকা), আলামিন রজনীগন্ধা (ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট), আলামিন স্নো-ড্রপ, (বসুন্ধরা, ঢাকা), আলামিন আনগুর (গুলশান-১, ঢাকা), আলামিন তন্ময় (বারিধারা মডেল টাউন), আলামিন মেট্রো সেন্টার (ফকিরাপুল, ঢাকা), আলামিন আজমল ফেলিসিটা (মিরপুর, ঢাকা), আলামিন আইকন সেন্টার (প্রগতিসরণী, ঢাকা)।
এসএআরই’র শেষ হওয়া বানিজ্যিক ও আবাসিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- আলামিন রয়েল ভিলা (উত্তরা-১৩ ঢাকা), আলামিন স্পেøন্ডর (গুলশান, ঢাকা), আলামিন অরচিড (উত্তরা-১৩, ঢাকা), আলামিন চন্দ্রিমা (মাটিকাটা, ঢাকা), আলামিন লিজেন্ড (নিকেতন, ঢাকা), আলামিন গ্র্যান্ডিয়ার (বনানী, ঢাকা), আলামিন এজে টাওয়া (কারওয়ান বাজার, ঢাকা), আলামিন প্যারাগন (উত্তরা, ঢাকা), আলামিন মিলেনিয়াম টাওয়ার (কাকরাইল, ঢাকা), আলামিন সুপার নোভা (বনানী, ঢাকা)।
এদিকে, শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেটের তালিকাভুক্তির এ প্রক্রিয়ায় ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে অ্যালায়েন্স ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড। কোম্পানিটির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপকালে অ্যালায়েন্স ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম (এফসিএমএ) বলেন, ‘শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট একটি ফান্ডামেন্টাল কোম্পানি। এ জাতীয় কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসলে বাজার শক্তিশালী হবে। আর তাই শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেডকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে আমরা কাজ করছি।’
নজরুল ইসলাম জানান, ‘কোম্পানিটির বর্তমানে ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। এর মধ্যে ৬ টির কাজ চলছে। বাকী প্রকল্পগুলোর জন্য পুঁজি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে আইপিওতে যেতে চায় কোম্পানিটি। এর বাইরে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ২০ কোটি টাকা খরচের পরিকল্পনা আছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে আইপিও অনুমোদন হলে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আইন অনুযায়ী বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আসতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আর্থিক প্রতিবেদন তুলে ধরার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ১৯ এপ্রিল রোড শো অনুষ্ঠিত হবে।’
জানা গেছে, আগামী ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে কোম্পানিটির রোড শো আয়োজন করা হয়েছে। এদিন পুঁজিবাজারের ইলিজিবল ইনভেষ্টরদের উপস্থিতিতে রোড শো’তে আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।
কোম্পানির এই রোড শো’তে অংশ নেবে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যান্ড পোর্টফোলিও ম্যানেজার, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, স্টক ডিলারস, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি, অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার, অলটারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড, রিকগনাইজড পেনশন অ্যান্ড প্রভিডেন্ড ফান্ড এবং কমিশনের অনুমোদিত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
কোম্পানির প্রসপেক্টাসের তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যায়, আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ৮০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। উত্তোলিত এ অর্থে কোম্পানিটি ব্যাংক ঋণ, তাদের চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং আইপিও প্রক্রিয়ায় খরচ করবে। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৩৫ কোটি টাকা।
গত ৫ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষনে দেখা যায়, ৩০ জুন, ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ৪২.৪২ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৯০ টাকা। এর আগের সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) ছিল ৪০.৫২ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.২৫ টাকা।
এছাড়া ২০১৪ সালে কোম্পানির ইপিএস ছিল ২.৮৯ টাকা এবং এনএভি ছিল ৪০.৫২ টাকা। ২০১৩ সালে ইপিএস ছিল ৩.১৮ টাকা এবং এনএভি ছিল ৩৯.৫৪ টাকা। আর ২০১২ সালে ইপিএস ছিল ২.৯৬ টাকা এবং এনএভি ছিল ৩৬.৩৬ টাকা। এদিকে, গত ছয় মাসে অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৫১ টাকা এবং শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ৪৩.৯৩ টাকা। কোম্পানিটির রেজিস্ট্রার টু দ্য ইস্যুর দায়িত্বে রয়েছে ব্যানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। |
710b4c74-b957-461f-8f10-554d2ad6b084 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ারের দর কোন কারন ছাড়াই গুজবে ভর করে টানা বাড়ছে। ফলে এ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ তুলছেন বিনিয়োগকারীরা। সম্প্রতি বাজারে নানামুখী গুজব ছড়িয়ে পড়েছে ফু-ওয়াং ফুডে। এরকম নানামুখী গুজবে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ারের দর টানা বাড়ছে। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন টানা দর বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির উপর কোন নজরধারী নেই নিয়ন্ত্রক সংস্থার। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ন্ত্রন কাদের হাতে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিভিডেন্ড ঘোষণার আগেই কোম্পানির সাথে সম্পৃক্তরা শেয়ার হস্তগত করেছে। ফলে, ডিভিডেন্ড ঘোষণার আগেই দর বাড়তে শুরু করেছিল কোম্পানিটির। যা ইনসাইডার টেডিংয়ের আওতায় পড়ে।
এদিকে ফু-ওয়াং ফুড নিয়ে ভিত্তিহীন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে। তবে এসব খবরের উপর ভিত্তি করে কোম্পানিটির শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যদিও কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দাবী, যে খবর ফেসবুকে ছড়ানো হচ্ছে তা সম্পূর্ণ গুজব।
তৃতীয় প্রান্তিক ছাড়া মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সম্পর্কিত আর কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই চিঠির জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে মালিকানা পরিবর্তনের নানামুখী গুজব ছড়িয়ে ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের। নানা গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে একাধিক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এ কোম্পানির শেয়ার অধিগ্রহণে তৎপর। তার মধ্যে রয়েছে রহিমা ফুডের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার কিনে আলোচনায় আসা সিটি গ্রুপ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বিনিয়োগকারী জানান, ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার নিয়ে একটি গ্রুপ কারসাজিতে মেতে উঠছে। তা না হলে এ শেয়ারের টানা দর বাড়ার কারন কি?
তবে পরের ধনে পোদ্দারি করে চলেছেন ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের কর্তা ব্যক্তিরা। নামমাত্র শেয়ারের মালিক হয়ে শত কোটি টাকার কোম্পানিতে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন তারা। মালিকানা কম থাকায় কোম্পানির পারফরম্যান্সে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। ভোক্তাদের কাছে ‘বিদেশী কোম্পানি’ হিসেবে পরিচিত ফু-ওয়াং ফুডের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাজারে। কিন্তু কোম্পানিটির পারফরম্যান্স বা মুনাফায় এর কোনো প্রতিফলন নেই।
অভিযোগ রয়েছে, কোম্পানির একাধিক পরিচালক ও উর্ধতন কর্মকর্তা বেনামে শেয়ার ব্যবসায় জড়িত। কোম্পানির মূল ব্যবসাকে চাঙা করার চেয়ে নিজ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে ব্যবসা করার প্রতিই তাদের ঝোঁক বেশি। কোম্পানির পারফরম্যান্স নয়, তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর ভিত্তি করে শেয়ারের দাম উঠা-নামা করে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ অবশ্য বেনামী শেয়ার ব্যবসাসহ অনিয়মের সব অভিযোগ অস্বীকার করছে।
যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত খাদ্য-পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেড ১৯৯৭ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন করে। মাত্র তিন বছরের মাথায় ২০০০ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। পরবর্তীতে বিদেশী উদ্যোক্তারা ধীরে ধীরে তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে কোম্পানিটি থেকে সরে যায়। বিশেষ করে ২০০৯-১০ সালে চাঙা পুঁজিবাজারে চড়া দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে সব শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়।
১৯৯৫ সালে ফু-ওয়াং সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে দেশে ফুয়া-ওয়াং গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। দুই বছর পর একই উদ্যোক্তারা ফু-ওয়াং ফুড প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে গ্রুপের মূল উদ্যোক্তারা ফু-ওয়াং ফুডের মালিকানার প্রায় সবটুকু ছেড়ে দিয়ে ফু-ওয়াং সিরামিক নিয়ে আলাদা হয়ে যান। কিন্তু ভোক্তাদেরকে বিভ্রান্ত ও প্রলুব্ধ করে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে ওয়েবসাইটে ফু-ওয়াং ফুডকে ফু-ওয়াং গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখানো হতে থাকে। ফু-ওয়াং ফুডের নিজস্ব কোনো ওয়েব ঠিকানা নেই।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুসারে, বর্তমানে ফু-ওয়াং ফুডের সব পরিচালক সম্মিলিতভাবে মাত্র ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৭৬ দশমিক ১৬ শতাংশ শেয়ার। পরিচালকদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরীর কাছে রয়েছে সাড়ে চার শতাংশ শেয়ার। এর বাইরে কোম্পানির কোনো পরিচালকের কাছে এক শতাংশ শেয়ারও নেই।
কোম্পানির মূল উদ্যোক্তা হো চিন হোয়া’র কাছে আছে শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ শেয়ারে। দুই শেয়ারহোল্ডার-পরিচালক কামাল কান্তি মন্ডল ও বিপ্লব চক্রবর্তীর কাছে আছে যথাক্রমে শূন্য দশমিক ০০৫ ও শূন্য দশমিক ০৩৪ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক ক্রিকেটার নাইমুর রহমান দুর্জয় এমপি। তবে তিনি অনেকটা আলঙ্কারিকভাবেই আছেন। কোম্পানি পরিচালনায় তার তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
জানা গেছে, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকও তেমন সক্রিয় নন। মূলত কোম্পানি সচিব আব্দুল হালিম ঠাকুরই ফু-ওয়াং ফুড পরিচালনা করেন। অভিযোগ আছে, ফু-ওয়াং ফুডের একাধিক পরিচালক ও উর্ধতন কর্মকর্তা বেনামে শেয়ার ব্যবসা করেন। তাদের ইচ্ছা ও প্রয়োজনের আলোকে তৈরি হয় আর্থিক প্রতিবেদন। আর এ কারণেই কোম্পানিটির মুনাফায় কোনো ধারাবাহিকতা নেই।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে ফু-ওয়াং ফুডের কোম্পানি সচিব আব্দুল হালিম ঠাকুর সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। |
784bdcfa-ce89-4a2b-a9fe-a9718301eb20 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: মুদ্রানীতির ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করছে পুঁজিবাজারে ,মুদ্রানীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছিল তা কেটে গেছে। শিগগিরই লেনদেন হাজার কোটি টাকায় গড়ে যাবে। তেমনি মুদ্রানীতি ঘোষণার শঙ্কা কাটিয়ে অবশেষে ঘুরে দাঁড়ালো পুঁজিবাজার। গত কয়েক দিন ধরে মুদ্রানীতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক কাজ করছিল।
বাজার ফের দীর্ঘমেয়াদি মন্দায় পড়বে কি-না এমন প্রশ্নও দেখা দিয়েছিল অনেকের মনে। যদিও মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য নেতিবাচক কিছু থাকবে না বলে আগেই আশ্বাস দিয়েছিলো বাংলাদেশ ব্যাংকসহ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি এবারের মুদ্রানীতিতে সঞ্চয়পত্রের সুদ হার দেশে বিদ্যমান অন্যান্য সুদ হারের সাথে নমনীয় পর্যায়ে আনার বিষয়ে তাগিদ দেয়া হয়েছে। এটির ইতিবাচক প্রভাবই আজকের বাজারে পড়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
তবে নতুন মুদ্রানীতি পুঁজিবাজারের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা? শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে ফজলে কবির বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব হলো যেসকল ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি আছে শেয়ারমার্কেটে তাদেরকে অবজার্ভ করা, তাদের অপারেশন মনিটরিং করা। তারা এখন এক্সপোজার লিমিটের মধ্যেই আছে। তবে যদি আমরা কোনো ইনডিকেশন পাই যে, কোনো ব্যাংকের এক্সপোজার হাই হয়েছে সেক্ষত্রে আমরা আইনি অনুশাসন দিয়ে লিমিটের মধ্যে নিয়ে আসি।
তিনি বলেন, এই বিষয়টি ছাড়া আমরা মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের সাথে আর সংশ্লিষ্টতা দেখি না। আর কোনো পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তো আছেই। তারা সার্বক্ষণিক এই বাজারে বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। তাই এটি পুরোপুরি বিএসইসির বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তবে ব্যাংক খাতের আজ উত্থানে পুঁজিবাজারের জন্য খুবই কল্যাণকর বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা। যা বাজারের জন্য একটি সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে বলে তারা মনে করেন। কেননা এ খাতের ওপরই বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নির্ভর করে করে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তাদের অভিমত, এতোদিন যা হবার তা শেষ, এখন অন্তত যেনো নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এই উদীয়মান বাজারটিকে ধরে রাখার জন্য যা যা করনীয় তার সবটুকু আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে করে যান।কারণ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এতোদিন জীবন বাজি রেখে যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন, তার সুফল এখন বইতে শুরু করেছে, এটি যাতে দীর্ঘস্থায়ী হয় এখন সেটাই তাদের প্রত্যাশা। কারো গাফিলতিতে এর ব্যত্যয় ঘটলে বাজার আবার দীর্ঘমেয়াদে আস্থার সংকটে পড়বে যা কারোই কাম্য নয়। |
d82afc45-1f13-40df-9e64-9507dd0c7c12 | মোবারক হোসেন, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার আভাস মিলছে। বিনিয়োগ সমন্বয় জটিলতা কেটে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মহলের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। ফলে তারা শেয়ার বিক্রির চেয়ে কেনায় মনোযোগ দিয়েছেন। তবে দীর্ঘ দিনের মন্দার পর বেশ কিছু দিন মৌলভিত্তিহীন শেয়ারের অস্থিরতা কাটিয়ে স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের অভিমত, গত কয়েক দিনের বাজার আচরণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক বার্তা বহন করে। এ সময় বাজারগুলো লেনদেনে যেমন একটি অবস্থান ধরে রাখে তেমনি সূচকও লেনদেন ছিল ইতিবাচক।
এছাড়া দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে তৎপরতা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিদেশি বিভিন্ন সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারী পুঁজিবাজারের প্রতি নজর ছিল। তারা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করছেন। গত কয়েক মাস ধরেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বেচার চেয়ে কেনায় মনোযোগী ছিলেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং স্টক এক্সচেঞ্জের নেওয়া উদ্যোগেই বিদেশি বিনিয়োগে বেড়েছে। তেমনি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এটি বাজারের জন্য শুভ লক্ষণ। ইতোমধ্যে বিদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ডিএসইর স্ট্রাটেজিক পার্টনার হওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহের তিন কার্যদিবসে দুই পুঁজিবাজার সূচকের কম-বেশি উন্নতি ঘটে। একই সময় লেনদেনেও যৌক্তিক একটি অবস্থান ছিল বাজারগুলোর। এ সময় ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ মূল্যস্তরে পিছিয়ে থাকা মৌলভিত্তিসম্পন্ন খাতগুলোর বেশির ভাগই মূল্যবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসে। বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বাজার আচরণের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ঈদ উল আযহার পর আরো স্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।
বাজার বিশ্লেষনে দেখা যাচ্ছে, পুঁজিবাজারের সূচক ও লেনদেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়েছে। বিশেষ করে ব্যাংক ও বস্ত্র খাতের কারণেই গতকালও বাজার অনেকটা গতিশীল ছিল। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান বাজার আগের তুলনায় বেশ ভালো অবস্থায় আছে। টার্নওভারও বেড়েছে। যদিও এ বছরের শুরুর দিকে যে টার্নওভার ছিল তা নেই। এছাড়া অনেকের হয়তো ধারনা রয়েছে, সূচক এবার ছয় হাজার অতিক্রম করবে।
কিন্তু সূচক নিয়ে অযথাই এমন ভাবাটা ঠিক নয়। সূচক দেখারও কোনো বিষয় নয়। আর এখন যে বাজার ভালো হচ্ছে, সেটি সংশ্লিষ্টদের গত দু-তিন বছরের দীর্ঘ পরিশ্রমের ফল। তাই এই মুহুর্তে বাজার নিয়ে অতি আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কেউ যদি তার টাকা দিয়ে উৎপাদনে নেই, কিংবা নানা অনিয়মের কারণে জেড ক্যাটাগরিতে আছে, কিংবা জন্মের পর থেকে ডিভিডেন্ড দেয়নি এমন কোম্পানি কিনেন, সেক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কিছু বলার থাকে না।
জেড ক্যাটাগরির শেয়ার দর বাড়ার বিষয়ে তারা বলছেন, এসব কোম্পানির দর বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কী হচ্ছে না হচ্ছে তা আসলে এসব শেয়ার যারা কিনছেন তারাই ভালো বলতে পারবেন। এ বিষয়ে সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আর একটি ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে, সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন এখন পদক্ষেপ নেওয়ার পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন এনেছেন।
তবে স্বতন্ত্রভাবে কেউ যদি তার টাকা দিয়ে উৎপাদনে নেই, কিংবা নানা অনিয়মের কারণে জেড ক্যাটাগরিতে আছে, কিংবা জন্মের পর থেকে ডিভিডেন্ড দেয়নি এমন কোম্পানি কিনেন, সেক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কিছু বলার থাকে না। কিন্তু বিএসইসি এখন বাজারে যে গুজবগুলো রটানো হতো, সেগুলো থেকে হয়তো কিছুটা রেহাই পাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। যা বাজারের জন্য বেশ ইতিবাচক হবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নির্ভয়ে কোম্পানির ভালো মন্দ সব কিছু প্রকাশ করে দিচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেছেন, দীর্ঘ মেয়াদে একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠন করতে কাজ করছে বিএসইসি। স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠন করার জন্য ভালো বিনিয়োগকারী প্রয়োজন। এই বিনিয়োগকারী তৈরি করার জন্য দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছে পুঁজিাজার। কারণ ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে সমস্যা হওয়ার পর বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংস্কার হয়েছে আমাদের পুঁজিবাজারে। কোন কোন জায়গায় সমস্যা, সেই বিষয়গুলো আমরা শনাক্ত করেছি। ওই আলোকে কাজ করছে কমিশন। ওই সংস্কারের সুফল পেতে শুরু করেছে বাজার। এখন চাইলেই কেউ আগের মত কারসাজি করতে পারবে না।
এম সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী নুরুল আজম বলেছেন, বর্তমান পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। বাজার তার আপন গতিতে চলছে। তেমনি বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। বাজারের এ ধারা অব্যাহত থাকলে সামনে লেনদেন আরো বাড়বে। এজন্য বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে ব্যাংকের চেয়ে বেশি মুনাফা করা সম্ভব।
এমেস সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম সময়। বিনিয়োগকারীরা বুঝে শুনে বিনিয়োগ করলে লোকসানের সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের কোম্পানি সর্ম্পকে জেনে শুনে বিনিয়োগ করা উত্তম। বাজারে এখনো অনেক রুগ্ন কোম্পানি আছে যাদের ভবিষ্যত সম্ভাবনা খুবই ভাল। ঐ সব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের খুঁজে বের করতে হবে। তাহলে ভাল মুনাফা করা সম্ভব।
অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, পুঁজিবাজারে সরকারি কোম্পানির শেয়ার ছাড়া নিয়ে সরকারের ইচ্ছার কোনো কমতি নেই। অর্থমন্ত্রী ২০১১-১২ সালে মিটিং করে ব্যাংকগুলোকে আসার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু একমাত্র রূপালী ছাড়া বাকি তিনটি ব্যাংকই পুঁজিবাজারে আসার সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেও মার্কেটে আসেনি। আর তাদের না আসার পেছনে দুই ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে।
একটি হচ্ছে, মার্কেটে আনার জন্য যে ধরনের টেকনিক্যাল ক্যাপাসিটির প্রয়োজন তাতে ঘাটতি আছে। অন্যটি হচ্ছে, তারা আসতে ভয় পায়। তারা মনে করছে, এতে তাদের কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা আরও বাড়াতে হবে। হয়তো রিপোর্টিং কমপ্লায়েন্স অনেক বাড়াতে হবে। নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্যের মধ্যে বিনিয়োগকারীরা যোগ হবে। এগুলোকে তারা ঝামেলা মনে করছে। পুঁজিবাজারে না আসা ব্যাংকের এজিএম ঠিকই হয়, সব এজেন্ডাও পাস হয় কিন্তু সেখানে কোনো শেয়ারহোল্ডার না থাকায় কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় না। অথচ যারা পুঁজিবাজারে আছে, তাদের অনেক ধরনের প্রস্তুতি ও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। ফলশ্রæতিতে তারা পুঁজিবাজারে আসতে চাচ্ছে না।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে সরকারি কোম্পানি আনার ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীকে খুব দৃঢ়চেতা হতে হবে। কারণ আমাদের আমলাতন্ত্রের ওপর নিয়ন্ত্রণ না আনলে এসব কোম্পানিকে বাজারে আনা যাবে না। আর পুঁজিবাজারে এলে তাদের অনেক জবাবদিহিতার মধ্যে পড়তে হবে।
আজকাল নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর অনেক প্রশ্ন করছেন। এমনকি সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। যে কারণে সরকারি চাকরিজীবী বা আমলারা মনে প্রাণে চাইছেন না পুঁজিবাজারে এসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হোক। কিন্তু পুঁজিবাজারের ভালো কোম্পানিগুলোকে যদি তালিকাভুক্ত না করা হয় তাহলে বিনিয়োগ না আসার পাশাপাশি বাজারে গভীরতাও বাড়বে বলে মনে করছেন ওই বিশ্লেষকরা। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ |
49767975-97b3-4e4c-b484-853ad5e257b4 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেড ত্রুটিমুক্ত উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং বিদ্যমান উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছে । এরই ধারাবাহিকতায় কোম্পানিটি গত দুই বছরে ১৩ দফায় মূলধনী যন্ত্রপাতি করেছে।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মনে করছে, খুব শিগগিরই এর সুফল পাবেন সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা। কারণ, এসব যন্ত্রপাতি আমদানি ও সংস্থাপনের কাজ শেষ হলে কোম্পানির বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা আগের যেকোন সময়ের তুলনায় অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৩ দফায় মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ঘোষণা দিয়েছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলে পরিচালনা পর্ষদ। যা দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
ডিএসই’র তথ্যানুযায়ী, কোম্পানিটি ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর ৭ হাজার ৬৫০ ইউএস ডলার ব্যয়ে চায়না/ভিয়েতনাম থেকে সুইং মেশিন আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া ১৫ নভেম্বর ৪৬ হাজার ৯৫৬ ডলার ব্যয়ে চায়না থেকে ১টি গ্রে ইন্সপেকশন মেশিন এবং ১ লাখ ৫০ হাজার ডলারে কুরিয়া থেকে ১টি সেকশনাল ওয়ার্পিং মেশিন, ৭ ডিসেম্বর ইটালি ও জার্মানী থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার ইউরো ব্যয়ে ২টি মেশিন (ডাবল ড্রাম রাইজিং মেশিন, ওয়্যাফ্ট স্ট্রেইথনার অর্থপ্যাক),
২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর চায়না থেকে ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৯৫ ডলার ব্যয়ে ৩টি মেশিন (সফট উইন্ডিং অ্যান্ড রি-উইন্ডিং মেশিন, গ্রে ইন্সপেকশন ও ফাইনাল ইন্সপেকশন মেশিন), ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি ২,৮০ হাজার ডলার ব্যয়ে ২টি মেশিন (টুইস্টিং মেশিন ও ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মেশিন), ৬ জুন ৪,৪৫ হাজার ডলার ব্যয়ে বায়োকেমিক্যাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের জন্য বিভিন্ন মেশিনারিজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়।
এছাড়া একই বছরের ২৪ জুলাই ৩ লাখ ২৭ হাজার ডলার ব্যয়ে লো ভল্টেজ সিস্টেম এবং বাবসার ট্রাঙ্কিং সিস্টেম, ২ আগস্ট উৎপাদন বাড়ানোর জন্য অস্ট্রিয়া থেকে ৭ লাখ ২১ হাজার ইউরো ব্যয়ে ২টি প্রিন্টিং মেশিন, ৭ সেপ্টেম্বর উৎপাদন বাড়ানো ও কমপ্লায়েন্স পরিপালনের জন্য ৫ লাখ ৪৭ হাজার ইউরো এবং ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যয়ে ৪টি নতুন মেশিন, ২৩ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে ১১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ব্যয়ে চায়না থেকে ১টি আফটার প্রিন্টেড ওয়াশিং মেশিন ড্রায়ার সিলিন্ডারসহ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। সবশেষে চলতি বছরের মার্চ এবং এপ্রিল মাসেও দু দফা মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।
ঘন ঘন এতো মেশিনারিজ আমদানির কারণ জানতে চাইলে কোম্পানির উপ-মহাব্যবস্থাপক আবদুল হালিম জানান, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় বদ্ধ পরিকর। মূলত, কোম্পানির উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বিগত সময়ে এসব মেশিনারিজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এতে কোম্পানির উৎপাদন কেমন বাড়বে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় আড়াই কোটি ইয়ার্ডস। যদি সব যন্ত্রপাতি আমদানি ও সংস্থাপনের কাজ শেষ হয়, তবে আশা করছি বছর শেষে তা ৩ কোটিতে দাঁড়াবে।
এদিকে সম্প্রতি প্যরামাউন্ট টেক্সটাইল জয়েন্ট ভেঞ্চারে পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) অনুমোদন পেলেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করবে কোম্পানিটি।
জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য কোম্পানিটি ‘প্যারামাউন্ট-এগ্রিটেক এনার্জি কনসোর্টিয়াম’ নামে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করেছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিপি) অনুমতি পেলেই বাঘাবাড়িতে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, আলোচিত কনসোর্টিয়ামের অপর তিন সদস্য হচ্ছে- প্যারামাউন্ট স্পিনিং, প্যারামাউন্ট হোল্ডিংস লিমিটেড ও এগ্রিটেক এজি। ঘোষণা অনুসারে, কনসোর্টিয়ামে পিটিএলের অংশ থাকবে ৫৫ শতাংশ।
এদিকে, গত ২ জুলাই ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, পিটিএলের পরিচালনা পর্ষদ বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার প্রকল্পের (ঋরৎংঃ ঞৎধপশ চৎড়লবপঃ) ওতায় ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আইপিপি/রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য আবেদন করবে। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও ঠাকুরগাঁও এর শান্তাহারে তারা এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আগ্রহী। তবে দেশের অন্য কোনো এলাকায় হলেও আপত্তি থাকবে না।
বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামী এক বছরের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ২ থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার লক্ষ্যে জরুরী ভিত্তিতে দরপত্র ছাড়াই কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই কোম্পানিটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি চেয়ে বিপিডিবির কাছে আবেদন করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানির এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আমরা পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য আবেদন করেছি। এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আমাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে যদি আমাদেরকে যোগ্য মনে করেন, তবে অনুমোদন দিবেন।
উল্লেখ্য, ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটি ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৩০ জুন, ২০১৬ সমাপ্ত হিসাববছরে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ১০ শতাংশ নগদ ও ৭ শতাংশ বোনাসসহ মোট ১৭ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এ সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৮৪ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৪২ পয়সা।
২০১৫ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১৬ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই বছর ইপিএস হয়েছিল ১ টাকা ৭৭ পয়সা এবং এনএভি ছিল ২১ টাকা ২০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে ২ টাকা ২৩ পয়সা ও ২২ টাকা ৩৬ পয়সা। কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা আগের বছর মুনাফা ছিল ১৮ কোটি ৬৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
গতকাল কোম্পানিটির ৪ কোটি ১৩ লাখ ১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দিনজুড়ে ১১ লাখ ৯১ হাজার ১৭৭টি শেয়ার মোট ৪৬৪ বার হাতবদল হয়। শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের চেয়ে ০.৫৮ শতাংশ বা ২ পয়সা বেড়ে সর্বশেষ ৩৪.৪০ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৩৪.৭০ টাকা। শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৩৪ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৬.৭০ টাকা থেকে ৩৯.৭০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ইপিএস হয়েছে ১.২০ টাকা।
২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১১৭ কোটি ৩১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ৬৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২১.৬৯ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ১৮.৮৬। কোম্পানিটির শেয়ার রয়েছে ১১ কোটি ৭৩ লাখ ১৫ হাজার ৮৭০টি।
ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৬০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ০ দশমিক ০৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ৩৯ দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ার। সুত্র: দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণ
– |
05f28a6d-6a5c-4707-afd5-bba67de0c756 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার কোনো তোয়াক্কাই করছে না রংপুর ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাকস (আরডি ফুড) লিমিটেডের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও নির্দেশনা অনুযায়ী এই কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে নিজ কোম্পানির শেয়ার ধারণ করতে পারেননি।
বরং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনদিন তাদের ধারণ করা শেয়ার কোনো ঘোষণা ছাড়াই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। অবশ্য এই বিষয়ে আজ পর্যন্ত কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে নিজ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে এমন নির্দেশনা রয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)। কিন্তু সেই নির্দেশনা মানছেন না আরডি ফুডের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। উল্টো তাদের হাতে থাকা শেয়ার চড়া দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
ধারাবাহিকভাবে স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা এ কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ৩.০৯ শতাংশ বা ১৮ লাখ ৪২ হাজার ৫৩০টি শেয়ার বিক্রি করেছেন। যার বাজারদর সাড়ে তিন কোটি টাকারও বেশি। উল্লেখ্য পরিমাণ শেয়ারের পুরোটাই বিক্রি করা হয়েছে ঘোষণা ছাড়া। অথচ উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে বিএসইসি’র অনুমোদন সাপেক্ষে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ৩০ দিনের আগাম ঘোষণা দেওয়ার বিধান রয়েছে।
পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ধারণ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। যেখানে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সব সময় সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ কোম্পানির ৩০ শতাংশ এবং এককভাবে দুই শতাংশ শেয়ার ধারনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছিল, পরিচালকেরা নিজ নিজ কোম্পানির নূন্যতম দুই শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ হলে তাদের পদ শূন্য হয়ে যাবে। তবে স্বতন্ত্র ও মনোনীত পরিচালকদের এ নির্দেশনার বাইরে রাখা হয়। আর সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করলে ওই সব কোম্পানি পুনরায় বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না।
এদিকে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ মে কোম্পানির উদ্যোক্তাদের ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতার প্রজ্ঞাপনটি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় উচ্চ আদালত। তবে বিএসইসি’র আবেদনের প্রেক্ষিতে এর পরের দিন অর্থাৎ ১৫ মে উচ্চ আদালতের রায়টি স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি। ফলে যারা বিএসইসি’র নির্দেশ মানতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা আইন লঙ্ঘন করছেন বলে বিবেচিত হয়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সম্মিলিতভাবে নিজ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করে উল্টো বিক্রি করছেন আরডি ফুড কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ৩.০৯ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন তারা। অবাক করার বিষয় হলো- এই শেয়ারগুলো বিক্রি করেছেন কোনো ঘোষণা ছাড়াই।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রকাশিত কোম্পানির শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আরডি ফুড কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালক সম্মিলিতভাবে নিজ কোম্পানির ২৭.৮৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছিলেন। ২০১৭ সালের ৩০ জুন যা ২৬.৫৭ শতাংশে নেমে আসে। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ১.২৯ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন এই কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা।
এদিকে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে ২৬.৫৭ শতাংশ থাকলেও ৩১ জুলাই তা আরও কমে ২৩.৪৩ শতাংশে নেমে এসেছে। এই এক মাসে ৩.০৯ শতাংশ বা ১৮ লাখ ৪২ হাজার ৫৩০টি শেয়ার বিক্রি করেছেন তারা। জুলাই মাসে এ কোম্পানির শেয়ারদর ১৯ টাকা থেকে ২০.৩০ টাকায় ওঠানামা করে।
ওই মাসের সর্বনিন্ম দরে বিক্রি করা হলেও শেয়ারগুলোর বাজারদর ছিল ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি। যা ধারণ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ডিএসই’র ওয়েবসাইটে এ শেয়ার বিক্রির কোনো ঘোষণা দেখা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে আরডি ফুডের ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে একাধিক ফোন দিলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী কমিশনের জারিকরা নির্দেশনাটি সংশোধন করা প্রয়োজন। তাই এ বিষয়ে সংশোধন করার জন্য অর্থমন্ত্রনালয়ে সম্প্রতি প্রস্তাব পাঠানোর পাশাপাশি অ্যাটর্নী জেনারেলের কাছেও আইনী সহায়তা চেয়েছে বিএসইসি। পরিচালকদের শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা নিয়ে অর্থমন্ত্রনালয়ে পাঠানো ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানির পরিচালকদের এককভাবে নূন্যতম ২ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।
আর যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২০০ কোটির ওপরে কিন্তু ৫০০ কোটি টাকার নিচে সেসব কোম্পানির ক্ষেত্রে পরিচালকরা এককভাবে নূূন্যতম ১.৫ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। ৫০০ কোটির ওপরে কিন্তু ১ হাজার কোটি টাকার নিচে এমন পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিতে পরিচালকরা ন্যূনতম ১ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ১৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করবে।
এছাড়া ১ হাজার কোটি টাকার ওপরে পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানির পরিচালকরা এককভাবে নূন্যতম ০.৫০ শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ১০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করবে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত চ‚ড়ান্তভাবে কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে এর সুযোগ নিচ্ছেন কিছু কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালক।
তথ্য মতে, আরডি ফুডের পরিশোধিত মূলধন ৫৯ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সেই হিসেবে কমিশনের জারিকরা নির্দেশনাটি সংশোধন হলেও এই কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের এ কোম্পানি মোট চারবার ডিভিডেন্ড দিয়েছে, ঘোষিত এই ডিভিডেন্ডের পুরোটাই স্টক। কোম্পানির মোট ৫ কোটি ৯৬ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৬০.৯২ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১৫.৬০ শতাংশ। বাকী শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। সুত্র: দেশ প্রতিক্ষণ |
abbd68b1-c5ea-484e-beda-bd949ca04a4b | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ডে ট্রেডারের ভূমিকা পালন করছেন। ফলে বাজারের স্থায়িত্ব নিয়ে দু:চিন্তায় পড়েছেন বিনিয়োগকারী সহ বাজা বিশ্লেষকরা। তাছাড়া বর্তমান বাজারের গতিবিধি ঠিক কোনদিকে যাচ্ছে তা বুঝে উঠতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। একদিন সূচক বাড়ছে তো লেনদেন কমছে। আবার পরদিন সূচক কমছেতো লেনদেন বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা বুঝে উঠতে পারছেন না, কী করবেন। পুঁজিবাজারের সূচক ও লেনদেনের উত্থান-পতনে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছেন।
অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ডে ট্রেডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ায় বাজার খুবই অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিক্রের চাপে সাপোর্টহীন হয়ে পড়েছে উভয় পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহে প্রথম তিনদিন সূচক বাড়লেও চতুর্থ দিন বাজারে ব্যাপক ধস নামে। সপ্তাহের শেষদিনও কিছুটা নেতিবাচক প্রবণতায় থাকে উভয় পুঁজিবাজার।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেশের পুঁজিবাজারে সম্প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হয়েছেন। যার জের ধরে বেশকিছু দিন ধরে বাজারে স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ এক থেকে চার শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। পরিসংখ্যানে এমনটিই দেখা গেছে। সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার ধারণের দিক দিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শতকরা অংশ বেড়েছে। তবে হঠাৎ করে বাজারে ছন্দপতনে তাদের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারী কাছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী শেয়ারের দর বাড়িয়ে বিক্রি করে দিয়ে এখন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি না থাকলে পুঁজিবাজার তার স্বাভাবিক গতি হারায়। যে কারণে কমে যায় লেনদেন। কমতে থাকে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর এবং বাজার মূলধন। এখন যারা বাজারে লেনদেন করছেন তারা সাধারণ বিনিয়োগকারী।
এ প্রসঙ্গে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখন ডে ট্রেডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এটা করলে বাজার নিজস্ব গতি হারাবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রকৃত কাজ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ। এখন দেখছি তার উল্টো চিত্র। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ প্রত্যাশা করেন না কেউই।’
একই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন ‘পুঁজিবাজারে সবাই লাভ করার জন্য আসে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেলে শেয়ার বিক্রি করে দেবে এটা স্বাভাবিক। এ জন্য তাদের দায়ী করা ঠিক হবে না।’
এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতে হবে। কিন্তু দেশে মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ খুবই কম। তাই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অবদানও কম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্প্রতি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়লেও বাজারের তুলনায় তা এখনও কম। বিশ্বের বড় বড় পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ আরও বেশি দেখা যায়। তাদের অভিমত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারে সক্রিয় হলে এটি বাজারের জন্য ইতিবাচক। কারণ তারা বাজারের সার্বিক অবস্থা বিচার-বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করে থাকেন। তারা জানান প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা খুবই দক্ষ। কখন বাজার বাড়বে আবার কখন পড়বে এটা তারা বুঝতে পারেন। তাই মুনাফা তুলে নেওয়ার সময় তারা তুলে নেবেন এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে হবে নাকি স্বল্পমেয়াদে হবে তা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কয়েক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর সন্ধান মিলে। কিছু বিনিয়োগকারী রয়েছেন যারা অন্য পেশায় থাকলেও পুঁজিবাজার বোঝেন ও সবসময় খোঁজ-খবর রাখেন। তারা নিয়মিত লেনদেন না করলেও দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করেন। ক্যাপিটাল গেইনের পাশাপাশি বছর শেষে ডিভিডেন্ডসহ দুইভাবেই মুনাফা করেন। সংখ্যায় কম হলেও প্রকৃত অর্থে এরাই বিনিয়োগকারী
আর একর শ্রেণি রয়েছে, যাদের মূল পেশাই শেয়ার ব্যবসা। এরা প্রতিদিন বাজারে আসেন; নিয়মিত লেনদেন করেন। বাজার তেমন না বুঝলেও অন্যের পরামর্শে এক শেয়ার বিক্রি করে অন্যটা কেনেন। গুজবে কান দিয়ে লেনদেন করেন। বছরের পর বছর ব্যবসা করেও তারা তেমন সুবিধা করতে পারেন না। পুঁজিবাজারে ধস নামলে এই শ্রেণির লোকজন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের পুঁজিবাজারে এই শ্রেণির বিনিয়োগকারীর সংখ্যাই বেশি।
আরেক শ্রেণির বিনিয়োগকারী রয়েছেন, তারা বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ডিভিশনের কর্মকর্তার সঙ্গে ভালো যোগাযোগ রাখেন। মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আগেই জেনে যান তারা। নিশ্চিত খবর পেয়ে বিনিয়োগ করে ভালো মুনাফাও বের করে অন্য কোম্পানি শেয়ার সুইস ওভার করেন। সংখ্যায় অল্প হলেও এরা বেশ পেশাদার। এ ব্যবসা করেই এক সময় অনেক সম্পদের মালিক হয়ে যান। দেশের পুঁজিবাজারে এরাই সবচেয়ে সুবিধাভোগী শ্রেণি। এদের সাথে বড় বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের যোগসাজস রয়েছে।
আরেক শ্রেণি বিনিয়োগকারী হলো প্রাতিষ্ঠানিক। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও দুই শ্রেণির বিনিয়োগকারী রয়েছেন। এক শ্রেণি কিছুটা লাভ হলেই জটপট মুনাফা তুলে নেন। এরা ডে ট্রেডারের ভূমিকায় থাকতে বেশি পছন্দ করেন। আরেক শ্রেণি কিছু আছে যারা কিছুটা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করেন। এরা খুব কম লাভে শেয়ার ছাড়তে চান না। বিশেষ করে মৌলভিত্তির শেয়ারে এরা দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েই নামেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ঝরঝরা মুডে থাকলেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বিপদের মধ্যে রয়েছেন। তারা বাজারের গতিবিধি অনুধাবন করতে পারছেন না। কারণ বাজার একদিন বাড়েতো পরের দিন পড়ে যাচ্ছে। আবার টানা তিন দিন বেড়ে একদিন হঠাৎ ধস নামে। কিন্তু পরের দিনই আবার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় টার্ন নেয়।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পক্ষে বাজারের এই ইউ টার্ন বুঝা খুব মুশকিল। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী আটকে গেছেন। কারণ তারা শেয়ার কিনেন বেশিরভাগ সময়ে ঊর্ধ্বগতির বাজারে। এ কারণে তাদের বেশিরভাগ বিনিয়োগ প্রায়ই আটকে যায়। পোর্টফোলিও নেগেটিভ থাকায় তারা বের হয়েও আসতে পারেন না।
বর্তমান বাজার নিয়ে ডিএসইর বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, বাজার তার স্বাভাবিক গতিতে চলছে। উত্থান-পতন এটা পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক নিয়ম। এতে বিনিয়োগকারীদের বিচলিত হওয়ার কিছুই নেই। তাই গুজবে কান না দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরেকটা বিষয় সবারই খেয়াল রাখা উচিৎ। কোন স্টক থেকে কত শতাংশ মুনাফা নিতে চান বা কত লোকসান হলে শেয়ারটা ছেড়ে দেবেন, সেটা আগেই ঠিক করা উচিত। অতি মুনাফার লোভে প্রলুব্ধ যেন কেউ না হয়ে যায়। কারণ এই লোভে পরেই বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ হয়ে যায়। মুনাফার দিকে যতটা না বেশি নজর থাকবে, তার চেয়ে লোকসান যেন কম হয় সেই দিকটাই বেশি করে খেয়াল রাখা উচিত। তাহলে লাভ একসময় হবেই।
অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী এ্যাড. মাহামুদুল আলম বলেন, পুঁজিবাজারে মাঝে-মধ্যে ছন্দপতন ঘটলেও পরিস্থিতি এখনও অনুকূলে রয়েছে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত রয়েছে বিনিয়োগের অনুকূলে। একইসঙ্গে বর্তমানে বাজারে অতিমূল্যায়িত শেয়ারও রয়েছে। সে কারণে বুঝেশুনে বিনিয়োগ করতে হবে।
তবে বাজার সংশ্লিষ্ট একটি অংশ বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ডে ট্রেডারের ভূমিকা বাজারে নেমেছেন। এ কারণে বাজার খুব বেশি স্থায়ীও হয় না। আবার খুব বেশি নামেও না। বাজার কিছুটা বাড়লেই তারা সেলে আসেন, আবার বাজার নামতে থাকলে তার ধীরে ধীরে বাই করেন। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক হলে দীর্ঘমেয়াদে বাজারের জন্য ক্ষতিকর। কারণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করতে হবে। তা না হলে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা অধরাই থেকে যাবে। |
eecddbe5-62f5-4399-8490-0b49ff12a96d | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বিদায়ী সপ্তাহে (৮-১২ অক্টোবর) ব্লক মার্কেটে ২১টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন অংশ নিয়েছে। এ সব কোম্পানি মোট ২১৬ কোটি ৭৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, আগের সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে ১৪টি কোম্পানির ৫৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। অর্থাৎ বিদায়ী সপ্তাহে ব্লক মার্কেটে লেনদেনর পরিমাণ বেড়েছে ১৫৭ কোটি ৮৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
এ সব কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন করে ব্যাংকিং খাতের শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের। ব্যাংকটির ১১৮ কোটি ৫৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। আর ৬২ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হলে ব্লক মার্কেটে সাপ্তাহিক লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। এছাড়া ৯ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড।
সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে একমি ল্যাবরেটরিজের ২ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার, যমুনা ব্যাংকের ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার, গ্রামীণ ওয়ান: স্কিম টুয়ের ৭৩ লাখ টাকার, সিমটেক্সের ৯০ লাখ টাকার, আইডিএলসির ১ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার, অলিম্পিকের ১ কোটি ১ লাখ টাকার, ব্যাক এশিয়ার ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৭৪ লাখ টাকার,
ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার, এপেক্স ট্যানারির ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার, ইফাদ অটোসের ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকার, রেনেটার ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার, এসিআইয়ের ৫৮ লাখ ২০ হাজার টাকার, সিএনএ টেক্সটাইলের ৫ কোটি ৫ লাখ টাকার, স্কয়ার ফার্মার ৪ কোটি ৫৬ লাখ ১০ হাজার টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ৪ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ইসলামী ব্যাংকের ৫০ লাখ ২০ হাজার টাকার এবং ওয়াটা কেমিক্যালের ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। |
7df6772a-7394-4782-a56d-de994923926a | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: বিদায়ী সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আর্থিক খাতের লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ২২৩ কোটি ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ কারণে কোম্পানিটি ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে। আর গড়ে কোম্পানিটির ৪৪ কোটি ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে উত্তরা ব্যাংকের ১৬৮ কোটি ৪৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকার, ইসলামী ব্যাংকের ১৬১ কোটি ৫০ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ১৫১ কোটি ১৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকার, এক্সিম ব্যাংকের ১৪৩ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকার, আমরা নেটওয়াকর্সের ১২৭ কোটি ৩৯ লাখ ২৪ হাজার টাকার,
সিটি ব্যাংকের ১২৪ কোটি ৪৭ লাখ ৮২ হাজার টাকার, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১১৮ কোটি ৫১ লাখ ১৬ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ব্যাংকের ১১১ কোটি ২৭ লাখ ২৭ হাজার টাকার এবং ইফাদ অটোসের ৯৮ কোটি ৪৫ লাখ ২৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। |
6b356043-5d1c-43fc-886d-977504b5f607 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: ফাঁস হয়ে যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয়ের মতো অতি স্পর্শকাতর এবং গোপনীয় তথ্য। যা দিয়ে স্বার্থ হাসিল করছে একটি মহল। এমন একটি বিষয় ফাঁস হওয়াকে শেয়ারবাজারের জন্য হুমকি বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এর আগে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল।
শেয়ারের যাবতীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (সিএসই)। এর মধ্যে সিডিবিএলে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার সংরক্ষিত থাকে। অন্যদিকে বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসই তাদের সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেনদেন মনিটরিং করে থাকে।
এই চারটি প্রতিষ্ঠানের যে কোনো এক বা একাধিক জায়গা থেকে এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লেনদেনের তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে ডিএসই থেকে ফাঁস হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছেও শেয়ার লেনদেনের গোপন তথ্য সিডিবিএল থেকে প্রদান করা হয়। যেটা বে আইনী নয়।
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ‘তথ্য পাচারের অনেক ছিদ্র রয়েছে। ডিএসই, বিএসইসি, সিএসইসি ও সিডিবিএল ছাড়াও কোম্পানির কাছে তথ্য প্রদান একটি বড় ছিদ্র। আমরা আমাদের অংশে অর্থাৎ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কোনো তথ্য পাচার হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে এমডি সাহেবকে অনুরোধ করেছি।’
এদিকে ডিএসই সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে ডিএসই তদন্তে নেমেছে। সত্যি সত্যি ডিএসইর কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী শেয়ার লেনদেনের গোপন তথ্য পাচার করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সিডিবিএল থেকে কোম্পানির কাছে একদিন পর শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করা হয়। কিন্তু লেনদেন সংক্রান্ত গোপন খবর লেনদেন চলাকালীনই পাচার হচ্ছে। যা ফেসবুক, ভাইভার, ম্যাসেঞ্জার ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে বড় বড় ব্রোকারেজ হাউজ ও বিনিয়োগকারীর কাছে। টাকার বিনিময়ে এসব তথ্য লেনদেন হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, পুঁজিবাজারের সবচেয়ে স্পর্শকাতর হল স্টক এক্সচেঞ্জের সার্ভিল্যান্স। কারণ দৈনন্দিন লেনদেনের সব তথ্য এখানে থাকে। এ জন্য সর্বোচ্চ গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়, যাতে বাইরে তথ্য ফাঁস না হয়। কোনো বড় ব্রোকারেজ হাউস, মিউচ্যুয়াল ফান্ডসহ কোন বিনিয়োগকারী কোন কোম্পানির শেয়ার কী মূল্যে কিনছে, তার সব তথ্য মুহূর্তেই এখান থেকে জানা যায়।
এসব কারণে সার্ভিল্যান্স রুমে স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ড সদস্যদেরও প্রবেশের অনুমতি নেই। সব সময় সিসিটিভি দিয়ে সংরক্ষিত সার্ভিল্যান্স রুমটি চিফ রেগুলেটর অফিসারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এ টিম সরাসরি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে দায়বদ্ধ।
টিমে যেসব কর্মকর্তা কাজ করছেন, তারা লেনদেনের সময় মোবাইল ফোনও ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু সর্ষের মধ্যেও ভূত আছে। এত সতর্কতা সত্তে¡ও সাম্প্রতিক সময়ে সার্ভিল্যান্স থেকে বিনিয়োগকারীদের তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও সাধারণ কারও পক্ষে তা অসম্ভব। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে ভেতরের কেউ না কেউ তথ্য ফাঁসের সঙ্গে জড়িত।
এর আগে ২০১১ সালে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু তাতে খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ ছাপা হলে ডিএসই বোর্ডের নজরে আসে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের স্বার্থে লেনদেনের তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা উচিত। লেনদেন ও শেয়ার ধারণের তথ্য হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আমানত। এই আমানত রক্ষা করা সংশ্লিষ্টদের পবিত্র দায়িত্ব। যেহেতু চারটির বেশি জায়গা থেকে তথ্য ফাঁসের সুযোগ নেই, তাই ওই চারটি জায়গায় নজর দিলেই তা বন্ধ করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে একটি স্বার্থান্বেষী মহল শেয়ার লেনদেনের তথ্য ফাঁস করা শুরু করে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে বেসকিছু গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ থেকে শেয়ার কেনাবেচার তথ্য পাচার সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গত অক্টোবর মাস থেকে ডিএসই থেকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য ফাঁস হচ্ছে। সাধারণত লেনদেন শেষে কোন ব্রোকারেজ হাউজ কি পরিমাণ কিনছে এবং বিক্রয় করছে তা ফাঁস করা হয়। এমনকি লেনদেন চলাকালীন সময়ও এ তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। শেয়ার লেনদেনের গোপন তথ্য দিয়ে অন্যরা ক্রয়-বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন বলে যোগ করেন তিনি।
কোন নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট কোম্পানির শেয়ার কোন ব্রোকারেজ হাউজ থেকে কেনা হচ্ছে এবং কোন ব্রোকারেজ হাউজ থেকে বেচা হচ্ছে তা ফাঁস হচ্ছে। ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কেনা-বেচার তথ্য ডিএসই থেকে ফাঁস হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ২ অক্টোবর এপেক্স স্পিনিং ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য ফাঁস হয় ওইদিন লেনদেন শেষ হওয়ার পরে। এক্ষেত্রে ২০টি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে ১১ হাজার ৪৪৯টি শেয়ার কেনার তথ্য ফাঁস করা হয়। কোন ব্রোকারেজ হাউজ থেকে কি পরিমাণ ক্রয় করা হয়েছে তা পাওয়া যাচ্ছে ফাঁস হওয়া তথ্যে।
দেখা গেছে, এমেস সিকিউরিটিজ থেকে এপেক্স স্পিনিং ৩ হাজার ৬৭৪টি শেয়ার কেনা হয়েছে। আর ধানমন্ডি সিকিউরিটিজ থেকে ২ হাজার ৬৭৭টি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে ১ হাজার টি, ডেসা সিকিউরিটিজ ৭০০টি, আলহাজ্ব সিকিউরিটিজ থেকে ৫৫০টি, বিডি সানলাইফ সিকিউরিটিজ থেকে ৫০০টি, সালতা সিকিউরিটিজ থেকে ৫০০টি, ফনিক্স থেকে ৪৩৫টি, মিকা সিকিউরিটিজ থেকে ৩০০টি, গেøাব সিকিউরিটিজ থেকে ২০০টি, রয়েল ক্যাপিটাল থেকে ২০০টি,
ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানি থেকে ১৫০টি, এনসিসি ব্যাংক সিকিউরিটিজ থেকে ১৫০টি ও রাজ্জাক সিকিউরিটিজ থেকে ১০০টি, সিহা সিকিউরিটিজ থেকে ১০০টি , র্যামনস সিকিউরিটিজ ৫৫টি, এমিন্যান্ট সিকিউরিটিজ থেকে ৫০টি, সালাম অ্যান্ড কোম্পানি থেকে ৫০টি, পার্কওয়ে সিকিউরিটিজ ৩৮টি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ থেকে ২০টি কেনা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জানান, তদন্ত করে বিএসইসির সঠিক তথ্য বের করা উচিত। এক্ষেত্রে কারা যোগসাজশ করছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে।
এদিকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য প্রকাশ করে নির্দিষ্ট কোন শেয়ারে আগ্রহ তৈরি করা চক্রের লক্ষ্য হতে পারে বলে মনে করেন আজিজুল ইসলাম। এক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকে পড়লে তারা লাভবান হবেন। যা শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের জন্য দুঃসংবাদ হবে। এক্ষেত্রে ফাঁস হওয়া তথ্যের শেয়ারে কেনার আগ্রহ থেকে বেরিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করার জন্য বিনিয়োগকারীদেরকে পরামর্শ দেন তিনি।
বিএসইসির আরেক সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনো কোন কিছু শুনিনি। তাই মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য ফাঁস হচ্ছে এমন অভিযোগ শুনে আসছি। বিষয়টি খতিয়ে না দেখে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, ঘটনার সত্যতা যাছাই না করে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে অবশ্যই এর বিপরীতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের স্বার্থে লেনদেনের তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা উচিত। লেনদেন ও শেয়ার ধারণের তথ্য হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আমানত। এই আমানত রক্ষা করা সংশ্লিষ্টদের পবিত্র দায়িত্ব। যেহেতু চারটির বেশি জায়গা থেকে তথ্য ফাঁসের সুযোগ নেই, তাই ওই চারটি জায়গায় নজর দিলেই তা বন্ধ করা সম্ভব। |
77ee70a3-ec1e-49f8-adac-6fdb671a4640 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইংয়ের তৃতীয় প্রান্তিকে ( জানুয়ারি ২০১৭ টু মার্চ২০১৭) লোকসান কবলে পরেছে। শনিবার কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, মিথুন নিটিং এবং এর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর একত্রে তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৮৪ টাকা। যা গত অর্থবছরের একই সময় ইপিএস ছিল ১.২৯ টাকা।
নয় মাসে (জুলাই ১৬ – মার্চ ১৭) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১.৫১ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২.৯৭ টাকা। তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাড়িয়েছে ২২.৩২ টাকা।
নয় মাসে মিথুন নিটিংয়ের শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে নেগেটিভ দশমিক ৭৭ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১.৫০ টাকা। মিথিুন নিটিং ১৯৯৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বৃহষ্পতিবার কোম্পানির প্রতিটি শেয়ার ৪০.১০ টাকা দরে সর্বশেষ লেনদেন হয়। |
d05a6329-960e-4a90-83f9-f692fc80938d | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সদ্য বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের ২৯ দশমিক ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ইফাদ অটোস লিমিটেডে। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, আলোচ্য সপ্তাহে ২ হাজার ৮৬৮ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকার লেনদেন করেছে এই ১০ কোম্পানি। শতাংশের দিক থেকে এটি হলো ২৯ দশমিক ২৩ শতাংশ।
সূত্র মতে, শীর্ষে আসা ইফাদ অটোস লিমিটেডের দখলে ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ২১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তবে এই দর কমায় প্রভাব রেখেছে রাইটের সমন্বয়। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড়ে ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে এই কোম্পানির ১২৭ কোটি ৭৩ লাখ ২২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড। এ সময়ে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ছিল এ কোম্পানির দখলে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১০৭ কোটি ২ লাখ ৪৭ হাজার। দর কমেছে ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের দখলে ছিল ৩ দমমিক ৩৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৯৭ কোটি ৩ লাখ ২৬ হাজার। দর কমেছে ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।
তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- আমরা নেটওয়ার্কসের ৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, সিটি ব্যাংক ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংক ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক ২ দশমিক ২২ শতাংশ, স্কয়ার ফার্মাসিটিউক্যালস ২ দশমিক ২২ শতাংশ এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। |
6779ed50-a7e4-4e89-b1d6-b1f3bb236bd0 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পাওয়া ঔষুধ ও রসায়ন খাতের অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেডের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শতভাগ বেড়েছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জুলাই’১৭ থেকে সেপ্টেম্বর’১৭ পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয়েছে ০.৩৪ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে কর পরিশোধের পর প্রকৃত মুনাফা ছিল ৭৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা এবং ইপিএস ছিল ০.১৭ টাকা।
এছাড়া কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি) হয়েছে ১২.৭৯ টাকা। যা ৩০ জুন, ২০১৭ শেষে ছিল ১২.৪৫ টাকা। এবং শেয়ার প্রতি নগদ কার্যকর প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ০.৬২ টাকা। উল্লেখ্য, কোম্পানিটির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ৮৬ লাখ।
প্রসঙ্গত গত ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিএসইসির ৬২২তম কমিশন সভায় অ্যাডভেন্ট ফার্মা লিমিটেডের আইপিও অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বাজারে ২ কোটি শেয়ার অভিহিত মূল্যে ছেড়ে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে কোম্পানিটি। কোম্পানিটি যন্ত্রপাতি ক্রয়, ভবন নির্মান এবং আইপিওর খরচ বাবদ এ টাকা ব্যয় করবে।
কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড, আলফা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং সিএপিএম এ্যাডভাইজরি লিমিটেড। কোম্পানিটির আইপিও আবেদন আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। যা চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। |
aec3e0f0-9bc9-44c9-b3d5-1967050052d4 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হাডেলবার্গ সিমেন্টকে মেঘনা এনার্জি লিমিটেডের ৯৯.৯৯ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক মেঘনা এনার্জির ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫৭টি শেয়ার হস্তান্তরের অনুমতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, মেঘনা এনার্জি লিমিটেড একটি বেসরকারি কোম্পানি। এটি বাংলাদেশে অর্ন্তভুক্ত। এই কোম্পানিটি ছোট বিদ্যুৎ প্লান্ট হিসাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ করে। |
222e80b7-f07c-4f0a-966d-c80ac74311d4 | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: টানা শেয়ারের দাম বাড়লেও বিএসইসির রাডারে ধরা পড়ছে না বিডি অটোকার্স। নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিরবে দেখেও এ বিষয় না দেখার ভান করছেন। বাজারে নানা গুজব ছড়িয়ে শীর্ এক ব্রোকারেজ হাউজ দাম বাড়াচ্ছে।
কৃত্রিমভাবে বিক্রেতার অভাব ঘটিয়ে টানা বেড়ে চলছে প্রকৌশল খাতের দুর্বল মৌলের কোম্পানি বাংলাদেশ অটোকার্সের (বিডি) শেয়ারদর। বিরতীহীনভাবে বেড়ে ১৬ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১০৯.২০ টাকা থেকে দাঁড়িয়েছে ৩৬৭ টাকায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ১৬ কার্যদিবস আগে ৩ জুন তারিখে ১০৯.২০ টাকা দর নিয়ে কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়। ১৬ কার্যদিবসের মাথায় গত বৃহ্স্পতিবার (২৮ জুন) কোম্পানিটির শেয়ারদর উঠে দাঁড়ায় ৩৬৭ টাকায়। এ সময়ে এর শেয়ারদর বাড়ে ২৩৬.২৬ শতাংশ।
বিডি অটোকার্সের শেয়ার দর অব্যাহতভাবে বাড়ার কারণে চলতি মাসে দু’বার কোম্পানিটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় ডিএসই। ডিএসইর নোটিশের জবাবে গত ৪ জুন ও ২১ জুন কোম্পানিটির পক্ষ থেকে ডিএসইকে জানানো হয়েছে, শেয়ার দর অস্বাভাবিক বাড়ার কারণে তাদের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। তারপরও থেমে নেই কোম্পানিটির শেয়ারদর।
আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই ২০১৭ হতে মার্চ ২০১৮) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে মাত্র ৮৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ৩৪ পয়সা। সর্বশেষ শেয়ারদর অনুযায়ী কোম্পানিটির মূল্য আয় অনুপাত ৩৩১.৬৩ শতাংশ, যা বিনিয়োগের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ।
কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৩৮ লাখ ৬২ হাজার ৫১২টি। স্বল্প মূলধনী হওয়ার কারণেই কোম্পানিটির শেয়ারদর লাগামহীনভাবে বাড়ছে। এটি একটি নেগেটিভ রিজার্ভের কোম্পানী। বর্তমানে কোম্পানিটির নেগেটিভ রিজার্ভের পরিমাণ হলো ২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
অর্থাৎ এর শেয়ারপ্রতি নেগেটিভ রিজার্ভ রয়েছে ৭.২২ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা রয়েছে ৮৩ পয়সা। অন্যদিকে, শেয়ারপ্রতি নেগেটিভ রিজার্ভ রয়েছে ৭.২২ টাকা। এতে দেখা যায়, কোম্পানিটি নগদ অর্থের ঘাটতিতে রয়েছে এবং দারে-কর্জে পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিদায়ী ২০১৭ অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ৯৭ পয়সা। ওই বছর বিনিয়োগকারীদের কোম্পানিটি ৩ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। |
859a5773-7df2-4c18-aee3-3c700f3a99dd | দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের একের পর এক গুজবে ভর করে বাজারের সুষ্ঠু পরিবেশ একটি চক্র নষ্ট করছে। এরা কারা এ প্রশ্ন খোদ বিনিয়োগকারীদের। আর পুঁজিবাজারের ইতিহাসে গুজব নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবারের গুজব ও হুজুগ সবমাত্রাকেই ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু এবারের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। যাই ক্ষতির শিকার হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী।
আগামী অর্থবছরের জন্য ঘোষণা করতে যাওয়া মুদ্রানীতি ও বাংলাদেশ কমার্র্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড অপারেশনের পদত্যাগের গুজবকে কেন্দ্র করে বাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা দেয়। বিশেষ করে গত কিছুদিন ধরে আলোচনায় থাকা শেয়ারগুলো এক পর্যায়ে ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বাজারে এক শ্রেণীর চতুর বিনিয়োগকারী আগেও গুজব ছড়িয়ে শেয়ার হাতিয়ে নিয়েছে অভিযোগ রয়েছে। আতঙ্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করলেও তারা অল্প দামে শেয়ার কিনে থাকেন। তাছাড়া পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার আভাসে নতুন করে বিনিয়োগ আসছে। পাশাপাশি আসছে বড় বিনিয়োগ।
আর এ বড় বিনিয়োগে নাম লেখাচ্ছেন বিএনপি ও জামায়াত পন্থী বড় ব্যবসায়ীরা। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের নামে বড় বিনিয়োগ নিয়ে সক্রিয় এখন তারা। কয়েকজন বিএনপি ও জামায়ানাত পন্থী বড় ব্যবসায়ী রীতিমতো গ্যাম্বলারের ভুমিকায় নেমেছেন। তারা পুঁজিবাজারকে নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। যে কোন মুল্যে পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে হবে।
তারা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে পুঁজিবাজার থেকে রাতারাতি টাকা আয় করার মিশনে নেমেছেন। স্বল্প সময়ে বাজার থেকে মুনাফা তুলে নিতে তারা বাজারে সক্রিয় হয়েছেন বলে জানা গেছে। একাধিক সিকিউরিটিজ হাউজের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।ঐ চক্রটি ঘাপটি মেরে থেকে একের পর এক গুজব বাজারে ছড়াচ্ছে।
বর্তমান বাজারে নতুন গুজব কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজের এভিপি সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ। সাইফুল ইসলামকে টার্গেট করে তারা নতুন মিশনে নেমেছেন। অস্থির পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীলতার স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড। গত কিছুদিন ধরেই লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছিল কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ।
বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তালিকায়ও ছিল ব্রোকারেজ হাউসটি। এই হাউসের বিনিয়োগকারীরাও অন্যদের তুলনায় বেশ ভাল মুনাফা করেছে বলে তারা জানান। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডিএসইর তালিকাভুক্ত আরও কিছু প্রভাবশালী হাউস বিশেষ করে শীর্ষস্থানীয় একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষোভের শিকার হয় হাউসটি। এছাড়া এক শ্রেণীর চতুর বিনিয়োগকারীও হাউসটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছেন বিভিন্ন মহলে।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার ডিএসইর বিভিন্ন হাউসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে ছিল কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড অপারেশন সাইফুল ইসলাম স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সঙ্গে মতবিরোধের জেনে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
মূলত বাজারে এই নেতিবাচক প্রচার চালানোর কারণেই বেশ কিছু কোম্পানির ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেয়। যদিও কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ তার পদত্যাগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। শুধু তাই নয় সাইফুল ইসলাম নিজেও পদত্যাগের বিষয়টি উড়িয়ে দেন। তিনি জানান, অন্যদিনের মতো বুধ ও বৃহস্পতিবার তিনি নিয়মিত বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। নিজেদের মধ্যে কোন ভুল বোঝাবুঝি নেই।
বর্তমানে একটা চক্র গুজব ছড়াচ্ছে, বাংলাদেশ কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজের অন্যতম শীর্ষ পোর্টফলিও ম্যানেজার সাইফুল ইসলামকে ছাটাই করা হয়েছে বা পদত্যাগ করানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনা সম্পূর্ন বিপরীত।
চলতি মাসে প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের এক কর্মকর্তাকে ডিএসই সাসপেন্ড করে। পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগে ১৪ দিনের যা ১০ কর্মদিবসের জন্য ট্রেডিং এক্টিভিটিস থেকে বিরত থাকার জন্য জন্য ডিএসই থেকে প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজের কর্মকর্তা আকরাম হোসেনকে নির্দেশ দেয়।
সুত্র জানায়, একই সময়ে একই ব্যাক্তির বিও একাউন্টে একই কোম্পানির সমপরিমান শেয়ার ক্রয় এবং বিক্রয় করার কারনে অটো সেল বাই করার অভিযোগে এই সাসপেন্ড করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ( ট্রেডিং রাইট এন্টাইটেলম্যান্ট সার্টিফিকেট) রেজ্যুলেশনস ২০১৩ আইনের ১৪ এর ২ ধারা অনুযায়ী আকরাম হোসেনের বিরুদ্বে এই ব্যাবস্থা নেয় ডিএসই । এর পুর্বে একই ভুল করার জন্য ডিএসই থেকে তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। তাই তার বিরুদ্বে এমন শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা নেয় ডিএসই কতৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আকরাম হোসেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, ভুলবসত একই গ্রাহকের বিও একাউন্টে একই কোম্পানির সমপরিমান শেয়ার একই দরে ক্রয় এবং বিক্রয় হয়ে গেছে। ফলে ডিএসই থেকে এটাকে ননকমপ্লায়েন্স হিসেবে বিবেচনা করেছে। আমাকে শুনানীর জন্য ডিএসই ডেকেছে এবং আমি আমার ব্যাখ্যা দিয়েছি। হয়তো ডিএসই আমার ব্যাখ্যায় সন্তুস্ট হয়নি তাই আমাকে ১৪ দিনের জন্য ট্রেডিং থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।যা চলতি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত কার্যকর হয়।
তিনি বলেন, মানুষ মাত্রই ভুল করে, আর তাই অনিচ্ছাকৃতভাবেই আমার ভুলটা হয়েছে। যেখানে শেয়ার সংখ্যাও অনেক কম ছিল। এক কোম্পানির শেয়ার ছিল ৮শত আরেকটার ছিল দেড়শত এর মত। আর পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ ঘুরে দেখা যায় এই গুজবকে কাজে লাগিয়েই এক শ্রেনীর মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে আলোচিত পোর্টফলিও ম্যানেজার সাইফুল ইসলামকে নিয়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষ স্থানীয় একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গত কিছুদিন ধরে টানা পতন থাকলেও কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা অন্যদের তুলনায় ভাল করেছেন। এতে বাজারের অন্যপক্ষ খুব ভাল চোখে দেখেনি।
এছাড়া যখন সরকার বাজারকে একটি স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, সেখানে এক শ্রেণীর বড় বিনিয়োগকারী বাজারকে অস্থিতিশীল করতে কখনও মুদ্রানীতির নামে আবার কখনও কোন ব্রোকারেজ হাউস সম্পর্কে নেতিবাচক গুজব ছড়িয়ে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছেন।
গুজবের প্রসঙ্গে সাইফুল ইসলাম দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, এই ধরনের গুজবের কোন ভিত্তি নেই, এটা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন। সরকারকে চাপে ফেলার জন্য এবং পুঁজিবাজারের পরিবেশ নস্ট করার জন্য একশ্রেনীর মানুষ এ গুজব ছড়াচ্ছে। আমাকে কেন সাসপেন্ড করা হবে? আমার বিরুদ্বে তো কোন অভিযোগ নেই।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মন্দা পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীলতার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। এটা যদি আমার অপরাধ হয় তা হলে আর কি বলব। বর্তমান সরকার পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ও সাধ্যমত চেষ্টা করছি। বাজারে একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হতে না হতে একটি চক্র ঘাপটি মেরে থাকা নানা গুজব ছড়াচ্ছে। |
278aa749-6876-4c2f-8fe6-d4f86b9329cc | শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে নানা গুজবে টালমাতাল পরিস্থিতি। একের পর এক গুজবে ভর করছে পুঁজিবাজার। ফলে শনির দশা কাটছে পুঁজিবাজারের। একটি চক্র পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে একের সময় এক গুজব ছড়াচ্ছে। এরা গুজব ছড়িয়ে বাজার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে মাঠে নামছে। পেছনে কাজ করছে কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ। বর্তমান বাজারে নতুন গুজব কর্মাস ব্যাংক সিকিউরিটিজের এভিপি সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডিএসইর তালিকাভুক্ত আরও কিছু প্রভাবশালী হাউস বিশেষ করে শীর্ষস্থানীয় একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের ক্ষোভের শিকার হয় হাউসটি। এছাড়া এক শ্রেণীর কুচক্রি বিনিয়োগকারীও হাউসটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে আসছেন বিভিন্ন মহলে। মূলত বাজারে এই নেতিবাচক প্রচার চালানোর কারণেই বেশ কিছু কোম্পানির ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেয়। যদিও কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ তার পদত্যাগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
শুধু তাই নয় সাইফুল ইসলাম নিজেও পদত্যাগের বিষয়টি উড়িয়ে দেন। তিনি জানান, অন্যদিনের মতো বুধ ও বৃহস্পতিবার তিনি নিয়মিত বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। নিজেদের মধ্যে কোন ভুল বোঝাবুঝি নেই।
অভিযোগ উঠছে, পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীলতার পেছনে বিএনপি জামায়াত পন্থী কিছু ব্রোকারেজ হাউজের মালিক ও সিন্ডিকেট চক্র ও মার্চেন্ট ব্যাংক এ অস্থিরতার গুজব ছড়াচ্ছে। এরা পরিকল্পিত ভাবে পুঁজিবাজারকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। অন্যদিকে নীতিনির্ধারকদের চাপে ফেলতে পুঁজিবাজারে পরিকল্পিত অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে স্বার্থান্বেষী মহল। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কঠোর অবস্থানের পর ও এ মহলটি পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষ স্থানীয় একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গত কিছুদিন ধরে টানা পতন থাকলেও কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা অন্যদের তুলনায় ভাল করেছেন। এতে বাজারের অন্যপক্ষ খুব ভাল চোখে দেখেনি।
এছাড়া যখন সরকার বাজারকে একটি স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, সেখানে এক শ্রেণীর বড় বিনিয়োগকারী বাজারকে অস্থিতিশীল করতে কখনও মুদ্রানীতির নামে আবার কখনও কোন ব্রোকারেজ হাউস সম্পর্কে নেতিবাচক গুজব ছড়িয়ে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছেন।
গুজবের প্রসঙ্গে সাইফুল ইসলাম দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, এই ধরনের গুজবের কোন ভিত্তি নেই, এটা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন। সরকারকে চাপে ফেলার জন্য এবং পুঁজিবাজারের পরিবেশ নস্ট করার জন্য একশ্রেনীর মানুষ এ গুজব ছড়াচ্ছে। আমাকে কেন সাসপেন্ড করা হবে? আমার বিরুদ্বে তো কোন অভিযোগ নেই।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মন্দা পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীলতার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। এটা যদি আমার অপরাধ হয় তা হলে আর কি বলব। বর্তমান সরকার পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ও সাধ্যমত চেষ্টা করছি। বাজারে একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হতে না হতে একটি চক্র ঘাপটি মেরে থাকা নানা গুজব ছড়াচ্ছে।
বর্তমান পুঁজিবাজারে পতন হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তবে নানা গুজবের কারণেই গত কয়েক দিনে পুঁজিবাজার টালমাতাল পরিস্থিতি। এর প্রভাবে প্রায় নিয়মিতভাবে কমছে অধিকাংশ শেয়ারের দর।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার পুঁজিবাজারকে যে কোন মুল্যে স্থিতিশীল রাখবে। ২০১০ সালের অনাকাক্ষিত পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি এড়াতে পুঁজিবাজারের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রেখে আসছে। অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও সব রকম নেতিবাচক প্রবণতা বন্ধ করে দেশের পুঁজিবাজারকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিশেষ কোন মহল যাতে পরিকল্পিতভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অর্থ লুটে নিতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সার্বক্ষনিকভাবে এ বিষয়ে দৃষ্টি রাখছে।
এ বিষয় কমার্স ব্যাংক সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এ মোতালেব চৌধুরী দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, সাইফুল ইসলাম পদত্যাগ করবে কেন ? পদত্যাগের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আমাদের মাঝে আছেন এবং ভবিষ্যতে থাকবেন।
– |
Subsets and Splits